সর্বশেষ সংবাদ-
ব্যবসায়ীকে মারধরের ঘটনার ভিডিও করায় সাংবাদিকদের মারপিটের অভিযোগ ডা; ফয়সালের বিরুদ্ধেতাপদাহে রিকশাচালক-পথচারী‌দের‌ মাঝে ড্রিম সাতক্ষীরার পা‌নি ও স্যালাইন বিতরণআন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনাসাতক্ষীরা সদর সাব রেজিষ্ট্রি অফিস চত্বরে মরা শিশু গাছে ঝুঁকি বাড়ছেকলারোয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী আলতাফ হোসেন লাল্টুর গণ সমাবেশএডভোকেসি নেটওয়ার্ক এবং সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশন সদস্যদের ত্রৈমাসিক সমন্বয় সভাশ্যামনগরের কৈখালী পোলের খাল খনন কর্মসূচির উদ্বোধনশ্যামনগরে সালাতুল ইস্তেকার নামাজ আদায়তীব্র তাপদাহে পুড়ছে উপকুলীয় জেলা সাতক্ষীরা, তাপমাত্রা আজ সর্বোচ্চ ৩৯.৩ ডিগ্রিদেবহাটায় উন্নয়ন কার্যক্রমে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তি বিষয়ক মতবিনিময়

আলিপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধে দুপক্ষের সংঘর্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাতক্ষীরায় জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে দুগ্রুপের সংঘর্ষে ২ জন আহত হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে আলিপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বুলারআটি গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আহতরা হলেন, আলিপুর বুলারআটি গ্রামের মৃত এজহার আলী মল্লিকের ছেলে শহিদুল ইসলাম, তকিম গাইনের ছেলে ইমাদুল ইসলাম। বর্তমানে তাদেরকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, গত ইংরেজি ২৫ জুলাই ২০১৪ সালে দেবহাটার বহেরা মৌজায় এসএ ৯৭৯ খতিয়ানে, ডিপি ১০৭, ১৩৪৪ দাগে ১৮শতক জমি ক্রয় করার শর্তেও আসামিরা জমিটি জোরপূর্বক দখলসহ বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করতে থাকে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে মিমাংশা হলেও তারা তা না মেনে জীবননাশসহ বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিতে থাকে। এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছিল। ডায়েরী নং- ৯৯৬/২৫.৭.২০১৪।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার আলিপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বুলারআটি গ্রামের জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে দুগ্রুপের দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলছিল। বিজ্ঞ আদালতেও এ ব্যাপারে একটি মামলা চলছিল। আদালত সম্প্রতি জমির মূল মালিক ইদ্রিস আলীর পক্ষে রায় ঘোষণা করে। ইদ্রিস আলীর নিকট থেকে মো. এবাদুল্লাহ আল ফারুক ৯শতক জমি ক্রয় করেন। কিন্তু ২য় পক্ষ এ রায় না মেনে জোর পূর্বক জমি দখলের পায়তারা চালাচ্ছে এবং বিভিন্ন ভাবে চাঁদা দাবী ও জীবননাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
এব্যাপারে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
বড়দল ইউপির বেদখলীয় জায়গা দখলে পিলার স্থাপন

বড়দল (আশাশুনি) প্রতিনিধি : আশাশুনি উপজেলার ৫নং বড়দল ইউনিয়নের গোয়ালডাঙ্গা বাজারে ইউনিয়ন পরিষদের নামীয় দীর্ঘ দিনের বেদখলীয় জায়গা পরিষদ কর্তৃক দখলের লক্ষ্যে সার্ভে কার্যক্রম শেষে সীমানা পিলার স্থাপন করা হয়েছে। গতকাল (শনিবার) সকাল ১১ টায় শুরু হয়ে দুপুর ২.৩০ টা পর্যন্ত উক্ত কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সার্ভে কার্যক্রম চলাকালিন সময় উপস্থিত ছিলেন ইউপি চেয়ারম্যন আঃ আলিম মোল্ল্যা, আশাশুনি উপজেলা সার্ভেয়ার শফিকুল ইসলাম, বড়দল ইউনিয়ন ভূমি তহসিলদার রঞ্জিত কুমার মন্ডল, ইউনিয়ন আ’লীগ সভাপতি সুরঞ্জন ঢালী, মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার আবুল হোসেন গাইন, গোয়ালডাঙ্গা বাজার কমিটির সভাপতি আঃ হান্নান, ইউপি সদস্য আঃ কাদের, মফিজুল ইসলাম, আঃ রশিদ গাজী, নীলকন্ঠ গাইন, মাসুদ সানা, দেব্রত মন্ডল, দিলীপ সানা, যুবলীগ নেতা বি,এম আলাউদ্দীন, অলক কুমার সরকার, সাতক্ষীরা জেলা দফাদার কমিটির সভাপতি মোস্তাজুল সরদার, ইউনিয়নের সকল গ্রাম পুলিশ ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। উল্লেখ্য ২৯/০৯/১৯৬৪ সালে তদানিন্তন চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দীন সরদার (মকবুল), গোয়ালডাঙ্গা বাজারে ইউনিয়ন কমপ্লেক্স ভবন নির্মানের জন্য মৃত আমিন উদ্দীন গাজীর স্ত্রী আয়ফুল বিবির নিকট থেকে চাম্পাখালি মৌজাধিন (সাবেক ২১৯ নং) হাল ৪২৫ নং খতিয়ানে, (সাবেক ৭০/৭২১) হাল ৬৩৮ দাগে কোবলা রেজিঃ করে ১০ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পর, এখান থেকে ৭/৮ বছর পূর্বে আয়ফুল বিবির দ্বিতীয় পুত্র খানজাহান আলী ও তার বোন মর্জিনা খাতুন কৌশলে মোটা অর্থের বিনিময়ে ছামাদ সরদার, হারুন সরদার ও মিজানুর সরদার এর নিকট পজেশন হস্তান্তর করে এবং সেখানে তারা দোকান ঘর নির্মাণ করে ব্যবসা চালিয়ে আসছে। কিন্তু রহস্য জনক কারনে ইতি পূর্বের চেয়ারম্যান মহোদয়রা নিরব ছিলেন, এ নিয়ে তাদের কোন মাথাব্যাথা না থাকার কারণ সাধারন জনগনের বোধগম্য নয়। তবে বর্তমান চেয়ারম্যান আঃ আলিম মোল্যার দুরদর্শি মনভাব ও জোর তৎপরতায় গত ১১/০৮/২০১৬ প্রথম দফায় শালিশি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। শালিশি বৈঠকে বিবাদী গন সময় প্রার্থনা করেন। গত ১৮/০৮/২০১৬ দ্বিতীয় দফায় শালিশি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং সেখানে বিবাদী গন উক্ত তফসীল বর্ণিত সম্পত্তী ইউনিয়ন পরিষদের নামে, বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদের প্যাডে লিখিত ভাবে স্বীকার করেন। এ বিষয়ে বিবাদী গনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। উল্লেখিত উক্ত তপশীল বর্ণিত সম্পত্তি মাঠ জরিপে ৪২৫ নং খতিয়ানে হাল দাগ ৬৩৮, দাখিলা ও চেক ২০১৭ সাল পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদের নামে পরিশোধ করা বলে চেয়ারম্যান আঃ আলিম মোল্ল্যা জানান।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
বিচারকদের সম্পদের বিবরণী অবিলম্বে প্রকাশ করুন -মিজানুর রহমান খান

তথ্যটি আমাদের নজর এড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আইন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রশীদের লেখা পড়ে চোখ ছানাবড়া হলো। তিনি ৭ সেপ্টেম্বর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরে ষোড়শ সংশোধনীর ওপর একটি সমালোচনামূলক মূল্যবান নিবন্ধ লিখেছেন। ‘ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে বিচারকরা রাজনৈতিক বিভেদে, আর সরকার পড়েছে চোরাবালিতে’ শীর্ষক নিবন্ধে তিনি রায়ের রিভিউ হওয়া কেন দরকার, তার সপক্ষে জোরালো যুক্তি তুলে ধরেছেন। আর সেটা বলতে গিয়ে তিনি বিচার বিভাগের দুর্নীতির ওপরও আলোকপাত করেছেন। এই লেখায় আমি শুধু দুর্নীতির বিষয়টির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে চাই।

বিচারপতি আবদুর রশীদ তাঁর নিবন্ধের ১৩ নম্বর প্যারায় লিখেছেন, ‘বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দীকি সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বাধাগুলোর কথা উল্লেখ করেছেন এবং বিচার বিভাগে দুর্নীতির অস্তিত্ব চিহ্নিত করেছেন। আর এমনকি সেটা এই মাত্রায় যে, ৯০ ভাগ মামলা ঘুষের মাধ্যমে নিষ্পত্তি ঘটে। অথচ সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল অদ্যাবধি দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি মামলাও দায়ের করতেও উদ্যোগী হয়নি।’

এখানে অবশ্য একটি তথ্যগত অসংগতি আছে। ৯০ শতাংশ মামলায় ঘুষের বিষয়টি নির্দিষ্টভাবে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে উল্লিখিত হয়নি। এটা ভিয়েতনামের অবস্থা। তবে কোনো প্রাসঙ্গিকতা না থাকলে রায়ে নিশ্চয়ই ভিয়েতনামের উদাহরণ আসত না।

বিচারপতি রশীদের ওই নিবন্ধ পড়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরের একজন ইংল্যান্ডপ্রবাসী পাঠক খুব বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তিনি ৩৫ বছর ধরে ইল্যান্ডে থাকেন। এ কথা উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, মিরর পত্রিকায় তিনি পড়েছিলেন যে কর ফাঁকি দিয়ে মদ আমদানির এক মামলায় একজন বিচারক বিচারপ্রার্থীর কাছ থেকে এক বোতল পুরোনো মদ নিয়েছিলেন। পত্রিকাটি তখন লিখেছিল যে সেখানে কোনো বিচারকের ঘুষ গ্রহণের কথা গত দেড় শ বছরে শোনা যায়নি।

প্রথমত, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দীকি বিচার বিভাগের দুর্নীতির প্রতি আলোকপাত করেছেন। বিচারকদের জবাবদিহি-সংক্রান্ত একটি মাইলফলক রায়ে দুর্নীতি নিয়ে আলোচনার প্রাসঙ্গিকতা আছে, সেটা এই পর্যবেক্ষণ দ্বারা সমর্থিত হয়েছে। আর এভাবে একজন কর্মরত ও একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারকের তরফে হয়তো উভয়ের উদ্বেগতাড়িত মনের প্রতিফলন ঘটেছে। আমাদের সঙ্গে সব বিবেকবান মানুষের প্রার্থনা হবে, ষোড়শ সংশোধনীর রায়ে ভিয়েতনামের যে চিত্র এসেছে, তেমন অবস্থা যেন কোনো দেশেরই না হয়।

রায়ের ৭৪৬ পৃষ্ঠায় বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দীকি লিখেছেন, ‘ইন্টারন্যাশনাল বার অ্যাসোসিয়েশন (আইবিএ) সম্প্রতি একটা উদ্বেগজনক তথ্য দিয়েছেন যে ভিয়েতনামে প্রায়শ ঘুষের বিনিময়ে রায় দেওয়া হয়। এটা অনুমেয় যে, শতকরা ৯০ ভাগ মামলা যা আদালত শুনে থাকেন তাতে ঘুষের ব্যাপার রয়েছে। এর সঙ্গে বিচারকেরা ও তাদের ক্লার্ক জড়িত। এবং যেসব মামলায় ঘুষের ব্যাপার থাকে না, বিচারকেরা প্রায়শ কোনো মনোযোগ দেন না এবং কোর্ট স্টাফরাও মামলাসংক্রান্ত কোনো তথ্য দিতে বা আইনজীবীদের নথি দেখতে দিতে অস্বীকৃতি জানান।’ এ বিষয়ে রায়ে এরপর লেখা হয়েছে, ‘রিপোর্ট ছাপা হয়েছে যে ভারতে বিচার বিভাগের দুর্নীতি ক্যানসারে পরিণত হয়েছে এবং তা নিচ থেকে শুরু হয়েছে। এখন ইঞ্চি ইঞ্চি করে ওপরে উঠছে। ২০১০ সালে সাবেক আইনমন্ত্রী শান্তি ভূষণ গত আটজন প্রধান বিচারপতি দুর্নীতিগ্রস্ত ছিলেন উল্লেখ করে আদালত অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। ২০১৫ সালে বিচারপতি মারাকান্ডে কাটজু দাবি করেছিলেন উচ্চ আদালতের অর্ধেকটাই দুর্নীতিগ্রস্ত।’

এই মন্তব্যের পরে বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দীকি মিলিয়ন ডলার দামি প্রশ্নটি রাখেন: ‘কোশ্চেন ইজ, হোয়াট আওয়ার পজিশন?’

ভিয়েতনামে ৯০ শতাংশ মামলা ঘুষের বিনিময়ে নিষ্পত্তি হয়, ভারতের উচ্চ আদালতের অর্ধেকটা দুর্নীতিগ্রস্ত, তাহলে বাংলাদেশের অবস্থাটি কী? আমাদের স্মরণকালের ইতিহাসে কোনো রায়ে এই জ্বলন্ত এবং সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটি সম্ভবত এই প্রথম তোলা হয়েছে।

ওই প্রশ্ন তোলার পরে বিচারপতি হাসান ফয়েজ লিখেছেন, ‘কী উপায়ে বিচারক অপসারণ করা হবে সেটি জনগণ বা বিচারপ্রার্থীর জন্য প্রাসঙ্গিক নয়। তাঁরা চান তাঁদের মামলা দ্রুত, নিরপেক্ষভাবে ও ন্যায্যতার সঙ্গে এবং কোনো ধরনের অবাঞ্ছিত প্রভাব ছাড়াই নিষ্পত্তি হবে। ঋজু এবং সৎ বিচারক কেবল বিচারপ্রার্থীদের চোখে বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি উন্নতির জন্যই নয়; বরং বিচারকদের মধ্যে সততা এবং সৎ গুণের সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতেও দরকারি।’

এই পর্যায়ে বিচারপতি যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন, তা আমাদের ২০১০ সালে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের একটি খানা জরিপের ফলাফল প্রকাশের পরে সুপ্রিম কোর্টের প্রতিক্রিয়া স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। টিআইবি বলেছিল, বিচার বিভাগ হলো ‘সব থেকে দুর্নীতিগ্রস্ত সার্ভিস সেক্টর’। সুপ্রিম কোর্ট ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহাব মিয়ার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের কমিটি বলেছিল, এই জরিপ উপকারী নয়। টিআইবি বলেছিল, এটা দৃষ্টিভঙ্গিগত একটি বিষয়। তবে বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দীকি লিখেছেন, ‘বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের মনোভাব কী, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। সমগ্র বিচার বিভাগের বিশ্বাসযোগ্যতা অনেক সময় অল্পসংখ্যক বিচারকদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’

রায় প্রকাশের পরে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের প্রথম বৈঠকে তেমন ‘অল্পসংখ্যক’ বিচারকের বিষয়টির উল্লেখ আমরা দেখতে পাই। কিন্তু যা দেখতে ও জানতে আমরা অপেক্ষায় থাকি, তা হলো জিরো টলারেন্স নীতির বাস্তবায়ন।

বিচারপতি আবদুর রশীদ তাঁর নিবন্ধে একই সঙ্গে বিচারপতি এ টি এম আফজাল ও বিচারপতি লতিফুর রহমানের হতাশার কথা উল্লেখ করেছেন। তাঁর লেখায় আছে, ‘ওই দুই সাবেক প্রধান বিচারপতি মনে করেন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে কিছুই করা যায় না। কোনো বিতর্কের ভীতি ব্যতিরেকে এখন এটা বলা এবং বোঝার সময় এসেছে যে বিচারকসহ কোনো সাংবিধানিক পদধারীর জবাবদিহি নিশ্চিত করতে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ব্যর্থ হয়েছে।’

বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রশীদের ওই মন্তব্যের তাৎপর্য গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনার দাবি রাখে। তবে তার প্রেক্ষাপট ও সময়টা কখন কীভাবে, কী প্রক্রিয়ায় হবে, সেটা অগ্রাহ্য করা যাবে না। তবে ‘অল্পসংখ্যক’ যদি আদৌ থেকে থাকেন, তাহলে তাঁদের বিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া ব্যতিরেকে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল জনগণের মনে যথেষ্ট আস্থা অর্জন করতে পারবে বলে মনে হয় না।

সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ১৯৭৭ সালে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও তাঁরা সংবিধানে নির্দিষ্ট করা দুটি দায়িত্ব পালন করেননি। একটি কার্যকর আচরণবিধি তৈরি এবং তা পালন করতে বিচারকেরা যাতে বাধ্য হন, সেই পদক্ষেপ তাঁরা নেননি। পাকিস্তান সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের তৈরি করা আচরণবিধি ঈষৎ মাজাঘষা করে ১৯৭৭ সালে তারা সেটি গ্রহণ করলেও তা কখনো বিলি করা হয়নি। ২০০০ সালে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রধান বিচারপতি লতিফুর রহমানের সময় এতে একটা পরিবর্তন আনা হয় এবং তাতে বিধান করা হয় যে প্রধান বিচারপতি চাইলে বিচারকেরা তাঁদের সম্পদ ও দেনার বিবরণী প্রকাশ করবেন। এবারের রায়ের ১৬ দফায় তার অন্তর্ভুক্তি বহাল রয়েছে। সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক মাত্র একবার এটি অনুশীলন করেছিলেন। সেটা অবশ্যই প্রশংসনীয় ছিল। কিন্তু তা ছিল খণ্ডিত এবং ‘ডিজক্লজ’ বা প্রকাশ করার উদ্দেশ্য তাতে পূরণ হয়নি। আমরা পত্রিকান্তরে জেনেছিলাম, বিচারপতি খায়রুল হক ২০১০ সালের ৩০ ডিসেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের কাছে তাঁর সম্পদের বিবরণী প্রকাশ করেছিলেন। এরপরে জানা গিয়েছিল, আপিল বিভাগের আরও চারজন তাঁকে অনুসরণ করেছিলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা আজ থেকে সাত বছর আগের ওই পর্বটি সম্পর্কে ব্যক্তিগতভাবে চেষ্টা করেও বিস্তারিত জানতে পারিনি। সম্পদের বিবরণী প্রকাশ না করার বিষয়ে বিচারকদের মধ্যে ঐকমত্য সুপ্রতিষ্ঠিত, এর সপক্ষে আমাদের হাতে কোনো প্রমাণ নেই। তাঁরা তাঁদের সম্পদের বিবরণী প্রকাশে উদ্গ্রীব, তারও প্রমাণ আমরা পাই না।

আমরা আইনের এই ব্যাখ্যা মানতে রাজি নই যে ‘ডিজক্লজ’ মানে প্রধান বিচারপতির কাছে প্রকাশ করা এবং তা শুধুই প্রধান বিচারপতি বা রাষ্ট্রপতি জানবেন, তাহলে তো এর মূল উদ্দেশ্য অর্জিত হলো না। ধারণাটি হলো: ‘আ জাজ শ্যাল ডিজক্লজ হিজ অ্যাসেটস অ্যান্ড লায়াবিলিটিস, ইফ আসকড ফর, বাই দ্য চিফ জাস্টিস।’ এর মানে অবশ্যই এই নয় যে প্রধান বিচারপতি না চাইলে কোনো বিচারক তাঁর সম্পদের বিবরণী সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে দিতে পারবেন না।

ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ভূরি ভূরি উদাহরণ আমাদের রায়গুলোতে দেখা যায়। কোনো একটিও উল্লেখযোগ্য রায় সম্ভবত এখনো লেখা হয়নি, যেখানে ভারতের উদাহরণ দেওয়া হয় না। কিন্তু সেই রায়ের লেখকেরা যে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে আদালতের ওয়েবসাইটে সম্পদের বিবরণী প্রকাশ করে চলছেন, সেই আদর্শ কেন আমাদের এখানে অনুসরণ করা হবে না। বিচারক বিচার দিতেই শুধু স্বাধীন তাই নন, তিনি তাঁর সম্পদের বিবরণী প্রকাশেও স্বাধীন। আমরা স্বপ্রণোদিতভাবে সেই স্বাধীনতার অনুশীলন দেখতে চাই।

বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দীকি প্রশ্ন রেখেছেন, কী সেই ফর্মুলা, যার দ্বারা বিচার বিভাগ আস্থা বাড়াতে পারে?

আমরা মনে করি, শুরুর জন্য সম্পদের বিবরণী প্রকাশ করা একটি অন্যতম উপায় হতে পারে। মন্ত্রীরা না দিলে বিচারকেরা দেবেন না, এই তর্ক ভেঙে ভারতীয় বিচারকেরা তাঁদের বিবরণী দিচ্ছেন। আমাদের মন্ত্রীদের একটি শিক্ষা দরকার। বিচারকেরা নিজেরা এটা দিলে, তাঁরা একটি পাঠ পেতে পারেন।

মিজানুর রহমান খান: সাংবাদিক

সূত্র : প্রথম আলো।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
শেখ হাসিনাকে নোবেল দেয়ার প্রস্তাব

রোহিঙ্গা ইস্যুতে মানবিকতা এবং শান্তির অনন্য নজির স্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করার প্রস্তাব করেছেন বিশ্বের খ্যাতিমান চিন্তাবিদ এবং শিক্ষাবিদরা। প্রতি বছর অক্টোবর মাসে শান্তিতে অবদানের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণা হয়। ১০ ডিসেম্বর নরওয়ের অসলোতে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুরস্কার প্রদান করা হয়। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির রাজনীতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধীনে পরিচালিত হয় ‘অক্সফোর্ড নেটওয়ার্ক অব পিস স্টাডিজ’, সংক্ষেপে এটাকে বলা হয় অক্সপিস।

অক্সপিসের দুজন শিক্ষাবিদ ড. লিজ কারমাইকেল এবং ড. অ্যান্ড্রু গোসলার মনে করেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যেভাবে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন, তা সারা বিশ্বের জন্য এক অনুকরণীয় বার্তা। তাদের মতে, ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলো যখন শরণার্থী নিয়ে নানা সমস্যায় জর্জরিত, তখন বাংলাদেশ দেখাল কীভাবে এই সমস্যার মোকাবেলা করতে হয়। তারা দুজনই শেখ হাসিনাকে ‘মানবিক বিশ্বের প্রধান নেতা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পিস স্টাডিজ বিভাগের তিন অধ্যাপক যৌথভাবে শেখ হাসিনাকে বিশ্ব শান্তি দূত হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। ড. অলডো সিভিকো, ড. দীপালী মুখোপাধ্যায় এবং ড. জুডিথ ম্যাটলফ যৌথভাবে বলেছেন, ‘নোবেল শান্তিজয়ী অংসান সু চি আর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যক্রম পাশাপাশি মূল্যায়ন করলেই বোঝা যায় বিশ্ব শান্তি নেতা কে।’

তাদের মতে, ‘সুচি মানবতার চরম সীমা লঙ্ঘনকারী বার্মার সামরিক জান্তাদের রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো পৈশাচিকতাকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন। অন্যদিকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের অর্থনীতি এবং নিরাপত্তার চরম ঝুঁকি নিয়েও তাদের আশ্রয় দিচ্ছেন।’ তারা মনে করেন, ‘শেখ হাসিনা শান্তি নতুন বার্তা দিয়েছেন গোটা বিশ্বকে।’

হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের হাভার্ড ডিভাইনিটি স্কুলের ডিন ডেভিড এন হেম্পটন মনে করেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ শান্তির নতুন মাত্রা দিয়েছে। কেবল শান্তির স্বার্থে দেশটি চরম অর্থনৈতিক ঝুঁকি নিয়েছে।’ তার মতে, ‘এতোগুলো শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়ার জন্য মানবিক হৃদয় লাগে। জার্মানি যা করতে পারেনি, শেখ হাসিনা তা করে দেখিয়েছেন।’

অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ইন ক্যানবেরার অধীনে পরিচালিত ‘পিস অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউট‘। এই ইন্সটিটিউটের প্রধান ড. হেনরিক উরডাল মনে করেন, ‘বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদানের জন্য শেখ হাসিনাকেই বিশ্ব শান্তির নেতার মর্যাদা দেয়া উচিত। সত্যিকার অর্থেই যদি শান্তিতে অবদানের জন্য কোনো পুরস্কার থাকে তাহলে সে পুরস্কার পাবার একমাত্র যোগ্য ব্যক্তি হলেন শেখ হাসিনা।’ রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর নিপীড়নের প্রেক্ষাপটে গেলো এক সপ্তাহে স্ব স্ব দেশে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সেমিনার এবং সভায় তারা এই সব মন্তব্য করেছেন। প্রত্যেকে নোবেল শান্তিতে পুরস্কার মনোনয়নের ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে ভূমিকা রাখেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
নাটকের নয় আলোচনায় বাস্তবের এক ‘বড় ছেলে’

বড় ছেলে নাটকটি নিয়ে এরই মধ্যে দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। নাটকটি দেখে কেউ যেমন চোখের জলে ভাসছেন, কেউবা ভাবছেন বাড়াবাড়ি। তবে সেই নাটককে ছাড়িয়ে ফেসবুকে এখন আরেকটি বড় ছেলের গল্প খুব বেশি ভাইরাল হয়ে পড়েছে।

নির্যাতনের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা পরিবারের একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ভাইরাল হওয়া সেই ছবিটি দেখে স্পষ্টই বোঝা যায়, এটি একটি পরিবারের করুণ গল্পের। যেখানে ছোট সন্তানকে কোলে নিয়ে মা হাঁটছেন কাদামাটি মাখা পথ আর সামনে মেজো ভাইটির দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে চলছে পরিবারটির বড় ছেলে।

ছবিতে বয়সের আগেই ছোট কাঁধে বড় ভার বহনের কষ্ট ও কাদামাটিমাথা পথ পেরোনোর দুর্দশা স্পষ্টতই টের পাওয়া যায়। অনেকেই ছবিটির নাম দিয়েছেন বড় ছেলে।

ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া এই বড় ছেলেকে নিয়ে ফেসবুকে নানান জন লিখেছেন নানান মন্তব্য। এটিএন নিউজের হেড অব নিউজ প্রভাষ আমিন ফেসবুকে লিখেছেন, সামাজিক গণমাধ্যমে ‘বড় ছেলে’ নামে একটি নাটক নিয়ে ব্যাপক আলোচনা। আমি দেখিনি। তাই মন্তব্য করতে পারছি না। তবে আমি নিজেও সংসারের বড় ছেলে। তাই দায়িত্বটা জানি। নাটকের বড় ছেলের চেয়েও বাস্তবের বড় ছেলের দায়িত্ব অনেক বেশি। দেখুন রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা এই রোহিঙ্গা পরিবারটির বড় ছেলের ছবি। অত ছোট কাঁধ বহন করছে কত বড় দায়িত্ব! শ্রদ্ধায় আমার মাথা নুয়ে আসে। টেকনাফ সীমান্তে প্রতিদিন রচিত হচ্ছে মানবিকতার এমন হাজার গল্প। সিনেমার গল্পের মত এই ছেলেটি যদি বড় হয়ে মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে, আপনারা নিশ্চয়ই তাকে সন্ত্রাসী বলে গুলি করে মেরে ফেলবেন।

ব্র্যাকের অভিবাসন বিষয়ক কর্মকর্তা শরিফুল হাসান লিখেছেন, বড় ছে‌লে নাটকটা আ‌মি দে‌খি‌নি, কিন্তু কেঁদেছি এই সময়ের বড় ছেলেকে দেখে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতিআরা নাসরিন লিখেছেন, “মানুষ আসতে আছে নাফ নদীর বানের লাহান” — এমন কি একটা প্রচ্ছদ শিরোনাম ছিল বিচিত্রার? প্রায় অর্ধশতক কাটলো, এখনও মানুষ আসতে আছে….। আশৈশব দেখি হারানো শৈশব। Rohingya exodus from Myanmar to Bangladesh

সাংবাদিক সন্দীপন বসু লিখেছেন, এইতো ‘বড় ছেলে’।

শারমিন সুলতানা নামের একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ও নিশ্চয় পরিবারের বড় ছেলে?
দেখুন তাদের প্রেম না, জীবন আর সংসারটাই টিকছে না। এইটুকু বয়সের ‘বড় ছেলে’ জীবন বাঁচাতে হয়তো তার ছোট ভাইকে কাঁধে চাপিয়ে সীমান্ত পার হচ্ছে নিজ জন্মভূমি ছেড়ে।

এই ‘বড় ছেলে’কে দেখে তাদের কান্না পাবে যারা প্রেম না টেকা বড় ছেলের জন্য কাঁদছে?

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
পরিবার বিচ্ছিন্ন হাজার হাজার রোহিঙ্গা শিশু

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে সিংহভাগই শিশু। এদের মধ্যে পরিবার বিচ্ছিন্ন শিশুর সংখ্যাটাও নেহায়েত কম নয়।রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে শিশুর সংখ্যা প্রায় দুই লাখের বেশি।
যা মোট রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যার প্রায় ৬০ শতাংশ। এখন পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ১২৮টি পরিবার বিচ্ছিন্ন শিশুর সন্ধান পাওয়া গেছে। শরণার্খীর সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এই সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে ইউনিসেফ। এসব শিশুদের জীবন বাঁচাতে জরুরি সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধির পাশাপাশি কিছু জরুরি নিরাপত্তা পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।
হঠাৎ পালিয়ে আসা বিপুল সংখ্যক এই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবনে নেমে এসেছে মানবিক বিপর্যয়। আর এর কেন্দ্রে রয়েছে শিশুরা। গত ২৫ তারিখ থেকে এখন পর্যন্ত শুধু কক্সবাজার জেলাতেই সাড়ে তিন লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী এসেছেন।
বিপুল পরিমাণ এই শরণার্থীর ঢল সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন। বাংলাদেশে পৌঁছানো শরণার্থী শিশুদের এখনই জরুরি স্বাস্থ্য সেবা প্রয়োজন।
চোখের সামনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিপুল ধ্বংসলীলা, খুন, ধর্ষণ এবং নিপীড়ন দেখে শিশুরা মানসিকভাবেও ভয়ানক বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে। শারীরিক চিকিৎসার পাশাপাশি তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসা সেবাও এখন দরকার।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে অনেক প্রসূতি মা রয়েছেন। অনেকেই আবার পথিমধ্যে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। বাংলাদেশে আসার পরে অনেক রেহিঙ্গা শিশুর জন্ম হয়েছে। সব মিলিয়ে জরুরি সেবার প্রয়োজন এমন শিশুর সংখ্যা দুই লাখের বেশি।
গত ২৫ তারিখ থেকে এখন পর্যন্ত শুধু কক্সবাজার জেলাতেই সাড়ে তিন লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী এসেছেন। বিপুল পরিমাণ এই শরণার্থীর ঢল সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর মিয়ানমারের কয়েকটি সেনা ও পুলিশের চৌকিতে রোহিঙ্গা ‘জঙ্গি’দের হামলার অভিযোগে আরাকান রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন শুরু করে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। হত্যা, ধর্ষণের পাশাপাশি গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এই অবস্থায় গত দু’সপ্তাহে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনের দেয়া তথ্যানুযায়ী আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা ২ লাখ ৭০ হাজারের বেশি।
রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সেনাবাহিনীর দীর্ঘদিন ধরে চলমান সংঘর্ষ-সহিংসতা সঙ্কট সমাধানে ২০১৬ সালের আগস্টে গঠিত হয় অ্যাডভাইজরি কমিশন অন রাখাইন স্টেট। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে ওই কমিশন এক বছরের তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের প্রধান অং সান সু চির কাছে জমা দেয় চলতি বছরের ২৪ আগস্ট।
৬৩ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদন জমা দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই ২৪ আগস্ট দিবাগত রাতে ত্রিশটি পুলিশ ও সেনাচৌকিতে রহস্যজনক হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় নিহত হয় নিরাপত্তা বাহিনীর ১২ সদস্য। তারপরই হামলার জন্য রোহিঙ্গা ‘জঙ্গি’দের দায়ী করে জবাব হিসেবে সেনাবাহিনী পুরো অঞ্চলে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে।
সেনাবাহিনীর ওই হামলায় এখনও পর্যন্ত ৪শ’র বেশি মানুষ মারা গেছে, আর প্রাণভয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে পাড়ি জমাচ্ছে বাংলাদেশে। নৌপথে পালিয়ে আসার পথে নৌকাডুবিতেও বাড়ছে মৃতের সংখ্যা।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন না করার উদ্দেশ্যেই মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এই হত্যাকাণ্ড শুরু করে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
পাকিস্তানের জয়ে শুরু; তামিমের ১৮ রান

স্পোর্টস ডেস্ক : টসের সময় বিশ্ব একাদশ অধিনায়ক ফাফ দু প্লেসি বললেন, “এটি শুধু একটি ক্রিকেট সিরিজ নয়, তার চেয়েও বেশি কিছু।” প্রতিযোগিতামূলক ‌ম্যাচ বটে, আছে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির মর্যাদা। তবে যেখানে প্রতিযোগিতার চেয়ে বেশি মিশে আছে সৌহার্দ্য। পাকিস্তানে ক্রিকেট ফিরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ। পাকিস্তানের জন্য আয়োজিত সেই সিরিজের প্রথম ম্যাচে জিতল পাকিস্তানই।

আন্তজাতিক ক্রিকেটে নির্বাসন থেকে মুক্তির জন্য আয়োজিত টি-টোয়েন্টি সিরিজের নাম আয়োজকরা নিয়েছে ‘ইন্ডিপেন্ডেন্স কাপ’। মঙ্গলবার প্রথম ম্যাচে বিশ্ব একাদশকে পাকিস্তান হারিয়েছে ২০ রানে। এগিয়ে গেছে তিন ম্যাচ সিরিজে।

২০ ওভারে পাকিস্তানের ১৯৭ রান তাড়ায় বিশ্ব একাদশ তুলতে পারে ১৭৭ রান।

বিশ্ব একাদশে বাংলাদেশের প্রতিনিধি তামিম ইকবাল শুরুটা ভালোই করেছিলেন। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি। ফিরেছেন ১৮ বলে ১৮ রানে।

টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বিশ্ব একাদশ। পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ জানালেন, তাদের চাওয়াও ছিল আগে ব্যাটিং। কেন আগে ব্যাটিং চেয়েছিলেন, সেটির প্রমাণ মিলল ব্যাটিংয়ে নামার পর।

দুই চার মারার পরই ওপেনার ফখর জামানকে ফেরান মর্নে মর্কেল। দ্বিতীয় উইকেটে বাবর আজম ও আহমেদ শেহজাদ পাকিস্তানকে এগিয়ে নেন বড় স্কোরের পথে। দুজনে গড়েন ১২২ রানের জুটি।

তিনে নামা বাবর তুলোধুনো করেছেন বিশ্ব একাদশের বোলারদের। শেহজাদ দিয়ে গেছেন সঙ্গ। ৩৪ বলে ৩৯ করা শেহজাদকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন অস্ট্রেলিয়ার বেন কাটিং।

বাবর এগিয়ে যাচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। তবে নিজের শেষ ওভারে তাকে ফেরান ইমরান তাহির। ১০ চার ও ২ ছক্কায় বাবর করেন ৫২ বলে ৮৬ রান।

জোড়া উইকেটে রানরেট কমেছিল একটু। কিন্তু শেষ দিকে শোয়েব মালিকের ২০ বলে ৩৮ আর ইমাদ ওয়াসিমের ৪ বলে ১৫ রান পাকিস্তানকে নিয়ে যায় দুইশর কাছে।

বিশ্ব একাদশের থিসারা পেরেরা ২ উইকেট নিলেও ৪ ওভারে রান দেন ৫১। খরুচে ছিলেন বাকিরাও।

বড় রান তাড়ায় প্রথম ৫ ওভারে উইকেট হারায়নি বিশ্ব একাদশ। তামিম একটু সময় নেন শুরুতে। হাশিম আমলা খেলছিলেন জাদুকরী সব শট। জুটি যখন বড় কিছুর পথে, ফেরেন তখন দুজনই।

দুজনকেই একই ওভারে ফেরান রুম্মান রাইস। বাঁহাতি পেসারকে বেরিয়ে এসে মারতে গিয়ে বোল্ড তামিম। ১৭ বলে ২৬ করে স্লোয়ারে বোল্ড আমলা।

তিনে নেমে অস্ট্রেলিয়ান উইকেটকিপার টিম পেইন ২৫ রান করতে খেলে ফেলেন ২৫ বল। ব্যর্থ ডেভিড মিলারও। প্রয়োজনীয় রান রেট তখন ক্রমে বাড়ছে। অধিনায়ক দু প্লেসি ঝড় তোলার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তবে ফিরে যান ১৮ বলে ২৯ করে।

শেষ দিকে পেরেরার ১১ বলে ১৭ এবং ৩ ছক্কায় ড্যারেন স্যামির ১৬ বলে ২৯ রানে কমে ব্যবধান। তবে ম্যাচে জয়-পরাজয়ের উত্তেজনা শেষ আরও আগেই।

সিরিজের পরের দুটি ম্যাচ বুধ ও শুক্রবার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পাকিস্তান: ২০ ওভারে ১৯৭/৫(ফখর ৮, শেহজাদ ৩৯, বাবর ৮৬, মালিক ৩৮, সরফরাজ ৪, ইমাদ ১৫*, আশরাফ ০*; মর্কেল ১/৩২, থিসারা ২/৫১, কাটিং ১/৩৮, তাহির ১/৩৪, এলিয়ট ০/১৭, স্যামি ০/২৪)।

বিশ্ব একাদশ: (তামিম ১৮, আমলা ২৬, পেইন ২৫, দু প্লেসি ২৯, মিলার ৯, এলিয়ট ১৪, থিসারা ১৭, স্যামি ২৯*, কাটিং ০*; ইমাদ ০/২২, সোহেল ২/২৮, হাসান ০/৪৪, রাইস ২/৩৭, আশরাফ ০/৭, শাদাব ২/৩৩)।

ফল: পাকিস্তান ২০ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: বাবর আজম

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
তামিমকে নিয়েই মাঠে নামল বিশ্ব একাদশ

অবশেষে সত্যিকার অর্থে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরল পাকিস্তানে। বহুল প্রতীক্ষিত  বিশ্ব একাদশ ও পাকিস্তান একাদশের মধ্যকার তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজটি শুরু হয়েছে। প্রথম ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিং করছে ফাফ ডু প্লেসিসের বিশ্ব একাদশ। প্রথম ম্যাচে দলের সঙ্গে রয়েছেন টাইগার ওপেনার তামিম ইকবাল। হাশিম আমলার সঙ্গে বিশ্ব একাদশের ব্যাটিংয়ের শুরুটা করবেন তিনি।

লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হয়েছে ম্যাচটি। প্রথম ম্যাচে বিশ্ব একাদশ দলে জর্জ বেইলি, পল কলিংউড ও স্যামুয়েল বদ্রির জায়গা হয়নি।

২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বন্ধ ছিল। ২০১৫ সালে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল পাকিস্তান সফর করলেও দেশটিতে সত্যিকার অর্থে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরল এই সিরিজটি দিয়েই।

আগামী বুধবার অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি  ম্যাচটি। এরপর ১৫ সেপ্টেম্বর মাঠে গড়াবে তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি। তিনটি ম্যাচই লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে হবে।

বিশ্ব একাদশ : হাশিম আমলা, তামিম ইকবাল,  ফাফ ডু প্লেসিস (অধিনায়ক), ডেভিড মিলার, টিম পেইন, গ্র্যান্ট এলিয়ট, বেন কাটিং, ড্যারেন স্যামি, ইমরান তাহির, মরনে মরকেল ও থিসারা পেরেরা।

পাকিস্তান একাদশ :  ফখর জামান, আহমেদ শেহজাদ, বাবর আজম, শোয়েব মালিক, সরফরাজ আহমেদ (অধিনায়ক), ইমাদ ওয়াসিম, শাদাব খান, ফাহিম আশরাফ, হাসান আলী, রুম্মন রইস ও সোহেল খান

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest