সরকারের মেয়াদের শেষ বছরে মন্ত্রিসভায় নতুন সংযোজনের পর মন্ত্রীদের দফতর ব্যাপক রদবদল করে চমক দেখালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নবনিযুক্ত তিন মন্ত্রী ও এক প্রতিমন্ত্রীর মধ্যে দফতর বণ্টনের পাশাপাশি পুরনো তিন মন্ত্রী ও এক প্রতিমন্ত্রীর দফতর রদবদল করা হয়েছে। গতকাল এক সরকারি প্রজ্ঞাপনে দফতর রদবদলের কথা জানানো হয়।

রদবদলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নতুন দায়িত্ব পাওয়া মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা। বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়ে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলতে পারবেন কিসের জন্য তিনি পরিবর্তন করেছেন। উনি হর্তাকর্তা বিধাতা। উনি সব নির্ধারণ করেন।

বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়ে রাশেদ খান মেনন বলেন, আকাশ থেকে মাটিতে নামলাম।

অন্যদিকে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়ে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, সরকারে ছিলাম সরকারেই আছি।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী থেকে তথ্য প্রতিমন্ত্রী হয়ে তারানা হালিম বলেন, এভাবে সরিয়ে দেওয়াটা মানুষ হিসেবে একটু লাগে।

পুরনো যে তিন মন্ত্রীর দফতর বদল করা হয়েছে তারা সবাই ক্ষমতাসীন মহাজোটের শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি (জেপি) ও জাতীয় পার্টির নেতা। আর আওয়ামী লীগের মধ্যে কেবল জনপ্রিয় অভিনেত্রী তারানা হালিমকে তার আগের দফতর পরিবর্তন করে তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে।

গতকাল দুপুরে মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর সচিবালয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেননকে আগের মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিমান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন নতুন নিয়োগ পাওয়া এ কে এম শাহজাহান কামাল। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন শুরু থেকেই বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে দেওয়া হয়েছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। আর পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন জাতীয় পার্টির (এরশাদ) প্রেসিডয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি এর আগে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে ছিলেন। নতুন মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়া তথ্য ও প্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বার পেয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। মত্স্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা নারায়ণ চন্দ্র চন্দ মন্ত্রী হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার পর তাকে একই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা অভিনেত্রী তারানা হালিমের দফতর বদল করে পাঠানো হয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে। এ মন্ত্রণালয়ের পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। নতুন শপথ নেওয়া কাজী কেরামত আলী পেয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাদ্রাসা ও কারিগরি বিভাগের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ একই মন্ত্রণালয়ে রয়েছেন।

কে কী বললেন

আনোয়ার হোসেন মঞ্জু : বর্তমান সরকারের প্রথম থেকেই পরিবেশ ও বনমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। তাঁকে এখন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় পরিবর্তন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলতে পারবেন কেন, কীসের জন্য তিনি পরিবর্তন করেছেন। এ বিষয়ে আমার কোনো ক্রিয়া বা প্রতিক্রিয়া নেই। আমি কুম্ভরাশির জাতক, কাজের লোক। বদলের কারণ আমি বলতে পারব না। উনি (প্রধানমন্ত্রী) হর্তাকর্তা-বিধাতা, উনি সব নির্ধারণ করেন।

রাশেদ খান মেনন : বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী হিসেবে চার বছর দায়িত্ব পালনের পর সরকারের শেষ মেয়াদে এসে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেন রাশেদ খান মেনন। দফতর বদলের প্রতিক্রিয়ায় তিনি গতকাল বিকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আকাশ থেকে তিনি মাটিতে নামলেন। সূত্র বিডিনিউজ।

বিডিনিউজ আরও জানায়, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সরকারের শরিক দলের নেতা মেনন খানিকটা হেসেই বলেন, ‘আমার জন্য সুখকর এই কারণে বলতে পারেন, আমি আকাশ থেকে একটু মাটিতে নামলাম। সামাজিক নিরাপত্তার প্রশ্নে বলেন, সামাজিক কল্যাণের প্রশ্নে বলেন, একেবারে সাধারণ মানুষের কাছে।’ দফতর বদলের পর বিকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান মেনন। পরে বিকালে সচিবালয়ে বিমান মন্ত্রণালয়ে এসে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মেনন বলেন, ‘শেখ হাসিনা অনেক হিসাব করেই মন্ত্রিসভায় রদবদল এনেছেন। বছরের প্রথম ভাগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার যে সম্প্রসারণ ও পরিবর্তন সাধন করলেন, আমার মনে হয় স্বাভাবিকভাবে প্রশাসনে গতিশীলতা আনার জন্যই করলেন। এটিই হচ্ছে শেষ বছর আমাদের সরকারের।

সুতরাং তিনি চেয়েছেন শেষ বছরের কাজের সমন্বয় আরও ভালোভাবে যেন হয়।’ দফতর বদলকে কেউ কেউ ‘অবনমন’ বললেও নতুন সমাজকল্যাণমন্ত্রী বিষয়টি ইতিবাচকভাবেই দেখতে চান। তিনি বলেন, ‘আমি সবচেয়ে কম বাজেটের একটি মন্ত্রণালয়ে (বিমান) ছিলাম। এখন আমি অনেক বড় বাজেটের একটি মন্ত্রণালয়ে যাচ্ছি। এখানে প্রান্তিক মানুষের জন্য কাজ করার অনেক জায়গা আছে।’ গত চার বছরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে মেনন বলেন, ‘আমার পক্ষ থেকে সিভিল এভিয়েশন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে কাজ করা খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল। যখন আমি দায়িত্ব নিয়েছিলাম, তখন অনেকে তাচ্ছিল্য করেছিল। বন্ধুরা বলত, “তোমাকে একটি ডুবন্ত জাহাজ তুলতে দিয়েছে”।’ তার সময়ে সিভিল এভিয়েশনে কী কী অগ্রগতি হয়েছে, তার একটি বিবরণও সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন মেনন। বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর বিমান পরপর তিনবার লাভ করেছে। অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রীদের যাতায়াত বেড়েছে।’ মন্ত্রিসভার রদবদলে কেবল তিন শরিকের পরিবর্তনে জোটে বিরূপ প্রভাব পড়বে কিনা— এ প্রশ্নে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, তেমন কোনো শঙ্কা তিনি দেখছেন না। এই পরিবর্তনের আভাস আগেই পেয়েছিলেন কিনা, এ পরিবর্তনে খুশি কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দেখেন, আমি এক কথায়…। প্রশ্নটা হলো…আমি রাজনীতি করি। আমরা সব বিষয়ের জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকি।’

আনিসুল ইসলাম মাহমুদ : এ সরকারের প্রথম থেকেই পানিসম্পদমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জাতীয় পার্টির (এরশাদ) প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তাকে দফতর বদল করে দেওয়া হয়েছে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। গতকাল তিনি বলেন, ‘সরকারে ছিলাম, সরকারে আছি। প্রধানমন্ত্রী যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা আগেও পালন করেছি, আগামীতেও করব।’ দফতর বদলের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কিছু বলব না। সরকারে ছিলাম, সরকারে আছি।’

তারানা হালিম : দফতর বদল করা হয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমেরও। তাকে দেওয়া হয়েছে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব। দফতর বদলের প্রতিক্রিয়ায় গতকাল তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের কাজ শেষ করে এনেছি। স্যাটেলাইট বিষয়ে মানুষের কোনো ধারণা ছিল না, থাকলেও ভ্রান্ত ধারণা ছিল। আমি সেই ধারণা সৃষ্টি করেছি এবং ভ্রান্ত ধারণা পাল্টে দিয়েছি। এ রকম পরিস্থিতিতে আমাকে সরিয়ে দেওয়াটা মানুষ হিসেবে একটু লাগে। আমি তো ফেরেশতা নই, অন্য কিছুও নই; মানুষ। রক্তে-মাংসে গড়া।’ তারানা হালিম প্রশ্ন করেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটসহ আমার হাতে সম্পন্ন করা জিনিসগুলো যখন প্রধানমন্ত্রী ছাড়া অন্য কেউ উদ্বোধন করবেন, তা যখন আমি দেখব, আমার লাগাটা কি স্বাভাবিক নয়?’ নতুন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সামনের পথ কী হবে, আমি জানি না। এ নিয়ে আমি কিছু ভাবিনি, পরিকল্পনাও করিনি। গত দুই বছর সততার সঙ্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে দায়িত্ব দিয়েছেন, তা পালন করেছি। প্রধানমন্ত্রীর মুখ উজ্জ্বল করার চেষ্টা করেছি।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘তার পরও আমি কৃতজ্ঞ আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার ওপর। তিনি আমাকে দুবার এমপি বানিয়েছেন, প্রতিমন্ত্রী বানিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে তার সেই বিশ্বাস ও আস্থা রাখার চেষ্টা করেছি। তবে নতুন যে দায়িত্ব সেখানে আমার কী কাজ হবে, তা জানি না। এ নিয়ে আমি কোনো পরিকল্পনাও করিনি।’

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
কে হচ্ছেন দেশের ২১তম রাষ্ট্রপতি!

বর্তমান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আর মাত্র কয়েক মাস বাকী আছে। এরই মধ্যে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন উঠেছে আওয়ামী লীগের প্রবীণ কয়েক জন নেতাদের নাম নিয়ে। কে হচ্ছেন ২১তম প্রেসিডেন্ট। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের স্থলাভিষিক্ত কে হতে যাচ্ছে এমনই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সবার মাঝে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী ফোরাম সভাপতিমন্ডলীর এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রাষ্ট্রপতি এ্যাডভোকেট আবদুল হামিদের মেয়াদ হতে যাচ্ছে আগামী ২১ এপ্রিল। মেয়াদ শেষ হলেই দলের অভিজ্ঞ নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

বর্তমান প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষে সংবিধান অনুযায়ী পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন আগামী পাঁচ বছরের জন্য। কিন্তু আগামী জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন দিক পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিবেচনা করা হবে। এছাড়া, বর্তমান দশম জাতীয় সংসদে যেহেতু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্টতা রয়েছে, সেহেতু আওয়ামী লীগের প্রার্থীই হবেন দেশের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট।

২১তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের নামও রয়েছে। ডিতনি ছাড়াও আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বর্তমানে দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, দশম জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী ও প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী নাম নিয়ে রানৈতিক মহলে গুঞ্জন উঠেছে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী ফোরাম সভাপতিমন্ডলীর আরেক সদস্য বলেন,আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষে সৈয়দ আশরাফই হতে পারেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্যতম প্রধান পছন্দ।

দেশবাসী ও রাজনীতিতে চমক দিতে ড.শিরিন শারমিন চৌধুরীকে দেশের পরবর্তি প্রেসিডেন্ট এবং দেশের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে পারেন। সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দেয়া যায় না।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
সরকারের উন্নয়ন ও সাফল্য নিয়ে উঠান বৈঠক

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারের উন্নয়ন ও সাফল্য তুলে ধরতে জনগণের দোরগোড়ায় উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বিকালে আগরদাড়ি ইউনিয়নের ইন্দ্রিরা গ্রামের ৫নং ওয়ার্ডে ইন্দ্রিরা সামছুল হক হাফিজিয়া মাদ্রাসা ঈদগাহ ময়দানে সরকারের উন্নয়ন ও সাফল্য তুলে ধরতে নারীদের নিয়ে উঠান বৈঠকে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা-০২ আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। এসময় তিনি বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই বাঙালি জাতিকে উপহার দিয়েছেন স্বাধীন দেশ এবং সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে বিশে^র দরবারে আত্মনির্ভরশীল জাতি হিসেবে পরিচিত করেছে। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সরকার উন্নয়নের সরকার। আজ স্বপ্নের পদ্মাসেতু দৃশ্যমান। বাংলাদেশের মানুষ এখন আর না খেয়ে থাকেনা।’
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক শেখ হারুন উর রশিদ, জেলা আওয়ামীলীগের নির্বাহী সদস্য অতিরিক্ত পিপি এড. আব্দুল লতিফ, জেলা শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি বিকাশ চন্দ্র দাস, জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদিকা জ্যোৎন্সা আরা, আগরদাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান হবি, জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদিকা সুলেখা দাস, রোখসানা পারভীন, দপ্তর সম্পাদিকা তহমিনা ইসলাম, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা গোপাল চন্দ্র ঘোষাল, বাঁশদহা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাস্টার মফিজুর রহমান, মনোয়ারা খাতুন প্রমুখ। উঠান বৈঠকে উপস্থিত নারীদের বিভিন্ন সমস্যার কথা শোনেন এবং তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ও সমাধানের আশ^াস দেন। এসময় স্থানীয় ও দলীয় নেতৃবৃন্দ এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস.এম নজমুছছায়াদত পলাশ।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

মাকছুদ খান : ভোমরা সীমান্তের ওপারে ভারতের ঘোজাডাঙ্গা এলাকায় বিজিবি ও বিএসএফ এর সাথে ঘন্টাব্যাপি মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বিকাল সাড়ে ৩ টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ভারতের অভ্যন্তরে ঘোজাডাঙ্গা ফুটবলমাঠে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশের পক্ষে অংশগ্রহণ করেন বিজিবি’র খুলনা বিভাগীয় সেক্টর কমান্ডার কর্নেল অহিদুর রহমান, সাতক্ষীরা ৩৮ বিজিবি’র নবাগত অধিনায়ক লে: কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমান আর ভারতের পক্ষে ছিলেন ডিআইজি মৃদুল সানওয়াল, কমান্ডডেন্ট বিক্রম শর্মা। এর আগে ভোমরাস্থল বন্দরের জিরো পয়েন্টের নোমাস ল্যান্ডে দু’দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে ফুলের শুভেচ্ছা বিনিময় হয়। মতবিনিময় সভায় ভোমরাস্থল বন্দরের জিরো পয়েন্ট এলাকার খালের উপরে ব্রিজ সংস্কার নিয়ে আলোচনা হয়। ঘন্টাব্যাপী আলোচনার পর ব্রিজটি আশু সংস্কারের জন্য উভয় পক্ষ একমত পোষণ করেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
কালিগঞ্জ এসিল্যান্ড অফিসের বিকল টেলিফোন নম্বর ব্যবহার করে হুমকি, থানায় ডায়েরি

কালিগঞ্জ ব্যুরো: কালিগঞ্জ উপজেলা এসিল্যান্ড অফিসের টেলিফোন নম্বর ব্যবহার করে একটি চক্র অভিনব কায়দায় ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাদের কাছে হুমকি ও চাঁদা দাবি করায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুর আহম্মেদ মাছুম জানান, কালিগঞ্জ ভূমি অফিসের ল্যান্ড টেলিফেন নম্বর (০৪৭২৫৫৬০২৫) ব্যবহার করে বুধবার সকাল ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে শ্যামনগর উপজেলার ভ্রুরুলিয়া ইউনিয়ন (ভূমি) সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল গনি মোবাইল নং (০১৭৪০৬১৭২৯৬), আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মোবাইল নং (০১৭১১৯৪২৬৯০) ও কালিগঞ্জ উপজেলা সদরের তারালী ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ইউনূচ চিশতি মোবাইল (০১৭১৫২১১৬০০), বসন্তপুর ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা জিএম ফয়েজ আহম্মেদের কাছে হুমকি ও ৫ হাজার টাকা চাঁদার দাবি করে (০১৯০২৭৮৬৭৩৪) নম্বর মোবাইলে বিকাশে টাকা পাঠাতে বলা হয়। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় সংশ্লিষ্ঠ ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাগণ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অবহিত করেন।
তাৎক্ষণিক উপজেলা (ভূমি) কর্মকর্তা ঐ চক্রের পাঠানো বিকাশ নম্বরে কল দিয়ে পরিচয় জানতে চাইলে সে জানায়, উপজেলার রতনপুর গ্রামের আনছার মোল্লার ছেলে তার নাম শুভ এই মোবাইল নম্বরটা তার নিজের। এদিকে উপজেলা ভূমি অফিসের টেলিফোনটি দীর্ঘদিন ধরে বিকল হয়ে রয়েছে। তবে অভিনব পন্থায় ভূমি অফিসের নম্বর ব্যবহার করে চাঁদা দাবি করায় ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তারা পড়েছে বেকায়দায়। সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিষয়টি সাংবাদিকসহ থানা পুলিশকে অবগত করেছেন। এবং সাথে সাথে উপজেলা টেলিফোন অফিসের লাইন ম্যান জাহিদ হাসানকে ডেকে টেলিফোনটি মেরামোত ও পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন। এদিকে তারালী ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ইউনূস চিশতি জানান, উপজেলা ভূমি অফিস সংলগ্ম তার অফিস সকালে এসিল্যান্ড সারের অফিসিয়াল টেলিফোন নম্বর ব্যবহার করে আমার মোবাইলে টাকার কথা জানালে আমি পরিচয় জানতে চাইলে ফোন কেটে দেয়। পরে সেই নম্বরে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেলেও বন্ধ ছিল। কালিগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মীর্জ সালহ্ উদ্দিন ও অফিসার ইনচার্জ সুবীর দত্তের কাছে জানতে চাইলে তারা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কালিগঞ্জ থানায় ০৩/০১/১৮ তারিখে ১০৭ নং সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
কাপসন্ডায় ফুটবল টুর্নামেন্টে শ্রীপুর ফুটবল একাদশ চ্যাম্পিয়ন

মোস্তাফিজুর রহমান : আশাশুনির কাপসন্ডায় ৮দলীয় ফুটবল টুর্নামেন্ট এর ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলার কাপসন্ডা প্রভাতী যুব সংঘের আয়োজনে ৪দলীয় ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলায় কয়রা উপজেলার লালুলা বাগালি ফুটবল একাদশ জোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কাপসন্ডা ফুটবল ময়দানে বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত তুমূল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ খেলায় প্রথমার্ধে এক গোলে এগিয়ে যায় উত্তর শ্রীপুর ফুটবল একাদশ। দ্বিতীয়ার্ধে উত্তর শ্রীপুর ফুটবল একাদশ দুই গোলে এগিয়ে গেলে লালুয়া ফুটবল একাদশ খেলার শেষ ১০ মিনিটে একটি গোল করছে খেলাটি টাইব্রেকারে গড়ায়। টাইব্রেকারে ৪/৩ গোলে কালিগঞ্জ উপজেলাকে পরাজিত করে উত্তর শ্রীপুর ফুটবল একাদশ জয় লাভ করেছে। কাপসন্ডা প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি ময়নুল ইসলামের সভাপতিত্বে খেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ী দলের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ এস এম শাহানেওয়াজ ডালিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন কয়রা সদর ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম, বাগালি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার, কাপসন্ডা প্রভাতী যুব সংঘের প্রধান উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা সরদার মোহম্মাদ নাজিম উদ্দীন, শিক্ষক তাপস কুমার দাশ প্রমুখ। এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কাপসন্ডা প্রভাতী যুব সংঘের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুল ইসলাম, সাংগঠনিক আব্দুর রউফ মোড়ল, ইদ্রিস আলী মোড়ল, খালিদ হোসেন সানা, আরব আলী, হোসেন আলী, অনুপ সানা প্রমূখ। বিজয়ী দলকে ও রানার আর্প দলকে নগদ অর্থ পুরষ্কৃত করা হয়। খেলায় রেফারীর দায়িত্বে ছিলেন আবু অহেদ বাবলু, সহকারী ছিলেন আক্তারুজ্জামান, আনিচুর রহমান ও স্বপন কুমার। ধারাভাষ্যে ছিলেন মফিজুল ইসলাম ও মোর্তজা হাসান। খেলায় মাঠে দর্শক ছিলো চোখে পড়ার মত।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
সাতক্ষীরায় বিএনপি নেতা হুদা, জ্যোতি ও মুকুলসহ ১২জনের নামে নাশকতার মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভালুকা চাঁদপুর আদর্শ কলেজের সদ্য বিতর্কিতভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জ্যোতি, ডিবি ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুকুল ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি হুদাসহ ১২জনের নামে নাশকতার মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ২৭ ডিসেম্বর’ ১৭ তারিখে সাতক্ষীরা সদর থানার এস আই সোহরাব হোসেন বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ ডিসেম্বর’১৭ তারিখ রাতে পুরাতন সাতক্ষীরা পল্লীমঙ্গল হাইস্কুল মাঠে পুরাতন সাতক্ষীরা এলাকার মৃত. তাজুউদ্দিন সরদারের ছেলে মাও: শামসুর রহমান, বাগডাঙ্গা এলাকার তাজুউদ্দিন সরদারের ছেলে আতিয়ার রহমান, মাটিয়াডাঙ্গা এলাকার মোঃ জোহর আলীর ছেলে আবু বক্কার সিদ্দিক, তথ্য প্রযুক্তি আইনে আটক হওয়া আসামি উত্তর কাটিয়া এলাকার মৃত. আব্দুর রউফের ছেলে মোদাচ্ছেরুল হক হুদা, বাডাঙ্গা এলাকার মৃত শামসুর রহমানের ছেলে আব্দুল খালেক, মৃত. ইদ্রিস আলীর ছেলে আব্দুর রাজ্জাক, ডিবি ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ব্রহ্মরাজপুর এলাকার হারুন অর রশিদের ছেলে মমিনুর রহমান মুকুল, ভালুকাচাঁদপুর এলাকার মৃত. আব্দুর রউফের ছেলে ভালুকা চাঁদপুর আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ মোফাচ্ছের হক ওরফে মোবাশ্বেরুল হক জ্যোতি, কালিগঞ্জ উপজেলার গোলখালী গ্রামের আত্তাব উদ্দীনের ছেলে আবুল কালাম আজাদ, সদর উপজেলা কাথন্ডা এলাকার নুর উদ্দিন মোল্যার ছেলে আনিছুর রহমান, একই এলাকার যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামি জেলা জামাতের আমির খালেক মন্ডলের ছেলে শামীম হোসেন ও কলারোয়া উপজেলার লাঙলঝাড়া গ্রামের রুস্তম আলীর ছেলে শহিদুল ইসলামসহ ৬০/৭০ জন জামায়াত-বিএনপির নেতাকর্মীরা সাতক্ষীরায় নাশকতার গোপন বৈঠক শুরু করেছে এমন সংবাদ পান সদর থানা এস আই সোহরাব হোসেন। এঘটনা জানতে পেরে তিনি বিষয়টি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে পল্লীমঙ্গল হাইস্কুল মাঠে অভিযান পরিচালনা করলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অন্যান্য ব্যক্তিরা পালিয়ে গেলেও মাও: শামসুর রহমান, আতিয়ার রহমান, ও আবু বক্কার সিদ্দিককে আটক করে পুলিশ। পরবর্তীতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে উল্লেখিত ব্যক্তিদের নাম ঠিকানা প্রকাশ করেন। সে অনুযায়ী সদর থানার এস আই সোহরাব হোসেন বাদি হয়ে উল্লেখিত ব্যক্তিদের নামে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। যার নং ৪৫।
এদিকে উক্ত মামলা আসামিরা পলাতক রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। অবশ্য এলাকাবাসী বলছে, গত ১ জানুয়ারি বই উৎসবের দিন মামলার ৭নং আসামি ডিবি ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমিনুর রহমান মুকুল স্কুলে উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই বিতরণ করেছেন। এছাড়াও মামলার ৮নং আসামি ভালুকা চাঁদপুর আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ মোবাশ্বেরুল হক জ্যোতি ১ ডিসেম্বর কলেজের স্বাক্ষর বইতে স্বাক্ষর করেছেন এবং ৪ নং আসামি তথ্য প্রযুক্তি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মোদাচ্ছেরুল হক হুদাও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই ইউসুফের সাথে ০১৭১৪ ৬৯৫০৬০ নাম্বারে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি রিসিভ না করায় তা সম্ভব হয়নি।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
রতনের উপর হামলাকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না- দেবহাটায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা

কেএম রেজাউল করিম/আরাফাত হোসেন লিটন: দুর্বিত্তদের গুলিতে দেবহাটা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সখিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন রতন (৪৫) গুরুত্বর আহত হওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে উপজেলা আওয়ামীলীগ। বুধবার বিকাল ৩টায় সখিপুর মোড় এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও নওয়াপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মুজিবর রহমানের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির সঞ্চলনায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মুনসুর আহম্মেদ।
বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল গণি, যুগ্ন-সম্পাদক আনোয়ারুল হক, নওয়াপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন সাহেব আলী, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান মিন্নুর, সাধারণ সম্পাদক বিজয় কুমার ঘোষ, শ্রমিকলীগের সভাপতি আবু তাহের, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি আবু রায়হান তিতু, ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান সবুজ প্রমূখ।
বক্তরা বলেন, আপনারা অনেকে মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি অনেকে দেখেননি। সেটি ২০১৩ সালে জামায়াত-বিএনপি নতুন করে দেখিয়েছে। তারা মানুষ খুন করে দেখিয়েছে মানুষ কতটা নিষ্ঠুর হতে পারে। তাদের দমন করতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অতিদ্রুত অপরাধীদের শাস্তি দিতে হবে, না হলে আওয়ামীলীগ তার দাতভাঙ্গা জবাব দেবে। প্রয়োজন হলে আইন হাতে তোলা হবে। আরো বলেন, ফারুক হোসেন রতন আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে জয়লাভ করায় কুচক্রিরা এটি মেনে নিতে পারেনি। তারা সরকারের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ এবং নেতাকর্মীদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে যে চক্রন্তে লিপ্ত হয়েছেন। শেখ ফারুক হোসেনের উপর যারা হামলা চালিয়েছেন তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। অপরাধী যেই হোক তাদের বিচার এদেশের মাটিতে হবে।
বক্তরা ২০১৩ সালের ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেন, জামায়াত-বিএনপি মিলে সেই সময়ে যারা দেবহাটায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে ছিলেন তারা পুনরায় আবার মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চাই। তাদের সেই কু-মতলব আর কখনো বাস্তাবায়ন করতে দেওয়া হবে না। তাছাড়া বিএনপি-জামাত যেখানে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করবে সেখানেই তাদের প্রতিহত করা হবে। হুশিয়ারী দিয়ে বলেন, ২০১৩ আর ১৮ এক মনে করলে হবে না। আজকে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনার দেশ তাই সরকারের উন্নয়নে বাধাগ্রস্থ করতে আসলে তা কঠোর ভাবে দমন করা হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ সু-সংগঠিত তাই কোন নেতাকর্মীর একফোটা রক্ত বিফলে যেতে দেওয়া হবে না। জামাতায়-বিএনপিকে আর ছাড় দেওয়া হবে না। আগামি নির্বাচনে আবারো আওয়ামীলীগকে নির্বাচিত করে শেখ হাসিনরা স্বপ্ন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য কাজ করতে হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা পেীর আওয়মীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সাহাদাৎ হোসেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন-সম্পাদক আজহারুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আরশাদ আলী, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দীন খোকন, উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান, শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম, তাঁতিলীগের সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেন, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুল ইসলাম হাফিজসহ আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের উপজেলা ও ইউনিয়নের নের্তৃবৃন্দরাসহ সর্বস্থরের জনসাধারণ।
প্রসঙ্গত, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন রতন মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মটরসাইকেল যোগে পারুলিয়া বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে হতে কয়েকগজ দুরে সখিপুর রাজারবাড়ি মোড় এলাকায় পৌঁছালে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তাকে গতিরোধ করে পরপর ৩টি গুলি ছোড়ে। এতে ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন রতনের বুকের ডানপাশে পাজড়ের নিচে গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয়রা প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরদিন বুধবার শারিরীক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয় তাকে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকালে সখিপুর কলেজ মাঠের পাশে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা মাও. দেলোয়ার হুসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর জামাত-শিবির কর্তৃক ধারালো অস্ত্র দিয়ে দেবহাটা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক হোসেন রতনকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার উপর হামলা চালিয়ে মারাত্বকভাবে জখম করে। একপর্যয়ে সন্ত্রাসীরা তাকে মৃত ভেবে ফেলে রেখে যায়। আবারো তার উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় উপজেলার সর্বস্থরের মানুষ তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। এদিকে, গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সখিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন রতনের উপর হামলার ঘটনায় সখিপুর, পারুলিয়া এলাকার সকল দোকানপাট দুপুর ২-৬টা পর্যন্ত বন্ধ রেখে শোক পালন করে দোকানদারা।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest