সর্বশেষ সংবাদ-
শোভনালীতে মানব পাচার প্রতিরোধ ও নিরাপদ অভিবাসন ডেস্ক উদ্বোধনআশাশুনির গোয়ালডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানববন্ধনজবাবদিহিতা ও মানবাধিকার সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে গোলটেবিল সভাতালায় টিআরএম কার্যক্রমের বকেয়া ক্ষতিপূরণের দাবিতে সাংবাদিক সম্মেলনপুজামণ্ডপে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে ব্যবস্থা: সাতক্ষীরার পুলিশ সুপারজলবায়ু পরিবর্তনে মানবাধিকার নিশ্চিতকরণে শ্যামনগরে এনগেজ প্রকল্পের অবহিতকরণ সভালাপা প্রকল্পের জেলা পর্যায়ে স্টেকহোল্ডার পরামর্শ সভাসাতক্ষীরায় যৌথবাহিনির অভিযানে অস্ত্র-মাদকসহ তিনজন আটকসাতক্ষীরা জেলা আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক মাসিক সভাসাতক্ষীরা কারা মহাপরিদর্শকের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা

শতাব্দীর সেরা একাদশে বার্সার ৬, রিয়ালের ৩

এই শতাব্দীতে ফুটবল বিশ্ব দেখেছে লিওনেল মেসি আর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর জাদু। ইতিহাসের অন্যতম সেরা এক বার্সেলোনাকে দেখেছে একের পর এক শিরোপা জিতে নিতে। কিন্তু এই শতাব্দীর সেরা ১১ ফুটবলার কারা? সেটি কিন্তু একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে উয়েফা প্রকাশ করেছে এই শতাব্দীর সেরা একাদশের নাম। ছয়জন বার্সেলোনা আর তিনজন রিয়াল মাদ্রিদের ফুটবলার আছেন এই একাদশে।

গোলরক্ষক হিসেবে এই একাদশে আছেন সাবেক স্পেন ও রিয়াল অধিনায়ক ইকার ক্যাসিয়াস। দলে আরও আছেন তাঁরই ক্লাব সতীর্থ সার্জিও রামোস ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। অন্যদিকে, বার্সেলোনা থেকে সুযোগ হয়েছে কার্লোস পুয়োল, জেরার্ড পিকে, আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, জাভি হার্নান্দেজ ও লিওনেল মেসির। থিয়েরি অঁরিকে নেওয়া হয়েছে, যিনি আর্সেনাল ও বার্সেলোনা দুই দলের হয়েই ইউরোপ মাতিয়েছেন।

রিয়াল-বার্সা ছাড়াও এই একাদশে লিভারপুল ও বায়ার্ন মিউনিখের ফুটবলাররাও আছেন। চ্যাম্পিয়নস লিগ ইতিহাসের অন্যতম সেরা ‘ইস্তাম্বুল-ফাইনালে’ জয়ী দল লিভারপুলের প্রতিনিধিত্ব করছেন মিডফিল্ডার স্টিভেন জেরার্ড। অন্যদিকে, বায়ার্ন থেকে দলে এসেছেন জার্মানির বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ফিলিপ লাম। দলের ফরমেশন ৪-৩-৩।

কিংবদন্তিদের নিয়ে দল গঠন করা বেশ কঠিন কাজ। টুইটারে ইতিমধ্যেই অনেকে এই দলের সঙ্গে ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন। কারও ক্যাসিয়াসের জায়গায় চাই জিজি বুফনকে, কেউবা পিকের স্থলে দেখতে চান ইতালির বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ফাবিও ক্যানাভারোকে। দিদিয়ের দ্রগবা, পাওলো মালদিনি, জিনেদিন জিদান কিংবা রোনালদো নাজারিওকে দলে রাখা উচিত ছিল বলে মত দিয়েছেন অনেকেই। সূত্র মার্কা, স্পোর্ট বাইবেল।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
প্রতিদিন ফল খান

ফলকে বলা হয় বেহেশতের খাবার। বিজ্ঞানের চোখেও ফল খুবই উন্নত ধরনের খাবার হিসেবে পরিগণিত। আর তাই অসুখ বিসুখে রোগীর বিছানার পাশে দেখা যায় ফলের সমাহার। সুস্থ থাকার জন্য নিয়মিত কিছু না কিছু ফল গ্রহণের কথা বলা হয়।

শরীর প্রয়োজনীয় ভিটামিন, মিনারেলসহ বিভিন্ন উপাদানের জোগান দেয় এই ফল। জন্মের কয়েক মাস পর থেকেই তাই শিশুকে ফলের রস খাওয়ানোর উপদেশ দেওয়া হয়।
আমাদের দেশে প্রায় সারা বছরই বিভিন্ন ফল পাওয়া গেলেও জ্যৈষ্ঠ মাসে দেশে আম, জাম, লিচু কাঁঠালসহ বিভিন্ন ধরনের ফলফলাদি সহজলভ্য হয়ে ওঠে। এসব ফলের প্রতিটিই পুষ্টি প্রাচুর্যে অনন্য।

আমের কথাই ধরা যাক। আম সবার কাছেই প্রিয় ফল। কাঁচা কিংবা পাকা, টক কিংবা মিষ্টি, যাই হোক সবই প্রিয়। ছোট্ট শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক সবারই পছন্দ আম। একেকজন একেকভাবে খাচ্ছে। আমের সব পরিবেশনাই মজাদার ও পুষ্টিকর। আম যেভাবেই পরিবেশন করা হোক না কেন এতে আমের পুষ্টিগুণ খুব একটা হেরফের হয় না।

তবে অটুট থাকে অন্যান্য ভিটামিনের গুণাগুণ। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আমে রয়েছে আট হাজার ৩০০ মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন, একই পরিমাণ পাকা কাঁঠালে ক্যারোটিনের পরিমাণ চার হাজার ৭০০ মাইক্রোগ্রাম। উল্লেখ্য, এই ক্যারোটিন শরীরের ভিটামিন ‘এ’ তে রূপান্তরিত হয়। এ ছাড়া প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আমে রয়েছে ৪১ মিলি গ্রাম ভিটামিন সি। এটি ১২ বছর বয়স পর্যন্ত একটি শিশুর ভিটামিন সিয়ের দৈনিক চাহিদার দ্বিগুণ। আমের চেয়ে জামে ভিটামিন ‘সি’ এর পরিমাণ কিছুটা বেশি।

প্রতি ১০০ গ্রাম কালো জামে রয়েছে ২১০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি। আর আঙ্গুরে এর পরিমাণ ২৯ মিলিগ্রাম। স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধে ভিটামিন সি খুবই কার্যকরী।

উল্লেখ্য, ভিটামিন ‘সি’-এর অভাবে মাড়ি দিয়ে রক্তপাত হয়ে থাকে। এ ছাড়া ভিটামিন ‘সি’ ক্ষত সারাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। এ কারণে যেকোনো অপারেশনের পর ডাক্তাররা ভিটামিন সি গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

ভিটামিন ‘এ’-এর চাহিদা পূরণে আম খু্বই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই সবারই বেশি বেশি আম খাওয়া উচিত। খাবারের মাধ্যমে অতিরিক্ত ভিটামিন এ গ্রহণে ক্ষতি নেই। কারণ, বাড়তি ভিটামিন এ লিভারের সংরক্ষিত অবস্থায় থাকে।

ফলের ব্যাপারে একটা কথা মনে রাখা প্রয়োজন। সব ফলেই রয়েছে কিছু খনিজ পদার্থ, ক্যালমিয়াম, লৌহ, ভিটামিন বি১, বি২, ভিটামিন সি, এ। এসব উপাদানের অনেকগুলোরই রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট গুণাগুণ। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট শরীরে বুড়িয়ে যাওয়াকে ধীর করে। হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখে। আর ফলের আঁশ দূর করে কোষ্ঠকাঠিন্য, শরীরে মেদ জমতে বাধা দেয়।

যেকোনো বয়সের জন্য অনবদ্য খাবার হলো ফল। শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে ফল বিশেষ ভূমিকা রাখে। ফলের বিকল্প ফলই। প্রতিদিন কিছু না কিছু ফল গ্রহণ করলে পৃথকভাবে ভিটামিন, ক্যাপসুল, ট্যাবলেট কিংবা সিরাপ গ্রহণের দরকার পড়ে না। ফল দীর্ঘ জীবনের নিয়ামক, ফল জীবনকে সুন্দর করে, সুস্থ রাখে।

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হলিফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
শীতে ভালো গুড় চেনার সহজ উপায়

আসছে শীতকাল। যদিও উত্তর জনপদে ইতোমধ্যেই শীত নেমেছে।
প্রকৃতির নিয়মে শরতের সাদা মেঘের ভেলা উড়িয়ে হেমন্ত এসেছে। তাই দেশব্যাপী সকাল-বিকেল অবশ্য একটু শিরশিরানিও অনুভব করা যাচ্ছে। আর এতেই মিলছে গুড়ের আগমন বার্তা। খেজুর গাছে শুরু হয়ে গেছে রসের হাড়ি বাঁধা। এই রসই রূপান্তরিত হবে পরিশুদ্ধ গুড়ে। কিন্তু তা কতটা আপনার কাছে এসে পৌঁছবে? পৌঁছলেও বা চিনবেন কেমন করে?

১) গুড় কেনার সময় তা অবশ্যই চেখে দেখতে হবে। যদি তাতে একটু নোনতা স্বাদ পাওয়া যায় তাহলেই বুঝা যাবে অন্য কিছু মেশানো রয়েছে তাতে। আর এমন গুড় যত পুরনো হবে তাতে নুনের মাত্রা তত বেশি হবে।

২) যদি গুড়ের স্বাদ একটু তেতো হয় তাহলে বুঝবেন সেই গুড় বেশি ফোটানো হয়েছে।
আর তাতে অন্য শর্করা মেশানো হয়েছে।

৩) গুড় কেনার সময় খেয়াল করবেন তার কিছু অংশ স্ফটিকের মতো কিনা। যদি গুড়ে স্ফটিকের মতো অংশ থাকে তাহলেই বুঝতে হবে তা বাড়তি মিষ্টি করার জন্য অন্যকিছু মেশানো হয়েছে।

৪) গুড় কেনার সময় তার রং অবশ্যই দেখে নেবেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দর্শনেই গুণ বিচার করা যায়। শুদ্ধ গুড়ের রং গাঢ় বাদামি হয়ে থাকে। হলদেটে গুড় দেখলেই বুঝবেন তাতে রাসায়নিক মেশানো হয়েছে।

৫) গুড়ের ডেলাটি একটু টিপে দেখে নেবেন। গুড় যত শক্ত হবে, ততই ভালো। শক্ত গুড়ে অন্যান্য সামগ্রী মেশানোর সম্ভাবনা প্রায় থাকে না বললেই চলে।

শীতে মুখ মিষ্টি করার অনেক উপায় রয়েছে এ কথা সত্য। তবে এ কথাও সত্য যে বাঙালির কাছে গুড়ের কোনো বিকল্প নেই। বিশেষ করে গরম ধোঁয়া ওঠা পিঠের সঙ্গে। তাই বেছে খান। আর সেরাটা পান।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
সালমান বিবাহিত, আছে স্ত্রী-সন্তানও!

বলিউডের সুলতান সালমান খানকে নিয়ে দর্শক ও ভক্তদের সবচেয়ে কাঙ্খিত প্রশ্নটি হচ্ছে তিনি কবে বিয়ে করছেন বা কেন এখনো বিয়ে করছেন না। বয়স পঞ্চাশ পেরিয়ে গেলেও তার গায়ে এখনো ব্যাচেলরের তকমা রয়ে গেছে।

আগামী ২৭ ডিসেম্বর ৫৩ বছরে পা দেবেন সালমান খান। জীবনের ৫২ বসন্ত পার করলেও এখনও বিয়ে করেননি তিনি। এই ৫২ বছরের জীবনে অনেকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছেন সালমান খান। ঐশ্বরিয়া থেকে শুরু করে ক্যাটরিনা কাইফের সঙ্গে তার প্রেমের কথা শোনা যায়।

সর্বশেষ রোমানিয়ার মডেল লুলিয়া ভান্তুরের সঙ্গে তার প্রেমের কথা বলিমহলে ব্যাপক চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা বাগদান সেরে ফেলেছেন এমন খবরও শোনা যায় ভারতীয় গণমাধ্যমে। ১৮ নভেম্বর বিয়ের পিঁড়িতে বসবেন সাল্লু ভাই, এমন কথাও শোনা গেছে।

সম্প্রতি বেশ কয়েকটি সূত্র থেকে একটু অন্যরকম দাবি করা হচ্ছে সালমানের বিয়ে নিয়ে। সোশ্যাল সাইটে সম্প্রতি সলমনের বিয়ে নিয়ে বেশ কিছু তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কিছু মানুষ নাকি দাবি করেছেন, সালমান বিবাহিত। তার স্ত্রী ভারতীয় নন, তিনি বিদেশে থাকেন। এমনকী, সালমানের নাকি এক সন্তানও রয়েছে বলে দাবি।

এর আগে বিগ বসের ঘর থেকে বিতাড়িত প্রতিযোগী স্বামী ওমও এ দাবি করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, সালমান খান অনেক আগেই এক বিদেশি মেয়েকে বিয়ে করেছেন। তাদের সন্তানও রয়েছে।

সম্পর্ক নিয়ে বরাবরই বেশ খোলামেলা সালমান খান। সেই সালমান কিনা বিয়েটাই সেরে ফেললেন চুপি চুপি! এখন ভবিষ্যতই বলে দেবে সালমান বিবাহিত নাকি অবিবাহিত।

সালমান খান বর্তমানে তার নতুন সিনেমা টাইগার জিন্দা হ্যায়-এর প্রমোশন নিয়ে ব্যস্ত। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন সাবেক প্রেমিকা ক্যাটরিনা কাইফ।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
ইমন-বাঁধন আবারও জুটি বাধলেন

চলচ্চিত্রের পাশাপাশি এখন ছোটপর্দার কাজ নিয়েও বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন ইমন। অন্যদিকে ছোটপর্দার জনপ্রিয় মুখ অভিনেত্রী বাঁধন মাঝে বিরতি শেষে শুরু করেছেন কাজ।
শুটিংয়ের ব্যস্ততার মধ্য দিয়েই তার সময় কাটছে। খুব শিগগিরই এই দু’জন জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পীকে আবারও দেখা যাবে একসাথে।

ইমন ও বাঁধনকে নিয়ে নির্মাতা কাজী সাইফ নির্মাণ তার দু’টি নতুন নাটক করলেন। ‘নিরুদ্দেশ ভালোবাসা’ ও ‘অদ্ভুত মায়াজাল’ শিরোনামে নাটকগুলো গল্প লিখেছেন সৈয়দ ইকবাল।

এ ব্যাপারে বাঁধন বলেন, ‘তিনমাস পর ক্যামেরার সামনে দাড়ালাম। এখন থেকে ফের নিয়মিত কাজ করব। দুটি নাটকের গল্পই দারুন। আমি আর ইমন কাজ করলাম। ব্যক্তি জীবনেও ইমন আমার ভালো বন্ধু।
ওর সঙ্গে কাজের বোঝাপড়াটাও ভালো। তাই কাজ করে ভালো লেগেছে। ’

ইমন বলেন, ‘অনেকদিন পর বাঁধনের সঙ্গে দুটি নাটকে কাজ করলাম। গল্পের প্রয়োজনেই আমরা জুটি হয়েছি। দারুন ভালো দুটি কাজ। আশা করি দর্শকরা নাটক দুটি দেখে আনন্দ পাবেন। ’

এর আগে ২০১৫ সালে একসঙ্গে একটি নাটকে অভিনয় করেছিলেন তারা।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
৯০০ কোটি টাকা ফাঁকি; দেশের ৪ মোবাইল অপারেটরকে এনবিআরের চূড়ান্ত নোটিশ

ন্যাশনাল ডেস্ক : সিম রিপ্লেসমেন্টের নামে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে দেশের চারটি বেসরকারি মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন লিমিটেড, বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশনস লিমিটেড, রবি আজিয়াটা লিমিটেড ও এয়ারটেল বাংলাদেশ লিমিটেডকে চূড়ান্ত দাবিনামার নোটিশ দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।সোমবার (২০ নভেম্বর) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ)-মূল্য সংযোজন কর শাখা এ দাবিনামা জারি করেছে। মূসক আইন, ১৯৯১ এর ধারা ৫৫ এর উপধারা (৩) অনুযায়ী চূড়ান্ত দাবিনামা জারি ও কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, মামলার প্রতিবেদন, কারণ দর্শানোর নোটিশ, প্রতিষ্ঠানের দাখিল করা সব তথ্য, প্রতিষ্ঠানের অসহযোগিতা, রিপ্লেসমেন্ট সিমের সব দলিল প্রদর্শনে ব্যর্থতা প্রমাণ করে চারটি মোবাইল অপারেটর আলাদাভাবে সিম রিপ্লেসমেন্টের নামে নতুন সিম ইস্যু করে মূসক আইন, ১৯৯১ এর ধারা ৩৭(২) লঙ্ঘন করে সম্পূরক শুল্ক ও মূসক হিসেবে এ বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে।
এ বিষয়ে এনবিআরের এক কর্মকর্তা বলেন, বকেয়া রাজস্ব পরিশোধে মোবাইল অপারেটরগুলো ব্যর্থ হলে আইনগত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হতে পারে। তিনি বলেন, মূসক আইনের চূড়ান্ত দাবিনামা অনুযায়ী মোবাইল কোম্পানিগুলো বকেয়া রাজস্ব পরিশোধ ও আপিল করতে তিন মাস সময় পাবে। এর মধ্যে আপিল করতে হলে বকেয়া রাজস্বের ১০ শতাংশ জমা দিতে হবে।
জানা গেছে, গ্রামীণফোন লিমিটেড সবচেয়ে বেশি ৩৭৮ কোটি ৯৫ লাখ ৩৭ হাজার ৮২০ টাকা ২২ পয়সার রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে। বাংলালিংক ফাঁকি দিয়েছে ১৬৮ কোটি ৯১ লাখ ৪৯ হাজার ৫২ টাকা ৪৪ পয়সা, রবি ফাঁকি দিয়েছে ২৮৫ কোটি ২০ লাখ ৯০ হাজার ৫৩৫ টাকা ৭ পয়সা এবং এয়ারটেল ৫০ কোটি ২৬ লাখ ৯৮ হাজার ৩২২ টাকা ৫৯ পয়সা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে।
গ্রামীণফোনকে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গ্রামীণফোন ২০১২ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১ কোটি ৬ লাখ ৩ হাজার ৩৫৮টি সিম রিপ্লেসমেন্টের মাধ্যমে ২৪০ কোটি ৬ লাখ ১২ হাজার ১৯৪ টাকার সম্পূরক শুল্ক ও ১৩৮ কোটি ৮৯ লাখ ২৫ হাজার ৬২৬ টাকার মূসকসহ মোট ৩৭৮ কোটি ৯৫ লাখ ৩৭ হাজার ৮২০ টাকা ২২ পয়সার রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে।
বাংলালিংকে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলালিংক ২০১২ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত ৪৫ লাখ ৭৫ হাজার ২৭৭টি সিম রিপ্লেসমেন্টের নামে নতুন সিম বিক্রি করেছে। যাতে সম্পূরক শুল্ক ১০৭ কোটি ৪৯ হাজার ১৭৩ টাকা ৪৯ পয়সা ও মূসক ৬১ কোটি ৯০ লাখ ৯৯ হাজার ৮৭৮ টাকা ৯৫ পয়সাসহ মোট ১৬৮ কোটি ৯১ লাখ ৪৯ হাজার ৫২ টাকা ৪৪ পয়সার রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে।
রবি আজিয়াটাকে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, রবি আজিয়াটা লিমিটেড ২০১২ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত রিপ্লেসমেন্টের নামে ৭৫ লাখ ২৫ হাজার ৭৬৩টি সিম ইস্যু করেছে। এতে ১৮০ কোটি ৬৭ লাখ ৫৪ হাজার ১৮৫ টাকা ১০ পয়সার সম্পূরক শুল্ক ও ১০৪ কোটি ৫৩ লাখ ৩৬ হাজার ৩৪৯ টাকা ৯৫ পয়সার মূসকসহ মোট ২৮৫ কোটি ২০ লাখ ৯০ হাজার ৫৩৫ টাকা ৭ পয়সার রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে।
এয়ারটেলকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, এয়ারটেল বাংলাদেশ লিমিটেড ২০১২ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত ১৩ লাখ ৫৯ হাজার ৫৮৬টি রিপ্লেসমেন্টের নামে নতুন সিম ইস্যু করেছে। এতে ৩১ কোটি ৮৪ লাখ ৫১ হাজার ৪২৬ টাকা ৮ পয়সার সম্পূরক শুল্ক ও ১৮ কোটি ৪২ লাখ ৪৬ হাজার ৮৯৬ টাকা ৫২ পয়সার মূসকসহ মোট ৫০ কোটি ২৬ লাখ ৯৮ হাজার ৩২২ টাকা ৫৯ পয়সার রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে।
এর আগেও চারটি মোবাইল অপারেটরকে পৃথকভাবে বকেয়া রাজস্ব পরিশোধ ও কারণ দর্শানোর জন্য চারটি প্রতিষ্ঠানটি নোটিশ জারি করা হয়। ওই সময় চারটি কোম্পানি কারণ দর্শানোর জবাব দিতে সময় চায়। কিন্তু কয়েক দফা সময় নিয়েও চারটি প্রতিষ্ঠান শুনানিতে অংশ নেয়নি।
এনবিআর সূত্র জানায়, বেসরকারি মোবাইল অপারেটরদের সিম রিপ্লেসমেন্টের নামে নতুন সিম বিক্রির মাধ্যমে রাজস্ব ফাঁকি খতিয়ে দেখতে এনবিআর ২০১৩ সালের ২৮ জুলাই একটি নির্দেশনা জারি করে। নির্দেশনা অনুযায়ী ২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর এলটিইউ (ভ্যাট) এর কমিশনারকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করে। পরে এনবিআরের নির্দেশনা অনুযায়ী চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি এলটিইউ (ভ্যাট) এর অতিরিক্ত কমিশনারকে আহ্বায়ক করে চার মোবাইল অপারেটর, অ্যামটব ও বিটিআরসি’র প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ৫ সদস্যের কমিটি পুনর্গঠন করা হয়।
কমিটি চারটি মোবাইল অপারেটরের দাখিলপত্র যাচাই করে। সিম রিপ্লেসপেমেন্টের কর বিষয়ে এনবিআরের নির্দেশনা, ব্যাখ্যা ও বিটিআরসির গাইডলাইন অনুযায়ী এ খাত থেকে রাজস্ব আহরণে আইনগত বাধ্যবাধকতা থাকায় এলটিইউ চারটি মোবাইল অপারেটরকে চিঠি দেয়। চিঠিতে সিম রিপ্লেসমেন্টের তথ্য যাচাইয়ে চারটি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা চায় এলটিইউ। সিম রিপ্লেসপেমেন্ট থেকে রাজস্ব আদায় আদালতে মামলা রয়েছে বলে এলটিইউকে জানায় প্রতিষ্ঠানগুলো। পরে কমিটি সিম রিপ্লেসমেন্টের তথ্য প্রমাণসহ উপস্থাপন করতে আবার চিঠি দেয়। কিন্তু চারটি প্রতিষ্ঠান তা দেখাতে ব্যর্থ হয়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে প্রবল চাপে মিয়ানমার

এশিয়া ও ইউরোপের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের প্রথম দিনেই রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে প্রবল চাপে পড়েছে মিয়ানমার। নেপিডোতে গতকাল সোমবার সকালে এশিয়া ইউরোপ মিটিংয়ের (আসেম) ১৩তম পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠকের আগে রাখাইন রাজ্য পরিস্থিতি নিয়ে অনানুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ের আয়োজন করেছিল দেশটি।
সেখানে মিয়ানমার ছাড়াও অংশগ্রহণকারী এশিয়া ও ইউরোপের ১৫টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশদ কয়েকটি বিষয়ে অনেকটা অভিন্ন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। তাঁরা অনতিবিলম্বে সংঘাত বন্ধ, রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশমুখী স্রোত থামানো এবং বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে দ্রুত ফিরিয়ে নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁরা আনান কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন।

বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, রাখাইন রাজ্য ইস্যুতে গতকাল সকালে একটি অনানুষ্ঠানিক ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। এতে মিয়ানমার, বাংলাদেশ, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, এস্তোনিয়া, জার্মানি, মাল্টা, রাশিয়া, লুক্সেমবার্গ, ফ্রান্স, থাইল্যান্ড, হাঙ্গেরি, ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের হাইরিপ্রেজেন্টেটিভ অংশ নেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী শান্তি ও উন্নয়নের প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তিনি সংখ্যালঘুসহ সবাইকে নিয়ে এবং সবার অধিকার ও সুযোগ নিশ্চিত করে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অংশগ্রহণমূলক উন্নয়নের ওপর জোর দেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রান্তিকীকরণ ও মৌলিক অধিকার হরণের ফলে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি হয়। এটি বাস্তুচ্যুতি ও পুরো অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করতে পারে।
তিনি শান্তি ও উন্নয়নের জন্য অংশগ্রহণ ও সহনশীলতাকে উৎসাহিত করতে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।

এদিকে অনানুষ্ঠানিক ওই ব্রিফিংয়ে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সু চি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে যে আগ্রহ দেখিয়েছেন তাতে উচ্ছ্বসিত হয়ে ফেদেরিকা মগেরিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বিষয়ে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ একটি চুক্তিতে পৌঁছবে বলে তিনি আশাবাদী। সু চির সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি উৎসাহিত বোধ করছেন।

তবে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সু চির অবস্থান ছিল বেশ কৌশলী। দুই দিনব্যাপী আসেম বৈঠকের প্রথম দিনে তিনি তাঁর বক্তব্যে ‘রোহিঙ্গা’ ইস্যুটি কার্যত এড়িয়ে গেলেও বিশ্বব্যাপী অস্থিতিশীলতা, সংঘাত ও সন্ত্রাসের কারণ হিসেবে অবৈধ অভিবাসনকেই দায়ী করেছেন। সু চি রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধনযজ্ঞ নিয়ে বৈশ্বিক সমালোচনার কোনো জবাব দেননি। তবে তাঁর বক্তব্যে যে মনোভাব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে তা হলো মিয়ানমারের জনগণ রোহিঙ্গাদের অবৈধ অভিবাসী এবং সন্ত্রাসের জন্য দায়ী মনে করে।

উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী যে দমন-পীড়ন অভিযান শুরু করে, তাতে এরই মধ্যে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে গত তিন মাসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে ছয় লাখ ২২ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা।

সু চি গতকাল তাঁর আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে বলেন, সারা বিশ্ব নতুন নতুন হুমকির মুখোমুখি হচ্ছে। অবৈধ অভিবাসনের কারণে সন্ত্রাস, উগ্রবাদ, সামাজিক বিবাদ, এমনকি পরমাণু যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়ছে। তিনি বলেন, সংঘাত সমাজ থেকে শান্তি কেড়ে নেয়। দারিদ্র্য ও অনুন্নয়নের কারণে জনগণ এক দেশ থেকে অন্য দেশে পাড়ি জমায়।

আসেম বৈঠক উপলক্ষে এশিয়া ও ইউরোপের ৫১টি দেশ ও দুটি জোটের সচিবালয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী/প্রতিনিধিরা মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে সমবেত হয়েছেন। চীন, জাপান, জার্মানি, সুইডেন ও ইইউয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মিয়ানমারে যাওয়ার পথে বাংলাদেশ সফর করে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। চীন ছাড়া অন্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা কক্সবাজারে সরেজমিনে গিয়ে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি দেখেছেন। তাঁরা রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।

ইইউয়ের পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা বিষয়ক হাইরিপ্রেজেন্টেটিভ ফেদেরিকা মগেরিনি গতকাল সকালে আসেম বৈঠক শুরুর আগেই সু চির সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা করেছেন। এরপর ফেদেরিকা মগেরিনি সাংবাদিকদের বলেন, সোম ও মঙ্গলবার এশিয়া ও ইউরোপের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করবেন। উত্তর কোরিয়ার পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা হবে।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে সু চির সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘রাখাইন রাজ্য পরিস্থিতি নিয়ে স্টেট কাউন্সেলর (মিয়ানমারের) অং সান সু চির সঙ্গে বৈঠককে আমার কাছে অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক মনে হয়েছে।

বাংলাদেশ সফরকালে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে একটি চুক্তি সইয়ের ব্যাপারে তিনি অত্যন্ত আশাবাদী। আর এটিই হবে আনান কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের প্রথম ধাপ।

ফেদেরিকা মগেরিনি বলেন, ‘এ ইস্যুতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার—উভয়কেই কাজ করতে আমরা উৎসাহিত করছি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও পুরো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় একে সমর্থন দেবে। ’ তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, সহিংসতা বন্ধ করা, শরণার্থীর স্রোত থামানো, রাখাইন রাজ্যে পূর্ণ মানবিক তৎপরতা চালানোর সুযোগ নিশ্চিত করা এবং শরণার্থীদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসন বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সোমবার সকালে আমাদের প্রথম, অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় আমি উৎসাহ বোধ করছি। ’

ফেদেরিকা মগেরিনি মিয়ানমারে চলমান গণতন্ত্রায়ণ প্রক্রিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের জোরালো সমর্থনের কথা জানান। তিনি বলেন, গণতন্ত্রায়ণে মিয়ানমারকে সমর্থন দেওয়া আমাদের অগ্রাধিকার। একই সঙ্গে আনান কমিশনের সুপারিশগুলো মিয়ানমারকে বাস্তবায়ন করতে হবে।

ফেদেরিকা মগেরিনি মনে করেন, সু চি আনান কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের পথে আছেন। রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান খুঁজে পেতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা দেবে।

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে সমালোচনা ও চাপ এড়াতে মিয়ানমার যখন বিদেশি অতিথিদের দৃশ্যত এড়িয়ে চলছিল, তখন আসেম বৈঠক নেপিডোতে বসেই মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টির এক সুযোগ সৃষ্টি করেছে। দৃশ্যত এ সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশ। ইইউর পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তাবিষয়ক হাইরিপ্রেজেন্টেটিভ ফেদেরিকা মগেরিনি গতকাল আসেম বৈঠকের আগে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে তাঁদের প্রত্যাশার কথা কেবল সু চির কাছেই নয়, সাংবাদিকদের কাছেও গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেছেন।

গত সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় পাওয়া খবরে জানা গেছে, ফেদেরিকা মগেরিনি নেপিডোতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আসেমের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের ফাঁকে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকগুলোতে ফেদেরিকা মগেরিনি রাখাইন রাজ্য পরিস্থিতি ও রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জোর দিয়েছেন। গতকাল প্লেনারি বৈঠকের আগে সু চির সঙ্গে বৈঠকে রাখাইন রাজ্য পরিস্থিতি, রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা করেন। এ ছাড়া তিনি গত রবিবার বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের অভিজ্ঞতাও তুলে ধরেন।

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে ইউরোপ ও এশিয়ার মন্ত্রীদের অংশগ্রহণে একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকের প্রস্তুতিও নেন সু চি ও ফেদেরিকা মগেরিনি। সেখানে তিনি রাখাইন রাজ্যে সংঘাত বন্ধ করা এবং সেখানে মানবিক সহায়তা কর্মীদের অবাধ প্রবেশাধিকার চান। এ ছাড়া তিনি রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি চুক্তি সই এবং আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের তাগিদ দেন।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গে বৈঠকেও বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসন বিষয়েও আলোচনা করেন।

এদিকে আসেম বৈঠকের ফাঁকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী গতকাল সুইজারল্যান্ড, হাঙ্গেরি, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তাঁরাও দ্বিপক্ষীয় বিষয়গুলোর পাশাপাশি রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশেষ করে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফিরে যাওয়া এবং টেকসই সমাধানের ওপর জোর দেন। আজ আসেমের বৈঠকের পর আরো দুই দিন অর্থাৎ আগামীকাল বুধ ও পরশু বৃহস্পতিবার মিয়ানমারে অবস্থান করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ওই সময় দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে একটি চুক্তির চেষ্টা চালাবে।

বাংলাদেশ মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান চায়। তবে মিয়ানমারের আন্তরিকতার ঘাটতি থাকায় এ ইস্যুতে দেশটির ওপর বৈশ্বিক চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছে বাংলাদেশ এবং দৃশ্যত তাতে সফলও হয়েছে। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, মিয়ানমারে সংকটের মূলে দেশটির সামরিক বাহিনী। এ কারণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমার সরকারের পাশাপাশি সামরিক বাহিনীকেও চাপ দিচ্ছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
এনজিও’র কার্যক্রম নজরদারির নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

ন্যাশনাল ডেস্ক : বাংলাদেশে পরিচালিত এনজিওগুলোর সব ধরনের কার্যক্রম নজরদারি করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভায় অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদ সভায় এক অনির্ধারিত আলোচনায় তিনি এ নির্দেশ দেন। সভায় উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মন্ত্রী বিষয়টি জানিয়েছেন।
তারা জানান, মন্ত্রিপরিষদ সভায় শিল্প কারখানাসহ সব পর্যায়ের শ্রমিকদের বেতনভাতা নিয়ে আলোচনার সময় কারখানাগুলোতে ট্রেড ইউনিয়ন কেমন চলছে এবং এগুলোতে বাইরের কেউ হস্তক্ষেপ করছে কিনা জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। সেসময় এনজিওগুলোর কার্যক্রম নজরদারির নির্দেশ দেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মন্ত্রী বলেন, ‘সভায় আলোচনার এক পর্যায়ে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, বাংলাদেশের শিল্প কারখানার শ্রমিকরা ভালো আছেন, তারা বেতনও ভালো পাচ্ছেন। এখন শুরুতেই শ্রমিকরা ৭/৮ হাজার টাকা বেতন পান।’
এ সময় নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাহজাহান খান বলেন, ‘বাংলাদেশের শ্রমিকরা ভালো আছেন, এটা ঠিক। তবে তাদের বেতন-ভাতা আরেকটু বাড়ানো উচিত। কারণ সরকারি কর্মচারীদের বেতন আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। কিন্তু সেটার সঙ্গে সমন্বয় করে শ্রমিকদের বেতন বাড়েনি। তাই তাদের বেতন আরও বাড়ানো উচিত।’
এ সময় শ্রম প্রতিমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘যেহেতু নৌমন্ত্রী শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন তাই মজুরি কমিশন পুনর্বিন্যাস করা যেতে পারে। কারণ বিদ্যমান শ্রম আইন অনুসারে পাঁচ বছর পরপর মজুরি কমিশন পুনর্গঠনের বিধান আছে। কিন্তু সর্বশেষ মজুরি কমিশন গঠনের পর এখনও পাঁচ বছর পূর্ণ হয়নি। ২০১৮ সালে কমিশনের মেয়াদ পাঁচ বছর পূর্ণ হবে। ২০১৩ সালে মজুরি কমিশন করা হয়েছিল। পুনর্গঠনের পর কমিশন যদি বেতন বাড়ানোর সুপারিশ করে তখন শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাড়ানো যেতে পারে।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রী মনোযোগ দিয়ে মন্ত্রীদের আলোচনা শুনছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি বাংলাদেশে পরিচালিত এনজিওগুলোর কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চান। তিনি আরও জানতে চান, এখন বাইরে থেকে গিয়ে কেউ কারখানার ভেতরে ট্রেড ইউনিয়নের আন্দোলন করতে পারে কিনা বা করে কিনা?’
উত্তরে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘এখন আর সেই সুযোগ নেই। কারণ, এখন কারখানার শ্রমিকরাই ট্রেড ইউনিয়ন করেন। আর এসব ট্রেড ইউনিয়নকে বিভিন্ন এনজিও পৃষ্ঠপোষকতা করে। তবে এনজিওগুলো কোথা থেকে ফান্ড নিয়ে আসে, তাদের কার্যক্রম কী, কোথায় সেই ফান্ড ব্যয় হয়―তা আমাদের মনিটর (নজরদারি) করা হয় না।’
তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘হ্যাঁ,এনজিওগুলোর কার্যক্রম নজরদারি করা উচিত।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বাংলাদেশে পরিচালিত এনজিওগুলোর কার্যক্রম নজরদারির নির্দেশ দেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest