সর্বশেষ সংবাদ-
“নানা রঙের রবীন্দ্রনাথ” বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তীত অনুষ্ঠিতসাতক্ষীরায় ভূমি কর্মকর্তা তপন কর্তৃক না মেনে প্রাচীর নির্মান বন্ধের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনসাংবাদিক জুলফিকারের পিতা রাহাতুল্লাহ সরদারের সুস্থতা কামনাপ্রতিপক্ষ প্রার্থী কর্তৃক হুমকি ধামকির বিরুদ্ধে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী সাঈদের সংবাদ সম্মেলনফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে সাতক্ষীরায় ছাত্রলীগের অবস্থান কর্মসূচিসাতক্ষীরায় পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে ছোট ভাইকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগসাতক্ষীরায় তুচ্ছ ঘটনায় প্রতিবন্ধী নারীসহ ৪ জনকে পিটিয়ে জখমের অভিযোগশ্যামনগরে “সম্পদ ও আত্মার পরিশুদ্ধতায় যাকাত” শীর্ষক সেমিনারফেলোশিপে সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন সামেকের ডা. পলাশসাতক্ষীরায় পাওয়ার ব্লাড ফাউন্ডেশন এর পক্ষ থেকে শরবত বিতরণ

অনলাইন ডেস্ক: সৌদি আরবের মক্কায় সড়ক দুর্ঘটনায় ইতালি প্রবাসী একটি বাংলাদেশি পরিবারের মা ও দুই ছেলের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবারের এই ঘটনায় ওই পরিবরারের কর্তা কামরুল ইসলাম ওরফে নিলয়ও গুরুতর আহত হয়েছেন।

নিহতরা হলেন- নিলয়ের স্ত্রী তানিয়া হোসেন (৩০) এবং তাদের ছেলে ইউসা হোসাইন (৮) ও আযান হোসেন (৩)।

তারা ওমরা করতে ইতালি থেকে গত শনিবার সৌদি আরব এসেছিলেন বলে জেদ্দা কনস্যুলেটের লেবার কাউন্সেলর আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন।

মক্কা প্রবাসী নয়ন শেখ জানান, ওমরা পালন শেষে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মদিনা যাচ্ছিলেন নিলয়। পাহাড়ি পথে তাদের প্রাইভেটকারের চাকা পাংচার হয়ে পাশের খাদে পড়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে।

জুয়েল নামে নিলয়ের এক স্বজন ওই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। তিনিও আহত হয়েছেন।

তারা দুজন কিং আব্দুল আজিজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিলয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে জানান আরেক মক্কা প্রবাসী আলাউদ্দিন।

তিনি বলেন, নিলয়দের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের পৌর এলাকার মুন্সেপ পাড়ায়। তিনিও ওই এলাকার বাসিন্দা।

নিহতদের মরদেহ মক্কার আল-হেরা ও আল-নূর হাসপাতালের হিমাগারে রাখা হয়েছে বলে জানান আলাউদ্দিন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

পাটকেলঘাটা প্রতিনিধি: বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. আব্দুর রব পলাশকে সভাপতি ও মো. শহিদুল ইসলাম বিশ্বাসকে সাধারন সম্পাদক করে তালা উপজেলা ট্রাক, মিনি ট্রাক মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ এর কমিটি গঠিত হয়েছে।
কমিটি গঠন উপলক্ষ্যে শুক্রবার বিকালে উপজেলার পাটকেলঘাটা বলফিল্ড এলাকার অস্থায়ী কার্যলয়ে সংগঠনের সাধারন সভা বিজিবি (অব.) সার্জেন্ট মো. মোশারফ হোসেন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ট্রাক, মিনি ট্রাক মালিক ও শ্রমিকরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় সর্ব সম্মতিক্রমে মো. আব্দুর রব পলাশকে সভাপতি ও মো. শহিদুল ইসলাম বিশ্বাসকে সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত করে তালা উপজেলা ট্রাক, মিনি ট্রাক মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ১৮ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠিত হয়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

প্রেস বিজ্ঞপ্তি: রিকসা-ভ্যান শ্রমিক ফেডারেশন পারকুখরালী মোড় শাখার আয়োজনে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বিকালে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন রবিউল ইসলাম। সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি এড. ফাহিমুল হক কিসলু। বিশেষ অতিথি ছিলেন, জেলা রিকসা ভ্যান শ্রমিক ফেডারেশনের আহবায়ক আব্দুল জলিল, সদস্য সচিব মোমিন হাওলাদার, সদস্য আব্দুল গফুর প্রমুখ। সভায় সর্ব সম্মতিক্রমে রবিউল ইসলামকে আহবায়ক, কবিরুল ইসলাম গাজী ও সাদ্দাম হোসেন কে যুগ্ম আহবায়ক, মোশাররফ হোসেনকে সদস্য সচিব করে ২৫ সদস্য বিশিষ্ট পারকুখরালী ঈদগাহ মোড় রিকসা-ভ্যান শ্রমিক ফেডারেশন এর কমিটি গঠন করা হয়। অন্যন্য সদস্যরা হলেন, মোহাম্মাদ আলী, রেজাউল ইসলাম, আহাদ সরদার, সোবহান গাজী, নজু গাজী, সবুজ, রফিকুল ইসলাম, হাফিজুল, প্রদীপ, সুজন, আজগর, মাসুদ, আবুল সরদার, আব্দুর রাজ্জাক, সাত্তার গাজী, বদরুল আজিবার, সেলিম, রেজাউল, হোসেন গাজী, আদম আলী। এসময় বক্তারা বলেন, ব্যাটারিচালিত ভ্যান বন্ধ করে অসহায় গরিব মানুষদের পেটে লাথি মারা হচ্ছে। যে কারণে আজ তারা পরিবার পরিজন নিয়ে অর্ধহারে অনাহারে দিনাতিপাত করছে। এছাড়াও তাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। অবিলম্বে বিকল্প ব্যবস্থা না করে ব্যাটারি ভ্যান বন্ধ না করার আহ্বান জানান।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
বন্ধনের সাথী মানিকের মায়ের দোয়া অনুষ্ঠান

প্রেস বিজ্ঞপ্তি: বাল্য বন্ধুদের সম্প্রীতির অটুট সংগঠন বন্ধনের সাথী সালাহউদ্দিন মানিকের মাতা ও ডা. মমতাজ উদ্দিনের বড়ভাবী রহিমা খাতুনের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বাদ জুমআ তালা উপজেলার খলিশখালি ইউনিয়নের খলিশখালি গ্রামে মরহুমের নিজস্ব বাস ভবনে এ দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দোয়া অনুষ্ঠানে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন খলিশখালি জামে মসজিদের পেশ ইমাম আব্দুর রাজ্জাক।
দোয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বন্ধনের সদস্য মতলুবার রহমান, শেখ তহিদুর রহমান ডাবলু, এড. মোনায়েম খান, মো. শওকত আলী, জিল্লুল করিম, নুর হোসেন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত-২৭ ডিসেম্বর বুধবার ভোররাতে বার্ধক্যজনিত কারণে মরহুম সামছুদ্দিনের স্ত্রী রহিমা খাতুন সাতক্ষীরা ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। ঐদিন বুধবার বাদ যোহর নামাজে জানাযা শেষে তার পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। দোয়া অনুষ্ঠানে বন্ধনের সদস্য সালাহউদ্দিন মানিকের আত্মীয়-স্বজন ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং মুসুল্লীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
ধুলিহরে প্রতিপক্ষের হামলায় জখম নগেন মন্ডল

নিজস্ব প্রতিবেদক : সদর উপজেলার ধুলিহর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারণ সম্পাদকের হাতে মারাত্মক জখম হয়ে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে সংখ্যালঘু নগেন চন্দ্র মন্ডল। আহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ধুলিহর যুগীপোতা গ্রামের মৃত আলী আকবারের পুত্র ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আঃ হামিদ একই গ্রামের মৃত মুল্লক চাঁদ ম-লের পুত্র নগেন চন্দ্র মন্ডলের জমিতে মৎস্য ঘের করে আসছে। কিন্তু আঃ হামিদের সাথে জমির মালিকের সুসম্পর্ক না থাকায় মালিক তার জমি ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে। কিন্তু কে শোনে কার কথা। তাই নগেন তার জমি আমিন ডেকে মেপে বের করে নেওয়ার প্রস্তুতিকালে শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ঐ মৎস্য ঘেরে পোঁছালে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আঃ হামিদ নগেন চন্দ্র মন্ডলের মাথায় ধারালো দাঁ দিয়ে সোজরে কোঁপ মেরে মারাত্মক জখম করে। ঐ সময় জমির মালিকের স্ত্রী বাঁধা দিলে তার নাকে ঘুষি মেরে তাকেও জখম করে ও পরিবারের সদস্যদের জীবন নাশের হুমকী দিয়ে থাকে। এ সময় নগেনের কাছে থাকা তার ব্যবসার ৫০ হাজার টাকা সে ছিনিয়ে নেয়। এ সময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে নগেন চন্দ্র মন্ডলের অবস্থা আশংখা জনক বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়। এলাকা সূত্রে জানা যায়, আঃ হামিদ ইতিপূর্বে এলাকার সাধারণ নিরীহ মানুষদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী ও সংখ্যালঘুদের উপর শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছে। এই এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সদর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছিলো বলে জানা যায়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
কথিত ‘অবৈধ বাংলাদেশিদের’ তাড়ানোর চেষ্টায় আসামে উত্তেজনা

ভারতের আসাম থেকে কথিত ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশিদের’ বের করে দেওয়ার লক্ষ্যে তৈরি করা নাগরিকদের এক বিতর্কিত তালিকা আজ রবিবার প্রকাশ করছে রাজ্য সরকার। এই তালিকা প্রকাশের পর রাজ্যে দাঙ্গা ছড়িয়ে পরার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে সম্ভাব্য সব ধরনের সহিংসতা ঠেকাতে রাজ্যজুড়ে পুলিশ ও প্যারামিলিটারি ফোর্সের প্রায় ৬০ হাজার সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে আসামের মুসলিম নেতারা বলছেন, নাগরিকদের এই বিতর্কিত তালিকাটি প্রকাশ করা হচ্ছে রাজ্যের মুসলিমদের রোহিঙ্গাদের মতো রাষ্ট্রবিহিন নাগরিকে পরিণত করার জন্য। খবর:বিবিসি ও রয়টার্সের।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি গত বছর রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর ‘রাজ্যের অবৈধ মুসলিম বাসিন্দাদের’ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেয়। তাদের দাবি ছিল, অবৈধ মুসলিমদের কারণে স্থানীয় হিন্দুরা কাজের সুযোগ হারাচ্ছে। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ১৯৫১ সালের পর আসামে প্রথমবারের মতো পরিচালিত এক জনগণনার ভিত্তিতে এই ‘ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্স’ তৈরি করা হয়েছে।

ভারতের আসাম রাজ্যের মোট জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মুসলিম। রবিবার যে তালিকা প্রকাশ করা হবে, তা থেকে মুসলিমদের উল্লেখযোগ্য অংশকে বাদ দেওয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ কারণে সেখানে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরির আশংকা রয়েছে। তবে আসামের অর্থমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্ব শর্মা, রয়টার্সকে বলেন, এই তালিকা তৈরির উদ্দেশ্য ‘অবৈধ বাংলাদেশিদের’ চিহ্নিত করা। হিমান্ত শর্মা এই তালিকা তৈরির দায়িত্বে আছেন। তিনি আরো বলেন, নতুন তালিকায় যাদের নাম থাকবে না, তাদের বহিস্কার করা হবে। আমরা এক্ষেত্রে কোন ফাঁক রাখতে চাই না এবং এজন্য সব ধরণের নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তবে তিনি বলেন, বাংলাদেশি হিন্দুদেরকে তারা আশ্রয় দেবেন। কারণ বাংলাদেশে তারা নিপীড়নের শিকার হন। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আসাম রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন মন্তব্য করেনি।

এদিকে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন রয়টার্সকে বলেছেন, এভাবে অবৈধ বাংলাদেশিদের বহিস্কার করার ব্যাপারে ভারত সরকারের পরিকল্পনা নিয়ে কোনো ধারণা নেই। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে আমরা আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য পায়নি।

অন্যদিকে বিজেপি নেতাদের দাবি, ভারতের আসাম রাজ্যে প্রায় ২০ লাখ মুসলিম রয়েছেন যাদের পূর্বপুরুষরা বাংলাদেশের। ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগে থেকেই যে তারা আসামে থাকতেন, সেরকম দলিল-প্রমাণ হাজির করতে পারলে তাদের ভারতের নাগরিক হিসেবে গণ্য করা হবে। আসামের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি এলাকার বাসিন্দা আসিফুল ইসলাম বলেন, আমার বাবা-দাদারা সবাই ভারতে জন্ম নিয়েছেন। কিন্তু আমরা যে ভারতের নাগরিক, সেটি প্রমাণের দলিলপত্র আমরা যোগাড় করতে পারছি না। কারণ আমার পূর্বপুরুষরা ছিলেন নিরক্ষর। তারা কোন দলিলপত্র রাখেননি।

২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি যখন ভারতের ক্ষমতায় আসে, তখন ওই নির্বাচনের সময় আসাম রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হয়। ওই সহিংসতায় ৪০ জনের বেশি নিহত হয়। নির্বাচনী প্রচারণার সময় নরেন্দ্র মোদী হুমকি দিয়েছিলেন যে, তিনি জিতলে ‘অবৈধ অভিবাসীদের’ ব্যাগ গোছাতে হবে, তাদের ফেরত পাঠানো হবে। কিন্তু ক্ষমতায় এসে নরেন্দ্র মোদীর সরকার বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান থেকে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ এবং খ্রিস্টানদের জন্য নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ করেছেন। আইনে এমন সংশোধনী আনার প্রস্তাবও করা হয়েছে যে, ২০১৬ সালের আগে যে হিন্দুরা, কিংবা মুসলিম ব্যতীত অন্য সংখ্যালঘুরা ভারতে এসেছেন, তাদের অবৈধ অভিবাসী বলে গণ্য করা হবে না।

আসামের একজন জ্যেষ্ঠ মুসলিম নেতা গত মাসে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ধর্মের ভিত্তিতে যদি নাগরিকদের তালিকা করা হয়, সেটি দেশের জন্য ‘ভয়ংকর’ হবে এবং অস্থিরতা তৈরি করবে। আসামের মুসলিম অধ্যুষিত বরপেটা জেলার একটি কলেজের শিক্ষার্থী রফিকুল আলী বলেন, তালিকায় নিবন্ধনের জন্য যেসব কাগজপত্র পত্র চাওয়া হয়েছে তা আমার অনেক বন্ধু-বান্ধব ও স্বজনরা দিতে পারবে না। এই তালিকা শুধু সংকটই বাড়াবে।

ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারকে বাংলাদেশে পাঠানোর হুমকি আসাম বিজেপি নেতার
আসাম থেকে ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশিদের’ বের করে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে রাজ্য বিজেপি সরকার। এবার তারা ত্রিপুরার ক্ষমতাসীন মুখ্যমন্ত্রীকেও বাংলাদেশে পাঠানোর হুমকি দিয়েছে। আসামের মন্ত্রী হিমান্ত বিশ্ব শর্মা ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, বিজেপি নেতাদের ওপর হামলা বন্ধে তিনি ব্যর্থ হলে আগামী বিধানসভার নির্বাচনের পর তাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার মানিক সরকারের নিজের আসনে এক জনসভায় দেওয়া বক্তব্যে আসামের নেতা এই কথা বলেন। এএনআই’র এক খবরে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
ইয়াবা বেচে টোকাই থেকে শতকোটি টাকার মালিক

নাম তাঁর ইশতিয়াক আহমেদ (৩১)। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পের অবাঙালি (বিহারি) বাসিন্দা।
মোহাম্মদপুর, উত্তরা, সাভারের আমিনবাজার ও আশুলিয়ায় ১০টি বাড়ি আছে তাঁর। রয়েছে শত বিঘা জমি। ঘুরে বেড়ান দামি গাড়িতে। তাঁকে পরিবহন ব্যবসায়ী হিসেবেও জানে অনেকে।

তবে সাভারের হেমায়েতপুর ও আশুলিয়ায় তিনি পরিচিত ‘দানবীর’ কামরুল ইসলাম নামে। ওই এলাকায় কেউ জমি বিক্রি করছে টের পেলেই ছুটে গিয়ে কিনে নেন মোটা দামে। কেউ বিপদে পড়লে সহযোগিতা করেন টাকা দিয়ে। ১০ বছর আগে ছিলেন ফুটপাতের টোকাই। সেই বহুরূপী ইশতিয়াক ওরফে কামরুলই ইয়াবার কারবার করে এখন শতকোটি টাকার মালিক।

কালের কণ্ঠ’র অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইশতিয়াক এখন রাজধানীর শীর্ষ পর্যায়ের ইয়াবা ডিলার। তাঁকে অনেকে বলেন, ‘ইয়াবাসম্রাট’। জেনেভা ক্যাম্পের নাদিম হোসেন ওরফে ‘পঁচিশ’, সেলিম ওরফে চুয়া ওরফে চোরা সেলিম ও ম্যানেজার মোল্লা আরশাদ তাঁর প্রধান সহযোগী। তাদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন ইয়াবার বড় সিন্ডিকেট। রাজধানীজুড়ে, বিশেষ করে মোহাম্মদপুর, গাবতলী, আমিনবাজার, বেড়িবাঁধ, হেমায়েতপুর, আশুলিয়াসহ কয়েকটি এলাকায় ইয়াবা সরবরাহ করেন তিনি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) ও পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, বাড়িতে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়ানোর কারণে ইশতিয়াককে গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, পুলিশ প্রশাসনকে টাকা দিয়ে দীর্ঘদিন গ্রেপ্তার না হওয়ায়ই শত কোটি টাকার মালিক বনে গিয়ে ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়াতে পারছেন ইশতিয়াক। তাঁর প্রধান সহযোগী পঁচিশকে সম্প্রতি গ্রেপ্তার করা হলেও মাত্র ১২ দিনের মধ্যে জামিনে ছাড়া পেয়ে যায় সে। অন্য দুই সহযোগী জেনেভা ক্যাম্পে থেকেই অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।

ডিএনসির ঢাকা মেট্রো উপ-অঞ্চলের উপপরিচালক মুকুল জ্যোতি চাকমা বলেন, ইশতিয়াক ঢাকা শহরের শীর্ষ পর্যায়ের ইয়াবা কারবারি। তাঁর ব্যাপারে তথ্য পাওয়ার পর গ্রেপ্তারের জন্য তিনবার অভিযান চালানো হয়; কিন্তু টের পেয়ে আগেই সটকে পড়েছেন। তবে তাঁকে ধরতে এখনো চেষ্টা চলছে। ইশতিয়াকের সহযোগীরাও পালিয়ে আছে বলে দাবি করেন ডিএনসির উপপরিচালক।

‘ইয়াবাসম্রাট’ ইশতিয়াক : অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ১০ বছরে মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্প থেকে আমিনবাজার, হেমায়েতপুর ও আশুলিয়া পর্যন্ত ইয়াবার নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছেন ইশতিয়াক। প্রথম দিকে তিনি ইয়াবা সংগ্রহ করে জেনেভা ক্যাম্প, জহুরী মহল্লাসহ আশপাশের এলাকায় বিক্রি করতেন। পরে গড়ে তোলেন ইয়াবা সিন্ডিকেট। একপর্যায়ে জড়িত হন পরিবহন ব্যবসায়। এর সূত্র ধরে কক্সবাজার থেকে ট্রাক ও গাড়িতে ইয়াবা আনা শুরু করেন। এখন কক্সবাজার থেকে তাঁর লাখ লাখ পিস ইয়াবার চালান আসে সরাসরি। প্রতি মাসে একাধিকবার বিমানে কক্সবাজার যান তিনি। থাকেন পাঁচতারা হোটেলে। সেখানে মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে চালান পাঠান ঢাকায়। সম্প্রতি বিমানযোগে সাত দিনের জন্য ভারতের কলকাতায় যান তিনি। তবে নজর এড়িয়ে চলছেন এই দুর্ধর্ষ ইয়াবা কারবারি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেনেভা ক্যাম্পে ১০টি মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটে ৪০০ মাদক ব্যবসায়ী আছে। আর সেখানকার ইয়াবার মূল নিয়ন্ত্রক ইশতিয়াক। বর্তমানে রাজধানীর অন্যতম শীর্ষ ইয়াবা সরবরাহকারী তিনি। জেনেভা ক্যাম্প ছাড়িয়ে পুরো ঢাকায় ইয়াবা সরবরাহ করেন ইশতিয়াক। তাঁর বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় চারটি মাদকসহ হত্যা ও বিভিন্ন অভিযোগে ১৫টি মামলা আছে। একটি মামলায় তিনি গ্রেপ্তার হয়ে জামিনে আছেন। তিনটি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, জেনেভা ক্যাম্পকেন্দ্রিক মাদক বাণিজ্য বন্ধ করতে বড় ধরনের অভিযানে নেমেছে প্রশাসন। তবুও অবাঙালি জনগোষ্ঠীর অসযোগিতার কারণে সেখানে অভিযান সফল হয় না। অভিযান চালাতে গেলে ডিএনসির কর্মকর্তাদের ওপর তারা দুই দফায় হামলাও চালিয়েছে। গত বছরের ১০ নভেম্বর অভিযান চালাতে গিয়ে হামলার শিকার হয়ে গুলি ছোড়েন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যরা। ওই অভিযানে ইশতিয়াক তাঁর সহযোগীদের নিয়ে পালিয়ে গেলেও তাঁর ছোট ভাই মাহবুবকে গ্রেপ্তার করে ডিএনসি। এর আগে গত বছরের ২৪ জুলাইও অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হয় ডিএনসি।

টোকাই থেকে শতকোটি টাকার মালিক : সূত্রগুলো জানায়, মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে ইশতিয়াকের জন্ম। বেড়ে উঠেছেন অভাব-অনটনের মধ্যেই। সংসার চালাতে একেক সময় একেক কাজ করতেন। ২০০৭ সালেও রাস্তা থেকে পরিত্যক্ত বোতল কুড়িয়ে এবং তা বিক্রি করে সংসার চালাতেন। কিন্তু ১০ বছরের ব্যবধানে মাদক ব্যবসা করে গড়েছেন শতকোটি টাকার সম্পদ। সাভারের হেমায়েতপুরে বানিয়েছেন একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি। আশুলিয়ায় গাজীরচট বেড়িবাঁধের পাশে এবং ব্যারন এলাকায় দেড় কিলোমিটারের মধ্যে আছে তাঁর নির্মাণাধীন দুটি বাড়ি। আশুলিয়ার একটি একতলা বাড়ি তাঁর রেস্ট হাউস। এখানে মাঝে মধ্যে লোকজন নিয়ে মিটিং করেন। অন্য দুটি বাড়ি একটি ছয়তলা ও অন্যটি সাততলা। ছয়তলা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় তিনি বসবাস করেন, অন্য ফ্ল্যাটগুলো ভাড়া দেওয়া। মোহাম্মদপুর, সাভার ও উত্তরায় তাঁর আরো ছয়টি বাড়ি রয়েছে। এ ছাড়া সাভার, আশুলিয়া, মোহাম্মদপুর কয়েক একর জমি ও প্লট আছে ইশতিয়াকের।

ছদ্মবেশী ‘দানবীর’ : জানা গেছে, ইশতিয়াক কখন কোথায় থাকেন তা কেউ জানে না। কখনো জেনেভা ক্যাম্পে, আবার কখনো হেমায়েতপুরে থাকেন। তাঁর বাড়ির নিচতলা ও বাইরের অংশে লাগানো রয়েছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সিসি ক্যামেরা। তিনি যেকোনো স্থান থেকে সেখানকার দৃশ্য দেখতে পান। এ কারণে অভিযান চালালেও তাঁকে গ্রেপ্তার করা যায় না বলে দাবি করেন ডিএনসির কর্মকর্তারা। গত ২১ নভেম্বর হেমায়েতপুরের বাড়িতে ডিএনসি অভিযান চালাতে গেলে ইশতিয়াক সটকে পড়েন।

জেনেভা ক্যাম্প ও সাভারে সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাভার ও আশুলিয়ার মানুষ ইশতিয়াককে চারটি বাড়ির মালিক কামরুল ইসলাম নামেই চেনে। নাম পাল্টে নিজেকে আড়াল করার জন্য সেখানে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন তিনি। জমি কিনে অনেকের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। গত কোরবানির ঈদে ২২ লাখ টাকার পশু কিনে এলাকায় বিতরণ করেছেন। বিয়ে করেছেন এক বাঙালি তরুণীকে। তাঁর শ্বশুরবাড়ি বরগুনায়।

ভয়ংকর সহযোগীরাও অধরা : সূত্র জানায়, ইশতিয়াকের প্রধান সহযোগী নাদিম হোসেন ওরফে পঁচিশ, সেলিম ওরফে চুয়া ওরফে চোরা সেলিম ও ম্যানেজার মোল্লা আরশাদ। গাঢাকা দিয়ে চললেও তারা সবাই এখন সক্রিয়। ৩১ বছর বয়সী পঁচিশ সবচেয়ে দুর্ধর্ষ। জেনেভো ক্যাম্পে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে ইয়াবা, হেরোইন, গাঁজাসহ মাদক বিক্রি করে সে। ছোটবেলায় জেনেভা ক্যাম্প এলাকার একটি রেস্টুরেন্টে কাজ করত পঁচিশ। তখন তার দৈনিক বেতন ছিল ২৫ টাকা। হোটেলে কাজ করতে করতে গাঁজা বিক্রিও শুরু করে। কাগজে মোড়ানো এক পুঁটলি গাঁজা বিক্রি করত ২৫ টাকায়। হোটেলের বেতন আর গাঁজার দাম একই হওয়ায় নাদিমকে এলাকাবাসী ডাকতে শুরু করে ‘পঁচিশ’ নামে। এই পঁচিশ এখন কোটিপতি বনে গেছে।

গত ৩ নভেম্বর ডিএনসির সঙ্গে র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি, কোস্ট গার্ড, এপিবিএন ও এনএসআইয়ের ২০০ সদস্য মিলে জেনেভা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেন পঁচিশকে। প্রথমবারের মতো গ্রেপ্তার হলেও মাত্র ১২ দিন পর ৫ নভেম্বর নিম্ন আদালত থেকে চারটি মামলায় জামিন নিয়ে ছাড়া পায় সে। ক্যাম্পে গিয়ে আবার শুরু করে মাদক কারবার। ১৭ নভেম্বরের পর এই ইয়াবা কারবারি গাঢাকা দিয়ে আছে বলে জানা গেছে।

জেনেভে ক্যাম্পের একাধিক বাসিন্দা জানায়, ইশতিয়াকের সহযোগী দলনেতাদের মধ্যে তিন নারীও রয়েছে। তারা হলো—সাথী, রাজিয়া ও শান্তি। প্রতিটি দলে ১০ থেকে ২০ জন সদস্য আছে।

মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পের চেয়ারম্যান শেখ গোলাম জিলানীর বিরুদ্ধেও মাদক কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে মাদকসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন জিলানী। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে জামিনে ছাড়া পান। জিলানীও ইশতিয়াকের সঙ্গে হেমায়েতপুরে থাকেন।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করে, পুলিশ প্রশাসনকে টাকা দিয়ে অধরা থাকেন ইশতিয়াক ও তাঁর সহযোগী। এ কারণেই জেনেভা ক্যাম্পের মাদক বাণিজ্য বন্ধ হচ্ছে না। আর কারবারিরা এখন শত কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে।

মোহাম্মদপুর থানার ওসি জামালউদ্দিন মীর বলেন, ‘ইশতিয়াকসহ মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে আমাদের কাছেও অভিযোগ আছে। জেনেভা ক্যাম্পে প্রায়ই অভিযান চালানো হয়। তবে শীর্ষ কারবারিরা চতুর। এরা বড় অভিযানের আগে সটকে পড়ে। জেনেভা ক্যাম্পকে মাদকমুক্ত করার জন্য সচেতনতামূলক কাজও করা হচ্ছে। মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িতদের কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ’

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

খেলাপি ঋণের আবর্তে পড়ে অস্থিরতার তীব্র স্রোতে ঘুরপাক খাচ্ছে ব্যাংক খাত। বাড়তে থাকা খেলাপি ঋণে পর্যুদস্ত হয়ে পড়েছে সরকারি-বেসরকারি একাধিক ব্যাংক। সর্বশেষ ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। অবলোপন করা ঋণের প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার হদিস নেই। আদায় হওয়ারও কোনো সম্ভাবনা নেই এই ঋণের। একদিকে আদায় করতে না পারায় নতুন ঋণ দিতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ফলে মুনাফায় ধস নেমেছে অধিকাংশ ব্যাংকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় খেলাপি ঋণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। বেসরকারি ব্যাংকগুলোয় পরিচালকরা নিজেদের মধ্যে ঋণ ভাগাভাগি করায় সেখানেও খেলাপের সংখ্যা বেড়ে গেছে। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে আছে নতুন প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকগুলো। সমঝোতাভিত্তিক বড় অঙ্কের ঋণ বিনিময় করেন শতাধিক পরিচালক। যাদের কয়েকজন বেশি বিতর্কিত। এদের কাছেই পুরো ব্যাংকিং খাত জিম্মি। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর (২০১৭) ডিসেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণের পরিমাণ যোগ হয়েছে ২২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) ১১ হাজার ২৩৭ কোটি, দ্বিতীয় প্রান্তিকে (মার্চ-জুন) ৭৩৯ কোটি ও তৃতীয় প্রান্তিকে (জুন-সেপ্টেম্বর) খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৬ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা এবং অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে যোগ হয়েছে আরও প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ। বছর শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৫ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা। এর সঙ্গে ঋণ অবলোপন করা ৪৫ হাজার কোটি টাকা যোগ করলে ব্যাংকিং খাতে প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। গত অক্টোবরে দেশের ব্যাংক খাতের বিতরণ করা ঋণ বেড়ে হয়েছে ৭ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। গত জুনে ঋণ বিতরণ ছিল ৭ লাখ ৩১ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট ঋণের প্রায় ১১ শতাংশই খেলাপি। এর মধ্যে সরকারি খাতের ছয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৪০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। গড়ে সরকারি ব্যাংকগুলোর ২৯ দশমিক ২৫ শতাংশ ঋণই খেলাপি। জুনের তুলনায় এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২ দশমিক ৪১ শতাংশ। বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ হয়েছে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ব্যাংকগুলোর প্রায় ৮ শতাংশ ঋণই খেলাপি। একই ভাবে কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫ হাজার ৫১৮ কোটি টাকা। ব্যাংকগুলোর প্রায় ২৪ শতাংশ ঋণই খেলাপি। অনিয়ম-জালিয়াতিতে পিছিয়ে নেই বেসরকারি ব্যাংকগুলোও। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বেসরকারি খাতের প্রায় সব ব্যাংকের পরিচালকরা একে অন্যের সঙ্গে ভাগাভাগি করে ঋণ দেওয়া-নেওয়া করেন। নতুন-পুরান মিলিয়ে দেশে সরকারি-বেসরকারি ৫৭টি ব্যাংক। এসব ব্যাংক পরিচালকদের হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ দিয়েছে। ১৯টি ব্যাংকের পরিচালক নিজের ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন প্রায় ৪০০ কোটি টাকার বেশি। একই ভাবে ৯টি ব্যাংকের পরিচালক গ্যারান্টার বা জিম্মাদার হয়ে ঋণ দিয়েছেন আরও ২৩১ কোটি টাকা।

বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপির চিত্রে দেখা গেছে, এক্সিম ব্যাংক ৪ হাজার ৫৬৯ কোটি, ব্যাংক এশিয়া ৩ হাজার ৯৫৪ কোটি, ঢাকা ব্যাংক ৩ হাজার ৭২২ কোটি, এবি ব্যাংক ৩ হাজার ৫৩৬ কোটি, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ৩ হাজার ২৫৯ কোটি, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক ৩ হাজার ১৫৫ কোটি, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ৩ হাজার ৬৬ কোটি, যমুনা ব্যাংক ৩ হাজার ১৬ কোটি, প্রাইম ব্যাংক ২ হাজার ৯৭৬ কোটি, ব্র্যাক ব্যাংক ২ হাজার ৯৩০ কোটি, পূবালী ব্যাংক ২ হাজার ৭৯৭ কোটি, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ২ হাজার ৩৫৭ কোটি, ট্রাস্ট ব্যাংক ২ হাজার ৩০৩ কোটি, এনসিসি ব্যাংক ২ হাজার ১৩৯ কোটি, সাউথইস্ট ব্যাংক ১ হাজার ৯৯০ কোটি, ওয়ান ব্যাংক ১ হাজার ৮২৭ কোটি, প্রিমিয়ার ব্যাংক ১ হাজার ৭৮৭ কোটি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ১ হাজার ৭৪৫ কোটি, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ১ হাজার ৬৬৭ কোটি ও আইএফআইসি ব্যাংকের ১ হাজার ৪০২ কোটি টাকা। নতুন কার্যক্রমে আসা এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালককে ঋণ দিয়েছে ৫১৪ কোটি, মধুমতি ব্যাংক ৩৫২ কোটি, মিডল্যান্ড ব্যাংক ৩৪৯ কোটি, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক ৩২৫ কোটি, মেঘনা ব্যাংক ৩০১ কোটি ও ফারমার্স ব্যাংক ১৮৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে অনিয়ম করে ঋণ দেওয়ার দায়ে এনআরবিসি, ফারমার্স ব্যাংকের পর্ষদ সদস্যদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর খেলাপিদের ঋণের একটি বড় অংশই বর্তমান ও সাবেক ব্যাংক পরিচালক, তাদের স্ত্রী-পুত্র-সন্তান বা নিকটাত্মীয়দের কাছে আটকা পড়ে আছে। এসব ঋণপ্রস্তাব, অনুমোদন ও বিতরণের প্রতিটি ক্ষেত্রেই অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, খেলাপি ঋণের পাহাড় পরিমাণ সংকট পর্যুদস্ত করেছে ব্যাংকিং খাত। বিগত কয়েক বছরে সরকারি ব্যাংকে রাজনৈতিক নিয়োগ ও ঋণ বিতরণে অনিয়ম-জালিয়াতি বেড়েছে। বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সদস্যরা যেভাবে ঋণ বিতরণ করেছেন তাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। এখন যে পরিবর্তন করা হচ্ছে তাতে সমস্যার সমাধান হবে না। প্রয়োজন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ। না হলে ব্যাংক খাত পুরো অর্থনীতিকে সংকটে ফেলবে। নতুন ব্যাংক কোম্পানি আইন বাস্তবায়ন হলে তাতেও সংকট বৃদ্ধি পাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নল ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো পর্যবেক্ষণ নেই ব্যাংকগুলোর কার্যক্রমে। ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে তারা কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এজন্য খেলাপি ঋণ না কমে কেবল বেড়েই চলেছে। যাচাই-বাছাই ছাড়া যেসব নতুন ঋণ দেওয়া হচ্ছে, সেগুলোও খেলাপে যোগ হচ্ছে। ঋণ অবলোপনের প্রক্রিয়াটি অনিয়মের অন্যতম কারণ। বিপুল পরিমাণ ঋণ পুনর্গঠন করা হয়েছে। তাও সঠিকভাবে করা হয়নি; যা খুবই উদ্বেগের।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest