প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে দেশবিরোধী কোনো চুক্তি করলে তা মেনে নেওয়া হবে না। প্রয়োজনে রাজপথের আন্দোলনে যেতে হবে বলেও ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।১ এপ্রিল শনিবার রাতে খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজের (একাংশ) নেতারা দেখা করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন।
খালেদা জিয়া বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে যাচ্ছেন। সেখানে তিনি যাই কিছু করুন না কেন, দেশবিরোধী কোনো চুক্তি করলে মেনে নেওয়া হবে না। আশা করি এমন কিছু তিনি করবেন না। জনগণকে পাশ কাটিয়ে কিছু করা হলে অবশ্যই আমাদের প্রতিবাদ করতে হবে। প্রয়োজনে রাজপথের আন্দোলনে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের পরিস্থিতি ভালো নেই। কারো কোনো নিরাপত্তা নেই। গুম-খুন অব্যাহত রয়েছে। ছাত্রদল নেতা নুরুল আলম নুরুর মতো তরুণকে আজ পৈশাচিক কায়দায় হত্যা করা হয়েছে। আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী এ দায় এড়াতে পারে না।’
বেগম জিয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বুঝতে পেরেছে, সুষ্ঠু ভোট হলে তাদের ভরাডুবি হবে। তাই তারা কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু করছে না।’ টালবাহানা না করে অবিলম্বে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান বিএনপি প্রধান।
তিনি বলেন, ‘কুমিল্লা সিটি করপোরেশনেও নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষতার প্রমাণ দিতে পারেনি। যদি সুষ্ঠু ভোট হতো তাহলে আরো অন্তত ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধানে ধানের শীষের বিজয় হতো।
সাক্ষাৎকালে ৩০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বিএফইউজে সভাপতি শওকত মাহমুদ। এ সময় চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান, বিএফইউজে সাধারণ সম্পাদক এম আবদুল্লাহ, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী, এম এ আজিজ, ইলিয়াস খান, মোদাব্বের হোসেন, বাকের হোসেন, শফিউল আলম দোলন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে দুপুরে সংগঠনটির বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে সংবাদ মাধ্যমের জন্যে নবম ওয়েজবোর্ড ঘোষণা ও সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচারসহ ১১ দফা জানানো হয়।

অটিজম নিয়ে দৃঢ়ভাবে কাজ করায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেনকে নির্বাচিত করেছে। শনিবার সকালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দিল্লি কার্যালয় এ ঘোষণা দেয়।
ডেক্স রিপোর্ট : সারা দেশের ন্যায় আজ শুরু হচ্ছে এইচ.এস.সি ও সমমানের পরীক্ষা। জেলায় এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ৩৭ টি কেন্দ্রে ১৭ হাজার ৩১৬ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। গত বছরের চেয়ে এ বছর পরীক্ষা কমেছে ৩ হাজার ৪১৮ জন। এইচএসসি পরীক্ষায় ২১ টি কেন্দ্রের ১১ হাজার ২৯৮ জন, বিএম শাখায় ৮ টি কেন্দ্রের মোট পলীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪ হাজার ২৫৫ জন। এইচএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় ১ টি কেন্দ্রের ১৫১ জন এবং আলিম পরীক্ষায় ৭টি কেন্দ্রে ১ হাজার ৬১২ জন অংশ নিচ্ছে। পরীক্ষা সুষ্ঠু ও নকল মুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠানের জন্য সকল ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। সূত্র জানায়, সদর উপজেলায় এইচএসসি পরীক্ষায় সরকারি কলেজ কেন্দ্রে ৯৩০ জন, সরকারি মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ১৩৫৮ জন, সিটি কলেজ কেন্দ্রে ৬৯৯, দিবা-নৈশ কলেজ কেন্দ্রে ৪৯০ জন অংশ নিচ্ছে। অন্যদিকে, আলিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে ৪০২ জন, এইচএসসি বিএম শাখায় পি এন স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে ৮৮৮জন, ভোকেশনাল শাখায় সরকারি টেকনিক্যাল স্কুলএন্ড কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২১৪জন, তালা উপজেলায় এইচ এস সি পরীক্ষায় তালা সরকারি কলেজ কেন্দ্রে ১৫১জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। তালা উপজেলার তালা সরকারি কলেজ কেন্দ্রে ৪২০ জন, কুমিরা মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ২৪৩ জন, পাটকেলঘাটা হারুন অর রশিদ কলেজ কেন্দ্রে ২৬৬ জন ও তালা মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ২০১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। আলিম পরীক্ষায় ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ১৭৮ জন, বিএম শাখায় কুমিরা মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ৬৯৮ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। কালিগঞ্জ উপজেলায় এইচএসসি পরীক্ষায় কালিগঞ্জ কলেজ কেন্দ্রে ৪২৬ জন, রকেয়া মুনসুর মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ৩৭০ জন, নলতা আহসানিয়া মিশন রেসিঃ কলেজ কেন্দ্রে ৪৭১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। বিএম শাখায় রকেয়া মুনসুর মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ২৮১ জন, কালিগঞ্জ কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২১৫ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। কলারোয়া উপজেলায় এইচএসসি পরীক্ষায় কলারোয়া সরকারি কলেজ কেন্দ্রে ৩৬১ জন, শেখ আমানুল্লাহ কলেজ কেন্দ্রে ২৯০ জন, বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ৮৯৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। আলিম পরীক্ষায় কলারোয়া আলিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে ১১২ জন, বিএম শাখায় শেখ আমানুল্লাহ কলেজ কেন্দ্রে ১০৯০ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচে। আশাশুনি উপজেলায় এইচএসসি পরীক্ষায় আশাশুনি কলেজ কেন্দ্রে ৫৫৯ জন, মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ৩২২ জন, দরগাহপুর এসকেআর এইচ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৭৭৯ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। বিএম শাখায় আশাশুনি কলেজ কেন্দ্রে ২৮৯ জন এবং আলিম পরীক্ষায় আলিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে ২৩১ জন ও গুনাকরকাটি খায়রিয়া আজিজিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ১৬০ জন পরীক্ষার্থী অংশ গ্রহণ করছে। দেবহাটা উপজেলায় এইচএসসি পরীক্ষায় খান বাহাদুর আহসান উল্লাহ কলেজ কেন্দ্রে ২৩১ জন, হাজী কেয়াম উদ্দিন মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ৪২৮ জন, বিএম শাখায় দেবহাটা কলেজ কেন্দ্রে ৩৩১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। শ্যামনগর উপজেলায় এইচএসসি পরীক্ষায় সরকারি মহসিন কলেজ কেন্দ্রে ৯১৯ জন, আতরজান মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ৬৩৮ জন, বিএম শাখায় আতরজান মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ৪৬৩ জন এবং আলিম পরীক্ষায় কেন্দ্রীয় মাদ্রাসায় ৩৯১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। উল্লেখ্য পরীক্ষা সুষ্ঠু, নকলমুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত করতে পাবলিক পরীক্ষা অপরাধ আইন ১৯৮০ প্রয়োগ করার মাধ্যমে নকলমুক্ত করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রতিষ্ঠান প্রধানকে জেলা প্রশাসন থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রে ২০০ গজের মধ্যে জনসাধারণের প্রবেশ সম্পূর্ণ রূপে নিষেধ করার জন্য ফৌজদারী দন্ডবিধি ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পাটকেলঘাটা: পাটকেলঘাটার দুটি কেন্দ্রে জেনারেল শাখায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০৯ জন। পাটকেলঘাটা হারুণ-অর-রশিদ ডিগ্রি কলেজে কেন্দ্র সচিব অধ্যক্ষ ওয়াজিহুর রহমান খান জানান, তার কেন্দ্রে কুমিরা মহিলা কলেজ হতে আজ বাংলা (আবঃ) প্রথম পত্র পরীক্ষায় ১৫২ জন ও শহীদ জিয়াউর রহমান কলেজ থেকে ১১৪ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহন করছে। অপর দিকে কুমিরা মহিলা ডিগ্রি কলেজের কেন্দ্র সচিব অধ্যক্ষ লুৎফুনআরা জামান জানান, তার কেন্দ্রে পাটকেলঘাটা হারুণ-অর-রশিদ ডিগ্রি কলেজ হতে ১৮৬ জন ও সুভাশুনি ডিগ্রি কলেজ হতে ৫৭ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। অন্যদিকে এইচ.এস.সি ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা শাখায় কুমিরা মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ও কুমিরা বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় উপকেন্দ্রে মোট ৬৯৮ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছে। উভয় কেন্দ্রের সচিব জানান, পরীক্ষা সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ ভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার লক্ষ্যে সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে।
শ্যামনগর ব্যুরো : শ্যামনগর উপজেলা প্রেসকাবে সাংবাদিকদের সাথে নবাগত থানা অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ মান্নান আলী এর মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রেসকাবের কার্যালয়ে এ মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রেসকাব সভাপতি আকবর কবীর। নবাগত থানা অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ মান্নান আলী তার বক্তব্যে বলেন- শ্যামনগরে মাদক এবং জঙ্গিবাদ থাকবে না। বাংলাদেশের ভিতর শ্যামনগর উপজেলাকে সর্ব প্রথম মাদক মুক্ত করতে দৃঢ় অঙ্গিকারবদ্ধ। তিনি এ সময় তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিকদের পূর্ণ সহযোগিতা কামনা করেন। প্রেসকাবের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুমনের পরিচালনায় উপস্থিত ছিলেন প্রেসকাবের উপদেষ্টা গাজী সালা উদ্দীন বাপ্পী, শেখ আফজাল, আবু সাঈদ, সহ-সভাপতি মনসুর আলম, যুগ্ম সম্পাদক হাজী মুরাদ, দপ্তর সম্পাদক মেহেদী হাসান, সিনিয়র সাংবাদিক আনিসুজ্জামান সুমন, সাবেক সহ-সভাপতি মোস্তফা কামাল, রণজিৎ বর্মণ,স ম আব্দুস সাত্তার, মিজানুর রহমান, আবু মুসা, গাজী আল ইমরান, মারুফ হোসেন মিলন প্রমুখ। গত ৩১মার্চ ২০১৭ তারিখে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে তিনি যোগদান করেন। তার নিজ জেলা নড়াইল।
মনজুরুল হাসান বাবুল : দেশের দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতির ভিত্তি চিংড়ি চাষ বা ‘সাদা সোনার’ দিন যেন ফুরিয়ে যাচ্ছে। জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে উন্নত প্রযুক্তিতে বাণিজ্যিকভাবে কাঁকড়া চাষ। বাড়তি লাভের আশায় চিংড়ি চাষ বন্ধ করে চাষিরা ঝুঁকছেন কাঁকড়া চাষের দিকে। কাঁকড়ার চাহিদা আর দাম পিছনে ফেলেছে চিংড়িকে। কম শ্রম ও কম খরচায় ঘেরে এখন চাষ হচ্ছে কাঁকড়া। উপকূলীবর্তী এলাকার লবণপোড়া ফসলহীন জলাভূমিতে প্রায় অবহেলিত জলজ প্রাণি কাঁকড়া চাষে মানুষের ভাগ্যের চাকা ঘুরছে, সচ্ছলতার মুখ দেখছে লাখো চাষি পরিবার। ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আর আন্তর্জাতিক বাজারে দরপতনে সর্বস্বান্ত চিংড়ি চাষিরা অনেকটা বাধ্য হয়েই কাঁকড়া চাষে ঝুঁকছেন। একসময় এ অঞ্চলের মানুষেরা চিংড়ি চাষের দিকে ঝুঁকেছিল ব্যাপকভাবে। কিন্ত তা থেকে আস্তে আস্তে বের হতে শুরু করেছে চাষিরা। চিংড়ি চাষ মানুষকে স্বাবলম্বী করতে পারেনি, তা বলা যাবে না। কারণ এর মাধ্যমে অনেক মানুষ তার ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে সক্ষম হয়েছে আবার বিভিন্ন দুর্যোগ ও ভাইরাসজনিত কারণে অনেকেই ফকির বনে গেছে। সুতরাং কাঁকড়া নিয়ে মানুষ নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে। অনেকের ভাবনা চিংড়ি চাষের ক্ষতি চুকিয়ে নেবে কাঁকড়া থেকে। দেশের বাজারে তেমন চাহিদা না থাকলেও বিদেশে কাঁকড়ার চাহিদা অভাবনীয়। কাঁকড়া চাষ করে আবারো উঠে দাঁড়াচ্ছেন চাষিরা। ঘের এলাকায় চিংড়ির মোকামগুলো কাঁকড়ার মোকামে রূপান্তরিত হচ্ছে। চিংড়ির আড়তের চেয়ে বাড়ছে কাঁকড়ার আড়তের সংখ্যা। কাঁকড়া চাষে ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার ভয় নেই। নেই বিনিয়োগের ঝুঁকি। প্রক্রিয়াকরণে জটিলতা বা দ্রুত পচনেরও ভয় নেই। চিংড়ির মতো পোনা কিনতে হয় না কাঁকড়ার। প্রাকৃতিকভাবেই লোনা পানিতে কাঁকড়া জন্মায়। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি এবং জুন থেকে জুলাই হচ্ছে কাঁকড়ার প্রজননকাল। এ সময় গভীর সমুদ্রে ও সুন্দরবনের মধ্যে ডিম থেকে কাঁকড়া জন্ম নেয়। এসব পোনা পানিতে ভেসে এসে নদ-নদী, খাল ও মাছের ঘেরে আশ্রয় নিয়ে বড় হয়। নদী থেকে ঘেরে পানি উঠালেই লাখ লাখ পোনা পাওয়া যায়। ইতিমধ্যে সাফল্যের অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে। বৃহত্তর খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, কক্সবাজারসহ উপকূলে বহু এলাকায় হচ্ছে কাঁকড়ার চাষ। দক্ষিণাঞ্চলে ব্যক্তিগত উদ্যোগে কয়েক হাজার কাঁকড়া মোটাতাজাকরণ খামার গড়ে উঠেছে। এমনই কাঁকড়ার খামার করে জীবনের চাকা ঘুরাতে সফল হয়েছেন তালা উপজেলার খেশরা ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামের মোঃ জুলফিকার আলী (ভুট্টো)। চার বছর আগে তিনি মাত্র দশ শতক জমিতে কাঁকড়া চাষ শুরু করেছিলেন। বর্তমানে তিনি চার বিঘা জমিতে কাঁকড়া চাষ করছেন। তার সাফল্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেকেই বিভিন্নভাবে কাঁকড়া চাষ করেন তাতে তারা কেমন লাভবান হয় আমি তা জানি না, তবে আমি উপজেলা মৎস্য অফিসারের পরামর্শ মত আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কাঁকড়া চাষ করি। কাঁকড়া চাষের সুবিধা-অসুবিধা সর্ম্পকে জানতে চাইলে বলেন, এটি তুলনামূলক কম খরচে চাষ করা যায় এবং এর বাজার মূল্য ভাল। ছোট-খাট কিছু রোগ দেখা যায় যা সহজেই প্রতিরোধ করা সম্ভব। কাঁকড়া চাষে আমার লাভ বেশ সন্তোষজনক। আমি মনে করি আমার মত অনেকের কাঁকড়া চাষ করা উচিত। কাঁকড়া চাষ সম্পর্কে তালা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, আধুনিক-বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কাঁকড়া চাষ করলে তুলনামূলক কম খরচে অনেক লাভবান হওয়া যায়। বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে এটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে। সরকার কাঁকড়া চাষিদেরকে প্রশিক্ষণসহ বিভিন্নভাবে নানা সাহায্য-সহযোগিতা করছে। বালিয়ার জুলফিকারের মত আরো অনেকেরই কাঁকড়া চাষে এগিয়ে আসা উচিত বলে তিনি মনে করনে।
কালিগঞ্জ ব্যুরো : “আপনার জমি, আপনার অধিকার” প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে কালিগঞ্জে ভূমি সেবা সপ্তাহ পালন উপলক্ষে র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ভূমি অফিসের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে অফিসার্স কাব মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মাঈনউদ্দিন হাসানের সভাপতিত্বে ও প্রেসকাবের সাধারণ সম্পাদক সুকুমার দাশ বাচ্চু‘র সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, যুদ্ধকালিন কমান্ডার, কালিগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিটের কমান্ডার আলহাজ্ব শেখ ওয়াহেদুজ্জামান। এসময় বক্তারা বলেন অর্পিত সম্পত্তির (খ) তপশীল ভূক্ত জমি নামপত্তনে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের দ্বারা হয়রানির শিকার হচ্ছে। বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ২৫ বিঘা জমির খাজনা মাফ করলেও সাধারণ ভূমির মালিকদের সর্বোচ্চ হারে খাজনা দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। আইন, আদালত ও সরকার অর্পিত সম্পত্তি (রিলিজ) বা অবমুক্ত করলেও কালিগঞ্জ উপজেলা থেকে (ক) তপশীল গেজেট সংশোধনের জন্য নতুন করে তালিকা পাঠানো হয়েছে। এতে করে সাধারণ ভূমির মালিকদের ভোগান্তি আরো বেড়ে যাবে বলে বক্তারা উল্লেখ করেন। (ক) তপশীল প্রস্তাবকৃত নতুন তালিকা প্রনয়নের সময় ভূমি মালিকদের না জানিয়ে বা গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করে যাচাই বাছাই ছাড়াই এই নামের তালিকা পাঠানো হয়েছে। ১৫০ ধারা, ৯২ (ক) ধারা ও ২০ এর (খ) ধারা কেসে ১টি মাত্র শুনানি দিয়ে প্রথম দিনেই কাগজপত্র যাচাই বাছাই ও দখল তদন্ত ছাড়াই রায় ঘোষণা করায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি আরো বেড়ে যাচ্ছে। বক্তারা আরো বলেন স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যায়ে সর্বস্তরে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারের অংশ হিসেবে কালিগঞ্জ উপজেলায়ও এই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে জনভোগান্তি লাঘব হবে। টাউট, বাটপার, দালাল, ফড়িয়াদের হাত থেকে ভূমি প্রশাসন রক্ষা পাবে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল হাকিম, বিশিষ্ঠ সাহিত্যিক অধ্যাপক গাজী আজিজুর রহমান, প্রেসকাবের সভাপতি শেখ সাইফুল বারী সফু, উপজেলা ভূমি কমিটির সাধারন সম্পাদক এ্যাডভোকেট জাফরুল্লাহ ইব্রাহীম, কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কেএম মোশারাফ হোসেন, দক্ষিণশ্রীপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি গোবিন্দ মন্ডল, ইউনিয়ন সহকারী কর্মকর্তা আইনূল হক প্রমুখ। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, কৃষক ও সাংবাদিকবৃন্দ।
আশাশুনি ব্যুরো : আশাশুনির কুঁন্দুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কাশ রুমের অভাবে কাশ পরিচালনা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। টিনের ঘর ও জরাজীর্ণ কক্ষে প্রতিকূলতা ও জীবনের মায়া ত্যাগ করে কাশে বসে কাশ করতে হচ্ছে শিশুদের। উপজেলার পুরাতন স্কুলগুলোর মধ্যে এই বিদ্যালয় একটি। ১৯৪০ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত। এই বিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রছাত্রী ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিপির উচ্চ পদে কর্মরত এবং দেশ-বিদেশে বহু প্রতিষ্ঠান ও বিভাগে কৃতিত্বের সাথে চাকুরীরত আছেন। বিদ্যালয়টি ১৯৭৩ সালে সরকারিকরণ করা হয়। এলাকাবাসীর উদ্যোগে বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ করে স্কুল চলে এসেছে। দীর্ঘ ২৩ বছর পর ১৯৯৬ সালে ৪ কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন সরকারিভাবে নির্মীত হয়েছিল। পরবর্তীতে কাশ পরিচালনায় সমস্যা দেখা দেওয়ায় সরকারি ভাবে ২ কক্ষ বিশিষ্ট আরেকটি ভবন নির্মান করা হয় ২০০২ সালে। এরপর কাশ সুষ্ঠুভাবে চলে আসলেও গত ৬ মাস পূর্বে পুরনো ভবণটি (৪ কক্ষ বিশিষ্ট) পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে ভবনটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। গাছ তলা আর খোলা মাঠে কাশ পরিচালনা করতে করতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা কান্ত হয়ে পড়লে এসএমসি সদস্য, শিক্ষকবৃন্দ ও এলাকার মানুষ বাধ্য হয়ে ২ কক্ষ বিশিষ্ট টিনের বেড়া ও টিনের ছাউনি দিয়ে একটি ঘর নির্মাণ করেছেন। তাতেও কক্ষ সংকট কাটেনি। কক্ষ সংকটের পাশাপশি টিনের ঘরে রৌদ্রের তাপে ঘর্মাক্ত ও মারাক্তক অস্বস্তি নিয়ে এবং বর্ষার সময় বৃষ্টি ঝরা টিনের বিকট শব্দের কারনে শুনতে না পাওয়ার অসহ্য পরিবেশে কাশ চালান হচ্ছে। অপরদিকে ২০০২ সালে নির্মিত দু’কক্ষের বিল্ডিংটি (একটি কক্ষ কাশ ও আরেকটি অফিস হিসাবে ব্যবহৃত) ইতিমধ্যে হয়ে পড়েছে জীর্ণশীর্ণ। ঝুঁকি আর নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-কর্মচারীদের দৈনন্দিন কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। স্বনামধন্য বিদ্যালয়টি ২৪০ জন ছাত্রছাত্রীর পদভারে আনন্দঘন পরিবেশে চলার কথা, সেটি এখন শিক্ষাদানের পরিবেশ বঞ্চিত হয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে। শিশু বান্ধব প্রাইমারী স্কুল পরিচালনার জন্য সরকার ও শিক্ষা বিভাগ যখন এগিয়ে চলেছে, তখন কক্ষ সংকটে মাঠে কিংবা গাছ তলায় বসে কাশ পরিচালনা আর রোদ-গরমের সাথে যুদ্ধ করে এবং বৃষ্টির মৌসুমে প্রকৃতির বিকট শব্দের একাকার পরিবেশে কাশ পরিচালনার ঘটনা সত্যি বেমানান। জেলা প্রশাসন, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অনুধাবন করে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিবেন এ দাবি এলাকাবাসী সকলের।
নিজস্ব প্রতিবেদক : জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠান আগামী ৬ ও ৭ এপ্রিল বৃহস্পতি এবং শুক্রবার বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানের মিলন মেলা কে বানচাল করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে এক শ্রেণির কুচক্রী মহল বলে কানাঘুশা হচ্ছে এলাকায়। ঐতিহ্যবাহী নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠান সম্পর্কে বিদ্যালয়টির প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং সাতক্ষীরা-৩ আসনের স্থানীয় সংসদ সদস্য, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আলহাজ্জ অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক এর কাছে জানতে চাইলে, তিনি বলেন, আমরা যারা এই প্রতিষ্ঠান থেকে লেখা পড়া শেষ করেছি এবং সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছি তারা এক সাথে মিলিত হবার প্রচেষ্টা করছি যাতে বর্তমান প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা আমাদের দেখে ভালভাবে পড়া লেখা করতে উৎসহি হয়। সেই সাথে সোনার বাংলা এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কাজে ভুমিকা রাখতে পারে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো আমদের অঞ্চলের কিছু কুচক্রী মহল যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না যারা জঙ্গিবাদে বিশ্বাস করে এলাকার উন্নয়ন চায় না এমন এক শ্রেণির মহল ঐতিহ্যবাহী নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠান বন্ধ এবং বানচাল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। উল্লেখ্য যে, অবিভক্ত বাংলার খুলনা জেলাধীন সাতক্ষীরা মহুকুমার কালিগঞ্জ থানার নলতা গ্রামের জমিদার বাবু ভঞ্জ চৌধুরী ১৯১৭ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত করেন। পরে অবিভক্ত বাংলার সহকারী ডিরেক্টর হযরত সাহসুফী আলহাজ্জ খানবাহাদুর আহছান উল্লাহ (রহ:) কতৃক বিদ্যালয়টির ছাত্র সংগ্রহ,হোষ্টেল নির্মাণ,বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ সহ বহু উন্নতি সাধিত হয় ।১৯১৯ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কতৃক বিদ্যালয় স্থায়ী স্বীকৃতি লাভ করে ।১৯১৭ সাল থেকে ১৯৪২ সাল পর্যন্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন বিখ্যাত শিক্ষাবিদ বাবু জ্ঞানেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। ১৯৪৩ সাল থেকে বাবু বিজয় নাথ মুখার্জি এবং বাবু তারাপদ মুখার্জি ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। দেশ বিভাগের পর অত্র প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বভার গ্রহনের জন্য হযরত পীর কেবলা আলহাজ্জ মো: দরবেশ আলীকে অনুরোধ করেন। ফলশ্রুতিতে ১৯৫৩ সাল থেকে ১৯৮৪ পর্যন্ত আলহাজ্জ মোহা: দরবেশ আলী অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন এবং তার প্রচেষ্টায় অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি সাতক্ষীরা জেলা তথা বাংলাদেশের মধ্যে একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান হিসাবে পরিচিতি লাভ করে।