সর্বশেষ সংবাদ-
সাতক্ষীরার বিভিন্ন সীমান্ত জব্দ হওয়া বিপুল পরিমান মাদকদ্রব্য ধ্বংসআশাশুনিতে এনসিটিবি’র অনুমোদনহীন বই বাজারজাতে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার অভিযোগদেবহাটায় ফেয়ার মিশনের অসহায় শীতার্তদেরকে কম্বল বিতরনদেবহাটার পারুলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী ও মতবিনিময়আমতলা উদিয়মান ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্বোধনসাতক্ষীরায় কায়পুত্র স¤প্রদায়ের ভূমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা সভাসাতক্ষীরা শহিদ আব: রাজ্জাক পার্ককে বর্জ্য ও জলাশয় ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন বিষয়ক কর্মশালাদেবহাটায় তারুণ্যের উৎসবে মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সামগ্রি বিতরণ ইউএনওরস্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ভিবিডি সাতক্ষীরার নেতৃত্বে ইব্রাহিম খলিলশ্রীউলায় ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা

আশাশুনিতে সেনাবাহিনীর হাতে অস্ত্র ও গুলিসহ ৩ সন্ত্রাসী গ্রেফতার

বিএম আলাউদ্দীন আশাশুনি ব‍্যুরো:
আশাশুনিতে সেনা বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ও গুলিসহ ৩ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করছে।
রবিবার (১৭ নভেম্বর) রাত দেড়টার দিকে উপজেলার প্রতাপনগর এলাকা থেকে সেনা বাহিনী আব্দুল খালেক, উজ্জ্বল হোসেন ও আনারুল ইসলামকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, একটি পিস্তলের ম্যাগাজিন, ২ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ২টি ছুরি, ১টি কুড়াল, ৩টি চাপাতি, ৪টি রাম দা এবং ৪টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলো, প্রতাপনগর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের রজব আলী গাজীর ছেলে আব্দুল খালেক, প্রতাপনগর গ্রামের বাবর আলী গাজীর ছেলে উজ্জ্বল হোসেন ও কুড়িকাহুনিয়া গ্রামের মৃতঃ ওয়াজেদ আলীর ছেলে আনারুল ইসলাম।

সেনা ক্যাম্প থেকে পাঠানো এক বার্তায় জানানা হয় যে, সেনা বাহিনীর আশাশুনি আর্মি ক্যাম্প গত ১৫ নভেম্বর জানতে পারে যে, প্রতাপনগর এলাকায় ৩ জন চাঁদাবাজের কাছে অবৈধ অস্ত্র রয়ে়ছে। ওই দিন দুপুরে আশাশুনির আর্মি ক্যাম্প কমান্ডার ক্যাপ্টেন নাহিদ কর্তৃক স্থানীয় রাজনীতিবিদ এবং তাদের অনুসারীদের নিয়ে ক্যাম্পে নিরাপত্তা সম্পর্কিত কনফারেন্স করেন। এসময় সবার সাথে কথা বলা শেষে সন্দেহভাজন উল্লেখিত ৩ জনকে ক্যাম্পে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাখা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অবৈধ অস্ত্রের কথা অস্বীকার করলে তাদেরকে সাতক্ষীরা সদর আর্মি ক্যাম্পে প্রেরণ করা হলে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদে তারা অবৈধ অস্ত্রের কথা স্বীকার করে। তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক ১৭ নভেম্বর ভোর রাত দেড়টার দিকে লেঃ কর্নেল আরিফুল হক, ৩৭ বীর এর নেতৃত্বে একটি টহল দল প্রতাপনগরের উদ্যেশ্যে বের হয়। পরবর্তীতে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেফতারকৃতদেরকে রবিবার বিকাল ৪টার দিকে আশাশুনি থানায় হস্তান্তর করা হয়।
সূত্র আরও জানায়, গ্রেপ্তারকৃত আসামি আব্দুল খালেক গাজীর নামে আশাশুনি থানায় ১২ টি, উজ্জ্বল গাজীর নামে ৭ টি ও আনারুলের নামে ৮ টি মামলা রয়েছে।
আশাশুনি থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
সাতক্ষীরায় জলবায়ু সুবিচারের দাবিতে পদযাত্রা

নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরায় জলবায়ু সুবিচারের দাবিতে পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকালে পদযাত্রাটি সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বের হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে নিউমার্কেট মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।

বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইনডিজেনাস নলেজ (বারসিক) এবং শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্য রক্ষা টিম আয়োজিত এই পদযাত্রা শেষে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিশ্বের উন্নত দেশগুলো অতীতে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও তারা তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। বৈশি^ক উষ্ণতা প্রতিরোধে তাদের কার্বন নিঃসরণ কমাতে হবে। একই সাথে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

বক্তারা আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে লাখ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হচ্ছে। জনজীবনে সংকট প্রকট হচ্ছে। জীবন-প্রকৃতি, মাটি, পানি, স্বাস্থ্য, কৃষি ও সুন্দরবনে বৈরী অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্বের ধনী দেশগুলোকে অবশ্যই এর দায় নিতে হবে।

এসময় বিশ্ব নেতাদের প্রতি অবিলম্বে জলবায়ু তহবিল গঠনের দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নাগরিক নেতা অধ্যাপক পবিত্র মোহন দাস, সিনিয়র সাংবাদিক কল্যাণ ব্যানার্জি, উদীচীর সভাপতি শেখ সিদ্দিকুর রহমান, নাগরিক নেতা আলী নুর খান বাবুল, ভূমিহীন নেতা আব্দুস সামাদ, শিক্ষা সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্য রক্ষা টিমের সদস্য শাহনাজ পারভীন ও জয় সরদার, বারসিক কর্মকর্তা গাজী মাহিদা মিজান প্রমুখ। #

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
কালিগঞ্জে ভুমিহীন পরিবারকে উচ্ছেদের উদ্দেশ্যে বাড়িঘর ভাংচুর-লুটপাট- মারপিট

নিজস্ব প্রতিনিধি “
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের চিহ্নিত প্রভাবশালী ভূমিদস্যু জাকির ও মান্নান মেম্বরের নেতৃত্বে সরকারি খাস জমিতে বসবাসকারী ৭টি অসহায় ভুমিহীন পরিবারকে উচ্ছেদের উদ্দেশ্যে বাড়ি ঘর ভাংচুর, লুটপাট এবং মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন কালিগঞ্জ উপজেলার ঘুষুড়ি গ্রামের শহর আলী গাজীর মেয়ে রোজিনা খাতুন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা অত্যান্ত অসহায় এবং ভূমিহীন পরিবার। কোন জমি জমা না থাকায় হাওড়ার নদীর তীরে ঝুপড়ি ঘর বেধে পিতা আমাদের নিয়ে বসবাস করতেন। তৎকালিন জেলা প্রশাসকের নির্দেশে এসিল্যান্ডসহ স্থানীয় ভূমিকর্মকর্তা ও গণম্যান্য ব্যক্তিবর্গ পাশ^বর্তী ঘুষুড়ি ব্রীজের পাশে নদীর জেগে ওঠা চরে আমাদের বসবাসের জন্য একখন্ড জমি প্রদান করেন।

সরকারের দেওয়া ওই জমিতে আমরা দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে বসবাস করে আসছি। দুটি ছেলে সন্তান জন্মের পর স্বামী আমাকে তালাক দিয়ে চলে যায়। সেই থেকে একটি ছোট্ট চায়ের দোকান দিয়ে দুই সন্তানকে নিয়ে অতিকষ্টে বেঁচে আছি। পরিশ্রম করে সন্তানদের মানুষ করার চেষ্টা করছি। কিন্তু পাশ^বর্তী পরম্পদলোভী ঈমান আলীর ছেলে জাকির হোসেন গং উক্ত সরকারি খাস জমি থেকে আমাদের উচ্ছেদ করে নিজেরা জবর দখলের চক্রান্ত চালাতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর সুযোগ বুঝে চাম্পাফুল ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বর মান্নানের নির্দেশে ও জাকিরের নেতৃত্বে জহুর ঢালীর ছেলে রফিক, ছাকা গাজী, মোফাই, মোস্ত,আনিছুরসহ অন্যান্যরা আমাদের উক্ত জমি জোর পূর্বক দখলের হুমকি প্রদর্শন করতে থাকে।

রোজিনা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, ইটভাটায় কাজে জন্য পরিবারের পুরুষ সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার সুযোগে গত ১৪ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মান্নান মেম্বরের নির্দেশে এবং জাকিরের নেতৃত্বে রফিক, ছাকা গাজী, মোফাই, মোস্ত ও আনিছুরসহ ২০/২৫ জন আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। এসময় বাধা দিতে গেলে তারা লোহার রড ও বাঁশের লাঠি দিয়ে আমাকে বেধড়ক মারপিট করে। আমাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসা আমার মা জরিনা খাতুন, বোন ফতেমা খাতুন, ছেলে বাবু, রায়ছুল, ভাবী শরিফাসহ পরিবারের মহিলাদেরকেও মারপিট করে গুরুতর আহত করে তারা। এসময় তারা বাড়ির সব বড় বড় গাছ কেটে নিয়ে যায়। এছাড়া বাড়িতে থাকা নগদ টাকা,স্বর্ণালংকর, মোবাইলসহ মূল্যবান মালামাল লুটপাট করে এবং আমাদের বাড়ি ঘর ভেঙে সেখানে ঘেরাবেড়া দেওয়ার চেষ্টা চালায়।

তিনি আরো বলেন, জাকির হোসেন গংদের মারপিটে আমরা ৫/৬ জন মারাত্মক আহত হলেও চিকিৎসা নিতে আমাদের হাসপাতালেও যেতে দেয়নি তারা। এঘটনায় থানায় মামলা দিতে গেলে পুলিশ নেয়নি। থানায় মামলা না নেওয়ায় আসামীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। জাকির ও মান্নান গং প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলছেন দেশে এখন কোন আইন নেই, বিধায় হত্যা করে নদীতে ভাসিয়ে দিলেও আমাদের কিছু হবে না। তাদের ভয়ে আমরা এখনো বাড়ি ছাড়া হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি।
তিনি ওই সন্ত্রাসী ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক নিজেদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং দ্রুত যাতে বাড়িতে ফিরতে পারে যে ব্যবস্থা গ্রহণে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
সাতক্ষীরায় ১৮০ লিটার ভেজাল দুধ জব্দ: দুই ব্যবসায়ীকে ২ লাখ টাকা জরিমানা

নিজস্ব প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরায় ১৮০ লিটার দুধ ভেজাল জব্দ করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিনেরপোতা বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় মোটর সাইকেলে বহনের সময় ভেজাল মিশ্রিত দুধসহ দুই ব্যবসায়ীকে আটক করে ভ্রাম্যমান আদালত। এসময় পরীক্ষা করে দুধে ভেজাল মিশ্রিত থাকায় দুই ব্যবসায়ীকে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদÐ প্রদান করা হয়।

দÐিত ব্যবসায়ীরা হলেন, দেবহাটা উপজেলার শংকর ঘোষের পুত্র সীমান্ত ঘোষ ও ইনু ঘোষের পুত্র মুকুন্দ ঘোষ।

ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর সাতক্ষীরার সহকারী পরিচালক নাজমুল হাসান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ আহমেদের নেতৃত্বে বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে ভেজাল দুধ জব্দ করা হয় এবং দুই ব্যবসায়ীকে জেল জরিমানা করা হয়েছে। পরে ভেজাল মিশ্রিত দুধ বিনষ্ট করে আদালত।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় প্রতিবাদ সমাবেশ

দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমার বাংলাদেশ (এবি)পার্টির আয়োজনে রোববার বিকাল ৪টায় সাতক্ষীরা নিউ মার্কেট চত্বরে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন, পার্টির সদর উপজেলা আহবায়ক ডা: জি এম সালাউদ্দিন সাকিল। প্রধান অতিথি ছিলেন, সাতক্ষীরা জেলা পার্টির আহবায়ক ভিপি আব্দুল কাদের।

এসময় প্রধান অতিথি বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারনে দেশের নি¤œ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। কোন ভাবেই দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি কমানো যাচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে নি¤œ ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো দিশেহারা হয়ে পড়বে। বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলবে সাধারণ মানুষ। মানুষ বাঁচাতে হলে অবিলম্বে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রন করতে হবে। এছাড়া সাতক্ষীরায় বাজার মনিটরিং জোরদার করার জন্য জেলা প্রশাসকের প্রতি আহŸান জানান তিনি। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, জেলা এবি পার্টির সদস্য সচিব মো: আলমগীর হোসাইন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
ছাত্র আন্দোলনে নিহত সাতক্ষীরার শহীদ আসিফ এর পরিবার এখনও শোকে স্তব্ধ

আসাদুজ্জামান : বৃদ্ধ পিতা ও সৎ মাকে কথা দিয়েছিলেন মিছিলে যাবেন না, কিন্তু বৈষম্য বিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনে মাটিতে লুটিয়ে পড়া এক সহকর্মীকে বাঁচাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান সাতক্ষীরার মেধাবী ছাত্র আসিফ হাসান। ফেসবুক পোস্টে ছবি দেখে আসিফের মৃত্যুর খবর জানতে পারেন তার পরিবার।

দুই মাস ১১ দিন পেরিয়ে গেলেও মা হারা সন্তানের অকাল মৃত্যুতে এখনও শোকে স্তব্ধ গোটা পরিবার। ছোট বেলা থেকে কোলে পিঠে মানুষ করা সৎ মা শিরীন সুলতানা এখনও মনে করেন তার সন্তান বেঁচে আছে। সে যে মারা গেছে এটা তিনি কোন ভাবেই যেন মানতে পারছেন না। এখনও বৃদ্ধ পিতা মাহমুদ আলম ও তার সৎ মা পথ চেয়ে বসে থাকেন তাদের সন্তান আবারো ফিরে আসবেন।

জানা যায়, সাতক্ষীরা শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে দেবহাটা উপজেলার আস্কারপুর গ্রামের মাহমুদ আলমের ৫ সন্তানের মধ্যে সবারই ছোট জমজ দুই সন্তান আসিফ হাসান ও রাকিব হাসান। তার বড় বোন মাকসুদা আক্তার মুন্নি, মেজ বোন মুন নাহার পারভীন ও ছোট বোন জেসমিন নাহার। বোনেরা সবাই বিবাহিতা। বিগত ১১ বছর আগে এক সড়ক দুর্ঘটনায় আসিফের মায়ের মৃত্যু হয়। ছোট বেলা থেকেই সৎ মায়ের সংসারে আদর যতেœ বেড়ে ওঠে আসিফসহ তার ভাই বোনেরা। কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা আহছানিয়া রেসিডেন্টসিয়াল কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন আসিফ হাসান। এরপর ঢাকায় নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অনার্স কোর্সে ভর্তি হন। বিশ্ববিদ্যালয়টির উত্তরা ক্যাম্পাসে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যায়নরত ছিল আসিফ হাসান। সর্বশেষ গত কোরবানির ঈদে আসিফ বাড়িতে এসেছিল। বৈষম্য বিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকা শহর যখন উত্তাল হয়ে ওঠে তখন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে আসিফের পরিবার।
গত ১৮ জুলাই বেলা ১২ বাজার এক মিনিট আগে আসিফের সাথে তার মেঝ বোন ঢাকার খিলগাঁও এলাকার বাসিন্দা মুন নাহার পারভীনের সাথে মোবাইল ফোনে কথোপকথন হয়। তার বোন তার কাছে শুনতে চায় ভাই তুমি কোথায় আছো ? অনেক গোলাগুলির শব্দ হচ্ছে। আসিফ তখন তার বোনকে বলেন, আপা আমি মিছিলের শেষের দিকে আছি আমার কোন অসুবিধা হবেনা। আমি নিরাপদে আছি। ফাঁকা গুলি ছুড়ছে আমাদেরকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য। বোন মুন নাহার এসময় তাকে বলেন, তুমি মিছিল ও আন্দোলন থেকে পিছন দিক থেকে চলে যাও। আর সেখানে না থাকার জন্য তিনি তার কাছে অনুরোধ করেন। এরই মধ্যে আসিফ তার বোনকে জানান, আপা তুমি পরে ফোন করো। আমাদের এক ভাই গুলি বিদ্ধ হয়েছে। সে পানি খেতে চাচ্ছে। তাকে পানি খাওয়াতে হবে। এই বলে আসিফ তার আশেপাশের সহযোদ্ধাদের ডাক দিয়ে গুলিবিদ্ধ বড় ভাইকে পানি খাওয়ানো ও তাকে সেখান থেকে সরানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন এবং তার বোনের সঙ্গে এটাই তার শেষ কথা। এদিকে তার বোন তাকে মোবাইল ফোনে হ্যালো হ্যালো করেই যাচ্ছেন। ১ মিটি ৩৪ সেকেন্ড আসিফ তার বোনের সাথে কথা বলেন বলে তার বোন জানান। এরপর তার বোন তাকে কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি আর ফোন ধরেননি। গুলিবিদ্ধ বড় ভাইকে বাঁচাতে যেয়ে এ সময় তিনিও গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়েন। গুলিবিদ্ধ আসিফ হাসানকে তার সহযোদ্ধারা পরে কুয়েত বাংলাদেশ সরকারী হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে জানানো আসিফ মারা গেছেন। অশ্রæসিক্ত নয়নে তার মেজ বোন মুন নাহার আরো জানান, আসিফ মারা যাওয়ার ১২/১৪ আগেও তার বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি কয়েক দিন ছিলেন। এরপর তিনি ইউনিভার্সিটিতে চলে যান। তিনি জানান, সাটডাউনের মধ্যে গত ১৭ জুলাই বুধবারও তিনি তাকে বলেছিলেন তার বাসায় যাওয়ার জন্য। আসিফ তার বোনকে বলেন, গাড়ি ঘোড়া সব তো বন্ধ তাহলে কিভাবে যাবেন। তার বোন এসময় তার এলাকা থেকে তাকে আনার জন্য পরিচিত কোন বাইক পাঠানোর জন্য তাকে প্রস্তাব দেন এতে আসিফ সম্মতি দেননি। তিনি এ সময় আবেগ জড়িত কন্ঠে বলেন, মহান আল্লাহপাক ওখানে তার মৃত্যু লিখেছেন। এজন্য সে সেখানে মারা গেছে।

শহীদ আসিফ হাসানের সৎ মা শিরীন সুলতানা জানান, অনেক ছোট বেলা থেকেই আমি আসিফ ও রাকিবকে মানুষ করেছি। আমার মনেই হচ্ছেনা আমার আসিফ নেই। মনে হচ্ছে আমার আসিফ আবার আমার কাছে আসবে। তিনি এসময় অশ্রæসিক্ত নয়নে বলেন, আমার আসিফ বড় বড় ভেটকি মাছ, পার্শে মাছ, চিংড়ি মাছ ও গরুর গোশ খেতে ভালো বাসতো। বাড়ি আসলেই তার এসব খাওয়ার আবদার ছিলো। রান্নার পর এসব গরম গরম খেতে ভালো বাসতো। আমি অনেক সময় তাকে বলতাম বাবা ঠান্ডা হলে খাও। সে আমাকে বলতো মা গরম গরম ভালো লাগে। তিনি মেনেই নিতেই পারছেননা তার আসিফ আর নেই।

আসিফের ছোট ভাই সাতক্ষীরা সরকারী কলেজের অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রকিব হাসান জানান, ছোট বেলা থেকেই আমাদের দুই জমজ ভাইয়ের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিলো। যা করতাম দুই ভাই পরামর্শ করেই করতাম। কোটা আন্দোলন শুরু থেকেই তার সাথে আমার প্রতিদিনই কথা হতো। ১৬ জুলাই থেকে সে প্রথম আন্দোলনে যায়। এরপর ১৮ জুলাই সে আন্দোলনে যাওয়ার পর গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর ডাক্তার তার মৃত ঘোষনা করেন। পরবর্তীতে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল থেকে ফোন করে আসিফের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়। ওই দিন রাতেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আসিফের মরদেহ বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। পরদিন জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে চির নিদ্রায় তাকে শায়িত করা হয়।

তিনি আরো বলেন, আমার ভাইয়ের সাথে আমার সব সময় কোটা বিরোধী আন্দোলন নিয়ে কথা হতো। আমিও কোটা আন্দোলন নিয়ে সাতক্ষীরায় অনেক মিছিল ও সমাবেশ করেছি। আন্দোলন সংগ্রামে আমার ভাই আমাকে সবসময় সাবধানে থাকার জন্য অনুরোধ করতো। মারা যাওয়ার আগের দিনও সে আমাকে বলে আমি একটু ভয়ে ভয়ে আছি, কারন বিভিন্ন মেসে মেসে অভিযান চলছে। কখন যে আমাকে ধরে ফেলে? ভাইয়ের কথা বলতে গিয়ে তিনি এসময় বলেন, কি বলবো ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।

আসিফের ছোট চাচা মামুন হোসেন জানান, তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো আস্কারপুর গ্রামে। শোকে স্তব্ধ আমাদের গোটা পরিবার। আসিফ আমার শুধু ভাইপো ছিলো না সে আমার বন্ধুর মতো ছিলো। গ্রামের মধ্যে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে আসিফ ও আমি এক সাথে পরামর্শ করে কাজ করতাম। অনেক সামাজিক ছেলে ছিল সে।

শহীদ আসিফের বাবা মাহমুদ আলম জানান, আমি দুই থেকে তিন দিন পর পর আসিফকে ফোন করে ওর খোঁজ খবর নিতাম। আমি ওকে বাড়িতে চলে আসতে বলেছিলাম। ও বললো আব্বা আমাকে নিয়ে চিন্তা করতে হবেনা, আমি আন্দোলনে যাচ্ছিনা। কিন্তু বন্ধু বান্ধবের পাল্লায় পড়ে পরে কখন যে সে আন্দোলনে গেল তা আমি জানিনা। আমি ভাবতেই পারছিনা আমার আসিফ নেই। তার বড় ইচ্ছা ছিল ইউনিভার্সিটি থেকে বেরিয়ে সে দেশের বাইরে যাবে। কিন্তু কি যে হয়ে গেলো তা আমি আর বলতে পারছিনা। বাকরুদ্ধ আসিফের বাবা এসময় বলেন, আমি আমার সন্তান হারানোর এই বিচার আল্লাহর উপর ছেড়ে দিয়েছি। আল্লাহ পাকই বিচার করবেন।##

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
উপকূলীয় নারীদের টেকসই সবজী চাষে দক্ষতা বৃদ্ধিতে ৪ দিনব্যাপী কর্মশালা

প্রেস বিজ্ঞপ্তি : জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে কৃষি ও জীবিকায়ন সংকট দিন দিন বেড়েই চলেছে। উপকূলীয় অঞ্চলে নারীদের অভিযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধি ও টেকসই কৃষি উদ্যোগ গড়ে তুলতে লিডার্স এবং ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ এর যৌথ উদ্যোগেবসত বাড়ির আঙিনায় অভিযোজিত এবং টেকসই সবজী চাষ শীর্ষক ৪ দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।

লিডার্সের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন লিডার্সের নির্বাহী পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) রণজিৎ কুমার বর্মন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন লিডার্সের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো: শওকৎ হোসেন, টিম লিডার অসিত মণ্ডল, এবং রেখা খাতুন, টিম লিডার (ভারপ্রাপ্ত)। এছাড়াও লিডার্সের অন্যান্য কর্মকর্তারা কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।

কর্মশালায় নারীদের অভিযোজিত ও টেকসই সবজী চাষ, বীজ উৎপাদন এবং সংরক্ষণ বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সচেতনতা তৈরি করা হচ্ছে। এ উদ্যোগ উপকূলীয় নারীদের কৃষি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, আত্মনির্ভরশীলতা অর্জন, এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি প্রশমন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আয়োজকরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন। লিডার্সের এ উদ্যোগ জলবায়ু অভিযোজন প্রচেষ্টার একটি উদাহরণ এবং উপকূলীয় অঞ্চলের টেকসই উন্নয়নে এটি উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
শিক্ষক ও কর্মচারীদের বিদায় সংবর্ধনা

মেহেদী হাসান আটুলিয়া (শ্যামনগর):
ঐতিহ্যবাহী নওয়াবেঁকী বিড়ালাক্ষী কাদেরিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসার অবসরপ্রাপ্ত ৩ জন শিক্ষক ও ২ জন কর্মচারীর বিদায় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।উক্ত অনুষ্ঠানটি ১৭ই নভেম্বর রবিবার, সকাল ০৯:৩০ ঘটিকার সময় অত্র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ওহিদুজ্জামানের সভাপতিত্বে মাদরাসা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ১০ নং আটুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সালেহ বাবু, নওয়াবেঁকী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এম আবু বক্কর সিদ্দিক, নওয়াবেঁকী গনমুখী ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মো: লুৎফর রহমান, বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম আটুলিয়া ইউনিয়নের আমির প্রভাষক মাওলানা আব্দুল হামিদ, বিড়ালাক্ষী মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মোঃ একরামুল কবির, রাবেয়া খাতুন মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা রেজাউল করিম,অবসর গ্রহণকারী শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দ যথাক্রমে,

সিনিয়র সহকারী শিক্ষক (কৃষি) এস, এম, হুমায়ুন মাকসুদ হারুন, ইবতেদায়ী প্রধান মাওলানা আব্দুর রউফ,জুনিয়র শিক্ষক মোঃ শফিকুল ইসলাম, অফিস সহকারী মোস্তফা মিজানুর রহমান, অফিস স্টাফ মোঃ নুরুল আমিন।

শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তৃতা প্রদান করেন আলিম প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তাসনিম তামান্না রুহি। শিক্ষক মন্ডলীর মধ্য থেকে বক্তৃতা প্রদান করেন মাওলানা মঈন উদ্দিন আহমেদ। এ সময় বক্তারা বিদায়ী শিক্ষক-কর্মচারীগণের চাকুরী জীবনের বিভিন্ন স্মৃতিচারণ করেন।পরে সকলের মঙ্গল কামনা করে দোয়া মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest