সর্বশেষ সংবাদ-

33f122513c63e812abe3acf44725b563-58efb9f969425গুজরাট লায়ন্সের বিপক্ষে ১০ উইকেটের জয়ের পর মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের কাছে হেরেছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। দুই ম্যাচেই ছিলেন না সাকিব আল হাসান। বৃহস্পতিবারও বাংলাদেশি অলরাউন্ডারকে ছাড়া কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবকে মোকাবিলা করেছে কলকাতা এবং সফল হয়েছে। তিন ম্যাচে দ্বিতীয় জয় তারা পেয়েছে ৮ উইকেটে। আর টানা দুই জয়ের পর হেরেছে পাঞ্জাব।

দুইটি খেলে দুটিতেই জিতে আইপিএলে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে কলকাতার মাঠে নেমেছিল পাঞ্জাব। পেসার উমেশ যাদবের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে তারা করে ৯ উইকেটে ১৭০ রান। কলকাতার এ বোলার ৪ ওভারে ৪ উইকেট নেন ৩৩ রান দিয়ে।

লড়াকু সংগ্রহে পাঞ্জাবের কেউই ৩০ এর ঘরে রান করতে পারেননি। সর্বোচ্চ ২৮ রানের ইনিংস খেলেন মানান ভোহরা ও ডেভিড মিলার। ২৫ রান করেছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, হাশিম আমলা ও ঋদ্ধিমান সাহা।

১৭১ রানের লক্ষ্যে নেমে কলকাতা শুরু থেকে ছিল আগ্রাসী। সুনীল নারিন ও গৌতম গম্ভীর ঝড় তোলেন। মাত্র ৫.৪ ওভারে ৭৬ রান তোলার পর এ জুটি ভাঙে। ১৮ বলে চারটি চার ও তিনটি ছয়ে ৩৭ রান করে আউট হন ওয়েস্ট ইন্ডিজের তারকা।

নারিন যাওয়ার পর ক্রিজে নেমে রবিন উথাপ্পাও ছিলেন মারকুটে। ১৬ বলে ২৬ রান করেন তিনি। দলীয় ১১৬ রানে কলকাতার দ্বিতীয় এ উইকেটের পতন ঘটে। হোম দলের জয়ের পথে আর কোনও চ্যালেঞ্জ ছুঁড়তে পারেনি পাঞ্জাব। গম্ভীর ৩৪ বলে ৮ চারে ফিফটি হাঁকিয়ে অপরাজিত থেকে দলকে জেতান। ৪৯ বলে ৭২ রান করেন কলকাতার অধিনায়ক। তার ইনিংসে ১১টি বাউন্ডারি, নেই কোনও ছয়। ১৬.৩ ওভারে মনীষ পান্ডের জয়সূচক ছয়টি আসে। ১৬ বলে ২৫ রানে অপরাজিত ছিলেন মনীষ। ২১ বল হাতে রেখে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে কলকাতা করে ১৭১ রান।

এ জয়ে ৩ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠেছে কলকাতা। আর সমান পয়েন্ট নিয়ে তিনে নেমে গেছে পাঞ্জাব। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সও ৪ পয়েন্ট নিয়ে যথাক্রমে দুই ও চারে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

d59d660b00676a791be2bd324551c290-58f05ae7c47a7আফগানিস্তানের নাঙ্গাহার প্রদেশে ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের গুহা, সুড়ঙ্গ ও বাংকার লক্ষ্য করে বৃহস্পতিবার পারমাণবিক বোমার পর সবচেয়ে বড় ও ভয়ংকর বোমা নিক্ষেপ করেছে মার্কিন সেনাবাহিনী। তবে এ বিষয়ে আফগান কর্তৃপক্ষকে কিছুই জানায়নি মার্কিন সেনারা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের এক খবরে বিষয়টি জানা গেছে।

আফগান কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হওয়ার পরই তারা বিষয়টি জানতে পেরেছেন। আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র মোহাম্মদ রাদমানেশ বলেন, এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা কিছুই জানি না ।

তিনি আরও বলেন, যত সহযোগিতা পাওয়া যায় আমরা তা নেব। সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে তা ব্যবহার করা হবে। কারণ আমরা বেসামরিক নাগরিকদের মৃত্যু চাই না।

নাঙ্গাহার প্রদেশের পুলিশের মুখপাত্র হযরত হুসেইন মাশরিকিওয়াল জানান, যেখানে বোমাটি নিক্ষেপ করা হয়েছে সেখানে মার্কিন জোট ও আফগান সেনারা বেশ কয়েকদিন আইএসবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছে। তবে বৃহস্পতিবার বোমা নিক্ষেপের বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নন।

নাঙ্গাহার প্রদেশের আচিন জেলাটি স্থানীয় আফগান আইসের শক্তঘাঁটি। মার্কিন কর্মকর্তারা মনে করেন, পাকিস্তান ও উজবেকিস্তানের জঙ্গিরাই আইএসের হয়ে কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। এই জঙ্গিগোষ্ঠী নিজেদের ইসলামিক স্টেট খোরাসান বলে দাবি করে।

আচিন জেলার গভর্নর এসমাইল শিনওয়ারি বিবিসিকে জানিয়েছেন, ওই এলাকায় কোনও বেসামরিক নাগরিক বসবাস করতেন না, ফলে সাধারণ কোনও মানুষের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।  এর আগে তিনি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, এটি ছিল তার দেখা সবচেয়ে বড় বিস্ফোরণ।

যুক্তরাষ্ট্র এখনও এই বোমা হামলার বিস্তারিত তথ্য পায়নি। তবে স্থানীয় কর্মকর্তারা বিবিসিকে জানিয়েছেন, অনেক জঙ্গি নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে এক শীর্ষ নেতার ভাইও রয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আরেকটি সফল ঘটনা বলে হামলাকে আখ্যায়িত করেছেন।

উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে আফগানিস্তানের নাঙ্গারহার প্রদেশে আইএসের সঙ্গে সংঘর্ষে মার্কিন বিশেষ বাহিনীর এক সদস্য নিহত হন। এর জের ধরেই বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার দিকে আইএস জঙ্গিদের অবস্থান লক্ষ্য করে সবচেয়ে শক্তিশালী বোমা জিবিইউ-৪৩ নিক্ষেপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এই বোমাটিকে ‘মাদার অব অল বোম্বস’ বলে উল্লেখ করা হয়। পারমাণবিক বোমা বাদ দিলে এটাই সবচেয়ে শক্তিশালী বোমা। যুদ্ধক্ষেত্রে এই বোমাটি প্রথমবারের মতো নিক্ষেপ করা হয়।

এ ধরনের বোমার একেকটির ওজন হয় ১০ হাজার কিলোগ্রাম এবং প্রতিটিতে থাকে ৮ হাজার ১৬৪ কিলোগ্রাম বিস্ফোরক। এটার বিস্ফোরণ ক্ষমতা ১১ টন টিএনটির সমান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিরোশিমায় নিক্ষেপিত লিটল বয় নামক পারমাণবিক বোমাটির বিস্ফোরণ ক্ষমতা ছিল ১৫ টন।

ইরাকেও এ ধরনের বোমা মোতায়েন করা হয়েছে। তবে কখনও ব্যবহার করা হয়নি। জিপিএস নিয়ন্ত্রিত এই বোমাটি ইরাক যুদ্ধ শুরুর কয়েক দিন আগে ২০০৩ সালের মার্চ মাসে পরীক্ষামূলকভাবে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল। সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স, ওয়াশিংটন পোস্ট।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

photo-1492099886মিসরে সরকারি প্রতিষ্ঠানে নারীদের বোরকা নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে একটি প্রস্তাব আনতে যাচ্ছেন দেশটির একাধিক সংসদ সদস্য। সদস্যদের একজনের দাবি, নারীদের ওই বোরকা পরার সংস্কৃতি ‘ইহুদি প্রথা’!

সংবাদমাধ্যম দি নিউ আরব জানিয়েছে, আমনা নোসের নামে এক সংসদ সদস্য এ কথা জানিয়েছেন। নোসের নামে ওই নারী গত ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বোরকা পরার বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছেন।

আশরাখ আল আওসাত নামে লন্ডনভিত্তিক একটি সংবাদপত্র জানিয়েছে, মিসরে বোরকা নিষিদ্ধ করার জন্য একাধিক সংসদ সদস্য একটি খসড়া তৈরি করার কাজ করছেন।

নোসের নিজে হিজাব পরেন। তিনি জানান, বোরকা আরবে নিকাব নামে পরিচিত, যা ইহুদি ধর্মের সংস্কৃতি থেকে এসেছে।

নোসের জানান, ওল্ড টেস্টামেন্টের ৩৮ নম্বর অধ্যায়ে পাওয়া যাবে হাত, মুখ না ঢেকে ঘর থেকে বের হওয়া ইহুদি ধর্মের রীতিবিরুদ্ধ। তিনি জানান, বোরকা পরার ওই রীতি ইহুদি থেকে আসে এবং পরে তা মুসলমানদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে।

‘নিকাবে’র বিরুদ্ধে এরই মধ্যে আইনও আছে মিসরে। ২০১৫ সালে কায়রো বিশ্ববিদ্যালয় নিজ ক্যাম্পাসে ‘নিকাব’ নিষিদ্ধ করে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

photo-1492151042আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় পালিত হচ্ছে এবারের পয়লা বৈশাখ। পুলিশ, র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নসহ (র‍্যাব) অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সেবায় খুশি সাধারণ মানুষ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের আচরণ বন্ধুর মতো মনে হচ্ছে বলে জানান অনেকেই।

আজ শুক্রবার সকাল থেকে রমনা, শাহবাগ ও টিএসসি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নানা রকমের তৎপরতা। প্রতিবছরের মতো এবারও রমনা বটমূলে সকালে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর এ অনুষ্ঠান ঘিরে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মঙ্গল শোভাযাত্রা চলাকালেও পুলিশ ও র‍্যাব সদস্যদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল দেখার মতো।

রমনা এলাকায় পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা আসিফ আকরাম নামের একজন বলেন, ‘দেশে কিছুদিন থেকে জঙ্গিবাদ এবং জঙ্গি আস্তানার যেসব চিত্র আমরা দেখতে পেয়েছি, তাতে আজ বাসা থেকে বের হতে প্রথমে একটু ভয় হচ্ছিল। কিন্তু রাস্তায় নামার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা দেখে সে ভয় সত্যি কেটে গেছে। পুলিশ নিজের হাতে খাবার পানি, বাতাসা বিতরণ করছে দেখে অনেক ভালো লাগল।’

তানিয়া নামের এক নারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার বিষয়ে বলেন, ‘এবার বৈশাখে আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তাবলয় দেখে মুগ্ধ হয়েছি। মনে হচ্ছে, তারা আজ পুলিশ বা র‍্যাব নয়, বরং আমাদের বন্ধু।’

রমনা পার্ক, শাহবাগ, টিএসসিসহ বেশ কিছু স্থানে র‍্যাব ও পুলিশের পক্ষ থেকে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ বসানো হয়েছে। এ ছাড়া প্রবেশপথে সবাইকে তল্লাশি করা হচ্ছে। ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে পুরো এলাকা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আর সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে সবার চলাফেরায় নজর রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া প্রস্তুত আছে বোম ডিসপোজাল ইউনিট, সোয়াট ও পুলিশের বিশেষ দল।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের সহকারী কমিশনার মো. এহসানুল ফেরদাউস বলেন, ‘পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে এবারও প্রতিবারের মতো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে। নিরাপত্তার অংশ হিসেবে পুলিশের পক্ষ থেকে আগে থেকেই বিশেষ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। আমরা আশা করছি, সুস্থ এবং সুশৃঙ্খলভাবেই এবারের বৈশাখ পালিত হবে।’

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

0000000000111আসাদুজ্জামান/ মাহফিজুল ইসলাম আককাজ : সাতক্ষীরায় যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে নানা উৎসব ও আনন্দঘন পরিবেশে পালিত হয়েছে বাঙালী জাতির পুরাতন ইতিহাস ও ঐতিহ্য বহননের পহেলা বৈশাখ। বাংলা নববর্ষের দিনটি বাঙালী জাতির জন্য সবচেয়ে আনন্দময়, সবচেয়ে রঙিন উৎসব। এই দিনটি ঘিরে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গ্রহণ করা হয়েছে তিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচি। এ উপলক্ষে শুক্রবার সকাল ৭টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে একটি বর্ণাঢ্য বৈশাখী মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। এ শোভাযাত্রা বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন অংশ নেয়। মঙ্গল শোভা যাত্রাটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সাতক্ষীরা শহিদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে বৈশাখী মেলা ও সাংস্কৃতি অনুষ্ঠানে মিলিত হয়। বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে তিন দিন ব্যাপি এ মেলার উদ্বোধন করা হয়। বৈশাখী মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা-০২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মো. আলতাফ হোসেন, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ.এন.এম মঈনুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এ.এফ.এম এহতেশামূল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) অরুন কুমার মন্ডল, পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে.এম আরিফুল হক, সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস.এম আব্দুল্লাহ আল-মামুন, জেলা শিক্ষা অফিসার মো. ফরিদুল ইসলাম, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ অহিদুল আলম, জেলা তথ্য অফিসার শাহানওয়াজ করিম, জেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক শেখ হারুন উর-রশিদ, জেলা শ্রমিকলীগ নেতা শেখ তহিদুর রহমান ডাবলু, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা শেখ আবু জাফর মো. আসিফ ইকবাল প্রমুখ। এছাড়া পৌরদিঘীতে হাঁস ধরা, সাঁতার প্রতিযোগিতা, হাডুডু খেলা, লাঠিখেলা, সঙ্গীত প্রতিযোগীতাসহ দিনব্যাপি বিভিন্ন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় এবং সাতক্ষীরার সকল  গ্রাম গঞ্জে পহেলা বৈশাখের আয়োজন পালনের লক্ষ্যে শুরু হয়েছে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা। গ্রামের মানুষের ভাবনা ভোরে ঘুম থেকে উঠা, নতুন জামাকাপড় পড়া এবং আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া। বাড়িঘর গুলো সুন্দর করে সাজানো। বিশেষ খাবারের ব্যবস্থাও করা এবং সবাই একটি নির্দিষ্ট স্থানে মিলিত হয়ে নানান রকম খেলার আয়োজনের মাধ্যমে পুরাতন বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নিয়েছে। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নূর হোসেন সজল।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

indexডেস্ক রির্পোট : মানব সভ্যতায় দিন, মাস, বর্ষ গণনার ইতিহাস সুপ্রাচীন। সভ্যতার অগ্রযাত্রার সাথে সাথে এই গণনা প্রক্রিয়ায়ও এসেছে ভিন্নতা। আজ সারা বাংলা জুড়ে ঘটা করে পালিত হচ্ছে বাংলা নববর্ষ। এই নববর্ষ উদযাপনে দিন দিন নিত্যনতুন অনুষঙ্গযুক্ত হচ্ছে এবং আমাদের সমাজ, সভ্যতা, সংস্কৃতির সাথে যা মিশে যাচ্ছে। এটা দোষের কিছু নয়, সমস্যা হল কতিপয় অতিউৎসুক মানুষ ইতিহাস বিকৃত করে এগুলোকে আমাদের বাংলা’র ইতিহাস বলে চালিয়ে দিচ্ছে। চেষ্টা ইতিহাস এবং তথ্য-উপাত্ত ঘেঁটে উৎসমূলে যাওয়া।
সময় বা কাল গননা মানব সভ্যতার উন্মেষ থেকেই হয়ে আসছে। সৃষ্টির সাথে সাথেই উদ্ভব হয়েছে সময় এর। আর এর পরিমাপের জন্য বিভিন্ন একক এর। সময় হচ্ছে একটি একমুখি মাত্রা। যাকে কখনও পিছিয়ে নেয়া যায়না। সময় এর একটি প্রধান একক হচ্ছে বছর। চন্দ্র বা সূর্যের পরিক্রমন এর মাধ্যমে এই বর্ষ বা বছর নির্ধারন করা হয়্। মানুষ প্রধানত দুই ধরনের হিসাবে বছর নির্ধারন করে। চাঁদের পরিভ্রমন এর হিসেবে এবং সূর্যের পরিভ্রমনের হিসেবে। সূর্য ভিত্তিক বা সেীর বছর এর উপর নির্ভর করে আবহাওয়া ও ঋতু। অন্যদিকে চান্দ্র বছর ঋতুর উপর কোন প্রভাব ফেলেনা। ঋতুগত কারনে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে এই সেীর বছর ব্যবহৃতহয় আঞ্চলিক ভাবে। সেভাবেই বাংলাদেশে ব্যবহৃত হয় বাংলা সন।
বাংলা সন বা বঙ্গাব্দ সৌরপঞ্জিকা ভিত্তিক বর্ষপঞ্জি। বাংলাদেশ এবং পূর্ব ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও ত্রিপুরা অঞ্চলে এই বর্ষপঞ্জি ব্যবহৃত হয়। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ঋতু বৈচিত্রকে ধারন করবার কারণে বাংলা সনের জনপ্রিয়তা এসেছে । বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের চারটি ঋতু বসন্ত, গ্রীষ্ম, হেমন্ত এবং শীত ঋতুর সাথে এই অঞ্চলে যোগ হয়েছে বর্ষা ও শরৎ ঋতু। বাংলা সনের মাসগুলোর উপর ভিত্তি করেই এই ঋতু বিভাজন করা হয়েছে। কিন্তু কেন? কারণ বঙ্গাব্দের বারো মাসের নামকরণ করা হযেছে নক্ষত্রমন্ডলে চন্দ্রের আবর্তনে বিশেষ তারার অবস্থানের উপর ভিত্তি করে। এই নাম সমূহ গৃহীত হয়েছে জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ক প্রাচীন গ্রন্থ “সূর্যসিদ্ধান্ত” থেকে। বাংলা মাসের এই নামগুলি যে সকল নক্ষত্রের নাম অনুসারে রাখা হয়েছে সেগুলো হলঃ বৈশাখ – বিশাখা নক্ষত্রের; জ্যৈষ্ঠ – জ্যেষ্ঠা নক্ষত্রের নাম অনুসারে; আষাঢ় – উত্তর ও পূর্ব আষাঢ়া নক্ষত্রের নাম অনুসারে শ্রাবণ – শ্রবণা নক্ষত্রের নাম অনুসারে ভাদ্র -উত্তর ও পূর্ব ভাদ্রপদ নক্ষত্রের নাম অনুসারে; আশ্বিন – অশ্বিনী নক্ষত্রের নাম অনুসারে; কার্তিক – কৃত্তিকা নক্ষত্রের নাম অনুসারে অগ্রহায়ণ(মার্গশীর্ষ) – মৃগশিরা নক্ষত্রের নাম অনুসারে পৌষ – পুষ্যা নক্ষত্রের নাম অনুসারে; মাঘ – মঘা নক্ষত্রের নাম অনুসারে ফাল্গুন – উত্তর ও পূর্ব ফাল্গুনী নক্ষত্রের নাম অনুসারে চৈত্র – চিত্রা নক্ষত্রের নাম অনুসারে। বাংলা সন অন্যান্য সনের মতোই সাত দিনকে গ্রহণ করেছে এবং এ দিনের নামগুলো অন্যান্য সনের মতোই তারকামন্ডলীর উপর ভিত্তি করেই করা হয়েছে। কিন্তু সব কয়টি বারের নামই এসেছে হিন্দু দেবতাদের নামানুসারে।
ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, ৫৫০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে বরাহমিহির ‘পঞ্চসিদ্ধান্তিকা’ নামক একটি গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। গ্রন্থটি পাঁচটি খ-ে সমাপ্ত। এই গ্রন্থটিকে জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং জ্যোতিষশাস্ত্রের সংক্ষিপ্তসার বলে অভিহিত করা হয়। পঞ্চসিদ্ধান্তিকার পাঁচটি খ-ের নাম এই সিদ্ধান্তগুলো হলো সূর্যসিদ্ধান্ত, বশিষ্ঠসিদ্ধান্ত, পৌলিশ সিদ্ধান্ত, রোমক সিদ্ধান্ত ও ব্রহ্ম সিদ্ধান্ত। প্রাচীন ভারতে দিন, মাস, বৎসর গণনার ক্ষেত্রে ‘সূর্যসিদ্ধান্ত’ একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। বরাহমিহিরের পরে ব্রহ্মগুপ্ত নামক অপর একজন জ্যোতির্বিজ্ঞানী (জন্ম ৫৯৮) একটি সিদ্ধান্ত রচনা করেছিলেন। এই গ্রন্থটির নাম ব্রহ্মস্ফুট সিদ্ধান্ত। এই গ্রন্থটি খলিফা আল-মনসুরের আদেশে সিন্দহিন্দ নামে আরবি ভাষায় অনূদিত হয়েছিল। ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে সৌর-মাস নির্ধারিত হয়, সূর্যের গতিপথের উপর ভিত্তি করে। সূর্যের ভিন্ন অবস্থান নির্ণয় করা হয় আকাশের অন্যান্য নক্ষত্রের বিচারে। প্রাচীন কালের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সূর্যের বার্ষিক অবস্থান অনুসারে আকাশকে ১২টি ভাগে ভাগ করেছিলেন। এর একটি ভাগকে তাঁরা নাম দিয়েছিলেন রাশি। আর ১২টি রাশির সমন্বয়ে যে পূর্ণ আবর্তন চক্র সম্পন্ন হয়, তার নাম দেওয়া হয়েছে রাশিচক্র। এই রাশিগুলোর নাম হলো মেষ, বৃষ, মিথুন, কর্কট, সিংহ, কন্যা, তুলা, বৃশ্চিক, ধনু, মকর, কুম্ভ ও মীন। সূর্যের বার্ষিক অবস্থানের বিচারে, সূর্য কোনো না কোন রাশির ভিতরে অবস্থান করে। এই বিচারে সূর্য পরিক্রমা অনুসারে, সূর্য যখন একটি রাশি থেকে অন্য রাশিতে যায়, তখন তাকে সংক্রান্তি বলা হয়। এই বিচারে এক বছরে ১২টি সংক্রান্তি পাওয়া যায়। একেকটি সংক্রান্তিকে একেকটি মাসের শেষ দিন হিসেবে গণ্য করা হয়। যেদিন রাত্রি ১২টার মধ্যে সূর্য্য ০ ডিগ্রি দ্রাঘিমাংশে প্রবেশ করে তার পরদিনই ১ বৈশাখ (পয়লা বৈশাখ) হয়। যেদিন রাত্রি ১২টার মধ্যে সংক্রান্তি হয় তার পরদিনই মাসের প্রথম দিন। মূলত একটি সংক্রান্তির পরের দিন থেকে অপর সংক্রান্ত পর্যন্ত সময়কে এক সৌর মাস বলা হয়। লক্ষ্য করা যায় সূর্য পরিক্রমণ অনুসারে সূর্য প্রতিটি রাশি অতিক্রম করতে একই সময় নেয় না। এক্ষেত্রে মাসভেদে সূর্যের একেকটি রাশি অতিক্রম করতে সময় লাগতে পারে, ২৯, ৩০, ৩১ বা ৩২ দিন। সেই কারণে প্রতি বছর বিভিন্ন মাসের দিনসংখ্যা সমান হয় না। এই সনাতন বর্ষপঞ্জী অনুসারে বছর ঋতুভিত্তিক থাকে না। একেকটি মাস ক্রমশঃ মূল ঋতু থেকে পিছিয়ে যেতে থাকে।
আধুনিক যে বাংলা বর্ষ প্রবর্তিত রয়েছে, তা মূলত বাংলা একাডেমী কর্তৃক বাংলা সন সংশোধিত বর্ষ গণনা প্রক্রিয়া যার মূল প্রোথিত রয়েছে ১৭ ফেব্রুয়ারী ১৯৬৬ সালে ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’র নেতৃত্বে এ কমিটি বিভিন্ন বাংলা মাস ও ঋতুতে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর আর্থ সাংস্কৃতিক জীবনে কিছু সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতাকে নির্ণয় করে সেগুলো হতে উত্তরণের প্রস্তাববালী প্রদান করেন। বাংলা সনের ব্যাপ্তি গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জির মতোই ৩৬৫ দিনের। যদিও সেখানে পৃথিবীর সূর্যকে প্রদক্ষিণের পরিপূর্ণ সময়কেই যথাযথভাবে নেয়া হয়েছে। এ প্রদক্ষিণের মোট সময় ৩৬৫ দিন ৫ ঘন্টা ৪৮ মিনিট এবং ৪৭ সেকেন্ড। এই ব্যবধান ঘোচাতে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে প্রতি চার বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে একটি অতিরিক্ত দিন যোগ করা হয়। ব্যতিক্রম হচ্ছে সে শতাব্দীতে যে শতাব্দীকে ৪০০ দিয়ে ভাগ করা যায় না বা বিভাজ্য। জ্যোর্তিবিজ্ঞান নির্ভর হলেও বাংলা সনে এই অতিরিক্ত দিনকে আত্মীকরণ করা হয়নি। বাংলা মাস অন্যান্য সনের মাসের মতোই বিভিন্ন পরিসরের। এই সমস্যাগুলোকে দূর করবার জন্য ডঃ মুহম্মদ শহীদূল্লাহ কমিটি বাংলা একাডেমীর কাছে কতকগুলো প্রস্তাব করে। এগুলো হচ্ছে-
ক্স বছরের প্রথম পাঁচ মাস বৈশাখ হতে ভাদ্র হবে ৩১ দিনের
ক্স বাকী মাসগুলো অর্থাৎ আশ্বিন হতে চৈত্র হবে প্রতিটি ৩০ দিনের মাস
ক্স প্রতি চতুর্থ বছরের ফাল্গুন মাসে একটি দিন যোগ করে তা হবে ৩১ দিনের। বাংলা একাডেমী সরকারীভাবে এই সংশোধিত বাংলা মাসের হিসাব গ্রহণ করে ।
বঙ্গাব্দের সূচনা সম্পর্কে দু’টি মত আছে। প্রথম মত অনুযায়ী প্রাচীন বঙ্গদেশের (গৌড় রাজা শশাঙ্ক (রাজত্বকাল আনুমানিক ৫৯০-৬২৫ খৃষ্টাব্দ) বঙ্গাব্দ চালু করেছিলেন। সপ্তম শতাব্দীর প্রারম্ভে শশাঙ্ক বঙ্গদেশের রাজচক্রবর্তী রাজা ছিলেন। আধুনিক ভারতের বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার অধিকাংশ তাঁর সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল । অনুমান করা হয় যে জুলিয়ান ক্যালে-ারের সোমবার ১২ এপ্রিল ৫৯৪ এবং গ্রেগরিয়ান ক্যালে-ারের সোমবার ১৪ এপ্রিল ৫৯৪ বঙ্গাব্দের সূচনা হয়েছিল।
দ্বিতীয় মত অনুসারে, উপমহাদেশে মুসলিম শাসন প্রবর্তিত হওয়ার পর থেকেই রাষ্ট্রিয় ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতো হিজরি সন। ১২০১ সালে ইখতিয়ারউদ্দিন মুহাম্মদ বখতিয়ার খিলজি কর্তৃক বঙ্গ বিজয় এর পর থেকে উনিশ সতকের প্রথমার্ধ পর্যন্ত রাষ্ট্রিয় পর্যায়ে ব্যবহৃত হতো হিজরি সন। এছাড়া মুসলিম ধর্মিয় উৎসব সমূহও উদযাপিত হয় হিজরি বর্ষ অনুসারে। হিজরি সন চান্দ্র বর্ষ হওয়ায় এটির সাথে ঋতুর কোন সম্পর্ক ছিলনা। এ কারনে সেসময় কর আদায় করতে কিছু সমস্যা দেখা দেয়। কারন এটাইি স্বাভাবিক যে কৃষি প্রধান সমাজে চাষিদের কাছে ফসল তুলার পরই কর আদায় করার মত যথেষ্ট অর্থ থাকত। এছাড়া একই কারনে ব্যবসায়ি ও অন্য পেশাজিবি রাও এসময় অধিক অর্থ হাতে পেতেন অর্থনিতির স্বাভাবিক তত্ব অনুযায়ি। অন্যদিকে হিজরি সন অনুযায়ি যে কোন বর্ষ শেষ হতে যখন কর আদায় এর হিসাব করা হতো তখন দেখা যেত ফসল তোলার সময় হতে কর আদায় এর সময় ভিন্ন হওয়ায় হয় ঠিক মত কর আদায় হয়নি কিংবা কৃষকেরা কর আদায় করতে গিয়ে অভাবে পতিত হতে হয়েছে। এই অবস্থার প্রেক্ষিতে সুলতানি আমলেই বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। আলাউদ্দিন হোসেন শাহ এর আমলে একটি কাব্যে বাংলাদেশে প্রচলিত সন কে যাবনি আব্দ বলার প্রমান পাওয়া যায়। যা থেকে বোঝা যায় সে সময় বাংলাদেশে প্রচলিত স্থানিয় তারিখ গননাটি মুসলিম সুলতান দের প্রচলিত ছিল। এই প্রচলিত প্রাচিন বাংলা সন কে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে সংস্কার করা হয়। দিল্লির মুঘল সম্রাট আকবরের আমলে বর্তমানে প্রচলিত বাংলা সন কে বৈজ্ঞানিক ভাবে নির্ধারন করা হয়। খাজনা আদায়ে সুষ্ঠুতা প্রণয়নের লক্ষ্যে মুঘল সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। তিনি মূলত প্রাচীন বর্ষপঞ্জতে সংস্কার আনার আদেশ দেন। সম্রাটের আদেশ মতে তৎকালীন বাংলার বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদ ফতেহউল্লাহ সিরাজি সৌর সন এবং আরবি হিজরী সনের উপর ভিত্তি করে নতুন বাংলা সনের নিয়ম বিনির্মাণ করেন। ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১০ই মার্চ বা ১১ই মার্চ থেকে বাংলা সন গণনা শুরু হয়। তবে এই গণনা পদ্ধতি কার্যকর করা হয় আকবরের সিংহাসন আরোহণের সময় (৫ই নভেম্বর, ১৫৫৬) থেকে। প্রথমে এই সনের নাম ছিল ফসলি সন, পরে বঙ্গাব্দ বা বাংলা বর্ষ নামে পরিচিত হয়। উল্লেখ্য যে, ‘সন’ ও ‘তারিখ’ দুটিই আরবি শব্দ। প্রথমটির অর্থ বর্ষ, দ্বিতিয়টির অর্থ দিন। তবে তারিখ অর্থ ইতিহাস ও হয়। সাল শব্দটি ফার্সি। মুঘল সাম্রাজ্য তার তুর্কি ও ইরানি প্রভাবের কারনে সম্রাটগন ফারসি পঞ্জিকা ব্যবহার করতেন ব্যাক্তিগত বা পারিবারিক ক্ষেত্রে যা ছিল একটি সেীর পঞ্জিকা। তারা ফার্সি নববর্ষ বা নওরোজ ও উদযাপন করতেন। কিন্তু প্রসাশনিক ক্ষেত্রে কেবলমাত্র হিজরি সন ই ব্যবহার করা হতো। সম্রাট আকবর তার ”দিন-ই-ইলাহি” এর সাথে একটি ”তারিখে ইলাহি” নামে একটি নতুন সৈীর সাল প্রবর্তন এর চেষ্টা করেন কিন্তু ব্যার্থ হন। তবে কেন্দ্রিয় ভাবে এই সন প্রচলনের চেষ্টার পুর্বেই অঞ্চল ভিত্তিক আগে থেকে প্রচলিত সন এবং হিজরি সন এর মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে কয়েকটি সন এর প্রচলন করেন সম্রাট আকবর। এই সন গুলিকে বলা হত ফসলি সন কারন এই সনগুলির গননা ফসল উৎপাদন এর সাথে সংশ্লিষ্ট ছিল।
অন্য আরেকটি সূত্র বলছে, বাংলাদেশে মুসলিম আমলের আগে শশাংক কর্তৃক প্রবর্তিত শকাব্দ ও বিক্রমাব্দ সহ বিভিন্ন ধরনের সন গননা প্রবর্তিত ছিল। আকবরের বাংলা ক্যালেন্ডার চালু হওয়ার পরও এই বাংলাদেশেই অন্যতম প্রচলিত ক্যালেন্ডার ছিল শকাব্দ বা শালিবাহন বর্ষ। ঠিক কোন সময় থেকে এই বর্ষ চালু হয়, তা নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। কেউ বলেন, শকরাজা শালিবাহনের মৃত্যুর দিন থেকে শকাব্দ গণনা শুরু। আল-বিরুনির মতে, এই বর্ষ চালু করেন রাজা বিক্রমাদিত্য। তিনি এক যুদ্ধে কোনো এক রাজাকে পরাজিত ও হত্যা করার প্রসঙ্গটি স্মরণীয় করে রাখতেই নাকি কাজটি করেছিলেন। আবার কেউ বলেন, শক-বংশজাত কুশান রাজা কনিষ্ক এই সাল প্রবর্তন করেন। বিচিত্র ব্যাপার হলো, একই সঙ্গে ভারতের দুই প্রান্তে দুই নিয়মে শকাব্দ প্রচলিত ছিল। পশ্চিম ভারতে শকাব্দ পরিচালিত হত চান্দ্রবর্ষ অনুযায়ী। আর পূর্ব ভারতে শকাব্দ চলে সৌরবর্ষ অনুযায়ী। বাংলা বর্ষটি চান্দ্র ও সৌরবর্ষের মধ্যে ভারসাম্য আর সমন্বয়ের প্রতিফল।
এখন আসা যাক, নববর্ষ উদযাপন প্রসঙ্গে। মুসলিম পুর্ব ভারতবর্ষে বিভিন্ন সন প্রচলিত ছিল। বাংলায় তখন যে সন প্রচলিত ছিল তার প্রথম দিন ছিল ১লা অগ্রাহায়ন। হায়ন শব্দের অর্থ বছর বা সুর্যের একটি পরিক্রমন এর সময়। একারনে সম্রাট আকবরের সময় প্রচলিত বাংলাসনের আগে বাংলাদেশে নববর্ষ উদযাপিত হতো ১লা অগ্রহায়ন। এছাড়া কার্তিক ও চৈত্র মাসকেও বিভিন্ন সময় বৎসরের প্রথম মাস হিসেবে নির্ধারনের প্রমান পাওয়া যায়। আকবরের সময়কাল থেকে পহেলা বৈশাখ উদযাপন শুরু হয়। তখন প্রত্যেককে চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে সকল খাজনা, মাশুল ও শুল্ক পরিশোধ করতে হত।
আধুনিক নববর্ষ উদযাপনের খবর প্রথম পাওয়া যায় ১৯১৭ সালে। প্রথম মহাযুদ্ধে ব্রিটিশদের বিজয় কামনা করে সে বছর পহেলা বৈশাখে হোম কীর্ত্তণ ও পূজার ব্যবস্থা করা হয়। এরপর ১৯৩৮ সালেও অনুরূপ কর্মকান্ডের উল্লেখ পাওযা যায়। পরবর্তী সময়ে ১৯৬৭ সনের আগে ঘটা করে পহেলা বৈশাখ পালনের রীতি তেমন একটা জনপ্রিয় হয় নি। ১৯৬০-এর দশকে পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠির নিপীড়ন ও সাংস্কৃতিক সন্ত্রাসের প্রতিবাদে ১৯৬৭ সাল থেকে ছায়ানটের এই বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের সূচনা। ১৯৮৯ সাল থেকে শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর চারুকলা ইন্সটিটিউট থেকে “মঙ্গল শোভাযাত্রা”। ধীরে ধীরে এতে আরও যোগ হয়েছে পান্তা ইলিশের কালচার। যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন বৈশাখী সঙ্গীতানুষ্ঠানের। এবার হয়েছে ভুভুজেলা’র সংযোজন, সামনে হয়ত হবে ডিজে পার্টির…। এবার ‘সাকরাইন’ উৎসবে গিয়ে তাই দেখেছি…। এত কথার শেষ কথা, আপনি যে কোন উৎসব পালন করার স্বাধীনতা রাখেন যে কোনভাবে, কিন্তু সেই উৎসবকে আপনার মনের মত করে রাঙিয়ে কোন গোষ্ঠী, দল, জাতির কাছে ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি বলে চালিয়ে দিতে পারেন না। প্রায় হাজার বছরের পুরানো বাংলা বর্ষ এবং নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস নিশ্চয়ই কয়েকযুগ আগে কতিপয় ব্যাক্তি দ্বারা প্রচলিত রীতি দ্বারা সীমাবদ্ধ থাকবে না। এই উন্মুক্ত তথ্যপ্রবাহের যুগে ইতিহাস আমাদের দোরগোড়ায় চলে আসবেই। তাই অধুনা প্রচলিত ‘বাংলা নববর্ষ উদযাপন’ই হাজার বছরের প্রচলিত বাংলা বর্ষবরণ সংস্কৃতি নয়। কোথায় রয়েছ কৃষিভিত্তিক। বাংলার বর্ষবিদায় আর বর্ষবরণ? হালখাতা, বর্ষ শেষের ঝাড়ামোছা, গ্রাম বাংলার সেই বৈশাখী মেলা? ও হ্যাঁ, রয়েছে বৈশাখী কনসার্ট!!!

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

532095_610359625659917_686323569_nডেস্ক রিপোর্ট : আজ পহেলা বৈশাখ। শুভ নববর্ষ। পুরনো সব জীর্ণকে ফেলে নতুন দিন, নতুন বছরে নতুন স্বপ্ন বাঙালির চোখে। আঁধার কেটে যাক, আসুক আলো, হিংসা-বিদ্বেষ শেষ হয়ে যাক বৈশাখের উৎসবের আনন্দে।
ওই বুঝি কালবৈশাখী/সন্ধ্যা-আকাশ দেয় ঢাকি/ভয় কী রে তোর ভয় কারে, দ্বার খুলে দিস চার ধারে। চার ধারে যত দ্বার যত জানালা সব আজ খোলা। বাঙালির উদার অসাম্প্রদায়িক চেতনার উজ্জ্বল আলোয় অগ্নিবাণে পুড়ছে অন্ধকার। এসো এসো উৎসস্রোতে গূঢ় অন্ধকার হতে/এসো হে নির্মল কলকল্ ছলছল্ৃ। সত্য সুন্দর নির্মল দিন এসেছে। উগ্রবাদ ধর্মান্ধতা ধর্মের রাজনীতি এবং মৌলবাদের বিরুদ্ধে শেকড়ের শক্তি নিয়ে রুখে দাঁড়িয়েছে বৈশাখ। আজ শুক্রবার ১৪২৪ বঙ্গাব্দের প্রথম দিন। বর্ষবরণ নয় শুধু, বাঙালির অভূতপূর্ব সাংস্কৃতিক জাগরণের উৎসবে যোগ দেবে সারাদেশ। এবার প্রথমবারের মতো সারাদেশের প্রায় ৩০ হাজার সরকারি-বেসরকারি স্কুল-কলেজ ও উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বের করা হবে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা। তপোবহ্নির শিখা জ্বালো জ্বালো/নির্বাণহীন নির্মল আলো। অফুরান এই আলোয় উদ্ভাসিত হবে বাঙালি।
বছরের প্রথম দিনে আজ নতুন নতুন স্বপ্ন বুনবে বাংলার কৃষক। হালখাতা খুলবে ব্যবসায়ীরা। সরাকারি ছুটির দিনে রাজধানীসহ সারাদেশে একযোগে চলবে লোকজ ঐতিহ্যের নানা উৎসব অনুষ্ঠান। বাংলা নববর্ষের এই সূচনালগ্নে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈশাখ এবার এমন একসময়ে এসেছে যখন ধমান্ধ উগ্র মৌলবাদীরা পুনর্বাসিত হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে চোখ রাঙাচ্ছে অনগ্রসর কূপম-ূক গোষ্ঠী। যখন বর্বর আক্রমণের শিকার হচ্ছে সুন্দরের চর্চা, মঙ্গল শোভাযাত্রা বন্ধ করার ফতোয়া দেয়া হচ্ছে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আক্রান্ত বর্ষবরণের প্রাক প্রস্তুতি দেয়ালচিত্র যখন ভাস্কর্যকে মূর্তি জ্ঞান করে অপসারণের আবদার করা হচ্ছে, পাঠ্যপুস্তকে আনা হচ্ছে অপরিণামদর্শী পরিবর্তন, তখন নতুন তাৎপর্য নিয়ে হাজির হয়েছে বৈশাখ। এ বৈশাখ জোট বাঁধারÑ প্রতিবাদের প্রতিরোধের। লোক ঐতিহ্যের প্রধান শক্তি অসাম্প্রদায়িকতা মানবিক মূল্যবোধ সাম্য সুন্দর শান্তির বাণী নিয়ে এসেছে বৈশাখ। আজ হাজার বছরের সমৃদ্ধ সংস্কৃতির আলোয় নতুন করে জ্বলে উঠবে বাঙালি। অগ্নিশিখা জ্বালিয়ে রাখার অনুপ্রেরণা গ্রহণ করবে। দ্রোহের আগুনে শাণিত হবে। বাঙালির চেতনাবিরোধী অপশক্তি রুখতে নতুন বছরে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাওয়ার শপথ নেবে বাংলাদেশ।
বাংলা নববর্ষের সঙ্গে সবচেয়ে নিবিড় সম্পর্ক কৃষির। এ সম্পর্কের সূত্রেই বাংলা সাল প্রবর্তন করেন সম্রাট আকবর। তার আমলেই প্রবর্তন হয় বাংলা সাল। এখন তা বঙ্গাব্দ নামে পরিচিত। বঙ্গাব্দের মাস হিসেবে বৈশাখের প্রথম স্থান অধিকার করার ইতিহাসটি বেশি দিনের না হলেও, আদি সাহিত্যে বৈশাখের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। দক্ষের ২৭ কন্যার মধ্যে অনন্য সুন্দরী অথচ খরতাপময় মেজাজসম্পন্ন একজনের নাম বিশাখা। এই বিশাখা নক্ষত্রের নামানুসারেই বাংলা সনের প্রথম মাস বৈশাখের নামকরণ। বৈদিক যুগে সৌরমতে বৎসর গণনার পদ্ধতি প্রচলিত ছিল। সেখানেও সন্ধান মেলে বৈশাখের।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

7c45fa46d97a6cf54f8b4a969a64f7c4-58ef8bb59ec63দু’দিন আগে বলিউডের বিদ্যা বালানের সঙ্গে চুটিয়ে আড্ডা দিলেন কলকাতা শহরে। আর আজ দুপুর না গড়াতেই অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কের সঙ্গে জমিয়ে দিলেন ঢাকার জয়া! একা নন, এসময় জয়া-ক্লার্কের সঙ্গে ছিলেন পরিচালক কৌশিক গাঙ্গুলী আর অভিনেতা আবীর চ্যাটার্জিও।

আজ, বেলা ৩টার দিকে কলকাতার সংবাদ প্রতিদিনের অফিসে জয়া, কৌশিক ও আবীরের সঙ্গে দেখা করে ক্লার্ক বেশ উচ্ছ্বসিত বটে। তা না হলে, সেটি আবার মুহূর্তেই টুইট করে জানিয়ে দিবেন কেন গোটা দুনিয়াকে? ছবিটি পোস্ট করে ক্লার্ক লিখেছেন, ‘গ্রেট টু মিট দিস ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড উইনিং অ্যাকটর্স অব দ্য মুভি ৥বিসর্জন- অল দ্য বেস্ট ফর দ্য রিলিজ গাইজ!’
এ নিয়ে তিনি বলেন মাইকেল ক্লার্কের সঙ্গে আজকের আড্ডার অভিজ্ঞতা। ‘আমরা ক্লার্কের সঙ্গে আজ দুপুরে দারুণ সময় কাটিয়েছি। ওকে আমি বিসর্জন-এর গল্প শুনিয়েছি। শুনে সে খুবই এক্সাইটেড। বললো, আমি মুভিটা দেখতে চাই।’
জয়া আরও বলেন, ‘‘আমার ওপর সবাই একটা দায়িত্ম চাপিয়ে দিয়েছে তখন। বলেছে, ক্লার্ককে জোর করে মিষ্টি খাওয়াতে হবে। কারণ, সে এই খাবার খায় না। তো আমি গল্প করতে করতে তাকে মিষ্টি তুলে দিতেই গব গব করে খেয়ে ফেললো! এরপর দুই বাটি আইসক্রিম, দুই বাটি গোলাব জাম খাওয়ালাম। খেতে খেতে প্রায় ক্লান্ত ক্লার্ক বললো, ‘আমি একাই খেয়ে খেয়ে ওজন বাড়াবো! তোমাকেও খেতে হবে।’ তার সম্মানে খেলাম একটু।’’
দম নিয়ে কলকাতা থেকে জয়া আরও বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের মেয়ে জেনে আরও আগ্রহ পেল। ক্রিকেট জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে আমার সঙ্গে বাংলাদেশের অনেক গল্প করলো। সত্যি বলতে দারুণ একটা সময় পার কলাম আমরা। সবশেষে ক্লার্ক আমাদেরকে স্বাক্ষর করা তার অটোবায়োগ্রাফি উপহার দিলো।’
প্রসঙ্গত, সাবেক অসি অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক আইপিএল-এর ধারাভাষ্যকার হিসেবে এখন ভারতের কলকাতায় অবস্থান করছেন।

অন্যদিকে, ভারতের ৬৪তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছে বাংলাদেশের জয়া আহসান অভিনীত চলচ্চিত্র ‘বিসর্জন’। ছবিটি পরিচালনা করেছেন কৌশিক গাঙ্গুলী। আর এতে জয়ার বিপরীতে আছেন আবীর চ্যাটার্জি। যা কাল পহেলা বৈশাখ উৎসবে কলকাতায় মুক্তি পাচ্ছে।
ছবিটির প্রচারণার কাজে এখন খুবই ব্যস্ত সময় পার করছেন জয়া আহসান।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest