ডেস্ক রিপোর্ট: ঝালকাঠির দুই বিচারককে হত্যার দায়ে জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) নেতা আসাদুল ইসলাম ওরফে আরিফের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়েছে। রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে খুলনা জেলা কারাগারে এ রায় কার্যকর করা হয়। এ সময় সেখানে খুলনা জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠি জেলার জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ সোহেল আহম্মেদ ও জগন্নাথ পাঁড়ের গাড়িতে বোমা হামলা চালিয়ে তাদের হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় বোমা হামলাকারী ইফতেখার হোসেন মামুন, জেলা জজ আদালতের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আবদুল মান্নান ও দুধ বিক্রেতা বাদশা মিয়া আহত হন।
২০০৬ সালের ২৯ মে এ হত্যা মামলার রায়ে ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রেজা তারিক আহম্মেদ সাতজনের ফাঁসির দণ্ডাদেশ দেন। এরই মধ্যে জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই, শায়খ আবদুর রহমানের ভাই আতাউর রহমান সানি, জামাতা আবদুল আউয়াল, ইফতেখার হোসেন মামুন, খালেদ সাইফুল্লাহ ওরফে ফারুকের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ শীর্ষ এ ছয় জেএমবি সদস্যের মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর হয়।
আসাদুলের বাড়ি বরগুনা জেলা সদরে। আসাদুল ২০০৮ সাল থেকে খুলনা জেলা কারাগারে বন্দি ছিলেন। ফাঁসির দণ্ড কার্যকরকে কেন্দ্র করে কারাগার এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আসাদুল ইসলাম ওরফে আরিফকে কারাগারের ৩ নম্বর কনডেম সেলে ছিলেন। দুপুর ১টা দিকে খুলনা জেলার সিভিল সার্জন এস এম আব্দুর রাজ্জাক আরিফের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন।
এর পর দুপুর ২টার দিকে স্ত্রী, তার দুই কন্যা, ছয় বোনসহ মোট ১২ জন আরিফের সঙ্গে কারাগারে দেখা করে। ঘণ্টাখানেক পর তারা করাগার থেকে বেরিয়ে আসে। পরে বিকেল ৫টার দিকে আরিফের স্ত্রী তার দুই কন্যাকে নিয়ে আবারো স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে যান।
আরিফের ভাইপো মো. জামাল জানান, আরিফ পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছেন, তাকে যেন অপরিচিত কোনো স্থানে দাফন করা হয়। সে কারণে আরিফকে নিজ এলাকায় দাফন না করে তার শ্বশুরবাড়ি বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট উপজেলার উদয়পুর গ্রামে দাফন করা হবে। উল্লেখ্য, মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জেএমবি নেতা আরিফ ২০০৭ সালের ১০ জুলাই ময়মনসিংহ থেকে গ্রেপ্তার হন। এরপর তিনি আপিল করেন। চলতি বছরের ২৮ আগস্ট প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ জেএমবি নেতা আসাদুল ইসলাম ওরফে আরিফের রিভিউ আবেদন খারিজ করে মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন।