সর্বশেষ সংবাদ-
সাতক্ষীরায় প্রতিপক্ষের হামলায় জখম-২সখিপুরে জামায়াতের এমপি প্রার্থী মুহাদ্দিস আব্দুল খালেকের পথসভাসাতক্ষীরায় বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশনের তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণনানা আয়োজনে সাতক্ষীরা মুক্ত দিবস উদযাপনজাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সাংবাদিকদের সহযোগিতা প্রয়োজন: সাতক্ষীরায় নবাগত এসপিআশাশুনির আনুলিয়া ও কাপসন্ডায় সড়ক নির্মান কাজে দুর্নীতির অভিযোগবাঁশদহে স্বেচ্ছাসেবক দলের আয়োজনে বেগম জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়াকেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতাদের বিরুদ্ধে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তথ্য প্রচার’: সাতক্ষীরা শহর ছাত্রদলের নিন্দাসাতক্ষীরার আপন প্রেসিডেন্ট’স স্কাউট এ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছেমুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিগাঁথা দেবহাটা মুক্ত দিবসে র‌্যালি ও আলোচনা সভা

তালায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের কমিটি গঠন

তালা প্রতিনিধি : বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের তালা উপজেলা শাখার আহবায়ক কমিটি গঠিত হয়েছে। বরেন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম শেখ আবুল খায়ের এর পুত্র শেখ জাহিদুর রহমান লিটুকে আহবায়ক এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম শেখ আব্দুস সামাদ’র পুত্র শেখ আলমগীর হোসেনকে সদস্য সচিব করে আহবায়ক কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার উক্ত কমিটিকে অনুমোদন দেন সাতক্ষীরা জেলা কমিটি।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সদস্য সচিব লাইলা পারভীন সেজুতি জানান, তালা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধ সংসদ সন্তান কমান্ডের ১১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি বৃহস্পতিবার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। উক্ত কমিটিতে শেখ জাহিদুর রহমান লিটুকে আহবায়ক, জাহিদুল ইসলাম রিপনকে যুগ্ম আহবায়ক এবং শেখ আলমগীর হোসেনকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। এছাড়া সদস্য হিসেবে আছাদুল্লাহ মিঠু, নিহার রঞ্জন সরকার, অজয় কুমার ঘোষ বাবলু, তৌহিদুর রহমান মোল্যা, শেখ রাকিবুল ইসলাম মানি, তৌহিদুর রহমান, শাপলা এবং সোয়েব সাদী নয়ন নির্বাচিত হন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
মানুষ মানুষের জন্য -মুহম্মদ জাফর ইকবাল

গত বেশ কিছুদিন হলো পত্রপত্রিকার পৃষ্ঠার দিকে আর তাকানো যাচ্ছে না। মানুষের নিষ্ঠুরতার কথা পড়তে ভালো লাগে না। এ রকম খবর পত্রপত্রিকায় ছাপা হলে নিজের অজান্তেই চোখ ফিরিয়ে নিই। একাত্তর সালে আমাদের এ রকম নিষ্ঠুরতার ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছিল। তখন চোখ ফিরিয়ে নেওয়ার কোনো উপায় ছিল না। আমাদের চারপাশেই ওই ঘটনাগুলো ঘটেছিল। মনে হচ্ছে, ওই দিনগুলো বুঝি আবার ফিরে এসেছে। আমি না চাইলেও আবার ওই রকম ঘটনাগুলো দেখতে হচ্ছে, শুনতে হচ্ছে।

এক মা তার মৃত সন্তানের মুখের সঙ্গে মুখ লাগিয়ে শূন্যদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। এ রকম দৃশ্য সহ্য করা কঠিন! কিন্তু এখন আমরা সবাই জানি, খবরের কাগজের ওই রকম একটি ছবির পেছনে এর চেয়েও ভয়ঙ্কর নির্মম আরও হাজারটি কাহিনি আছে। রোহিঙ্গাদের গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, মেয়েদের ধর্ষণ-গণধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে, নারী-পুরুষ-শিশুদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। ওই ভয়ঙ্কর অত্যাচার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এক-দুইজন নয়, ৪ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। এত অল্প সময়ে এত বেশি শরণার্থী আর কোথাও প্রাণ বাঁচানোর জন্য হাজির হয়েছে বলে আমার জানা নেই।

রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে থাকত। এই মুহূর্তে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গার সংখ্যা কমে হাতে গোনা পর্যায়ে চলে এসেছে। তাদের বেশিরভাগই সেখান থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। বহুদিন থেকে মিয়ানমার এটিই করতে চেয়েছিল। তারা শেষ পর্যন্ত এটি করতে পেরেছে। পৃথিবীর মানুষের সমালোচনা কিংবা ধিক্কার এক কান দিয়ে শুনে অন্য কান দিয়ে বের করে দিয়ে মিয়ানমার তাদের বহুদিনের কাঙ্ক্ষিত চূড়ান্ত সমাধানটি শেষ পর্যন্ত করে ফেলতে পেরেছে।

পৃথিবী ইতিহাসে এ রকম চূড়ান্ত সমাধানের কোনো আভাস নেই। ইসরায়েল নামক রাষ্ট্রটি এর সবচেয়ে স্পষ্ট উদাহরণ। জোর করে একটি জায়গা থেকে সব অধিবাসীকে সরিয়ে দিয়ে সেখানে ইসরায়েল রাষ্ট্রটি তৈরি করা হয়েছে। বিশ্ববিবেকের এতে একটি আঁচড়ও পড়েনি। কাজেই হঠাৎ করে রোহিঙ্গাদের জন্য পৃথিবীর মানুষ ব্যাকুল হয়ে উঠবে, আমি একবারও সেটি মনে করি না।

আমরা নিজের চোখেই দেখতে পাচ্ছি, ওই রোহিঙ্গা বিপর্যয় নিয়ে আমাদের পাশের দেশ ভারতবর্ষের কোনো মাথাব্যথা নেই। চীন ও রাশিয়া মোটামুটি স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে, তারা মিয়ানমারের পক্ষে। একাত্তরে যখন বাংলাদেশ গণহত্যা চলছিল, আমাদের চোখের সামনে শুধু মানুষের লাশ আর লাশ, ঠিক তখনও আমরা শুনতে পেতাম এটি ‘পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়’।

এতদিন পর ওই একই ভাষায় একইভাবে আমরা শুনতে পাচ্ছি, রোহিঙ্গা গণহত্যার ব্যাপারটি হচ্ছে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশ আমেরিকার ‘রিফিউজি’ বা ‘শরণার্থী’ নিয়ে রীতিমতো অ্যালার্জি আছে। তাই বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী নিয়ে তাদের কোনো গরজ থাকার কথা নয়। নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেটি সোজা ভাষায় আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন।

সদা হাস্যময় মিনামারের জেনারেল সাহেব ইউরোপের খুবই জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। সারা পৃথিবীতে তিনি খুবই দাপটের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অং সান সু চিকে সাধারণ মানুষ ইন্টারনেটে একটু গালমন্দ করছে। চোখ, নাক, মুখ বন্ধ করে এ সময়টা পার করে দিলেই পৃথিবীর মানুষ ওই কথা ভুলে যাবে। আমি প্রতিদিন ইন্টারনেটে বিবিসিতে একবার চোখ বুলিয়ে দেখি।

এর মধ্যেই প্রাত্যহিক খবরে এখন রোহিঙ্গাদের কোনো খবর নেই। প্রাণ বাঁচানোর জন্য লাখ লাখ নারী-শিশু ও পুরুষের নিজ বাসভূমি ছেড়ে অন্য দেশে আশ্রয় নেওয়ার ঘটনাটির গুরুত্ব বিশেষ অবশিষ্ট নেই। কাজেই মোটামুটি অনুমান করা যায়, মিয়ানমার তাদের রাখাইন রাজ্যটি মোটামুটি ঝামেলামুক্ত করে ফেলেছে। সেখানে আর কোনো রোহিঙ্গা নেই। কাজটি করতে হয়তো অনেক সময় লাগত। কিন্তু অনেক দ্রুত করে ফেলা গেছে।

পুলিশ-মিলিটারির ঘাঁটি আক্রমণ করে অল্প কিছু পুলিশ-মিলিটারিকে মেরে রোহিঙ্গাদের চরমপন্থি দল ‘আরসা’ পুরো কাজটি খুব সহজ করে দিয়েছে। এখন মিয়ানমারের বিশাল মিলিটারি বাহিনী খুবই ‘যৌক্তিক’ভাবে রোহিঙ্গাদের গণহত্যা করতে পারছে। এভাবে যে গণহত্যা করা যায়, আমাদের চোখের সামনেই সেটি অনেকবার হতে দেখেছি আমরা।

দুই.
শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার পাওয়া ভদ্রমহিলা অং সান সু চি সেদিন তাদের টেলিভিশনে একটা ভাষণ দিয়েছেন। ভাষণে তিনি কী বলবেন মোটামুটি অনুমান করা গিয়েছিল এবং সেটিই বলেছেন। একাত্তরে বাংলাদেশের এক কোটি শরণার্থী ভারতবর্ষে আশ্রয় নিয়েছিল। পৃথিবীর বেশকিছু দেশ যখন তা নিয়ে পাকিস্তানের ওপর চাপ দিয়েছিল, তখন কোনো একপর্যায়ে শরণার্থীদের ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল পাকিস্তানের মিলিটারি। ওই আহ্বান শুনে একটা শরণার্থীও ফিরে যায়নি। কেন যাবে?

পাকিস্তানের মিলিটারিরাও জানত, সেটি ফাঁকা বুলি। শরণার্থীরাও জানত এটা ধাপ্পাবাজি। নিজের জীবন নিয়ে কে ধাপ্পাবাজির ফাঁদে পা দেবে? মিলিটারির গুলি খেয়ে মারা যাওয়ার থেকে অনাহারে, রোগে, শোকে, কলেরায় মারা যাওয়াটাই তাদের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছিল। শরণার্থী ক্যাম্পে তখন প্রায় ৮ লাখ থেকে ১০ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল।

এবারে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া ভদ্রমহিলা পাকিস্তানের মিলিটারি থেকে এক কাঠি সরেস! তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, যাচাই-বাছাই করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত নেওয়া হবে। যাচাই-বাছাই করার প্রক্রিয়াটি কী, আমরা এখনো তা জানি না। যারা প্রাণ নিয়ে পালিয়ে এসেছে, তাদের কাছে কী কাগজপত্র প্রমাণ হিসেবে আছে তা আমার জানা নেই।

সবচেয়ে বড় কথা, ওই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কোনো নাগরিকত্ব নেই। ব্যাপারটি বুঝতেই পারি না, একজন মানুষ একটি দেশে থাকে। কিন্তু সে ওই দেশের নাগরিক নয়! কোনো দেশের সংবিধানে কথাগুলো লেখা থাকে ওই দেশের নাগরিকের জন্য। কাজেই যারা ওই দেশের নাগরিক নয়, তাদের জন্য রাষ্ট্রের কোনো দায়দায়িত্ব নেই। এর অর্থ রোহিঙ্গা শিশু লেখাপাড়া করতে পারবে না, অসুস্থ হলে চিকিৎসা পেতে পারবে না, বাস-ট্রেনে উঠতে পারবে না, দেশের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পারবে না।

সবচেয়ে ভয়ঙ্কর কথা, দেশের সুনাগরিকরা যদি দা-চাপাতি হাতে নিয়ে রোহিঙ্গাদের কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলে, তাহলে সেটি অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হবে না। রোহিঙ্গা মেয়েরা যেহেতু নাগরিক নয়, সেহেতু তাদের ধর্ষণ করাও নিশ্চয়ই গুরুতর অপরাধ নয়। যে রাষ্ট্রের অনেক মানুষের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়, ওই দেশের সংবিধানটি দেখার আমার খুবই কৌতুহল।

শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া ভদ্রমহিলা শরণার্থীদের যাচাই-বাছাই করে ফিরে যাওয়ার প্রক্রিয়ার কথা বলে অবশ্য স্বীকার করে ফেলেছেন, শরণার্থী বলে কিছু একটা আছে। আমি ভেবেছিলাম, তিনি সেটিও অস্বীকার করবেন। চীন, রাশিয়া ও ভারতবর্ষ পাশে থাকলে যে কোনো মিথ্যা কথা খুব জোর দিয়ে বলা যায়।

নাফ নদীর এপার থেকে যখন দেখা যায় রাখাইন রাজ্যে গ্রামে গ্রামে আগুন জ্বলছে, তখন আগুনটাকে অস্বীকার করা একটু কঠিন হয়ে যায়। এখন রাখাইন রাজ্যের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা নিজেরাই নিজেদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে। এর চেয়ে নিষ্ঠুর কৌতুক আর কী হতে পারে!

শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া ভদ্রমহিলার বক্তব্যের সবচেয়ে চমকপ্রদ বক্তব্য হচ্ছে, তাদের দেশের মিলিটারিরা ৫ সেপ্টেম্বরের পর আর কিছু করেনি। বক্তব্যটিকে সোজা বাংলায় অনুবাদ করলে এ রকম শোনাবে ‘২৪ আগস্ট থেকে আমাদের মিলিটারি রোহিঙ্গাদের নির্বিচারে হত্যা করেছে, মেয়েদের ধর্ষণ করেছে, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে, রোহিঙ্গারা প্রাণ বাঁচানোর জন্য বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে।

মোটামুটি সবাইকে যেহেতু তাড়িয়ে দেওয়া গেছে, এখন হত্যা করার জন্য আর কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সেহেতু ৫ সেপ্টেম্বর থেকে হত্যা, ধর্ষণ, বাড়ি জ্বালানো বন্ধ আছে।’ তবে এ কথাটি নির্জলা মিথ্যা। ৫ সেপ্টেম্বরের পরও রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের গ্রাম পোড়ানো হয়েছে। তাদের ওপর হামলা হয়েছে।

সবচেয়ে বড় কথা, শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া ভদ্রমিহলার বক্তব্য শুনে মনে হলো, ৫ সেপ্টেম্বর মিলিটারি অ্যাকশন বন্ধ করার জন্য সারা পৃথিবী থেকে তিনি এক ধরনের বাহবা কিংবা সম্ভব হলে শান্তির জন্য দ্বিতীয় আরেকটি নোবেল পুরস্কার আশা করছেন! তা না হলে এত বড় গলায় এত বড় একটা মিথ্যা কথা কীভাবে বলা হয়?

মিয়ানমারে ছুটে গিয়েছিলেন আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। সামরিক শাসন শেষ হয়ে মিয়ানমার গণতান্ত্রিক দেশ হয়ে গেছে। ওই আনন্দে সারা পৃথিবী উদ্বাহু হয়ে নৃত্য করেছে। রোহিঙ্গা বিপর্যয়ের কারণে আমরা এখন মিয়ানমারে গণতন্ত্রের প্রকৃত ছবিটা দেখতে পাচ্ছি। তাদের সংসদের শতকরা ২৫ ভাগ আসন মিলিটারিদের জন্য।

শুধু তা-ই নয়, কোনো বিল পাস করতে হলে শতকরা ৭৫ ভাগ ভোট পেতে হয়। এর অর্থ কোন বিল পাস হবে এবং কোন বিল পাস হবে না, সেটি ওই দেশের মিলিটারি ঠিক করে দেয়। মজা এখানেই শেষ নয়, সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে মিলিটারি। কিন্তু দেশটিকে পৃথিবীর সামনে উপস্থাপন করার জন্য রয়েছেন শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া সারা পৃথিবীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত ফটোজেনিক এক ভদ্রমহিলা। কী মজা!

আমি দেশ, রাজনীতি, অর্থনীতি কিছুই বুঝি না। সাধারণ মানুষের কমনসেন্স দিয়ে সবকিছু বোঝার চেষ্টা করি। একেবারে মৌলিক যে বিষয়গুলো সাধারণ জ্ঞান দিয়ে বুঝতে হবে, সেটি হচ্ছে এই পৃথিবীতে সব মানুষের সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার আছে।

পৃথিবীটা নানা দেশে ভাগ করা আছে। সব দেশের দায়িত্ব নিজের দেশের মানুষকে সুখ-শান্তিতে বেঁচে থাকার জন্য সাহায্য করা। গায়ের রং, মুখের ভাষা কিংবা ধর্মের জন্য কাউকে পছন্দ না হলেই তাকে দেশ থেকে বের করে দেওয়া যাবে না। ইসরায়েল কিংবা মিয়ানমার সেটি করতে পারবে না। তাদের যত বড় খুঁটির জোরই থাকুক না কেন, সেটি অন্যায় এ কথাটি আমরা উচ্চকণ্ঠে বলতে পারব।

আমার ‘উচ্চকণ্ঠ’ আমার চারপাশের মানুষের কান পর্যন্ত পৌঁছায়। কিন্তু যখন এক ডজন নোবেল পুরস্কার পাওয়া মানুষ ওই একই কথা বলেন, তখন এ কথাটি সারা পৃথিবীর বিবেককে নাড়া দেয়। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে যখন বলা হয়, এটি হচ্ছে একটি জাতি নিঃশেষ করে দেওয়ার ধ্রুপদি প্রক্রিয়া তখন একটুখানি হলেও পৃথিবীর সব মানুষের ওপর বিশ্বাস আরও একটুখানি ফিরে আসে।

এর মধ্যে আরও একটি ব্যাপার আছে। পৃথিবীর বৈচিত্র্য হচ্ছে সৌন্দর্য। একটি দেশের মানুষের ভেতর যত বৈচিত্র্য থাকবে, ওই দেশটি হবে তত সম্ভাবনাময়। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই দেশে পৃথিবীর সব দেশের সব জাতির মানুষ রয়েছে। সত্যি কথা বলতে কী এটি একটি বড় দেশ নয়, এটি একটি ছোট পৃথিবী। এ কারণে ওই দেশটি এত উন্নত হতে পেরেছে (এই মুহূর্তে ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য দেশটির প্রকৃত সৌন্দর্য অস্বীকার করে এটিকে বৈচিত্র্যহীন দেশে পরিণত করার চেষ্টা করছে!)।

আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে বৈচিত্র্য খুব বেশি নয়। এ জন্য অল্প যে কয়েক আদিবাসী বা ভিন্ন কালচারের মানুষ রয়েছে, আমাদের বুক আগলে তাদের রাখার চেষ্টা করতে হয়। মিয়ানমারের জন্যও এ কথাটাই সত্যি। তাদের দেশের শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। কাজেই ভিন্ন ধর্মের অল্প যে কয়েকজন রয়েছে, তাদের মূল্যবান সম্পদের মতো বুক আগলে রক্ষা করার কথা ছিল! মিয়ানমারের জেনারেলদের ওই সৌন্দর্য অনুভব করার ক্ষমতা নেই।

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী তাদের কাছে আপদ-বালাই। তাদের নিশ্চিহ্ন করে দিলেই তাদের শান্তি। বলতে কোনো দ্বিধা নেই, তারা আধুনিক পৃথিবীর মানুষ এখনো হতে পারেনি। তাদের জন্য আমাদের করুণা হয়।

বাংলাদেশি হিসেবে আজ আমি অনেক গর্ব অনুভব করি যখন দেখতে পাই, আমাদের দেশটি হতভাগ্য রোহিঙ্গাদের বুক আগলে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে এসেছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী তাদের দেখতে শরণার্থী শিবিরে গিয়েছিলেন। তখন বিদেশি এক সাংবাদিক তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘এই রোহিঙ্গাদের আপনি কতদিন রাখবেন?’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘কতদিন? তারা সবাই মানুষ!’ পৃথিবীর সবাই লাভ-ক্ষতির হিসাব কষছে! আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী ওই লাভ-ক্ষতির হিসাব করেননি। একেবারে পরিস্কারভাবে বলেছেন, তিনি মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন!

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই!

মুহম্মদ জাফর ইকবাল: কথাসাহিত্যিক ও অধ্যাপক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে এবার ‘উদ্বিগ্ন’ মিয়ানমার

রাখাইন রাজ্য থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ বাংলাদেশে চলে আসার বিষয়ে মিয়ানমার সরকার ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’ বলে জানিয়েছেন দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হেনরি ভ্যান থিও।

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ‘রোহিঙ্গা’ সম্বোধন না করে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তিনি বলেন, ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ এমন একটি সমস্যার ব্যাপারে মিয়ানমার তদন্ত করছে। তবে সরকারি বিবৃতির পুনরাবৃত্তি করে রাখাইন রাজ্যে সৃষ্ট সংকটের কারণ এখনও স্পষ্ট নয় এবং দেশটির মুসলিম জনগোষ্ঠীর বেশিরভাগই দেশে রয়ে গেছে বলে দাবি করেন তিনি।

বুধবারের অধিবেশনে দেয়া ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমি আনন্দের সঙ্গে আপনাদের জানাচ্ছি যে, পরিস্থিতি এখন আগের চেয়ে উন্নত।’

ভ্যান থিও বলেন, শুধু মুসলিম না, অন্যান্য সংখ্যালঘুরাও রাখাইন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে। নিরীহ বেসামরিক জনগণ যেন ক্ষয়ক্ষতি বা হামলার শিকার না হয় সে ব্যাপারে সবরকম পদক্ষেপ নিতে নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেতা এবং রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি’র পরিবর্তে অধিবেশনে অংশ নিয়েছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট হেনরি ভ্যান থিও। রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলা করার লক্ষ্যে দেশেই থাকতে হবে উল্লেখ করে অধিবেশনে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানান সু চি।

এর আগে মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে অং সান সু চি বলেন, ৫ সেপ্টেম্বরের পর থেকে রাখাইনে আর কোন সহিংসতা চলছে না। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ‘রোহিঙ্গা’ হিসেবে স্বীকার না করে ‘সংখ্যালঘু মুসলিম’ বা ‘বাঙালি’ বলে অভিহিত করা হয়।

সু চিও ভাষণে বলেছিলেন, দেশের বেশিরভাগ সংখ্যালঘু মুসলিমই মিয়ানমার ছেড়ে যায়নি।

তবে ভাষণে রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীদের নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালানোর অভিযোগের ব্যাপারে কিছুই বলেননি সু চি। যার ফলে বিশ্বজুড়ে তীব্র সমালোচনা ও নিন্দার মুখে পড়ে তার ভাষণ।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
‘ক্লাসিক’ কোহলি আর কুলদীপের হ্যাটট্রিকে ভারতের জয়

স্টিভেন স্মিথ ক্যারিয়ারের শততম ওয়ানডে স্মরণীয় করতে পারলেন না বিরাট কোহলি আর কুলদীপ যাদবের জন্য। অন্যরা যখন রানের জন্য খাবি খেয়েছেন তখন কোহলি ১০৭ বলে ৯২ রান করে শিখিয়ে গেছেন কীভাবে এমন উইকেটে ব্যাট করতে হয়। পরে কুলদীপ তার হ্যাটট্রিকের অভ্যাস জাতীয় দলেও টেনে আনেন। দুজনের এমন দাপটের দিনে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে দ্বিতীয় ম্যাচে ৫০ রানে হেরে গেছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ম্যাচে তাদের হারতে হয়েছিল ২৬ রানে।

কুলদীপের পরিচয় দিতে গেলে হ্যাটট্রিক শব্দটি সবার আগে চলে আসে। প্রথম ভারতীয় বোলার হিসেবে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে হ্যাটট্রিক করেছিলেন। এবার তৃতীয় ভারতীয় হিসেবে জাতীয় দলের হয়ে হ্যাটট্রিক করলেন। তিনি এদিন ১০ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৫৪ রান খরচ করে ৩ উইকেট নিয়েছেন। ১৯৮৭ সালে প্রথম ভারতীয় হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে হ্যাটট্রিক করেছিলেন চেতন শর্মা। চার বছর বাদে করেছিলেন কপিল দেব।

ইডেনে এদিন টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন কোহলি। এই নিয়ে টানা তিন ম্যাচে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ভারত অধিনায়ক। যা তাকে খুব একটা করতে দেখা যায় না। অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর প্রথম ১৫ ম্যাচে একবার পরপর তিন ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করেছিলেন। অজি বোলারদের সামনে কোহলি আর ওপেনার রাহানে ছাড়া আর কেউ সেভাবে সুবিধা করতে পারেননি। ৬৪ বল খেলে ৫৫ রানে রাহানে রানআউট হওয়ার পর কোহলিই দলকে ২৫২ রানের সম্মানজনক স্কোর এনে দেন। ১০৭ বল খেলে ৩১তম শতক থেকে ৮ রান দূরে থামেন তিনি। বাকিদের মধ্যে সর্বোচ্চ রান কেদার যাদবের, ২৪। ভারতের সাবেক অধিনায়ক ধোনি ১০ বল খেলে ৫ রানে বিদায় নেন।

জবাব দিতে নেমে ভালোই লড়ছিল অস্ট্রেলিয়া। ক্যারিয়ারের শততম টেস্টে মাঠে নামা স্মিথ ৭৬ বল খেলে ৫৯ রান করে দলকে পথে রাখার চেষ্টা করেন। হার্দিকের বলে রবীন্দ্র জাদেজার হাতে তিনি ক্যাচ দিয়ে ফিরলে অস্ট্রেলিয়া ধীরে ধীরে চুপসে যায়। স্মিথ পঞ্চম অস্ট্রেলিয়ান যিনি শততম ওডিআইতে ৫০ কিংবা তার বেশি রান করলেন।

স্মিথের এমন লড়াই থই পায়নি মিডলর্ডারের ব্যর্থতায়। ১৩৮ রানে তুলতে ৫ উইকেট পড়েছিল। সেখান থেকে আর দশ রান যোগ করতেই ৮ উইকেট পড়ে যায়। কুলদীপ ১৪৮ রানের মাথায় একে একে তুলে নেন ম্যাথু ওয়েড (২) , অ্যাশটন অ্যাগার (০) এবং প্যাট কামিন্সকে (০)।

শেষ জুটিতে আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখেন মারকাস স্টইন্স। কেন রিচার্ডসনকে নিয়ে বেশি বেশি স্ট্রাইকে থেকে ২০০ পার করেন। নিজে তুলে নেন অর্ধশতক। ৪৪তম ওভারে কোহলি ধোনির সঙ্গে আলাপ করে ভুবনেশ্বরকে আক্রমণে আনেন। ভুবনেশ্বর প্রথম বলেই ৬২ রান করা স্টইন্সকে নিজের তৃতীয় শিকারে পরিণত করেন!

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
র‌্যাম্প মডেল থেকে জঙ্গি কমান্ডার ইমাম মেহেদী চারদিনের রিমান্ডে

র‌্যাম্প মডেল থেকে জেএমবির ‘ব্রিগেড আদ-দার-ই কুতনী’র কমান্ডার হওয়া ইমাম মেহেদী হাসান ওরফে আবু জিব্রিলের বিরুদ্ধে চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম সাব্বির ইয়াসির আহসান চৌধুরী এ আদেশ দেন।

এর আগে, বনানী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায় তার বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আদালত শুনানি শেষে চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

২০১৫ সালে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবি’র ‘সারোয়ার-তামিম গ্রুপ’-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলেও এর আগে র‌্যাম্প মডেলিংয়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন জঙ্গি ইমাম মেহেদী হাসান। তিনি মেহেদী নামে র‌্যাম্প মডেলিংয়ের কাজ করতেন।

র‌্যাব জানায় মেহেদী দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটি থেকে অনার্স সম্পন্ন করে। এছাড়া মডেলিংয়ের পাশাপাশি হোম ডেকোর বা ঘরবাড়ি সাজানোর সরঞ্জামের ব্যবসা করত মেহেদী।

র‌্যাব আরো জানায় তথ্যপ্রযুক্তিতে খুবই দক্ষ মেহেদী হাসান। এছাড়াও তিনি খুব ভালো অনুপ্রেরণামূলক বক্তা (মোটিভেশনাল স্পিকার) ছিলেন। অনুপ্রেরণামূলক কথাবার্তার মাধ্যমে তিনি অন্যদের জঙ্গিবাদে জড়াতেন।

র‌্যাব-৩ বুধবার অভিযান চালিয়ে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের দক্ষিণ বনশ্রী এলাকা থেকে জেএমবি’র সারোয়ার-তামিম গ্রুপের ‘ব্রিগেড আদ্-দার-ই-কুতনী’র কমান্ডার ইমাম মেহেদী হাসান (২৯) ওরফে আবু জিবরিলকে গ্রেফতার করে।

এ সময় তার কাছ থেকে দুটি ল্যাপটপ, মোবাইল ও পাসপোর্টসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস জব্দ করা হয়। ইমাম মেহেদী ‘আবু জিবরিল’ নামে জঙ্গি সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
মুমিনুল-সাব্বির-মুশফিকের ফিফটিতে ব্যাটিং প্রস্তুতি

তিন ফিফটিতে ব্যাটিং প্রস্তুতিটা ভালোই হল বাংলাদেশের। ইমরুল-সৌম্য ভালো শুরু করেও অবশ্য ইনিংস বড় করতে পারেননি। মুমিনুল, মুশফিক থেমেছেন ফিফটি পেরিয়ে। অর্ধশতকের পর সাব্বিরকে অপরাজিত রেখে এসেছে ইনিংস ঘোষণার ডাক। পরে প্রতিপক্ষের একটি উইকেটও তুলে নেয়া গেছে। কেবল মাহমুদউল্লাহ ও লিটনের রান না পাওয়াটাই প্রথম দিনের অপূর্ণতা।

বেনোনিতে সাউথ আফ্রিকার আমন্ত্রিত একাদশের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৭৪.১ ওভারে ৭ উইকেটে ৩০৬ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ। পরে এক উইকেটে ২১ রানে দিন শেষ করেছে স্বাগতিকরা। ১২ রান করা ইস্সেক ডিকগলের উইকেটটি নিয়েছেন সাব্বির! রানআউটে।

তিনদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ হলেও বাংলাদেশ ব্যাটিং করে গেছে ৪-পেরোনো রানরেট ধরে রেখে। বাউন্ডারি এসেছে ৪৩টি, অর্থাত ১৭২ রানই এসেছে বাউন্ডারি থেকে। বাউন্ডারির ফুলঝুরি ছোটার আগে অবশ্য একটি দুঃসংবাদ নিয়েই এগিয়েছে সফরকারীদের ইনিংস। চোটে তামিমের মাঠ ছাড়া।

তামিম ইকবাল এদিন রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন। বাংলাদেশের ইনিংস তখন সবে ৪.২ ওভারে, সংগ্রহটা ১১! মাংসপেশিতে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ৫ রান করা তামিম। দলীয় সূত্র জানাচ্ছে, তেমন গুরুতর নয় তামিমের চোট। স্ক্যান করানোর পর বাকিটা নিশ্চিত হওয়া যাবে।

তামিম দুশ্চিন্তার দিনে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার কাজটা ভালোই করছিলেন ইমরুল কায়েস ও সৌম্য সরকার। ব্যাটে রানের আভাস মিলেছে রান খরায় ভুগতে থাকা দুজনের। আবার দুজনই ইনিংস টেনে নিতে পারেননি। ৭৩ রানের জুটি গড়ে বিচ্ছিন্ন হয়েছেন। আগে ফেরেন ইমরুলই। লেগস্পিনার শন ভন বের্গের বলে ডিকগলের হাতে ক্যাচ দিয়ে। অনেকটা আক্রমণাত্মক ঢংয়ে খেলে করা ৪ চারে ৫১ বলে ৩৪ রান বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের নামের পাশে।

সৌম্য ফিরেছেন জুটিসঙ্গীর বিদায়ের তিন ওভার পরই। বাউন্সি কন্ডিশনে ভালো খেলেন। অস্ট্রেলিয়া সিরিজে রানখরার পরও তার থেকে তাই আস্থা হারায়নি টিম ম্যানেজমেন্ট। নিয়ে গেছে সাউথ আফ্রিকায়। সেটার প্রতিদানের আভাসই দিচ্ছিলেন সৌম্য। কিন্তু ভালো শুরু করেও ফিফটির আগেই ফিরেছেন বাঁহাতি উদ্বোধনী।
মিডিয়াম পেসার মিগায়েল প্রিটোরিয়াসের বলে উইকেটরক্ষক ক্ল্যাসেনের গ্লাভসে ধরা পড়েন সৌম্য। ৮ চারে ৬৯ বলে ৪৩ রানের ইনিংস তার। সেটির চেয়েও বড় ব্যাপার, ক্রিজে কাটিয়েছেন প্রায় দুই ঘণ্টা, ব্যাটিংয়ে ছিল আত্মবিশ্বাসের ছাপ।
পরে মুমিনুল হকের সঙ্গে যোগ দেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। দুজনের জমে ওঠা জুটিটা ভাঙে ১১৯ রানে পৌঁছে। ওয়ানডে ঢংয়ে ৯ চারে ৭৩ বলে ৬৮ রানের ইনিংস সাজিয়েছেন মুমিনুল। মিডিয়াম পেসার অ্যালেক্স কোহেনের বলে ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে।
এরপরই ছোটখাট ব্যাটিং-ধস! হতাশ করেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। টেস্ট ক্যারিয়ার সচল করার সুযোগ পেয়ে প্রস্তুতিটা নিতে পারেননি। কোহেনের বলেই ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেছেন মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলে।
মুশফিক দ্রুতই তাকে অনুসরণ করেছেন ৬৩ রানে। ৮ চারে ৮৫ বলের ইনিংসটি থেমেছে কোহেনের বলে ক্যাচ দিয়েই। প্রোটিয়া এই মিডিয়াম পেসার পরে ফেরান রানের খাতা খুলতে না পারা লিটস দাসকেও।

সাব্বির তখনও ছিলেন। থাকলেন ইনিংস ঘোষণা করা পর্যন্ত। মেহেদী হাসান মিরাজকে (১৮) নিয়ে গড়েছেন ৫২ রানের জুটি। তার ৫৮ রানের অপরাজিত ইনিংসটা ৯ চারে ৮৯ বলে সাজানো। শেষদিকে তাসকিন আহমেদ ৮ রানে অপরাজিত ছিলেন।

প্রোটিয়াদের একাদশের সেরা ৪ উইকেট নেয়া অ্যালেক্স কোহেনই। সেটা নিতে ১১ ওভারে মাত্র ২৩ রান খরচ করেছেন।

প্রথম দিনে ব্যাটিংটা ভালোই হল। দ্বিতীয় দিনে মানিয়ে নেয়ার কাজটা এখন বোলারদের।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
রোহিঙ্গা নারীর মেয়ের নাম শেখ হাসিনা

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর জাতিগত নিধনের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া খাদিজার (২০) পৃথিবী আলো করে এসেছে এক কন্যা সন্তান। তিনি সদ্যপ্রসূত এই শিশুটির নাম রেখেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে।

ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আগলে রাখায় প্রধানমন্ত্রীকে বিশ্ব গণমাধ্যম অ্যাখ্যায়িত করেছে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ বলে, তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেই রোহিঙ্গা শিশুর এই নামকরণ।

সম্প্রতি মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযান শুরুর পর ২৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে।

কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে গত ২৬ দিনে ১৭৩ রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম হয়েছে। এই হিসাবে এখন প্রতিদিন গড়ে প্রায় সাত থেকে আটটি করে শিশুর জন্ম হচ্ছে। এছাড়া রাখাইনে জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে আশ্রয় নিয়েছেন সন্তানসম্ভবা আরও প্রায় ৭০ হাজার নারী।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে খাদিজার (২০) স্বামীকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে দেশটির সেনারা। এরপর নিজ ভিটা-মাটি ছেড়ে মা ও বোনকে নিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন এই নারী। ছয় জনের পরিবারের মধ্যে বাকিরা হত্যার শিকার হয়।

আট মাসের সন্তানকে গর্ভে নিয়ে তার মা আলুম বাহারের সঙ্গে দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন খাদিজা। নীল-কালো রঙের বোরকা পরা খাদিজা সেই দুঃসহ অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেন সাংবাদিকদের।

তিনি বলেন, গোটা রাখাইন রাজ্য আগুনে পুড়ছে। আমার ঘরও পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। মিয়ানমার থেকে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে এসেছি। গর্ভে আট মাসের সন্তান নিয়ে বেঁচে থাকার সংগ্রাম করেছি। এখানে এসে এক মেয়ে সন্তানের জন্ম দেই। মিয়ানমারে আমার স্বামীকে হারিয়েছি। এখানে এসে একটা কন্যা সন্তানের জন্ম দেই। সন্তানের নাম রেখেছি শেখ হাসিনা।

খাদিজার মা আলুম বাহার বলেন, অনেক কষ্ট নিয়ে আমরা বাংলাদেশে এসেছি। আমার মেয়ে গর্ভবতী ছিলো। সে এখানে এসে এক কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছে। তার নাম শেখ হাসিনা রেখেছি। নতুন জীবনের আশার আলো নিয়ে এসেছে সে। এখন হয়তো আমাদের জীবনে কিছুটা শান্তি আসবে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
আদালত থেকে আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় তিন পুলিশ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ সাতক্ষীরা জেলা জজ আদালতের কাঠগড়া থেকে আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় পুলিশের এক এটিএসআইসহ তিন সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে তাদের এ সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পুলিশের তিন সদস্যরা হলেন, সহকারী টাউন দারোগা (এটিএসআই) আক্তারুল ইসলাম, কনস্টেবল আবুল হোসেন ও আব্দুল আলিম।
সাতক্ষীরা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক আশরাফুল ইসলাম জানান, কোর্ট থেকে আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় পুলিশের এটিএসআই আক্তারুল ইসলাম, কনস্টেবল আবুল হোসেন ও আব্দুল আলিমকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
প্রসঙ্গত ঃ বুধবার দুপুরে আদালতের কার্যক্রম চলাকালে কাঠগড়া থেকে হ্যান্ডক্যাপ পরিহিত অবস্থায় আমজাদ হোসেন নামে হত্যা মামলার এক আসামি পালিয়ে যায়। পলাতক আমজাদ হোসেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আগুনপুর গ্রামের বাসিন্দা। সে নিজ স্ত্রী আছিয়া খাতুন হত্যা মামলার আসামি। ##

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest