সর্বশেষ সংবাদ-
সাতক্ষীরায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের পরিবারের অনুকুলে ২৬ লাখ টাকার চেক বিতরণশ্যামনগরে কাজী আলাউদ্দীনের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পদেবহাটা উপজেলা জামায়াতের সুধী সমাবেশপ্রাণসায়ের খাল বাঁচাতে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন ও সমাবেশদিনে ভোট, রাতে নয় আমার ভোট আমি দেব : আফরোজা আব্বাস অন্যায় কাজে কাউকে প্ররোচিত করবো না, উন্নয়নই হবে মূল লক্ষ্য : সাবেক এমপি হাবিবশোভনালীতে মানব পাচার প্রতিরোধ ও নিরাপদ অভিবাসন ডেস্ক উদ্বোধনআশাশুনির গোয়ালডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানববন্ধনজবাবদিহিতা ও মানবাধিকার সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে গোলটেবিল সভাতালায় টিআরএম কার্যক্রমের বকেয়া ক্ষতিপূরণের দাবিতে সাংবাদিক সম্মেলন

লাইন করে যুবতীদের গণধর্ষণ বয়স্কা ও বৃদ্ধদের নির্যাতন; খোলা আকাশের নিচে সন্তান জন্ম

মিয়ানমারের বুরাইঙ্গা পাড়া থেকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে লম্বা বিল হয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেন ইয়াসমিন সুলতানা নামের এক যুবতী। পাঁচ দিন হেঁটে গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি লাম্বা বিলে আসেন।

তিনি অকপটেই জানালেন, সেখানকার করুণ কাহিনী। বললেন, তার গ্রামে বৃদ্ধা ও তরুণীদের পৃথক লাইনে দাঁড় করানো হয়েছিল। সেখানে তরুণী যুবতীদের আলাদা একটি বাড়িতে নিয়ে বার্মিজ আর্মিরা গণধর্ষণ করেছে। তিনি নিজেও ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। তবে শুধু ধর্ষণই নয়, তার সামনেই তিন তরুণীকে গুলি করে হত্যাও করা হয়। নিজেকে অসুস্থ বলে হাতে ধরে পায়ে পড়ে কোনোমতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন ইয়াসমিন। শারীরিকভাবে দুর্বল থাকা ইয়াসমিনকে লম্বা বিলের একটি খালের কিনারে বসে থাকতে দেখা যায়। তিনি জানান, তার স্বামীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এক স্বজনের জন্য অপেক্ষা করছেন তিনি।  শুধু ইয়াসমিনই নন, তার মতো অসংখ্য যুবতী তরুণী মিয়ানমারে বার্মিজ আর্মি ও উগ্রপন্থি বৌদ্ধদের দ্বারা পাশবিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। শুধু নির্যাতনই নয়, অনেক তরুণীকে হত্যাও করা হয়েছে। চোখের সামনে বয়োবৃদ্ধ ও বৃদ্ধাদের ওপর নানাভাবে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। রোহিঙ্গা যুবকদের হত্যার পাশাপাশি পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে।   হোয়াইক্যং লম্বাবিল সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করে শিকদারপাড়ার বিধবা জয়নাব আক্তার (২২)। তিনি জানালেন, তার স্বামী ও ভাইকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা সাত দিন আগেই পুড়িয়ে হত্যা করেছে। তাকেও দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছে। চার সন্তান নিয়ে ছয় দিনে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, এখন এই ছেলে সন্তান নিয়ে কোথায় যাব, কী করব?  সরেজমিন লম্বাবিল ও আঞ্জুমানপাড়া সীমান্ত ঘুরে দেখা গেছে, রাখাইনের আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দেওয়ার পর ওপারের পোয়াখালী, নাইচাডং, শিকদারপাড়া, নাইছাপ্রু, হাতিপাড়া এলাকায় বাড়ি ঘরে আগুন দেওয়া হয়েছে। আগুনের লেলিহান শিখায় ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে গেছে গোটা এলাকা। বাংলাদেশে আসা একাধিক রোহিঙ্গা নারী ও পুরুষ জানান, এ পর্যন্ত সহিংসতায় অন্তত ৫ হাজার যুবতী নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তাদের অনেককেই নির্মমভাবে মেরে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া ১০ হাজার যুবককে গুলি করে ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। তবে জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী সহস াধিক যুবককে হত্যা করা হয়েছে রাখাইন রাজ্যে। দলে দলে ছুটে আসা রোহিঙ্গা নারী-পুরুষের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেছে, ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইন রাজ্যে নতুন করে শুরু হওয়া সহিংসতা তীব্র আকার ধারণ করেছে। গতকাল পর্যন্ত একই চিত্র লক্ষ্য করা যায়। মিয়ানমারের পোয়াখালী এলাকার হাবিবুল্লাহ (৫০) বলেন, তার ছেলে এরফানকে (৫) হত্যার উদ্দেশে পাহাড় থেকে নিচে নিক্ষেপ করে ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেলেও তার কোমর ভেঙে গেছে। মিয়ানমারের ঢেঁকিবুনিয়া এলাকার জয়নাল আবেদীন (৩৩) বলেন, অতর্কিত অবস্থায় তাদের বাড়িঘর লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে স্ত্রী ছৈয়দা খাতুন (২৯), ছেলে হাসান (৭), মো. ইছা (৫), মেয়ে মাহিদাকে (২) সঙ্গে নিয়ে এদেশে চলে আসেন।   জলপাইতলি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে আসা ঢেঁকিবুনিয়া এলাকার বাসিন্দা লোকমান হাকিম (৫০) ও তার ভাই মো. নোমান (৪৫) বলেন— স্ত্রী, পুত্র, জায়গা-জমি, গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি ফেলে জীবন বাঁচাতে চলে এসেছে বাংলাদেশে। এদের প্রত্যেকের অভিযোগ, মিয়ানমার সেনা ও বিজিপির সদস্যরা রাখাইনে যুবক-যুবতী চিহ্নিত করে হত্যায় মেতে উঠেছে। বয়োবৃদ্ধদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ।

সন্তান জন্ম দিলেন হাসিনা বেগম : মিয়ানমারের টম বাজার এলাকা থেকে ছয় দিন হেঁটে গতকাল উখিয়ার আঞ্জুমানপাড়া বিলে আশ্রয় নেন হাসিনা বেগম নামে এক রোহিঙ্গা গর্ভবতী নারী। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে খোলা আকাশের নিচে জন্ম দিলেন এক ছেলে সন্তান। এ সময় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছিল। ছিল না কোনো তাঁবু। প্রসব বেদনায় যখন কাতরাচ্ছিলেন, তখন তার পাশে তেমন কেউ ছিল না। স্বামীর সহযোগিতায় ফুটফুটে এক বাচ্চার জন্ম দেন হাসিনা বেগম। বেলা ১টার দিকে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি জানালেন, সুস্থ আছেন। তবে ক্ষুধার্থ। এ নিয়ে তার পাঁচ সন্তান। দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে এসেও সুস্থ বাচ্চা জন্ম দেওয়ায় চরম খুশিও তিনি। বাচ্চার নাম কী রাখবেন, জানতে চাইলে বাবা নাসির মোহাম্মদ বলেন, জিহাদ হোসেন। জিহাদ কেন নাম এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অনেক যুুদ্ধ করে স্ত্রী ও চার সন্তানকে নিয়ে বাংলাদেশে তিনি পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন। তাই বাচ্চার নাম জিহাদ হোসেন রাখা হয়েছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
ফ্লোরিডায় আরমার আঘাত, বিশ লাখ মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার মূল ভূখণ্ডে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় আরমা। অতি বর্ষণে বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে গেছে মিয়ামি, রাস্তাঘাট থেকে বাড়িঘর পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে গেছে। ফ্লোরিডার নেপলস ও মার্কো আইল্যাণ্ডে স্থানীয় সময় রবিবার বিকালে ৩ নম্বর ক্যাটাগরির ঘূর্ণিঝড় হিসেবে আছড়ে পড়ে এ ঝড়। এসময় দ্বিতীয়বারের মতো ভূমিধস হয় সেখানে। এর ফলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে অন্তত বিশ লাখ মানুষ। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সৃষ্ট দুর্ঘটনা থেকে এ পর্যন্ত চার ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এর আগে ফ্লোরিডার মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ প্রায় ৬৫ লাখ মানুষকে অন্যত্র সরে যেতে বলা হয়েছিল। ফ্লোরিডার পশ্চিম উপকূলের বিভিন্ন স্থানে প্রবল বাতাসে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে পানি প্রায় ১০ থেকে ১৫ ফুট পর্যন্ত উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

দেশটির জাতীয় হারিকেন সেন্টার জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রবিবার সকাল ৯টায় ফ্লোরিডা কিজ-এ ৪ নম্বর ক্যাটাগরির ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ঘণ্টায় ২১৫ কিলোমিটার গতিতে আঘাতে হানে আরমা। এরপর তা ফ্লোরিডার টাম্পা ও সেন্ট পিটার্সবুগের দিকে এগিয়ে যায়। আরমার আঘাতে ফ্লোরিডার বিশাল এলাকাজুড়ে টর্নেডো বয়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাসে আশঙ্কা করা হয়েছিল। জলোচ্ছ্বাসের কারণে সমুদ্রের পানি স্বাভাবিক উচ্চতার চেয়ে এখন তিন ফুট পর্যন্ত বেশি রয়েছে। সেখানে টের্নেডো সতকর্তা জারি করা হয়েছে।

ফ্লোরিডার দিকে ধেয়ে আসার আগে আরমা ক্যারাবিয়ান অঞ্চলে বেশ কয়েকটি দ্বীপে আঘাত হানে। এ পর্যন্ত আক্রান্ত এলায় প্রায় ২৭ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ফেডারেল এমারজেন্সি ম্যানেজমেন্ট অ্যাজেন্সির প্রশাসক ব্রক লং এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, জলোচ্ছ্বাসের ফলে অনেক মানুষ প্রাণ হারাতে পারেন এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাঁচটি রাজ্যের গভর্নরদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। ফ্লোরিডার পাশাপাশি আলাবামা, জর্জিয়া, সাউথ ক্যারোলিনা ও টেনেসির গভর্নরদের সঙ্গে ট্রাম্প কথা বলেছেন বলে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি, সিএনএন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
‘তল্লাশির সময় শিশুদের আছাড় মেরেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী’

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গত কয়েকদিনে ঘরে-ঘরে তল্লাশির সময় পুরুষদের না পেলেই শিশুদের আছাড় মেরে বাইরে ফেলেছে দেশটির সেনাবাহিনী। এরপরই ঘরে আগুন দিয়ে ভিটেমাটি ছাড়া করা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের। এ ঘটনায় শিশুদের কোমরের হাড় ভেঙে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রবিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে, তাদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

মংডুর কুলাবিল এলাকায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী এমন তাণ্ডবের পর বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন রোহিঙ্গা হাবিবুল্লাহ (৪০)। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে মো. ইরফান (৭) তৃতীয় শ্রেণিতে পড়তো। তাকে মিলিটারিরা ঘর থেকে ছুড়ে ফেলে দেওয়ায় তার কোমরের হাড় ভেঙে যায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্ত্রী রমিদা ও চার সন্তান নিয়ে কুলাবলি এলাকার বাড়িতে থাকি। গত ৬ সেপ্টেম্বর দিনে মিলিটারি আসে। তারা এসেই ঘরে প্রবেশ ঢুকে তল্লাশি শুরু করে। আরসা, আরসা বলতে থাকে। এরপর সবাইকে ঘর থেকে বের করে দেয়। বাচ্চারা বের হতে দেরি করলে তাদের ধরে ধরে আছাড় মেরে বাইরে ফেলে দেয়। এতে আমার ছেলে ইরফানের কোমরের হাড় ভেঙে যায়। এরপর আমরা বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলে আমাদের ঘরে তারা আগুন ধরিয়ে দেয়।’

হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘ছেলেকে নিয়ে চার দিন জঙ্গলে ও পাহাড়ে ছিলাম। আজ বিকাল ৩ টায় বাংলাদেশ সীমান্তে আসি। কিন্তু নৌকা না থাকায় পার হতে পারিনি। এরপর পানি কমে গেলে আসি।’

এই রোহিঙ্গা শরণার্থী বলেন, ‘আমার পরিবারের ১১জন এসেছি। চার দিন ধরে কিছু খাইনি। কোনও গ্রামেই লোক নেই। সবাই চলে এসেছে। যাদের টাকা-পয়সা আছে, তারাও চলে এসেছে নৌকা ভাড়া করে। ছেলেকে কোথায় চিকিৎসা করাব, তাও জানি না।’

হাবিবুল্লাহর সঙ্গে কথা বলার সময় তার ছেলে ইরফান গাছের নিচে বসা ছিল। তিনি ছেলেকে ধরে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু শিশুটি সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। শিশুটির বাবা বলেন, ‘আমাদের গ্রামে আর কোনও মানুষ নেই। আমি আগেই আসতাম। কিন্তু বুড়ো বাবা-মা আর কোমর ভাঙা ছেলেকে নিয়ে এতদিন জঙ্গলে জঙ্গলে থেকেছি। তাই দেরি হয়েছে।’

রবিবার সারাদিন টেকনাফের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে। তবে প্রথম দিকের চেয়ে এখন তুলনামূলক কম। রাতের বেলা তারা অন্ধকারে বাংলাদেশ সীমান্তে এসে অপেক্ষা করে। এরপর আগে আসা স্বজনরা তাদের জেলে নৌকায় করে নিয়ে আসেন।

আজিদা নামে এক নারী রবিবার সন্ধ্যায় কাইঞ্চারপাড় সীমান্ত দিয়ে পার হয়ে টেকনাফ এসেছেন। তার স্বামীর নাম আজিমুল্লাহ। মুংডুর কেয়ারিং প্রাং এলাকায় থাকেন। তার দুই বছরের মেয়ের নাম রাশিদা। তার স্বামী আজিমুল্লাহ এতদিন পালিয়ে ছিলেন। বাড়িতে ঢোকার সুযোগ পাননি। তাই মা-মেয়ে বাংলাদেশে আসতে পারেননি। তার বাবা-মা আগেই এসেছেন। স্বামী ৯ সেপ্টেম্বর রাতে বাড়িতে যান। এরপর তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে আসেন।

উল্লেখ্য, গত ২৪ আগস্ট থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনী নির্যাতন চালালে আশ্রয় নিতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গারা।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক কমিটির সভা অনুষ্ঠিত: অনুপস্থিত অনেক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাতক্ষীরা জেলার মাসিক আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সুষ্ঠুভাবে শারদীয় দূর্গা পুজা উদযাপনে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হয়। পাশাপাশি সভার সিদ্ধান্ত পরবর্তী সভায় লিপিবদ্ধ করে সদস্যদের দেওয়া, আশাশুনিতে নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ, বিদ্যুতের লোডশেডিং নিরসন, যানজট নিরসন, জঙ্গি তৎপরতা রোধ সংক্রান্ত, রাস্তাঘাট সংস্কার সংক্রান্ত, সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়া আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দৃঢ়তায় বর্তমানে জেলায় নাশকতাকারী জামাত-শিবির চক্র এবং জঙ্গিবাদ দমন করা গেলেও কিছু অত্যুৎসাহী পুলিশ সদস্যের কারণে বর্তমান সরকার ও আ ’লীগের ভাবমূর্তি জনগণের নিকট প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বলে মত প্রকাশ করা হয়। জেলার সর্বত্র আ ’লীগের নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে অহেতুক সাধারণ মানুষকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও আটকের বিষয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানানো হয়।
এছাড়াও সভায় সাতক্ষীরা পৌরসভা কর্তৃক অবৈধভাবে অতিরিক্ত ৫ হাজার টাকা নিয়ে ইজিবাইক চালকদের নিবন্ধন দেয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এ ব্যাপারে বিআরটিএ সাতক্ষীরা সার্কেলের সহকারী পরিচালক তানভীর আহমেদ চৌধুরী বলেন, ইজিবাইক রেজিস্ট্রেশনের ব্যাপারে বিআরটিএর কোন অনুমোদন নেই। এটা অবৈধ যানবাহন। এটা যদি কেউ রেজিস্ট্রেশন দেয় তাহলে আইনগতভাবে বিআরটিএ দায়ী থাকবে না। সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা।
জেলার থানা ওয়ারী মামলা অনুযায়ী আগস্ট ২০১৭ মাসে মামলা হয়েছে ২শ’ ২৬টি।
এদিকে, জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই কমিটির সভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের অনেকেই অনুপস্থিত থাকায় প্রশ্ন উঠেছে এই সভা তার গুরুত্ব হারাচ্ছে কিনা। গতকালের সভায় জেলার ৭টি উপজেলা পরিষদের ৫জন চেয়ারম্যানই অনুপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত দুই উপজেলা চেয়ারম্যানের একজন আবার সভার শুধুমাত্র শেষ ১৫ মিনিট উপস্থিত ছিলেন। ৭জন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অর্ধেকের বেশি জন অনুপস্থিত ছিলেন। সংসদ অধিবেশন শুরু হওয়ায় অবশ্য কমিটির কোন উপদেষ্টা অর্থাৎ সংসদস সদস্যদের কেউই উপস্থিত ছিলেন না। এছাড়া জেলা শিল্প ও বণিক সমিতিসহ একাধিক সংগঠনের কোন প্রতিনিধিই একাধিক সভায় অনুপস্থিত ছিলেন বলে সভার একাধিক সদস্য আমাদেরকে নিশ্চিত করেছেন।
এত গুরুত্বপূর্ণ একটি সভায় অনুপস্থিত থাকার কারণ জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সদস্য আমাদেরকে বলেন, “প্রায় প্রতিটি সভায়ই একই ধরনের বিষয় নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তই বাস্তবায়িত হয় না। এমনও হচ্ছে যে, কোন একটি বিশেষ বিষয়ে টানা কয়েকটি সভায় বারবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হচ্ছে কিন্তু বাস্তবায়িত হচ্ছে না। এটিও সভায় অনেকের অনুপস্থিত থাকার অন্যতম কারণ।”
গতকালের সভায় বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আব্দুল হান্নান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল লতিফ খান, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বিশ^াস সুদেব কুমার, সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আব্দুল খালেক, অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার কে.এম আরিফুল হক, সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. তাওহীদুর রহমান, সাতক্ষীরা এনএসআইয়ের উপ-পরিচালক মো. মোজাম্মেল হক, তালা উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ, কলারোয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ স্বপন, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল বারী, দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাফিজ আল আসাদ, কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম মাঈনুদ্দিন, তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফরিদ হোসেন, বিআরটিএ সাতক্ষীরা সার্কেলের সহকারী পরিচালক তানভীর আহমেদ চৌধুরী, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি জিয়াউদ্দিন আহমেদ, সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার রবীন্দ্রনাথ দাস, সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপদের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সৈয়দ গিয়াস উদ্দিন, জেলা শিক্ষা অফিসার এস.এম ছায়েদুর রহমান, জেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার অলোক কুমার তরফদার, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আতিকুল হক, সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ চৌধুরী, বাংলাদেশ পুজা উদযাপন পরিষদ জেলা সভাপতি মনোরঞ্জন মুখার্জী, জেলা কৃষকলীগের সভাপতি বিশ^জিৎ সাধু, পৌর কাউন্সিলর জ্যোৎন্সা আরা, পৌর কাউন্সিলর শেখ আব্দুস সেলিম, জেলা আনসার ভিডিপি’র জেলা কমান্ডিং প্রতিনিধি নুর ইসলাম কাগজি প্রমুখ।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
রোহিঙ্গাদের পক্ষেই সারা বিশ্ব : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, আজ সমগ্র বিশ্ব রোহিঙ্গাদের পাশে রয়েছে। এ ধরণের হত্যা গ্রহণযোগ্য নয়, এটি বন্ধ করতে হবে। রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে ব্রিফি এ তিনি এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলছে। প্রচেষ্টাগুলো পাবলিকলি বললে পরিকল্পনা নষ্ট হয়ে যায় এমন মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অভিযোগ উঠেছে গতমাসে মিয়ানমার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যের উপর রোহিঙ্গারা হামলা চালিছে। ধরে নিলাম রোহিঙ্গা হামলাও চালিয়েছে, সেজন্য সবগুলো রোহিঙ্গাদের ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে দিতে হবে। এটি কোন ধরণের নীতি? কোন ধরণের মন মানসিকতা।

মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় আজ রোববার বিকেল চারটার দিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কূটনৈতিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। প্রথমে পাশ্চাত্যের দেশগুলোর কূটনীতিকদের সঙ্গে এবং পরে মুসলিম দেশের কূটনীতিকদের আলাদাভাবে ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

ব্রিফিং শেষে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, নরওয়ের শীর্ষ কূটনীতিকেরা প্রথম আলোকে জানান, এ পর্যন্ত বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ায় বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে। রোহিঙ্গাদের নিয়ে এখন যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তা দূর করতে কীভাবে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করা যায়, এ নিয়ে ব্রিফিংয়ে আলোচনা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ সমস্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

জাতিসংঘের হিসাব মতে, গত দুই সপ্তাহে ২ লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। বাংলাদেশের শরণার্থীশিবিরগুলোতে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের থাকার মতো যথেষ্ট জায়গা হচ্ছে না।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
কপোতাক্ষ নদে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা

তালা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার তালায় রবিবার বিকালে গ্রাম বাংলার বহু পুরাতন দিনে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে দশটি দল অংশগ্রহণ করেন।
নৌকাবাইচ অনুষ্ঠানে তালা সদর ইউপি চেয়ারম্যান সরদার জাকির হোসেন’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফরিদ হোসেন।
বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ন-সাধারণ সস্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মহা-বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মো. এনামুল ইসলাম, তালা থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ হাসান হাফিজুর রহমান, তালা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও তালা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সরদার মশিয়ার রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, তালা কপোতাক্ষ নদে নৌকাবাইচ এ ১০টি দল স্বতঃস্ফূর্ত্বভাবে অংশগ্রহণ করেন। পরপর ৩টি বাইচ অনুষ্ঠিত হয় তার মধ্যে মহিষাডাঙ্গা নৌকাবাইচ দল ১ম স্থান, তালা চরগ্রাম নৌকাবাইচ দল ২য় স্থান এবং কুলপোতা নৌকাবাইচ দল ৩য় স্থান অধিকার করেন। প্রথম স্থান অধিকারকারী দলকে ৫ হাজার টাকা, ২য় স্থান অধিকারকারী দলকে ৪ হাজার টাকা এবং ৩য় স্থান অধিকারকারী দলকে ৩ হাজার টাকা পুরুষ্কৃত করা হয়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
রোহিঙ্গাদের রক্ষায় ওআইসি সদস্যদের হস্তক্ষেপ চাইলেন রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ওআইসির সদস্যদের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, নিজ দেশে রোহিঙ্গাদের ওপর বারবার অত্যাচারের ফলে তাদের অস্তিত্ব যেমন হুমকির মুখে পড়ছে এবং তেমনি বাংলাদেশকে বিপুল অসহায় রোহিঙ্গার বোঝা বহনের মতো মারাত্মক সংকটের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

আজ রোববার কাজাখস্তানের রাজধানী আস্তানায় দ্য প্যালেস অব ইন্ডিপেন্ডেন্সে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) প্রথম ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্মেলন’-এ ভাষণ দানকালে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, ‘মানবিক বিবেচনায় বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, নিজ দেশের নাগরিকত্বসহ সব ধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত অসহায় রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যাপারে আমি আপনাদের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এই রোহিঙ্গারা উপর্যুপরি নির্মমতা ও বাস্তুচ্যূতির শিকার।

রাষ্ট্রপতি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের ওপর ‘সরাসরি বিরূপ প্রভাব’ সৃষ্টি করেছে। রাখাইন রাজ্যে তাদের নির্মমভাবে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। ফলে প্রাণ রক্ষার্থে পার্শ্ববর্তী দেশে বিপুল রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মিয়ানমারের এই সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

কাজাকস্তানের রাজধানীতে এই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্মেলনে ওআইসি সদস্য দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা অংশ নিয়েছেন।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিও মুসলিম বিশ্বকে প্রযুক্তি ব্যবহারকারীদের জগতে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর জোর দিয়েছেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
নীতিমালা না মেনে ইট ভাটা নির্মাণ: দেবহাটায় ছকিনা ব্রিকসকে পরিবেশ অধিদপ্তরের নোটিশ

আসাদুজ্জামান : সাতক্ষীরায় পরিবেশ অধিদপ্তরের নীতিমালা লংঘন করে ও প্রশাসনের পূর্বানুমতি ছাড়াই দেবহাটার দক্ষিণ কুলিয়া গ্রামে বসতবাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সন্নিকটে চার ফসলি জমিতে প্রস্তাবিত ছকিনা ব্রিকস নামের ইট ভাটা নির্মাণ কাজ অব্যহত রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসির অভিযোগে ভিত্তিতে ভাটা মালিক মোশারফ হোসেন মুসাকে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনা পরিবেশ অধিদপ্তরে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। একই সাথে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ভাটার যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশও প্রদান করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার মধ্যম একসরা গ্রামের দ্বীন আলী গাজির ছেলে শহরের ইটাগাছা কামার পাড়া (বউ বাজার) এলাকায় বসবাসকারি নব্য কোটিপতি মোশারফ হোসেন ওরফে মুসা দেবহাটা উপজেলার দক্ষিণ কুলিয়া গ্রামে বসতবাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সন্নিকটে চার ফসলি জমিতে প্রস্তাবিত ছকিনা ব্রিকস নামে একটি ইট ভাটা নির্মাণ কাজ শুরু করেন। উচ্চমূল্যে হারির টাকা দিয়ে জমির মালিকদের প্রলুব্ধ করে তিনি ডিড নেয়ার চেষ্টা করেন। এছাড়া স্থানীয় কয়েকজন মাদকসেবি যুবকদের টাকা দিয়ে তিনি ভাটা নির্মাণের পক্ষে কাজ করাচ্ছেন। মুছার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তারা ডিডে স্বাক্ষর করার জন্য জমির মালিকদের উপর চাপ সৃষ্টি করছেন। একই সাথে তারা বর্গাচাষিদের জমি ছেড়ে দেয়ার জন্য হমকি দিচ্ছে। জমির ডিড না দিলে পুলিশ দিয়ে সংশ্লিষ্টদের ধরে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে। স্থানীয় জনগণ আপত্তি করা শর্তেও পরিবেশ অধিদপ্তরের নীতিমালা অমান্য করে ও প্রশাসনের পূর্বানুমতি ছাড়াই ইতিমধ্যে তিনি সেখানে ভাটার চিমনি ও মটর নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ করে ফেলেছেন। ভাটার বাকি কাজও দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে।
এলাকাবাসি জানান, সেকেন্দ্রা মাঠে ইটভাটা নির্মাণ করা হলে এই এলাকায় মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যায় দেখা দেবে। এই এলাকায় আনসার আলি সরকারি প্রাইমারি স্কুল, কুলিয়া উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, দক্ষিন কুলিয়া এবতেদায়ি মাদ্রাসা এবং কুলিয়া এলাহী বক্স দাখিল মাদ্রসা, কুলিয়া জামে মসজিদসহ কয়েকটি প্রতিষ্টান রয়েছে। এখানে ভাটা হলে কালো ধোয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। একই সাথে নষ্ট হবে এই এলাকার হাজার হাজার বিঘা জমির ফসল। এখানকার প্রতিটি জমিতে বছরে কমপক্ষে চারটি করে ফসল উৎপাদন হয়ে থাকে। এই ফসলি জমিতে ইটভাটা হলে তার ক্ষতিকর প্রভাবে সর্বশান্ত হবে এখানকার দীনমজুর, দরিদ্র কৃষক ও বর্গাচাষিরা। বসতবাড়ি ছেড়ে এলাকা ত্যাগ করতে হবে শতাধিক পরিবারের। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হবে এলাকার প্রাণবৈচিত্র্য। বিপন্ন হবে মানুষের স্বাস্থ্য।
তারা অভিযোগ করে বলেন, ভাটা নির্মাণের ক্ষতিকর বিষয় সর্ম্পকে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকসহ স্থানীয় প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানিয়ে কোন ফল হয়নি। প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। বরং ভাটা মালিক মুসা প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দক্ষিন কুলিয়া এলাকায় ফসলি জমিতে প্রস্তাবিত ছকিনা ব্রিকস নামের ইট ভাটার নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। একই সাথে ইট ভাটার বিরোধীতাকারি গ্রামবাসীদেরকে সন্ত্রাসীদের দিয়ে নানাভাবে হুমকি-ধামকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।
এদিকে, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন মুসার ইট ভাটার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর পক্ষে দেবহাটার দক্ষিন কুলিয়া গ্রামের মৃত হেবাজউদ্দিন গাজীর ছেলে মোঃ আজহারুল ইসলাম পরিবেশ অধিদপ্তর খুলনা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে প্রস্তাবিত ছকিনা ব্রিকস নামের ইট ভাটা মালিক মোশারফ হোসেন মুসাকে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনা পরিবেশ অধিদপ্তরে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। একই সাথে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ভাটার যাবতয়ি কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশও প্রদান করা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মো. সাইদুর রহমান গত ২৯ আগস্ট তাকে এই নোটিশ প্রদান করেন। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকেও এই নোটিশের অনুলিপি প্রদান করা হয়েছে। এরপরও তিনি ভাটার কার্যক্রম বন্ধ না রেখে দিনরাত চব্বিশ ঘণ্টা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, আমরা তাকে ভাটা নির্মাণের কোন অনুমতি দেইনি। অভিযোগ পেয়ে সেখানে একজন অফিসারকে পাঠিয়েছিলাম কিন্তু এলাকার লোক অনেকেই ভাটার পক্ষে বিপক্ষে কথা বলেছেন। পরিবেশের অনুমতি নিয়েই ভাটার কাজ শুরু করার কথা থাকলেও এখানকার লোক উল্টোটা করে। এরপরও আমি পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে কথা বলবোÑ বলে তিনি জানান।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest