সর্বশেষ সংবাদ-
বিএনপির কণ্ঠে স্বৈরাচারের সুর শুনতে পাচ্ছি– সাতক্ষীরায় গোলাম পরওয়ারজাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসে সাতক্ষীরায় বিআরটির রোড শোতালায় বালু বিক্রয় নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৪ : ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগলাবণ্যবতী খালের উপর কাঠের ব্রিজটি যেন মৃত্যুর ফাঁদসাতক্ষীরা-২ আসনে এবি পার্টির দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন জি এম শাকিলবর্ণিল সাজে সাতক্ষীরায় লেকভিউ রাগবি সেভেনস ট্রফি’র উদ্বোধনপিআর পদ্ধতির দাবিতে সাতক্ষীরায় সেমিনারশ্যামনগরে আজাবা শাকের মেলা ও রান্না প্রতিযোগিতাসংকটের মুহূর্তে জনগণের কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠা কালবেলার সাহসী ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে থাকবেসাতক্ষীরায় শ্রমিক নেতা মনিকে আটকের প্রতিবাদে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঝাউডাঙ্গায় ঢাকাগামী একটি যাত্রীবাহী পরিবহনের ধাক্কায় আল মামুন (১৯) নামের এক ভ্যানচালক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন। রোববার বেলা ১১টার দিকে সাতক্ষীরা-যশোর সড়কের ঝাউডাঙ্গা বাজারে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত আল মামুন সদর উপজেলার বাবুলিয়া গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে। তবে, আহত চারজনের নাম পরিচয় এখনও জানা যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভ্যান চালক আল মামুন সড়কের পাশে দাড়িয়ে তার ভ্যানে ধান উঠাচ্ছিল। এ সময় সাতক্ষীরা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা কে-লাইন পরিবহনের একটি কোচ তাকে ধাক্কা দেয়। এতে আল মামুনসহ পাঁচজন আহত হয়। আহতদের তাৎক্ষণিক সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ১২টার দিকে আল মামুন মারা যায়। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন মোল্যা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিহত আলমামুনের লাশ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

তালা প্রতিনিধি : তালা-কপিলমুনি (পাইকগাছা)-জেঠুয়া ডিসি সড়কের উদ্বোধন করা হয়েছে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে রোববার বিকালে প্রায় এক কিলোমিটার এ সড়কের উদ্বোধন করেন সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের সংসদ সদস্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এ্যাড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা মোড়ল আব্দুর রশিদের সভাপতিত্বে ও জালালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ রাম প্রসাদের পরিচালনায় জেঠুয়া জাগরণী মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে এক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী এএসএম সাহেদুর রহিম, জেলা ওয়াকার্স পার্টির সম্পাদক উপাধ্যক্ষ মহিবুল্লাহ মোড়ল, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক প্রণব ঘোষ বাবলু, নগরঘাটা ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান লিপু, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার মোঃ আলাউদ্দীন জোয়ার্দ্দার, জালালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম মুক্তি, উপজেলা ওয়াকার্স পার্টির সম্পাদক প্রভাষক রফিকুল ইসলাম,উপজেলা প্রকৌশলী কাজী আবু সাইদ মোঃ জসিম, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সরদার মশিয়ার রহমান, আওয়ামী লীগনেতা সিরাজুল ইসলাম, ওয়াকার্স পার্টি নেতা মফিজুল হক জাহাঙ্গীর, সব্যসাচী মজুমদার বাপ্পী, নজরুল ইসলাম প্রমুখ।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

নিজস্ব প্রতিবেদক: সারাদেশে মুক্তিযোদ্ধাদের উপর হামলা ও সহিংস সন্ত্রাসী ঘটনার প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আয়োজনে রোববার দুপুরে সাতক্ষীরা শহরের শহীদ নাজমুল স্মরণিতে এ মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়। মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা ইউনিটের কমান্ডার মোশারফ হোসেন মশু, ডেপুটি কমান্ডার আবু বক্কর সিদ্দিক, জেলা সাংগঠনিক কমান্ডার তবিবর রহমান, সদর উপজেলা কমান্ডার হাসানুজ্জামান, মোস্তফা নুরুল আলম, প্রফেসর আব্দুল বারী, আব্দুর রশিদ প্রমুখ।  বক্তারা বলেন, সারাদেশে মুক্তিযোদ্ধারা নানাভাবে নিগৃহীত হচ্ছে। সম্প্রতি সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের উপর হামলার ঘটনা বেড়েই চলেছে। সচিবালয় থেকে শুরু করে সর্বত্র তাদের হয়রানি করা হচ্ছে। বক্তারা অবিলম্বে এসব ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানান।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে ডিপিও সদস্যদের প্রকল্প অগ্রগতি বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার বেলা ১১টায় শহরের পলাশপোলস্থ ডিআরআরএ’র কার্যালয়ে অগ্রগতি বিষয়ক পর্যালোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কোহিনুর ইসলাম। প্রতিবন্ধীদের জন্য একীভুত স্বাস্থ্য ও পুনর্বাসন সেবা সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয় সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত প্রকল্প অগ্রগতি বিষয়ক সভায় বক্তব্য রাখেন, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাহিত্য ও ক্রীড়া সম্পাদক এম, রফিক সাংবাদিক রবিউল ইসলাম, এম. বেলাল হোসাইন, শাহজাহান কবির ও প্রতিবন্ধিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আমিনুল ইসলাম। সভায় প্রকল্পের অগ্রগতি বিষয়ে উপস্থাপনা করেন ডিআরআরএ’র জেলা ম্যানেজার মোঃ আবুল হোসেন। সভায় বক্তারা বলেন, সাতক্ষীরা জেলায় বর্তমানে ২৮ হাজার এর বেশি প্রতিবন্ধি রয়েছে। তারা সবাই আমাদের একটা অংশ। তারা সমাজের বোঝা নয়। তাদের বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন সম্ভব না। তাই আমাদের সকলকে খেয়াল রাখতে হবে। যেন প্রতিবন্ধিরা তাদের অধিকার পায়। তাদেরকে আমাদের সহযোগিতায় করতে হবে। জেলা ম্যানেজার আবুল হোসেন বলেন তারা ২০১৫ সালে এ সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটায় জেলায় প্রতিবন্ধিদেরকে থেরাপি সেবা বিনামুল্যে ও প্রত্যেক হাসপাতালকে প্রতিবন্ধি বান্ধব করণ সহ একাধিক সেবা প্রদান করলে সে লক্ষে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী জেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃর্ণমূলের মতামতের ভিত্তিতে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ প্রশাসক হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সাতক্ষীরা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ নজরুল ইসলাম মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে সাধারণ জনগনের ব্যানারে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও বিভিন্ন ইউপি সদস্যবৃন্দ। রোববার বিকাল সাড়ে ৪টায় শহরের শহিদ আব্দুর রাজ্জাক পার্ক থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়। সহ¯্রাধিক নেতা-কর্মীর অংশগ্রহণে মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে শহরের নিউ মার্কেটস্থ শহিদ আলাউদ্দিন চত্বরে এক বিশাল সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জেলা যুবলীগের আহবায়ক আব্দুল মান্নান, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর হুসাইন সুজন, সাধারণ সম্পাদক এহসান হাবিব অয়ন, সদর থানা আওয়ামীলীগের সহ- দপ্তর সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বাবু, সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান মিজান, সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন মারুফ, পৌর যুবলীগের আহবায়ক মনোয়ার হোসেন অনু, যুগ্ম আহবায়ক তুহিনুর রহমান তুহিন প্রমুখ। বক্তারা বলেন, ‘মুনসুর আহমেদ দীর্ঘ পাঁচ বছর জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দায়িত্বকালীন সময়ে তিনি দলের জন্য কোন কাজ করেননি। টাকা ছাড়া কোন বরাদ্দ অনুমোদন করেননি। আগামী জেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুনসুর আহমেদকে দেওয়া মনোনয়ন প্রত্যাহার করে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ নজরুল ইসলামকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেয়া হয়। সমাবেশে জেলার সাধারণ মানুষ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ শতাধিক ইউপি মেম্বর ও চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

নিজস্ব প্রতিবেদক: মাদকাসক্তদের প্রশিক্ষণ ও পূনর্বাসনের মাধ্যমে সমাজের মুল ধারায় ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকারের রাজস্ব খাতের আওতায় ৭দিন মেয়াদী কবুতর ও মৎস্য পালন প্রশিক্ষণ কোর্সের শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর সাতক্ষীরার আয়োজনে ও মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র আবর্তনের সহযোগিতায় রবিবার বিকালে শহরতলীর কাঠালতলাস্থ আবর্তনের ক্যাম্পাসে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে কোর্সের উদ্বোধন ঘোষণা করেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ঢাকার দারিদ্র বিমোচন ও ঋণ প্রকল্পের পরিচালক এরশাদ-উর-রশীদ। সাতক্ষীরা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক জহরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শাহীনুল আলম, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর সাতক্ষীরার সহকারী পরিচালক আব্দুল কাদের, আবর্তণের পরিচালক পৌর কাউন্সিলর আলহাজ্ব কাজী ফিরোজ হাসান। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন, সাতক্ষীরা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা সঞ্জিব কুমার দাশ, হুমায়ুন কবির, সুবীর হাসান, আবুল কালাম, মাদকসক্ত নিরাময় কেন্দ্র আবর্তনের গিয়াস উদ্দীন খান, মনিরুজ্জামান, শাহ জামাল প্রমুখ।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

প্রেসবিজ্ঞপ্তি : বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সাতক্ষীরা জেলা শাখার কার্যনির্বাহী কমিটির সকল কর্মকর্তা ও নির্বাহী সদস্যবৃন্দকে অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, আগামী ২৮ ডিসেম্বর ২০১৬ জেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে জেলা আওয়ামীলীগের এক জরুরি সভা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মিলনায়তন (পাকাপুলের মোড়) অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত সভায় সকল জেলা নেতৃবৃন্দকে উপস্থিত হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুনসুর আহমেদ।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

1480218708-gaffar-01নিজস্ব প্রতিবেদক: ৪১টি বিয়ে করেছেন তিনি। এখন ঘরে আছেন একজন। অন্যরা হয় ভিন্ন সংসারে চলে গেছেন, না হয় মারা গেছেন। তবে ৪১ স্ত্রীর সবার নাম মনে নেই আবদুল গফফার খানের।
পঞ্চাশোর্ধ্ব এই ব্যক্তি জানান, কখন, কোথায়, কাকে, কীভাবে বিয়ে করেছেন, সে কি আর মনে রাখা যায়?
বিয়ের কোনো কাবিননামা আছে কি না জানতে চাইলে গফফার জানান, কাবিননামা দিয়ে কী হবে? বিয়ে হয়েছে দুজনের মত অনুযায়ী। দুই-একটি কাবিননামা থাকলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নেই।
ছিপছিপে চেহারার  আবদুল গফফার খান এখন অসুস্থ হয়ে বাড়িতে রয়েছেন। তাঁর হাতে, পায়ে ও দেহের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেছিল ভাগ্নে সাঈদ ও তার সহযোগীরা। অসুস্থতার কারণে বাড়ি থাকার চেষ্টা করলেও দেনার দায়ে টিকে থাকা দায় হয়ে পড়েছে।
গতকাল শনিবার সকালে আবদুল গফফারের বাড়ি তালা উপজেলার দাদপুর গ্রামে পৌঁছাতেই দেখা মিলল বেশ কয়েকজন পাওনাদারের। চেয়ারে বসে মুখে সিগারেট নিয়ে গফফার খান বলেন, ‘আমার কাছে তারা টাকা পাবে, কিন্তু টাকা দেওয়ার সাধ্যি নেই।’
দাদপুর গ্রামের জাফর আলী খানের ছেলে এই গফফার খান। এলাকায় প্রচার রয়েছে তিনি জাদু জানেন। তাঁর দাবি, অনেক মন্ত্রও জানেন তিনি। ইচ্ছা করলে আপনার হাতের ঘড়ি, আংটি একমন্ত্রে উড়িয়ে দিতে পারেন। বললেন, ‘যত বড় তালা হোক, আমি তুড়ি দিলেই তা খুলে যাবে।’
গফফারকে যেভাবে চেনেন স্থানীয়রা: স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, গফফার খান একটি অজ্ঞান পার্টির নেতৃত্ব দেন। যেকোনো মানুষের সঙ্গে খাতির জমিয়ে বাড়িতে পৌঁছে খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে বাড়ির লোকজনদের অজ্ঞান করে বাড়ির সব কিছু লুটপাট করার কাজ করে আসছেন তিনি। আর এ নিয়ে বেশ কয়েকবার গণপিটুনির শিকার হয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ এক বছর আগে তালার ইসলামকাটীতে একই ঘটনা ঘটাতে গিয়ে গণপিটুনি খেয়ে আহত হয়ে প্রায় পঙ্গুত্ব বরণ করেন1480218744-gaffar-03 আবদুল গফফার।
তবে গফফার খান বলেন, ‘ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার ভাগ্নে আবু সাঈদ আমাকে মারধর কইরেছ।’
বিয়ের ফিরিস্তি: কয়টি বিয়ে করেছেন জানতে চাইলে আবদুল গফফার খান বলেন, তিন-চারটি করেছি আর কি। কিছুক্ষণ পর বলেন, মোট আটটি বিয়ে করেছেন।
‘আপনি অনেক বিয়ে করেছেন এমন প্রচার কেন?’
জবাবে আবদুল গফফার বলেন, ‘আমি ৪১টি বিয়ে করেছি, কিন্তু এসব জেনে আপনি কী করবেন?’
৩০ বছর আগে তালার ইসলামকাটীর নওশের আলীর মেয়ে মঞ্জুয়ারাকে বিয়ে করেছিলেন গফফার খান। সেই প্রথম স্ত্রী এখন আর বেঁচে নেই। শেষদিকে যশোরের মনিরামপুরের হাসাডাঙা গ্রামের কোরবান আলীর মেয়ে রওশন আরাকে বিয়ে করেন গফফার। পরে কেশবপুর উপজেলার মধ্যকূল গ্রামের জয়নাল হোসেনের মেয়ে আছিয়াকে বিয়ে করেন তিনি। আছিয়ার একটি ছেলে প্রতিবন্ধী জাহাঙ্গীর।
এর আগে নিজ গ্রামের শমসের খাঁর মেয়ে খুকি বিবিকে ঘরের বউ হিসেবে নিয়ে আসেন গফফার খান। খুকির ছেলে আব্দুস সেলিম এখন বরিশালে একজন শ্রমজীবী। ঘরে থাকা স্ত্রী আছিয়ার মেয়ে ফাতেমা। তাঁর বিয়ে হয়েছে তালার আটারোইতে। গফফার খানের আরেক স্ত্রীর নাম পাওয়া গেছে। তিনি রিজিয়া খাতুন।
বউ আসে, বউ যায়: স্থানীয় কিছু বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গফফার খান হঠাৎ বিয়ে করে বাড়িতে বউ নিয়ে আসেন। কিছুদিন থাকেন। তারপর দুজনই উধাও হয়ে যান। এরপর দেখা যায়, আবারও কোনো নারীকে বিয়ে করে এনেছেন। কিছুদিনের মধ্যে তিনিও উধাও। এসব স্ত্রীর পিত্রালয় কোথায় বা তাদের নাম-পরিচয় কী, সে সম্পর্কে গ্রামের লোকজন সম্পূর্ণ অন্ধকারে। তাদের দাবি, গফফার খান এতটাই জাদুবিদ্যা জানেন যে, তিনি ইচ্ছা করলে বাড়ির সম্পদ তো দূরের কথা, একজন ব্যক্তিকেও নিখোঁজ করে দিতে পারেন। আর এই ভয়ে গফফার খানের বিরুদ্ধে কেউ কোনো কথা বলতে চান না।
দাদপুর গ্রামের বৃদ্ধা রিজিয়া খাতুন ও সেলিনা বেগম জানান, গফফার খানের অগণিত বিয়ে। এটা জেনেও তাঁকে কেউ কিছু বলে না। এর একটাই কারণ, তিনি একটি অজ্ঞান পার্টির পরিচালক এবং জাদুকর। তাঁর ক্ষতি করলে তিনিও ক্ষতি করে দেবেন।
অভিনব উপায়ে চুরি: কুমিরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান দাদপুর গ্রামের আবদুর রশিদ জানান, তিন বছর আগে গফফার খান দল নিয়ে তাঁর বাড়িতে ঢুকে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তাঁকে ও তাঁর স্ত্রীকে অজ্ঞান করে সবকিছু লুট করে নিয়ে যান।
ইসলামকাটী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক শামসুর রহমান জানান, গফফার খান তাঁর বাড়িতে এক বছর আগে এসে পরিচয়পর্ব সেরে কৌশলে রান্নাঘরে ঢোকেন। এরপর রান্না করা মাংসে চেতনানাশক মিশিয়ে দেন। এই মাংস খেয়ে তাঁর স্ত্রী তহমিনা খাতুন ও প্রতিবেশী বিল্লাল ও ইসমাইল রাতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এই সুযোগে গফফার ঘরে ঢুকে টাকা-পয়সা, সোনা গয়না লুটপাট করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন। পরে মারপিট দিয়ে তাঁকে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাঁকে নিয়ে যায়।
পুলিশকে গফফার খান জানান, ‘আমি ৮০ হাজার টাকা নিয়ে বরই গাছ কিনেছিলাম, সেই টাকা কেড়ে নিয়ে মাস্টার শামসুর রহমানের ছেলে ও অন্যরা আমাকে মারধর কইরেছে।’
উল্টো গফফার বাদী হয়ে মামলা করেন হাসিবুর রহমান, রওশন আলী, মেজবাউর রহমান, আলম মোড়ল, কালাম শেখ ও আকরামের নামে। এতে তাঁরা জেলও খেটেছেন। সে মামলা এখনো চলছে।
ইসলামকাটীর মাজিদা খাতুন বলেন, গফফার তাঁর বাড়িতে এসে ছেলেকে মুড়ি-চানাচুর কিনে আনতে পাঠান। এই ফাঁকে গফফার রান্না করা বেগুনের তরকারিতে ট্যাবলেট গুঁড়ো করে দেন। জানাজানি হওয়ায় তাঁরা অজ্ঞান হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন।
ইসলামকাটী গ্রামের আনিসুর, বাবু, রওশন ও আকরামদের বাড়িতে একইভাবে খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে তাঁদের অজ্ঞান করে লুটপাট করে নিয়ে যান গফফার খান। ১৩ হাজার টাকা দিলে মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে ২৬ হাজার টাকা দিতে সক্ষম দাবি করে গফফার খান সুফিয়া খাতুন লক্ষ্মীর বাড়িতে একটি মেশিন নিয়ে কাজ করতে থাকেন। একপর্যায়ে ঘরে আগুন ধরে গেলে গফফার সেখান থেকে পালিয়ে যান। গফফার খান এভাবেই জাল টাকা এনে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন।
প্রতারণার জাল: আবদুল গফফারের প্রতারণার জাল ছড়িয়ে রয়েছে বরিশাল, রাজশাহী, বগুড়া, যশোর, খুলনাসহ বিভিন্ন জেলায়। সেসব স্থানে অঘটন ঘটিয়ে দিব্যি পালিয়ে চলে আসেন নিজ গ্রামে। তবে নিজ গ্রামে তিনি তেমন কোনো অঘটন ঘটাননি বলে দাবি দাদপুরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের। যে পরিবারকে টার্গেট করবেন গফফার সেখানে তিনি মিষ্টি হাতে নিয়ে যান। আলাপচারিতার সুযোগে তিনি বাড়ির রান্নাঘরে ঢুকে হাড়ি খুঁজে তাতে থাকা খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে দেন ঘুমের ওষুধ অথবা অচেতন করার ওষুধ। এভাবে পরিবারের সদস্যদের অজ্ঞান করে গফফার খান লুটে নেন টাকা ও সোনা-গয়না। ম্যাজিক দেখিয়ে নারীদের নজর কাড়েন তিনি। এই সুযোগে ভাব জমিয়ে বিয়ে করেন তাঁকে। তারপর নিয়ে আসেন বাড়িতে। কিছুদিন থাকার পর গফফার আর নববধূ নিখোঁজ হয়ে যান।
এ পর্যন্ত ১৭  বার জেলে গেছেন গফফার খান। অথচ একবার মাত্র ৯১ দিন জেলে ছিলেন। আর বাকি সময় কয়েকদিনের মধ্যে বেরিয়ে আসেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে গ্রামের লোকজন বলেন, জেলখানার মধ্যেও তিনি জাদুবিদ্যা ফলিয়ে সবার সঙ্গে প্রতারণা করে থাকেন। কীভাবে এত দ্রুত জামিন পান, তা নিয়ে তাঁরা বিস্মিত।
গ্রামে অনেকবার সালিস হয়েছে গফফার খানকে নিয়ে। কিন্তু কোনো সালিস কার্যকর হয়নি বলে জানালেন গ্রামের আতিয়ার রহমান। প্রতিদিনই তাঁর খোঁজে গ্রামে আসেন বাইরের লোক। তাঁরা বলেন, বিয়ে নিয়ে প্রতারণার কথা। অথবা টাকার কথা। জাল টাকার কথা।
গফফার খান বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে যে যাই বলুক সব মিথ্যা কথা। তিনি বলেন, ‘আগে অনেক কিছু করেছি। এখন কিছু করি না।’
দাদপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান জানান, গফফার কোনো নারীর চোখের দিকে একবার চোখ রাখলে ওই নারী প্রায় অচেতন হয়ে যান। এমন অবস্থায় তাঁকে সুস্থ করার নামে অনেক অপকর্ম করেন তিনি। এই সুযোগে তাঁর কাছে ভালো সেজে তাঁকে বিয়ে করেন। এভাবে গ্রামে দফায় দফায় নতুন বউদের নিয়ে আসেন গফফার খান। ফলে তাঁদের নাম-পরিচয় জানা সম্ভব হয় না।
কুমিরা ইউপির চেয়ারম্যান শেখ আজিজুল ইসলাম বলেন, গফফার খান একজন পাকা চোর ও প্রতারক। মানুষকে অজ্ঞান করে, চুরি-ডাকাতি করে সম্পদ লুটপাট করেন তিনি। এ ছাড়া জাল টাকার ব্যবসাও করেন। তিনি বলেন, গফফার খান বারবার জেলে যান। বারবার ফিরে আসেন।
ওই এলাকার ইউপি সদস্য দাদপুর গ্রামের লালু চৌধুরী বলেন, ‘গফফার খান অনেক নারীর সর্বনাশ করেছেন। এখন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁকে ভালো পথে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি আমরা। প্রতারণা করে অনেক টাকা কামাই করলেও গফফার খান তা রাখতে পারেন না। আপন লোকজনের পেছনে সেই টাকাপয়সা খরচ করেন।’
গফফারের একটি অজ্ঞান বাহিনী আছে। এই বাহিনীর অন্য সদস্যদের চিহ্ণিত করতে পারলে ব্যবস্থা গ্রহণ সহজ হতো।
গফফার খানের স্ত্রী আছিয়া খাতুন ও প্রতিবন্ধী ছেলে জাহাঙ্গীর জানান, তাঁরা তাঁকে অসৎ পথ থেকে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু কোনো কথা তিনি শোনেন না।
পুলিশ যা জানে, গফফার যা বলেন: পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিবুল ইসলাম বলেন, গফফার খান একজন তালিকাভুক্ত চোর ও প্রতারক। সুনির্দিষ্ট মামলা হলেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে দ্রুত বেরিয়ে যান তিনি।
গফফার খানের দাবি, তিনি প্রতারক নন। বহু বিয়ে করলেও কাউকে নিজে বঞ্চিত করেননি।
‘বউ চলে গেলে তাতে আমার কি। আমি তো তাকে ফেরত কিংবা তালাক দেওয়ার জন্য আনিনি। তার ভালো লাগেনি, তাই চইলে গেছে। যাকগে।’
জেলে গিয়েছিলেন মিথ্যা ডাকাতি, চুরি ও প্রতারণার কারণে।
‘আগে যাই করি না কেন, এখন ভালো হয়ে গেছি। এখন শুধু দেনার টাকা নিয়ে দুশ্চিন্তা।’
আলাপের একপর্যায়ে গ্রামের বহু লোক সেখানে হাজির হন। তাঁরা সবাই এসেছেন পাওনা টাকার জন্য। কথা না বাড়িয়ে শৌচাগারে যাওয়ার কথা বলে পালিয়ে যান আবদুল গফফার খান।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest