সর্বশেষ সংবাদ-
সাতক্ষীরার ৪টি সংসদীয় আসনে বিএনপির ২ বিদ্রোহী প্রার্থীসহ ২৯ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিলসাতক্ষীরা-০১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আ’লীগ নেতা মুজিবের মনোনয়ন জমাসাতক্ষীরা জেলা কিন্ডার গার্টেন এ্যাসোসিয়েশনের ফলাফল প্রকাশExploring the Flavorful Journey of Ground Beef Enchiladasজেলা ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি গঠনচোরের উপদ্রবে অতিষ্ঠ কাটিয়া রেজিস্ট্রি অফিসপাড়ার বাসিন্দারা : মিথ্যা মামলার অভিযোগসাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের পিতার মৃত্যুতে শােকসাতক্ষীরায় পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা: আসামী ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগশ্যামনগরে কোস্টগার্ডের অভিযানে ভারতীয় মদ জব্দআশাশুনিতে জলবায়ু-স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ক যুব নেতৃত্বাধীন প্রচারনা

দুর্ঘটনায় হত্যার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত : এরশাদ

দেশের খবর: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন এরশাদ বলেছেন, সড়ক পরিবহন আইন আরও কঠোর করে বেপরোয়া গাড়ি চলানোয় দুর্ঘটনায় হত্যার শাস্তি একমাত্র মৃত্যুদন্ড হওয়া উচিত। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি থাকতে আমি মৃত্যুদন্ডের বিধান রেখে আমরা আইন করেছিলাম। পরবর্তীতে আন্দোলনের মুখে সে আইনটি বাতিল করে যাবজ্জীবন করতে হয়েছে। তিনি নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোকে ‘যৌক্তিক’ বলেও উল্লেখ করেছেন।
কুর্মিটোলায় বাসচাপায় নিহত শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিমের বাসায় তার পরিবারকে সমবেদনা জানাতে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এইচ এম এরশাদ শুক্রবার সকালে কলেজছাত্রী দিয়ার মহাখালীর বাড়িতে যান। সেখানে তিনি গণমাধ্যমের কাছে এসব কথা বলেন। এ সময় এরশাদ দিয়ার পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। পরে তিনি সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
এ সময় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু এমপি, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, এস এম ফয়সল চিশতী, ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নুরু, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, ফখরুল আহসান শাহজাদা, আব্দুল হামিদ ভাসানী, মো. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নেতা এমএ রাজ্জাক খান, গোলাম মোস্তফা, কাজী আবুল খায়ের, মিজানুর রহমান দুলাল, আব্দুর রাজ্জাক, জহিরুল ইসলাম জহির, ফয়সল দীপু ও জিয়াউর রহমান বিপুল উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে দিয়ার বাসায় আসেন ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের সিইও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জালাল গণি খান ও শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষ নূর নাহার ইয়াসমিন। তারা কলেজের পক্ষে দিয়ার পরিবারের হাতে এক লাখ টাকার চেক তুলে দেন।
গত ২৯ জুলাই ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে বাসের চাপায় দিয়াসহ দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। এরপর দেশব্যাপী বিক্ষোভ করছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা যে নয় দফা দাবি তুলেছে, তা মেনে নিয়েছে সরকার।
ছাত্রদের রাজপথে আন্দোলন প্রসঙ্গে এরশাদ বলেন, যারা আন্দোলন করছে এরা সবাই নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় নেমেছে। তাদের এ চাওয়া বাঁচার দাবি। এদের কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই। তারা আমাদের জন্যই রাস্তায় নেমেছে। নিজেদের কোনো দাবি নেই। আমার ছেলে আজ গাড়িতে করে স্কুলে যায়। যদি সে বাসে করে স্কুলে যেত তাহলে আমি সবসময় দুশ্চিন্তায় থাকতাম যে, সে ফিরে আসবে কিনা। আর এমন কোনো খবর পেলে আমি আত্মহত্যা করতাম। আমি মৃত ছেলের মুখ দেখতে চাই না।
রাস্তায় যেসব বাস চলছে এগুলোর চারটি চাকা ছাড়া আর কিছুই নেই। ১৪ বছরের বাচ্চারা গাড়ি চালাচ্ছে। এই অনিয়ম আর কতদিন চলতে পারে। আমরা এ আন্দোলনকে সমর্থন করি। সরকারেরও দাবিগুলো মেনে নেওয়া উচিত।
ছাত্রদের চলমান আন্দোলনে তার পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করে এরশাদ বলেন, এদের সব দাবি যৌক্তিক, এরা তো নিজের জন্য কিছু চায়নি। এদের আন্দোলন সরকার পতনের আন্দোলনও নয়। তারা চেয়েছে নিরাপদ সড়ক। তিনি শিশুদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের সমালোচনা করেন এবং নিন্দা জানান।
গণপরিবহনে নৈরাজ্য প্রসঙ্গে এরশাদ বলেন, এখন ১০/১২ বছরের শিশুরাও গাড়ি চালায়। লাইসেন্স, গাড়ির ফিটনেস যেনো দরকারই নেই। শিশুদের এই আন্দোলনে পুলিশ ও শ্রমিক সংগঠনগুলো যেনো সহিংস আচরণ না করে সেজন্যও তিনি সবাইকে সহনশীল থাকার আহ্বান জানান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এরশাদ বলেন, ২০ লাখ টাকা কোনো টাকাই নয়। ইচ্ছা করলে প্রধানমন্ত্রী আরো বেশি দিতে পারতেন। তবুও তিনি সহানুভূতি দেখিয়েছেন, তার প্রতিও কৃতজ্ঞতা। সড়কে মৃত্যুর ঘটনায় নৌমন্ত্রী ও পরিবহণ শ্রমিক নেতা শাজাহান খানের নানা মন্তব্যের সমালোচনাও করেন এরশাদ। তিনি বলেন, শাজাহান খানের হাসি দেখে দুঃখ পেয়েছি। একটা ছেলে মারা গেছে, একটা মেয়ে মারা গেছে। তিনি হাসিমুখে ঘটনাকে তুলনা করছেন ভারতের দুর্ঘটনার সাথে। এই যদি তার প্রতিক্রিয়া, কী বলার আছে। এ সময় তিনি ফোন করে পরিবহন শ্রমিক নেতাদের অরাজকতা সৃষ্টি থেকে দূরে থাকতে অনুরোধ করেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
আমরণ অনশনের ঘোষণা পায়েলের বাবার

দেশের খবর: ছেলে হত্যার বিচারের দাবিতে আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সাইদুর রহমান পায়েলের বাবার গোলাম মাওলা। শুক্রবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিটি গেট সংলগ্ন এলাকায় অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এই ঘোষণা দেন। সড়ক অবরোধ করে সকাল ১১টা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলা এই কর্মসূচির কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। পরে আন্দোলনকারীরা নিজেরাই সরে গিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করেন।
সন্দ্বীপ অ্যাসোসিয়েশন চট্টগ্রামের আয়োজনে এই মানববন্ধনে পায়েলের বাবা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীও স্বজন হারিয়েছেন। তিনি স্বজন হারানোর বেদনা বোঝেন। আমাদের কষ্টের কথা জানাতে চাই উনাকে। আশা করি, প্রধানমন্ত্রীর দেখা পাব আমরা। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে উনার দেখা না পেলে সন্তান হত্যার দ্রুত বিচার পেতে যাব আমরণ অনশনে। ছেলের সাথে কবরে যাব আমরাও।’
উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই রাতে দুই বন্ধু আকিবুর রহমান আদর ও মহিউদ্দিনের সঙ্গে হানিফ পরিবহনের ভলভো বাসে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার পথে রওনা হওয়ার পর নিখোঁজ হন পায়েল। পরে মুন্সিগঞ্জের ভাটেরচর সেতুর নিচের খাল থেকে পায়েলের লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর পুলিশ হানিফ পরিবহনের ওই বাসের চালকসহ তিন কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশী জেরায় তারা স্বীকার করে, পায়েল বাসে উঠতে গিয়ে দরজার ধাক্কায় মারাত্মক আহত হন।
এই দুর্ঘটনার দায় এড়াতেই গুরুতর আহত পায়েলকে চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে একটি খালে ফেলে দেয় বাসের কর্মীরা! এই ভয়ানক অমানবিক ঘটনায় তোলপাড় পড়ে যায় সারাদেশে। চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর এলাকার বাসিন্দা পায়েলের মৃত্যুর পর থেকেই বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম চলে আসছে। এর মধ্যেই গত রবিবার রাজধানীতে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় সারাদেশে শুরু হয়েছে কিশোর-কিশোরীদের আন্দোলন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
কিশোর আন্দোলনের সমর্থনে কানাডায় মানববন্ধন

দেশের খবর: নিরাপদ সড়কের দাবিতে গত পাঁচদিন ধরে উত্তাল হয়ে আছে বাংলাদেশের রাজপথ। রাজধানীর কুর্মিটোলায় বাসচাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর রাস্তা অবরোধ করে রেখেছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। শুধু অবরোধ নয়, অসাধারণ সব সড়ক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে দেখিয়ে দিচ্ছে তারা।
ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের শুরু থেকেই সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে সাধারণ মানুষ এবং অভিভাবকেরা। অন্যদিকে পুলিশ এবং ছাত্রলীগের হামলার শিকার হতে হচ্ছে আন্দোলনকারীদের। এর মাঝেই প্রবাসী বাঙালীরা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করলেন।
কানাডার টরেন্টোতে কিশোর আন্দোলনের সমর্থনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত করেছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা। শহরের ড্যানফোর্থ ভিক্টোরিয়া পার্ক এলাকায় ২ আগস্ট বৃহস্পতিবার এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তারা শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে সাধারণ মানুষের জন্য রাজপথ নিরাপদ করতে সরকারের প্রতি আহবান জানান।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
মাঠে নামার হুমকি অভিভাবকদের

দেশের খবর: নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন বন্ধ ও সড়ক দুর্ঘটনা রোধে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা। শুক্রবার মিরপুর সনি সিনেমা হলের সামনে মানববন্ধনে অংশ নেন শতাধিক অভিভাবক। তারা মণিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
এসময় অভিভাবকরা বলেন, বাচ্চাদের আন্দোলন যৌক্তিক। তাদের ওপরে হামলা হলে আমরা ঘরে বসে থাকবো না। মুখে দাবি মানার কথা বললে হবে না। এ বিষয়ে দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শামিমা রেজা নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘শিক্ষার্থীরদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে এ মানববন্ধন। বৃহস্পতিবার মিরপুর-১৩ নম্বরে অনেক শিক্ষার্থীর উপর পুলিশ ও ছাত্রলীগ কর্মীরা হামলা চালায়। কেন এই হামলা? ছাত্ররা কোনো অপরাধ করেনি, তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য মাঠে নেমেছে।’লিপি আক্তার নামে একজন অভিভাবক বলেন, ‘সরকার সব দাবি মেনে নিলেও তা কার্যকর করতে সময় লাগে। এরকম নজির দেখেছি। সরকার চাইলে দ্রুত বিচারের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি দিতে পারে।’
আফজাল আহমেদ বলেন, ‘সরকার দাবি মেনে নিলেও তা দ্রুত কার্যকর করার জন্য শান্তিপূর্ণভাবে আমরা এই মানববন্ধনে অংশ নিয়েছি।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে আ. লীগ নেতাদের বিবৃতি

প্রেস বিজ্ঞপ্তি: সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলামকে নিয়ে সাতক্ষীরা থেকে প্রকাশিত দৈনিক সাতনদী পত্রিকায় সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ায় সাতক্ষীরা জেলা, উপজেলা ও পৌর আওয়ামীলীগের শীর্ষ ৪জন নেতা একটি যৌথ বিবৃতি গণমাধ্যমের নিকট পাঠিয়েছেন। বিবৃতিটি হুবহু প্রকাশ করা হলো-

 

সম্মানিত সাতক্ষীরাবাসী,
শোকাবহ আগস্ট মাসের শুরুতে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সকল শহিদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।
আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করেছি যে, ১ অগাস্ট ২০১৮ তারিখে সাতক্ষীরা থেকে প্রকাশিত দৈনিক সাতনদী পত্রিকার প্রথম পাতায় ৬ কলাম জুড়ে “নজরুলের রাজনীতিতে কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে হাবিবুর রহমান ও খালেক ম-ল” শিরোনামে একটি মিথ্যা, কুরূচিপূর্ণ ও মনগড়া প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. নজরুল ইসলামের চরিত্র হননের অপচেষ্টা করা হয়েছে। নজরুল ইসলামের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষাণি¦ত হয়ে সত্যকে বিকৃত করে, মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে সাতক্ষীরার সবচেয়ে জনপ্রিয় এই নেতাকে হেয় করার অসাধু চেষ্টা করেছে সাতনদী কর্তৃপক্ষ তার উপদেষ্টারা।

প্রিয় সাতক্ষীরাবাসী,

আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন মো. নজরুল ইসলাম ১৯৭০ সালে ছাত্রলীগের প্রার্থী হিসেবে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচন করে কমনরুম সম্পাদক নির্বাচিত হন। তার পিতা মরহুম আব্দুল জব্বার সরদার ফিংড়ীর নিজ বাড়িতে ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বিভিন্ন সময় অপারেশনে আসা মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়মিত আশ্রয় ও সহায়তা দেয়ার কারণে তাকে যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে ফিংড়ী রিলিফ কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। তার আপন ভাই মরহুম অধ্যক্ষ নজিবুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। তিনি সাতক্ষীরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথেও আমৃত্যু যুক্ত ছিলেন।
নজরুল ইসলাম নিজে সারাজীবন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে এসেছেন। ছাত্রলীগের পর তিনি ১৯৮৪ সাল থেকে দীর্ঘকাল আশাশুনি (তখন ফিংড়ী ইউনিয়ন আশাশুনি থানার অন্তর্ভূক্ত ছিল) থানা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। এরপর তিনি বিপুল ভোটে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সাতনদী পত্রিকার প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দুই ত্যাগী নেতা মরহুম মমতাজ আহম্মেদ ও এড. এ এফ এম এন্তাজ আলী মনোনয়ন নিতে অপরাগতা জানানোয় নজরুল ইসলামকে নৌকার মনোনয়ন দেয়া হয়, যা ডাহা মিথ্যা এবং প্রতিবেদক ও সম্পাদকের মূর্খতার প্রমাণ দেয়।

প্রকৃত সত্য হলো, ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রয়াত ওই দুই ত্যাগী নেতাসহ প্রয়াত এড. শেখ শামসুর রহমান, মো. নজরুল ইসলাম, এস এম শওকত হোসেন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শেখ ফারুক হোসেন সাতক্ষীরা-২ আসন থেকে নৌকার মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনা মো. নজরুল ইসলামকেই নৌকার মনোনয়ন দেন। মো. নজরুল ইসলাম সেই নির্বাচনে ৪৬ হাজারের বেশি ভোট (১৯৯১ সালের তুলনায় প্রায় ১৬ হাজার বেশি) পেলেও মাত্র ৬ হাজারের কিছু বেশি ভোটে পরাজিত হন। এরপর ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা সদর নির্বাচনী এলাকার সকল আওয়ামী লীগ নেতা সম্মিলিতভাবে মো. নজরুল ইসলামকেই সমর্থন দেওয়ায় একমাত্র তিনিই নৌকার পক্ষে মনোনয়ন চান এবং নেত্রী তাকেই মনোনয়ন দেন। দেশব্যাপী বিচারপতি লতিফুর রহমানের নেতৃত্বাধীন তত্বাবধায়ক সরকারের ষঢ়যন্ত্রের সেই নির্বাচনেও মো. নজরুল ইসলাম ৭২ হাজারের বেশি ভোট পেয়ে সাতক্ষীরা-২ আসনে পরাজিত হন। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে হাবিবুর রহমান প্রকাশ্যে নৌকার প্রার্থী মো. নজরুল ইসলামে বিপক্ষে জামাতের প্রার্থী আব্দুল খালেক মন্ডলের পক্ষে বিভিন্ন নির্বাচনী জনসভায় ভোট চেয়ে বেড়ান। সুতরাং, হাবিবুর রহমানের সাথে নজরুল ইসলামের রাজনৈতিক কোন সম্পর্ক থাকার প্রশ্নই আসে না। এবং হাবিবুর রহমান তার পিতা-মাতা ও ভাইবোনের থেকে দীর্ঘদিন বিচ্ছিন্ন ও বিপথগামী আছেন। অথচ নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনার অসৎ উদ্দেশ্যে সাতনদী কর্তৃপক্ষ ও তার উপদেষ্টারা নোংরামিতে নেমেছেন। প্রতিবেদনে সাবেক একজন পুলিশ সুপারের সময় জামাত নেতা হাবিবুর রহমানকে আটক করেও ছেড়ে দেয়ার যে কথা বলা হয়েছে তা বাংলাদেশ পুলিশের মত রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ একটি বাহিনীকে কলঙ্কিত করার অপচেষ্টা বলে মনে হয়েছে। পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এর সঠিক জবাব দিতে পারবেন। বিভিন্ন নাশকতার মামলা বিষয়ে যা বলা হয়েছে তাও অবান্তর। মামলার তদন্ত করার দায়িত্ব পুলিশের। সুতরাং এর জবাবও নিশ্চয়ই তারাই দিতে পারবেন।

সুপ্রিয় সাতক্ষীরাবাসী,
২০০৪ সালে মো. নজরুল ইসলাম সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে দলীয় কাউন্সিলদের বিপুল ভোটে জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনেও জননেত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর আসনে তাকেই আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক প্রদান করেন। কিন্তু শেষ মুহুর্তে মহাজোটগতভাবে নির্বাচনের কারণে নেত্রীর নির্দেশে তিনি জাতীয় পার্টির সমর্থনে নিজের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। সাতক্ষীরার রাজনীতির খোঁজখবর যারা রাখেন তারা সবাই জানেন যে, সেই নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী জাতীয় পার্টির নেতা এম এ জব্বারকে বিজয়ী করতে মো. নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে আমরা সাতক্ষীরা সদর উপজেলা ও সাতক্ষীরা পৌর আওয়ামী লীগ নিরলসভাবে পরিশ্রম করে বিপুল ভোটে জামাতের প্রার্থী আব্দুল খালেক মন্ডলকে পরাজিত করতে সক্ষম হই। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নজরুল ইসলাম উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন যে, সেই নির্বাচনে জামাত তাদের জেলা সেক্রেটারি নুরুল হুদাকে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করায়। সে নির্বাচনে সাতক্ষীরার গণমানুষের নেতা মো. নজরুল ইসলাম ১ লক্ষ ১৭ হাজারের বেশি ভোট পেয়ে জামাতের জেলা সেক্রেটারি নুরুল হুদাকে পরাজিত করেন। জামাত ওই নির্বাচনে মাত্র ৬২ হাজার ভোট পেয়েছিল। বাস্তবতা হচ্ছে, স্বাধীনতার পর সেবারই প্রথম সাতক্ষীরা সদর নির্বাচনী এলাকায় জামাতের কোন প্রার্থীকে আওয়ামী লীগের কোন প্রার্থী পরাজিত করতে পেরেছিলেন। এরপর থেকে এই নির্বাচনী এলাকার কোন ভোটেই আর জামাত দলীয় প্রার্থীরা আওয়ামী লীগকে পরাজিত করতে পারেনি। যার প্রমাণ ২০১৪ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জামাত প্রার্থীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. আসাদুজ্জান বাবুর বিজয়।

সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের যে নেতার সততা, আদর্শ চরিত্র এবং সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাতক্ষীরা সদর নির্বাচনী এলাকায় আজ জনপ্রিয়তম রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে সাতনদী পত্রিকাটি সেই নেতা মো. নজরুল ইসলামের চরিত্র হননের ঘৃণ্য অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। অথচ পত্রিকাটির প্রিন্টার্স লাইনে সম্পাদকম-লীর সভাপতি হিসেবে ছাপানো আছে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগেরই সহ-সভাপতি ও সাতক্ষীরা সদর আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবির নাম। আমরা উদ্বিগ্ন এই ভেবে যে, তবে কি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অকুতোভয় সৈনিক জননেত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন মো. নজরুল ইসলামের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষাণি¦ত হয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জনগণ ও দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছে ভাবমূর্তি হারিয়ে দিশেহারা কোন মনোনয়ন প্রার্থী সাতনদীতে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনের মূল হোতা?
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে জামাত-শিবিরের সহিংসতার সময় আমরা মো. নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগের নির্যাতিত ও নৃশংসতার শিকার নেতা-কর্মীদের পাশে সার্বক্ষণিক মাঠে ছিলাম।

সাতনদীর প্রতিবেদনে ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি শেখ সাইফুল করিম সাবুর উদ্বৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, “আমাকে দাঁড় করিয়ে দিয়ে ভোটের পূর্বে তিনি ইন্ডিয়ায় চলে যান।” প্রথমত শেখ সাইফুল করিম সাবু আমাদেরকে নিশ্চিত করেছেন তিনি সাতনদীর কোন প্রতিবেদককে এ ধরনের কোন মিথ্যা বক্তব্য দেননি। পত্রিকা কর্তৃপক্ষ ও প্রতিবেদক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এই অসত্য বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন মিথ্যা রিপোর্টকে বিশ্বাসযোগ্য করার স্বার্থে। অন্যদিকে, শেখ সাইফুল করিম সাবুকে মো. নজরুল ইসলাম বা কোন আওয়ামী লীগ নেতা দাঁড় করিয়ে দেননি। তিনি শ্রমিক লীগের নেতা-কর্মীদের সমর্থন নিয়ে নিজ দায়িত্বে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। নজরুল ইসলাম সাইফুল করিম সাবুর হরিণ প্রতীকের পক্ষে কখনও কোন নির্বাচনী সভায় যাননি বা কারও কাছে তার জন্য ভোটও চাননি। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের প্রবল চাপ থাকা সত্ত্বে জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অকুণ্ঠ আনুগত্যের কারণে নজরুল ইসলাম তার প্রিয় প্রতীক নৌকার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে অস্বীকার করেন।
সাতক্ষীরা পৌর নির্বাচন নিয়ে যেসব কথা বলা হয়েছে তাও সত্যের অপলাপ মাত্র। নজরুল ইসলাম কখনও তার নেতা-কর্মীদের দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে যেতে বলেননি।
প্রতিবেদনে যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামি জামাত নেতা খালেক মন্ডলকে নজরুল ইসলামের আপন চাচাতো ভগ্নিপতি হিসেবে মিথ্যা পরিচয় দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, মো. নজরুল ইসলামের আপন কোন চাচাতো বোনের সাথে খালেক মন্ডলের বিয়ের কথা আমাদের জানা নেই। সাতনদী কর্তৃপক্ষ এবং তাদের বিপথগামী উপদেষ্টারা অসৎ এবং হীন উদ্দেশ্যে দূরের সম্পর্ককে আপন করে দেখানোর অপচেষ্টা করছেন। অথচ এই যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে স্থানীয় সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার পক্ষ থেকে সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয় বলে জাতীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল।

 

প্রাণপ্রিয় সাতক্ষীরাবাসী,

পরিশেষে আমরা আপনাদেরকে জানাতে চাই, সাতক্ষীরার গণমানুষের নেতা নজরুল ইসলাম সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের প্রাণ। আমাদের নেতা-কর্মীরা গর্বিতভাবে বলতে পারেন, “নজরুল ইসলামের মত পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ আমাদের নেতা।” তাদের নজরুল ইসলামের পরিচয় দিতে গিয়ে লজ্জ্বা পেতে হয় না। বরং আমাদেরকে লজ্জ্বা পেতে হয় একথা ভেবে যে, আমাদের নেতা-কর্মীদের চেনেন না, তাদের সম্মান করেন না, সরকারের পদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে অসদাচরণ করেনÑ এমন কেউ কেউ আমাদের জনপ্রতিনিধি।

 

বিবৃতিদাতারা হলেন-

আলহাজ্ব মো. আসাদুজ্জামান বাবু
সাংগঠনিক সম্পাদক
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সাতক্ষীরা জেলা।

চেয়ারম্যান, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদ

আলহাজ্ব এস এম শওকত হোসেন
সভাপতি
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা।

মোহাম্মদ আবু সায়ীদ
সভাপতি
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সাতক্ষীরা পৌর শাখা।

মো. শাহাজান আলী
সাধারণ সম্পাদক
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
সংবাদমাধ্যমে পুরনো ক্ষোভ দেখালেন ঐশ্বরিয়া!

বিনোদন সংবাদ: ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনের বর্তমান ব্যস্ততা তার নতুন সিনেমা ‘ফ্যানি খান’ নিয়ে। যেখানে তার সাথে পর্দা ভাগাভাগি করেছেন অনিল কাপুর ও রাজকুমার রাও। এখন সিনেমার প্রচারণা নিয়ে ব্যস্ত তারা। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমের এক সাক্ষাৎকারে উপস্থিত হন ঐশ্বরিয়া। আর সেখানে তিনি মা হওয়ার আগে এবং পরে বেশকিছু মানুষ তাকে যেভাবে ‘ওভারওয়েট’ বলে আক্রমণ করেন সেই বিষয়েই মুখ খোলেন এই বলিউড সুন্দরী।

তিনি বলেন, ‘সরাসরি আপনাকে কেউ ফ্যাট সম্বোধন করবে না। কিন্তু ওভারওয়েট শব্দটি যেন বারবার কানে বাজবে আপনার। মা হওয়ার সময় এমন অনেক কথা শুনতে হয়েছে।’ ওই শব্দগুলোর সঙ্গে সবসময় মনের জোরেই লড়াই চালিয়ে গেছেন বলেও জানান তিনি।

ঐশ্বরিয়া বলেন, ‘মা হওয়ার সময় শুধু নয়, মা হওয়ার পরও বিভিন্নভাবে কথা শুনতে হয়েছে। কিন্তু মন খারাপ করে কখনো কাজকর্ম ছেড়ে চুপ করে বসে থাকিনি। আরাধ্যর জন্মের পর অনেকদিন ধরে তাকে কটাক্ষ শুনতে হয়েছে বলেও জানান।

তবে এখন যখন তার জীবনকে ‘ফেয়ারিটেল’ বলে মন্তব্য করেন তখন শুনতে ভালো লাগে। আর এই ফেয়ারিটেলের মতো জীবনে অনেক মানুষের ভালোবাসা, আশা, ভরসা আর আশীর্বাদ তার সঙ্গে রয়েছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
দেশজুড়ে অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট, নেপথ্যে শ্রমিক ফেডারেশন!

দেশের খবর: রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় চলমান ছাত্র বিক্ষোভের ষষ্ঠ দিনে ঢাকাসহ বেশিরভাগ জেলায় অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট চলছে।

সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নির্দেশে এ ধর্মঘট শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। সংগঠনটির সভাপতি নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান।

পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা সরাসরি ধর্মঘটের কথা স্বীকার করছেন না। তারা বলছেন, আন্দোলনরত ছাত্ররা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করায় নিরাপত্তাহীনতার কারণে তারা বাস চালাচ্ছেন না।

জানা গেছে, শুক্রবার সকাল থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, বগুড়া, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, রংপুর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, বেনাপোলসহ দেশের অধিকাংশ জেলায় বাস চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলেন, আমরা কাউকে গাড়ি বন্ধ করতে বলিনি। অনেক মালিকই নিরাপত্তাহীনতার কারণে গাড়ি চালাচ্ছেন না। তবে কোনো ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়নি।

প্রসঙ্গত, রোববার দুপুরে কুর্মিটোলায় বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী মারা যাওয়ার পর এ বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে নৌমন্ত্রী ও শ্রমিক নেতা শাজাহান খান হাসতে হাসতে প্রতিক্রিয়া জানান।

এ নিয়ে সামাজিকমাধ্যমে তীব্র সমালোচনার পর সোমবার রাস্তায় নেমে আসেন রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

এর পর গত ছয় দিন ধরে নৌমন্ত্রীর পদত্যাগ এবং ঘাতক চালকের ফাঁসিসহ ৯ দফা দাবিতে তারা আন্দোলন করে আসছেন।

শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান এরই মধ্যে দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। তবে বৃহস্পতিবার দুপুরে পদত্যাগ করবেন না বলে তিনি জানান।

এর পর বিকাল থেকে মিরপুরে পরিবহন শ্রমিকদের মারমুখী অবস্থান দেখা যায়। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বরে পুলিশের সঙ্গে মিলে শ্রমিকরা তাদের পিটিয়েছেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস মাঝপথে শ্রমিকদের বাধার মুখে পড়ে বলে খবর পাওয়া গেছে।

পরে শুক্রবার ভোর থেকে রাজধানীর অভ্যন্তরীণ রুটগুলোতে চলাচলরত যাত্রীবাহী বাসে বাধা দেন শ্রমিকরা। তারা যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে বাসগুলোকে সড়কের পাশে এলোপাতাড়ি দাঁড় করিয়ে দেন।

শ্রমিকদের বাধার মুখে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর প্রায় সব রুটেই বাস চলাচল একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়।

বাস চলাচলে বাধার বিষয়ে শুক্রবার দুপুরে মেহেরপুর জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম রসুলের সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার সময় কুষ্টিয়া হয়ে ঢাকায় আসার পথে শ্রমিকরা আমাদের বাস ফেরত পাঠিয়ে দেন।

গোলাম রসুল অভিযোগ করে বলেন, নিয়মানুযায়ী ধর্মঘট ডাকতে হলে মালিক-শ্রমিকরা একসঙ্গে বসে ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কিন্তু আমাদের কিছু বলা হয়নি। তাই আমরা যাত্রীদের কাছে টিকিট বিক্রি করেছি। এখন যাত্রীদের নিতে বাস চলতে বাধা দেয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে শুক্রবার বাদ জুমা পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে মেহেরপুর জেলা বাস মালিক সমিতির বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে জানান তিনি।

বাস চলাচল বন্ধ রেখে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থানরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নির্দেশে শুক্রবার সকাল থেকে সব ধরনের পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্ষন্ত এ ধর্মঘট চলবে।

পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানান, গত পাঁচ দিন ধরে ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে রাজধানীতে তিন শতাধিক বাস ভাঙচুর ও অন্তত নয়টিতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ কারণে রাজধানীতে বাস চলাচল সীমিত ছিল।

কিন্তু শ্রমিক ফেডারেশনের নির্দেশে শুক্রবার ভোর থেকে সারা দেশে একযোগে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে সাধারণ যাত্রীরা চরম দুর্ভোগের মুখে পড়েন।

আজ বেলা ১২টা পর্যন্ত রাজধানীর গুলিস্তান, পল্টন, কাকরাইল, শাহবাগ, এলিফ্যান্ট রোড, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, মিরপুর রোড, সাতমসজিদ রোড, কারওয়ানবাজার, ফার্মগেট, বিজয় সরণি রোড, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, জিয়া উদ্যান, শ্যামলী, কল্যাণপুর, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, মিরপুর-১, ১০ ও ১১, পল্লবী, কালশী, মগবাজার, প্রগতি সরণি, তেজগাঁও, নাবিস্কো, রামপুরা, বাড্ডা, মহাখালী, গুলশান, বনানী, বিমানবন্দর সড়ক, খিলক্ষেত, উত্তরা ও আবদুল্লাহপুরের ব্যস্ততম সড়কগুলোতে তেমন সাধারণ যান চলাচল চোখে পড়েনি।

তবে রাজধানীর কিছু সড়কে বিআরটিসি ও ট্রাস্ট পরিবহনের বাস চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে এ দুই পরিবহনেরও খুব কমসংখ্যক বাস চলাচল করছে।

অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর কোথাও একটি বাসের দেখা মিললে তাতে ওঠার জন্য শত শত যাত্রী হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। কিন্তু পাঁচ-ছয়জনের বেশি যাত্রী কোনো বাসেই উঠতে পারছেন না। নারী যাত্রীরা এগিয়ে গেলেও বাসের ধারেকাছেও ভিড়তে পারছেন না তারা।

সরেজমিন দেখা গেছে, মিরপুরজুড়ে প্রধান সড়কগুলোতে এলোপাতাড়ি বাস-মিনিবাস ফেলে রাখা হয়েছে। শ্রমিকরা সড়কে অবস্থান নিয়েছেন। কোনো গাড়ি চলাচল করলে তা থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়া হচ্ছে।

মিরপুর সাড়ে ১১-তে এক দল শ্রমিক যুগান্তরকে জানায়, পরিবহন মালিক সমিতি ধর্মঘট ডেকেছে। তারা কোনো গাড়ি চলতে দিচ্ছেন না।

আব্দুল্লাহ নামে এক শ্রমিক বলেন, শিক্ষার্থীদের গাড়ি ভাঙচুরের প্রতিবাদে আজ শুক্রবার মালিক সমিতি ধর্মঘট ডেকেছে।

তবে মিরপুরের ডিসি (ট্রাফিক-পশ্চিম) লিটন কুমার সাহা বলেন, মালিক সমিতি এখনও ধর্মঘট ডাকেনি। তাদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারা ডাকতে চাইলে আমরা তাদের না করেছি। তবে বিচ্ছিন্নভাবে শ্রমিকরা গাড়ি থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিতে পারেন।

সূত্র: যুগান্তর অনলাইন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
ঢাকায় বাসচাপায় যুবকের মৃত্যু, বাসে আগুন

দেশের খবর: রাজধানীর মগবাজার ওয়ারলেস এলাকায় বাসচাপায় এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। এতে বিক্ষুব্ধ জনতা ওই বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।

আজ শুক্রবার দুপুরে দেড়টার দিকে নুরজাহান টাওয়ারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। বাসচাপায় নিহত মোটরসাইকেল আরোহীর নাম সাইফুল। তিনি রাজধানীর উত্তর গোরানের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার মো. রাসেল সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest