সর্বশেষ সংবাদ-
দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপজেলা পুষ্টি কমিটির সভাআত্মসমর্পনকৃত বনদস্যুদের পুনরায় সুন্দরবনে তৎপর হওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধনসাতক্ষীরায় মাত্র ১২০ টাকায় মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে পুলিশে চাকরি পেল ৫৮ তরুণ-তরুণীসাতক্ষীরায় আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে মানববন্ধনসাতক্ষীরায় ৮৯ টি হারানো মোবাইল উদ্ধার করে ফেরত দিল পুলিশআশাশুনিতে মাটি চাপা পড়ে শ্রমিকের মৃত্যুঅবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে যেকোনো `চ্যালেঞ্জ’ নিতে প্রস্তুত নতুন সিইসিসাতক্ষীরা জেলা স্কাউটস’র কমিটি গঠন জেলা প্রশাসক সভাপতি : সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেনআশাশুনির বুধহাটা খেয়াঘাটে বেতনা নদীতে সাঁকো নির্মানকালীগঞ্জে কৃষিজমিতে লবণ পানি ঢুকিয়ে চিংড়ি চাষ বন্ধে উচ্চ আদালতের রায় বাস্তবায়ন বিষয়ক মতবিনিময়

আশাশুনি প্রতিনিধি : আশাশুনিতে গাঁজাসহ ১ মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সাতক্ষীরার এসআই বিজয় কৃষ্ণ মজুমদার অভিযান চালিয়ে উপজেলার আগরদাড়ী গ্রামের মানিক গাজীর পুত্র আঃ রশিদকে আটক করেন। এ সময় তার কাছ থেকে ১০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এব্যাপারে এসআই বিজয় কৃষ্ণ বাদী হয়ে আশাশুনি থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ১(১০)/ ১৬ নং মামলা দায়ের করেছেন। আসামীকে গতকাল আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

আশাশুনি ডেস্ক: আশাশুনি উপজেলার ২৫টি সরকারি অফিসের মধ্যে ১৩টি অফিসের কর্মকর্তার পদ শূন্য রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পদগুলো শূন্য থাকায় স্বাভাবিক কর্মকান্ড স্থবির হতে শুরু করেছে। উপজেলা পরিষদভুক্ত এবং উপজেলা পর্যায়ে ইউএনও, এসি (ল্যান্ড), ওসি, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সহ বিভিন্ন অফিসের ২/১ টি বাদে বেশির ভাগেরই গুরুত্ব অনেক বেশী। অফিসগুলো জনগুরুত্বপর্ণ হওয়া স্বত্বেও বছরের পর বছর ধরে আশাশুনির অনেক অফিসে কর্মকর্তার পদশূন্য রয়েছে। তাছাড়া সম্প্রতি বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে এখান থেকে বদলী করা হলেও তদস্থলে কাউকে পোষ্টিং দেয়া হয়নি। শূণ্য থাকা পদগুলোর মধ্যে মৎস্য কর্মকর্তা, প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা, সমবায়, সমাজসেবা, পল্লী উন্নয়ন, পরিসংখ্যান, নির্বাচন, মাধ্যমিক শিক্ষা, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী, খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও সাব রেজিস্ট্রারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ রয়েছে। এসব পদে অর্ধস্থন কাউকে ভারপ্রাপ্ত করে, কাউকে ২/৩টি উপজেলার সাথে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে, কাউকে চলতি দায়িত্ব দিয়ে এসব অফিস পরিচালনা করা হচ্ছে। ফলে কোন কোন অফিসে মাসে একদিন, কোন কোন অফিসে মাসে ২/৪দিন করে কর্মকর্তাদের দেখা মেলে। ফলে অফিসের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমসমুহ ফাইলবন্ধি হয়ে রয়েছে। জনসাধারণ দিনের পর দিন ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। কোন কোন অফিসে বর্তমানে দৈনিকের পরিবর্তে সপ্তাহে ১/২ দিন করে অফিস কার্যক্রম চালু রাখার মত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিটিং বা জরুরি কাজে অফিসে না থাকলে সেদিন উপজেলা পরিষদ এলাকা জনমানবশূন্য মনে হয়। সেবা নিতে আসা অনেককেই অফিসে এসে বারবার ফিরে যেতে দেখা যায়।  তাই জনগুরুত্বপূর্ণ এসকল অফিস সমুহের শূন্য পদগুলোতে জরুরী ভিত্তিতে কর্মকর্তা নিযুক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্ত্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী উপজেলাবাসী ।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি (কালিগঞ্জ) : চাচার জনতাব্যাংকের চেকের তিনটা পাতা চুরি করে ব্যাংকের এ্যাকাউন্টে কত টাকা আছে জানতে যেয়ে জনতা ব্যাংকের গোপন ক্যামেরায় ধরা খেল এলাকার আলোচিত চোর মোঃ আনিছুর কারিগর। ঘটনা টি ঘটেছে মথেরেশপুর ইউনিয়নের উজায়মারি গ্রামে। স্থানীয় সুত্রে জানাযায় উজয়মারি গ্রামের মৎস্য ব্যবসায়ী সাথী ফিসের মালিক পিয়ার আলী কারিগর এর জনতা ব্যংকের সাথী ফিস নামের একাউন্টের তিনটি  চেক বইয়ের পাতা তার নিজ বাড়ির আলমারির ড্রয়ার থেকে গত ২-১০-২০১৬ তারিখে চুরি হয়ে যায়। তিনি তার  দুই দিন পরে চেক বই দেখে বুঝতে পারেন ভিতর থেকে তিনটি পাতা চুরি হয়ে গেছে। তিনি কাউকে কিছু না জানিয়ে জনতা ব্যাংকের কালিগঞ্জ শাখার পরিচালক মোঃ রবিউল ইসলাম কে অবহিত করেন। এসময় পরিচালক সাথে সাথে অন্য অফিসারদের ডেকে খোঁজনেন সাথী ফিসের একাউন্ট সম্পর্কে কোন ব্যাক্তি কোন খোঁজ নিতে এসে ছিল কিনা। এ সময় জনতা ব্যাংকের কালিগঞ্জ শাখার লোন অফিসার এস,এম, শরিফ রায়হান বলেন দুইজন ব্যক্তি আমার কাছে ৪-১০-২০১৬ তারিখে জানতে এসেছিলেন সাথী ফিসের এ্যাকাউন্টে কত টাকা আছে। পিয়ার আলী সাহেব আমার পরিচিত হওয়ায় আমি তাদেরকে বলেছিলাম এটাতো আপনার একাউন্ট না আপনাকে বলা যাবেনা এই একাউন্টে কত টাকা আছে এই কথা শুনে ওনারা চলে যায়। তখন কালিগঞ্জ শাখার পরিচালক বলেন ৪ তারিখের গোপন ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডিও দেখলে পিয়ার সাহেব আপনার এলাকার ব্যাক্তি হলে আপনি হয়ত চিনতে পারবেন। গোপন ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডিও দেখে সাথী ফিসের মালিক হয়ে হতবাক হয়ে যান। কারণ চেকের পাতা চোর আর কেউ নয় পিয়ার আলীর আপন চাচাত ভাইয়ের ছেলে এলাকার আলোচিত চোর আনিসুর। পিয়ার আলীর বাড়ী থেকে শুধুই চেকের পাতা চুরি করে নি আনিসুর দেড় বছর আগে পিয়ার আলীর বাড়ির আলমারি ভেঙ্গে দুইটি গলার সোনার চেইন,দুইটি সোনার আংটি,তিনটা নাকফুল চুরি করে তার বাড়ির পাশে বসবাসরত চোর ভাইপো আনিসুর। লোক লজ্জার ভয়ে কাউকে কিছু না জানিয়ে চোর ভাইপো কে নিয়ে এলাকার স্থানীয় ইউপি সদস্য মনোয়ার হোসেন কে নিয়ে এবং এলাকার দুই চার জন গন্যমান্য ব্যাক্তিদের নিয়ে গত ৪ তারিখে রাত ৯ টার সময় বিচারে বসে পিয়ার আলী। সেখানে চোর আনিসুর সকলের সামনে চেকের পাতা চুরি ও দেড় বছর আগে স্বর্ণ চুরির বিষয়ে স্বীকার করে। এই সময় স্থানীয় ইউপি সদস্য উজায়মারি গ্রামের চোর আনিসুরকে ৮০হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ বিষয়ে সাথী ফিসের মালিক পিয়ার আলীর কাছে চেকের পাতা এবং দেড় বছর আগে তার বাড়ি স্বর্ণ চুরি হওয়ার বিষয় জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন এটা আমাদের নিজেদের বিষয় আমাদের মিমাংসা হয়ে গেছে এ বিষয় নিয়ে লেখা লেখি না করার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন তিনি। বিচারে ৮০ হাজার টাকা জরিমানার বিষয়ে ইউপি সদস্য মনোয়ার হোসেন এর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান দের বছর আগে স্বর্ণ চুরি করার জন্য আঁশি হাজার টাকা জরিমানা করেছি। কিন্তু এখন ও জরিমানার টাকা আনিসুর তার চাচা পিয়ার আলী কে দেয়নি তবে একটা সময় বেধে দেওয়া হয়েছে নির্ধারিত সময়ের মধ্য আনিসুর কে জরিমানার টাকা পরিষোধ করতে হবে। এই চেকের পাতা চুরি ও দেড়বছর আগে স্বর্ণ চুরি নিয়ে এবং স্থানীয় ইউপি সদস্যর বিচারে চোর আনিসুর কে পুলিশে না দিয়ে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করায়,স্থানীয় জনগনের মধ্যে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

c-lig
প্রেস বিজ্ঞপ্তি : সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের বর্ধিতসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় জেলা ছাত্রলীগ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর হুসাইন সুজন। সাধারণ সম্পাদক শেখ এহসান হাবিব অয়নের পরিচালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন, তালা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সরদার মশিয়ার, দেবহাটা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান সবুজ, কলারোয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান হোসেন, কালিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি গৌতম কুমার লস্কর, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসান হাবিব লিমু, সরকারি কলেজছাত্রলীগের সভাপতি মিঠুন ব্যনার্জী, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রমজান আলী রাতুল, দেবহাটা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুল ইসলাম, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান শাওন, সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের রাজু, তালা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান, পলিটেকনিক ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম, কলারোয়া উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাসেল, পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আওসাফুজ্জামান শাওন, পলিটেনকনিট ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পথিক প্রমুখ। সভায় ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠনের কার্যক্রম কে আরো গতিশীল করার জন্য জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রতিটি উপজেলা এবং প্রতিটি ইউনিটকে দিক নিদের্শনা মূলক বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এছাড়া আগামীতে ছাত্রলীগকে আরো সুসংঘঠিত করার জন্য জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিস্তারিত আলোচনা করেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

road-accident
তালা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার তালার জাতপুর বাজার সংলগ্ন আলাদীপুর গ্রামে দ্রুতগতীর মটরসাইকেলের ধাক্কায় শাহানারা বেগম (৪০) নামের এক গৃহবধু নিহত হয়েছে। শাহানারা আলাদিপুর গ্রামের হেকমত শেখের মেয়ে ও একই উপজেলার দাশকাটি গ্রামের আজিজুর রহমানের স্ত্রী। দূর্ঘটনায় মটরসাইকেল চালক বিন্দু রায় গুরুতর আহত হয়েছে। বিন্দু চুকনগর বাজারের মনি জুয়েলারীর কর্মচারী এবং কেশবপুর উপজেলার আলতাপোল গ্রামের অরুন রায়ের পুত্র। স্থানীয়রা জানান, বুধবার দুপুর ২টার সময় চুকনগর থেকে জাতপুর বাজারগামী বিন্দু রায়ের দ্রুতগতীর মটরসাইকেলটি শাহানারা বেগমকে ধাক্কা দেয়। জাতপুর পুলিশ ক্যাম্পের এস.আই মোমিন উদ্দীন জানান, দূর্ঘটনার শিকার শাহানারা বেগমকে চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেবার সময় পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়। এছাড়া বিন্দুকে উদ্ধার করে কেশবপুর এলাকায় চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। এরিপোর্ট লেখাকালে (বুধবার রাত সাড়ে ৭টা) কেশবপুরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে বিন্দুর চিকিৎসা চলছিল।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

77777777777777777777777777777
পাটকেলঘাটা প্রতিনিধি : পাটকেলঘাটায় সেলিম গাজী নামে এক ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামি গ্রেফতার হয়েছে। থানা সূত্রে জানা যায় খলিষখালীর দুধলাই চর গ্রামের রুহুল গাজীর পুত্র মো: সেলিম গাজী বরগুনা জেলার বোরহানউদ্দীন থানার সি.আর ৮২/১৬ মামলার ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামী থাকায় পাটকেলঘাটা থানা পুলিশের এক বিশেষ অভিযানে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

og-jpg
নিজস্ব প্রতিবেদক : সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের চালতেবাড়ি এলাকা থেকে বনদস্যু নোয়া মিয়া বাহিনীর সদস্যরা ২টি নৌকাসহ ৪ জেলেকে অপহরণ করেছে। দুই লাখ টাকা মুক্তিপনের দাবিতে মঙ্গলবার রাতে কদমতলা ফরেষ্ট ষ্টেশনের আওতাধীন চালতে বাড়ি এলাকা থেকে তাদের অপহরণ করা হয়। ফিরে আসা জেলে (কাঁকড়া শিকারী) মুন্সিগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা মৃত মোহাম্মাদের ছেলে জুলফিকার মল্লিক বুধবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তাৎক্ষনিকভাবে অপহৃতদের নাম পরিচয় তিনি জানতে পারেননি। তবে, তিনি বিষয়টি কদমতলা ফরেষ্ট অফিসকে অবহিত করে এলাকায় ফিরেছেন বলে আরো জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, অপহৃতদের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় এখনও পর্যন্ত অবহিত করা হয়নি। অবহিত করলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

full_478673263_1475641200ডেস্ক রিপোর্ট: পরীক্ষা চলছে, আগামীকালও আছে। যে পথ ধরে খাদিজা বেগমের পরীক্ষা দিতে যাওয়ার কথা ছিল, সে পথের ওপর এখন তাঁরই রক্তের ছোপ। সংকটাপন্ন অবস্থায় খাদিজা এখন শুয়ে আছেন হাসপাতালের বিছানায়।
সিলেটে ছাত্রলীগ নেতার হামলার শিকার খাদিজা বেগমের দ্বিতীয় দফা অস্ত্রোপচার হয়েছে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে। নিউরোসার্জারি বিভাগের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক রেজাউস সাত্তারের অধীনে তাঁর চিকিৎসা চলছে। রেজাউস সাত্তার গতকাল সন্ধ্যায় বলেন, ‘আমরা খুব সংকটাপন্ন অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে রিসিভ করেছি। এখন ইলেকটিভ ভেন্টিলেশনে আছেন (লাইফ সাপোর্ট)। তাঁর মাথায় ও দুই হাতে অসংখ্য কোপের ক্ষত। খুব জটিল অস্ত্রোপচার হয়েছে খাদিজার। এ ধরনের রোগীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ৫ শতাংশ। ৭২ ঘণ্টার আগে কিছু বলা যাচ্ছে না।’
খাদিজা বেগমরাত ১২টা ৫০ মিনিটে স্কয়ার হাসপাতালের কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস কর্মকর্তা গোলাম মওলা বলেন, খাদিজার অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। চিকিৎসকের দেওয়া ৭২ ঘণ্টা সময় শেষ হওয়ার আগে কিছু বলা যাচ্ছে না।
খাদিজা সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক (পাস) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। গত সোমবার পরীক্ষা দিতে সিলেটের এমসি কলেজে গিয়েছিলেন তিনি। পরীক্ষা শেষে ফেরার সময় এমসি কলেজের পুকুরপাড়ে খাদিজাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন ছাত্রলীগের নেতা বদরুল আলম (২৬)। বদরুল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি খাদিজাকে উত্ত্যক্ত করছিলেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত কেউ কেউ খাদিজাকে কোপানোর দৃশ্য মুঠোফোনে ধারণ করেন। সেই ভিডিওটি এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনার নৃশংসতায় শিউরে উঠে নিজেদের মতামত প্রকাশ করছে হাজারো মানুষ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের স্কুলছাত্রী কণিকা ঘোষ, ঢাকার সুরাইয়া আক্তার রিসা ও মাদারীপুরের নিতু মণ্ডলের পর খাদিজার ওপর বখাটে ও উত্ত্যক্তকারীদের একই ধরনের হামলার ঘটনায় উৎকণ্ঠা বেড়েছে সারা দেশে। বিশিষ্টজনেরা বলছেন, অপরাধীদের বিচার না হওয়ার কারণেই এমন ঘটনা বাড়ছে।
অবশ্য অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। গতকাল সচিবালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে খুবই স্পষ্ট। তিনি কাউকে ছাড় দেন না। আমি আপনাদের জোর গলায় বলতে পারি, যে-ই অপরাধ করেছেন, সেই অপরাধীকে অবশ্যই বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।’
খাদিজা যে কলেজে পড়েন এবং যে কলেজ ক্যাম্পাসে ঘটনা ঘটেছে, সেই দুই কলেজেরই ছাত্রী ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী। গতকাল রাতে তিনি বলেন, ‘একই কলেজে আমিও পড়েছি, আমি সেখানে নিজেকে ভাবছি! কী নির্মম, আমি ভিডিওটা পুরো দেখতে পারিনি। আমাদের খাদিজা বেঁচে আমাদের মাঝে ফিরে আসুক।’ তিনি বলেন, তারা ধরেই নিয়েছে এ ধরনের সন্ত্রাস যারা করে, ওই সন্ত্রাসীরা বিচারের ঊর্ধ্বে। এমন বর্বরতা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তিনি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হামলাকারীর বিচার দাবি করেন।
মুঠোফোনে ধারণ করা খাদিজাকে কোপানোর ভিডিওতে দেখা যায়, মাটিতে পড়ে থাকা খাদিজাকে কিছু একটা দিয়ে আঘাত করছেন বদরুল। ভিডিওতে অনেকের চিৎকার, কান্নাকাটির শব্দ শোনা গেলেও কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে যাননি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, কয়েকজন এগোনোর চেষ্টা করতেই চাপাতি হাতে বদরুল তাঁদেরও আঘাত করতে ছুটে আসেন। কয়েকজন দূর থেকে ঢিল ছুড়ে তাঁকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। এরপর বদরুল চাপাতি হাতে পালানোর সময় ছাত্ররা তাঁকে ধাওয়া দেয়। একপর্যায়ে ছাত্ররা তাঁকে ধরে ফেলে। সেখানে তিনি পিটুনির শিকার হন। পরে তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
কলেজছাত্র ও স্থানীয় জনতা রক্তাক্ত খাদিজাকে দ্রুত সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে সোমবার রাতে অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে নিয়ে ঢাকার দিকে রওনা দেন স্বজনেরা। গতকাল সকালে তাঁকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
খাদিজার প্রতিবেশী ও স্বজনেরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরেই খাদিজাকে উত্ত্যক্ত করছিলেন বদরুল। ২০১২ সালের ১৭ জানুয়ারিও উত্ত্যক্ত করার সময় স্থানীয় ব্যক্তিরা বদরুলকে ধরে পিটুনি দেন। পরদিন বদরুল তাঁকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন জালালাবাদ থানায়। মারধরকারীদের জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মী হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই মামলার এক আসামি বলেন, উত্ত্যক্ত করার জন্যই যে তাঁকে মারধর করা হয়েছিল, তা সবাই জানত, পুলিশও। তারপরও ২০১২ সালের ৩১ মে ১৪ জনের নামে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন বদরুলের করা মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে তখন তিনি থানায় কর্তব্যরত ছিলেন না বলে তদন্ত ও ঘটনার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্তসংশ্লিষ্ট একজন পুলিশ সদস্য বলেন, ওই অভিযোগপত্র বদরুলের মনঃপূত হয়নি। এ নিয়ে তিনি বেশ কয়েকবার পুলিশকে শাসিয়েছেন। গত সোমবার খাদিজাকে কোপানোর পেছনে সেই ঘটনার ক্ষোভ থাকতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
গণপিটুনির শিকার হয়ে আহত বদরুল পুলিশ পাহারায় সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি হামলার কথা স্বীকার করে বলেন, ঘটনার দিন দুপুর থেকেই তিনি খাদিজার বাড়ি ফেরার পথে অপেক্ষা করছিলেন।
বদরুল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি শেষ বর্ষের ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক। তবে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন দাবি করেছেন, বদরুল সুনামগঞ্জের ছাতকে একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কর্মজীবনে যোগ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ছাত্রলীগ থেকে বদরুলের পদ বাতিল হয়েছে। এটা তাঁর ব্যক্তিগত পাশবিকতা। তিনি বদরুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। গতকাল দুপুরে জাকির খাদিজাকে দেখতে স্কয়ার হাসপাতালে যান।
হামলার ঘটনায় খাদিজার চাচা আবদুল কুদ্দুস গতকাল হত্যাচেষ্টার অভিযোগে বদরুলের বিরুদ্ধে শাহপরান থানায় মামলা করেন। শাহপরান থানার ওসি শাহজালাল মুন্সি বলেন, এ মামলায় বদরুলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। হামলার কারণ জানতে তদন্ত চলছে। হামলায় ব্যবহৃত চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে।
খাদিজার চাচা বলেন, খাদিজার বাবা মাশুক মিয়া সৌদি আরবপ্রবাসী, মেয়ের জখম হওয়ার খবর শুনে তিনি রওনা দিয়েছেন। আর মা মনোয়ারা বেগম অসুস্থ। মেয়েকে তিনি জীবিত ফেরত চান। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে খাদিজা দ্বিতীয়। সিলেটের জালালাবাদের আউশা গ্রামে খাদিজাদের বাড়ি।
হামলার ঘটনায় বদরুলকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আমিনুল হক ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে প্রক্টরিয়াল কমিটির বর্ধিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগে খাদিজার ওপর হামলাকারী বদরুল আলমের দ্রুত বিচারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন সরকারি মহিলা কলেজ ও এমসি কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত নগরের জিন্দাবাজারের মহিলা কলেজের ছাত্রীরা ও দুপুরে টিলাগড় মোড়ে এমসি কলেজের ছাত্রছাত্রীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। আজ বুধবার সিলেটের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের কালোব্যাজ ধারণ ও পরদিন বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার ঘোষণা দেন তাঁরা। সিলেটের সব শ্রেণির মানুষ এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন।
খাদিজাকে বাঁচাতে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। গত রাতে তিনি বলেন, ‘মেয়েটাকে বাঁচাতে সরকারের পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার আমরা করব। অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনা হবে। অপরাধী কোনো দলের নয়।’
মানবাধিকার নেত্রী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল বলছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বার্তা না দিতে পারবে যে এই ধরনের অন্যায়ের জন্য তাকে কঠোর শাস্তি পেতে হবে, ততক্ষণ এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে। এ ধরনের ঘটনা যখন ঘটে তখন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় অপরাধী কোনো না কোনো ক্ষেত্রে ক্ষমতার সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।
সুলতানা কামাল বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের কেউ হলেই মনে করে তার কোনো জবাবদিহি নেই। এ কারণেই অপরাধপ্রবণতা কমে না। তাই রাষ্ট্রের এখন দায়িত্ব এসব অপরাধ বন্ধে কঠোর হওয়া। খাদিজার চিকিৎসার যেন কোনো ত্রুটি না হয়। তিনি যেন বেঁচে থাকেন সেই প্রার্থনা করছি।’

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest