সর্বশেষ সংবাদ-
চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী স্মৃতিতে অম্লান চিকিৎসক ডা. আনিছুরসাতক্ষীরায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের পরিবারের অনুকুলে ২৬ লাখ টাকার চেক বিতরণশ্যামনগরে কাজী আলাউদ্দীনের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পদেবহাটা উপজেলা জামায়াতের সুধী সমাবেশপ্রাণসায়ের খাল বাঁচাতে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন ও সমাবেশদিনে ভোট, রাতে নয় আমার ভোট আমি দেব : আফরোজা আব্বাস অন্যায় কাজে কাউকে প্ররোচিত করবো না, উন্নয়নই হবে মূল লক্ষ্য : সাবেক এমপি হাবিবশোভনালীতে মানব পাচার প্রতিরোধ ও নিরাপদ অভিবাসন ডেস্ক উদ্বোধনআশাশুনির গোয়ালডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানববন্ধনজবাবদিহিতা ও মানবাধিকার সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে গোলটেবিল সভা

গোয়েন্দা প্রতিবেদনে সাতক্ষীরার বিদায়ী জেলা শিক্ষা অফিসারের দুর্নীতি

অনলাইন ডেস্ক: এমপিওভুক্তিতে দুর্নীতিতে জড়িত থাকা পাঁচ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের এক আদেশে বদলির তথ্য জানা যায়। ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে এমপিও বিকেন্দ্রীকরণের পর দুর্নীতি ও হয়রানির মাত্রা ও স্তর বেড়ে যায়। আগে যেখানে দুই জায়গায় ঘুষ দিলেই এমপিওভুক্ত হওয়া যেত সেখানে বিকেন্দ্রীকরণের পর চার/পাঁচ স্তরে ঘুষ দিতে বাধ্য হন শিক্ষক-কর্মচারিরা।
এমপিও দুর্নীতি অভিযোগের অধিকতরো তদন্ত ও অনুসন্ধান করে একটি জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা। সংস্থাটির ৪৭ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে ঘুষ-দুনীতির বিশদ বিবরণ রয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণা্লয় থেকে ওই প্রতিবেদনটি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হয় প্রায় দশ দিন আগে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির সুপারিশ করে দেয়া প্রতিবেদনটির আলোকে বৃহস্পতিবার মাত্র ৫ জন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়। প্রতিবেদনটির শিরোনাম “বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারিদের এমপিও কার্যক্রম বিকেন্দ্রীকরণে দুর্নীতি প্রসঙ্গে বিশেষ প্রতিবেদন”।

গোয়েন্দা প্রতিবেদনে সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিসার এস.এম ছায়েদুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়, নতুন শিক্ষককে এমপিওতে প্রথমেই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটিকে ডোনেশনের নামে মোটা অংকের টাকা প্রদান করতে হয়। পরবর্তীতে এমপিওভুক্তির জন্য একজন শিক্ষক (অনলাইন পদ্ধতি চালু হবার পর) প্রথমে উপজেলা শিক্ষা অফিসে তার প্রয়োজনীয় কাগজ পত্রাদিসহ আবেদন করেন। উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা তার কাগজ পত্র্রাদি সঠিক কিনা যাচাই বাছায়ের নামে শিক্ষকদের হয়রানি করেন এবং ক্ষেত্র বিশেষ এমপিও প্রক্রিয়া অনলাইন ও বিকেন্দ্রীকরণ করায় পূর্বের তুলনায় হয়রানি করেন। শিক্ষকদের উৎকোচ প্রদানে বাধ্য করেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
এমসিকিউ বাতিল কেন্দ্রে কেন্দ্রে প্রশ্ন ছাপানোর চিন্তা

অনলাইন ডেস্ক: প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধ করার লক্ষ্যে বিকল্প দুটি উপায় নিয়ে ভাবছেন হাইকোর্ট গঠিত প্রশাসনিক কমিটির একাধিক সদস্য। এর মধ্যে একটি হলো পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে কেন্দ্রে কেন্দ্রে প্রশ্ন ছাপানো যায় কি না তার সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখা। অথবা এখন যে পদ্ধতি আছে সেটিকে উন্নত করার উপায় বের করা। দ্বিতীয়টি হলো বহু নির্বাচনী প্রশ্ন (এমসিকিউ) বাতিল করা।

ওই কমিটির প্রধানসহ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমান পদ্ধতিতে কোনোভাবেই প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধ করা সম্ভব নয়। তবে কমিটির বিষয়ে লিখিত নির্দেশনা হাতে পাওয়ার পরই আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁরা কাজ শুরু করবেন বলে জানা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন একই অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

জানা যায়, এবার এসএসসি পরীক্ষার প্রতিটি বিষয়েই প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসকারীকে ধরিয়ে দিতে গত ৪ ফেব্রুয়ারি পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব মো. আলমগীরকে আহ্বায়ক করে ১১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। ১০ ফেব্রুয়ারি ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র বিক্রেতা চক্রের ১৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এত কিছুর পরও প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধ করা যায়নি।

এ অবস্থায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার ঘটনা খতিয়ে দেখতে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি আর সমাধান খুঁজতে একটি প্রশাসনিক কমিটি করে দিয়েছেন গতকাল হাইকোর্ট। প্রশাসনিক কমিটির প্রধান করা হয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদকে।

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ গত রাতে বলেন, ‘প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে আমরা সবাই বিব্রত। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে নানা ধরনের কাজ করছে। আমরাও চিন্তাভাবনা করছি। তবে কোর্ট যেহেতু কমিটি করে দিয়েছে তাই আমাদের কাজ করতে আরো সুবিধা হবে। তবে এই কমিটিই নয়, অন্য কেউও যদি ভালো সমাধান দিতে পারে, আমরা সেটাও গ্রহণ করব। কমিটি গঠনের চিঠি হাতে পাওয়ার পর আমরা আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু করব।’

বিকল্প ভাবনার বিষয়ে বুয়েটের এই অধ্যাপক বলেন, ‘আমাদের কিছু অল্টারনেটিভ অপশন রয়েছে। প্রথমত কেন্দ্রে কেন্দ্রে পরীক্ষা শুরুর আগে প্রশ্ন ছাপানো যায় কি না সেটা দেখতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট ও উচ্চমানের প্রিন্টার থাকতে হবে। এ ছাড়া এখন যে পদ্ধতি আছে সেটাকেও উন্নত করা যায় কি না সেটাও ভাবা যেতে পারে। এখন যে খাম বা বাক্স দেওয়া হয় সেটাকে উন্নত করে সিকিউরিটি সিল দেওয়া যেতে পারে। এতে সময়ের আগে কেউ প্রশ্নের খাম খুললে তা বোঝা যাবে। আসলে শাস্তি দিয়ে প্রশ্ন ফাঁস রোধ করা সম্ভব নয়। আমরা এমন একটা পদ্ধতি বের করতে চাই যাতে এই দুষ্কর্ম কেউ করতে না পারে।’

প্রশাসনিক কমিটির আরেক সদস্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘প্রশ্ন ফাঁস একটি জাতীয় সমস্যা। এটাকে জাতীয়ভাবে সমাধান করতে হবে। কোর্ট যে কমিটি করেছে তাদের সকলের পক্ষে একটি সুষ্ঠু সমাধান বের করা সম্ভব। আমরা সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে চেষ্টা করব।’

এ ছাড়া এখন যেহেতু শুধু এমসিকিউ অংশের প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে, তাই এমসিকিউ তুলে দেওয়া যায় কি না তা ভাবছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষামন্ত্রী এ নিয়ে সম্প্রতি শিক্ষাবিদদের মতামত নেওয়ার কথা বলেছেন। আর কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী জাতীয় সংসদে বলেছেন, প্রশ্ন ফাঁস রোধ করতে এমসিকিউ তুলে দেওয়া হবে।

এদিকে হাইকোর্ট থেকে দুই কমিটি গঠনের পর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন গতকাল সাংবাদিকদের বলেছেন, বর্তমান পদ্ধতিতে পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধ করা সম্ভব নয়। সবার মতামত নিয়ে নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করার চেষ্টা চলছে।

সোহরাব হোসাইন আরো বলেন, ‘এই প্রক্রিয়ায় প্রশ্ন ফাঁস রোধ করা সম্ভব নয়। আমাদের নতুন এমন কোনো প্রক্রিয়া, এমন কোনো পদ্ধতিতে যেতে হবে, যেখানে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সুযোগ থাকবে না। আমাদের যে গুণী ব্যক্তিরা আছেন, তাঁদের নিয়ে বসে যদি নতুন কোনো পথ উদ্ভাবন করা সম্ভব হয়, তাহলে পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস রোধ করা সম্ভব। এ জন্য সকলে মিলে এগিয়ে আসতে হবে।’ তিনি বলেন, পরিকল্পনা থাকলেও সারা দেশে ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় প্রশ্ন না ছাপিয়ে সকাল ১০টায় সব কেন্দ্রের স্ক্রিনে একযোগে সরবরাহ করা সম্ভব নয়। তবে সেটা করতে পারলে প্রশ্ন ফাঁসের কোনো সুযোগ থাকবে না।

সচিব বলেন, ‘আমি বারবার বলছি যে বাস্তবতা হচ্ছে, এখানে ৩০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী সংশ্লিষ্ট। ৩০ হাজারের মধ্যে আমি মনে করি যে একেবারে সবাই অনেস্ট ও সিনসিয়ার। কিন্তু দুই-চারজনও যদি এই জঘন্য অপকর্মটি করেন, তাহলে প্রত্যেকের সততা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যাচ্ছে; সততার কোনো মূল্য থাকছে না আর।’ কোর্টের কমিটির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আদালত যে আদেশ দেবে আমরা অবশ্যই পরিপূর্ণভাবে প্রতিপালন করব। আমাদের কোনো নিষ্ক্রিয়তা থাকলে সেই বিষয়ে আমাদের বক্তব্য অবশ্যই আদালতের কাছে উপস্থাপন করব।’

গত বুধবার এক অনুষ্ঠানে তথ্য ও প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও বলেন, প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন থেকে পরীক্ষার্থীর হাতে পৌঁছানো পর্যন্ত বহু মানুষের সম্পৃক্ততা থাকায় এই পদ্ধতির পরিবর্তন ছাড়া প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধ সম্ভব নয়।

প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ায় ২০১৪ সালে ঢাকা বোর্ডের এইচএসসির ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর দুটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল। ওই ঘটনা তদন্তে তখনকার অতিরিক্ত সচিব সোহরাব হোসাইনের নেতৃত্বে গঠিত আন্ত মন্ত্রণালয় কমিটি প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধ করতে বেশ কিছু সুপারিশ করেছিল। ওই সুপারিশে ছিল প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, সংশোধন ও প্রশ্ন নির্বাচনের কাজ একটি নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে করতে হবে। ওই সফটওয়্যার ব্যবহার করে প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারীদের কাছ থেকে প্রশ্ন সংগ্রহ করে তা প্রশ্নভাণ্ডারে রাখা হবে। সেখান থেকে প্রশ্নপত্রের সেট তৈরি হবে। একাধিক প্রশ্নপত্রের সেট অনলাইনে পরীক্ষার দিন সকালে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের কাছে পাঠানো হবে। এরপর স্থানীয়ভাবে প্রিন্টারে ছাপিয়ে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। কিন্তু ২০১৪ সালের সেই সুপারিশ বাস্তবায়িত হয়নি। নেওয়া হয়নি নতুন কোনো কার্যকর উদ্যোগ।

প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে বিকল্প পদ্ধতি গ্রহণ করার ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিভিন্ন সময় আর্থিক সীমাবদ্ধতার কথা বলে থাকে। কিন্তু প্রতিবছর এসএসসিতে ১৭ লাখ, এইচএসসিতে ১২ লাখ, জেএসসিতে ২০ লাখ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। শুধু এসএসসি ও এইচএসসিতেই পরীক্ষার ফি বাবদ বোর্ডগুলো প্রায় ৪০০ কোটি টাকা আদায় করে। বোর্ডগুলোর নিজস্ব আয় অনেক বেশি হওয়ায় সেখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বছরে নিজস্ব তহবিল থেকেই অতিরিক্ত ছয়টি উৎসব ভাতা নেন। অন্যান্য খাতেও বিপুল টাকা ব্যয় করা হয়। অথচ পরীক্ষা পদ্ধতি উন্নয়নের বিষয়ে তাঁদের তেমন কোনো পদক্ষেপ নেই।

এদিকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) সূত্রে জানা গেছে, হাইকোর্টের নির্দেশনার আগেই এসএসসির প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে কাজ শুরু করেছে সংস্থাটি। সিআইডির সংঘবদ্ধ অপরাধ নিয়ে কাজ করে যে দল, তারা এরই মধ্যে বেশ কিছু ফেসবুক পেজ এবং মেসেঞ্জার, ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ শনাক্ত করেছে। বেশ কয়েকজন প্রশ্নপত্র ক্রেতাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সিআইডির ওই টিমের প্রধান, বিশেষ সুপার (এসএস) মোল্লাহ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এসএসসির প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে আমরা এরই মধ্যে কাজ করছি। মহামান্য আদালতের কমিটির পর আমাদের ডিআইজি স্যারের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করব।’

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে জুয়া ও হাউজি খেলাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ

নিজস্ব প্রিতবেদক: সাতক্ষীরা জেলা ক্রীড়া সংস্থায় নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছে ক্লাব ঐক্য পরিষদ।
বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে তারা এই অভিযোগ তুলে ধরেন। এতে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান পরিষদের আহবায়ক ফিরোজ আহমেদ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় ক্রীড়া ভবনে সব ধরনের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও গত ৭ ফেব্রুয়ারি শ্যামনগরে ব্যক্তিগত স্থানে মিটিং ডাকা হয়েছে। মিটিংয়ের ৪ নম্বর এজেন্ডায় হঠাৎ করে পূর্ব ঘোষনা, কাগজপত্র অফিস ঠিকানাবিহীন দেওয়া হয়েছে। ৩ ব্যক্তি ১ লাখ টাকার পে অর্ডার নিয়ে কাল্পনিক ক্লাব অন্তর্ভূক্ত করতে পারেন না উল্লেখ করে তারা বলেন. এর প্রতিবাদ করেছেন নির্বাহী সদস্যরা। তারা আরও বলেন, এ বিষয়ে সভাপতির নিকট বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করলে সদস্য ইদ্রিস আলী বাবু অশোভন আচরন করেন। এক্ষেত্রে সাধারন সম্পাদক যথাযথ ভূমিকা পালন করেননি।
স্টেডিয়াম এলাকায় জুয়া ও হাউজি চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন জেলার ক্রীড়া ক্লাবগুলি আগে মাসিক কিস্তির বাটোয়ারা পেত। এখন তারা পায় না। টাকার হিসাবও অন্ধকারে। স্টেডিয়াম এলাকায় আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বাংলাদেশ যুব অলিম্পিক উৎসব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিযোগিতা ও প্রশিক্ষনের জন্য অর্থায়ন করে থাকে। অথচ বর্তমানে অর্ধেক টাকা খরচ না করে দুই চারটি একদিনের খেলা দেখিয়ে শেষ করা হয়। খেলোয়াড়দের ৮০০ টাকার স্থলে মাত্র ৩০০ টাকা করে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা সাজেক্রীসের নামে রিপোর্ট করেছেন।
জেমস ব্যান্ড সঙ্গীত ও পুতুল নাচ সহ অন্যান্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ক্রীড়াঙ্গনকে কলুষিত করা হয়েছে। এর টাকা তহবিলে জমা হয়নি। সাধারন ক্লাব কাউন্সিলররা কোন বিষয়ে আবেদন দিতে গেলে অথবা টাকা জমা করতে গেলে তা সাধারণ সম্পাদকের নিষেধ আছে বলে ফেরত দেওয়া হয়। এর আগে সাধারন সভা ডেকে যথাযথ কাগজপত্র উপস্থিত করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, প্রেসবক্স ,অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ, গ্যালারি নির্মান সবই বন্ধ রয়েছে। ঢাকার কোন ক্লাবে ক্রীড়াবিদ কোটায় কোন চান্সও মিলছে না। দুঃস্থ ক্রীড়াবিদরাও সরকারি সাহায্য পাচ্ছেন না। গত ২ বছর যাবত এ ধরনের বিভিন্ন অনিয়ম চলছে বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বদরুল ইসলাম খান, হাসনে জাহিদ জজ, মিজানুর রহমান, আহমেদ আলী, শেখ নাসিরুদ্দিন, মাহমুদ হাসান মুফতি, তৈয়ব হাসান বাবু প্রমুখ।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
প্যারাডাইস পেপারসে মুসাসহ ১৮ বাংলাদেশির অর্থপাচারের নতুন তথ্য

অনলাইন ডেস্ক: দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসেরসহ ১৮ বাংলাদেশি অর্থপাচারের মাধ্যমে ইউরোপের ক্ষুদ্র দেশ মাল্টায় বিনিয়োগ করে কম্পানি খুলেছেন। তাঁদের কেউ কেউ ওই সব কম্পানির পরিচালক আবার কেউবা শেয়ারহোল্ডার। আবার অনেকে একই সঙ্গে পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডার হয়েছেন। বিদেশের ঠিকানা ব্যবহার করে আরো তিন বাংলাদেশিও মাল্টায় অর্থ বিনিয়োগ করেছেন। তাঁরা দেশ থেকে অর্থ পাচার করে বিনিয়োগ করেছেন, নাকি প্রবাসে আয়ের অর্থ বিনিয়োগ করেছেন, তা স্পষ্ট নয়। আর বাংলাদেশে ব্যবসারত দুজন বিদেশিও মাল্টায় কম্পানি খুলেছেন।

অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের কনসোর্টিয়াম আইসিআইজে গতকাল ‘প্যারাডাইস পেপার্স’ নামের প্রতিবেদনের সর্বশেষ সংযোজনে এসব বাংলাদেশির নাম-ঠিকানা উল্লেখ করে তাঁরা মাল্টায় কবে, কী নামে কম্পানি নিবন্ধন করেছেন, কম্পানিতে তাঁদের পদবি কী—এসব উল্লেখ করে নথি প্রকাশ করেছে। এতে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তথ্য সংযুক্ত হয়েছে। তবে ব্যবসায়ীদের কে কত টাকা পাচার করেছেন, বা কত টাকা বিনিয়োগ করেছেন সে সংক্রান্ত কোনো তথ্য প্রকাশিত নথিতে নেই।

এর আগে গত নভেম্বর মাসে প্যারাডাইস পেপার্সের প্রকাশিত নথিতে ব্যবসায়ী নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টু, তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামসহ ১০ বাংলাদেশির নাম প্রকাশ পেয়েছিল, যাঁরা বিদেশে কম্পানি খুলেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গ্লোবাল ফিন্যানশিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৯১১ কোটি ডলার বা ৭২ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আমদানি-রপ্তানির সময় পণ্যের প্রকৃত মূল্য গোপন করে এর বড় অংশ পাচার করেছেন ব্যবসায়ীরা।

জিএফআইর তথ্য অনুযায়ী, ২০০৫ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে প্রায় সাত হাজার ৫৮৫ কোটি ডলার বা ছয় লাখ কোটি টাকারও বেশি। এই পরিমাণ টাকা বাংলাদেশের প্রায় দুটি জাতীয় বাজেটের সমান।

বাংলাদেশে বিদ্যমান বৈদেশিক মুদ্রানীতি আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশিদের অন্য দেশে বিনিয়োগ করতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আগাম অনুমোদন নিতে হয়। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বিদেশে বিনিয়োগ করেছে। তবে প্যারাডাইস পেপার্সে যাঁদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁদের কেউই বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিদেশে বিনিয়োগের অনুমোদন নেননি। অর্থাৎ তাঁরা দেশ থেকে অর্থপাচার করে বিনিয়োগ করেছেন।

প্যারাডাইস পেপার্সে নাম থাকা মুসা বিন শমসেরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সম্প্রতি তাঁর বাড়ি থেকে অবৈধ একটি দামি গাড়িও জব্দ করেছে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা থাকার দাবি করা মুসা বিন শমসের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অস্ত্র ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দেন নিজেকে। তিনি মাল্টায় ভেনাস ওভারসিস হোল্ডিং কম্পানির শেয়ারহোল্ডার ও পরিচালক। কম্পানিটি ২০১০ সালে মাল্টায় নিবন্ধিত হয়েছে। এ সম্পর্কে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বলেন, ‘মুসা বিন শমসের নিজেই আমাদের জানিয়েছেন, সুইজারল্যান্ডের একটি ব্যাংকে তাঁর ৯৬ হাজার কোটি টাকা গচ্ছিত রয়েছে। এ অর্থ কিভাবে পাঠানো হয়েছে, আয়ের উৎস কি—এসব জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি। মহাপরিচালক জানান, একটি বিলাসবহুল গাড়ি কেনায় তিনি দুই কোটি ১৭ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকি ও অর্থপাচারের মামলায় বিস্তারিত তদন্ত চলছে।

প্যারাডাইস পেপার্সে নাম থাকা অন্য বাংলাদেশিদের মধ্যে রয়েছে ধানমণ্ডির ৩ নম্বর রোডের ১৩২ নম্বর বাসার জুলফিকার আহমেদ। তিনি মাল্টায় ১৯৯৯ সালে নিবন্ধিত খালেদা শিপিং কম্পানি লিমিটেডের শেয়ারহোল্ডার।

বেঙ্গল শিপিং লাইন লিমিটেড, পাম ভিউ, ১০১-এ, আগ্রাবাদ চট্টগ্রামের ঠিকানা ব্যবহার করে মাল্টায় তিনটি কম্পানি খুলেছেন মোহাম্মদ এ মালেক নামের এক ব্যবসায়ী। তিনি ১৯৯৩ সালে মাল্টায় নিবন্ধিত শামস শিপিং লিমিটেডের পরিচালক, ১৯৯৭ সালে নিবন্ধিত কামার শিপিং লিমিটেডের পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডার এবং ১৯৯৭ সালে নিবন্ধিত মারজান শিপিং লিমিটেডের পরিচালক হিসেবে রয়েছেন। এই তিনটি কম্পানির পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে চট্টগ্রামের লালখান বাজার এলাকার মাওলানা শওকত আলী রোডের ৭৭ নম্বর বাড়ির মোহাম্মদ এ আউয়ালের নামও রয়েছে।

সাভারে অবস্থিত ঢাকা ইপিজেডের ব্যবসায়ী শাহনাজ হুদা রাজ্জাক মাল্টায় ২০০১ সালে ওশেন আইস শিপিং কম্পানি লিমিটেড ও সাউদার্ন আইস শিপিং কম্পানি লিমিটেড নামে দুটি কম্পানি নিবন্ধন করান। কম্পানি দুটির পরিচালক তিনি। তবে কম্পানি দুটি এখন বিলুপ্তির পথে বলে প্যারাডাইস পেপারসে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৯৯৯ সালে মাল্টায় নিবন্ধিত প্রিয়াম শিপিং লিমিটেডের পরিচালকও শাহনাজ হুদা রাজ্জাক।

ঢাকা ইপিজেডের ব্যবসায়ী ইমরান রহমান বাংলাদেশি পরিচয় ব্যবহার করে শাহনাজ হুদা রাজ্জাকের সঙ্গে ওশেন আইস শিপিং কম্পানি লিমিটেড ও সাউদার্ন আইস শিপিং কম্পানির পরিচালক হয়েছেন। শাহনাজ হুদার সঙ্গেই তিনি প্রিয়াম শিপিংয়ের পরিচালক হয়েছেন। অর্থাৎ এই তিনটি কম্পানি শাহনাজ হুদা ও ইমরান রহমান বিনিয়োগ করে গড়ে তুলেছেন।

নারায়ণগঞ্জের চাষাড়ার ৩১ নম্বর বালুর মাঠের ঠিকানা ব্যবহার করে মাল্টায় ২০০৯ সালে গেক্সিমকে ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামে কম্পানি খুলেছেন তাজুল ইসলাম তাজন ও তুহীন ইসলাম সুমন। তাঁরা দুজনই কম্পানিটির শেয়ারহোল্ডার ও পরিচালক। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা উপজেলার আজমিরীবাগ এলাকার ফারুক পালোয়ানও গেক্সিমকে ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের শেয়ারহোল্ডার ও পরিচালক।

বনানীর ওল্ড ডিওএইচএসের ৬ নম্বর সড়কের ৮৭/এ ঠিকানা ব্যবহার করে ২০০৩ সালে মাল্টায় নিবন্ধিত কম্পানি সেলকন শিপিং কম্পানির শেয়ারহোল্ডার হিসেবে রয়েছেন মাহতাবা রহমান। আর বারিধারা ডিওএইচএসের ৭ নম্বর সড়কের ৪২৪ নম্বর বাড়ির ঠিকানা ব্যবহার করেছেন মো. ফজলে এলাহী চৌধুরী। মাল্টায় ২০১৬ সালে নিবন্ধিত ডায়নামিক এনার্জির পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডার তিনি।

ধানমণ্ডির ১৪ নম্বর সড়কের ১১/এ ঠিকানার কে এইচ আসাদুল ইসলাম নামের একজন মাল্টায় ইনট্রিপিট গ্রুপ ও ইনট্রিপিট ক্যাপিটাল নামে দুটি কম্পানি গঠন করেছেন ২০১৫ সালে। তিনি কম্পানি দুটির শেয়ারহোল্ডার ও পরিচালক।

সুইডেনের নাগরিক এরিক জন এন্ডারসন উইলসন ঢাকার উত্তরা এলাকার ১৩ নম্বর রোডের ১৪ নম্বর বাড়ির ঠিকানা ব্যবহার করে ডাব্লিউএমজি লিমিটেড নামে মাল্টায় ২০০৯ সালে নিবন্ধিত কম্পানির শেয়ারহোল্ডার হয়েছেন। রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর ঠিকানা ব্যবহার করে আতিকুজ্জামান নামের এক বাংলাদেশি ২০০১ সালে মাল্টায় নিউ টেকনোলজি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড নামে নিবন্ধিত একটি কম্পানির শেয়ারহোল্ডার হয়েছেন।

বাংলাদেশি ও ভারতীয় হিসেবে পরিচয় দেওয়া আমানুল্লাহ চাগলা ঢাকার বারিধারা ডিওএইচএসের ৮ নম্বর লেনের ৪৫৮ নম্বর বাড়ির ঠিকানা ব্যবহার করে মাল্টায় ২০০৯ সালে নিবন্ধিত পদ্মা টেক্সটাইলের পরিচালক হয়েছেন। ডাবলিনের ঠিকানা ব্যবহার করে মাহমুদ হোসেন নামের একজন গ্লোবাল এডুকেশন লিমিটেড নামে ২০১৪ সালে একটি কম্পানি খুলেছেন মাল্টায়। তিনি কম্পানিটির পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডার। ডাবলিনের ঠিকানা ব্যবহার করে মো. রেজাউল হক নামের একজন মিলেনিয়াম কলেজের পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডার হয়েছেন। কলেজটি মাল্টায় ২০১৪ সালে নিবন্ধিত। মো. কামাল ভূইয়া নামের একজন সালামা উম আলকুয়েন (বিদেশি ঠিকানা) ব্যবহার করে মাল্টায় ২০০৮ সালে ভূইয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং কম্পানি গড়ে তুলেছেন। তিনি কম্পানিটির পরিচালক, শেয়ারহোল্ডার ও সচিব। ইতালি-বাংলাদেশি পরিচয় দেওয়া ও পাদোপের ঠিকানা ব্যবহার করা ইউসুফ খালেক নামের একজন ২০১৬ সালে মাল্টায় কে এ কনসাল্ট লিমিটেড এবং কে এ সার্ভিস লিমিটেড নামে দুটি কম্পানির নিবন্ধন নিয়েছেন। তিনি কম্পানি দুটির শেয়ারহোল্ডার।

বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন, বিদেশে কম্পানি গঠনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশিদের নাম প্রকাশিত হলে সাধারণত তা খতিয়ে দেখা হয়। অবৈধ উপায়ে এসব কম্পানি করা হয়েছে কি না তা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য প্রয়োজনে অন্য দেশ থেকে তথ্য নেওয়া হয়। তথ্যের আলোকে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাঠানো হয় দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)। বর্তমানে এ রকম ৩২টি কেস দুদকে বিচারাধীন।

বাংলাদেশে মাল্টার অনারারি কনসাল শোয়েব চৌধুরী বলেন, মাল্টা মূলত একটি শিপিং হাব। যাঁরা শিপিং ব্যবসা করেন তাঁরা অতিরিক্ত ফি থেকে রেহাই পেতে কম্পানি খুলে থাকতে পারেন। কেউ কম্পানি খুলে দেশ থেকে বড় অঙ্কের অর্থ পাচার করলে তা দেখা উচিত।

প্যারাডাইস পেপারসে গতকাল পর্যন্ত ২০০ দেশের সাত লাখ ৮৫ হাজার কম্পানি ও সাত লাখ ২০ হাজার বিনিয়োগকারীর নাম প্রকাশ করা হয়েছে। সংগঠনটির তথ্যভাণ্ডারে এ পর্যন্ত ৮৯ জন বাংলাদেশির নাম রয়েছে, যাঁরা বিভিন্ন দেশে কম্পানি খুলেছেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

কক্সবাজারের মহেশখালীর আদিনাথ মন্দিরে চলছিল শীব চতুর্দশী পূজা। ভিড় ঠেলে সিঁড়ি বেয়ে সবাই উঠছেন পূজা দিতে। কিন্তু সিঁড়ির নিচে অসহায় আকুতি করে যাচ্ছেন এক বৃদ্ধা। খুব করে চাইছেন কোনোভাবে মন্দিরে গিয়ে পূজা দেবেন তিনি। কিন্তু এমন ভিড়ে কার কথা কে শোনে। শেষ পর্যন্ত এগিয়ে এলেন মহেশখালী থানার কনস্টেবল আফতাব উদ্দিন। বৃদ্ধাকে কোলে তুলে সিঁড়ি বেয়ে মন্দিরে তুলে দিলেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে ছবিটি। ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে আফতাব এক বৃদ্ধাকে কোলে তুলে বেয়ে উঠছেন মন্দিরের শতাধিক সিঁড়ি। আর তা অবলোকন করছেন সিঁড়ির দু’পাশে দাঁড়ানো পূজারী ও দর্শনার্থীরা। বৃদ্ধাকে মন্দিরের একেবারে জিরো পয়েন্টে এনে পূজা ও মনভরে প্রার্থনা করবার সুযোগ করে দিয়ে পুনরায় কোলে নিয়ে আগের জায়গায় নামিয়ে দেন পুলিশ কনস্টেবল আফতাব উদ্দিন।

গত মঙ্গলবার রাত ১০টা ৪৫ মিনিট থেকে পূজার লগ্ন শুরু হয়ে শেষ হয়েছে বুধবার রাত ১টায়। আর এ পূজাকে উপলক্ষ করে সপ্তাহব্যাপী চলে ঐতিহ্যবাহী আদিনাথ মেলা।

বুধবার সকালে মেলা প্রাঙ্গণে বেলুন ব্যবসায়ী গণেশ বনিক (৪৬) ও মমতা রাণী বণিক (৩৮) নামে এক দম্পতি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে মারা যান। আহত হন আরও বেশ কয়েকজন। এ ঘটনার পর এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল। এরই মধ্যে বিকেলে মহেশখালী থানার কনস্টেবল আফতাব উদ্দিনের (নং-৫২৯) এ মানবিক ঘটনা সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে।

এ ঘটনার রহস্য খুঁজতে গিয়ে জানা গেছে এক অভিনব কাহিনী। যা ধর্মের চেয়ে মানবিকতাকে উঁচুতে তুলেছে। কোলে থাকা বৃদ্ধার হাতের কারণে পুলিশ সদস্যের নেমপ্লেটটি দেখা যাচ্ছিল না। তাই অনেকে মনে করেছিলেন সনাতনী যুবকটি তার বয়োবৃদ্ধ আত্মীয়াকে জীবনের শেষ বয়সে শিবপূজা দিতে সহযোগিতা করছেন। কিন্তু যখন জানা গেল পুলিশ সদস্যটি মুসলমান তখন চারদিকে হৈ চৈ পড়ে যায়। এটা কীভাবে হলো? কেন একজন মুসলমান সনাতনী এক বৃদ্ধাকে এভাবে পূজা করতে সহযোগিতা করলেন? এ রকম নানা ধরনের আলোচনা। এতে পুলিশের ভালো-মন্দ নিয়ে নানাজন নানা অভিজ্ঞতার কথা বলে আলোচনাটি সরব রেখেছে।

পুলিশ কনস্টেবল আফতাব উদ্দিন বলেন, আমরা আদিনাথ মন্দির এলাকায় নিরপত্তার ডিউটি করছিলাম। আদিনাথ মন্দিরের নিচে বসেছে শতাধিক দোকান-পাটের মেলা যেখানে মানুষে গিজগিজ করছিল। আর মন্দিরে উঠতে পার হতে হয় শতাধিক সিঁড়ি। নিরপাত্তার স্বার্থে সিঁড়ির মাঝখান খালি রেথে দুপাশ দিয়ে পূজারী ওঠার ব্যবস্থা করা হয়। সেভাবেই সময় মতো পূজা দিতে যে যার মতো ব্যস্ত। সে ব্যস্ততায় দেখলাম লাইনে দাঁড়াতে অক্ষম এক বৃদ্ধা সিঁড়ির একপাশে বসে কাতর স্বরে সবার কাছে আকুতি রেখে চলছে, তাকে যেনো মূল মন্দিরে পৌঁছাতে সহযোগিতা করা হয়। কিন্তু কেউ বিষয়টি গ্রাহ্য করছে না। নতুন কাপড়ে কঙ্কালসার দেহের নারীটিকে দেখে আমার মায়ের কথা মনে পড়ে যায়। নিজের অজান্তেই তাকে কোলে তুলে নিয়ে হাঁটা শুরু করলাম। মূল মন্দিরের সামনে তার পছন্দমতো জায়গায় বসালাম। পূজা ও প্রার্থনা শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে আবার সেই জায়গায় এনে নামিয়ে দিলাম।

আপনি মুসলিম হয়ে একজন সনাতনী নারীকে পূজা করতে সহযোগিতা করলেন এতে কোনো সংকোচ কাজ করেছে কিনা জানতে চাইলে আফতাব বলেন, যখন বৃদ্ধাকে কোলে নিলাম তখন আমার মাথায় ধর্মানুভূতি কাজ করেনি। মনে হচ্ছিল আমি আমার মাকে তার আবদার পূরণে সহযোগিতা করছি। কোলে মানুষ নিয়ে শতাধিক সিঁড়ি ওঠা কষ্টকর; তাই চারপাশে তাকানো হয়নি আমার। কে কি করছে, কে ছবি তুলছে এসব খেয়ালে আসেনি। যখন তাকে পূর্বের জায়গায় নিরাপদে পৌঁছাতে পারলাম তখন নিজেকে বেশ প্রফুল্ল মনে হচ্ছিল। তখন দেখি বৃদ্ধাটি নির্দিষ্ট লগ্নের ভেতর পূজা দিতে পেরে নানা ধরণের আশীর্বাদ করছে। তার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নিরাপত্তার কাজে লেগে যাওয়ায় বৃদ্ধাটির পরিচয়ও জানা হয়নি। বৃদ্ধ নারীটি তার জন্য অনেক দোয়া-আশীর্বাদ করেছে, এটিই তার বড়ো পাওনা বলে জানান এ পুলিশ সদস্য।

পুলিশ কনস্টেবল আফতাব উদ্দিন মহেশখালী থানায় কর্মরত। তিনি নোয়াখালীর কবিরহাট এলাকার মৃত বেলায়েত হোসেনের ছেলে।

কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিকবিয়ষক সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাপস রক্ষিত বলেন, কিছু ঘটনা এমনই হয়। যা দিয়ে প্রমাণ পাওয়া যায় আমরা অসাম্প্রদায়িক দেশের অধিবাসী। পুলিশ সদস্য আফতাবের ঘটনাটি ধর্মকে ছাপিয়ে মানবিকতার জয়গান এনে দিয়েছে। আমরা এমনই বাংলাদেশ অব্যাহত থাকুক কামনা করি। মানবিক মানুষ হিসেবে আফতাবকে আমরা স্যালুট জানাচ্ছি।

মহেশখালী থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, সবার নিরাপত্তায় কাজ করতে গিয়ে পরিবার-পরিজন থেকে পুলিশ সদস্যদের বছরের সিংহভাগ সময় দূরেই থাকতে হয়। এরপরও পান থেকে চুন খসলেই সমালোচনায় করা হয় পুলিশের। কিন্তু আফতাবদের মতো অসংখ্য ভালো কাজ পুলিশ নিত্যদিন করছে। কিছু নজরে আসে আর কিছু আড়ালে থেকে যায়। নজরে আসা আফতাবের মানবিক ঘটনাটি সাধারণ মানুষের মতো আমাদেরও পুলকিত করছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

প্রভাষক শওকত আলী বাবু : বিশ্ব শান্তি কামনায় ৪দিন ব্যাপী সার্বজনীন শ্রী শ্রী দোগাছিয়া মহাশ্মশান কালীপূজা ও বসন্ত উৎসবের ৩য় দিনে কীর্তন, আলোচনা সভা ও যাত্রাপালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে দোগাছিয়া মহাশ্মশান ও কালী মন্দির কমিটি আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন মন্দির কমিটির সভাপতি বাবু মুকুন্দ মোহন ভারতী।

প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি ও সাতক্ষীরা সদর-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মোস্তাক আহমেদ রবি।

এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক শেখ হারুন উর রশিদ, জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর জোৎস্না আরা, যুগ্ন সম্পাদক সুলেখা দাস, আগরদাঁড়ি ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান হবি, ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি মো. রমজান আলী বিশ্বাস, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মো. মোশাররফ হোসেন মুকুল, ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান সানা, তুজলপুর জি.সি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম, ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মাধবকাটি বাজার কমিটির সভাপতি আবুল খায়ের বিশ্বাস, বাজার কমিটি ও ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমাণ্ডের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির লিটু প্রমুখ।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সুধাংশু শেখর সরকার।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
আশাশুনিতে ফারিয়া’র মাসিক সভা অনুষ্ঠিত

মইনুল ইসলাম: আশাশুনিতে ওষুধ কোম্পানী প্রতিনিধিদের সংগঠন ফারিয়ার এক মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধায় আশাশুনি রিপোর্টার্স ক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় । সভায় যৌক্তিক কারণ ছাড়া মাসিক সভায় সদস্যদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা, নির্ধারিত সময়ে মিটিংয়ে উপস্থিত হওয়া, মার্কেটে সদস্যদের সমস্যা ও তা সমাধানের উপায় নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ফারিয়া আশাশুনির সভাপতি আইয়ুব হোসেন রানার (জুলফার ফার্মা) সভাপতিতে এবং সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলামের (বেক্সিমকো) সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় রবকুল হোসেন (ড্রাগ ইন্টাঃ), মোঃ আব্দুল করিম(স্কয়ার), জিল্লুর রহমান(বায়োফার্মা), শফিকুল ইসলাম(একমি), অমিত ম-ল(পপুলার), মনিরুল ইসলাম(মনিকো), জন মিল্টন (স্কয়ার), রায়হানুল ইসলাম(এসিআই), সঞ্জয় বাছাড়(এডরুক), কাজী জাহিদুল ইসলাম(রেনাটা), আফাজউদ্দীন(অপসোনিন ফার্মা ), মেহেদী হাসান(অপসেনিন ফার্মা), ফরহাদ আলী(হেলথ্কেয়ার), এম এ সবুর(পেট্রন),কবির হোসেন(ড্রাগ ইন্টাঃ), ফিরোজ হোসেন(লিয়ন), মাহমুদ হাসান(ইনসেপটা) প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
কালিগঞ্জ সীমান্তে অজ্ঞাত মহিলার লাশ উদ্ধার

কালিগঞ্জ ব্যুরো: কালিগঞ্জ সীমান্তের ইছামতি ও কালিন্দী নদীর মোহনা বসন্তপুর বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ম এলাকা থেকে বোরকা পরিহিত অজ্ঞত এক মহিলার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। থানা সূত্রে জানাযায়, বুধবার রাত ৮টার দিকে স্থানীয় গ্রামবাসীরা নদীর চরে মহিলার লাশ ভাসতে দেখে থানায় সংবাদ দেয়।

এসময় উপ-পরিদর্শক ইসরাফিল হোসেন সঙ্গিয় পুলিশ ফোস নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে বোরকা পরিহিত অর্ধগলিত দূর্গন্ধযুক্ত অজ্ঞাতনামা মহিলার লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ আরো জানায় অজ্ঞতনামা মহিলা মুসলিম পরিবারের বয়স আনুমানিক ৩০ বছর। বেশ কয়েক দিন পূর্ব তাকে মেরে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়ে ছিল। বৃহস্পতিবার সকালে ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা মর্গে পাঠানো হয়েছে। এঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং ৬ তারিখ ১৫/২/১৮

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest