সর্বশেষ সংবাদ-
তালার কপোতাক্ষ নদীর চর থেকে রাবেয়া বেগম নামের এক নারীর মরদেহ উদ্ধারসাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে শাহ আলম সভাপতি :ইমদাদুল সম্পাদকআসুন! নতুন স্বাধীনতা ও মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইসলামী রাষ্ট্র গঠনের জন্য কাজ করি -ডা: গালিবদেবহাটা উপজেলা আইনশৃঙ্খলা ও উন্নয়ন সমন্বয় সভাসাতক্ষীরায় সাফজয়ী তিন নারী ফুটবলারকে সংবর্ধনা : প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা প্রদানতারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা অবহিতকরন ও মানবিক রাষ্ট্র গঠনে গণসমাবেশসাতক্ষীরা বোটানীক্যাল সোসাইটির হেমন্তকালীন পরিবেশ আড্ডাসাতক্ষীরায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এক যুবকের মৃত্যুসাতক্ষীরা শ্রীউলা ইউনিয়নে বিএনপির কর্মীসভা অনুষ্ঠিতইয়ুথ ফর দি সুন্দরবন এর আহ্বায়ক হলেন কর্ণ বিশ্বাস কেডি

আসাদুজ্জামান: সাতক্ষীরা জেলাব্যাপী পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৩৩ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে নাশকতাসহ বিভিন্ন অভিযোগে Atokমামলা রয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত জেলার আটটি থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতদের মধ্যে, সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে ১২ জন, কলারোয়া থানা থেকে ০৯ জন, তালা থানা ০৩ জন, কালিগঞ্জ থানা ০২ জন, শ্যামনগর থানা ০২ জন, আশাশুনি থানা ০২ জন, দেবহাটা থানা ০২ জন ও পাটকেলঘাটা থানা থেকে ০১ জনকে আটক করা হয়।
সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে নাশকতাসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

photo-1472149375আশির দশকের কোনও এক সময়ে আমি আমেরিকা থেকে দেশে বেড়াতে এসেছি। রিকশায় করে কোনও এক জায়গায় গিয়ে আমি রিকশা থেকে নেমে মানিব্যাগ থেকে একটা দশ টাকার নোট রিকশাওয়ালাকে দিয়ে হাঁটতে শুরু করেছি, তখন শুনলাম পেছন থেকে রিকশাওয়ালা আমাকে ডাকলেন। ঘুরে তাকিয়ে দেখি রিকশাওয়ালা লাল রঙের দশ টাকার নোটটা দুই হাতে ধরে সেটার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। আমাকে বলল, স্যার, এইটা কী দিলেন? এই নোট তো বাংলাদেশে চলে না।
ছিয়াত্তরে দেশ ছেড়ে যাওয়ার সময় মানিব্যাগে দেশের কিছু নোট ছিল, সেই নোট এতদিন ব্যবহার করা হয়নি। মানিব্যাগ থেকে সেই নোট বের করে রিকশা ভাড়া দিয়েছি—আমি জানতাম না এই দেশে নোটগুলো অচল হয়ে গেছে। নোটগুলোর দোষ কী? দোষ একটাই সেই নোটে বঙ্গবন্ধুর ছবি। পঁচাত্তরে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর এই দেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর শেষচিহ্নটিও মুছে ফেলার জন্যে যে বিশাল আয়োজন শুরু হয়েছিল আমি সেটা তখনও সেভাবে জানতাম না।
আমি চুরানব্বইয়ের শেষে পাকাপাকিভাবে দেশে ফিরে এসেছি। তখনও রেডিও-টেলিভিশনে বঙ্গবন্ধুর কোনও উপস্থিতি নেই। স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুকে দেখানো হয় না, এই দেশের মানুষ, ছেলেমেয়ে, ছাত্রছাত্রীরা হয়তো বঙ্গবন্ধুর চেহারা কেমন সেটাও জানে না। আমি অবাক হয়ে দেখি এটা কী হয়ে গেল দেশের?
তখন ছিয়ানব্বইয়ের নির্বাচন হলো, একুশ বছর পরে প্রথমবার আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসেছে। নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর আমি আমার স্ত্রীকে বললাম, ‘চলো দোকান থেকে একটা টেলিভিশন কিনে আনি, এখন টেলিভিশনে বঙ্গবন্ধুকে দেখাবে। আমি আর আমার স্ত্রী একজন সহকর্মীকে নিয়ে দোকান থেকে একটা টেলিভিশন কিনে আনলাম। বাসায় এসে সেই টেলিভিশন অন করা হলো এবং সত্যি সত্যি আমরা প্রথমবার টেলিভিশনে বঙ্গবন্ধুকে দেখতে পেলাম। একটি দেশ আর একটি মানুষ সমার্থক হতে পারে কিনা জানি না, বাংলাদেশ আর বঙ্গবন্ধুর বেলায় সেটি কিন্তু হয়েছিল। অথচ সেই বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রযন্ত্র একদিন নয়, দু’দিন নয় একুশ বছর সকল প্রচারমাধ্যম থেকে সরিয়ে রেখেছিল। নিজের চোখে দেখেও সেটা বিশ্বাস হয় না। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার মতো নৃশংস ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে খুব বেশি নেই। কিন্তু দেশের স্থপতিকে সেই দেশের মানুষের কাছ থেকে আড়াল করে রাখার মতো ঘটনাও কি পৃথিবীতে খুব বেশি আছে? বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিয়েই ঘাতকদের কাজ শেষ হয়নি। এই দেশের মাটি থেকে তার স্মৃতি পুরোপুরি মুছে ফেলে তাদের দায়িত্ব শেষ হবে। যারা ট্রিগার টেনে গুলি করেছে শুধু তারাই ঘাতক, অন্যরাও কি অন্য রকম ঘাতক নয়?
শেষবার আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর পাঠ্যবইগুলো থেকে ইতিহাস বিকৃতি দূর করার জন্য যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আমিও তাদের মাঝে ছিলাম। আমি তখন একসঙ্গে আমাদের স্কুল-কলেজের সব পাঠ্যবই দেখার সুযোগ পেয়েছিলাম। আমরা সবাই মিলে পাঠ্যবই থেকে ইতিহাস নিয়ে বিচিত্র এক ধরনের মিথ্যাচারকে সরিয়ে সঠিক ইতিহাসগুলো বসিয়েছি। মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় কথাগুলো লিখেছি, হানাদার বাহিনী যে আসলে পাকিস্তানের মিলিটারি সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছি, বঙ্গবন্ধু ছাড়া যে বাংলাদেশের জন্ম হতো না সেটা সবাইকে জানিয়েছি। মনে আছে এরপর একটা সময় গিয়েছে যখন ছেলেমেয়েগুলো এক ধরনের বিভ্রান্তিতে ভুগেছে। এতদিন একটা বিষয় জেনে এসেছে, এখন অন্য বিষয় জানছে। আসলে কোনটা সত্য? মাঝে মাঝেই তারা জিজ্ঞেস করতো, ‘স্যার স্বাধীনতার ঘোষক কে?’
এরপর অনেকদিন পার হয়েছে, পাঠ্যবইগুলো অনেকবার পড়া হয়েছে। রেডিও-টেলিভিশনে বঙ্গবন্ধুর কথা শুনছে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানছে এবং শেষ পর্যন্ত আমরা হয়তো এই দেশের ছেলেমেয়েদের বিভ্রান্তি দূর করতে পেরেছি। ইদানীং আর কেউ আমার কাছে স্বাধীনতার ঘোষক কে সেটি জানতে চায় না।
২.
আগস্ট মাস বাংলাদেশের জন্য একটা অশুভ মাস। ১৯৭৫ সালে এ মাসের ১৫ তারিখ বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারীরা সেখানেই থেমে যায়নি, জেল-হত্যা করে আওয়ামী লীগকে পুরোপুরি নেতৃত্বশূন্য করার চেষ্টা করেছিল। অনেক বছর সময় নিয়ে যখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ আবার পুনর্গঠিত হয়েছে তখন ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আবার আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার চেষ্ট করেছে। শেখ হাসিনা অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছেন এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি শুধুমাত্র সে কারণেই আমরা বাংলাদেশের মাটিতে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার করতে পেরেছি। আগস্ট মাস ছাড়াও এই দেশে বোমা হামলা হয়েছে— সিপিবি’র মিটিংয়ে, উদীচীর অনুষ্ঠানে কিংবা ছায়ানটের নববর্ষের অনুষ্ঠানে। তবে সেগুলো কোনও নির্দিষ্ট মানুষকে লক্ষ্য করে হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের বড় নেতাদের হত্যা করার ঘটনা দুটিই ঘটেছে আগস্ট মাসে।
আগস্ট মাস অন্য যেকোনও মাসের মতোই নিরীহ একটা মাস হতে পারত কিন্তু সেটি হয়নি। লক্ষ্য ঠিক করে হত্যাকাণ্ডগুলো কেন বেছে বেছে আগস্ট মাসে ঘটানো হয় সে ব্যাপারে আমার নিজের এক ধরনের থিওরি আছে। বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে ঘাতক রাষ্ট্র পাকিস্তানকে পরাজিত করে। পরাজয়ের সেই অপমান পাকিস্তান যেরকম ভুলতে পারেনি, ঠিক সেরকম ভুলতে পারেনি পাকিস্তানের পদলেহী যুদ্ধাপরাধীরা। তাই তারা যখন বাংলাদেশের ওপর আঘাত হানতে চায়, তখন বেছে নিতে চায় পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসটিকে। সেটি সম্ভব না হলে অন্তত পাকিস্তানের জন্ম মাসটিকে! সেজন্য নিরীহ একটা মাস এই দেশের জন্য অশুভ একটা মাস হিসেবে চিরদিনের জন্য চিহ্নিত হয়ে গেল।
১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের কারণে আমরা মানুষের চরিত্রের আরও বিচিত্র দিকগুলো নিজের চোখে দেখার সুযোগ পেয়েছি। কথা নেই বার্তা নেই হঠাৎ একদিন আমরা সবিস্ময়ে আবিষ্কার করলাম খালেদা জিয়া এই দিনটিতে তার জন্মদিনের উৎসব পালন করতে শুরু করেছেন। শুধু তাই নয়, তার দলের লোকজন মিলে বিশাল বিছানার মতো সাইজের কেক কাটতে শুরু করেছেন! যাদের সত্যি সত্যি ১৫ আগস্ট জন্মদিন তারাও এই দিনটিতে জন্মদিনের উৎসব পালন করতে সংকোচ বোধ করেন। আমি কয়েকদিন আগে একটা ছোট্ট বাচ্চার চিঠি পেয়েছি। বাচ্চাটি আমার কাছে জানতে চেয়েছে ১৫ আগস্ট তার জন্মদিন, এই দিনটিতে তার জন্মদিন পালন করা ঠিক হবে কি না! একটি ছোট বাচ্চা যে বিষয়টি বুঝতে পারে, খালেদা জিয়া এবং তার দলের শত শত নেতা সেই বিষয়টি বুঝতে পারেন না—এর চাইতে দুঃখের ব্যাপার আর কী হতে পারে? বেঁচে থাকতে হলে আমাদের নানা কিছু দেখতে হয়, শুনতে হয় কিন্তু যে দিনটিতে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে সেই দিনটিতে নতুন করে জন্মদিন তৈরি করে বিছানার মতো সাইজের কেক কাটার মত কুরুচিপূর্ণ কিছু আমি আমার জন্মে দেখিনি। মনে হয় ভবিষ্যতেও কোনও দিন দেখব না।
বহু বছর পর এইবার খালেদা জিয়ার ‘জন্মদিনে’ বিছানার সাইজের কেক কাটা হয়নি। খবরটা শুনে আমি ভেবেছিলাম শেষ পর্যন্ত তাদের রাজনৈতিক দলটির সুমতি হয়েছে। কিন্তু পুরো খবরটা পড়ে জানতে পারলাম দেশে বন্যা, জঙ্গি হামলা, গুম, খুন, রাজনৈতিক নির্যাতন এসব চলছে বলে এই বছর উৎসবটি পালন করা হচ্ছে না। যার অর্থ বন্যার পানি নেমে গেলে, জঙ্গি হামলা না থাকলে গুম, খুন, নির্যাতন বন্ধ হয়ে গেলে ১৫ আগস্ট বিছানার মতো বড় কেক কাটতে কোনও বাধা নেই!
৩.
আমি মোটেও রাজনৈতিক বিশ্লেষক নই, রাজনীতির মারপ্যাঁচ আমার পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। কিন্তু পৃথিবীর অন্য অনেক কিছুর মতোই রাজনীতিতেও কমনসেন্স আছে এবং শুধু এই কমনসেন্স দিয়ে বুঝতে পারি মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করে এই দেশে কেউ রাজনীতি করতে পারবে না। যে জামায়াতে ইসলামী সরাসরি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে সেই জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোট করে বিএনপি নির্বাচনে জিতে এসে সরকার গঠন করেছিল। সেটি ছিল একটা খুবই বিপজ্জনক সময়—একজন বিএনপি নেতার কাছে শুনেছি সেই সময়ে রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা সরকারের কাছে তাদের একাত্তর সালের বকেয়া বেতন দাবি করেছিল! জামায়াত বিএনপি সরকার তাদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করেছিল কিনা আমার জানা নেই। সেই ভয়াবহ সময়টা আমরা পার করে এসেছি, ভবিষ্যতে যেন ভুল করেও এই দেশে এরকম ঘটনা আবার ঘটে না যায় সেটা আমাদের নিশ্চিত হওয়া দরকার। আমি বড় বড় সুশীল ব্যক্তিদের ‘গণতন্ত্র’ ‘গণতন্ত্র’ বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলতে দেখি কিন্তু সেই গণতন্ত্রটি যে হতে হবে বাংলাদেশের গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের গণতন্ত্র সেটি কাউকে বলতে দেখি না। এই দেশটি তো আমরা লটারির টিকেট কিনে কিংবা জুয়া খেলে পাইনি! রীতিমতো যুদ্ধ করে রক্ত দিয়ে পেয়েছি। কাজেই যে উদ্দেশ্য নিয়ে যুদ্ধ করা হয়েছে, রক্তের বন্যা বইয়ে দেওয়া হয়েছে সেই উদ্দেশ্যটি ভুলে গিয়ে রাজাকারদের বকেয়া বেতন দেওয়ার একটা সরকার তৈরি করার জন্য গণতন্ত্র চাইলে তো হবে না! অবশ্যই আমরা গণতন্ত্র চাই কিন্তু সেই গণতন্ত্রে সরকার গঠনের দলটিকে হতে হবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের এবং বিরোধী দলটিকেও হতে হবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের। নির্বাচনের সময় আমরা রাতে শান্তিতে ঘুমাতে চাই যেন সকালে উঠে কে নির্বাচনে জিতেছে সেটা নিয়ে আমাদের কোনও দুর্ভাবনা না থাকে। যেই সরকার গঠন করবে তাকেই হতে হবে আমাদের বাংলাদেশের সরকার, মুক্তিযুদ্ধের সরকার।
এই দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আমাদের আরও একটা বিষয় নিশ্চিত করার ব্যাপার আছে। সেটি হচ্ছে বঙ্গবন্ধুকে তার প্রাপ্য সম্মান এবং ভালোবাসাটুকু দেওয়া। পৃথিবীর কত দেশে কতো জাতীয় নেতা আছেন। তাদের দেশের মানুষ সেই জাতীয় নেতাদের সম্মান করে নিজেরা সম্মানিত হয়। পৃথিবীর সেইসব নেতার সঙ্গে যদি বঙ্গবন্ধুর তুলনা করি তাহলে অবাক বিস্ময়ে আবিষ্কার করব আমাদের বঙ্গবন্ধুর তুলনায় তাদের অনেকের অবদান রীতিমত ম্লান। সারা পৃথিবীর মাঝে একজন সর্বশ্রেষ্ঠ নেতা হচ্ছেন ফিদেল কাস্ত্রো, তিনি প্রথমবার বঙ্গবন্ধুকে দেখে তাকে জড়িয়ে ধরে বলেছিলেন: ‘আমি হিমালয়কে দেখিনি, কিন্তু শেখ মুজিবকে দেখেছি!’
এই হিমালয়কে আমাদের সারা পৃথিবীর সামনে তুলে ধরার কথা অথচ আমরা শিহরিত হয়ে আবিষ্কার করি তাকে যে শুধু সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে তা নয়, হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করা হয়েছে, বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে তার সব স্মৃতি সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কাজেই আমি মনে করি বাংলাদেশে রাজনীতি করতে চাইলে শুধু যে মুক্তিযুদ্ধকে বিশ্বাস করতে হবে তা নয়, বঙ্গবন্ধুকে তার প্রাপ্য সম্মান দিতে হবে। তার কারণ বাংলাদেশ আর বঙ্গবন্ধু আসলে সমার্থক দুটি শব্দ। বঙ্গবন্ধুকে ভালো না বেসে বাংলাদেশকে ভালোবাসা যায় না।
৪.
বঙ্গবন্ধুকে দেখার জন্যে যে টেলিভিশনটি কেনা হয়েছিল সেটি সিলেটে আমার বাসায় নেই, তাই এখন টেলিভিশন দেখা হয় না, সেটি অনেকেই জানে। টেলিভিশনে দেখার মতো কিছু থাকলে অনেকেই তার একটি লিংক পাঠায়। সেদিন একজন চ্যানেল আইয়ে কর্নেল অলি আহমদের সাক্ষাত্কারের একটা লিংক পাঠিয়েছে। লিংকে পুরো সাক্ষাত্কারটি নেই, সাক্ষাত্কারের মাঝখানে একটি মেয়ের টেলিফোনে কর্নেল অলি আহমদকে উদ্দেশ্য করে বলা কিছু প্রশ্ন, কিছু কথাবার্তা আছে। আমার মনে হয় সবারই এই মেয়েটির কথাগুলো শোনা উচিত। তার কণ্ঠস্বর শুনে তাকে কমবয়সী একজন তরুণী মনে হয়েছে; কিন্তু সে এত চমত্কারভাবে এতটুকু উত্তেজিত না হয়ে এত গুছিয়ে কথাগুলো বলেছে যে আমি মুগ্ধ হয়ে শুনেছি। আমি যদি তার বক্তব্যটুকু এখানে লেখার চেষ্টা করি তার মতো গুছিয়ে পরিষ্কারভাবে লিখতে পারব না, তাই তার চেষ্টাও করছি না।
মেয়েটির বক্তব্য শুনে বুঝতে পারলাম কর্নেল অলি আহমদ এই সাক্ষাৎকারে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে দাবি করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরবিক্রম উপাধি পাওয়া কর্নেল অলি আহমদের প্রতি পুরো সম্মান বজায় রেখে মেয়েটি তাকে অনুরোধ করেছে নির্জলা মিথ্যা বলে নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত না করার জন্যে। বঙ্গবন্ধু কবে কিভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, সেটি কিভাবে প্রচারিত হয়েছে নিউইয়র্ক টাইমসের কোন সংখ্যায় সেই ঘোষণাটির কথা ছাপা হয়েছে, মেয়েটি অলি আহমেদকে জানিয়েছে। শুধু তাই নয়, জিয়াউর রহমান ২৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণাটিতে কী বলেছেন, মেয়েটি গড়গড় করে সেটি বলে শুনিয়ে দিয়েছে। সেখানে ঘোষণাটি যে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে দেওয়া হয়েছিল সেটি মনে করিয়ে দিয়েছে, শুধু তাই নয়, ঘোষণা দেওয়া আর ঘোষণা পাঠ করার মাঝে যে দিন-রাত পার্থক্য সেটি পরিষ্কারভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে।
মেয়েটি কর্নেল অলি আহমদকে প্রশ্ন করেছে, সত্যিই যদি মেজর জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে থাকেন তাহলে সেটি কেন তারা ১৯৭২ সালে যখন স্বাধীনতার দলিলপত্র সংকলিত করা হয়েছে সেখানে বললেন না, কিংবা যখন সংবিধান লেখা হয়েছে তখন জানালেন না। কেন সেটি ১৯৯১ থেকে শুরু হলো?
আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে যখন মেয়েটি বিস্ময়কর আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলেছে আমরা নতুন প্রজন্মের মানুষ, স্বাধীনতার সব তথ্য আমাদের হাতের মুঠোয়—আমরা সব জানি! শুধু তাই নয়, কমবয়সী একটি মেয়ে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদকে উপদেশ দিয়ে বলেছে, আপনারা রাজনীতি করতে চান করুন, সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে রাজনীতি করুন, কেন আপনারা বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করতে চান?
আমি আগেই বলেছি আমি শত চেষ্টা করলেও এই নতুন প্রজন্মের তরুণীটির মতো করে বলতে পারব না। শুধু এইটুকু বলব যে, এই নতুন প্রজন্মকে দেখে, তাদের কথা শুনে মনে হয়েছে তাদের হাতে আমরা নতুন বাংলাদেশের দায়িত্ব দিয়ে পরম নির্ভরতায় বিশ্রাম নিতে পারি।
নতুন প্রজন্মকে আমি এতদিন শুধু ভালোবাসা জানিয়ে এসেছি, এখন আমি তাদের শ্রদ্ধাও জানাতে চাই!

লেখক: কথাসাহিত্যিক, শিক্ষক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

238321_1স্বাভাবিক খাবার না খেলেই মানুষ সাধারণত বাঁচে না। তবে এবার ঘটেছে অন্যরকম এক ঘটনা। ভারতের বেঙ্গালুরুর এক যুবক কিন্তু এই অদ্ভুত দাবিই করছেন। তিনি বলছেন, ১৫ বছর ধরে স্রেফ পোড়া ইঞ্জিন অয়েল এবং কাগজের ছাই খেয়ে বেঁচে আছেন তিনি।

ওই ব্যক্তির নাম কুমার। স্থানীয়দের কাছে অয়েল কুমার নামে তিনি পরিচিত। বাড়ি কর্নাটকের শিমোগায়। তার বক্তব্য, তিনি যখন খুব ছোটো, তখন বাবা-মা তাকে বেঙ্গালুরু স্টেশনে ফেলে পালান। এখন কোলার এলাকার শনিশ্বর মন্দিরের কাছে তিনি থাকেন।

কুমার জানিয়েছেন, একটা সময় বেঙ্গালুরুতে কুলির কাজ করতেন তিনি। যার অধীনে তিনি কাজ করতেন, বহুদিন কুমারকে টাকাপয়সা দেননি তিনি। একটা সময় খিদের জ্বালায় পোড়া ইঞ্জিন অয়েল খেতে তিনি বাধ্য হন। সেই শুরু। পরে শুরু করেন কাগজ পোড়ার ছাই খাওয়া। প্রথমে তার শরীরে অদ্ভুত একটা কষ্ট হত বলে জানিয়েছেন কুমার। তবে এখন তা সয়ে গেছে। এখন গোটা দিনে লিটার পাঁচেক পোড়া ইঞ্জিন অয়েল খেয়ে নিতে পারেন কুমার।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাবার না খেয়ে একজন মানুষ মোটামুটি সপ্তাহ তিনেক বেঁচে থাকতে পারে। তারপর তার বাঁচা মুশকিল।

কুমার জানিয়েছেন, সবটাই ভগবানের আশীর্বাদ। তার হাত মাথায় না থাকলে এভাবে কিছুতেই বাঁচতে পারতেন না তিনি।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

191685.2খেলাধু‌লো: রাজধানীর গুলশানে স্প্যানিশ রেস্তোরাঁ হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার ঘটনায় বাংলাদেশ সফরের নিরাপত্তা নিয়ে দ্বিধায় ছিল ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল! বাংলাদেশে সিরিজ খেলতে আসার বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলবে বলেও জানিয়েছিল তাঁরা। তখনই অনিশ্চয়তা তৈরি হয় ইংল্যান্ড বাংলাদেশ সফরে আসবে কিনা।

তাই বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গত ১৭ আগস্ট ঢাকায় আসে ইংল্যান্ডের নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রতিনিধিদল। তিন সদস্যের দলটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে গত ২০ অগস্ট ঢাকা ছেড়ে যায়।

শেষ পর্যন্ত সব শঙ্কা কেটে গেছে। বাংলাদেশ সফরে আসছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল। ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) নিশ্চিত করেছে, ইংল্যান্ডের বাংলাদেশ সফর পরিকল্পনা মতোই এগিয়ে যাবে। বৃহস্পতিবার রাতে ইএসপিএন-ক্রিকইনফো জানিয়েছে খবরটি। 

এদিন রাতে ইংল্যান্ড টেস্ট দলের অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক এউইন মরগান, ইসিবির ক্রিকেট পরিচালক অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস, ইসিবির প্রধান নির্বাহী টম হ্যারিসন এক সভায় বসেন। সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ডেভিড ল্যাথারডেল ও জন কারও। সভায় বাংলাদেশ সরকারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত জানান রেগ ডিকাসন।

সভা শেষে অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস বলেন, ‘ইংল্যান্ডের বাংলাদেশ সফর পরিকল্পনা মতোই এগিয়ে যাবে।’ অবশ্য সিরিজের শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখবে তারা।

দুটি টেস্ট ও তিনটি ওয়ানডে খেলতে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফরে আসার কথা। দিন-তারিখও ঠিক হয়েছে। ৭ ও ৯ অক্টোবর মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে প্রথম দুটি ওয়ানডে ম্যাচ। তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচটি হবে ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামে।

এরপর ২০ থেকে ২৪ অক্টোবর চট্টগ্রামে প্রথম টেস্ট এবং ঢাকায় ২৮ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর দ্বিতীয় টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

Palokআসাদুজ্জামান: কালিগঞ্জে শিক্ষকের ফরমায়েস মতো পাম্প থেকে পেট্রোল আনতে না পারায় মারপিটের শিকার হয়েছে চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্র। একইভাবে ওই শিক্ষকের নির্যাতনের শিকার হয়েছে ছাত্রটির সহপাঠি ফুফাতো ভাইও। এ ঘটনা জানিয়ে একজন অভিভাবক উপজেলা শিক্ষা অফিসে অভিযোগও দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
তবে নির্যাতনকারী শিক্ষক কামরুল ইসলাম  মারপিটের কথা স্বীকার করে বলেন ‘ঘটনাটি মিটমাট করে নেওয়া হয়েছে।  আমি তাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম হেড স্যারকে সাথে নিয়ে’।
অপরদিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক পরিমল রায় বলেন ‘ পেট্রোল কেনার কোনো ঘটনা ঘটেনি। তাছাড়া বুধবার আমার স্কুলে সংরক্ষিত ছুটি ছিল। কি ঘটেছে জানিনা । তবে ছেলেটির অভিভাবক বলেছেন শনিবার স্কুলে এসে সব মিটিয়ে নেবো’।
কালিগঞ্জের নারায়নপুর গ্রামের অভিভাবক আবদুল হান্নান জানান তার ছেলে হাসিবুল হোসেন পলক ও ভাগনে আল যুবায়ের রাকিব উত্তর কালিগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। তিনি অভিযোগ করে বলেন বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক কামরুল ইসলাম মঙ্গলবার তার ছেলেকে এক লিটারের দুটি বোতল  দিয়ে এক কিলোমিটার দুরে কালিগঞ্জ পেট্রোল পাম্প থেকে  তার মোটর সাইকেলের জন্য পেট্রোল আনতে পাঠান। বৃষ্টির মধ্যে ভিজতে ভিজতে ছেলেটি সাইকেলে পাম্পে গেলে সে  শিশু হওয়ায়  পাম্প কর্তৃপক্ষ তাকে পেট্রোল দেয়নি। পরে সে বাজারের  একটি দোকান থেকে পেট্রোল কিনে নিয়ে আসে। এতে ওই শিক্ষক  প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হয়ে বুধবার তাকে মারপিট করেন। তার দেহের বিভিন্ন স্থানে কাটা  ও ফোলা দাগ হয়ে যায়। এতে তার ছেলে জ্বরে আক্রান্ত হয়। আবদুল হান্নান আরও অভিযোগ করেন যে এ বিষয়ে জানতে চেয়ে শিক্ষক কামরুল ইসলামকে ফোন করা হলে তিনি বলেন ‘ প্রয়োজনে আপনার ছেলেকে ওষুধ কেনার টাকা দিয়ে দেবো ’ । তিনি জানান পরে বিষয়টি লিখিত অভিযোগ হিসাবে কালিগঞ্জ উপজেলা  প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে দেওয়া হয়েছে । ভারপ্রাপ্ত  শিক্ষা অফিসার ফারুক হোসেন বিষয়টি তদন্তের জন্য দিন নির্ধারন করেছেন।
আবদুল হান্নান আরও বলেন শুধু তার ছেলে নয় তার ভাগনে একই শ্রেণির ছাত্র আল যুবায়ের রাকিবকেও বেধড়ক মারপিট করেছেন ওই শিক্ষক। রাকিবের মা রোকেয়া খাতুন জানান তার ছেলে রাকিব শিক্ষকের মারের যন্ত্রনা লাঘবে রোজই দুটি করে মোটা কপড়ের প্যান্ট পরে স্কুলে  যায়। তিনি জানান বিষয়টি সম্পর্কে তার কাছে জানতে গিয়েই তিনি তার ওপর দৈনিক দৈহিক নির্যাতনের তথ্য জানতে পারেন ।  তার ছেলের দেহের বিভিন্ন স্থানে কাটা  ও ফোলা দাগ রয়েছে। সে ভয়ে স্কুলে যেতে চায়না । আহত হাসিবুল ইসলাম পলক কালিগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক কামরুল ইসলাম বলেন ‘ আমার জন্য নয়, হেড স্যারের জন্য পেট্রোল আনতে পাঠানো হয়েছিল। তা ছাড়া ছেলে দুটি খুবই বেয়াদবি করে । তাই মারধর করেছি । কিন্তু সেতো মিটে গেছে’। এ ব্যাপারে  কালিগঞ্জ উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. ফারুক হোসেন জানান তিনি এ ঘটনার  দ্রুত তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য ক্লাস্টার কর্মকর্তা সহকারি শিক্ষা অফিসার প্রভাত কুমার রায়কে নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্তে অভিযোগ প্রমানিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে নির্যাতিত ছাত্র  হাসিবুল হোসেন পলকের মা পলি খাতুন জানান ‘ আমার বাড়িতে প্রধান শিক্ষক পরিমল কুমার ও শিক্ষক কামরুল ইসলাম এসেছিলেন। তারা বলেছেন আপনার বাড়িতে আজ দুই জন শিক্ষক আসায় আপনার বাড়ির মাটি ধন্য হয়ে গেছে । তবে একটু মার হয়তো বেশি হয়ে গেছে। আপনারা শনিবার ছেলেকে নিয়ে স্কুলে  আসেন , একটা মিটমাট করে নেওয়া যাবে’।
প্রধান শিক্ষক পরিমল কুমার রায় জানান ‘ আমি এ ব্যাপারে কিছু জানিনা। তবে পেট্রোল কেনার কোনো ঘটনা নেই। মারপিটের খবর  শুনে পলকদের  বাড়ি গিয়েছিলাম। ওরা বলেছেন শনিবার এসে নিজেরাই মিটিয়ে নেবেন’।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

Tala Picture 24.08.16সেলিম হায়দার, ডেইলি সাতক্ষীরা: চারপাশে থই থই পানি। পানিতে ডুবে গেছে স্কুল। তারপরও মাঝা (কোমর) সমান জল ঠেলে (ভেঙ্গে) স্কুলে গেছি। এখন আর যেতে পারিনে। রাস্তার পরে স্কুল করতে হয়। ডেইলি সাতক্ষীরাকে এভাবেই বলছিলো সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র সবুজ ম-ল। পানিতে তলিয়ে গেছে সবুজের বাড়িসহ আশপাশের এলাকা।
কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও উজানের পানির চাপে তালা উপজেলার প্রায় ৬০টি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ ও শ্রেণিকক্ষ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় পাঠদানের পরিবেশ নেই। পানিবন্দি হওয়ায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠাতেও নিরুৎসাহিত করছেন অভিভাবকরা। ফলে, ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম।
২৫ আগস্ট সকালে সরেজমিনে খরাইল-ভবানীপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কে দুই ধারে পানি ছুঁই ছুঁই অবস্থা। আবার মানুষের বাড়ির ভেতরে পানি। বাড়িতে যাতায়াতের জন্য কেউ বানিয়েছে কলা গাছের ভেলা, কেউ বানিয়েছে ডোঙ্গা। কেউবা বাঁশ দিয়ে রাস্তা থেকে বাড়ির উঠান পর্যন্ত সাঁকো তৈরি করে নিয়েছে। এভাবে চলাচল করতে হচ্ছে প্লাবিত এলাকার মানুষের।
খরাইল দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ভূমিকা ম-ল  ডেইলি সাতক্ষীরাকে বলে,‘স্কুলে যাবো কি করে। চারদিকে জল। জলের ভয়ে বাবা-মা স্কুলে যেতে দিতে চায় না। স্যাররা বর্তমানে রাস্তার উপর ক্লাস করাচ্ছে।‘ একই ধরণের বক্তব্য ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী জয়শ্রী ম-লের।
বিদ্যালয়ের অভিভাবক ননী গোপাল ম-ল  ডেইলি সাতক্ষীরাকে জানান, এক মাস ধরে এলাকা পানিতে তলিয়ে আছে। মানুষ চলাচল করতে পারছে না, সেখানে বাচ্চার কিভাবে চলবে। কষ্টের মধ্যেও তারা স্কুল করছে।
খরাইল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ জাকির হোসেন  ডেইলি সাতক্ষীরাকে জানান, বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ৮২ জন ছাত্র-ছাত্রী আছে। গত একমাস ধরে বিদ্যালয়টি পানিতে তলিয়ে আছে। পানির মধ্যে ছাত্র-ছাত্রী ক্লাস করলেও গত ১৫ দিন ধরে সড়কের উপর ক্লাস করছে।
তালা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. অহিদুল ইসলাম  ডেইলি সাতক্ষীরাকে জানান, উপজেলার ৩০ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানিতে তলিয়ে আছে। বিদ্যালয়ে পাঠদান করতে না পারায় পার্শ্ববর্তী উঁচু স্থানে পাঠদান চলছে শিক্ষার্থীদের। তবে, কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি।
তালা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আতিয়ার রহমান ডেইলি সাতক্ষীরাকে জানান, উপজেলার ১৬টি মাদ্রাসা ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছাড়া চারটি কলেজসহ ২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শ্রেণিকক্ষে এবং মাঠে পানি থাকায় পাঠদানে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে অনেক বিদ্যালয়।
তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফরিদ হোসেন  ডেইলি সাতক্ষীরাকে জানান, এলাকায় কমবেশি পানি উঠেছে। তবে বর্তমানে পানি কমতে শুরু করেছে।
তালা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার  ডেইলি সাতক্ষীরাকে জানান, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। মানুষ খুব কষ্টের মধ্যে বসবাস করছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

DSC00486মাহফিজুল ইসলাম আককাজ: হিন্দু ধর্মের প্রবর্তক ও মহাবতার পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃেষ্ণর শুভ জন্মদিন জন্মাষ্টমী উপলক্ষে শোভা যাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ সাতক্ষীরা জেলা শাখার আয়োজনে শহরের পুরাতন সাতক্ষীরাস্থ জেলা মন্দির প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি মনোরঞ্জন মুখার্জী’র সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সদর-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। এ সময় তার বক্তব্যে বলেন, শ্রীকৃষ্ণ বিশৃঙ্খল ও অবক্ষয়ীত মূল্যবোধের সময়ে পৃথিবীতে মানব প্রেমের অমিত বাণী প্রচার ও প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। শ্রীকৃষ্ণ সৃষ্টের পালন ও দুষ্টের দমনে ব্রতী ছিলেন। সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তাই ভগবানের আসনে অধিষ্ঠিত শ্রীকৃষ্ণ। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী। আওয়ামীলীগ সরকার যখন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকে তখন সকল ধর্মের মানুষেরা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করতে পারে। মহান স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার মানুষকে ভালবেসে বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করে গেছেন। তাকে যারা হত্যা করেছে তাদের প্রেতাত্মরা আজো বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা ও দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের রুপকার জননেত্রী শেখ হাসিনা এ দেশের মানুষের ভাগোন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এ উন্নয়নের অগ্রযাত্রা কোন ষড়যন্ত্র রুখতে পারবেনা। বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিতে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে এবং সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে স্বাধীনতা বিরোধী জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ প্রশাসক মুনসুর আহমেদ, জেলা পুলিশ সুপার মো. আলতাফ হোসেন, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান বাবু, জেলা মন্দির কামটি’র সভাপতি মঙ্গল কুমার পাল, জেলা জয় মহাপ্রভু সেবক সংঘের সভাপতি বিশ্বনাথ ঘোষ, হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের সহকারী পরিচালক লিটন শিকদার, জেলা কৃষকলীগের সভাপতি বিশ্বজিৎ সাধু, পূজা উদ্যাপন কমিটির আহবায়ক নয়ন কুমার সানা ও প্রাণনাথ দাস প্রমুখ। এসময় ভোমরা ইউনিয়নের লক্ষীদাঁড়ী এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পক্ষে প্রস্তাবিত ভূমি অধিকরণ প্রসঙ্গে একটি স্বারকলিপি পেশ করা হয়। স্বারকলিপিতে উল্লেখ আছে, বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃক বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ভূমি অধিগ্রহণের কর্ম পরিকল্পনা হয়েছে এবং ম্যাপও করা হয়েছে। প্রস্তাবিত স্থান পরিবর্তনের দাবিতে এ স্মারকলিপি প্রদান করেছে এলাকাবাসী। আলোচনা সভা শেষে পুরাতন সাতক্ষীরা জেলা মন্দির প্রাঙ্গণ থেকে শ্রীকৃেষ্ণর শুভ জন্মদিন জন্মাষ্টমী উপলক্ষে একটি বর্ণাঢ্য শোভা যাত্রা বের হয়ে শহর প্রদক্ষিণ শেষে কাটিয়া সদর সার্বজনীন মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জেলা মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক এড. অনিত মুখার্জী।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

DSC00496নিজস্ব প্রতিবেদক: সনাতন ধর্মালম্বীদের পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ৫২৪২তম শুভ আবির্ভাব তিথী উদযাপন উপলক্ষ্যে সাতক্ষীরায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ পুজা উদযাপন পরিষদ ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্ট,সাতক্ষীরা শাখার আয়োজনে বৃহস্পতিবার দুপুরে বর্ণাঢ্য র‌্যালিটি বাদ্য-বাজনা সহকারে মায়ের বাড়ী মন্দির থেকে বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে নারকেলতলাস্থ পুজা মন্দিরে শেষ হয়। উৎসবমুখর পরিবেশে উক্ত র‌্যালিতে অংশ নেন, পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মনোরঞ্জন মুখার্জি, সাধারণ সম্পাদক এড. অনীত মুখার্জী, যুগ্ন সম্পাদক অসীম চক্রবর্তীসহ সহ¯্রাধিক ভক্ত।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest