সর্বশেষ সংবাদ-
দেবহাটায় জাতীয় প্রাণি সম্পদ সপ্তাহ ও প্রাণি সম্পদ প্রদর্শনীর উদ্বোধনসাতক্ষীরায় জাতীয় দৈনিক রুপালী বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনসাতক্ষীরার মিঠু খানের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করল বিএনপিকালিগঞ্জে পুকুরের পানিতে দুই শিশুর মৃত্যুদেবহাটায় ৪০ জন উপকার ভোগীর মাঝে ছাগল বিতরণদেবহাটার সরকারি কর্মকর্তা-সুধীজনদের সাথে ডিসির মতবিনিময়সাতক্ষীরার ১৮৫টি ভোটকেন্দ্রের স্কুল সংস্কারে বরাদ্দ প্রায় ৬৪ লাখ টাকাসাতক্ষীরা জেলা রোভারের ৪১ তম কোর্স ফর রোভারমেট এর মহাতাঁবু জলসাশ্যামনগরে বুনো শাকের রান্না প্রতিযোগিতাসাতক্ষীরায় দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে রাস্তা সংস্কার কার্যক্রমের উদ্বোধন

দেবহাটা ইছামতির বেড়িবাঁধ ভেঙে কয়েকটি গ্রাম তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা

কে.এম রেজাউল করিম, দেবহাটা ব্যুরো: দেবহাটা উপজেলার গা ঘেষে বয়ে যাওয়া ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত নদী ইছামতির কয়েকটি স্থানে ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে ভেড়ীবাধের ভাঙন ব্যাপক দেখা দেয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন গ্রামবাসী। সহায় সম্পদ রক্ষার জন্য তাদের খাওয়া ঘুম প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। ভেড়িবাধ ভাঙতে ভাঙতে সামান্য কিছু অংশ বাকি আছে। যদি পানির চাপে সেটুকুও ভেঙ্গে যায় তাহলে নাংলা, ছুটিপুর, ঘোনাপাড় সহ কয়েকটি গ্রাম ইছামতি নদীর পানিতে তলিয়ে যেতে পারে। নষ্ট হতে পারে ফসলি জমি, প্রানহানি ঘটতে পারে মানুষ সহ প্রানী সম্পদের। পানি উন্নয়ন বোর্ড এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় গ্রামবাসীর আতংক আরও বেড়ে চলেছে। অপরিকল্পিতভাবে চিংড়ি চাষ এবং গুটিকয়েক মানুষের ঠেলা জাল নদীতে ফেলার কারণে দেবহাটা উপজেলার চরকোমরপুর, ভাতশালা, টাউনশ্রীপুর, সুশীলগাতী, শীবনগর ও নাংলা সহ কয়েকটি স্থানের ভেড়ীবাধে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। গত বছরে যে সামান্য পরিমানের কাজ করা হয়েছিল সেসব স্থানে ছাড়াও নতুন নতুন স্থানে আবারো ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। গ্রামবাসীরা জানান, স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী মহল ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদীপাড় থেকে বালু তোলার কারনে নদীর বাধ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে উপজেলার সুশীলগাতি এলাকায় মেশিনের সাহায্যে বালু তোলা হচ্ছে। বড় কোন জোয়ার বা বৃষ্টি হলেই ভেড়ীবাধগুলো যেকোন সময় ভেঙ্গে যেতে পারে। সরেজমিনে দেখা গেছে, ঝুকিপূর্ন ভেড়ীবাধগুলোর মধ্যে রয়েছে নাংলা ছুটিপুর, সুশীলগাতী এলাকার বিজিবি পোষ্টের সামনে, টাউনশ্রীপুর ও ভাতশালা। বাধ ভেঙ্গে গেলে দেশের কোটি টাকার সম্পদ যেমন নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা আছে তেমনি অসংখ্যা প্রানহানী ঘটারও সম্ভাবনা আছে। তাছাড়া ভাতশালা থেকে খানজিয়া পর্যন্ত বালু ব্যবসায়ীরা ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে বালু উত্তোলন করছে। কিন্তু বালু ব্যবসায়ীদের এই কাজ বন্ধ করার মতো কেউ আছে বলে মনে করেননা এলাকাবাসী। তাদের বক্তব্য, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ভেড়ীবাধগুলো ঝুকির মধ্যে থাকে। পাউবো মাঝে মাঝে সংষ্কার কাজ করেন। কিন্তু সেটাও নামমাত্র। তার মধ্যে এভাবে প্রকাশ্যে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু ও নদীর মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে অথচ প্রশাসন নীরব। গ্রামবাসী আরও জানান, চিংড়ি চাষীরা খেয়াল খুশী মতো মূল বাধের গা ঘেষে ছোট বাঁধ দিয়ে মুল বাঁধের সর্বনাশ ডেকে এনেছে। বেড়ি বাঁধের গা ঘেঁষে পোনা ধরা এবং বালু তোলার কারনে বাঁধগুলো ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ন হয়ে ওঠে। কয়েক বছর আগে বাংলাদেশের শীবনগরের পাশে রাজনগর মৌজা ইছামতির নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। গত কয়েকদিন আগে এ বিষয়ে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাতি হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কার্যক কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি। নওয়াপাড়া ইউনিয়ন আঃলীগের সভাপতি লাভলু বিশ^াস জানান, নাংলা এলাকার ভেড়ীবাধটি অত্যন্ত ঝুকিপূর্ন হওয়ায় তারা ইতিমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড- ১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর লিখিতভাবে জানিয়েছেন। কিন্তু অনেক দিন পার হলেও এখনো পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। দেবহাটা উপজেলা আঃলীগের সভাপতি ও নওয়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ মুজিবর রহমান জানান, নাংলা এলাকার ভেড়ীবাধ সংষ্কারের বিষয়ে তিনি সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডাঃ রুহুল হক কে নিয়ে সরেজমিনে দেখিয়েছেন এবং সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েছেন। কিন্তু তারা এখনো কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। পানি উন্য়ন বোর্ড ১ এর আওতাধীন ৩ নং ফোল্ডারের কালীগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও ওবায়দুল হক মল্লিক জানান, নাংলা এলাকার বাধ সংস্কারে এবং পাকা ব্লক দেয়ার জন্য প্রজেক্ট দেয়া আছে। বাজেট পাওয়া গেলেই কাজ শুরু করা হবে। দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাফিজ-আল আসাদ জানান, তিনি ইতিমধ্যে ভেড়ীবাধ সংষ্কারের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছেন। এ পরিস্থিতিতে অসহায় ও আতঙ্কিত গ্রামবাসী নদী ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করে দেশের ভূখন্ড রক্ষা সহ তাদের বেচে থাকার নিশ্চয়তা প্রদানে যথাযথ কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
সাতক্ষীরার আ. লীগ নেত্রী মমতাজুন নাহার ঝর্ণা আর নেই

ডেস্ক রিপোর্ট: সাতক্ষীরা জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান মমতাজুন নাহার ঝর্ণা (৭০) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেমেৃত্যুবরণ করেছেন(ইন্না লিল্লাহে … রাজেউন)। তিনি ছিলেন শহর আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত এড. শাসসুর রহমান এর স্ত্রী।
শুক্রবার বেলা ১টা ১০টার দিকে স্থানীয় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে তিনি পরলোকগমন করেন। মৃত্যুকালে তিনি ৩ কন্যাসহ অসংখ্যা গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
গোপালগঞ্জে অর্ধশতাধিক মানুষকে ডাব খাওয়ালেন এমপি জগলুল

প্রেস বিজ্ঞপ্তি: অাগামী ২৩ শে জুন গণভবনে বাংলাদেশ অাওয়ামীলীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় যোগ দিতে শুক্রবার ঢাকায় যাওয়ার পথে সাতক্ষীরা – ৪ অাসনের মাননীয় সংসদ সদস্য এস, এম জগলুল হায়দার পথিমধ্যে গোপালগঞ্জে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতালের সামনে, বঙ্গবন্ধুর সমাধিস্থল টুঙ্গিপাড়া যাওয়ার সড়কের সংযোগ স্থলে বাকুড়া কোনাপাড়া মোড়ে প্রখর রোদে প্রায় অর্ধশতাধিক ভ্যানচালক ও অন্যান্য যানবাহন চালকদের দেখে গাড়ি থামিয়ে সকলকে একত্রিত করে ডাব খাওয়ান এবং তাদের সাথে নিজেও ডাবের পানি পান করেন এমপি জগলুল।
এসময় হতদরিদ্র, খেটে খাওয়া মানুষগুলো তার জন্য দোয়া করেন। সেসময় সকলের কাছে বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল শহিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশ অাওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপির জন্য দোয়া চান এমপি জগলুল। একই সাথে বরাবরের মত অাগামী সংসদ নির্বাচনে সকলকে অাবারও নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
ছেলে-মেয়ে ও বাবার লাশ উদ্ধার

দেশের খবর: নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় বাড়ি থেকে ছেলে-মেয়ে ও বাবার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

রায়পুরা থানার ওসি মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, শুক্রবার সকালে তুলাটুলি গ্রাম থেকে মোখলেসুর রহমান (৩৫) ও তার দুই শিশুসন্তানের লাশ উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

প্রাথমিক তদন্তের তথ্যে তিনি বলেন, মোখলেস তার সাত বছরের ছেলে ও ছয় বছরের মেয়েকে রাতে পুকুরে ডুবিয়ে হত্যার পর দড়ির ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

“মোখলেস বিদেশ যাওয়ার জন্য বছর দুই আগে দালালদের দেড় লাখ টাকা দিয়েছেন। কিন্তু বিদেশ যেতে পারেননি। আবার টাকাও ফেরত পাননি। পুলিশ সবকিছু ধরে তদন্ত করছে।”

মোখলেসের স্ত্রী শোকাচ্ছন্ন থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা যায়নি। অন্য স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে বলে জানান ওসি দেলোয়ার।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
টিভির পর্দায় আজকের বিশ্বকাপ
ব্রাজিল-কোস্টারিকা সরাসরি সন্ধ্যা ৬টা।
নাইজেরিয়া-আইসল্যান্ড সরাসরি রাত ৯টা।
সার্বিয়া-সুইজারল্যান্ড সরাসরি রাত ১২টা।
খেলাগুলো সরাসরি দেখতে চোখ রাখুন- বিটিভি, মাছরাঙা ও নাগরিক টিভিতে।
বাংলাদেশের চ্যানেলগুলো ছাড়াও খেলাগুলো দেখা যাবে-
ভারত: সনি টেন ১ ও ২
রাশিয়া: আইটিভি
যুক্তরাষ্ট্র: ফক্স ও ফক্স স্পোর্টস ১
স্পেন: টেলিমন্ডো ও এনবিসি ইউনিভারসো
অস্ট্রেলিয়া: এসবিএস, অপটাস স্পোর্টস
ব্রাজিল: গ্লোবো, স্পোর্টস টিভি, ফক্স স্পোর্টস টিভিতে।
0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
আজ জিততেই হবে তবু নির্ভার ব্রাজিল

খেলার খবর: অদ্ভুত শহর এই সেন্ট পিটার্সবার্গ। যা কখনো ডুবে যায় না রাতের আঁধারে। দিনের আলো কমে যেতে যেতে রাত ১২টা। এর পরও আকাশ থেকে বিচ্ছুরিত মায়াবী নীলে রূপকথার রাজ্য হয়ে থাকে নেভা নদী ও বাল্টিক সাগরসেঁচা এ জনপদ। আবার রাত দুটো বাজতে বাজতেই ফুটে যায় সকালের আলো।

ব্রাজিলের ফুটবলও যেন তেমনি। অন্ধকারে যা হারিয়ে যায় না কখনো। সাফল্যের আলো কখনো-সখনো মলিন হয় বটে। তবু ভালোবাসায় ওই হলুদ প্রদীপ জ্বলতে থাকে সাঁঝবাতির মতো; যেন দাউদাউ করে জ্বলে ওঠা সকালের সূর্যের অপেক্ষায়। এই যে ২০০২ সাল থেকে বিশ্বকাপ ট্রফির সঙ্গে আড়ি, সেটিকে বন্ধুতায় রূপান্তরের চ্যালেঞ্জই তো এবার সেলেসাওদের! না হয় সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ ড্র করেছে, তবু আজ কোস্টারিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচের আগে আশার আলো কমছে না এতটুকুন।

সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরের মতোই!

রোস্তভ-অন-ডনে নিজেদের প্রথম ম্যাচ শেষে বেইসক্যাম্প সোচিতে চলে গিয়েছিল ব্রাজিল। সেন্ট পিটার্সবার্গে এসে পৌঁছেছে পরশু রাতে। রাত বলাটা হয়তো ঠিক না, কারণ রাতই তো হয় না। বছরের দীর্ঘতম দিন এখানে পরিচিত ‘হোয়াইট নাইট’ নামে। উৎসবের মাদল বাজছে তাই অহর্নিশ। সে উৎসবকে আরো রাঙিয়ে দেওয়ার জন্যই শহরে পা রেখেছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ‘রাত যে হচ্ছে না, এমন কিছুর সঙ্গে আমাদের পরিচয় ছিল না। ব্যাপারটা অদ্ভুতুড়ে। তবে আমরা মানিয়ে নিয়ে প্রস্তুত কোস্টারিকার জন্য’—কাল সংবাদ সম্মেলনে বলছিলেন এ ম্যাচের অধিনায়ক থিয়াগো সিলভা।

সেন্ট পিটার্সবার্গ স্টেডিয়ামের মিডিয়া সেন্টারের ঠিক পাশেই সংবাদ সম্মেলন কক্ষ। দুপুর ৩টায় সেখানে আসার কথা কোচ লিওনার্দো বাচ্চি তিতে ও অধিনায়ক সিলভার। ঘণ্টাখানেক আগে গিয়েই অপেক্ষা তাঁদের জন্য। প্রথম ম্যাচ হারের পর গণমাধ্যমের তোপের মুখে পড়বেন বলে ধারণা ছিল। কিসের কী! দারুণভাবে সামলালেন কোচ। কথার পিঠে কথা বলছেন, হালকাচালের কথা বলে হাসির ফোয়ারাও ছোটালেন। সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে হারের পর কোণঠাসা অবস্থায় রয়েছেন তিতে, অমনটা তো মনে হলো না একবারও।

নেইমারের খেলা, না খেলা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা ছিল অনেক। তিতে তা উড়িয়ে দেন এক ফুত্কারে। শুধু তা-ই নয়, ম্যাচের আগের দিন একাদশ পর্যন্ত ঘোষণা করে দেন, ‘সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে যে ১১ জন খেলেছে, কোস্টারিকার বিপক্ষেও শুরু করবে তারা। নেইমারও খেলবে। ও পুরোপুরি ফিট।’ কথাগুলো বলছিলেন পর্তুগিজ ভাষায়; কানে থাকা অনুবাদক যন্ত্রে তা রূপান্তিত ইংরেজিতে। তাহলে যে সুইসদের বিপক্ষে ম্যাচের পর এক দিন অনুশীলন করেননি। পরের দিন ফিরলেও মিনিট দশেক পর উঠে গিয়েছিলেন! বিশ্বকাপের মঞ্চ না হয়ে সাধারণ ম্যাচ হলে কি এই অবস্থায় খেলতেন নেইমার; এ স্যাক্রিফাইস করা হতো? ধৈর্য ধরে প্রশ্নটি শুনে দার্শনিকের মতো জবাব দেন তিতে, ‘এটি কোনো স্যাক্রিফাইস না। নেইমার সুস্থ রয়েছে বলেই খেলবে। আমরা অবশ্যই জিততে চাই। কারণ এটি বিশ্বকাপের ম্যাচ। তাই বলে কোনো কোচ তাঁর ফুটবলারের সঙ্গে অসৎ হতে পারেন না; তাঁর স্বাস্থ্যকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারেন না। এই সুস্বাস্থ্য ও সততার সঙ্গে কোনো আপস করতে পারি না আমি। আর আপনি কী যেন বললেন, স্যাক্রিফাইস। নাহ, নেইমারকে আমরা স্যাক্রিফাইস করছি না।’

এমনভাবে বুঝিয়ে বলার পর ব্রাজিলিয়ান গণমাধ্যমের না বুঝে উপায় কী!

তবে প্রথম ম্যাচে ড্রয়ের পর কোস্টারিকার বিপক্ষে সেন্ট পিটার্সবার্গের ম্যাচটি যে ব্রাজিলের জন্য বাঁচা-মরার লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেটিও ভালোভাবে বোঝেন তিতে। আরাধ্য সে জয়ের জন্য করণীয়টাও জানেন তিনি, ‘এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ খেলা কেননা প্রথম ম্যাচ আমরা ড্র করেছি। জিততে হলে ওই খেলার মতোই জমাট হতে হবে আমাদের রক্ষণভাগ এবং আক্রমণভাগকে হতে হবে আরো কার্যকর।’ সুইসদের চেয়ে কোস্টারিকার বিপক্ষে ম্যাচের আবহের পার্থক্যটাও ব্রাজিলকে সাহায্য করবে বলে বিশ্বাস কোচের, ‘প্রথম ম্যাচে বিশ্বকাপের রোমাঞ্চ ছিল অনেক বেশি। খেলোয়াড়দের ছিল; কোচ হিসেবে আমারও ছিল। এখন তা চলে গেছে। সে কারণে আরো ভালোভাবে মনোযোগ দিতে পারছি।’ সেই গভীর মনঃসংযোগের মধ্যেও রসিকতা ঠিকই করেন তিতে। সংবাদ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক শেষ ঘোষণার পর পাশে থাকা কোচিং স্টাফের সদস্য সিলভিনহোকে দেখিয়ে হাসতে হাসতে বলেন তাই, ‘ওকে কোনো প্রশ্ন করছেন না কেন? আমি অপেক্ষা করছি, ওকে একটা কঠিন প্রশ্ন করুন।’

গণমাধ্যমের সঙ্গে জাতীয় দলের কোচের সম্পর্কটা কার্লোস দুঙ্গার সময়ের চেয়ে কতই না বদলে গেছে! সংবাদ সম্মেলন থেকে বেরোতে বেরোতে সে কথাই বলছিলেন ব্রাজিলের সাংবাদিকরা।

সংবাদ সম্মেলন শেষে সেন্ট পিটার্সবার্গের স্টেডিয়ামে ব্রাজিলের অনুশীলন দেখার সুযোগ ছিল ১৫ মিনিট। মাঝমাঠের বৃত্ত ঘিরে দাঁড়িয়ে খেলোয়াড়রা অনুশীলন করলেন শুরুতে। এরপর মূল একাদশের সঙ্গে বাকিদের আলাদা করে ফেলেন তিতে। ১১ জন দাঁড়িয়ে যান একেবারে ৪-৩-৩ ছকে। মাঠের সবুজে ফরমেশন অনুযায়ী ওই তিনটি লাইন দেখা যাচ্ছিল স্পষ্ট। এরপর ফরোয়ার্ড লাইন নিয়ে তিতের কিছু কাজ দেখার সুযোগ হলো। ডানে উইলিয়ান, মাঝে গাব্রিয়েল জেসুস, বাঁয়ে নেইমার। নিজে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডার সেজে জেসুসের সামনে থেকে বল নিয়ে দেন ডানে। সেখানে থাকা নেইমারকে চিত্কার করে বলেন কিভাবে দৌড়ে এই ফাঁকা জায়গা ভরাট করতে হবে। সেন্ট পিটার্সবার্গের ফাঁকা গ্যালারিতে তিতের পর্তুগিজ ভাষার চিত্কার প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল। সে ভাষা না বুঝলেও ফুটবলের সর্বজনীন ভাষা বুঝতে তো সমস্যা হয় না এতটুকুন।

বিশ্বকাপের মঞ্চে সহজ প্রতিপক্ষ বলে তো কিছু নেই। তবু খেলাটি কোস্টারিকার বিপক্ষে হওয়ায় ইতিহাসের প্রেরণার অনেক বুদ্বুদ উড়তে পারে ব্রাজিল ক্যাম্পে। মুখোমুখি সর্বশেষ ১০ দেখায় ৯ বারই জিতেছে ব্রাজিল; পরাজয় শুধু ১৯৬০ সালের প্রীতি ম্যাচে। বিশ্বকাপের দুই দেখার মধ্যে ১৯৯০ সালে ১-০ এবং ২০০২ সালে ৫-২ গোলে জয় সেলেসাওদের। চলতি টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে সার্বিয়ার কাছে ০-১ গোলে হেরেছে কোস্টারিকা। আর ব্রাজিল সুইসদের সঙ্গে ড্র করলেও দ্বিতীয় রাউন্ডে না যাওয়াটা তাদের জন্য অচিন্তনীয়। বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে সর্বশেষ ১৩ ম্যাচে অজেয় দলটি; ১৯৮২ থেকে শুরু করে প্রতি বিশ্বকাপে হয়েছে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। আজ কোস্টারিকার বিপক্ষে ম্যাচে ব্রাজিলের পক্ষে বাজি তাই ধরা যায় নিশ্চিন্ত নির্ভরতায়।

সেন্ট পিটার্সবার্গের ‘হোয়াইট নাইট’ উৎসব আজ তাহলে বদলে যাবে ‘ইয়েলো নাইট’-এ। বাসন্তী উৎসবে হলুদের রং ছড়াবে ছবির মতো সুন্দর এ শহরে। পুরো পৃথিবীতেও নয় কি!

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
এখনো আশা আছে আর্জেন্টিনার

খেলার খবর: আইসল্যান্ডের সঙ্গে ড্র করেছে আর্জেন্টিনা। আর ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে উড়ে গেছে দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। অনেকের ধারণা হতে পারে, এক ড্র ও এক হারে বিদায় ঘটে গেছে তাদের। কিন্তু না! শুধু বিদায়ের ঘণ্টা বেজেছে, আশা এখনো বেচেঁ আছে।

‘ডি’ গ্রুপ থেকে আজ মুখোমুখি হবে নাইজেরিয়া ও আইসল্যান্ড। পরের ম্যাচে মোকাবেলা করবে ক্রোয়েশিয়া ও আইসল্যান্ড। প্রথম ম্যাচে আইসল্যান্ডিকরা জিতলে এবং পরে ম্যাচ ড্র হলেই কেবল আর্জেন্টিনার বিদায় নিশ্চিত হবে। দুই ম্যাচে বিপরীত ঘটলে আশা বেঁচে থাকবে লিওনেল মেসিদের।

রাশিয়া বিশ্বকাপ অভিযাত্রাটা ভালো হয়নি আর্জেন্টিনার। নিজেদের প্রথম ম্যাচে আইসল্যান্ডের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে দলটি। আর দ্বিতীয় ম্যাচে ক্রোয়াটদের কাছে স্রেফ বিধ্বস্ত হয়েছেন তারা। এখন সামনে রয়েছে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ।

আজ নাইজেরিয়ার বিপক্ষে আইসল্যান্ড না জিতলে এবং ক্রোয়েশিয়া-আইসল্যান্ড ম্যাচ ড্র না হলে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার সুযোগ থাকবে মেসি-দিবালাদের। এক্ষেত্রে শেষ ম্যাচে সুপার ঈগলদের হারাতে হবে তাদের।

এখন দেখার বিষয় আর্জেন্টাইনদের কপালের জোর কতটা?

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
আর্জেন্টিনার লজ্জার কারণ জানালেন সাম্পাওলি

খেলার খবর: আইসল্যান্ডের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করেছিল আর্জেন্টিনা। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে সেরকম কিছু হলেও হয়তো মান বাঁচত দলটির। সেখানে ৩-০ গোলে হেরে লজ্জার শিকার সাদা-আকাশি জার্সিধারীরা। যে যার মতো পারছেন খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফদের ধুয়ে দিচ্ছেন। তবে সব দোষ মাথা পেতে নিলেন কোচ হোর্হে সাম্পাওলি।

আর্জেন্টিনার যে একাদশ মাঠে নেমেছিল, তাই বেখাপ্পা ঠেকেছে সবার কাছে। ছিলেন না অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। তার জায়গায় যাকে খেলানোর গুঞ্জন চাউর হয়েছিল, সেই ক্রিস্টিয়ান পাভনকে নামানো হয়নি। হাতে পাওলো দিবালার মতো অস্ত্র থাকলেও তাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে দেখা যাচ্ছে না। ডিফেন্সের প্রতি নজর নেই। নেই মাঝমাঠ চাঙ্গা করার কোনো উদ্যোগ। এত অগোছালো পরিকল্পনা কেন?

আত্মসমর্পনের সুরে সাম্পাওলি বলেন, সিদ্ধান্ত নেয়ার সর্বময় কর্তা আমিই ছিলাম। সব সিদ্ধান্ত একা নিয়েছি। তবে আমার সবকিছুই ভুল ছিল। ম্যাচটি ঘিরে অনেক আশা ছিল। সব উবে গেছে। পরাজয়ের তিক্ত যন্ত্রণা অনুভব করছি। এমন পরিস্থিতির জন্য আমিই দায়ী।

দলে রয়েছেন লিওনেল মেসির মতো ফুটবলার। অথচ তাকে খুজেঁ পাওয়া যাচ্ছে না। খুজেঁ পাওয়া যাবে কী করে? মিডফিল্ড থেকে তো বলই সরবরাহ পাননি তিনি। আর্জেন্টিনা কোচ বলেন, আমরা এখনো দল হয়ে উঠতে পারিনি। কোনো জায়গায় কোনো সমন্বয় নেই। আমরা তাদের হারাতে চেয়েছিলাম। তবে প্রথম গোল হজমের সঙ্গে আমরা হেরে গেছি। কারণ, এরপর ছেলেরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল।

তিনি বলেন, লজ্জার পারফরম্যান্স বলেন, আর যাই বলেন, এর দায় একজন নেতার। অনুসারীরা দেখানো পথ বুঝতে না পারলে দায়ভার নেতাকেই নিতে হবে। হয়তো শিষ্যরা আমার রণকৌশল বুঝতে পারেনি। আমি ক্রোয়েশিয়াকে ঠিকমতো পড়তে পারিনি। কর্তা হিসেবে সব দায় আমাকে নিতে। সবকিছুর জন্য আমিই দায়ী।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest