সর্বশেষ সংবাদ-
সাতক্ষীরার ৪টি সংসদীয় আসনে বিএনপির ২ বিদ্রোহী প্রার্থীসহ ২৯ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিলসাতক্ষীরা-০১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আ’লীগ নেতা মুজিবের মনোনয়ন জমাসাতক্ষীরা জেলা কিন্ডার গার্টেন এ্যাসোসিয়েশনের ফলাফল প্রকাশExploring the Flavorful Journey of Ground Beef Enchiladasজেলা ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি গঠনচোরের উপদ্রবে অতিষ্ঠ কাটিয়া রেজিস্ট্রি অফিসপাড়ার বাসিন্দারা : মিথ্যা মামলার অভিযোগসাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের পিতার মৃত্যুতে শােকসাতক্ষীরায় পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা: আসামী ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগশ্যামনগরে কোস্টগার্ডের অভিযানে ভারতীয় মদ জব্দআশাশুনিতে জলবায়ু-স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ক যুব নেতৃত্বাধীন প্রচারনা

আজ ৩৯তম বিশেষ বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা

দেশের খবর: নিরাপদ সড়কের দাবিতে টানা পাঁচ দিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক শিক্ষার্থীরা অবরোধ করে রাখলেও পূর্ব ঘোষিত সময় অনুযায়ী শুক্রবার ৩৯তম বিশেষ বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা নেবে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। পরীক্ষা এ দিন বিকাল তিনটা থেকে পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হবে বিকাল পাঁচটায়।
এ ব্যাপারে পিএসসি’র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক বলেন, নির্ধারিত সময়েই পরীক্ষা হবে, শুক্রবার বেলা ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত পরীক্ষা নেওয়া হবে।
শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ এবং ঢাকায় গণপরিবহনের সংকট থাকলেও ৩৯তম বিসিএসের প্রিলিমিনারিতে পরীক্ষার্থী কম হওয়ায় এই পরীক্ষা নেওয়ায় কোনো অসুবিধা দেখছেন না কমিশন প্রধান।
মোহাম্মদ সাদিক বলেন, এগুলোতে (শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি) কোনো অসুবিধা নেই। কারণ অনেক আগেই পরীক্ষার সূচি ঘোষণা করা হয়েছে। ৩৯ হাজার পরীক্ষার্থী। শুধু ঢাকায় পরীক্ষা হবে। বেশিরভাগ প্রার্থীই ঢাকার, কারণ ঢাকায় মেডিকেল কলেজ বেশি।
স্বাস্থ্য ক্যাডারে নিয়োগের এই পরীক্ষার মাধ্যমে ৪ হাজার ৭৯২ জন চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে ৪ হাজার ৫৪২ জন সহকারী সার্জন এবং ২৫০ জন সহকারী ডেন্টাল সার্জন।
রাজধানীর ২৫টি কেন্দ্রে ৩৯তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হবে। বেলা দেড়টা থেকে ২টা ২৫ মিনিটের মধ্যে প্রার্থীদের পরীক্ষার হলে ঢুকতে হবে।
এক বিজ্ঞপ্তিতে পিএসসি জানায়, মোবাইল ফোন, ঘড়ি, সব ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস, বই-পুস্তক, ক্যালকুলেটর, গহনা-অলংকার, ক্রেডিট কার্ড, ব্যাংক কার্ড এবং ব্যাগসহ পরীক্ষার হলে প্রবেশ নিষিদ্ধ।
গত ৮ এপ্রিল ৩৯তম বিশেষ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। এই বিসিএসে অংশ নিতে ১০ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত অনলাইনে ৩৯ হাজার ৯৫৪ জন চাকরি প্রার্থী আবেদন করেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
‘ন্যায় বিচার চাই’

দেশের খবর: ‘ন্যায় বিচার চাই’‘নিরাপদ সড়ক চাই’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘উই আর স্টুডেন্ট, নট টেরোরিস্ট’— এরকম বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড আর কাগজ নিয়ে বৃহস্পতিবার দিনভর রাজপথে ছিল হাজারো শিক্ষার্থী। আগেই সারাদেশের স্কুল ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। তারপরও কোন শিক্ষার্থীকেই ঘরে আটকে রাখা যায়নি। স্বত:স্ফুর্তভাবে শিক্ষার্থীরা রাজধানীর প্রতিটি রাস্তায় নেমে আসে। হাজার হাজার শিক্ষার্থী বৃষ্টির মধ্যে রাজপথে বসে মিছিল শ্লোগান দিতে থাকে। পাশাপাশি রাস্তায় চলাচল করা প্রতিটি গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা করে তবেই ছেড়েছে। যেসব গাড়ি বা চালকের বৈধ কাগজপত্র ছিল না তাদের পুলিশ সার্জেন্টের কাছে নিয়ে মামলা দিতে বাধ্য করেছে এই শিক্ষার্থীরা। তারা সবাইকে দেখিয়ে দিয়েছে কিভাবে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে হবে।
তবে বৃহস্পতিবার কোন সহিংসতা ছিল না। শুধুমাত্র সায়েন্স ল্যাবটেররি মোড়ে ছাত্রদের সঙ্গে এক সার্জেন্টের তর্কাতর্কির জেরে তার মটরসাইকেলটি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কিল ঘুষিতে আহত হয়েছেন ওই সার্জেন্ট। অপরদিকে মিরপুরে পুলিশের সঙ্গে লাঠি হাতে কিছু যুবক ছাত্রদের নির্দয়ভাবে পিটিয়েছে। স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেছেন সাংস্কৃতিক কর্মী, শিল্পীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। অনেক এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও স্কুল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাজপথে বসে ছিলেন। ছিলেন বহু অভিভাবকও। তারা কোমলমতি এসব শিক্ষার্থীকে খাবার-পানি কিনে দিয়েছেন। সাধারণ মানুষও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে বলেছেন, এদের দাবি যৌক্তিক।
গত কয়েকদিনের বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে সরকার দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গতকাল বৃহস্পতিবার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। স্কুল বন্ধ থাকলেও গতকাল সকাল থেকেই রাজধানীর অন্তত ২৫টি পয়েন্টে শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে বিক্ষোভ করছে। ফলে গত তিন দিনের মতই গতকাল ঢাকার বিভিন্ন সড়কে পাবলিক পরিবহন রাস্তায় নামাননি মালিকরা। বিআরটিসির কিছু বাস চলাচল করেছে। প্রাইভেট যানবাহন স্বাভাবিকভাবে চলাচল করলেও পরিমানে ছিল কিছুটা কম। পায়ে হেঁটে চলা মানুষও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে গেছেন। অনেকেই রাজপথে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বেশ কিছু সময় কাটান, সমর্থন দেন।
জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাসের চাপায় গত ২৯ জুলাই কুর্মিটোলায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর থেকেই শিক্ষার্থীদের এ বিক্ষোভ চলছে। গত দুই দিনে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে অনান্য শহরেও। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাইরে বহু এলাকায় সড়কে নেমে আসে শিক্ষার্থীরা। বেশিরভাগ জায়গায় দুর পাল্লার বাসও চলাচল করেনি। বিক্ষোভে গেলে টিসি দিয়ে দেওয়া হবে- স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এমন এসএমএস পাওয়ার কথাও জানিয়েছেন কয়েকজন অভিভাবক। এসব হুমকি আমলে না নিয়েই সকাল ১০টার পর থেকে বিভিন্ন এলাকার ছাত্রছাত্রীরা রাস্তায় নামতে থাকে।
রাজধানীর উত্তরা, মহাখালী, মগবাজার, শাহবাগ, রামপুরা, ফার্মগেইট, মানিক মিয়া এভিনিউ, আসাদগেইট, ধানমন্ডি, মিরপুর রোড, খিলগাঁও, মালিবাগ, শান্তিনগর, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় শিক্ষার্থীরা আগের দিনের মতই মিছিল করেছে এবং গাড়ি থামিয়ে চালকদের লাইসেন্স পরীক্ষা করছে। পুলিশের ভূমিকায় তাদের এই পরীক্ষা থেকে পুলিশের গাড়িও ছাড় পায়নি। সরকারের উর্ধ্বতন ব্যক্তিদের গাড়ির কাগজও তারা পরীক্ষা করেন। সাত রাস্তার দিক থেকে সচিবালয়ে যাওয়ার সময় মগবাজারে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মধ্যে পড়ে সরকারি একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার গাড়ি। তিনি বেরিয়ে এসে বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়গুলো তিনি মন্ত্রিসভায় তুলবেন। তখন হাততালি দিয়ে তাকে যেতে দেয় শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভকারীদের অধিকাংশের পরনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইউনিফর্ম দেখা গেছে। তবে স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় অনেকে সাধারণ পোশাকেও এসেছিল। পুলিশের গাড়ি আটকানোর চেষ্টার সময় কারও কারও মুখে কাপড় পেঁচিয়ে রাখতেও দেখা গেছে। বিক্ষোভকারীদের হাতে দেখা গেছে- ‘নিরাপদ সড়ক চাই’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘উই আর স্টুডেন্ট, নট টেরোরিস্ট’— এরকম বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড ও টুকরো কাগজ। রাস্তায় গোল হয়ে বসে সুরে সুরে স্লোগান দিতেও দেখা যায় কাউকে কাউকে। তাদের অনেকে পোশাক ঘামে-বৃষ্টিতে ভিজে একাকার। এদিকে ভ্রুপক্ষেপ নেই, মুুখে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকার প্রত্যয়।
সকালে টঙ্গী কলেজগেট এলাকায় ময়মনসিংহ রুটের দু’টি বাস ভাঙচুরের শিকার হয়। মাইলস্টোন কলেজ, উত্তরা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, রমিজউদ্দিন কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইউনিফর্ম পড়া শিক্ষার্থীরা অল্প সময়ের মধ্যে উত্তরা এলাকার রাস্তার দখল নেয়। উত্তরার জসিমউদ্দিন মোড়ে একটি পিক-আপ ভ্যান ভাংচুরের শিকার হলে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বেলা ১১টার দিকে খিলক্ষেত আর ঢাকা রিজেন্সি হোটেলের সামনের রাস্তাও ছিল শিক্ষার্থীদের দখলে। পুরো এলাকা চলে যায় শিক্ষার্থীদের দখলে। কুড়িল বিশ্বরোড, খিলক্ষেত দিয়ে বহু মানুষ তখন হালকা বৃষ্টির মধ্যে পায়ে হেঁটেই গন্তব্যের দিকে যাচ্ছিলেন।
শাহবাগে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে শুরু করে সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকেই। হাতে হাত বেঁধে গোল হয়ে দাঁড়িয়ে শাহবাগ মোড়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। ধীরে ধীরে ছাতা হাতে জমায়েত বাড়তে থাকে। চলতে থাকে স্লোগান। মুন্সী আবদুর রউফ রাইফেলস কলেজ, বদরুন্নেসা কলেজ, নটরডেম কলেজ, ক্যামব্রিয়ান কলেজের পোশাক পরা শিক্ষার্থীদের দেখা যায় শাগবাগে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাইক নিয়ে আসে আন্দোলনকারীরা। সেখানে ঘোষণা দেওয়া হয়— ‘আমরা সিঙ্গেল লাইনে গাড়িগুলো ছাড়ব। গাড়ির লাইসেন্স থাকলে তারপর যেতে দেব।’ ওই সময় শাহাবাগ দিয়ে যাওয়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স যারা দেয় তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। ঢাকা শহরের সকল যানবাহন হবে পাবলিক। সরকার পরিচালনা করবে সেগুলো। এই আন্দোলনও গড়ে তুলতে হবে।’
ইমপেরিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা বেলা সাড়ে ১০টার দিকে রামপুরায় রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে বিভিন্ন যানবাহন থামিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা করতে শুরু করলে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে মেরুল বাড্ডা থেকেই যানবাহন ঘুরিয়ে দেয় পুলিশ। খিলগাঁও রেলগেইট থেকে মালিবাগ রেলগেইট পর্যন্ত বাস আটকাতে দেখা যায় খিলগাঁও ন্যাশনাল আইডিয়াল, খিলগাঁও গভার্মমেন্ট বয়েজ হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের। রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের মালিবাগ মোড় থেকে শান্তিনগর মোড় পর্যন্ত জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে দেখা যায় বেলা ১১টার দিকে। ফলে কাকরাইল থেকে শান্তিনগর হয়ে মালিবাগ পর্যন্ত পুরো রাস্তা অচল হয়ে যায়। ফ্লাইওভারের ওপরে গাড়ি আটকে থাকতে দেখা যায়। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামে বেলা ১২টার দিকে।
রহিমা খাতুন নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা কোনো কথা বলব না। আমাদের কোনো নেতা নাই। আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমরা ন্যায় বিচার চাই।’ মহাখালীর রেলগেইট এলাকায় বিএফ শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। তারা রেল লাইনের দুইপাশে এবং সাতরাস্তা থেকে আমতলী যাওয়ার দুই দিকের রাস্তায় অবস্থান নিয়ে গাড়ি আটকে চালক ও গাড়ির লাইসেন্স দেখছিলেন। কাগজ দেখাতে না পারলে গাড়ি পাঠাচ্ছিলেন পুলিশের কাছে। অনেক গাড়ির বনেটে বা গায়ে মার্কার কলম দিয়ে তাদের ‘উই ওয়ান্ট জার্স্টিস’ লিখে দিতে দেখা গেছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
আন্দোলন এখন সারাদেশে

দেশের খবর: সারা দেশের স্কুল কলেজ বন্ধ থাকার পরেও বৃহস্পতিবার পঞ্চম দিনের মতো রাজপথে নেমে আসে শিক্ষার্থীরা। বৃষ্টি উপেক্ষা করে নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের অবস্থানে অচল হয়ে পড়ে পুরো নগরী। শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে চলমান এ আন্দোলনে বৃহস্পতিবারও রাজধানীতে বেশিরভাগ গণপরিবহনকে রাস্তায় দেখা যায়নি। এতে চরম দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে অফিসগামীদের। এরপরও দুর্ভোগের শিকার নগরবাসী বলছেন, শিক্ষার্থীরা তাদের যৌক্তিক দাবি নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছে। আন্দোলন আমরা সমর্থন করি। পরিবহন সেক্টরের এ নৈরাজ্যের সমাধান হওয়া জরুরী। আন্দোলনের সমর্থনে অনেক নারীরাও ঘর ছেড়ে নেমে আসেন রাজপথে। এ ছাড়াও অভিভাবক, শিল্পীসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ রাজপথে নেমে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেন। বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ছিল শান্তিপূর্ণ এবং অভিনব। নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে তারা গাড়ি থামিয়ে কাগজপত্র ও চালকের লাইসেন্স পরীক্ষা করেছেন। তাদের কথা মতো ট্টাফিক সার্জেন্টকে মামলা নিতে দেখা গেছে। ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনের মুখে ঘাতক বাসের মালিক শাহাদত হোসেন ও চালকদের র‌্যাব-পুলিশ গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সকালে অল্প সংখ্যক গাড়ি চলাচল করলেও বেলা ১১টার পর তা একেবারে কমে আসে। ওদিকে সকাল থেকে রাস্তা দখল নিয়ে শিক্ষার্থীরা গাড়ি ও চালকের লাইসেন্সসহ বিভিন্ন কাগজপত্র তল্লাশী ও যাচাই করে। তবে অনেক পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় ঘন্টার পর ঘন্টা গাড়ি নিয়ে আটকে থাকতে হয় চালককে। লাইসেন্স না থাকায় বিপাকে পড়তে হয় মন্ত্রী, পুলিশ, বিজিবি ও আনসারসহ বিভিন্ন সরকারী সংস্থার গাড়ি চালকদেরও। শিক্ষার্থীদের গাড়ির কাগজপত্র ও চালকের লাইসেন্স তল্লাশী করার কারণে ভয়াবহ এ চিত্র ফুটে উঠে। রাজধানীসহ দেশের বেশ কিছু শহরের অচল অবস্থা দূর করতে খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সড়ক দুঘর্টনায় নিহত মিমের বাবা-মা ও আবদুল করিমের মাকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে কথা বলেছেন। এর পর পরই মিমের বাবা ও করিমের মা শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান। একই সাথে শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ্য থেকে। এছাড়া পুলিশের সকল গাড়ি চালককে লাইসেন্সসহ গাড়ির সকল কাগজপত্র সাথে রাখাও নির্দেশ দেন ডিএমপি কমিশনার। বিমানবন্দর সড়কে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে রাস্তায় নেমেছেন অনেক অভিভাবকও। বৃহস্পতিবার দুপুরে সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে খাবার, পানি, স্যালাইন এবং বিস্কুট বিতরণ করতে দেখা গেছে অনেক অভিভাবককে। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎফুল ও প্রেরণা সৃষ্টি হয়। রাজধানীর বাইরেও শিক্ষার্থীদের অহিংস আন্দোলন চলছে। সাভার, গাজীপুর, টঙ্গী, রংপুর, ফেনী, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আমাদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীরা রাজপথে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছে। সেখানেও তারা গাড়ির কাগজপত্র চেক করছেন। বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন তারা।
ক্লাস না থাকলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত ড্রেস ও কাঁধে ব্যাগ নিয়েই বিক্ষোভে যোগ দেন শিক্ষার্থীরা। সকাল থেকে নগরীর উত্তরা, মৌচাক, মালিবাগ, মগবাজার, শাহবাগ, সাইন্সল্যাব, গুলশান, রামপুরা, মহাখালী, ফার্মগেট, আসাদগেট, মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমনটা দেখা গেছে। বেলা ১১টার পর থেকে উত্তরা জসীমউদ্দিন রোড মোড় থেকে হাউজ বিল্ডিং পর্যন্ত পুরো সড়ক শিক্ষার্থীরা দখলে নিয়েছে। ফলে উত্তরা হয়ে ঢাকায় সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। যা চলে বিকেল পর্যন্ত। মহাখালীতে রাস্তা অবরোধের পাশাপাশি বিভিন্ন যানবাহনের কাগজ ও চালকদের লাইসেন্স পরীক্ষা করেন শিক্ষার্থীরা। গাড়ির কাগজপত্র সব ঠিক থাকলেই কেবল গাড়িগুলো যেতে দেন তারা।
নগর পুলিশের ট্রাফিক উত্তর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) প্রবীর কুমার রায় জানান, বিভিন্ন পয়েন্টে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেয়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। অন্যান্য দিনের মতো আজও পুলিশ ধৈর্যের সঙ্গে সার্বিক পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা চলছে। একই অবস্থা মহাখালীতেও। কোনো ভাঙচুর নেই, তবে কাগজ ছাড়া রক্ষা নেই। মিরপুরে রিকশা লেন মেনে চলা, পথচারীকে ফুটপাত দিয়ে হাঁটা নিশ্চিত করছে খুদেরা। পথচারীরাও শিক্ষার্থীদের কর্মকান্ডকে ভলেন্টিয়ারের কাজ হিসেবেই তুলনা করেছেন। এদিকে কাকরাইল-বেইলি রোড মোড়, রামপুরা, মৌচাক, মালিবাগ ও মগবাজার এলাকার সড়কও দখলে রয়েছে আশপাশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, স্কুল বন্ধ থাকা সত্তে¡ও বিবেকের তাড়নায় নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থার দাবিতে তারা রাস্তায় নেমেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ অনেককেই বিক্ষোভে অংশ না নিতে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিচ্ছেন।
মামলা নেয়ার পুলিশ নেই
সায়েন্স ল্যাব মোড়ে চালকের লাইসেন্স না থাকায় বাস, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল আটকে রাখছে শিক্ষার্থীরা। তবে এসব যানবাহনের চালকের বিরুদ্ধে মামলা দেয়ার জন্য পুলিশকে তারা খুঁজে পায়নি। দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা একটি গাড়ি আটক করে। গাড়ির ভেতরে ছিলেন একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এটা আমাদের জেলা প্রশাসনের গাড়ি নয়। আমরা গাড়িটি ভাড়া করেছি। গাড়ি ভাড়া করার সময় চালক জানিয়েছিল লাইসেন্স ও কাগজপত্র ঠিক আছে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে তাঁর কথায় গরমিল আছে। কয়েকজন ছাত্র বলেন, আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করছি। মিটারে সিএনজিচালিত অটোরিকশা না যাওয়া এক ধরনের অপরাধ। তাই তাঁর শাস্তি হওয়া উচিত। কিন্তু মামলা দেয়ার জন্য যথাযথ কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। বেলা আড়াইটার দিকে মিরপুর রোডে ল্যাব এইডের সামনে পুলিশ বক্সে দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক সার্জেন্টের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাগ্বিতান্ডা হয়। একপর্যায়ে ছাত্ররা ট্রাফিক সার্জেন্টের ব্যবহৃত সাদা রঙের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় ওই পুলিশ সার্জেন্টকে তারা মারধর করে। একপর্যায়ে ওই পুলিশ সার্জেন্ট ল্যাব এইডের সামনে থেকে সায়েন্স ল্যাবের দিকে দৌড়ে পালান। শিক্ষার্থীরাও ধাওয়া দেয়। পরে পোড়ানো মোটরসাইকেলটি পুলিশের কন্ট্রোল প্যানেলের সামনে এনে রাখে তারা।
খাবার নিয়ে অভিভাবকরাও রাজপথে, একাত্ব শিক্ষার্থীদের সাথে
দুপুরে সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে খাবার, পানি, স্যালাইন এবং বিস্কুট বিতরণ করতে দেখা গেছে অনেক অভিভাবককে। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎফুল ও প্রেরণা সৃষ্টি হয়। খাবার ও পানি নিয়ে আসা অভিভাবকদের একজন নার্গিস আক্তার। ধানমন্ডিতে থাকেন তিনি। তার সন্তনও নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় আন্দোলন করছে। নার্গিস আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, শুধু আমার ছেলেই না, আরও অনেক মায়ের সন্তানেরা ন্যায্য দাবিতে রাস্তায় নেমেছে। আমি তাদের দাবির সঙ্গে একমত। আমি আশা করি, অন্য অভিভাবকরাও তাদের সন্তানের জন্য নিরাপদ সড়ক চান। শিক্ষার্থীদের খাবার ও পানির বোতল দিচ্ছেন অভিভাবকরাঅন্যদিকে, কয়েকজন তরুণীকে দেখা গেলো খাবারের প্যাকেট নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করতে। পরিচয় জানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা বাংলাদেশের নাগরিক এবং এই শিক্ষার্থীদের বড় বোন। আর কোনও পরিচয় নাই।
সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকার রাস্তায় কয়েকজন মাকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা যায়। একজনের হাতে থাকা পোস্টারে লেখা রয়েছে, ‘উই আর উইথ ইউ, টিচার্স ফর স্টুডেন্টস, চিলড্রেন্স ফর স্টুডেন্টস। আরেকজনের পোস্টারে লেখা, আই এম এ মাদার, আই ওয়ান্ট জাস্টিস। আরেক মায়ের হাতে থাকা পোস্টারে লেখা রয়েছে, সাপোর্টিং দ্য ইয়ুথ ইন বিল্ডিং এ সেভ নেশন। উই আর দ্য ৯৯% বেটার ট্যুমরো।
মিরপুরঃ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার সময় পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে। বিকাল ৪টার দিকে মিরপুর-১৩ ও ১৪ নম্বরের মধ্যে বিআরটিএ থেকে কাফরুল থানা হয়ে পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টের গেইট পর্যন্ত সড়কে এ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় যুবলীগের কর্মীরাও তাদের ওপর হামলা করে। সংঘর্ষের পর শিক্ষার্থীরা মিরপুর ১০ নম্বরের দিকে সরে যায়। এর আগে সকাল ১০টা থেকে মিরপুর সড়কের সায়েন্স ল্যাবরেটরি, লালমাটিয়া, আসাদগেট ও সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সামনে বৃষ্টি উপেক্ষা করেই সড়ক অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। অবরোধ চলে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতেও। সাইন্সল্যাবরেটরিঃ ধানমÐি, আসাদগেট, মোহাম্মদপুর এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা বিভিন্ন যানবাহন ও চালকের লাইসেন্সসহ ফিটনেস সংক্রান্ত কাগজপত্র তল্লাশী করেন। যাদের কাগজ ঠিক ছিল তাদের ছেড়ে দেন। এ ছাড়া কাগজ দেখাতে না পারায় অন্যদের গাড়ি থেকে নামিয়ে দেন। এ সময় বিজিবির দুটি গাড়ির কাগজপত্র ঠিক না থাকায় সেগুলোতে মামলা দেওয়া হয়। সরেজমিনে দেখা গেছে, সাইন্সল্যাব ফুটওভারব্রিজের নিচে সিটি কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ, ঢাকা কলেজ, গভমেন্ট ল্যাবরেটরি এবং ধানমণ্ডিআইডিয়াল স্কুলের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে গাড়ি তল্লাশী চালায়। শিক্ষার্থীদের একটি দল সারিবদ্ধভাবে রিকসা ও অ্যাম্বুলেন্স পার করে দিচ্ছিলেন। এ সময় অনেক অভিভাবককেও সড়কের পাশে বসে শিক্ষার্থীদের দাবীর প্রতি সম্মতি জানিয়ে ¯েøাগান দিতে দেখা গেছে। ধানমন্ডি-২৭ নম্বর সড়কে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিসহ আশপাশের স্কুলের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেয়। অভিনেত্রী বন্যা মির্জা ধানমন্ডি ২৭ নম্বরে এসে আন্দালনকারীদের সাথে সংহতি জানান। মোহাম্মদপুরে বাস স্ট্যান্ড এলাকা অবরোধ করে বিক্ষোভ ও গাড়ির কাগজ যাচাই করে পাইওনিয়ার কলেজ, আলহাজ মকবুল হোসেন ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থীরা। কাগজপত্র তল্লাশীকালে যারা দেখাতে পেরেছে তাদের যেতে দেওয়া হয় এবং অন্যদের গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। এদিকে দুপুর ২টার দিকে সাইন্সল্যাব এলাকায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের একটি গাড়ি আটকিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও কাগজ দেখতে চাইলে চালক তা দেখাতে পারেনি। পরে শিক্ষার্থীরা গাড়ির চাকার হাওয়া ছেড়ে দেয় এবং গাড়ির ওপর ৯ দফার বিভিন্ন দাবি ও মন্তব্য লিখে দেয়।
শাহবাগঃ বেলা ১১টার পর থেকে শাহবাগে এসে জড়ো হতে থাকে শিক্ষার্থীরা। বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে বৃষ্টি শুরু হলেও তারা তারা শাহবাগ মোড়ে বৃত্ত তৈরি করে অবস্থান করে। যদিও অন্যদিনের মতো যান চলাচল বন্ধ করেনি। রিকশা ও বাস এক লাইনে যাতায়াতের জন্য নির্দেশনা দিতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের তারা গাড়ির লাইসেন্স তল্লাশী ও কাগজপত্র যাচাই করছিল। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অনেক অভিভাবকে দেখা গেছে শাহবাগ।ে তারা নিজেরাও সন্তানদের সঙ্গে বৃষ্টিতে ভিঁজতে ছিলেন। অনেক অভিভাবককে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের ঠান্ডা পানি ও বিভিন্ন ফলা খাওয়াচ্ছিলেন। এ সময় আন্দোলনকারীরা পুলিশের একটি গাড়ি লাইসেন্স না থাকায় গাড়িটি আটকে সার্জেন্টকে দিয়ে মামলা করিয়ে দেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সম্মিলিত ছাত্রী ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আন্দোলন করতে দেখা গেছে।
ফার্মগেটঃ ফার্মগেট, বিজয়স্বরণী, সংসদভববনের আশপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ ও বিভিন্ন গাড়ির কাগজপত্র তল্লাশী করে সরকারি বিজ্ঞান কলেজ, হলিক্রস স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও তেজগাও কলেজসহ আশপাশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এ সময় কাগজপত্র দেখাতে না পারায় তেজগাঁও থানার দুটি গাড়ি আটক করে শিক্ষার্থীরা। পরে বাধ্য হয়ে গাড়ি ১০-১২ জন পুলিশ গাড়ি থেকে নেমে যায়। রুমানা নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা পুলিশের কাছে গাড়ি ও চালকের লাইসেন্স দেখতে চাইলে তারা জানায় লাইসেন্স নেই বলে জানায়। অন্য আরকেটি গাড়ির সিটবেল্ট নেই এছাড়া লাইসেন্সও দেখাতে পারেনি। এ সময় পুলিশ মামলার হুমকি দিলে তাদেরকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেই। একজন পুলিশ সদস্য বলেন, আমরা নিয়মিত ডিউটি করছিলাম। কিন্তু শিক্ষার্থীরা গাড়ি আটকে দেয়ায় বাধ্য হয়েই থানায় ফিরে যাচ্ছি।
পুরান ঢাকাঃ এদিকে পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার মোড়, বকশি বাজার, সদরঘাটসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ ও গাড়ির কাগজপত্র যাচাই করে উদায়ন স্কুল, ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরিস্কুল, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজ, শেখ বোরহান উদ্দিনসহ আশপাশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কবি নজরুল কলেজ, ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজসহ অনেককে কাগজপত্র যাচাই করতে দেখা গেছে। জগন্নাথ কলেজ এলাকায় লাইসেন্স দেখাতে না পারায় পুলিশ সদর দফতরের একটি গাড়ি আটকে দেয় শিক্ষার্থীরা।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, গতকাল সকালে রাজশাহীতেও বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শতশত শিক্ষার্থীরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও ইউনিফরম পড়ে নগরীর প্রাণ কেন্দ্র সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে তাদের নয় দফা ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে মানববন্ধনও এক মিনিট নিরবতা পালন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এ সময় বিপুল সংখ্যক পুলিশ তাদের পাশে অবস্থান নেয়। বিক্ষোভ মানববন্ধন চলাকালে এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক শিক্ষার্থীদের বলেন, আমি তোমাদের হারাতে চাই না। আন্দোলন সুষ্ঠু ভাবে করতে হবে।
বরিশাল ব্যুরো জানায়: সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিক্ষোভ প্রদর্শনের পরে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চৌমুহনীতে অবস্থান নিয়ে মহাসড়ক ও আসেপাশের সড়ক অচল করে দেয় ছাত্রছাত্রীরা। গতকাল সকাল থেকে বিক্ষোভ ও পরে অবরোধের ফলে দক্ষিনাঞ্চলের সাথে দেশের বিভিন্ন রুটে যানবাহন চলাচল যথেষ্ঠ হ্রাস পেয়েছে। বুধবার একইস্থানে অবরোধ চলাকালে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে দুর্ব্যবহার করায় বিএমপি’র কোতোয়ালী থানার এসআই হাবিবুর রহমানকে ঐদিন বিকেলেই প্রত্যাহার করা হয়।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, ছাত্র বিক্ষোভ আর অবরোধে দিনভর অচল ছিল দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম। গতকাল দ্বিতীয় দিনের মতো রাস্তায় নামে হাজার হাজার শিক্ষার্থী। সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করলেও শিক্ষার্থীরা স্ব স্ব স্কুল কলেজের ইউনিফর্ম পরে ভোর থেকেই রাস্তায় নেমে যায়। অবরোধ, বিক্ষোভ এবং এরপর যানবাহন ও চালকের লাইসেন্স তল্লাশি শুরু করে তারা। এর ফলে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুরো নগরী যানজটে স্থবির হয়ে পড়ে। বিকেল ৩টার পর শিক্ষার্থীরা ফিরে যায়। এদিকে ১১টার দিকে নগরীর দুই নম্বর গেট এলাকায় অবস্থায় নেয় প্রায় হাজার খানেক শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কাজেম আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ, চট্টগ্রাম কলেজ, হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজ, পলিটেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট ও শ্যামলী পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের দেখা গেছে। সেখানেও একই উপায়ে যানবাহনের কাগজপত্র দেখছিল শিক্ষার্থীরা। একই সময়ে নগরীর টাইগার পাস, বাদামতলী, অলঙ্কার, এ কে খান গেইট, সাগরিকা ও বড় পোল এলাকায় সড়কে অবস্থান নিয়ে যানবাহনের লাইসেন্স ও ফিটনেস সার্টিফিকেট পরিক্ষা করে শিক্ষার্থীরা। বুধবার বিকেল থেকেই ফেসবুকের মাধ্যমে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বাইরেও অন্য লোকজনদের বিক্ষোভে ওয়াসার মোড় ও দুই নম্বর গেট এলাকায় জড়ো হওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছিল।
দিনাজপুর অফিস জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় আকষ্মিকভাবে দিনাজপুর শহরের ব্যস্ততম লিলিমোড় এলাকায় ছাত্ররা নিরাপদ সড়কের দাবীতে মানববন্ধন শুরু করে। বিভিন্ন স্কুল কলেজ থেকে আসা ছাত্ররা হাতে লেখা প্লাকার্ড নিয়ে সড়কে অবস্থান নিলে যানজটের সৃষ্টি হয়। বন্ধ হয়ে যায় লিলি মোড় হয়ে জেলা প্রশাসন ও আদালত চত্বরে যাওয়ার পথটি। পুলিশ এসে অবরোধকারী ছাত্রদের সাথে কথা বলে বেলা ১২ টা পর্যন্ত তাদের অনুমতি দেয়। এসময় ছাত্ররা নিরাপদ সড়কের দাবীতে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়। ছাত্রদের সাথে কয়েকজন পথচারীও মানববন্ধনে অংশ নেয়। বিকেল ৪টায় দিনাজপুর প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষনা করার কথা জানিয়ে অবরোধ শেষ করা হয়।
জাবি সংবাদদাতা জানান, নিরাপদ সড়কসহ নয় দফা দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচী পালন করেছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা দুপুর ২টা পর্যন্ত তারা এই অবরোধ কর্মসূচী পালন করে।
কিশোরগঞ্জ থেকে জানা যায়, স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকলেও বৃহস্পতিবার সকালে নিরাপদ সড়কের দাবিতে কিশোরগঞ্জে স্কুল ড্রেস পরা শিক্ষার্থীদের রাস্তায় নেমে আসতে দেখা গেছে। সাত দফা দাবি আদায়ে আজ সারা দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে শান্তিপ‚র্ণ মানববন্ধন কর্মস‚চির অংশ হিসেবে কিশোরঞ্জের শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করে।
মাগুরা থেকে জানান হয়, মাগুরায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টার দিকে সরকারী হোসেন শহীদ সোহরাওয়র্দী কলেজ ক্যাম্পাস থেকে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহর প্রদক্ষিন শেষে কলেজ চত্বরে সমাবেশ করে। আর যেন কোন মায়ের বুক খালী না হয় সেই আহবান করে সড়কে চলাচল নিরাপদ করতে সরকারের প্রতি আহবান জানান সমাবেশে ছাত্ররা।
নারায়ণগঞ্জ থেকে জানা যায়, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করেও থামানো গেল না বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের। বৃহস্পতিবার ২ আগস্ট সকাল ১০টা হতে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় অবস্থান নেয় শত শত শিক্ষার্থী। তারা শহীদ মিনারে অবস্থানের পর চাষাড়া গোল চত্বরে সমাবেশ করে সেখানে আটকে দেয় সকল প্রকার যানবাহন। তবে এদিন আন্দোলনের মাত্রা ছিল একটু ভিন্ন। এদিন শুধু লাইসেন্স চেক করে ছেড়ে দেয় যানবাহন। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা হতেই নারায়ণগঞ্জ সরকারী তোলারাম কলেজ, নারায়ণগঞ্জ কলেজ, কমার্স কলেজ, মডেল কলেজ সহ বেশ কয়েকটি কলেজ ও স্কুলের শিক্ষার্থীরা দলে দলে চাষাঢ়া মোড়ে এসে অবস্থান নেয়। শহরের চাষাঢ়া গোল চত্ত¡রে শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কারণে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড, ঢাকা-পাগলা-নারায়ণগঞ্জ ও চাষাঢ়া-আদমজী-শিমরাইল সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
নরসিংদী থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে নরসিংদীর ভেলানগর এলাকায় বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা এই অবরোধ সৃষ্টি করে। মুহুর্ত্তের মধ্যে অবরোধ সৈয়দনগর ইটাখোলার সহ মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে। এসময় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিকেল ৫টা পযর্ন্ত তাদের অবরোধ চলে।
পাবনা থেকে জানান, বেলা ১২টার দিকে পাবনা জেলা স্কুল, কালেক্টরেট উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ ও সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীর হত্যায় দায়ী ঘাতক বাস চালকের বিচার দাবি এবং রাস্তায় ট্রাফিক শৃংখলা মেনে শহরে চলাচল করা রিকশা(ব্যাটারী চালিত ইঞ্জিন ) অটোবাইক মোটর সাইকেল চালকদের সুশৃঙ্খলভাবে চলার অনুরোধ করেন। এ সময় সড়কে চলাচলকারীরাও তাদের অনুরোধে সাড়া দেন। সড়কটিতে শৃঙ্খলা ফিরে আসে।
রাবি সংবাদদাতা জানান,নিরাপদ সড়ক ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দাবিতে ঢাকায় স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে সংহতি প্রকাশ করে মানববন্ধন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টায় শিক্ষার্থীদের নয় দফা দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধন পালন করে শিক্ষার্থীরা।
পটুয়াখালী: বেলা সাড়ে ১১টায় চৌরাস্তা এলাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে। এতে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটাগামী যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুই ঘন্টা বন্ধ থাকার পরে পুলিশের মধ্যস্ততায় শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নিয়ে শহরের গুরুত্ব পূর্ণ সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে। পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা।
সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কর্মসূচীর মধ্যে ছিল বিক্ষোভ মিছিল ও মানব বন্ধন এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক। সকালে বাংলাদেশ আর্মি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে উপজেলা পরিষদ চত্বর, পাঁচমাথা মোড় ঘুরে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সৈয়দপুর প্রেসক্লাবের সামনে ঘন্টাব্যাপী মানব বন্ধন করে।
সাভার থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিভিন্ন পয়েন্টে শিক্ষার্থীরা এসে জড়ো হতে থাকে। তারা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার বাসস্ট্যান্ড থেকে মিছিল নিয়ে রেডিও কলোনী বাসস্ট্যানে মহাসড়ক অবরোধ করে। বৃষ্টি উপেক্ষা করে তারা মহাসড়কে বসে পড়ে বিভিন্ন শ্লোগান দিয়ে উল্লাস করতে থাকে। পরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠারে শিক্ষার্থীরা সড়কের উভয় পাশে আটকা পড়া যানবাহনের চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স চেকিং করে। সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ)উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত দুই ঘন্টা ব্যাপী এই সড়কে তারা অবস্থান করে। এ সময় মহাসড়কের দুই দিকে দুই ২ কি.মি. যানযটের সৃষ্টি হয়। এ সময় ভোগান্তিতে পরে এ রুটের হাজারো বাসযাত্রী। আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও কেয়াইন ইউপি চেয়ারম্যান বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললে তারা অবরোধ উঠিয়ে নেয়।
টাঙ্গাইল জেলা থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে টাঙ্গাইল শহরের শহীদ মিনার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন শেষে আশিকপুর বাইপাস গিয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে। পরে সেখানেই অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। এসময় বিভিন্ন্ প্লে-কার্ড ও ফেস্টুন নিয়ে শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত করতে থাকে তারা। দুপুর ১১টা ৪০ মিনিট থেকে ১২টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। এতে করে মহাসড়কে চলাচলকারী সকল যানবাহন বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তার দু পাশে দেখা দেয় দীর্ঘ যানজটের।
দুমকি(পটুয়াখালী) সংবাদদাতা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১০ ঘটিকায় বাসের ধাক্কায় দুই শিক্ষার্থীর নিহত হওয়ার প্রতিবাদে দুমকি টু বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে দুমকি সরকারি জনতা কলেজের শিক্ষার্থীরা। বাস দুর্ঘটনার জন্য দায়ী চালকদের ফাঁসি এবং লাইসেন্স ছাড়া চালকদের গাড়ি চালনা বন্ধ করাসহ ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষে প্রায় ২ ঘন্টা ধরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, রাস্তা অবরোধ চলতে থাকলে রাস্তায় যানজটের সৃষ্ঠি হয় তাতে করে দুমকি টু বরিশালের সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংবাদদাতা জানান, বৃহস্পতিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারী কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের একটি মিছিল বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের কাউতলীতে কিছুক্ষণ অবস্থান নেয়। পরে মিছিলটি সেখান থেকে পুনরায় ঘুরে স্থানীয় প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়।
সিলেট ব্যুরো থেকে জানা যায়, বেলা আড়াইটা থেকে নগরীর চৌহাট্টা পয়েন্ট ও সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকাতে নৌমন্ত্রী শাজান খানের পদত্যাগ দাবিসহ ৯ দফা দাবিতে জড়ো হয়েছেন হাজারো শিক্ষার্থী। জড়ো হওয়া ছাত্র-ছাত্রীরা নগরীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা পড়ুয়া বলে জানা গেছে। তারা নগরীর ব্যস্ততম চৌহাট্টা সড়কের চারটি রাস্তাই অবরোধ করে রাখে। তবে অ্যাম্বুলেন্স চলাচলে কোন বাধা দেয়নি তারা। এর আগে নগরীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় মিছিলসহকারে চৌহাট্টায় জড়ো হন। তারা সড়কে অবস্থান করে গাড়ির বিভিন্ন কাগজপত্র, লাইসেন্স যাচাই করেন।
এদিকে নিরাপদ সড়কের দাবিতে সিলেটের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়।
নোয়াখালী ব্যুরো থেকে জানা যায়, নোয়াখালীতে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এসময় কয়েকটি গাড়ীতে ইট নিক্ষেপ করে গাড়ীর কাঁচ ভাঙচুর করে। বৃহস্পতিবার ক জেলা শহর মাইজদীতে এই কর্মসূচী পালন করে তারা। এসময় বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা শহরের টাউন হল চত্বরে এসে জড়ো হয় হয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে মাইজদী পুরাতন বাসষ্ট্যান্ড থেকে জিলা স্কুল মোড় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটারব্যাপী সড়ক অবরোধ করে রাখে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে চীনের চার শক্তিশালী অস্ত্র

বিদেশের খবর: এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র আর চীনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ শুল্ক আরোপের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দুইটি দেশ পরস্পরের ওপর বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে, তবে সবচেয়ে আঘাতগুলো এসেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন থেকেই।
গত জানুয়ারি মাস থেকে, চীনের কয়েকশো পণ্যের বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে ওয়াশিংটন।
যদিও মার্কিন পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করে পাল্টা জবাব দিয়েছে বেইজিং, তবে এশিয়ার এই সুপার পাওয়ারের আরো চারটি অস্ত্র রয়েছে, পরিস্থিতি খারাপের দিকে গড়ালে যা হয়তো তারা ব্যবহার করতে পারে। এজন্য বেশ কয়েকটি পন্থা রয়েছে। কোন সরকার হয়তো কাস্টমস ব্যবস্থা কঠোর করে তুলতে পারে, নতুন আইন বা বিধিনিষেধ জারি করতে পারে এবং ভৌগলিক সীমার মধ্যে কর্মরত আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর খরচ বাড়িয়ে দিতে পারে।
সিরাকুজ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ম্যারি লভলি বিবিসি মুন্ডুকে বলেছেন, ”এ ধরণের ব্যবস্থা নেয়ার অতীত ইতিহাস রয়েছে চীনের, যা পরিষ্কারভাবে আমেরিকান কোম্পানিগুলোর জন্য উদ্বেগের একটি বিষয়।””কিন্তু এরকম যেকোনো পদক্ষেপের ফলে উভয় পক্ষকে বড় মূল্য দিতে হবে। এটা হয়তো রপ্তানিকারক বা বিনিয়োগকারীদের আমেরিকায় বা চীনের বাজারের প্রতি নিরুৎসাহিত করবে। এর ফলে প্রতিযোগিতা কমে যাবে, পণ্যের দাম বাড়বে এবং ভোক্তাদের বিকল্প পণ্য পাওয়ার সুবিধা কমে যাবে” তিনি বলছেন।
২. যুক্তরাষ্ট্রকে একঘরে করে তোলা
যুক্তরাষ্ট্রে যেমন একজন ব্যক্তি শুধুমাত্র দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হতে পারেন, চীন সম্প্রতি তাদের নিয়ম পাল্টেছে। ফলে খুব তাড়াতাড়ি ফলাফল পাবার জন্য চীনের প্রেসিডেন্ট শী জিনপিংয়ের অতটা তাড়াহুড়ো না করলেও চলবে।
তার প্রশাসন হয়তো আস্তে আস্তে অন্য দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বা জোট গড়ে তুলতে পারে, যা যুক্তরাষ্ট্রকে একঘরে করে ফেলবে।
অনেক বিশ্লেষকের মতে, ইউরোপ, এশিয়া আর ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোর প্রতি মনোযোগ বাড়িয়ে বেইজিং এর মধ্যেই সেই প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তবে এ ধরণের পদক্ষেপে ঝুঁকিও রয়েছে। অনেক সময় বাজারের কারণে যা ধারণা করা হয়, তার চেয়েও ইউয়ানের মুদ্রার মান আরো বেশি পড়ে যেতে পারে। তখন সেটি চীনের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার জন্য অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।
তবে মুদ্রার মান কমালে চীনের পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে উচ্চ শুল্ক আরোপ করেছে, তার প্রভাব কম পড়বে। তখন যুক্তরাষ্ট্রকে আবার শুল্ক বাড়িয়ে সেটি সামাল দিতে হতে পারে, যা হয়তো উত্তেজনা আরেক দফা বাড়াবে।
৪. যুক্তরাষ্ট্রের দেনা ঝেড়ে ফেলা
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ১.১৭ ট্রিলিয়ন ডলার সমমূল্যের ট্রেজারি বণ্ড রয়েছে চীনের কাছে। অনেক বিশ্লেষক ধারণা করেন, পরিস্থিতির আরো অবনতি হলে চীন হয়তো এসব বণ্ড ছেড়ে দিতে পারে। গত কয়েক দশকে চীন এসব ট্রেজারি বণ্ডে বিনিয়োগ করেছে। প্রতিবছর এ থেকে বড় অংকের সুদও পায় দেশটি।
চীন যদি বড় আকারের বণ্ড বিক্রির উদ্যোগ নেয়, সেটি আন্তর্জাতিক বাজারে বড় প্রভাব ফেলবে। হঠাৎ করে বেশি বণ্ড বাজারে চলে এলে সেটির দাম পড়ে যাবে এবং তখন মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য অর্থ সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়বে।
যার ফল হবে আমেরিকান অর্থনীতির গতি কমে যাওয়া। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, বণ্ডের দাম কমে গেলে তা চীনের ওপরও প্রভাব ফেলবে এবং বণ্ডের মতো বিকল্প নিরাপদ বিনিয়োগ বাজার খুঁজে পাওয়াও চীনের জন্য কঠিন হবে।
ভঙ্গুর চীন
বিশ্লেষকদের বড় একটি অংশই মনে করেন, শুল্ক আরোপের বাইরে চীন এই বাণিজ্য যুদ্ধ আর বাড়াতে চাইবে না।
চীনের অর্থনীতি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ স্কট কেনেডি বলছেন. ” বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হলে যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় চীন অনেক বেশি ভঙ্গুর অবস্থায় পড়বে। কারণ আমেরিকান অর্থনীতি অনেক বড় আর অনেক বেশি দক্ষ।” ‘বণ্ড বিক্রি করে অর্থনৈতিক সংকট তৈরি করবে না বেইজিং, তাহলে সেটা সামলাতে যুক্তরাষ্ট্র তাৎক্ষণিকভাবে বড় আকারে শুল্ক আরোপ করতে পারে।”
বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন, চীন হয়তো তাদের ভূখণ্ডে আমেরিকান কোম্পানিগুলোর কর্মকাণ্ড কঠিন করে তুলতে পারে। কিন্তু সেটি হলে তা হবে বিরল ঘটনা।
নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ জোসেফ স্টিংলিৎজ মনে করেন, বাণিজ্য যুদ্ধের ক্ষেত্রে চীন তুলনামূলক ভালো অবস্থানেই রয়েছে।
”তাদের বেশ কিছু কৌশল এবং সম্পদ রয়েছে, যা বাণিজ্য যুদ্ধে ভালোভাবেই কাজে লাগাতে পারবে। সবচেয়ে বড় কথা, চীন নিজে তিন ট্রিলিয়ন ডলার রিজার্ভের ওপর বসে রয়েছে।”
তবে এটা একেবারে নিশ্চিত করে বলা চলে যে, এই যুদ্ধ শুধুমাত্র এই দুই দেশের সীমানার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। হয়তো তা সারা বিশ্বের অর্থনৈতিক বাজারকে অস্থির করে তুলতে পারে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
স্কুলের সামনে ট্রাফিক পুলিশ স্পিডব্রেকার থাকতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

দেশের খবর: রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় নিহত কলেজ শিক্ষার্থী দিয়া খানম মীম ও আবদুল করিম রাজীবের পরিবারকে বৃহস্পতিবার নিজ কার্যালয়ে ডেকে সান্ত্বনা এবং সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এ সময় নিহতদের দুই পরিবারের হাতে অনুদান হিসেবে ২০ লাখ টাকা করে পারিবারিক সঞ্চয়পত্র তুলে দেন।
তাঁদের সাক্ষাতের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকের বলেন, ‘সব স্কুলের সামনে স্পিডব্রেকার স্থাপন, সব স্কুলের সামনে প্ল্যাকার্ডধারী বিশেষ ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন, শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজসংলগ্ন বিমানবন্দর সড়কে আন্ডারপাস নির্মাণ এবং ওই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতের জন্য পাঁচটি বাস প্রদান করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল নূর নাহার ইয়াসমিন প্রধানমন্ত্রীকে জানান, নিম্নমধ্যবিত্ত ঘরের সন্তানরা তাঁর ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়তে আসে। তাদের যাতায়াতের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বাস দেওয়ার অনুরোধ করেন।’প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর মীমের বাবা জাহাঙ্গীর ফকির এবং রাজীবের মা মহিমা বেগম সাংবাদিকদের মাধ্যমে রাজপথে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যেতে অনুরোধ করেছেন। মীম ও রাজীব নিহত হওয়ার পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে গত রবিবার থেকে প্রতিদিন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় আন্দোলনে নেমে রাজধানী কার্যত অচল করে রেখেছে। গত দুই দিনে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে অন্যান্য জেলায়ও।
মীমের বাবা জাহাঙ্গীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘সবার কাছে আমার অনুরোধ, যার যার সন্তান, আমরা অভিভাবকরা বুঝিয়ে ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যাই। আমরা একটা শক্ত বিচার পাব, আশা করি। এটা প্রধানমন্ত্রীর নিজের মুখের কথা।’
রাজীবের মা মহিমা বলেন, ‘সবাই আমার সন্তানের জন্য রাস্তায় নেমেছে। সবই হয়ে গেছে। এখন তোমরা যে যার ঘরে উঠে যাও। তোমাদের সবার কাছে অনুরোধ, তোমরা ঘরে ফিরে যাও।’
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় মীমের বাবা জাহাঙ্গীর ফকির, ভাই-বোন, মা এবং রাজীবের মা মহিমা বেগম, বোন ও পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের প্রিন্সিপাল নূর নাহার ইয়াসমিন উপস্থিত ছিলেন।
জাহাঙ্গীর বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বুধবার আমাদের বাসায় গিয়েছিলেন সমবেদনা জানাতে। তিনিও দোষীদের বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘এটা কেউ চাপিয়ে রাখতে পারবে না। এর বিচার হবেই। বিচার হলে আমরা দেশের মানুষ সবাই শান্তি পাব।’ সন্তানহারা এই বাবা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের সান্ত্বনা দিয়েছেন। আমরা খুব কৃতজ্ঞ।’
এ সময় মহিমা বেগমের পাশে থাকা রাজীবের বোন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের সান্ত্বনা দিয়েছেন। আমরা স্যাটিসফাই হয়েছি। তোমরাও স্যাটিসফাই হও। আমরা দোয়া করি, তোমরাও দোয়া করো তোমাদের বন্ধুদের জন্য। সবাই ঘরে ফিরে যাও।’
গত রবিবার ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে বাসের জন্য অপেক্ষার সময় জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস চাপা দিয়ে হত্যা করে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী মীম ও রাজীবকে। ।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
বায়োগ্যাসচালিত গাড়ি চলবে রাজধানীতে

দেশের খবর: রাজধানী ঢাকার বর্জ্য থেকে এবার বায়োগ্যাস উৎপাদনের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যা দিয়ে সিএনজিচালিত যেকোনও পরিবহন চলবে। জানা গেছে, এ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ পেয়েছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান লৌহজং বায়োগ্যাস সিএনজি ফিলিং স্টেশন লিমিটেড। প্রাথমিকভাবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) যাত্রাবাড়ী এলাকার বাসাবাড়ির ফেলা দেওয়া বর্জ্য সংগ্রহ করে প্রতিষ্ঠানটি এই গ্যাস উৎপাদন করবে। বায়োগ্যাস ছাড়াও এ প্রকল্পের মাধ্যমে মেডিক্যালে ব্যবহৃত গ্যাস মিলবে, একইসঙ্গে পাওয়া যাবে বিদ্যুৎ ও জৈব-সার।
ঢাকার বর্জ্য থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদনের জন্য অনুমতি চেয়ে ২০১৭ সালের ২২ অক্টোবর ডিএসসিসি দফতরে আবেদন করে লৌহজং বায়োগ্যাস সিএনজি ফিলিং স্টেশন লিমিটেড। গত ২৫ জুলাই এক বোর্ড সভায় এ আবেদনে অনুমোদন দেয় ডিএসসিসি।
ডিএসসিসি সূত্র জানায়, তাদের সঙ্গে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার নওয়াপাড়া লৌহজং রোডে অবস্থিত লৌহজং বায়োগ্যাস সিএনজি ফিলিং স্টেশন লিমিটেড যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে দৈনিক ৬০ টন বর্জ্য সংগ্রহ করার অনুমোদন পেয়েছে। এই বর্জ্য থেকে প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি দৈনিক চার হাজার ৬৯৫ দশমিক ৬২ কিউবিক মিটার বিদ্যুৎ ও ১৮ হাজার ৬৩০ কেজি জৈব-সার উৎপাদন করবে। এভাবে রাজধানীর বর্জ্য থেকে বছরে ১৭ লাখ ১৩ হাজার ৯০০ কিউবিক মিটার গ্যাস ও ৬৮ লাখ কেজি জৈব-সার উৎপাদিত হবে। প্রতিদিন যে পরিমাণ বায়োগ্যাস উৎপাদিত হবে তা দিয়ে ১৫০টির মতো গাড়ি চলবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি উৎপাদিত গ্যাস সিলিন্ডারজাত করে বাসাবাড়িতেও ব্যবহার করা যাবে।
লৌহজং বায়োগ্যাস সিএনজি ফিলিং স্টেশন লিমিটেড সূত্র জানায়, ফিনল্যান্ড থেকে আমদানিকৃত অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে বর্জ্য থেকে বায়োগ্যাস ও জৈব-সার উৎপাদন করা হবে। এ ধরনের প্রকল্প ফিনল্যান্ডেও রয়েছে। আর এ প্রকল্পের মাধ্যমে সে দেশের সরকার বিদ্যুৎ, বায়োগ্যাস ও সার উৎপাদনের জন্য অর্থ খরচ করে বর্জ্য উৎপাদন করছে। তারা বর্জ্য পাচ্ছে না। কিন্তু বাংলাদেশে বর্জ্যের কারণে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। তাই এই বর্জ্যকে ব্যবহার করে সম্পদে পরিণত করতে চায় তারা।
এ কোম্পানির অন্য এক সূত্র জানায়, কোম্পানির নিজস্ব বিনিয়োগ ও বিদেশি প্রতিষ্ঠান ইনফ্রাস্ট্রাকচারাল ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিডেটের আর্থিক সহায়তায় ফিনল্যান্ডের বায়োজিট কোম্পানির যন্ত্রপাতির মাধ্যমে প্রায় ৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। সব ঠিক থাকলে প্রতিষ্ঠানটি চলতি বছরের শেষের দিকে উৎপাদনে যাবে।
এ সূত্র আরও জানায়, এই শিল্প প্রকল্প স্থাপনের ফলে একদিকে যেমন পরিবেশ ‍দূষণ বন্ধ হবে, অন্যদিকে প্রচলিত জ্বালানিতে যানবাহন চলাচলের মাধ্যমে সৃষ্ট কার্বন-ডাই-অক্সাইড বায়ুমণ্ডলে ছড়ানোও বন্ধ হবে। পাশাপাশি রাজধানী ঢাকার সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া, জৈব-সারের মাধ্যমে একদিকে ভূমির উর্বরতা বৃদ্ধি পাবে, অন্যদিকে কেমিক্যালমুক্ত ফলনও বৃদ্ধি পাবে।
সূত্র জানায়, পাশের দেশ ভারতেও বায়োগ্যাস থেকে গাড়ি চালানো হয়। তবে সে বায়োগ্যাস ভারতের বীরভূমের দুবরাজপুরের কারখানায় গোবর থেকে উৎপাদন করা হয়, যা পরে ট্যাঙ্কারে করে কলকাতা নিয়ে আসা হয়। গোবর থেকে উৎপাদিত বায়োগ্যাসের চেয়ে বর্জ্য থেকে উৎপাদিত বায়োগ্যাসের চাপ অনেক বেশি। বর্তমানে ভারতের বীরভূমের দুবরাজপুরের কারখানায় গোবর থেকে প্রতিদিন একহাজার কেজি বায়োগ্যাস উৎপাদন করা হয়। প্রতিকেজি ২০ টাকা দামের প্রতিকেজি বায়োগ্যাসে একটি বাস প্রায় ৫ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে পারে।
এ ব্যাপারে লৌহজং বায়োগ্যাস সিএনজি ফিলিং স্টেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, প্রকল্পটি দেশের জন্য একটি অতীব প্রয়োজনী ও কল্যাণকর শিল্প প্রকল্প হিসেব আত্মপ্রকাশ করবে। অচিরেই এই প্রকল্পের অনুকরণে দেশে অনেক শিল্প প্রকল্প গড়ে উঠবে, যা নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিপুল সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করবে।’
ডিএনসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী আ.হ.ম আব্দুল্লাহ হারুন বলেন, ‘আমাদের বর্জ্য ব্যবহার করে গ্যাস ও সার উৎপাদন করার জন্য লৌহজং বায়োগ্যাস সিএনজি ফিলিং স্টেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যানকে অনুমোদন দিয়েছি। বিষয়টি ইতিবাচক। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ডিএসসিসির এলাকায় যেমন বর্জ্যের স্তুপ কমবে, তেমনি গ্যাস ও সার উৎপাদিত হবে।’

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
রাজধানীর রাস্তা ছোটদের নিয়ন্ত্রণে

দেশের খবর: রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীকে হত্যার জের ধরে বৃহস্পতিবার পঞ্চম দিনের মতো সড়কে বিক্ষোভ-অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা। উত্তেজনা প্রশমনের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হলেও রাজধানীতে এর ফল হয়েছে উল্টো। বৃহস্পতিবার আরো বেশিসংখ্যক শিক্ষার্থী অংশ নেয় বিক্ষোভে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা সকাল থেকেই কয়েকটি পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে যানবাহনের লাইসেন্স যাচাই শুরু করে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরো রাজধানীতে ছড়িয়ে পড়ে এমন কার্যক্রম। শহরের শতাধিক স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি মেডিক্যাল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও সড়কে নেমে আসে। শহরের প্রধান সড়কগুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন সংযোগ সড়ক, এমনকি পাড়া-মহল্লার অলিগলিতেও শিক্ষার্থীদের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার অনিয়ম যাচাই করতে দেখা যায়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে কার্যত অচল হয়ে পড়ে ঢাকা শহর।
দিনভর চালকদের লাইসেন্স যাচাই ছাড়াও সারিবদ্ধভাবে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ এবং বিভিন্ন অনিয়মের কারণে চালকদের ভর্ৎসনা করে গাড়ি আটকে ফেলে শিক্ষার্থীরা। তাদের তল্লাশি থেকে রেহাই পায়নি পুলিশসহ প্রশাসনের লোকজনও। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের গাড়িও আটকে দেয় শিক্ষার্থীরা। বৃষ্টি উপেক্ষা করে গতকাল বিকেল ৪টা পর্যন্ত বেশির ভাগ সড়ক দখলে রাখে তারা। রাজধানীর প্রগতি সরণিসহ কয়েকটি রাস্তায় তারা সন্ধ্যা পর্যন্ত ছিল।
সরকার শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নিয়েছে, এর পরও আন্দোলন কেন—জানতে চাইলে শিক্ষার্থীরা বলে, তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে। সরকারের আশ্বাস তারা বিশ্বাস করতে পারছে না বলেও জানায়। বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করলেও কয়েকটি এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে। মিরপুর-১৪ নম্বরে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ লাঠিপেটা করে। এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেখানে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে। সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় কাগজপত্র দেখা নিয়ে বাগিবতণ্ডার জের ধরে ট্রাফিক পুলিশের এক সার্জেন্টকে পিটিয়ে আহত করে কিছু তরুণ। তারা দাবি করে, ওই সার্জেন্ট আগে ছাত্রদের মারধর করেন। এ কারণেই হামলার ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া শান্তিনগরে কয়েকটি গাড়িতে হামলা চালায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। বাংলামোটর, মগবাজার, শান্তিনগর ও ধানমণ্ডিতে শিক্ষার্থীরা পুলিশের ওপর চড়াও হয়।
অন্যদিকে পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, শিশু-কিশোরদের আন্দোলনকে মানবিক দৃষ্টিতে দেখা হচ্ছে। এ কারণে তাদের ওপর চড়াও না হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মাঠপর্যায়ের সদস্যদের। তবে পুলিশের গাড়িসহ যানমালের ক্ষতি হলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। পুলিশ কর্মকর্তারা দাবি করেন, শিশুদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের ভুয়া ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা করছে একটি মহল। এসব অপপ্রচারে কান না দিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বন্ধ করার অনুরোধ জানান তাঁরা।
গত রবিবার দুপুরে জাবালে নূর পরিবহনের বাসের চাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মীমকে হত্যার দিন থেকেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে ওঠে শিক্ষার্থীরা। শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজ আজ শুক্রবার পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানকার শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে বাধাও দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে থামানো যায়নি ছাত্র আন্দোলন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
শিক্ষার্থীদের দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

দেশের খবর: নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (২ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, শিক্ষার্থীরা যে ৯ দফা দাবি জানিয়েছিল, এর সবগুলোই যৌক্তিক এবং সবগুলোই বাস্তবায়নের জন্য তিনি আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। টার্মিনালে চালকদের সনদপত্র পরীক্ষা ও সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রেখে সড়ক পরিবহন আইন পাস করা হবে। সেই আইনে জাবালে নূরের চালকদের শাস্তি দেওয়া হবে। পাশাপাশি সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণের কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এরমধ্যে দুই-একটি দাবি বাস্তবায়নে কিছুটা সময় লাগবে।
তিনি আরো বলেন, বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর নিহতের ঘটনায় দেশজুড়ে চলা আন্দোলনে একটি স্বার্থান্বেষী মহল সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাত্রদল ও শিবির নেতাদের এ বিষয়ে উসকানি দিতে দেখা গেছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সব কর্মসূচি প্রত্যাহার আহবান জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কাছে আমার অনুরোধ, যথেষ্ট হয়েছে, তোমরা ক্লাসে ফিরে যাও, বাসায় ফিরে যাও।
শিক্ষার্থীরা ফিরে গেলে পরবর্তীতে তাদের কোনো ধরনের হয়রানি করা হবে না। এমনকি তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো ধরনের শাস্তি কিংবা ছাড়পত্র না দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী।
শিক্ষার্থীরা যে ৯ দফা দাবি করেছে সেগুলো হচ্ছে–

১. বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো ড্রাইভারকে ফাঁসি দিতে হবে এবং এই বিধান সংবিধানে সংযোজন করতে হবে।

২. নৌপরিবহন মন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।

৩. ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলাচল বন্ধ ও লাইসেন্স ছাড়া চালকরা গাড়ি চালাতে পারবেন না।

৪. বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেয়া যাবে না।

৫. শিক্ষার্থীদের চলাচলে এমইএস ফুটওভারব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৬. প্রত্যেক সড়কে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্পিডব্রেকার দিতে হবে।

৭. সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্রছাত্রীদের দায়ভার সরকারকে নিতে হবে।

৮. শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে থামিয়ে তাদের নিতে হবে।

৯. শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest