সর্বশেষ সংবাদ-
ভারতীয় পর্ন ভিডিওতে সাংবাদিকের ছবি জুড়ে ব্লাকমেইল করে চাঁদা দাবিকালিগঞ্জে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দূধর্ষ ডাকাতিজুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে সাতক্ষীরায় এতিমদের মাঝে খাবার বিতরণভোমরার ইউপি চেয়ারম্যানকে ৪৮ ঘন্টা সময় বেঁধে দিলেন ইউনিয়নবাসীআশাশুনিতে শহীদের স্মরণে দুঃস্থদের মাঝে জামায়াতের খাবার বিতরণদেবহাটায় বিয়ের প্রলোভনে কলেজ শিক্ষার্থীর সাথে অবৈধ সম্পর্কের অভিযোগে থানায় মামলাস্বৈরাচার ঠেকিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার এনসিপিরসাতক্ষীরায় দ্রুতগামী পিকআপের চাপায় ভ্যান চালকের মৃত্যুকোন সাংবাদিক যেন হয়রানির শিকার না হয়–সাতক্ষীরায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিব দীর্ঘদিন কাজ করেও সরকারি স্বীকৃতি মেলেনি বিআরটিএ’র সীল মেকানিকদের

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শতকোটি টাকার অনিয়ম তদন্তে দুদক

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৪ কোটি টাকার আর্থিক অনিয়ম, কলেজ র‌্যাংকিংয়ের নামে দুর্নীতি, ফলাফল কেলেঙ্কারিসহ কয়েকডজন অভিযোগ তদন্ত করতে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তর মূল্যায়নের ক্ষেত্রে দ্বৈত পরীক্ষক পদ্ধতি চালু আছে। দুই পরীক্ষকের মধ্যে ২০ নম্বরের বেশি হলে তৃতীয় পরীক্ষক দিয়ে খাতা মূল্যায়ন করা হয়। কিন্তু ক্র্যাশ প্রোগ্রামের নামে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে একক পদ্ধতি চালু করা হয়েছে ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে। এতে ২৫০-৩০০ খাতা মূল্যায়নে জন্য একজন পরীক্ষককে সময় দেয়া হয় ১০-১২ দিন। এভাবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সবাইকে পরীক্ষার্থী বানিয়ে ফেলেছে। আর কর্তৃপক্ষ দাবি করছে সেশন জট কমানোর।

২০১৩ খ্রিস্টাব্দ থেকে ২০১৭ খ্রিস্টাব্দের ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কেনাকাটা, ফলাফল জালিয়াতির তদন্ত রিপোর্ট, নিয়োগ, অনুষ্ঠানের খরচ, বোনাস ও সিটিং অ্যালাউন্স ভাউচার, অনার্স, মাস্টার্স কোর্স চালু ও কলেজ র‌্যাংকিং নীতিমালাসহ আরও অনেক তথ্য চেয়েছে দুদক। ১২ ক্যাটাগরিতে চাওয়া প্রায় শতাধিক তথ্য কার্টন ভর্তি করে ইতোমধ্যে দুদকের কাছে জমা দিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এর আগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বড় ধরনের আর্থিক অনিয়ম, শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সরকারের রাজস্ব ক্ষতির প্রমাণ পায় রাজস্ব হিসাব নিরীক্ষা অধিদপ্তর। সরকারের বার্ষিক অডিটে ধরা পড়ে ১০৪ কোটি ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি, অনিয়ম ও হিসাবের গরমিল। অডিট রিপোর্টে আপত্তি তোলা হয়েছে অন্তত ৪১টি আর্থিক খাতে।

যেখানে ভিসিসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের ক্যাম্পাসের বাইরে বাড়ি ভাড়া, অতিরিক্ত গাড়ির জ্বালানি খরচ, ক্যাম্পাসবহির্ভূত স্থানে গবেষণা কেন্দ্রের ব্যয়, ভূমি রেজিস্ট্রেশনে অতিরিক্ত আর্থিক ক্ষতি, আইন লঙ্ঘন করে গাড়ি কেনা, অনিয়ম, জমির অনিয়মিত নামজারিতে অস্বাভাবিক অর্থ ব্যয়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আপত্তি তোলা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৭ই জানুয়ারি দুদকের পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এসব তথ্য চাওয়া হয়। আর দুদকের সহকারী পরিচালক মো. হাফিজুর রহমানকে অনুসন্ধান টিমের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি কয়েকটি কার্টন ভর্তি করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দুদকে তথ্য দিয়েছে।

অপরদিকে গত ডিসেম্বর মাসে ১০৪ কোটি টাকার অডিট আপত্তির তদন্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের একটি টিম। কমিশনের সদস্য প্রফেসর শাহনেওয়াজ আলীর নেতৃত্বে এই টিম ইউজিসি’র চেয়ারম্যানের কাছে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে। ইউজিসি’র চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি তদন্ত প্রতিবেদন আমার কাছে জমা পড়েছে। কিন্তু সেখানে কী আছে তা বলা যাবে না।

দুদকের কাছে দেয়া অভিযোগের মধ্যে আছে, প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের ক্ষেত্রে নীতিমালা না মানা, ফলাফল কেলেঙ্কারি, বিভিন্ন ভবন নির্মাণ ও কেনাকাটায় পুকুরচুরি, ধানমন্ডিতে বাড়ি কেনায় অনিয়ম, বিভিন্ন সিটিং অ্যালাউন্স, বোনাসের অর্থ অপচয়, বিভিন্ন কমিটি, উপ-কমিটির জন্য ব্যয়কৃত অর্থের হিসাবে গরমিল, কলেজ র‌্যাংকিং, অনার্স-মাস্টার্স কোস খোলার নামে বাণিজ্য।

দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, সব ধরণের কেনাকাটা, ভবন নির্মাণসহ আর্থিক সংশ্লিষ্ট সব ধরণের তথ্য নেয়া হবে। সেখান থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সামনে এনে তদন্তে নামবে সংস্থাটি। এসব অভিযোগ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক অডিটে ১০৪ কোটি ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি, অনিয়ম ও হিসাবের গরমিল পাওয়ার সরকারি অডিট অধিদপ্তরের প্রতিবেদনটি আমলে নিবে দুদক।
দুদকে আসা অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ধানমন্ডিতে প্রায় ১০০ কোটি টাকায় কেনা বাড়ি নিয়ে আর্থিক অনিয়ম হয়েছে। বাড়িটি প্রথমে ৭০ কোটি টাকায় কেনার সিদ্ধান্ত হলেও ভিসি’র নিকটাত্মীয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের লিগ্যাল অ্যাডভাইজার এবং প্রকৌশল দপ্তরের পরিচালক মিলে সেটি ৯০ কোটি টাকায় দলিল করেন। সেখান থেকে বড় অংকের একটি কমিশন চলে যায় সংশ্লিষ্টদের পকেটে। রেজিস্ট্রি বাবদ ৫ লাখ টাকা খরচ হওয়ার কথা থাকলেও সেটি করা হয় ২৫ লাখ টাকায়। এছাড়াও এই বাড়িতে চারতলায় উঠার জন্য বাড়ির ডিজাইনের বাইরে নতুন করে ক্যাপসুল টাইপের লিফট বসানো হয়। এই লিফটের বাজার মূল্য ২৫ লাখ টাকা হলেও খরচ দেখানো হয়েছে ৪৫ লাখ টাকা। বাড়ি সংস্কারের নামে বড় অংকের টাকা খরচ দেখানো হয়েছে যা অপচয় হিসেবে দেখছেন সরকারি অডিট বিভাগ। রাজধানীর আগারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের জায়গায় টুইন টাওয়ার নির্মাণের জন্য ১০ কোটি টাকায় কনসালটেন্ট নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ৫ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এই কনসালটেন্ট জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-ভিসি বর্তমানে ওআইসি পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মুনাজ আহমেদ নূরের সম্পর্কিত একটি ফার্মকে দিয়ে।
বোনাস ও সিটিং অ্যালাউন্সে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ এসেছে দুদকের কাছে। সেখানে বলা হয়, অফিস সময়ে ভিসিসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা মিটিং করার নামে ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা পর্যন্ত সিটিং অ্যালাউন্স নেন। দিনে গড়ে ৪টা পর্যন্ত মিটিং এ অ্যালাউন্স নেয়ার নজির আছে। মূনাজ আহমেদ থাকাকালীন এই প্র্যাকটিস শুরু হয় যা এখন চলছে। এছাড়া অনুষ্ঠান-নির্ভর হয়ে পড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের বাবদ খরচ, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কেন্দ্রের বরাদ্দ ভাউচার ও পরিশোধের সব কাগজপত্র দুদকের পক্ষ থেকে চাওয়া হয়েছে। দুদকের কাছে অভিযোগে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর প্রোগ্রামে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কেন্দ্রের ভাড়াবিহীন হলেও শুধু কমিশন খাওয়ার জন্য প্রতিবারই ভাড়া পরিশোধ করা হয়েছে বলে ভাউচার দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে দুদকের পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী সাংবাদিকদের বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে যেসব তথ্য চাওয়া হয়েছে তার বেশির ভাগ কর্তৃপক্ষ দিয়েছে। বাকি কিছু তথ্য প্রধানমন্ত্রীর প্রোগ্রাম থাকায় তারা সময় নিয়েছেন। আমাদের হাতে আসা তথ্যগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে। বাকি তথ্য পেলে এটা নিয়ে কাজ শুরু করবো।
সারাদেশে ৬টি আঞ্চলিক কেন্দ্র নির্মাণের বড় ধরনের আর্থিক কেলেঙ্কারি অভিযোগ উঠেছে। সেই আঞ্চলিক কেন্দ্র নির্মাণের তথ্য চাওয়া হয়েছে দুদকের পক্ষ থেকে। দুদকের কাছে অভিযোগে বলা হয়, বিভিন্ন অনুষ্ঠানের প্রকৃত ব্যয়ের চেয়ে ৩/৪ গুণ বেশি দেখিয়ে টাকা লোপাটের হিড়িক চলছে। ব্যান্ডউইথ কেনার নামে দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, টিএন্ডটি থেকে ৪০ এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ দিয়ে চলছিল। কিন্তু তৎকালীন একজন প্রো-ভিসি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ১০০ এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ কেনা হয়। এটা কেনার পেছনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ডিজিটাল এবং অনলাইন কার্যক্রম জোরদারের কথা বলা হয়েছে। বেসরকারি ১০০ ব্যন্ডউইথের ডাটার জন্য টিএন্ডটির মেইন সার্ভার দিয়ে ইন-আউট করে। এতে ৪০ ব্যান্ডউইথের বেশি খরচ হয় না। বাকিটা ব্যান্ডউইথ দিয়ে আইটি শাখার লোকজন বাণিজ্য করার অভিযোগ উঠেছে। কম্পিউার কেনাকাটা, ডাটা রিকভারি সেন্টার নির্মান, ইন্টিগ্রেটেড সফ্‌টওয়ার, ডিজিটাল অ্যাটেনডেন্স মেশিন, আর্চওয়ে ও সিসিটিভি, ইন্টারনেট ওয়াইফাই, লিফ্‌ট কেনাকাটায় অনিয়ম হয়েছে। এসব জিনিসপত্র কেনাকাটায় সব ভাউচার চাওয়া হয়েছে দুদকের পক্ষ থেকে। অভিযোগে আরো বলা হয়, রাজধানীর ৭টি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হলেও নানাভাবে অসহযোগিতা করার অভিযোগ ওঠে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি’র বিরুদ্ধে। তার অনুমতি ব্যতীত কোনো তথ্য ঢাবিকে না দেয়ার কথা বলা হয় সব শাখাকে।
সেশনজট দূর করতে নেয়া ক্র্যাশ প্রোগ্রামে দ্রুত সময়ে পরীক্ষা ও ফল প্রকাশের অন্তরালে চলে অন্য বাণিজ্য। এই ফল প্রকাশের বিভিন্ন সময় জালিয়াতি করতে গিয়ে ধরা খায় কর্মকর্তারা। দেশের বিভিন্ন কলেজে অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালুর নামে টাকা খাওয়ার হিড়িক উঠেছে। ক্লাস না করেও টিউটোরিয়াল ২০ নম্বরের মধ্যে ১৮-১৯ নম্বর দেয়া হচ্ছে। এটির সঙ্গে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সিন্ডিকেট জড়িত। কলেজ র‌্যাংকিং নামে নতুন পদ্ধতিতে প্রায় সব বড় কলেজগুলোতে নম্বর বেশি দেয়ার এক ধরনের অসৎ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। যারা যত নম্বর বেশি দিবে তারাই র‌্যাংকিং-এ এগিয়ে থাকবে। এভাবে সিদ্ধেশ্বরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজসহ কয়েকটি নামহীন কলেজকে তালিকাভুক্ত করার অভিযোগ রয়েছে। কলেজগুলো ওই তালিকা ভাঙ্গিয়ে জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়, ব্যানার ফেস্টুন তৈরি করে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
এমসিকিউ তুলে দেয়া হচ্ছে

প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে বহুনির্বাচনী প্রশ্ন (মাল্টিপল চয়েস কোয়েশ্চেনস-এমসিকিউ) তুলে দেয়া হচ্ছে।পাবলিক পরীক্ষায় অনিয়ম-দুর্নীতি কমাতে এর আগে দুই দফায় ১০ নম্বর করে এমসিকিউ প্রশ্ন কমানো হয়। এবার এ প্রশ্নপদ্ধতি পুরোপুরি তুলে দিতে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মূলত প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে এমসিকিউ রাখা হচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের মেধার সঠিক মূল্যায়ন করতে শতভাগ লিখিত ‘সৃজনশীল প্রশ্নে’ (সিকিউ) পরীক্ষা নেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে বড় আকারের সেমিনার আয়োজন করে সেখানে সবার মতামত নিয়ে তা চূড়ান্ত করা হবে।

উন্নত দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিদেশীদের পরামর্শে এমসিকিউ পদ্ধতি চালুর সিদ্ধান্ত হয় ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে। সব প্রস্তুতি শেষ করে ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দের এসএসসি পরীক্ষায় প্রথমবারের মতো প্রতি বিষয়ে ৫০ নম্বরের এমসিকিউ চালু হয়।

গত কয়েকবছর যাবত বলা হচ্ছে এমসিকিউ প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে প্রকৃত মেধা যাচাই হচ্ছে না। এ ছাড়া ভালো ফল করতে অনেক শিক্ষক টাকার বিনিময়ে পরীক্ষার হলেই শিক্ষার্থীদের সরাসরি অথবা বোর্ডে উত্তর লিখে দিচ্ছেন। আবার সঠিক উত্তরসহ প্রশ্নপত্র আগেভাগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর তা পেয়ে শিক্ষার্থীদের নম্বর পাওয়া সহজ হচ্ছে।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চলমান এসএসসি পরীক্ষা সুষ্ঠু, নকলমুক্ত ও ইতিবাচকভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে গঠিত ‘জাতীয় মনিটরিং এবং আইন-শৃঙ্খলা কমিটির জরুরি সভায় এমসিকিউ পদ্ধতি তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এ বিষয়ে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী বলেন, এমসিকিউ পদ্ধতি নিয়ে শিক্ষাবিদদের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, এটা ২০১৭ থেকে বন্ধ করা হবে। তখন ১০ নম্বর কমানো হয়। শিক্ষাবিদদের নিয়ে সেমিনার করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, শতভাগ সৃজনশীল প্রশ্ন থাকলে ফেসবুকে আর উত্তর লিখে দেয়ার সুযোগ থাকবে না। মেধারও সঠিক মূল্যায়ন হবে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, এমসিকিউ তুলে দিতে আমিই সভায় প্রস্তাব করি। তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তও হয়েছে।

১৯৯২ খ্রিস্টাব্দের এসএসসি পরীক্ষায় প্রতি বিষয়ে ৫০ নম্বরের এমসিকিউ চালু করা হয়। বাকি ৫০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা (সিকিউ)। ৫০ নম্বরের এমসিকিউ উত্তর দিতে প্রতি বিষয়ে ৫০০টি এমসিকিউ প্রশ্ন নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। যার নাম ছিল প্রশ্নব্যাংক। ৫০ নম্বরের উত্তর দিতে শিক্ষার্থীরা ৫০০ এমসিকিউ মুখস্ত করে পরীক্ষায় বসত। তখন এমসিকিউ ও সিকিউ মিলে ৩৩ নম্বর পেলেই পাস করত। ফলে শিক্ষার্থীরা রচনামূলক অংশের লেখাপড়া বাদ দিয়ে শুধু ৫০০ এমসিকিউ মুখস্থ করত। এতে পাসের হার রাতারাতি বাড়তে থাকে। এতে শিক্ষার মান নামতে শুরু করে। এ অবস্থায় ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে নির্ধারিত ৫০০ নম্বরের এমসিকিউ তুলে দেয়। তবে , এতেও কিছু হয়নি। এমসিকিউর উত্তর পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থীদের বলে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটতে থাকে। পরে ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে এমসিকিউর পূর্ণ নম্বর ৫০ থেকে কমিয়ে ৪০ করা হয়। কিন্তু পরীক্ষার হলে শিক্ষকদের এমসিকিউর উত্তর বলে দেওয়ার প্রবণতা কমেনি। নকল ঠেকাতে কেন্দ্র বিনিময় বিনিময় প্রথা ও প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মধ্যে চুক্তিভিত্তিক উত্তর বলে দেওয়ার প্রতিযোগিতা শুরু হয়।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত বছর এসএসসি পরীক্ষায় এমসিকিউ প্রশ্ন কমিয়ে ৩০-এ নামিয়ে আনা হয়। চলমান এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে নানা উদ্যোগের পরও বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের এমসিকিউ প্রশ্ন উত্তরসহ ফাঁস হয়েছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
কোচিংবাজ ৭২ শিক্ষকের এমপিও বাতিল হচ্ছে

দুর্নীতি দমন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী রাজধানীর চারটি স্কুল ও কলেজের কোচিংবাজ ৭২ জন শিক্ষকের  বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাদের এমপিও বাতিল, স্থগিত এমনকি বরখাস্তও করা হতে পারে। তাদেরকে কারণ দর্শণোর নোটিশ দিতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং–বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা লঙ্ঘনের দায়ে ওই সব শিক্ষককে তিন ধরনের শাস্তি দেওয়া হবে।

প্রথমত, এমপিওভুক্ত হলে এমপিও স্থগিত, বাতিল, বেতন কমিয়ে দেওয়া বা বরখাস্ত করতে হবে। দ্বিতীয়ত, এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের এমপিওবিহীন শিক্ষক হলে প্রতিষ্ঠান থেকে দেওয়া বেতন স্থগিত বা চাকরি থেকে বরখাস্তের মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তৃতীয়ত, প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত না হলে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা, বেতন স্থগিতের মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর কোচিং–বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে সরকার ওই সব প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেবে।

উল্লেখ্য, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের।

কয়েক দিন আগেও দুদকের তালিকা অনুযায়ী কোচিং-বাণিজ্যে জড়িত রাজধানীর ২৫ জন মাধ্যমিক শিক্ষককে দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় বদলি করা হয়।

কোচিংবাণিজ্যে লিপ্ত ৭২ জন শিক্ষকের মধ্যে রয়েছে আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের ৩৬ জন, মতিঝিল স্কুল এন্ড কলেজের ২৪ জন, ভিকারুন নিস নূন স্কুল এন্ড কলেজের ৭ জন এবং রাজউক উত্তরা স্কুল এন্ড কলেজের ৫ জন শিক্ষক। এর মধ্যে রাজউক উত্তরা মডেল স্কুল এন্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো: সোহরাব হোসাইন।

এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান টিম অনুসন্ধান করে গত বছরের ৪ঠা ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ঢাকা মহানগরের স্বনামধন্য আটটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৯৭ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি পাঠায়। স্কুলগুলোর মধ্যে বেসরকারি চারটি ও সরকারি চারটি স্কুল রয়েছে।

বেসরকারি স্কুলগুলোর মধ্যে রাজধানীর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৩৬ জন শিক্ষক, মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২৪ জন, ঢাকা ভিকারুননিসা নূন স্কুল এ্যান্ড কলেজের ৭ জন, রাজউক স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৫ জন রয়েছেন। আর সরকারি চারটি স্কুলের মধ্যে মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ১২ জন, মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ জন, খিলগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১ জন এবং ধানমন্ডি গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের ৮ জন শিক্ষক রয়েছেন। সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী বিধিমালা অনুযায়ী অসদাচরণ হিসেবে গণ্য করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায় বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

চিঠিতে বলা হয়, কোচিং বন্ধে কোনো আইন না থাকায় সাধারণত কোচিং বা টিউশনি থেকে উপার্জিত আয়ের ওপর কোনো ভ্যাট বা ট্যাক্স দেওয়া হয় না। ফলে এভাবে উপার্জিত আয় অনুপার্জিত আয়ে পরিণত হয়। কোচিং বাণিজ্যের ফলে যেভাবে অনৈতিক আয় ভোগ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে, তেমনি এটি বুদ্ধিবৃত্তিমূলক মেধা সৃষ্টির প্রয়াসের পরিবর্তে অবৈধ অর্থ উপার্জনের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া কোচিং এর কারণে শিক্ষার্থীরা বিশেষ সাজেশন অনুসারে স্বল্প সংখ্যক প্রশ্ন পড়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। ফলে পূর্ণাঙ্গ বই সম্পর্কে তারা ধারণা পাচ্ছে না।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ঢাকা মহানগরের স্কুল অথবা কলেজের কোচিং বাণিজ্যের সাথে জড়িত শিক্ষক -শিক্ষিকাদের বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত অভিযোগের ভিত্তিতে কমিশন অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করে। ৬ সদস্য বিশিষ্ট অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়। অনুসন্ধান টিমের দাখিলকৃত কোচিং বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত ৮টি বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তালিকাও পঠানো হয়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
ধনেপাতা, এক কথায় বিপদজনক!

নিত্যদিনের বিভিন্ন খাবারে ধনেপাতা ব্যবহার করে থাকেন খাবারের গন্ধ এবং স্বাদে একটা পরিবর্তন আনার জন্য। ধনেপাতার বৈজ্ঞানিক নাম হল কোরিয়ানড্রাম স্যাটিভাম। কিন্তু কখনও কি কল্পনা করেছেন যে এই সুস্বাদু খাবারটির কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে?

অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি কথা হল, এই সুপরিচিত সবুজ সবজিটির অনেক ঔষধি গুণাগুণের পাশাপাশি অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও বিদ্যমান। যা নিয়মিত খেলে আমাদের শরীর দিনদিন অসুস্থ হয়ে যেতে পারে।

১) লিভারের ক্ষতিসাধন: অতিরিক্ত ধনেপাতা খেলে এটি লিভারের কার্যক্ষমতাকে খারাপভাবে প্রভাবিত করে থাকে। এতে থাকা এক ধরনের উদ্ভিজ তেল শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে আক্রান্ত করে ফেলে। এছাড়া এটাতে এক ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে যেটা সাধারণত লিভারের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে কিন্তু দেহের মাঝে এর অতিরিক্ত মাত্রার উপস্থিতি লিভারের ক্ষতিসাধন করে।

২) নিম্ন রক্তচাপ: অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়ার ফলে দেহের হৃৎপিন্ডের স্বাস্থ্য নষ্ট করে ফেলে, যার ফলে নিম্ন রক্তচাপ সৃষ্টি করে। বিশেষজ্ঞরা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এই ধনেপাতা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাই এটি অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে নিম্ন রক্তচাপের উদ্ভব ঘটতে পারে। এছাড়া এটি হালকা মাথাব্যথারও উদ্রেক করতে পারে।

৩) পেট খারাপ: স্বাভাবিকভাবে ধনেপাতা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল বিষয়ক সমস্যা দূর করে থাকে কিন্তু বেশি পরিমাণে ধনেপাতা সেবন পাকস্থলীতে হজমক্রিয়ায় সমস্যা তৈরি করে থাকে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে এক সপ্তাহে ২০০ এমএল ধনেপাতা আহারে গ্যাসের ব্যথা ওঠা, পেটে ব্যথা, পেট ফুলে ওঠা, বমি হওয়া হওয়ারও সম্ভাবনা দেখা যায়।

৪) ডায়রিয়া: ধনেপাতা অল্প খেলে পেটের সমস্যা দূর হয় কিন্তু এটি বেশি পরিমাণে খেলে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। এছাড়া এর ফলে ডিহাইড্রেশন হতে থাকে। ফলে ডায়রিয়ার সমস্যাটি হতেই থাকে। তাই এই ধরনের সমস্যা এড়াতে প্রতিদিনের খাবারে ধনেপাতা কম পরিমাণে ব্যবহার করুন।

৫) বুকে ব্যথা: অতিরিক্ত ধনেপাতা আহারে বুকে ব্যথার মত জটিল সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এটা শুধুমাত্র অস্বস্তিকর ব্যথাই সৃষ্টি করে না তা দীর্ঘস্থায়ীও হয়ে থাকে। এজন্য এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে দৈনন্দিন আহারে কম করে এই ধনেপাতা খেতে পারেন।

৬) নিঃশ্বাসের সমস্যা: আপনি যদি শ্বাসকষ্টের রোগী হয়ে থাকেন তাহলে এই ধনেপাতা আহার থেকে বিরত থাকুন। কেননা এটি আপনার শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা করে থাকে যার ফলে ফুসফুসে অ্যাজমার সমস্যা হতে পারে। এই ধনেপাতা খেলে মাঝে মাঝে ছোট ছোট নিশ্বাস নিতেও সমস্যা তৈরি হয়।

৭) অ্যালার্জীর সমস্যা: ধনেপাতার প্রোটিন উপাদানটি শরীরে আইজিই নামক অ্যান্টিবডি তৈরি করে যা শরীরের বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদানকে সমানভাবে বহন করে থাকে। কিন্তু এর অতিরিক্ত মাত্রা উপাদানগুলোর ভারসাম্য নষ্ট করে ফেলে। ফলে অ্যালার্জীর তৈরি হয়। এই অ্যালার্জীর ফলে দেহে চুলকানি, ফুলে যাওয়া, জ্বালাপোড়া করা, র্যা শ ওঠা এই ধরনের নানা সমস্যা হয়ে থাকে।

৮) ত্বকের সংবেদনশীলতা: সবুজ ধনেপাতাতে মোটামুটিভাবে কিছু ঔষধি অ্যাসিডিক উপাদান থাকে যেটি ত্বককে সূর্যরশ্মি থেকে বাঁচিয়ে সংবেদনশীল করে থাকে। কিন্তু অতিরিক্ত সেবনে সূর্যের রশ্মি একেবারেই ত্বকের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না ফলে ত্বক ভিটামিন কে থেকে বঞ্চিত হয়। এছাড়া ধনেপাতা ত্বকের ক্যান্সার প্রবণতাও তৈরি করে থাকে।

৯) ভ্রূণের ক্ষতি: গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়া ভ্রূণের বা বাচ্চার শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকারক। ধনেপাতাতে থাকা কিছু উপাদান মহিলাদের প্রজনন গ্রন্থির কার্যক্ষমতাকে নষ্ট করে ফেলে যার ফলে মহিলাদের বাচ্চা ধারণ ক্ষমতা লোপ পায় এবং বাচ্চা ধারণ করলেও গর্ভকালীন ভ্রূণের মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে।

১০) প্রদাহ: অতিরিক্ত ধনেপাতা সেবনের আরেকটি বিশেষ পার্শ্ব প্রতক্রিয়া হল মুখে প্রদাহ হওয়া। এই ঔষধিটির বিভিন্ন এসিডিক উপাদান যেটি আমাদের ত্বককে সংবেদনশীল করে থাকে পাশাপাশি এটি মুখে প্রদাহেরও সৃষ্টি করে। বিশেষ করে এর ফলে ঠোঁট, মাড়ি এবং গলা ব্যথা হয়ে থাকে। এর ফলে সারা মুখ লাল হয়েও যায়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
এবার বার্সেলোনাও হোঁচট খেল

লা লিগার সর্বশেষ ম্যাচে লেভান্তের বিপক্ষে ড্র করে হোঁচট খেয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। এবার সেই পথেই হেঁটেছে তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা। এসপানিওলের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করে হোঁচট খেয়েছে কাতালানরা। এই হারের পরও অবশ্য লা লিগার শীর্ষস্থানের দখলটা ভালমতোই আছে বার্সার কাছে।

এসপানিওলের মাঠে প্রথমার্ধটা কেটেছিল গোলশূণ্যভাবে। ৬৬ মিনিটে ম্যাচের প্রথম গোলটি করেছিলেন এসপানিওলের স্ট্রাইকার জেরার্ড মোরেনো। ৮০ মিনিট পর্যন্ত এই ১-০ গোলের ব্যবধানেই এগিয়ে ছিল এসপানিওল। হারের শঙ্কাই হয়তো চেপে বসেছিল বার্সেলোনা সমর্থকদের মনে। কিন্তু ৮২ মিনিটে গোল করে দলকে উদ্ধার করেছেন কয়েকদিন আগেই নতুন চুক্তি সাক্ষর করা জেরার্ড পিকে।

স্প্যানিশ এই ডিফেন্ডারের গোলের সুবাদেই শেষপর্যন্ত হার এড়িয়েছে বার্সেলোনা। মাঠ ছেড়েছে ১-১ গোলের ড্র নিয়ে। এটা ছিল এবারের মৌসুমে বার্সেলোনার চতুর্থ ড্র। এর আগে আতলেতিকো মাদ্রিদ, ভ্যালেন্সিয়া ও সেল্তা ভিগোর বিপক্ষে ড্র করেছিল কাতালানরা। আর এখন পর্যন্ত লা লিগায় কেউই বার্সেলোনাকে দিতে পারেনি হারের স্বাদ।

অপ্রত্যাশিত এই ড্রয়ের পরও অবশ্য লা লিগায় অন্য সবার চেয়ে বেশ খানিকটা এগিয়ে আছে বার্সা। ২২ ম্যাচ শেষে তাদের সংগ্রহ ৫৮ পয়েন্ট। ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে আতলেতিকো মাদ্রিদ। ৪০ পয়েন্ট নিয়ে ভ্যালেন্সিয়া আছে তৃতীয় স্থানে। আর ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থান দখল করেছে রিয়াল মাদ্রিদ।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
খালেদার রায় ঘিরে উত্তেজনা; অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেবে আওয়ামী লীগ

আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট’ দুর্নীতি মামলার রায়কে ঘিরে বিএনপিকে মাঠে নামার সুযোগ দিতে চায় না আওয়ামী লীগ। সম্ভাব্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আর পাড়া-মহল্লায় সতর্ক অবস্থানে থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে আওয়ামী লীগ। রায় উপলক্ষে সম্ভাব্য করণীয় ঠিক করতে আজ সোমবার বিকালে ধানমন্ডির দলীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা ডাকা হয়েছে। একই স্থানে আজ বৈঠক ডাকা হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের। এরই মধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তর ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ বর্ধিত সভা ও সমাবেশ করে রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়েছে। নেতারা বলছেন, নৈরাজ্য-সন্ত্রাস হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তারা প্রতিরোধ গড়বেন। আর বিএনপি সহিংসতায় না গেলে কোনো ধরনের উসকানি দেবেন না তারা। সূত্রমতে, খালেদা জিয়ার মামলার রায়ের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বকশীবাজার, ঢাকা মেডিকেল, হাই কোর্ট, প্রেস ক্লাব, শাহবাগ, কাকরাইল, গুলিস্তান, নয়াপল্টনসহ বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ভোর থেকেই অবস্থান নেবেন। গতকাল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ আয়োজিত এক সমাবেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘৮ তারিখের রায়কে কেন্দ্র করে বিভিন্নভাবে উত্তেজনা ছড়ানো হচ্ছে। আমরা কারও সঙ্গে পাল্টাপাল্টিতে যাব না। তবে রায়কে কেন্দ্র করে কেউ পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা করলে নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে সতর্ক পাহারায় থাকব।’ তিনি বলেন, ‘আমরা উসকানি দেব না, তবে কেউ যদি উসকানি দেয় প্রয়োজন হলে যেমন কুকুর তেমন মুগুর। কুকুরের ঘেউঘেউ যেমন হবে মুগুর তেমনই নেমে আসবে।’ সূত্রমতে, রাজধানীর শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ এলাকায় ছাত্রলীগ এবং প্রেস ক্লাব, কাকরাইল, গুলিস্তান, নয়াপল্টন এলাকায় যুবলীগকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া রাজধানীর পাড়া-মহল্লায় নেতা-কর্মীরা সতর্ক অবস্থান নেবে। রায়কে কেন্দ্র করে নাশকতা-সন্ত্রাস, গাড়ি ভাঙচুর করলে জবাব দেবে আওয়ামী লীগ। এ জন্য ১৪ দলকেও পাশে চায় দলটি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাইদ খোকন গতকাল এক অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ৮ তারিখকে কেন্দ্র করে হঠাৎ করে আক্রমণ করবেন তা সহ্য করা হবে না। আমরা যেমন ঢাকা দক্ষিণের প্রত্যেকটি আওয়ামী লীগ নেতার বাসা চিনি, তেমনি কোন বাসায় বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মী থাকেন তা-ও জানি। আক্রমণ করলে তা সহ্য করা হবে না। সরকারের একাধিক নীতিনির্ধারণী সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার রায় উপলক্ষে রাজধানীসহ সারা দেশে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। অতীতে যারা জ্বালাও-পোড়াওয়ের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট ছিলেন তাদের গতিবিধির ওপর নজর রাখছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে দেশের সব জেলার পুলিশ সুপার ও ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের। গতকাল এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, কোনো বিশৃঙ্খলা সরকার মেনে নেবে না। আইন সবার জন্য সমান। রায়ের পর কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সূত্রমতে, এরই মধ্যে রাজধানীর ৪৯টি থানার ওসি ও সংশ্লিষ্ট ডিসিদের প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নাশকতা মামলায় কোনো আসামি জামিনে থাকলে তিনি এখন কোথায় আছেন তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম রহমতউল্লাহ বলেন, আইন সবার জন্য সমান। দুর্নীতি করলে তার বিচার হবে। কিন্তু এই বিচারকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে গাড়ি পোড়াও, পুলিশের ওপর আক্রমণ, দেশের ধ্বংস করতে দেওয়া হবে না। আমরা সতর্ক পাহারায় থাকব। পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেব। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ বলেন, দুর্নীতির রায়কে ঘিরে কাউকে রাজপথে সন্ত্রাস করতে দেওয়া হবে না। ভোর থেকেই মহানগরের নেতা-কর্মীরা রাজপথ দখলে রাখবে। যেখানেই সন্ত্রাস-নাশকতা সেখানেই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ করব।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
ঘোষণা দিয়ে প্রশ্ন ফাঁস, ধরার কেউ নেই

অবশেষে নড়েচড়ে বসল কর্তৃপক্ষ। প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ১১ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। ঘোষণা হয়েছে—প্রশ্ন ফাঁসকারীকে ধরিয়ে দিলে মিলবে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার। প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ঘুরেফিরে উঠলেও এত দিন কানে তোলেনি মন্ত্রণালয়। গতকাল রবিবার নেওয়া সিদ্ধান্ত দুটিতে সমস্যার ভয়াবহতা অন্তত স্পষ্ট করা হলো। গতকাল এসংক্রান্ত সভা শেষে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে পূর্বের সিদ্ধান্তসমূহ কার্যকর থাকবে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজরদারি চালাতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) বলা হয়েছে। বিটিআরসি কর্তৃপক্ষ বলেছে, গতকাল পর্যন্ত তারা এসংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা পায়নি।

সম্প্রতি পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের পর চলতি সপ্তাহে মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও ফাঁস হতে শুরু করেছে। বাংলা দুই পত্রেরই প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার প্রমাণ মিলেছে। আজকের ইংরেজি প্রথম পত্র পরীক্ষা সামনে রেখেও দুই দিন ধরে দেখা গেছে ফেসবুকে ব্যাপক অপতৎপরতা। এক পক্ষ প্রশ্ন দেওয়ার আশ্বাসে দর হাঁকছিল, অন্য পক্ষ উৎকণ্ঠার সঙ্গে বলছিল, কখন পাওয়া যাবে প্রশ্ন। ‘আগে যাদের দিয়েছিলাম সবার কমন আইছে, এবার ইংরেজি দিব, যাদের লাগবে মেসেজ করো।’ একটি ফেসবুক পেজে এভাবেই দেওয়া হয় স্ট্যাটাস। ফেসবুকের আরো অনেক পেজ ও গ্রুপে ইংরেজির প্রশ্নপত্র ক্রয়-বিক্রয় নিয়ে হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে গতকাল দরাদরি করতে দেখা যায়। প্রত্যুত্তরে মেসেঞ্জার, ইমো, ভাইবারসহ যোগাযোগের বিকল্প মিডিয়ায় যোগাযোগ করতে বলছিল প্রশ্ন বিক্রেতারা। তারা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা বুঝে নিচ্ছিল। রাখঢাক ছাড়া এমনভাবে চলছে লেনদেন, যেন এটি কোনো অপরাধই নয়।

ফেসবুকে ফ্রি স্টাইলে বেপরোয়াভাবে যখন চলছে পরীক্ষার মতো বিষয় নিয়ে অপকর্ম, যখন গণমাধ্যমে চলছে তোলপাড়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নেই কার্যকর পদক্ষেপ। যদিও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পাবলিক পরীক্ষা নিয়ে এ ধরনের অপরাধ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনে দণ্ডনীয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এবং র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখায় সাইবার ক্রাইম ইউনিট থাকলেও প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে কার্যকর তদন্ত করছে না কেউ। জানা যায়, এসএসসি পরীক্ষার শৃঙ্খলাবিষয়ক কমিটির চরম অবহেলার কারণে সম্পৃক্ত করা হয়নি বিশেষজ্ঞদের। গত বছর এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে ছয় শিক্ষকসহ ১৪ জনকে গ্রেপ্তারের পর ৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে অভিযোগ পাওয়া যায়। সেখানকার শিক্ষক-কর্মচারী এবং এক শিক্ষা কর্মকর্তাকে সন্দেহের আওতায় আনা হলেও পরে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো তদন্ত হয়নি। এমনকি যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারাও জামিনে ছাড়া পেয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ বা তাগাদা না থাকলে প্রশ্ন ফাঁসকারীদের খোঁজেন না সাইবার তদন্তকারীরা। গত দুই দিনের ব্যাপক সমালোচনার পর কিছুটা নজরদারি শুরু করেছে ডিবি ও সিটিটিসি। তথ্য মিলেছে, এখন পরীক্ষার পূর্বমুহূর্তে প্রশ্ন ফাঁস করছেন কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারী। এরই মধ্যে কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে।

ডিবি পুলিশের যুগ্ম কমিশনার শেখ নাজমুল আলম পরীক্ষার শৃঙ্খলা কমিটিরও সদস্য। গতকাল জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা কাজ করছি না, এটা ঠিক নয়। আজও মিটিং করলাম। একটি কমিটি হয়েছে। ১১ সদস্যের কমিটিতে পুলিশের দুজন আছে। শিগগিরই আমরা অভিযান চালাচ্ছি।’

মন্ত্রী বললেন, ধরা পড়বেই : এবার এসএসসির প্রথম দুটি পরীক্ষায়ই ফেসবুকে দেওয়া প্রশ্নের সঙ্গে এমসিকিউ (মাল্টিপল চয়েস কোয়েশ্চন) অংশ হুবহু মিলে যায়, যা নিয়ে প্রচণ্ড সমালোচনার মুখে পড়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর পরই গতকাল এক জরুরি সভায় প্রশ্ন ফাঁসকারীকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। সভার সিদ্ধান্তগুলো পরে নিজেই সাংবাদিকদের জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি এ সময় বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা প্রশ্ন ছড়াচ্ছে, তারা ধরা পড়বেই। এটা সময়ের ব্যাপার মাত্র। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব ছড়ানো বন্ধের বিষয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) বলা হয়েছে।

মন্ত্রী জানান, পরীক্ষা মনিটরিং ও প্রশ্ন ফাঁস এবং পরীক্ষা যথাযথ হয়েছে কি না এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীরের নেতৃত্বে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ১১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে সুপারিশ পেশ করবে। প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের সত্যতা যাচাই করবে ওই কমিটি। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ভিজিল্যান্স টিম আরো জোরদার করা হবে। পরীক্ষা শুরুর আধাঘণ্টা আগে প্রশ্নের মোড়ক খোলার সময় স্থানীয় প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা, একজন পুলিশ কর্মকর্তা এবং কেন্দ্রসচিবের যৌথ স্বাক্ষরে খোলা হবে। পরীক্ষাকেন্দ্রে কোনো মোবাইল বা অন্য কোনো ডিভাইস নিয়ে কোনো শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা বা কর্মচারী প্রবেশ করলে তাকে তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার করা হবে। সব শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা শুরুর আধাঘণ্টা আগে অবশ্যই তাদের নিজ নিজ আসনে বসতে হবে।

শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের আরো বলেন, ‘যারা প্রশ্ন ফাঁস বা ফাঁসের গুজব ছড়াচ্ছে, কার্যক্রম দেখে এ কথা প্রতীয়মান হয়, তাদের লক্ষ্য সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে হেয় প্রতিপন্ন করা। এ জন্যই পরিকল্পিতভাবে এ কাজ করা হচ্ছে। এর সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকে ধরা পড়বে। তাদেরকে কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবে।’

তবে আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কেন্দ্রসচিব পরীক্ষার হলে শুধু একটি সাধারণ মানের ফোন নিতে পারবেন বলে জানা গেছে। এদিকে এমসিকিউ তুলে দেওয়া হবে কি না এ বিষয়ে সেমিনার করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।

জানা যায়, ১১ সদস্যের কমিটিতে আরো থাকবেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ, বিটিআরসি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক শাখা এবং শিক্ষা বোর্ডের প্রতিনিধিরা। মন্ত্রণালয়ে সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, বিটিআরসি এবং পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এদিকে ফেসবুকে প্রশ্ন ফাঁস অব্যাহত থাকলেও দেশের টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি গতকাল রবিবার পর্যন্ত এর বিরুদ্ধে প্রতিকারমূলক কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা পায়নি বলে জানান বিটিআরসির চেয়ারম্যান ড. শাহ্জাহান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘অনুরোধ বা নির্দেশনা পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গত বছর এসএসসি পরীক্ষার সময় ২ মার্চ কমলাপুর শেরে-ই-বাংলা রেলওয়ে উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক রফিকুল ইসলামসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। রফিকুল শিক্ষকতার পাশাপাশি জ্ঞানকোষ নামের একটি কোচিং চালাতেন। এরপর ২৭ মার্চ দুই চক্রের ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। তাদের মধ্যে আশুলিয়ার গাজিরচট এএম উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মোজাফফর হোসেন, শিক্ষক আতিকুল ইসলাম, সৃষ্টি সেন্ট্রাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম, টঙ্গীর কোনিয়া কোচিং সেন্টারের শিক্ষক হামিদুর রহমান এবং আশুলিয়ার গাজিরচট এএম উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অফিস সহকারী আবদুল মজিদ ছিলেন। তাঁরা প্রশ্ন দেওয়ার বিনিময়ে ফেসবুক গ্রুপের সদস্যদের কাছ থেকে ৫০০ থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে আদায় করতেন।

ডিবির একাধিক সূত্র জানায়, গত বছর এসব চক্রকে ধরার পর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার ৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে শনাক্ত করে ডিবি। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীরা প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত বলে কিছু প্রমাণও মিলে। উঠে আসে ‘মেঞ্জিস’ নামের সাভারের এক শিক্ষা কর্মকর্তার নাম, যিনি এখন জয়পুরহাটে আছেন। ওই সময় তদন্তে জানা যায়, বিজি প্রেসের কম্পিউটার অপারেটরসহ কয়েকজন কর্মচারীও এই চক্রের সদস্য। পরীক্ষার আগে শিক্ষক ও কোচিং সেন্টার গ্রুপের মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁস হয়। পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা না থাকায় তদন্ত বেশি দূর এগোয়নি। প্রশ্ন দিয়ে টাকা পাওয়া যায়। যারা সন্দেহভাজন ওই লোকগুলোই কাজ করছে। অভিযুক্ত শিক্ষক মোজাফফর ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে প্রশ্ন ফাঁসের তথ্য দিয়েছেন। অথচ তিনিসহ অনেকেই জামিনে বের হয়ে গেছেন।’

সে সময় অভিযানে নেতৃত্ব দেন ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার মাহমুদ নাসের জনি। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। নির্দেশনা পেলেই অভিযান চালানো হবে।’

এদিকে সিআইডি সংঘবদ্ধ অপরাধ দলের প্রধান, বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্ল্যা নজরুল ইসলাম সম্প্রতি বলেন, ‘আমরা অনেক বিষয় নিয়ে কাজ করছি। এসএসসি ও এইচএসসির প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে কাজ করছি না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জালিয়াতচক্র ধরেছি। নির্দেশনা পেলে ওই বিষয়েও কাজ করব।’

জানতে চাইলে সিটিটিসি ইউনিটের সাইবার ক্রাইম দলের প্রধান উপকমিশনার আলিমুজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে ডিবির সঙ্গে আমরাও কাজ করছি। অপরাধীদের ধরা হবে।’

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ ও পুলিশ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক উমর ফারুক বলেন, প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে জনসচেতনতা বা বোধ তৈরি হয়নি। অনেকে মনে করছে প্রশ্ন ফাঁস করে সে অন্যের উপকার করছে। কেউ গোপনীয়তা ফাঁস করাকে সাফল্য বলেও মনে করে। আনন্দ খোঁজে। এগুলোই প্রশ্ন ফাঁস বাড়ার পেছনে বড় কারণ। তিনি আরো বলেন, ‘ডিবি, সিআইডি ও র‌্যাবের সাইবার ক্রাইম ইউনিট থাকলেও তাদের নেই প্রয়োজনীয় দক্ষতা। উন্নত বিশ্বের আদলে ‘মেটাপুলিশ ফোর্স’ করা উচিত।’ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের অপরাধবিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক, সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় সাইবার ক্রাইম আইনে বিচার হলে অন্যরা শিক্ষা নেবে। অপরাধটিও কমবে।’

জানা যায়, পাবলিক পরীক্ষাগুলো (অপরাধ) আইনে প্রশ্ন ফাঁসে ন্যূনতম তিন বছর থেকে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডসহ অর্থদণ্ড শাস্তির এই বিধান রয়েছে। এ ছাড়া আইসিটি আইনের সংশোধিত ৩২ ধারাসহ (আগের ৫৭) কয়েকটি ধারায় অনলাইনের গোপনীয় তথ্য ফাঁস দণ্ডনীয় অপরাধ।

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ সুমন আহমেদ সাবির বলেন, আগে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন ফটোকপি করে বিতরণ করা হতো, এখন তথ্য-প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। কে বা কারা প্রশ্ন ফাঁস করছে তা বের করা বিটিআরসি বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার জন্য অসম্ভব কিছু নয়।
সূত্র: কালের কণ্ঠ।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
৩২ ধারা প্রত্যাহারের দাবিতে আশাশুনি রিপোর্টার্স ক্লাবের মানববন্ধন

আশাশুনি ব্যুরো: প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩২ ধারা প্রত্যাহারের দাবিতে আশাশুনির বুধহাটায় মানববন্ধন করেছে আশাশুনি রিপোর্টার্স ক্লাবের সাংবাদিকবৃন্দ। রবিবার বিকালে আশাশুনি রিপোর্টার্স ক্লাবের সামনের সড়কে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮’ এর খসড়া অনুমোদন করে সরকার। সংসদে পাশ হলে তা বাংলাদেশ আইনে পরিণত হবে।
আশাশুনি রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি মোস্তাফিজুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আশাশুনি রিপোর্টার্স ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি আইয়ুব হোসেন রানা, নির্বাহী সদস্য শেখ হেদায়েতুল ইসলাম। এসময় বক্তরা বলেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন গণমাধ্যমের কন্ঠ রোধ করবে। এ আইন পাশ হলে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা মুখ থুবড়ে পড়বে। বক্তারা আরও বলেন যে আইন মানুষের কন্ঠ রোধ করবে, সে আইন জনবান্ধব আইন হতে পারে না। সাংবাদিকদের কালো আইনের ফ্রেমে রেখে বাঘের মুখে ফেলে দেওয়া যাবে না। সাংবাদিক বক্তারা বলেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বিকশিত গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হয়ে দাড়াবে। এসময় সকল বক্তাগন সাংবাদিকদের জন্য কালো ধারাটি প্রত্যাহারের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। মানববন্ধনে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আশাশুনি রিপোর্টার্স ক্লাব সহ সভাপতি সুব্রত দাশ, শেখ বাদশা, সাধারণ সম্পাদক আকাশ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক এম এম নূর আলম, ক্রিড়া সম্পাদক আলমিন হোসেন ছট্টু, সদস্য বাহবুল হাসনাইন, উত্তম কুমার দাশ, সাংবাদিক আজিজুর রহমান রাজ, এস এম শাহিন আলম, আবু হাসান, বি এম আলাউদ্দীন, শেখ আক্তারুজ্জামান, ইমরান হোসেন প্রমুখ।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest