সর্বশেষ সংবাদ-
সাতক্ষীরায় জাতীয় ঐক্যমত গঠনের প্রক্রিয়ায় অংশীজনের মতামত শীর্ষক মতবিনিময়আশাশুনিতে টানা বৃষ্টিপাতে ভয়াবহ জলাবদ্ধতাআশাশুনিতে জুলাই শহীদদের স্মৃতি স্মারক স্থাপন স্থান পরিদর্শনে জেলা প্রশাসকসাতক্ষীরা সদর উপজেলা ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির কমিটি গঠনসাংবাদিক গাজী মোক্তার হোসেনের মৃত্যুতে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের শোকছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান দিবসসমূহ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনে সাতক্ষীরায় সভাপণ্যগ্রাফি নিয়ন্ত্রন আইনের মামলার আসামীদের গ্রেফতারের দাবিতে প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দের বিবৃতিসাতক্ষীরায় গৃহবধু গণধর্ষণের মামলার আসামী গ্রেপ্তারআশাশুনি বাজারের পাশে বসবাসকারীরা নদী ভাঙ্গনে উদ্বিগ্ন: ইউএনওর পরিদর্শণসাতক্ষীরায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলায় ৩৩ জনের জামিন

ছাত্রলীগের কেন্দ্র থেকে জেলা সর্বত্র সংস্কার চান শেখ হাসিনা, কমিটি চূড়ান্তের পথে

রাজনীতির সংবাদ: ঐতিহ্যবাহী ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলনে শেষ হলেও কমিটি ঘোষণা হয়নি। কাউন্সিল অধিবেশনে ছাত্রলীগের গঠনতান্ত্রিক সাংগঠনিক নেত্রী শেখ হাসিনার ওপর নেতৃত্ব বাছাইয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়। ওই সময় দুই-একদিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নতুন কমিটি ঘোষণা করবেন বলা হলেও দুই সপ্তাহ পেরিয়ে তা ঘোষিত হয়নি। কমিটি গঠনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর সতর্কতা অবলম্বনই এই বিলম্বের কারণ। কমিটির প্রস্তাবিত প্রতিটি নেতা সম্পর্কে গোয়েন্দা প্রতিবেদন বিশ্লেষণের পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবে খোঁজখবর নিয়েছেন শেখ হাসিনা।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিচ্ছন্ন ইমেজ ও ব্যাকগ্রাউন্ডের নেতাদেরই ছাত্রলীগের কমিটিতে স্থান দিতে চান প্রধানমন্ত্রী। এরই মধ্যে ব্যাপক যাচাই-বাছাইয়ের পর কমিটির কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে পছন্দের প্রাথীদের নামও চূড়ান্ত করেছেন তিনি। ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে যে কোনো সময় নতুন কমিটির ঘোষণা আসতে পারে বলে জানিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী একটি সূত্র।

সূত্র জানায়, কেবল কেন্দ্রীয় কমিটি নয়, সারাদেশের ছাত্রলীগে ব্যাপক সংস্কার আনতে চান শেখ হাসিনা। তাই কেন্দ্রীয় কমিটির পদ প্রত্যাশী নেতাদের পাশাপাশি সারাদেশের সব জেলা কমিটির বিষয়েও খোঁজ নিচ্ছেন তিনি। কেন্দ্রের মতো অনেক জেলা ইউনিটেই অনুপ্রবেশকারী, চাঁদাবাজ, মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীদের নেতা বনে যাওয়ার অভিযোগকে ব্যাপক গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রধান। তার নির্দেশে কেন্দ্রীয় কমিটির পদ প্রত্যাশীদের পাশাপাশি জেলা কমিটি ও অন্যান্য ইউনিটের ছাত্রলীগ নেতাদের ব্যাকগ্রাউন্ডও রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর হাতে। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল সর্বত্র সংস্কার আনতে চান তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, অধিকতর যোগ্য প্রার্থীকে খুঁজে বের কারতেই তিনি ছাত্রলীগের কমিটি গঠনে সময় নিচ্ছেন। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সব কাজের ব্যস্ততার মধ্যেও কমিটির পদপ্রত্যাশীদের ডাটা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। ছাত্রলীগ নিয়ে তিনি এবার অন্য কারও ওপর আর ভরসা রাখতেও চাচ্ছেন না। কারণ সামনে জাতীয় নির্বাচন, এতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বড় ধরনের ভূমিকা পালন করতে হবে। সার্বিক দিক চিন্তা করেই নেতৃত্ব বাছাইয়ের কাজটি প্রায় চূড়ান্ত করে এনেছেন তিনি। ভারত সফর শেষে ফিরে কমিটি ঘোষণা করতে পারেন তিনি।

সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান সাংগঠনিক পদে নেতা নির্বাচন ছাড়াও ঢাকা বিশবিদ্যালয় ও ঢাকা মহানগরের আংশিক কমিটি করে দিতে পারেন তিনি নিজেই। এছাড়া ঢাকা ও এর আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটেও যোগ্য ও দক্ষ ছাত্রনেতাদের নেতার নাম দিয়ে দিতে পারেন নতুন নির্বাচিত সভাপতি-সম্পাদকের কাছে। তারা পরবর্তীতে এসব ইউনিটে কমিটি গঠন করবেন। মেয়াদপূর্তি না হলেও সাংগঠনিক গুরুত্ব বিবেচনায় অনেক জেলায় আসতে পারে নতুন কমিটি।

ছাত্রলীগের কমিটি গঠনে পদপ্রত্যাশীদের যাচাইবাছাইয়ে সম্পৃক্ত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্ষমতাসীন দলের কেন্দ্রীয় একনেতা বলেন, প্রায় সপ্তাহখানেক আগেই আমরা যাচাইবাছাই শেষে ক্লিন ইমেজের সাতজন ছাত্রনেতার নামের তালিকা প্রধানমন্ত্রীকে দিয়েছি। এদের থেকেই প্রধানমন্ত্রী যোগ্যদের বেছে নিবেন। প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণায় বিলম্ব করার মূল কারণ হলো, ছাত্রলীগে যেন আর অনুপ্রবেশকারী না ঢোকে। ছাত্রলীগকে কেউ যেন বিপথে নিয়ে যেতে না পারে।

কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনে প্রধানমন্ত্রী বয়সসীমা ২৮ বছরের মধ্যে রাখার বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দি্চ্ছেন। পাশাপাশি তিনি দুটি খতিয়ে দেখছেন। প্রথমত, সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আছে কি না, অভিযোগগুলো অদৌ সত্য কি না। দ্বিতীয়ত, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা কার ব্যাপারে কত উৎসাহী? বেশ ক’জন নেতা আছেন যারা তাদের পছন্দের ছেলেমেয়েদের কমিটিতে রাখতে চান। ওই কমিটি যেন নিজেদের পকেট কমিটি হিসেবে কাজ করে। এসব বিবেচনায় ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে এবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সব সিন্ডিকেট অকার্যকর করতে চান। ছাত্রলীগের দুই-তিনজন শীর্ষনেতার গতিবিধি নজরদারিতে রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ছাত্রলীগের কমিটি বিলম্ব হওয়ার কারণ ছাত্রলীগকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত নানামুখী সমস্যার পর্যবেক্ষণ ও নীরিক্ষণ শেষে তার সুষ্ঠু সমাধান বের করা। বিভিন্ন জেলায় শীর্ষ পদে অনুপ্রবেশ ঘটেছে। রয়েছে মাদক ব্যবসায়ী। ঢাকা মহানগরের কয়েকটি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ পদধারী মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ঢাকার একটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকও এ তালিকায়। এসব বিষয় ভাবিয়ে তুলেছে আওয়ামী লীগের শীর্ষ মহলকে। এজন্য দলের নেতারা এর সমাধানের পুরো দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে। রাষ্ট্রীয় ও দলীয় কার্যক্রমের পাশাপাশি আপাতত যেটুকু সময় বের করতে পারেন তখনই ছাত্রলীগের বিভিন্ন বিষয়ে সমাধান খোঁজেন শেখ হাসিনা।

সূত্র জানায়, ছাত্রলীগ নেতাদের কার্যক্রমের কয়েকটি ভয়াবহ চিত্র ও তথ্য-উপাত্ত গোয়েন্দারা প্রধানমন্ত্রীকে দিয়েছেন। গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছাত্রলীগকে পরিকল্পিতভাবে জঙ্গি সংগঠনে পরিণত করার টার্গেট ছিল অনুপ্রবেশকারীদের। ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন পদের পাশাপাশি সারাদেশের বিভিন্ন জেলা ইউনিটে শিবির, ছাত্রদল, শান্তি কমিটির সন্তান-স্বজনসহ স্বাধীনতাবিরোধী মতাদর্শের ছাত্রদের ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশ করানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি অওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ঘরোয়া বৈঠকে আলোচনাকালে বলেছেন, ‘ছাত্রলীগকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র চলছে। কিন্তু আমি বেঁচে থাকতে সেটা হতে দেবো না।’

জানা গেছে, ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্ব নির্বাচনে পদ প্রত্যাশী সবাইকে প্রধানমন্ত্রী ডেকে কথা বলবেন না। তবে যাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে বসাবেন সেই ২৫-৩০ জনের সঙ্গে তিনি কথা বলতে পারেন। তাদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা ও কর্মপন্থা বলে দিবেন।

সর্বশেষ মন্ত্রিসভার বৈঠকে ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে বিলম্বের বিষয়ে আওয়ামী লীগের এক জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী জিজ্ঞেস করলে জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি ৩২৩ জন পদ প্রত্যাশীর অতীত, পারিবারিক পরিচয়সহ জীবনবৃত্তান্ত এবং সাংগঠনিক ও গোয়েন্দা সংস্থার ৫ স্তরের রিপোর্ট মিলিয়ে দেখছেন। এজন্য সময় লাগছে।

সূত্রমতে, বিগত দুটি কমিটির প্রথম সারির কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ জমা পড়েছে প্রধানমন্ত্রীর হাতে। দেশ-বিদেশে তাদের জাঁকজমকপূর্ণ রাজসিক জীবনযাপনে আয়ের উৎস খোঁজা হচ্ছে। অনেকের আন্তর্জাতিক কানেকশন রয়েছে। এসব বিষয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ মহলকে ভাবিয়ে তুলেছে। আর এ কারণেই কেন্দ্রীয় কমিটর প্রধান সাংগঠনিক পদ নেতা নির্বাচন চূড়ান্ত হওয়ার পরও কমিটি ঘোষণার আগে নিবিড় পর্যবেক্ষণ চলছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মাদক ব্যবসায়ী নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরায় কলারোয়ায় মাদক ভাগাভাগি নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে ইউনুস আলী দালাল (৪৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ান শ্যুটার গান, ২ রাউন্ড গুলি ও ৭০ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, শুক্রবার ভোর রাত দুইটার দিকে উপজেলার সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর গ্রামে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
নিহত ইউনুস আলী দালাল উপজেলার দক্ষিণ ভাদিয়ালি গ্রামের আব্দুল্লাহ দালালের ছেলে।
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ জানান, “ভোর রাত দুইটার দিকে সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর-বড়ালি পাকা রাস্তার পাশে সীমান্ত এলাকায় দুইদল মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে গোলাগুলি হচ্ছে বলে তারা খবর পান। তাৎক্ষণিক পুলিশের একটি টহল দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে ৫ রাউন্ড ফাঁকা শর্টগানের গুলি ছোড়ে। এতে দুইপক্ষই ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায়। পরে বিলের মধ্যে তল্লাসী চালিয়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ইউনুসকে পাওয়া যায়। এরপর তাকে দ্রুত উদ্ধার করে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি ওয়ান শ্যুটার গান, দুই রাউন্ড গুলি ও ৭০ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল উদ্ধার করে। ”
তিনি আরও জানান, নিহত ইউনুস আলী দালাল একজন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। তার নামে একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
বিশ্বকাপে ‘গোল্ডেন বল’ জিতেছিলেন যারা

স্পোর্টস ডেস্ক: বিশ্বকাপ, বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর বলতে হবে এই বৈশ্বিক প্রতিযোগিতাকে। এখন পর্যন্ত মাঠে গড়িয়েছে ২০টি আসর। প্রায় সব আসরেই কেউ না কেউ পায়ের জাদুতে মাতিয়ে রেখেছিলেন পুরো ফুটবল বিশ্বকে। প্রতি আসর শেষেই বিশ্বকাপের সেরা ফুটবলার নির্বাচন করা হলেও প্রথম  ১১টি আসরে ছিল না কোনো পুরস্কার। ১৯৮২ বিশ্বকাপ থেকে অ্যাডিডাস ও ফরাসি ফুটবল পত্রিকা ‘ফ্রান্স ফুটবল’র উদ্যোগে ফিফা  শুরু করে এই পুরস্কারের প্রচলন।

শুধু যে বিশ্বকাপজয়ী দলের খেলোয়াড়ই টুর্নামেন্ট সেরা হবেন তেমনটা নয়। বরং রানার্সআপ কিংবা অন্যান্য দলের খেলোয়াড়রাও জিতেছেন এই পুরস্কার। শেষ তিন আসরে যারা জিতেছেন গোল্ডেন বল তাঁদের দল কিন্তু জিততে পারেনি বিশ্বকাপ।

গোল্ডেন বলের প্রচলন শুরু হয়েছিল যে আসরে, সেই আসরে সেরা খেলোয়াড়ের সম্মান পেয়েছিলেন পাওলো রসি। মাঠে গড়ানো শেষ বিশ্বকাপের আসর ছিল ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপ। সেই প্রতিযোগিতায় আর্জেন্টিনাকে একা ফাইনালে নিয়েছিলেন দলটির অধিনায়ক লিওনেল মেসি। ফাইনালে জার্মানির কাছে হেরে গেলেও গোল্ডেন বল উঠেছিল মেসির হাতেই।

শুধু যে ডিফেন্ডার, মিডফিল্ডার কিংবা ফরোয়ার্ডরাই জিতেছেন গোল্ডেন বল, তেমনটা কিন্তু নয়। ২০০২ বিশ্বকাপে কিন্তু সেরা গোল্ডেন বল জিতেছিলেন পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে অসাধারণ গোলকিপিং করা অলিভার কান। এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে একমাত্র গোলরক্ষক হিসেবে এই জার্মান জিতেছেন সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার।

বিশ্বকাপের গোল্ডেন বল বিজয়ীরা:

১৯৮২ বিশ্বকাপ : পাওলো রসি (ইতালি)

১৯৮৬ বিশ্বকাপ : দিয়েগো ম্যারাডোনা (আর্জেন্টিনা)

১৯৯০ বিশ্বকাপ : সালভাতোরে স্কিলাচি (ইতালি)

১৯৯৪ বিশ্বকাপ : রোমারিও (ব্রাজিল)

১৯৯৮ বিশ্বকাপ : রোনালদো (ব্রাজিল)

২০০২ বিশ্বকাপ : অলিভার কান (জার্মানি)

২০০৬ বিশ্বকাপ : জিনেদিন জিদান (ফ্রান্স)

২০১০ বিশ্বকাপ : দিয়েগো ফোরলান (উরুগুয়ে)

২০১৪ বিশ্বকাপ : লিওনেল মেসি (আর্জেন্টিনা)

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৯ তম জন্মবার্ষিকী

সাহিত্য ডেস্ক: আজ ১১ জ্যৈষ্ঠ। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৯তম জন্মবার্ষিকী। দিবসটি উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংস্থা, সংগঠন নানা অনুষ্ঠানের আয়োজনের মধ্যদিয়ে দিনটি পালন করবে।

জাতীয় পর্যায়ে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এক যোগে আজ কবির স্মৃতিধন্য ত্রিশাল, ঢাকা, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ আজ কবির স্মৃতি বিজড়িত ময়মনসিংহের ত্রিশালে বিকেল সাড়ে তিনটায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কবির জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন।

সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে কবির সমাধিতে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের দিয়ে দিবসটির কর্মসূচি পালন শুরু হবে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের পক্ষ থেকে কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানো হবে।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তাঁরা কবির স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

দ্রোহ, প্রেম, সাম্য, মানবতা ও শোষিত বঞ্চিত মানুষের মুক্তির বার্তা নিয়ে এসেছিলেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম। মূলত তিনি বিদ্রোহী। কবির প্রেমিক রূপটিও প্রবাদপ্রতিম।

কবি বলেছেন, ‘আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন খুঁজি তারে আমি আয়নায়।’ পৃথিবীতে এমন ক’জন আছেন যিনি প্রেমের টানে রক্তের সর্ম্পকে অস্বীকার করে পথে বেরিয়ে পড়তে পারেন।

বাংলা ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া গ্রামে কবি কাজী নজরুল ইসলাম জন্মেছিলেন। তাঁর ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুন।

বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। তিনি বৈচিত্র্যময় অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে বাংলা সঙ্গীত জগতকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। তার কবিতা, গান ও সাহিত্য কর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল।

কাজী নজরুল ইসলাম অসাম্প্রদায়িক ও শোষণমুক্ত দেশ ও সমাজ গড়ার মানসে সাহিত্যে বিভিন্ন শাখায় লেখালেখি করেন। এ সব ক্ষেত্রে তিনি সংগ্রামী ও পথিকৃৎ লেখক। তাঁর লেখনি জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। তাঁর কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তাঁর গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পরই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে স্বপরিবারে সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশে তাঁর বসবাসের ব্যবস্থা করেন। ধানমন্ডিতে কবির বসবাসের জন্য একটি বাড়ি প্রদান করেন তিনি। সেই বাড়িটিই এখন নজরুল ইনিস্টিটিউট।

নজরুল বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, নজরুল ইতিহাস ও সময় সচেতন মানুষ ছিলেন যার প্রভাব তাঁর লেখায় স্পষ্টভাবে পাওয়া যায়। তিনি বলেন, তুরস্কে কামাল পাশার নেতৃত্বে প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা, রাশিয়ায় সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব আর ভারতবর্ষে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের তরঙ্গকে নজরুল তাঁর সাহিত্যে বিপুলভাবে ধারণ করেছেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
কলকাতা যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী, আজ মোদির সঙ্গে বৈঠক

ন্যাশনাল ডেস্ক: দু’দিনের সরকারি সফরে আজ শুক্রবার (২৫ মে) সকালে কলকাতা যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, এই সফরে প্রধানমন্ত্রী শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন এবং আসানসোলে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট অব লিটারেচার (ডি-লিট) ডিগ্রি গ্রহণ করবেন। নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে এ সফরে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। দুই প্রধানমন্ত্রী শান্তিনিকেতনে নবনির্মিত বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধন করবেন এবং সেখানে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হবেন।

বাংলাদেশ বিমানের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট প্রধানমন্ত্রী ও তার সফর সঙ্গীদের নিয়ে শুক্রবার সকালে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে সকাল ৯টায় (স্থানীয় সময়) কলকাতায় নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছবে।

বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারে কলকাতা থেকে প্রায় ১৮০ কিলোমিটার উত্তরে বীরভূম জেলার বোলপুর শান্তিনিকেতনে যাবেন। বিশ্বভারতীর উপাচার্য অধ্যাপক সবুজ কলি সেন শান্তিনিকেতনে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র ভবনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন।

এরপর শেখ হাসিনা বিশ্বভারতীর সমাবর্তনে যোগ দেবেন। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়টির আচার্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পশ্চিমবঙ্গের বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত থাকবেন। এরপর দুই প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ভবন উদ্বোধন করবেন।

এই ভবনে রয়েছে আধুনিক থিয়েটার, প্রদর্শনী কক্ষ, বিশাল লাইব্রেরি। এই লাইব্রেরিতে রয়েছে সাহিত্য, সংস্কৃতি, ইতিহাস, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাস এবং বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ক সম্পর্কিত গ্রন্থ। এছাড়া, ভবনের প্রবেশদ্বারের দুই প্রান্তে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মুর‌্যাল স্থাপন করা হয়েছে।

সেখান থেকে শেখ হাসিনা কলকাতা ফিরে এসে জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি পরিদর্শন করবেন। সন্ধ্যায় হোটেল তাজ বেঙ্গলে কলকাতা চেম্বার নেতারা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। শনিবার প্রধানমন্ত্রী আসানসোলে যাবেন। সেখানে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষ সমাবর্তনে শেখ হাসিনাকে সম্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রি প্রদান করবে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাষণ দেবেন। পরে মেধাবী শিক্ষার্থীদের হাতে স্বর্ণপদক তুলে দেবেন। অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রী বক্তৃতা করবেন।

এরপর প্রধানমন্ত্রী কলকাতায় ফিরে নেতাজী সুভাষ বসু যাদুঘর পরিদর্শন করবেন। শনিবার রাতে দেশে ফিরবেন তিনি।

খবর: বাসস।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
আজও ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সারাদেশে ৭ মাদক ব্যবসায়ী নিহত

ন্যাশনাল ডেস্ক: রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৭ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত ও শুক্রবার ভোরে এসব বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এতে র‌্যাব ও পুলিশের ১৪ সদস্য আহত হয়েছেন। এছাড়া বন্দুকযুদ্ধের ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্রসহ বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধারের দাবি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
পাঁচ জেলার নামের বানান নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি

ন্যাশনাল ডেস্ক: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গত ২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত নিকারের সিদ্ধান্তের আলোকে পাঁচটি জেলার নামের ইংরেজি বানান বাংলা উচ্চারণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণকরণ সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম -এর ইংরেজি বানান Chittagong এর পরিবর্তে Chattogram, কুমিল্লার ক্ষেত্রে Comilla এর পরিবর্তে Cumilla, বরিশালের ক্ষেত্রে Barisal এর পরিবর্তে Barishal, যশোরের ক্ষেত্রে Jessore এর পরিবর্তে Jashore এবং বগুড়ার ক্ষেত্রে Bogra এর পরিবর্তে Bogura রূপে সংশোধন করা হয়েছে।

সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ, অধিদপ্তর/দপ্তর/পরিদপ্তর, জেলা ও উপজেলাসহ বিদেশে বাংলাদেশ মিশনসমূহে এবং বাংলা ও ইংরেজি অভিধানে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনার লক্ষ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
মাদকের পৃষ্ঠপোষক ও মূলহোতারা এখনও অধরা

ন্যাশনাল ডেস্ক: দেশব্যাপী মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত কোনো পৃষ্ঠপোষক বা মূলহোতার গ্রেফতার অথবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। পুলিশ ও র‌্যাবের চলমান এ অভিযানের প্রথম ২১ দিনে প্রায় সাড়ে আট হাজার মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পাশাপাশি ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে ৫৭ জন। আর ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা হয়েছে ২ হাজার ৮৭৮ জনের। তবে তাদের অধিকাংশই ছোট বা মাঝারি শ্রেণীর মাদক ব্যবসায়ী বা বাহক অথবা সেবক বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।

যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মাদক ব্যবসায়ী যত প্রভাশালী হোক না কেন, তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। আইনের আওতায় সবাইকে আসতেই হবে।

তবে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, সরকারের পাঁচটি সংস্থার সমন্বয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের বিশেষ তালিকায় নাম থাকার পরও মাদকের গডফাদার, প্রভাবশালী আশ্রয়দাতা, বিনিয়োগকারীরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। পাশাপাশি সীমান্তের অনেক পয়েন্ট দিয়ে অব্যাহত রয়েছে দেশে মাদক প্রবেশ। বিদ্যমান পরিস্থিতি অব্যাহত রেখে অভিযান কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারি সংস্থার তদন্তে যেসব ‘গডফাদার’ বা পৃষ্ঠপোষকের নাম এসেছে তাদের আইনের আওতায় আনা না গেলে মাদকের মূলোৎপাটন সম্ভব নয়। মাদকের তালিকায় থাকা বর্তমান ও সাবেক ২৫ সংসদ সদস্যসহ সাড়ে ৪০০ জনপ্রতিনিধি এখনও থেকে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।

এমনকি মাদক সিন্ডিকেটে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অনেক সদস্য জড়িত থাকার বিষয়েও অভিযোগ উঠেছে। তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনার পরামর্শ দেন তারা।

বিশেষজ্ঞদের আরও অভিমত, শুধু অভিযান পরিচালনা করেও মাদক নির্মূল করা সম্ভব নয়। কার্যকর অভিযানের পাশাপাশি মাদকের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

মাদকবিরোধী অভিযান সফল হওয়ার প্রথম দুটি শর্ত হল- মাদকের রুট বন্ধ করা এবং মাদকের বিনিয়োগকারীদের আইনের আওতায় আনা। চলমান অভিযানে এ দুটি বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ লক্ষ করা যায়নি।

এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল অভিযানের শুরু থেকেই বলে আসছেন, মাদক বিক্রেতারা সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে যতই ক্ষমতাধর হোক না কেন, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। কিন্তু মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তালিকায় কক্সবাজারের সংসদ সদস্য (এমপি) আবদুর রহমান বদির নাম সবার শীর্ষে। তাকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। তার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বদির বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, প্রমাণ নেই।

দলমত নির্বিশেষ সবার চাওয়া দেশ থেকে মাদক নির্মূল হোক। সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মাদকবিরোধী অভিযানের নামে বিনা বিচারে হত্যার তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, মাদক নির্মূলের নামে যাদের হত্যা করা হচ্ছে তারা কারা আমরা জানি না। মাদক সম্রাট তো সংসদেই আছে। তাদের বিচারের মাধ্যমে ফাঁসিতে ঝুলান।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপিও মাদকবিরোধী অভিযান চায়, তবে এটা হতে হবে অরাজনৈতিক। মাদকবিরোধী অভিযানের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যা সমর্থনযোগ্য নয়।

তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মাদক কারবারিরা অস্ত্র নিয়ে মোকাবেলা করছে বলেই ‘এনকাউন্টার’ হচ্ছে এবং একে বিচারবহির্ভূত হত্যা বলা যায় না। আবদুর রহমান বদিকে মাদক পাচারের অভিযোগে ধরতে হলে তার আগে ‘প্রমাণ লাগবে’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

এদিকে বৃহস্পতিবার একটি অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ঢাকাকে মাদকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন। এ সময় তিনি বলেন, মাদকের আগ্রাসন আমাদের চিন্তায় ফেলেছে। প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ার কথা বলেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় মাদকবিরোধী অভিযান চলছে। যারা মাদক ব্যবসা করে তাদের কোনো স্থান নেই। যে কোনো মূল্যে মাদকের আগ্রাসন থেকে মানুষকে রক্ষা করতে হবে।

বিজিবির অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মজিবুর রহমান বলেন, সীমান্তের যেসব পয়েন্ট দিয়ে মাদক আসে আমরা সেই পয়েন্টগুলোতে বিশেষ নজরদারি করছি। মাদক নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে যুক্ত সব সংস্থার সমন্বয়ে আমরা কাজ করছি। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর যেসব পয়েন্টের কথা বলেছে সেগুলোতেও আমরা বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছি। মাদক নির্মূলে আমরা সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিচ্ছি। মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু হওয়ার পর আমরা আমাদের পদক্ষেপ আরও জোরদার করেছি।

বিডিআরের (বর্তমানে বিজিবি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান বলেন, দেশে মাদক আসছে প্রতিবেশী দুই দেশ ভারত ও মিয়ানমার থেকে। সীমান্তের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে ভারত ফেনসিডিলের কারখানা স্থাপন করছে। মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আসছে। প্রতিবেশী দুই দেশের সঙ্গে এ বিষয়ে সমঝোতায় না এলে মাদক নির্মূল করা সম্ভব নয়। অপরদিকে যারা মাদকের পৃষ্ঠপোষকতা করে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। এভাবে মানুষ হত্যা করে মাদক নির্মূল করা যাবে না।

বিশিষ্ট সমাজ বিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক একেএম নেহাল করিম বলেন, মাদকবিরোধী অভিযানে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ যারা মারা গেছে তারা বাহক। যারা মাদক আমদানি করছে, যারা বিনিয়োগ করছে তারা ধরা পড়ছে না।
এতে মনে হচ্ছে, মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান লোক দেখানো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানে মাদকের মূল হোতা এবং বিনিয়োগকারী কারা। কারা দেশব্যাপী মাদক ছড়িয়ে দিচ্ছে সেটাও তারা জানে। মাদকের বাহক মারা গেলে মূল হোতাদের কোনো সমস্যা নেই।
কক্সবাজারে মাদকের মূল আমদানিকারক এমপি বদি। তাকে তো ধরা হচ্ছে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, তার বিরুদ্ধে প্রমাণ নেই। এভাবে কখনোই মাদক নির্মূল করা সম্ভব নয়।
বিশেষ অভিযানে গডফাদাররা ধরা পড়ছে না- এ বিষয়ে জানতে চাইলে র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান বলেন, দেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযানে অনেক মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার হয়েছে। বন্দুকযুদ্ধে অনেক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব পর্যায়ের মাদক ব্যবসায়ীই জালে আসবে।

পুলিশের সাবেক আইজি নূর মোহাম্মদ বলেন, মাদক নির্মূল করা একক কোনো বিষয়ের ওপর নির্ভর করে না। এটা বন্ধ করতে হলে ‘সাপ্লাইলাইনে’ আঘাত করতে হবে। মাদকের রুট বন্ধ করার কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। তবে মাদক পুরোপুরি নির্মূল করতে হলে, মাদকের স্পটগুলো নিয়ে কাজ করতে হবে। যে এলাকায় বেশি মাদকের প্রাদুর্ভাব সেখানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সাধারণ মানুষকে নিয়ে এর বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করতে হবে।
তিনি বলেন, মাদক নিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে সচেতনতার কাজ হচ্ছে। সব এলাকায় স্থানীয়দের নিয়ে সমন্বিতভাবে এ কাজটা চালিয়ে যেতে হবে।
র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, যাদের বিরুদ্ধে মাদকের মামলা আছে, যাদের সঙ্গে মাদক পাচ্ছি, তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, প্রমাণ পেলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। যাদের বিরুদ্ধে মাদকসংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে তাদের কোনো দলীয় পরিচয় দেখা হচ্ছে না। চ লমান মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানে কাউকে ছাড় দেয়া হচ্ছে না।
পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) সহেলী ফেরদৌস বলেন, সারা দেশে মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসন রোধে পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা সারা দেশে মাদকের গডফাদার, শীর্ষপর্যায়ের ব্যবসায়ী, পাইকারি ব্যবসায়ী এবং খুচরা বিক্রেতাদের তালিকা করেছি। সেই তালিকা অনুযায়ী অভিযান চলছে।
সূত্র: যুগান্তর।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest