সর্বশেষ সংবাদ-
সাতক্ষীরা জেলা আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভাসাতক্ষীরায় কায়পুত্র সম্প্রদায়ের ভ‚মি সংক্রান্ত বিষয়ে এ্যাডভোকেসি সভাবিএনপির কানাডা পশ্চিম শাখা শাখার সাধারণ সম্পাদক হলেন সাতক্ষীরার মুজিবর রহমানশ্যামনগর উপজেলায় নাগরিক প্লাটফর্মের সাথে যুব ফোরামের তথ্য বিনিময়সাতক্ষীরায় মরিচ্চাপ ফিস এন্ড ফিড এর উদ্বোধনশ্যামনগর উপজেলায় যুব ফোরামের ত্রৈমাসিক সভাদেবহাটায় আমাদের টিমের বিশুদ্ধ পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণপ্রচন্ড তাপপ্রবাহ উপেক্ষা করে সাতক্ষীরায় মোটরযানের উপর মোবাইল কোর্টজনগণ যাকে চাইবেন, তিনিই নির্বাচিত হবেন-সাতক্ষীরায় নির্বাচন কমিশনার হাবিব খানসাতক্ষীরায় হিট স্ট্রোকে এক শিক্ষকের মৃত্যু : সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.২ ডিগ্রি

received_18583084777915251নিজস্ব প্রতিবেদক : সাতক্ষীরার ইতিহাসের সবচেয়ে নৃশংস খুনী এম আব্দুল্লাহিল বাকী সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের বুলারাটী গ্রামে ১৯১৩ সালের ৯ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্র হিসেবে প্রচণ্ড মেধাবী হলেও তরুণ বয়স থেকেই হিংস্রতার জন্য কুখ্যাতি ছিল বাকীর।

মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার আসামি বাকি ১৯৬৪ সালে তৎকালীন সাতক্ষীরা মহকুমার আলিপুর ইউনিয়ন কাউন্সিলের প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
মুসলিম লীগ নেতা হিসেবে দাপট ছিল বাকির। এভাবে টানা ২৪ বছর একই ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট অথবা চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৭৮ সালে সাতক্ষীরা মহকুমার ৭৮টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সমন্বয়ে গঠিত চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি ছিলেন তিনি। এরপর কো-অপারেটিভ ব্যাংকের চেয়ারম্যান হন আবদুল্লাহেল বাকি।

আবদুল্লাহেল বাকির বাবা হাজি জমিরুদ্দিন। তাঁরা দুই ভাই ও দুই বোন। তাঁরা হলেন আবদুল্লাহেল বাকি, আহলে হাদীস নেতা ড. আসাদুল্লাহ আল গালিব, জামিলা খাতুন ও হালিমা খাতুন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আবদুল্লাহেল বাকির দুই স্ত্রীর প্রথম জন টরি বেগম মারা গেছেন। এখন বেঁচে আছেন ছোট স্ত্রী সাজেদা খাতুন। তাঁর নয় মেয়ে ও তিন ছেলে এবং ৬৪ নাতি-নাতনি রয়েছেন। মেয়েরা হলেন লতিফা খাতুন, তৈয়বা খাতুন, হেনা খাতুন, মিনা খাতুন, আছিয়া খাতুন, সালমা খাতুন, তাহমিনা খাতুন ও মৌহসেনা খাতুন। অপর মেয়ে নাজমা খাতুন মারা গেছেন। বাকির তিন ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল বেসিক ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। মেজ ছেলে মোস্তাজারুর রহমান বাবুল সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অধ্যাপক এবং ছোট ছেলে মোস্তাফিরুর রহমান হাবুল একজন মুদি ব্যবসায়ী। আবদুল্লাহেল বাকি খুলনায় তাঁর বড় ছেলের বাসায় থাকতেন। পাঁচ দিন আগে তাঁকে গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার আলিপুর ইউনিয়নের বুলারাটিতে নিয়ে আসা হয়।

একাত্তরে আবদুল্লাহেল বাকির নাম শুনলে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে উঠত। সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে মাত্র ২০০ গজ দূরে সুলতানপুর বড়বাজারমুখী সড়কের পূর্ব পাশ ঘেঁষে ছিল রাজাকার বাকির টর্চারিং সেন্টার। বর্তমানে সেটি অগ্রণী ব্যাংক। এভারগ্রিন ট্রেডের দোতলায় এ ভবনটি ছিল ডায়মন্ড কোম্পানির স্টার হোটেল হিসেবে পরিচিত। এর পরিচালক ছিলেন অবাঙালি মুসা খান।

সাতক্ষীরার বিশিষ্ট কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাতক্ষীরার ত্রাস আবদুল্লাহেল বাকি তাঁর দোসরদের নিয়ে ‘পাকিস্তানের শত্রু নিধন’-এর লক্ষ্যে গড়ে তোলেন এ টর্চার সেল। এখানে ধরে আনা কথিত কাফেরদের বেতলাঠি ও মুগুর দিয়ে আঘাত করা ছাড়াও ছুরি ও ব্লেড দিয়ে দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ চিরে লবণ দেওয়া হতো। গরম পানিতে চুবিয়ে ধরা হতো। ঝুলিয়ে মারা হতো বেত। কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে মজা দেখতেন বাকিসহ তাঁর সহযোগীরা। কয়েক দিনের নির্যাতনের পর কোনো স্বীকারোক্তি না পাওয়া গেলে বাঙালি সন্তানদের নিয়ে যাওয়া হতো পাকিস্তানি সেনাদের কাছে। এরপর মাহমুদপুর অথবা বিনেরপোতায় নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হতো তাদের। টর্চার সেলে নেওয়া পুষ্পকাটী গ্রামের তরুণ ছাত্র আনসার আলীকে হত্যা করেন বাকী। আনসার হত্যার অভিযোগেও বাকীর বিচার চলছে।

মুক্তিযোদ্ধারা জানান, বাকির টর্চার সেলের দুই ঘাতক কসাই ছিলেন শহরের নবজীবন এনজিওর খান রোকনুজ্জামান ও পলাশপোল হাইস্কুলের প্রয়াত শিক্ষক কবির আহমেদ। তাঁরা আনসারের লাশ নিয়ে পরিবারের হাতে পৌঁছে দিয়ে বলেছিলেন, ‘পাকিস্তান সরকারের বিরোধিতার এটাই ফল। দেবহাটার ঘলঘলিয়ার তরুণ ছাত্র খলিলুর রহমানকে ডায়মন্ড টর্চার সেলে এক সপ্তাহ নির্যাতন চালিয়ে যশোর সেনাক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখান থেকে খলিলুর রহমান পালিয়ে বাাঁচেন।
সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুরের আওয়ামী লীগ নেতা মো. নজরুল ইসলামকে গাড়ির চাকায় বেঁধে টেনে আনা হয় বাকির টর্চার সেলে। কয়েক দিনের নিপীড়নের পর ঘাতকরা নজরুলকে বাঁকাল খালের ধারে ছুড়ে ফেলে দেয়। দুদিন পর সাতক্ষীরা থানার ওসি তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে দিলেও তিনি একই হাসপাতালে ভর্তি হওয়া একজন পাকিস্তানি সৈনিককে দেখে আতঙ্কে সরে পড়েন। বাকির নেতৃত্বে আলিপুরের মাহমুদপুরে ছিল আরো একটি কিলিং সেন্টার (হত্যার জায়গা)। শহরের স্টার ডায়মন্ড হোটেলে নির্যাতন করে কিছু উদ্ধারে ব্যর্থ হলে কথিত কাফেরদের পাঠানো হতো মাহমুদপুরে। সাড়ে চার দশক পর আজও এ অঞ্চলে কথিত আছে ‘কী ছিল কপালের ফের, যাব টাকি সোদপুর, গেলাম কিনা মাহমুদপুর’। মুক্তিযুদ্ধকালে সেখানে রোজ ২০ থেকে ৫০টি পর্যন্ত লাশ ফেলা হতো বলে এলাকাবাসী জানায়। ১৯৭১-এর ৩০ নভেম্বর আলিপুর পুষ্পকাটী এলাকায় কয়েকশ’মুক্তিযোদ্ধা অবস্থান নেন। এ খবর পেয়ে পাকিস্তানি বাহিনী খুলনা অভিমুখে পলায়ন শুরু করতেই আতঙ্কিত বাকি, খালেক, খান রোকনুজ্জামান, কবির আহমেদ ও জহুরুল ইসলামসহ অন্যরা পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে পলায়ন করেন। তাঁদের মধ্যে রাজাকার খালেক ওরফে মওলানা আবদুল খালেক মণ্ডল যুদ্ধাপরাধ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে আছেন। রাজাকার কবির আহমেদ মারা গেছেন। এ ছাড়া খান রোকনুজ্জামান ও জহুরুল ইসলামসহ অন্যরা এই মুহূর্তে পালিয়ে আছেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
রক্তে চর্বির মাত্রা কমাবেন কীভাবে?

স্বাস্থ্য ডেস্ক: রক্তে চর্বি বেড়ে গেলে তা ধমনিতে জমা হয়ে রক্ত চলাচলে বাধা দেয়। আর এ থেকেই হৃদ্রোগ, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ বা স্ট্রোক ইত্যাদির উৎপত্তি হয়। তাই রক্তে চর্বি বা কোলেস্টেরল যাতে বেড়ে না যায়, সে বিষয়ে আজকাল অনেকেই সচেতন। তাহলে চর্বি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কী খাবেন? কেউ বলেন রসুন চিবিয়ে খাও, কেউ বলেন অলিভ তেলে রান্না করো। আসল কথা হলো, চর্বি যাতে না বাড়ে সে জন্য কিছু খাবার একেবারেই বাদ দিতে হবে, কিছু খাবার খেতে হবে কম। জেনে নিন কয়েকটি তথ্য:
১. সম্পৃক্ত চর্বি যত কম খাওয়া যায়, ততই ভালো। গরু বা খাসির মাংস এবং ঘি-মাখনে যে চর্বি থাকে, সেটাই সম্পৃক্ত চর্বি। এগুলো বর্জন করুন। আর উপকারী অসম্পৃক্ত চর্বি আছে মাছের তেল, বাদাম ও বীজজাতীয় খাবারে। ট্রান্সফ্যাটও কম খেতে হবে। বেকারির খাবার ও ফাস্ট ফুডে তেল উচ্চতাপে আংশিক হাইড্রোজেনেটেড হয়ে ক্ষতিকর ট্রান্সফ্যাটে পরিণত হয়।
২. আঁশযুক্ত খাবার প্রচুর পরিমাণে খাবেন। যেমন: যব, ভুট্টা, লাল আটার রুটি, ফলমূল, শাকসবজি। এগুলো আপনার রক্তে চর্বি কমাতে সাহায্য করবে।
৩. উদ্ভিজ্জ স্টেরল ও স্টেনল উপাদান রক্তে চর্বি শোষণে বাধা দেয় ও চর্বি কমাতে সাহায্য করে। ফলের রস, টক দই, তাজা শাকসবজিতে পাওয়া যাবে এই উপাদান।
৪. নিজের জন্য জুতসই খাদ্যতালিকা নিজেই বানিয়ে নিতে পারেন। অন্যের ডায়েট চার্ট অনুসরণ করে অনেক সময় লাভ হয় না। কঠোর খাদ্যতালিকার চেয়ে দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসে ওপরের নির্দেশনা অনুযায়ী কিছু পরিবর্তন আনলেই উপকার মেলে।
৫. তারপরও রক্তে চর্বি বেড়ে গেলে এবং আপনার হৃদ্রোগের অন্যান্য ঝুঁকি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে চর্বি কমানোর ওষুধ সেবন করাই ভালো।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
শুরুতেই ফিরে গেলেন সৌম্য

ক্রীড়া ডেস্ক: অবশেষে উইকেট! অবশেষে আউট হলেন দিলরুয়ান পেরেরা! তিন বল পরেই সুরঙ্গা লাকমলও গেলেন। শ্রীলঙ্কা অলআউট হলো ৩১৯ রানে। শততম টেস্ট জেতার জন্য বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৯১। ২৩৮ রানে পড়েছিল অষ্টম উইকেট। সেটি গতকাল বিকেলের কথা। শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংসের ৯২তম ওভার ছিল সেটি। তারপর থেকেই বাংলাদেশের অপেক্ষার শুরু। যে অপেক্ষা শেষ হয়েছে আজ সকালের সেশনের ১৩তম ওভারের চতুর্থ বলে। মিস ফিল্ডিংয়ে রান নিতে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়েছেন পেরেরা। পরের ওভারেই সাকিবের দ্বিতীয় বলে মোসাদ্দেকের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন লাকমল। একটা লম্বা সময় বাংলাদেশের বোলারদের হতাশা উপহার দিয়ে গেছেন দিলরুয়ান পেরেরা-সুরঙ্গা লাকমল। নবম উইকেটে তারা দুজন যোগ করেছেন ৭৯ রান। তারপর গিয়ে রান আউট হলেন পেরেরা। অবশ্য এর আগেই পেয়ে গেছেন নিজের ফিফটিটাও। দিনের খেলা শুরুর আগে তামিম ইকবাল অবশ্য বলেছেন, এখনই জয়ের কথা ভাবছে না দল। আগে লঙ্কানদের শেষ দুটি উইকেট তুলে নিতে চান তাঁরা। তারপর রান তাড়া করার ভাবনা। ইতিবাচক খেলতে চায় বাংলাদেশ। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কান বোলার সান্দাকান বলেছিলেন, ১৭৫ রানের লিড পেলেই জেতার সুযোগ থাকবে তাঁদের। তাঁর প্রত্যাশার চেয়েও বেশি রান এরই মধ্যে হয়ে গেছে লঙ্কানদের। একটু কি দেরি করে ফেলল বাংলাদেশ?

 

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

indexএস এম আহমাদ উল্ল্যাহ বাচ্ছু : কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর উপজেলা এলাকার সাধারণ মানুষদের প্রলোভন ও ভবিষ্যতে মোটা অংকের টাকা পাওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্বসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর শ্যামনগর উপজেলা ইনচার্জ কনিকা পালের বিরুদ্ধে। সে শ্যামনগর উপজেলার নকিপুর গ্রামের মৃত সুশীল চন্দ্র পালের মেয়ে। এলাকার শিক্ষক, ব্যবসায়ী ও সাধারণ ভূক্তভোগীদের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কনিকা পাল বিভিন্ন সময় সরলমনা মানুষদের ভুল বুঝিয়ে মেয়াদপুর্তি ডিপোজিট পরিকল্প গ্রহণ, প্রতি মাসে লাখ প্রতি ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ, ও এক বছর মেয়াদে জমাকৃত আসল টাকা ফেরত দেয়ার শর্তে ষ্ট্যাম্পে চুক্তিপত্রের মাধ্যমে গ্রাহকদের পলিসি করান, যা প্রচলিত বীমা আইন ও নীতিমালার পরিপন্থী। পলিসির গ্রাহকরা খবর নিয়ে জানতে পারেন বীমা পলিসি নবায়নের জাল রশিদ প্রদানের মাধ্যমে তিনি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে ভারতে চলে গেছেন। গ্রাহকবৃন্দ বিষয়টি সর্ম্পকে ভালভাবে জানতে ও প্রতিকারের আশায় মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর জেলাসহ প্রধান কার্যালয়ে যোগাযোগ করে। সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ জানায় উপজেলা ইনচার্জ কনিকা পালের উপস্থিতি ছাড়া কোন ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব নয়। এদিকে কনিকা পালের বিরুদ্ধে শ্যামনগর উপজেলার ভেটখালী গ্রামের মৃত পন্ডিত চন্দ্র মন্ডলের ছেলে অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক সন্তোষ কুমার মন্ডল, বড়-ভেটখালী গ্রামের মৃত হারান চন্দ্র মাঝির ছেলে অনিল চন্দ্র মাঝিসহ বেশ কয়েক জনের নিকট থেকে ব্যাক্তিস্বার্থ ও প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে আতœসাৎ করেছেন এই মর্মে মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোঃ লিঃ এর মাকেটিং এন্ড প্রশাসন বিভাগের পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীরা। এছাড়া নির্ভরযোগ্য সূত্র আরো জানায়, কনিকা পালের বিরুদ্ধে মেঘনা লাইফ ইন্স্যু কোম্পানী কর্তৃপক্ষ ২০ লাখ টাকা আতœসাৎ করার অভিযোগে সাতক্ষীরা আদালতে মামলাও দায়ের করেছেন। মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কর্তৃপক্ষ কানিকার গ্রাহকদের আত্মসাৎকৃত টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার শর্তে তাকে পুনরায় চাকুরীতে বহাল করেন। দিকে সুচতুর কনিকা পাল কোম্পানীর টাকা নয় ছয় করে ২০১২ সালে দিকে ভারতে পাড়ি জমিয়ে ২০১৬ সালে প্রথম দিকে তার এক নিকট আত্মীয়ার ম্যাধ্যমে কোম্পানীর উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে পূনরায় চাকুরীতে যোগদান করেছেন। কর্মস্থলে ফিরেই তিনি অভিযোগকারী গ্রাহকদের সাথে খারাপ আচরণ, হুমকি ধামকীসহ নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। বীমা গ্রাহকদের জমাকৃত টাকা আতœসাৎ করার বিষয়ে ইনচার্জ কনিকা পালের কাছে জানতে চাইলে তিনি মুঠো ফোনে সাংবাদিকদের জানান, আমার বিরুদ্ধে কোন প্রকার অভিযোগ আছে সেটা আমার জানা নেই। প্রকৃত পক্ষে এলাকায় কিছু ব্যাক্তি ও আমার অফিসের সহকর্মীরা সামাজে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে। অর্থ আতœসাৎ এর কোন বিষয় আমার অফিসে ঘটনা ঘটেনি। শারিরীক অসুস্থ্যতার কারনে চিকিৎসার জন্য দীর্ঘ দিন ভারতে অবস্থান করায় গ্রাহকবৃন্দ আমাকে নিয়ে এমন খবর প্রচার করছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

mmmনিজস্ব প্রতিবেদক : সোহরাওয়ার্দী কাপ জাতীয় অনুর্দ্ধ-১৮ ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০১৭ এর ফাইনালে ঝিনাইদহা জেলা দলকে ২-০ গোলে হারিয়ে খুলনা বিভাগীয় অপরাজিত গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে সাতক্ষীরা জেলা দল। শনিবার বিকালে গোপালগঞ্জ স্টেডিয়ামে ঝিনাইদহা জেলা দলকে হারিয়ে ২-০ গোলে হারিয়ে বিভাগীয় অপরাজিত গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন  হয়ে সব ক’টি দলকে হারিয়েছে। দলের পক্ষে ইয়াছিন আলী সাগর-১টি ও হাবিবুর ১টি গোল করে। ফলে সাতক্ষীরা জেলা দল খুলনা বিভাগীয় অপরাজিত গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। জাতীয় অনুর্দ্ধ-১৮ ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০১৭ এর ফাইনালে ঝিনাইদহা জেলা দলকে ২-০ গোলে হারিয়ে খুলনা বিভাগীয় অপরাজিত গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করায় শুভেচ্ছা জানিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জেলা প্রশাসক ও জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের প্রধান উপদেষ্টা আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন সোহরাওয়ার্দী কাপ জাতীয় অনুর্দ্ধ-১৮ ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০১৭ এ অংশগ্রহণকারী জেলা দলের সকল খেলোয়াড়, কোচ ও টিম ম্যানেজারসহ জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের কর্মকর্তা এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থার নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এ সময় তিনি আরো আমরা বিদেশী খেলোয়াড়দের পরিহার করে দেশী খেলোয়াড়দের সুযোগ দেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে জেলার সকল ভালো খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ভালো খেলোয়াড় সৃষ্টি করতে চাই। সে লক্ষ্যে জেলায় অনুর্দ্ধ-১৮ ফুটবল টুর্র্নামেন্টের জন্য বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে টিম গঠন করেছি বলেই আমরা সব ক’টি দলকে হারিয়ে আজ বিভাগীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। আর নয় বিদেশী খেলোয়াড়। এখন আমরা দেশীয় খেলোয়াড় তৈরির লক্ষ্যে এ সব খেলোয়াড়দের কোচিং এর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এ বিজয় শুধু আমার একার নয়। এ বিজয় সাতক্ষীরাবাসীর। তাই এ বিজয়কে আমি সাতক্ষীরাবাসীর জন্য উৎসর্গ করলাম। এছাড়াও সাতক্ষীরা জেলা দলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মো. আলতাফ হোসেন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক এ.কে.এম আনিছুর রহমান, জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম খান, ট্রেজারার শেখ মাসুদ আলীসহ জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের কর্মকর্তা এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থার নেতৃবৃন্দ। জেলা দলের টিমের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির খান বাপ্পি, টিম ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন স.ম সেলিম রেজা। জেলা দলের হয়ে খেলছেন জাহাঙ্গীর, মোস্তাফিজুর, মামুন, সাইফুল, রাশেদ, মনিরুল, পারভেজ, বাবলু, বাপ্পি, সুমন, স¤্রাট, জাহিদ, সাইমুন, হাবিবুর, মিয়ারাজ ও ইদ্রিস।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

mmmআমির হোসেন খান চৌধুরী/হাসান হাদী: মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল কর্তৃক গ্রেফতারি পরোয়ানার পলাতক আসামি সাতক্ষীরার কুখ্যাত রাজাকার এম. আবদুল্লাহিল বাকি(১০৩)-কে গ্রেফতার করায় সাতক্ষীরা শহরে আনন্দ মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেছে মুক্তিযেদ্ধা-জনতা। রাজকার বাকী গ্রেফতারের খবর পেয়ে মুক্তিযোদ্ধা জনতার একটি বিক্ষোভ মিছিল শনিবার রাত ৯টার দিকে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহিদ নাজমুল সরণিস্থ রেড ক্রিসেন্ট কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে। মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ সরকারের সভাপতিত্বে ও স্বপন কুমার শীলের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ইনামুল হক বিশ্বাস, সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হাসান উল ইসলাম ও অতিরিক্তি পিপি এড. ফাহিমুল হক কিসলু।
আনন্দ মিছিলে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মুক্তিযোদ্ধা হাসনে জাহিদ জজ, এড. মোস্তফা নুরুল আলম, মাহবুবর রহমান, মোহম্মদ আলী, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি, জেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান পলাশ, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সদর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন খান চৌধুরী, সদর উপজেলা আ.লীগের প্রচার সম্পাদক হাসান হাদী, জেলা উদীচি’র সভাপতি সিদ্দীকুর রহমান, পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি শেখ শরিফুল ইসলাম, শ্রমিক ফেডারেশনের মকবুল হোসেন, জাগ্রত সাতীরার সায়েম ফেরদৌস মিতুল, যুব মৈত্রীর বিশ্বনাথ কয়াল, দেবাশীষ মন্ডল, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি সাতক্ষীরা শহর শাখার সাধারণ সম্পাদক ঋওনক বাসার, ছাত্রমৈত্রীর জেলা সভাপতি প্রণয় সরকার প্রমুখ।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল-০১ গত ৮ মার্চ বাকীসহ সাতক্ষীরার তিন রাজাকারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। অন্যদিকে, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারিকৃত ওই তিন রাজাকারকে অবিলম্বে আটকের দাবিতে গত ১২মার্চ সাতক্ষীরায় মানববন্ধন ও সমাবেশ করে সাতক্ষীরার মুক্তিযোদ্ধা-জনতা। বাকীর বিরুদ্ধে একাত্তরে একাধিক হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগ আছে। বাকী তৎকালীন সাতক্ষীরা মহাকুমার রাজাকার বাহিনীর প্রধান ছিলেন। এই কুখ্যাত রাজাকার শিরোমণির গ্রেফতার হওয়ায় এখন তার ফাঁসির রায়ের জন্য প্রহর গুণছে সাতক্ষীরার অসংখ্য শহিদ পরিবার ও নির্যাতিত মুক্তযোদ্ধাগণ।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

mmmডেস্ক রিপোর্ট : আজ ১৯ মার্চ রোববার, “তুমি আমার আকাশ থেকে সরাও তোমার ছায়া, তুমি বাংলা ছাড়ো”Ñপ্রখ্যাত ‘বাংলা ছাড়ো’ কবিতার জনক, তালার কৃতি সন্তান, খ্যাতিমান কবি, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক সিকান্দার আবু জাফরের ৯৮তম জন্মদিন। এ উপলক্ষ্যে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও কবির পৈত্রিক ভিটা উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামে আলোচনা সভা ও কবির কবর জিয়ারতসহ নানান কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া, কবির নিজ গ্রাম উপজেলার তেঁতুলিয়ায় কবি সিকান্দার আবু জাফর স্মরণে সিকান্দার মেলার উদ্বোধন করা হবে। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমির আয়োজনে মাসব্যাপী সিকান্দার মেলা চলবে।
সাতক্ষীরা-০১ (তালা-কলারোয়া) সংসদ সদস্য অ্যাড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মেলার উদ্বোধন করবেন। এসময় সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মো. আলতাফ হোসেন, কবি পরিবারের সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ দিদার বখত্, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এ.এফ.এম এহতেশামূল হক, তালা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার ও তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফরিদ হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দীন মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন। মেলাকে ঘিরে তালাসহ আশপাশের এলাকার মানুষের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। একই সাথে অভিভাবক ও সচেতন মহলের মাঝে উদ্বেগ এবং উৎকণ্ঠাও আছে। এই মেলাকে পুঁজি করে যাতে করে কেউ জুয়া বা নগ্নতার সুযোগ না নিতে পারে সেদিকে সকলকে খেয়াল রাখার দাবি তাদের।
সরেজমিনে তেঁতুলিয়া গিয়ে দেখা গেছে, শনিবার জোরে সোরে চলছে মেলার শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি। মেলা উপলক্ষ্যে কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে মিনি সার্কাস, যাত্রা, পুুতল নাচ, নাগরদোলা, ফার্নিচারের দোকানসহ নানাবিধ পসরার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে সেখানে।
আবারও স্থানীয়ভাবে জোর গুঞ্জন আছে, মেলা মাঠে জুয়া, লটারি ও উলঙ্গ নৃত্য পরিচালনার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তালা, খুলনা, নড়াইল ও বাগেরহাট এলাকার মানিক শিকদার ও সাইফুলসহ বড় বড় জুয়াড়িরা এবং অশ্লীল নৃত্য পরিচালনাকারীরা লক্ষ লক্ষ টাকার মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছে।
এলাকার সচেতন মহল’র অভিযোগ, প্রথিতযশা এই কবির নামকে কলংকিত করতে কোন স্বার্থানেষী মহল যেন এখানে নর্তকীদের উলঙ্গ নৃত্য, অবৈধ লটারি ও জুয়া বোর্ড পরিচালনা করে যুব সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতে না পারে।
উল্লেখ্য, গত বছর অবৈধ ভাবে জুয়া বোর্ড পরিচালনা এবং উলঙ্গ নৃত্য দেখানোর সময় পুলিশ প্রশাসন কঠোর হয়ে ওঠে। প্রশাসন উলঙ্গ নৃত্য বন্ধ করাসহ এক জুয়া স¤্রাটকে আটক করে। একারণে এলাকার সচেতন মহল মেলাটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন করাসহ সকল জুয়া, অবৈধ লটারি এবং অশ্লীল উলঙ্গ নৃত্য যেন না চলে সেদিকে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপারের সৃদৃষ্টি কামনা করেছেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

received_18583084777915251আমির হোসেন খান চৌধুরী/হাসান হাদী: মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল কর্তৃক গ্রেফতারি পরোয়ানার পলাতক আসামি সাতক্ষীরার কুখ্যাত রাজাকার এম. আবদুল্লাহিল বাকি(১০৩)কে অবশষে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ কিছুক্ষণ আগে তাকে তার নিজ বাসভবন সদর উপজেলার আলীপুরের বুলারাটী থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ হোসেন মোল্লা বাকীকে গ্রেফতারের বিষয়টি ডেইলি সাতক্ষীরাকে নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২.৩০টায় তাকে তার বাড়ি সদর উপজেলার বুলারাটি গ্রামের নিজ বাড়িতে ঘেরাও করে রাখে পুলিশ। তার বয়স একশো বছরের উর্দ্ধে থাকায় পুলিশ তাকে তখনই গ্রেফতার না দেখিয়ে নজরবন্দী করে রাখে।
আজ রাত ১০টার দিকে তাকে সাতক্ষীরা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হবে। আগামিকাল রোববার সকালে তাকে ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে হাজির করা হবে।
গতকাল সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক জানিয়েছিলেন, আবদুল্লাহিল বাকিকে তার বাড়িতে পুলিশ ঘেরাও করে রেখেছে। তিনি জানান, শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় তাকে সতর্কতার সাথে রোববার ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তোলা হবে। তিনি আরও বলেন, এম, আবদুল্লাহেল বাকি মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবনালের গ্রেফতারি পরোয়ানার পলাতক আসামি।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল-০১ গত ৮ মার্চ বাকীসহ সাতক্ষীরার তিন রাজাকারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। অন্যদিকে, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারিকৃত ওই তিন রাজাকারকে অবিলম্বে আটকের দাবিতে গত ১২মার্চ সাতক্ষীরায় মানববন্ধন ও সমাবেশ করে সাতক্ষীরার মুক্তিযোদ্ধা-জনতা। বাকীর বিরুদ্ধে একাত্তরে একাধিক হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগ আছে। বাকী তৎকালীন সাতক্ষীরা মহাকুমার রাজাকার বাহিনীর প্রধান ছিলেন।

বাকীর নৃশংসতার বর্ণনা

মহান মুক্তিযোদ্ধা ইমাম বারী সাতক্ষীরা শহরের কাটিয়ার সন্তান। ১৯৭১ সালে যশোরে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া অবস্থায় যুদ্ধে যোগ দেন। তিনি ছিলেন যুদ্ধকালীন গঠিত বাংলাদেশ নৌ-কমান্ডের প্রথম ব্যাচের যোদ্ধা। তিন মাসের ট্রেনিং শেষে তাদেরকে ৪টি গ্রুপে ভাগ করে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের এক অনন্য সাফল্য ‘অপারেশন জ্যাকপট’র জন্য পাঠানো হয়। মংলায় ৮টি জাহাজ বিস্ফোরক দিয়ে উড়িয়ে দেয়ার পর ইমাম বারী ও তার দল ফিরছিলেন সাতক্ষীরার দিকে। পথিমধ্যে ১৭ আগস্ট  ১৯৭১ ভোর রাতে বুধহাটা বেতনা নদীতে তাদের নৌকা ঘিরে ফেলে আলিপুরের কুখ্যাত রাজাকার বাকীর নেতৃত্বাধীন বাহিনী। নদীর দুই পাড় দিয়ে ক্রমান্বয়ে গুলি করতে থাকলে এক পর্যায়ে গুলি শেষ হয়ে যায় মুক্তিযোদ্ধাদের। ফলে তাদেরকে আটক করতে সমর্থ হয়।
রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা ইমাম বারী ৭১’ সালের সেই দুর্বিসহ স্মৃতি তুলে ধরেন এই প্রতিবেদকের কাছে, “প্রথমেই আব্দুল্লাহিল বাকী রাজাকার মুক্তিযোদ্ধাদের নৌকায় উঠেই কোন কথা বলার আগেই তার কাছে থাকা থ্রি নট থ্রি রাইফেল তাক করে সুঠামদেহী মুক্তিযোদ্ধা যশোরে আফতাফকে সরাসরি বুকে গুলি করে। গুলিবিদ্ধ আফতাফ আর্তনাদ করে নদীতে পড়ে ভেসে যায়। শহিদ আফতাফের লাশ আর পাওয়া যায়নি। এরপর আমাদের ৫ জনকে আব্দুল্লাহিল বাকীর দল চোখ বেঁধে নদীর পাড়ে একটি একতলা বাড়িতে আটকে রাখে। কয়েক ঘণ্টা ধরে আমাদের নিষ্ঠুর নির্যাতন চলতে থাকে। এরপর পলাশপোলের রোকনুজ্জামান খান এসে আমাদের দলের সিরাজকে দেখে উত্তেজিত হয়ে উঠল। সে সিরাজকে টানতে টানতে বাইরে নিয়ে গিয়ে বেড়িবাঁধের ওপর দাঁড় করিয়ে রাইফেল তুলে বুকে গুলি করলো রোকন খান। শহিদ হলেন সিরাজ।
এরপর রোকন একটি লাঠি দিয়ে আমার মাথায় বাড়ি মেরে বলল তুইও আছিস এই দলে, আগে জানলে তো তোকেই মেরে ফেলতাম। এরপর কীভাবে যেন সাতক্ষীরায় পাকিস্তানি মিলিটারির কাছে খবর যায় আমাদের আটক হওয়ার। ফলে আমাদেরকে একটি হলুদ রঙের গাড়িতে করে সাতক্ষীরা ডায়মন্ড হোটেলের টর্চার সেলে এনে আটকে রাখা হয়। পথিমধ্যে ধূলিহর থেকেও কয়েকজনকে তুলে আনা হয়। ডায়মন্ড (স্টার হোটেলও বলা হতো) হোটেলে আমাদেরকে পিলারের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। অনেককে ঘরে ঝুলানো হুকের সঙ্গে ঝুলিয়ে নির্যাতন করা হতো। এই হোটেলের অনেকগুলো রুমে অসংখ্য যুবতী মেয়েকেও আটকে রাখা হয়েছিল। যাদেরকে নিয়মিত ধর্ষণ করত পাকিস্তানি সৈন্য ও রাজাকাররা।”
তিনি আরো বলেন, আমাদেরকে আটকে রাখাকালীন একদিন খালেক ম-ল ও টিক্কা (জহুরুল) এসে কয়েকজন আটক মুক্তিযোদ্ধাকে তুলে নিয়ে যায়। অন্য রাজাকাররা আমাদের জানায় তাদেরকে বিনেরপোতায় হত্যা করা হবে। এরপর একদিন আমাদেরকে যশোরে পাকিস্তানি বাহিনীর আস্তানায় পাঠানো হয়। যশোরের শংকরপুর যেখানে বর্তমানে বাসস্ট্যান্ড সেখানে আটকে রাখা হয়। সেখান থেকে একদিন ভোর বেলা যখন সৈনিকেরা প্যারেড করছিল তখন আমরা পালিয়ে আসি এবং পুনরায় যুদ্ধে যোগ দেই। সে আরেক ইতিহাস।’
এছাড়াও বাকীর অসংখ্য নৃশংসতার প্রমাণ মিলেছে মামলার তদন্তকালে। এই কুখ্যাত রাজাকার শিরোমণির গ্রেফতার হওয়ায় এখন তার ফাঁসির রায়ের জন্য প্রহর গুণছে সাতক্ষীরার অসংখ্য শহিদ পরিবার ও নির্যাতিত মুক্তযোদ্ধাগণ।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest