সর্বশেষ সংবাদ-
সাতক্ষীরায় পাখিমারা টিআরএমের বকেয়া ৪৮ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবিতে স্মারকলিপিকালিগঞ্জের সাবেক সমাজসেবা অফিসার শহিদুরের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধীর নামে বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাতের অভিযোগসাতক্ষীরায় চ্যাম্পিয়নশীপ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন: ভোলা জেলাকে ৪-১ গোলে হারাল সাতক্ষীরাদেবহাটার নোড়ারচকে নাটক সাজিয়ে অস্ত্র মামলায় বৃদ্ধাকে গ্রেফতার করানোর অভিযোগসাতক্ষীরায় সংলাপ বক্তারা: আগামী নির্বাচনে সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিশ্রæতি চায়হাসানের পরিবারের দাপট অব্যাহত: পাটকেলঘাটায় মানববন্ধনে প্রকাশ্য হামলাচতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী স্মৃতিতে অম্লান চিকিৎসক ডা. আনিছুরসাতক্ষীরায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের পরিবারের অনুকুলে ২৬ লাখ টাকার চেক বিতরণশ্যামনগরে কাজী আলাউদ্দীনের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পদেবহাটা উপজেলা জামায়াতের সুধী সমাবেশ

কলারোয়া প্রতিনিধি : আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় ও মানব সেবায় বিশেষ অবদানের জন্য কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ বিপ্লব কুমার নাথকে মাদার তেরেসা ২০১৭ স্বর্ণপদক প্রদান করেছে ঢাকার হিউম্যান রাইটস কালচারাল সোসাইটি নামে একটি মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান। গত ২৮ জুলাই বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন(এফডিসি)মিলনায়তনে এ স্বর্ণ পদক ও সনদ পত্র প্রদান করা হয়। ঢাকার হিউম্যান রাইটস কালচারাল সোসাইটি পক্ষে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মোঃ সিদ্দিকুর রহমান মিয়া, সাবেক তথ্য সচিব সৈয়দ মার্-ব মোর্শেদ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পীরজাদা শহীদুল হারুন ও ঢাকার হিউম্যান রাইটস কালচারাল সোসাইটি সাধারণ সম্পাদক এম.শফিক উদ্দিন অপু স্বাক্ষরিত এ সনদপত্র ও স্বর্ণ পদক তুলে দেন কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ বিপ্লব কুমার নাথকে। সনদপত্র ও স্বর্ণপদক বিতরণকালে ঢাকার হিউম্যান রাইটস কালচারাল সোসাইটি সাধারণ সম্পাদক এম. শফিক উদ্দিন অপু বলেন- আইন শৃঙ্খলা রক্ষা ও মানব সেবায় বিশেষ অবদান রেখেছে কলারোয়া থানার ওসি বিপ্লব কুমার নাথ। নি:সন্দেহে এ অবদান কৃতিত্বপূর্ণ। তিনি দেশ ও জাতির গৌরব। এ অসামান্য কৃতিত্বের জন্য ঢাকার হিউম্যান রাইটস কালচারাল সোসাইটি স্বীকৃতিস্বরূপ কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ বিপ্লব কুমার নাথ কে মাদার তেরেসা ২০১৭ স্বর্ণ পদক ও সনদপত্র প্রদান করেছে। তার মহতী কর্মকান্ড দেশ ও জাতির অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পথ উন্মোচনে অতিশয় ভূমিকা রাখবে বলে হিউম্যান রাইটস কালচারাল সোসাইটি বিশ্বাস করে। উল্লেখ্য-এর আগে তিনি গত ৮জুন বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে ঢাকা শেরে বাংলা সামাজিক সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশন থেকেও স্বর্ণ পদক ও সনদ পত্র প্রদান করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম মোফাজ্জেল হক এমপি, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পীরজাদা শহীদুল হারুন, শেরে বাংলা সামাজিক সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক জসিম উদ্দিন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

বাবুল আক্তার, পাইকগাছা : পাইকগাছায় নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিশ্ববরেণ্য বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র (পিসি) রায়ের ১৫৬তম জন্মবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বুধবার সকালে বিজ্ঞানীর বসত ভিটা রাড়–লীতে জেলা, উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত ও রাড়–লী ইউনিয়ন পরিষদের ব্যবস্থাপনায় বিজ্ঞানীর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান, তথ্য চিত্র প্রদর্শন, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সহ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচী পালিত হয়েছে। জেলা প্রশাসক আমিন-উল আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, জেলা আ’লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাডঃ স.ম. বাবর আলী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজীব খান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফকরুল হাসান, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহানারা খাতুন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) জুবায়ের হোসেন চৌধুরী, এএসপি (ডি সার্কেল) মোঃ ইব্রাহিম, জেলা আ’লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জামাল, স্বাস্থ্য ও গণসংযোগ বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ মোঃ শেখ শহিদুল্লাহ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেখ শাহাদাৎ হোসেন বাচ্চু, অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, রবিউল ইসলাম, গোপাল চন্দ্র ঘোষ, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক জি.এম আজহারুল ইসলাম, উপাধ্যক্ষ সরদার মোহাম্মদ আলী। সহকারী শিক্ষা অফিসার শোভা রায় ও প্রভাষক ময়নুল ইসলামের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, ইউপি চেয়ারম্যান কওসার আলী জোয়াদ্দার, পাইকগাছা প্রেসক্লাব সম্পাদক এম. মোসলেম উদ্দীন আহম্মেদ, উপজেলা প্রকৌশলী আবু সাঈদ, মৎস্য কর্মকর্তা পবিত্র দাস, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা সুব্রত দত্ত, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা রেজাউল করিম, ইউনিয়ন আ’লীগ সভাপতি শংকর দেবনাথ, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সবুর, ইউপি সদস্য আরশাদ আলী, পি.সি ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার দাশ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, বিজ্ঞানী পিসি রায় ১৮৬১ সালের ২ আগষ্ট পাইকগাছার কপোতাক্ষ নদের তীরে রাড়–লীতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম হরিশ্চন্দ্র রায় ও মাতার নাম ভুবন মোহিনী রায়। তিনি একাধারে ছিলেন শিক্ষাবিদ, শিল্পপতি, রসায়নবিদ, সমাজ সেবক, রাজনীতিবিদ, সমবায় আন্দোলনের পুরোধা। পিসি রায় ১৮৯২ সালে কলকাতার মানিক তলায় মাত্র ৮শ টাকা পুঁজি নিয়ে বেঙ্গল কেমিক্যাল এ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ঔষধ শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠা করেন। খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কাপড়ের মিল ও জন্মভূমি রাড়ুলীতে সমবায় ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি একাধারে ২০ বছর কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে রসায়ন শাস্ত্রের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। ব্রিটিশ সরকার ১৯৩০ সালে তাকে ‘নাইট’ উপাধিতে ভূষিত করেন। এছাড়া একই বছর লন্ডনের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৩৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভারত বর্ষের মহীশুর ও বেনারস বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মান সূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে। চিরকুমার এই বিজ্ঞানী তার জীবনের অর্জিত সমস্ত সম্পদ মানব কল্যানে দান করে গেছেন। ১৯৪৪ সালের ১৬ জুন ৮৩ বছর বয়সে বিজ্ঞানীর জীবনাবসান ঘটে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

জনপ্রিয় গায়ক ও সংগীত পরিচালক হাবিব ওয়াহিদ ও মডেল-অভিনেত্রী তানজিন তিশা নতুন করে গুঞ্জনের জন্ম দিয়েছেন। সম্প্রতি হাবিবের দেয়া একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসের কমেন্ট বক্সে তিশা হাবিবকে ‘নট সিঙ্গেল’ বলে উল্লেখ করেন। এরপরেই বিষয়টি নিয়ে শোবিজ অঙ্গনে গুঞ্জন শুরু হয়ে যায়।

জানা যায়, সোমবার হাবিব তার একটি ফেইসবুকে পোস্টে লেখেন, ‘সিঙ্গেল লাইফ ইজ দ্য বেস্ট। ’ এরপর মন্তব্যের ঘরে তিশা লেখেন, ‘সিঙ্গেল লাইফ বাবা?’ হাবিব এরপর লেখেন, ‘সরি?’ এরপর তিশা তার বিপরীতে লেখেন, ‘রাগ কমাও। ইউ আর নট সিঙ্গেল, এভরিওয়ান নোজ। ’

সম্প্রতি দ্বিতীয় স্ত্রী রেহানের সাথে হাবিব ওয়াহিদের বিচ্ছেদ হয়। এই বিচ্ছেদের পর তানজিন তিশার সাথে তার প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি সামনে চলে আসে। এরপর হাবিব তার ফেইসবুকে বলেছিলেন, তিশার সঙ্গে তার সম্পর্কটা একান্তই ব্যক্তিগত।

তবে সোমবার একাকী জীবন নিয়ে হাবিবের ফেসবুকে এমন পোস্ট প্রকাশের পর তাদের সম্পর্কের ব্যাপারটি পরিষ্কার হয়ে গেছে। পোস্টটি নিয়ে বেশ সমালোচনায় পড়তে হয় হাবিবকে। যার কারণে হাবিবের ওয়াল থেকে পোস্টটি সরিয়ে ফেলা হয়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

ক্লিনটন ফাউন্ডেশনের অন্যতম দাতা ও ক্লিনটন পরিবারের এক বন্ধুকে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত থেকে বাঁচাতে গিয়ে বাংলাদেশকে দমনের চেষ্টা করেছিলেন সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। পারিবারিক বন্ধুর দুর্নীতির তদন্ত থামাতে শুধু প্রাণপণ চেষ্টাই করেননি তিনি; বাংলাদেশের ওপর অনৈতিক অনধিকার চর্চাও করেছিলেন সাবেক এই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

শান্তিতে বাংলাদেশের একমাত্র নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে গ্রামীণ ব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগ বন্ধ করতে বাংলাদেশ সরকারের ওপর হুমকি-ধামকি ও চাপ প্রয়োগ করেছিলেন হিলারি। মার্কিন দৈনিক ডেইলি কলারের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

মার্কিন এই দৈনিক দাবি করে বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের অনুরোধে বাংলাদেশের দুটি সরকার বেশ কিছু নথি দিয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে দরিদ্রতম দেশটির বিরুদ্ধে ‘হার্ড-বল’ কৌশলের ব্যবহার করে ক্লিনটন তার কোটিপতি বন্ধু এবং ফাউন্ডেশনের দাতাকে সাহায্য করার জন্য বিরক্তিকর ছায়া ফেলেছিল।

নথিতে দেখা যাচ্ছে, গ্রামীণ ব্যাংক নামে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের আর্থিক অব্যবস্থাপনার অভিযোগের সম্মুখীন ইউনূসকে বাঁচাতে হিলারি ক্লিনটন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর, দূতাবাস এবং বিশ্বব্যাংকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি পরিকল্পনা আঁকেন। পরে ইউনূসকে ওই ব্যাংক থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।

ইউনূসের মোট সম্পদের পরিমাণ ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক দাতব্য প্রতিষ্ঠান ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে ৩ লাখ ডলারের বেশি দান করেছিলেন তিনি।

২০১০ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে ইউনূস একাধিক আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগের মুখোমুখি হন। এর মধ্যে ডেনমার্কের ডক্যুমেন্টারিতে উঠে আসে তিনি কীভাবে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলার সরিয়ে নিয়েছেন।

ইউনূসের বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ বাংলাদেশে ব্যাপক তোলপাড় ফেলে; যেখানে মাথাপিছু বার্ষিক আয় প্রায় এক হাজার ডলার।

ইউনূসের হয়ে ক্লিনটন বারবার এবং সরাসরি বাংলাদেশকে হুমকি-ধামকি দেন। এমনকি তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংক যে ১২০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদন দিয়েছে; তা প্রত্যাহার করে নেবে।

বিশ্বব্যাংকের সর্ববৃহৎ দাতা হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ২০১১ সালে দেশটি বিশ্বব্যাংককে ১৫০ কোটি (দেড় বিলিয়ন) ডলার দান করে। হিলারি ক্লিনটন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এই ব্যাংকের ওপর প্রচণ্ড রকমের প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেন।

মুসলিম বিশ্বের দেশগুলোর একমাত্র রাষ্ট্রীয় প্রধান শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকারের ভীত নাড়িয়ে দিতে ও অপমান করতে পদ্মা সেতু ইস্যুতে ক্লিনটনের পদক্ষেপ আগে থেকেই সাজানো হয়েছিল। মার্কিন আরেক প্রভাবশালী দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলছে, দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে শেখ হাসিনা সরকারের প্রধান প্রতিশ্রুতিগুলোর একটি হচ্ছে পদ্মা নদী প্রকল্প।

তিনি রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দেশের একটি অনুন্নত অঞ্চলের সংযোগ স্থাপনে পদ্মা নদীর ওপর একটি রেল ও সড়ক সেতু নির্মাণের আশা করেছিলেন; যা নতুন ব্যবসায়িক বিনিয়োগ ও হাজার হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।

হিলারি ক্লিনটনের ঔদ্ধত্যমূলক চাপ প্রয়োগ কৌশল ও ক্লিনটন ফাউন্ডেশনের দাতার পক্ষে বিশ্বব্যাংককে ব্যবহার মার্কিন সিনেটের কমিটিতে চলমান তদন্ত আরও বিস্তৃত হতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ার এই ছোট দেশের বিরুদ্ধে হিলারি ক্লিনটনের চাপ প্রয়োগ কৌশলের তদন্ত করছে সিনেটের বিচার বিভাগীয় কমিটি।

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের সময় সজীব ওয়াজেদ জয়ের মাধ্যমে ওই সময় মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর থেকে আর্থিক হিসাব তদন্তে (আইআরএস) শেখ হাসিনাকে হুমকি দেয়া হয়েছিল কি না তা জানতে চলতি বছরের ১ জুন যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া অঙ্গরাজ্যের রিপাবলিকান দলীয় সিনেটর ও সিনেট কমিটির চেয়ারম্যান চাক গ্রাসলি বর্তমান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনের বক্তব্য চান।

আইওয়া অঙ্গরাজ্যের রিপাবলিকান দলীয় এই রাজনীতিক ডেইলি কলারকে বলেন, ক্লিনটন ফাউন্ডেশনের দাতাকে বাঁচাতে বিশেষ বিবেচনার জন্য আর্থিক হিসাব বিভাগের তদন্ত ব্যবহার করে অথবা অন্য কোনো চাপ প্রয়োগ করা হয়েছিল কি না তা জানতে আমি পররাষ্ট্র দফতরের কাছে প্রতিনিয়ত জবাব চাইব।

হিলারি ক্লিনটন খোলস ঝেড়ে বেরিয়ে আসেন ২০১১ সালের শুরুর দিকে; যখন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস মরিয়ার্টি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মণির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

সেই সময় দীপু মনি বলেন, মরিয়ার্টি স্পষ্ট করে বলেন, আমরা যদি ইউনূসের বিরুদ্ধে তদন্ত বন্ধ না করি, তাহলে বেশ কিছু ফলাফলের মুখোমুখি হতে হবে। উদাহরণ হিসেবে মরিয়ার্টি বলেন, পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন প্রত্যাহার করে নেবে।

এসময় দীপু মনি মার্কিন রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টির কােছে জানতে চান, একটা নির্বাচিত সরকার হিসেবে, জনগণের সরকার হিসেবে আমরা কেন ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে উঠা অনেক গুরুতর অভিযোগের তদন্ত করবো না। মরিয়ার্টি এসময় গ্রামীণ ব্যাংককে ‘স্বতন্ত্র’ এবং ‘বেসরকারি সংস্থা’ বলে হিলারি ক্লিনটনের দাবির পুনরাবৃত্তি করেন।

তিনি বলেন, দরিদ্র মানুষকে; বিশেষ করে নারীদেরকে সহায়তার জন্য পরীক্ষামূলক ‘ক্ষুদ্র-ঋণ’ কর্মসূচির মাধ্যমে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠা। গ্রামীণ ব্যাংকের ২৫ ডলারের ক্ষুদ্র ঋণগ্রহীতারা ছোট্ট ব্যবসা শুরু করার অনুমতি পেতেন। দীপু মনি মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এসব মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক ছিল রাষ্ট্রের তালিকাভূক্ত এবং সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত একটি ব্যাংক। সরকারি নথিতে গ্রামীণ ব্যাংককে রাষ্ট্রীয় হিসেবে দেখা যায়।

ইউনূস ইস্যুতে হিলারি ক্লিনটন তার আক্রমণ আরো শানাতে থাকেন। নথিতে দেখা যায়, ২০১১ সালের মার্চে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মার্কিন শীর্ষ কর্মকর্তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবার্ট ও ব্লেইক ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে ইউনূসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের তদন্ত বন্ধ করতে খুবই জেদ দেখান। বাংলাদেশ সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ড চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হককে দ্রুত সরিয়ে দেয়ার দাবি জানান মরিয়ার্টি।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ওই বৈঠকে ব্লেইক ও মরিয়ার্টি ছাড়াও বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রেসিডেন্ট জেমস ওফেনসন উপস্থিত ছিলেন। জেমস ওফেনসনকে বিশ্বব্যাংকের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন হিলারি ক্লিনটনের স্বামী ও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন। বৈঠকে ইউনূসের বিষয়ে আলোচনার সময় জেমস ওফেনসন সামান্য বিব্রতবোধ করেন।

সেই সময়ের ওই বৈঠকের বিষয়ে জানতে ডেইলি কলার বিশ্বব্যাংকের সাবেক এই প্রধানের অফিসের সঙ্গে যোগাযাগ করেছে। এ ব্যাপারে তিনি কোনো মন্তব্য করবেন না বলে তার গণমাধ্যম প্রতিনিধি জানিয়ে দিয়েছেন। ইউনূসের জন্য তদবির ও সরকারের ওপর অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করতে দেশের এলিট শ্রেণির তালিকা তৈরি করেন রবার্ট ও ব্লেইক।

রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টির বাসভবনে এক অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবার্ট ও ব্লেইক দৃঢ়ভাবে ঘোষণা দেন যে, গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধানের পদে ইউনূসের থাকা উচিত। ব্লেইক বলেন, অন্যথায় ওয়াশিংটন এমন পদক্ষেপ নেবে; যা দুই দেশের দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি ব্লেইকের সঙ্গে কথা বলা অব্যাহত রাখেন। নথিতে তিনি বলেন, এটা মনে হয়েছে যে, আমরা যা বলছি তার কোনো কিছুই শুনতে তারা প্রস্তুত নন। দীপু মনি বলেন, এক ফোনালাপে তাকে খুব, খুব জেদি হয়েছিল। এটা পরিষ্কার করা হয়েছিল যে, যদি আমরা বাধ্য না হই তাহলে পরিণতি ভোগ করতে হবে।

দীপু মনির সঙ্গে প্রত্যেকবার সাক্ষাতের সময় ইউনূসের বিষয়টি তুলতেন হিলারি ক্লিনটন। এমনকি ২০১২ সালের মে মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের সময়ও হিলারি একই দাবি জানান। দীপু মনি বলেন, আমরা বারবার ব্যাখ্যা করেছি যে, গ্রামীণ ব্যাংক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নয়। এটি একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা ছিল এবং এটি অবশ্যই তার নিজস্ব সংবিধান অনুযায়ী পরিচালিত হবে। আমাদের সংবিধানসহ অন্যান্য আইন-কানুন মানবে; কিন্তু এটি দৃশ্যত লঙ্ঘন করেছিল। তিনি বলেন, সবকিছু যেন বধির কোনো ব্যক্তির কানে পড়ছিল।

মনি বলেন, এটা স্পষ্ট ছিল যে, অবৈধ কাজ করলেও ইউনূসকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে রাখতে চেয়েছিলেন হিলারি ক্লিনটন। সজীব ওয়াজেদ জয় সে সময় বলেছিলেন, ‘১৭ বছর ধরে বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকালে কখনও তার কোনও সমস্যা হয়নি। তবে ড. ইউনূসের ব্যাপারে তদন্তের ঘটনায় মার্কিন কর্মকর্তারা তার বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগে তদন্ত শুরুর হুমকি দেন।’

জয় ডেইলি কলারকে আরও বলেন, ‘তারা দফায় দফায় আমাকে বলেন, ইউনূসের অনেক প্রভাবশালী বন্ধু আছে। আর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্লিনটনের সঙ্গে তার সম্পর্কের বিষয়টিও গোপন কোনও ব্যাপার নয়।’

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন আটকাতে হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে ইউনূসের যোগসাজশের বিষয়টি উল্লেখ করেন। একই সঙ্গে, গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদ থেকে ইউনূসকে না সরাতে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে চাপ আসার কথাও স্বীকার করেন।

২০১১ সালে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির যড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে ১২০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তি বাতিল করে। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকার নিজ উদ্যোগে পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেই। ইতোমধ্যে সেতুটির প্রায় ৪০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে রিপাবলিকান পার্টি ঘেঁষা ডেইলি কলারেরই এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ডেমোক্রেটিক দলের প্রেসিডেন্টপ্রার্থী হিলারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকার সময় নিজ পদের প্রভাব খাটিয়ে ইউনূসকে এক কোটি ৩০ লাখ ডলারের তহবিল জুগিয়েছিলেন। অন্যদিকে, ইউনূস এক লাখ থেকে তিন লাখ ডলার ক্লিনটন ফাউন্ডেশনকে দান করেছিলেন। ওই সময় ক্লিনটন ফাউন্ডেশন থেকে বিষয়টি অস্বীকার করা হয়।

২০১৫ সালে হিলারির ফাঁস হওয়া ই-মেইলেও ইউনূসের জন্য তদ্বিরের বিষয়টি প্রকাশ পায়। ইউনূসকে সরানোর কারণে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চাপ আসার কথা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিভিন্ন সময়ে বলেছেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

একদিন কারাবাসের পর আজ বুধবার বিকেলে খুলনা জেলা কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন সাংবাদিক আবদুল লতিফ মোড়ল।

এদিকে সাংবাদিক লতিফ মোড়লের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা নিয়ে গ্রেপ্তারের ঘটনায় ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকুমার বিশ্বাসকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে নেওয়া হয়েছে। মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনায় পুলিশ সুপারকে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশের খুলনা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. দিদার আহমেদ।

আবদুল লতিফ মোড়ল খুলনা শহর থেকে প্রকাশিত দৈনিক প্রবাহের ডুমুরিয়া উপজেলা প্রতিনিধি। সেই সঙ্গে তিনি dalitvoice24.com-এর প্রতিনিধি। আর তাঁর বিরুদ্ধে করা মামলার বাদী সুব্রত কুমার ফৌজদার যশোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক স্পন্দন-এর ডুমুরিয়া উপজেলা প্রতিনিধি।

সাংবাদিক ফৌজদার গত ৩১ জুলাই আবদুল লতিফ মোড়লের বিরুদ্ধে ডুমুরিয়া থানায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৭ ধারায় মামলা করেন। গভীর রাতে ডুমুরিয়া থানার পুলিশ লতিফের বাসায় গিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। পরের দিন আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়। আজ বুধবার ১০ হাজার টাকা জামিননামায় পুলিশ প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত খুলনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম নুসরাত জাবিন তাঁর অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তিনি খুলনা কারাগারে থেকে মুক্তি পান। এই সময় তাঁর সহকর্মী, সন্তান ও শুভানুধ্যায়ীরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁর গলায় ফুলের মালা পরানো হয়।

বাদী সুব্রতর সাংবাদিকতা নিয়ে প্রশ্ন:
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলার বাদী সুব্রত কুমার ফৌজদারের সাংবাদিকতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তিনি নিজের ফেসবুক আইডিতে যশোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক স্পন্দন পত্রিকার পাশাপাশি নিজেকে জাতীয় দৈনিক জনকণ্ঠের সাংবাদিক বলে পরিচয় দিয়েছেন। তবে দৈনিক জনকণ্ঠের খুলনা ব্যুরোপ্রধান অমল সাহা জানান, সুব্রত তাঁদের কোনো সাংবাদিক নন। ডুমুরিয়ায় তাঁদের কোনো প্রতিনিধি নেই। সুব্রতর ফেসবুক আইডিতে জনকণ্ঠের পরিচয় দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন।

এদিকে যশোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক স্পন্দন কর্তৃপক্ষ আরেক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আগ বাড়িয়ে ৫৭ ধারায় সুব্রত কুমার ফৌজদারের মামলা করার ঘটনায় বিব্রত। স্পন্দন পত্রিকার বার্তা সম্পাদক সিকদার খালিদ হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা এ ঘটনায় বিব্রত হয়েছি। ডুমুরিয়া উপজেলা প্রতিনিধি সুব্রত কুমার ফৌজদারের বিরুদ্ধে আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে এগুতে চাই। তাঁকে প্রাথমিকভাবে শোকজ করব আমরা।’

কারণ হিসেবে সম্পাদক সিকদার খালিদ হোসেন বলেন, ‘দৈনিক স্পন্দনের নাম পদবি ব্যবহার করে পত্রিকা কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে কেন তিনি এই গর্হিত কাজ করলেন সে জন্য তাঁকে তিনদিনের মধ্যে জবাব চেয়ে শোকজ করা হবে।’

এ ব্যাপারে আজ বিকেল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সুব্রত কুমার ফৌজদারের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলে তিনি কথা বলেননি। পরে খুদেবার্তা দিয়ে কল করলেও তিনি কথা বলেননি।

ডুমুরিয়ার ওসি প্রত্যাহার
গত ৩০ জুলাই একটি অনলাইন গণমাধ্যম ‘প্রতিমন্ত্রীর সকালে দেওয়া ছাগল রাতে মৃত্যু’ শিরোনামে একটি খবর প্রকাশ করে। খবরে প্রতিমন্ত্রীর একটি ছবি ছিল। খবরে বলা হয়েছিল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ২৯ জুলাই শনিবার সকালে ডুমুরিয়ায় দুঃস্থদের মাঝে ছাগল, হাঁস ও মুরগি বিতরণ করেন। তবে ওই দিন রাতেই একটি ছাগলের মৃত্যু হয়। অভিযোগ উঠেছে, রোগাক্রান্ত ছাগল হওয়ার কারণে মৃত্যু হয়েছে। এফসিডিআই প্রকল্পের আওতায় জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এ ছাগল, হাঁস ও মুরগি বিতরণ করে।

ওই খবরে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দর বক্তব্য ছাপা হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, ‘প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তাদের কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সুস্থ ও সবল ছাগল, হাঁস, মুরগি ক্রয় করতে।’ ছাগল মারা যাওয়ার ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

ওই সংবাদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করেন সাংবাদিক আবদুল লতিফ মোড়ল। আর শেয়ার করার সময় তিনি টাইমলাইনে লেখেন, ‘খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের দায়িত্বহীনতা…’।

অথচ মামলার বাদী সুব্রত কুমার ফৌজদার বিষয়টি না বুঝে তাঁর বিরুদ্ধে ডুমুরিয়া থানায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা ঠুকে দেন। এজাহারে তিনি বলেন, আসামি ইচ্ছেকৃতভাবে অসৎ উদ্দেশ্যে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্য ‘প্রতিমন্ত্রীর সকালে দেওয়া ছাগল রাতে মৃত্যু’ শিরোনামের খবরে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের ফাইল ছবি আসামির ফেসবুক আইডিতে আপলোড করেছে। আসামি আবদুল লতিফ মোড়ল মাননীয় প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের ফাইল ছবি সামাজিক ও ব্যক্তিগত মর্যাদা হানি করার লক্ষ্যে ইন্টারনেট/ওয়েবসাইট ও ফেসবুকে সরবরাহ করেছে।’

মামলার বাদী সাংবাদিক সুব্রত কুমার ফৌজদার এজাহারের সঙ্গে ‘প্রতিমন্ত্রীর সকালে দেয়া ছাগল রাতে মৃত্যু’ শিরোনামে সংবাদের প্রিন্টকপি ও ফেসবুকে শেয়ার করা আসামির পোস্টের স্ক্রিনশটের কপি যুক্ত করেন।

এজাহারে থাকা সংবাদের প্রিন্টকপিতে দেখা যায়, সংবাদে প্রতিমন্ত্রীর একটি পুরোনো ছবি দেওয়া আছে। একই ছবি সাংবাদিক আবদুল লতিফ মোড়লের ফেসবুক পেজে শেয়ার করা পোস্টেও আছে। অর্থাৎ তিনি নিজে থেকে প্রতিমন্ত্রীর কোনো ছবি যুক্ত করেননি।

মামলার বাদী এজাহারে সংশ্লিষ্ট সংবাদ ও ফেসবুকে শেয়ার করা আসামির পোস্টের স্ক্রিনশটের কপি যুক্ত করলেও ডুমুরিয়া থানার পুলিশ তা যাচাই-বাছাই বা প্রাথমিক তদন্ত না করেই এজাহার গ্রহণ করে এবং গভীর রাতে বাসায় গিয়ে সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করে।

সাংবাদিক আবদুল লতিফ মোড়লের মেয়ে মেহনাজ রেজা মিম্মা গতকাল বিবিসি বাংলাকে টেলিফোনে বলেন, ‘রাত আড়াইটার দিকে আমার আব্বুকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ ছিল, আমাদের ডুমুরিয়া থানার ওসি ছিল, আরো ২০ থেকে ৩০ জনের মতো মানুষ এসেছিল। দেয়াল টপকে তারা ঢোকে। তারা আমার রুমেও জোরে জোরে নক করে। আমি জানতে চাই ওনাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন। তখন আমাকে বাজেভাবে বলা হয়, কোথায় নিয়ে যাচ্ছি সেটা আপনার মায়ের কাছ থেকে জেনে নিয়েন।’

মেহনাজ রেজা মিম্মা আজ বুধবার খুলনার আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের জানান, তাঁর বাবার প্রতি অন্যায় করা হয়েছে। তাঁর বাবার কোনো দোষ ছিল না। তিনি শুধু একটি নিউজ শেয়ার করেছিলেন।

মামলার বিষয়ে ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকুমার বিশ্বাস আজ প্রত্যাহারের আগে মুঠোফোনে জানান, ৩১ জুলাই মামলা করার দিন কয়েকজন সাংবাদিক দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত বসে ছিলেন। সে কারণে মামলা নিতে হয়েছে। তবে ওপরের কোনো চাপ ছিল না।

ওসি বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মিথ্যা মামলা দায়ের করলে বাদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান আছে। তাই বাদী সুব্রত ফৌজদার যদি ভুল বা মিথ্যা তথ্য দিয়ে থাকেন, তাহলে আইনমতো বাদীর বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গ্রেপ্তারের সময় বাড়াবাড়ির বিষয়টি ওসি অস্বীকার করেছেন।

এদিকে শুধু ফেসবুকে সংবাদ শেয়ার করায় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা এবং গ্রেপ্তার নিয়ে আজ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন।

আজ রাত সাড়ে ৮টার দিকে খুলনা জেলা পুলিশ সুপার নিজামউদ্দিন জানান, ডুমুরিয়া থানার ওসি সুকুমার বিশ্বাসকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে আনা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে কমিটি করা হবে। ডুমুরিয়ার ওসি হিসেবে পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল খালেককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মো. দিদার আহমেদ বলেন, ‘আমি খুলনার পুলিশ সুপারকে বলেছি, ডুমুরিয়ার ওসি সুকুমার বিশ্বাসের কর্মকাণ্ড তদন্ত করে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

জিন-ভূত তাড়ানোর নামে তরুণীদের সঙ্গে পর্নো ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগে গ্রেফতার ‘ভণ্ডপীর’ আহসান হাবিব পিয়ারের দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বুধবার দুপুরে ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম মাঈন উদ্দিন সিদ্দিকী এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে তাকে আদালতে হাজির করে খিলগাঁও থানায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা।

রাজধানীর খিলগাঁও এলাকা থেকে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজমের সাইবার ক্রাইম ইউনিট তাকে গ্রেফতার করে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া ও পাবলিক রিলেসন্স বিভাগ থেকে জানানো হয়, আহসান হাবিব পিয়ার দাওরায়ে হাদিসে পড়াশোনা করেছেন। নিজেকে এএইচপি টিভির সাংবাদিক বলে পরিচয় দিতেন এবং নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ধর্মের কথা বলে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।

সম্প্রতি সে নিজেকে পীর দাবি করে জিন তাড়ানোর কথা বলে মেয়েদের নির্যাতন করত বলে অভিযোগ ওঠে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সময় মেয়েদের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যৌন উত্তেজক কথা বলে এবং পরে এদের অনেককে নিজ বাসায় এনে ব্ল্যাকমেইল করে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করত।

এ বিষয়ে সাইবার ক্রাইম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. নাজমুল ইসলাম জানান, পীর দাবি করা ভণ্ড হুজুর মেয়েদের সঙ্গে যৌনকর্ম করার সময় ভিডিও করে তা কম্পিউটারে সংরক্ষণ করত। পরে সুযোগ মতো ভিডিওর কথা বলে ব্ল্যাকমেইল করে লাখ লাখ টাকা আদায় করত।

তার বিরুদ্ধে খিলগাঁও থানায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধন) আইনের ৫৭ ধারায় মামলা রুজু করার আগে পুলিশ সদর দপ্তরের আইন শাখার সঙ্গে আইনগত পরামর্শ নিতে হবে।

আজ বুধবার পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক ওই নির্দেশ দেন। তাঁর স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশনায় চারটি বিষয়ের দিকে লক্ষ রাখতে বলা হয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়, ‘আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে অপরাধীকে আইনের আওতায় আনয়ন এবং নিরীহ ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয় তা নিশ্চিতকল্পে এ ধারায় (৫৭ ধারা) মামলা রুজুর পূর্বে নিম্নোক্ত বিষয়সমূহ অনুসরণ করতে হবে।

ক. তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধন) আইন, ২০১৩-এর ৫৭ ধারায় সংঘটিত অপরাধ সংক্রান্তে মামলা রুজুর ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

খ. অভিযোগ সম্পর্কে কোনোরূপ সন্দেহের উদ্রেক হলে তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট থানায় জিডি এন্ট্রি করে অভিযোগের সত্যতা সম্পর্কে যাচাই বাছাই করতে হবে।

গ. মামলা রুজুর আগে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের আইন শাখার সঙ্গে আইনগত পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

ঘ. কোনো নিরীহ ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।’

নিদের্শনার শুরুতে বলা হয়, ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধন) আইন, ২০১৩-এর ৫৭ ধারায় বর্ণিত অপরাধ সংঘটন সংক্রান্তে মামলার রুজুর বিষয়ে বিভিন্ন মিডিয়া ও সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রচারিত ও প্রকাশিত হচ্ছে। কতিপয় ক্ষেত্রে বিভিন্ন থানায় এ ধারায় রুজুকৃত মামলার ক্ষেত্রে আইনের যথাযথ প্রয়োগ হচ্ছে না এ মর্মে অভিযোগ উত্থাপিত হচ্ছে।’

সম্প্রতি এ ধারায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলার আসামিদের মধ্যে সাংবাদিকদের সংখ্যাই বেশি।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

নিজস্ব প্রতিবেদক : কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। সাতক্ষীরা শহরের রাজারবাগান এলাকায় এঘটনা ঘটে। ১৭ জুলাই দুপুরে এঘটনায় ৩ জন আটক হলেও ২ জন বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।
অপহৃতের পিতা আনন্দ কর্মকার জানান, তাদের বাড়ি শহরের রাজারবাগান এলাকায়। তার কন্যা সঞ্চিতা কর্মকার দোলা(১৪) সাতক্ষীরা নবারুণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী। সঞ্চিতা প্রতিদিন পায়ে হেটে স্কুলে যাতায়াত করতো। এদিকে আমার কন্যার উপর কু’নজর পড়ে ধুলিহর গোবিন্দপুর এলাকার দেবেন দাসের ছেলে সবুজ দাসের। সবুজ তার কন্যার যাতায়াতের সময় তার পথ আটকিয়ে উত্যক্ত ও কু প্রস্তাব দিতে থাকে। কিন্তু তার কন্যা সবুজের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সে বিভিন্ন ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে। একপর্যায়ে গত ১৭ জুলাই স্কুল বের হওয়ার পর সবুজ কৌশলে সঞ্চিতাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করে তার মেয়ের কোন সন্ধান না পেয়ে তিনি হতাশ হয়ে পড়েন। মেয়ের সন্ধান পেতে তিনি ২৬ জুলাই গোবিন্দপুর এলাকার দেবেন দাসের ছেলে সবুজ দাস, মৃত পাগল দাসের ছেলে দেবেন দাস, দেবেন দাসের স্ত্রী কনিকা দাস ও মৃত বৈদ্যনাথের ছেলে সুফল দাসের নাম উল্লেখ করে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এঘটনায় পুলিশ সুফল দাস, কনিকা দাস ও দেবেন দাসকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। কিন্তু আদালতের মাধ্য সুফল দাস ও কনিকা দাস জামিন নিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এদিকে ঘটনার ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও সঞ্চিতার কোন সন্ধান পায়নি তার পরিবার। অথচ আসামিরা জামিন নিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদর্শন করে যাচ্ছে। এঘটনায় অবিলম্বে দোষীদের তদন্তপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অপহৃত কন্যার সন্ধান পেতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন আনন্দ কর্মকার।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest