সর্বশেষ সংবাদ-
সাতক্ষীরার শিয়ালডাঙ্গায় বসতঘরে আগুন : ২ লক্ষ টাকার ক্ষতিদেবহাটায় তীব্র তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ মানুষসাতক্ষীরায় সরকারি গোরস্থান বায়তুল ফালাহ জামে মসজিদের ছাদ ঢালাইয়ের উদ্বোধনখাস জমি উদ্ধার পূর্বক ভ‚মিহীনদের মধ্যে বন্টনের দাবিতে সভাবাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আমরা আপোষহীন: জামায়াত নেতা ডাঃ তাহেরদেবহাটায় জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহের সমাপনীইছামতি নদী থেকে জালে ধরা পড়লো বিশাল এক কচ্ছপসার্চ কমিটি বাতিলের দাবিতে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা বিএনপির বিক্ষোভসাতক্ষীরার পৌর এলাকায় শনিবার সকাল ৫টা থেকে ১০টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বন্ধ থাকবেতারেক রহমানের বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য ও সাইদুরের প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় বিক্ষোভ

11স্বাস্থ্য ও জীবন: মিষ্টি খেলেই শরীরে রোগ বাসা বাঁধবে এই ভয়ে মিষ্টিজাতীয় খাবার খেতে পারছেন না? জেনে অবাক হবেন, চিনির বিকল্প হিসেবে নিশ্চিন্তে খেতে পারবেন গুড়! আখের রস ও খেজুরের রস থেকে তৈরি গুড়ে রয়েছে বিভিন্ন পুষ্টিগুণ যা সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।

জেনে নিন গুড়ের স্বাস্থ্য উপকারিতা-

১) যারা মনে করেন মিষ্টিজাতীয় খাবার খেলেই ওজন বাড়ে তারা কোনও চিন্তাভাবনা ছাড়াই খেতে পারেন গুড়। কারণ এটি খেলে ওজন বাড়ার কোনও সম্ভাবনা তো নেই-ই, উপরন্তু গুড়ে থাকা পটাসিয়াম ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

২) গুড় খেলে এনার্জি পাবেন চটজলদি।

৩) ঠাণ্ডা লাগা কিংবা সর্দিতে কুসুম গরম পানিতে গুঁড় মিশিয়ে পান করতে পারেন। গরম চায়ের সঙ্গে মিশিয়ে পান করলেও উপকার পাবেন।

৪) কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে গুড়।

৫) লিভার থেকে দূষিত পদার্থ বের করে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে গুড়।

৬) গরম কালে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে গুড়ের শরবতের বিকল্প নেই।

৭) নিয়মিত গুড় খেলে রক্তশূন্যতায় ভুগবেন না।

৮) গুড়ে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও মিনারেল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়া রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়াতেও সাহায্য করে এটি।

৯) গুড়ে রয়েছে পটাসিয়াম ও সোডিয়াম যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

674c385bff79c9fe318a181d578ce3fa-58490c6fa7443স্বাস্থ্য ও জীবন: আবহাওয়া পরিবর্তনের এই সময় হুট করে গলা ব্যথা ও কাশি শুরু হয়ে যায় প্রায়ই। ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, দূষণ, অ্যালার্জি ইনফেকশনসহ নানান কারণে গলা ব্যথা ও খুসখুসে কাশি হতে পারে। এ সময় কিছুটা সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি। ঠাণ্ডাজাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকার পাশাপাশি গার্গল করতে পারেন। ১ গ্লাস কুসুম গরম পানিতে ১ চা চামচ লবণ মিশিয়ে গার্গল করুন। গলা ব্যথা কমানোর মহৌষধ এটি। সমস্যা বেড়ে গেলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন দ্রুত।

প্রাথমিক অবস্থায় প্রাকৃতিকভাবে গলা ব্যথা ও খুসখুসে কাশি দূর করতে কিছু ভেষজ উপাদানও সাহায্য করে। জেনে নিন সেগুলো কী কী-

রসুন
রসুনের অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিসেপটিক উপাদান প্রাকৃতিকভাবে ঠাণ্ডাজনিত গলা ব্যথা ও অসস্থি দূর করতে পারে। কাঁচা অথবা রান্না করে খেতে পারেন রসুন।

আপেল সিডার ভিনেগার
১ গ্লাস কুসুম গরম পানিতে ১ টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার, কয়েক ফোঁটা লেবুর রস ও ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে দিনে দুইবার পান করুন। গলা ব্যথা ও খুসখুসে ভাব কমে যাবে।

লেবু
১ গ্লাস কুসুম গরম পানি নিন। একটি লেবুর রস মেশান এতে। ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে ভালো করে নেড়ে পান করুন সকালে। কমে যাবে গলা ব্যথা।

মধু
আদিকাল থেকেই ঠাণ্ডা লাগার প্রাকৃতিক প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে মধু। ২ টেবিল চামচ মধু ১ কাপ কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে কয়েকবার পান করুন দিনে। ঘুমানোর আগে ১ চা চামচ মধু খেলেও উপকার পাবেন।

দারুচিনি
১ চা চামচ মধুর সঙ্গে কয়েক ফোঁটা দারুচিনির তেল মেশান। এটি দিনে দুইবার খান। দ্রুত মুক্তি পাবেন গলা ব্যথা ও ঠাণ্ডাজনিত অস্বস্তি থেকে।

হলুদ
১ গ্লাস কুসুম গরম পানিতে সামান্য হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে পান করুন। দূর হবে গলা ব্যথা।

লবঙ্গ
গলা ব্যথা ও ঠাণ্ডা লাগায় স্বস্তি পেতে দুটি লবঙ্গ চিবিয়ে খান।

আদা
পানি গরম করে কয়েক টুকরা আদা দিন। ১০ মিনিট ফুটান এটি। ছেঁকে পানিটুকু পান করুন দিনে দুইবার। স্বাদ বেশি ঝাঁঝালো হলে ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে নিতে পারেন। কমে যাবে গলা ব্যথার সমস্যা।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

bda2739b59e224ddabaf81adaa811b6c-584ea62dbcea1অনলাইন ডেস্ক: বলিউডে অন্যতম সফল পরিচালক-অভিনেত্রী জুটির কথা যদি বলতে তাহলে নিশ্চিতভাবেই ওঠে আসবে সঞ্জয় লীলা বানসালি ও ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনের নাম। যখনি এই দুজন জুটিবদ্ধ হয়েছেন বলিউড বিখ্যাত কিছু পেয়েছে। এবার জানা গেছে, ঐশ্বরিয়াকে নিয়ে বড় ধরনের পরিকল্পনা করছেন বানসালি।
সাবেক বিশ্বসুন্দরী ঐশ্বরিয়ার সেরা অভিনয় বের করে আসার ক্ষেত্রে বানসালির জুড়ি নেই। হাম দিল দে চুকে সানাম কিংবা দেবদাস-এ বলিউডপ্রেমীরা অন্য এক অ্যাশকে দেখেছেন। দীর্ঘ বিরতির পর যখন অ্যাশ পুনরায় অভিনয়ে ফিরেছেন তখন তার ভক্ত-সমর্থকরা উদগ্রীব সঞ্জয়ের সঙ্গে তার জুটি দেখতে।

কিছুদিন ধরেই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল বানসালির ‘পদ্মাবতী’তে একটি বিশেষ গানে উপস্থিত হবেন বচ্চন বধূ। তবে এখন জানা গেলো, তা আসলেই গুঞ্জন ছাড়া কিছু ছিল না।

বলিউড লাইফ এ দুই তারকার ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, সম্প্রতি তারা দেখা করেছেন। ঐশ্বরিয়াকে বলিউডে নিজের একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে ভাবেন বানসালি। ‘পদ্মাবতী’তে অভিনয় নিয়ে তাদের মধ্যে কোনও কথা হয়নি। ‘পদ্মাবতী’র প্রধান তিনটি চরিত্রে অভিনয় করছেন দীপিকা পাড়ুকোন, রণবীর সিং, শহিদ কাপুর। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করছেন অদিতি রাও। ফলে ছবিটিতে তৃতীয় কোনও নারী চরিত্র নাই যেখানে ঐশ্বরিয়াকে নিয়ে আসার সুযোগ আছে।

ওই সূত্র আরও জানায়, বানসালি নতুন একটি ছবিতে ঐশ্বরিয়াকে নিয়ে কাজের কথা ভাবছেন। যা কাশ্মিরভিত্তিক একটি প্রেমের কাহিনি ঘিরে নির্মিত হবে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

f110787389751aafbdfeafeda548136e-584fab2f094d0অনলাইন ডেস্ক: ২০১৭ শিক্ষাবর্ষে সারাদেশের ৩১৬টি সরকারি মাধ্যমিক স্কুলে থাকা ৬৭ হাজার ৩৯টি আসনের বিপরীতে ভর্তির আবেদন জমা পড়েছে ৩ লাখ ২৮ হাজার ১৮৬ টি। ফলে ৩ লাখ ২১ হাজার ৪৪৭ জন শিক্ষার্থী অর্থাৎ মোট আবেদনের ৭৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ শিক্ষার্থী সরকারি মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি হতে পারবে না। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সরকারি স্কুলের ভর্তির আবেদনপত্র ছাড়া হয় ১ ডিসেম্বর রাত ১২টা ১ মিনিটে। আর শেষ হয় ১২ ডিসেম্বর সোমবার রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে।

অনলাইন ডেস্ক: সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, রাজধানী বাদে সারাদেশের সরকারি স্কুলে ৫৬ হাজার ৪৪৪টি আসনের বিপরীতে আবেদন জমা পড়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার ৮৮২টি। এ হিসেব অনুযায়ী প্রতি আসনের বিপরীতে প্রায় ৫ জন শিক্ষার্থী।

আর রাজধানীর ৩৮ সরকারি স্কুলে ১০ হাজার ৫৯৫টি আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে ৭১ হাজার ৩০৪টি। এ অনুযায়ী, প্রতি আসনের বিপরীতে ৭ জন শিক্ষার্থী। ফলে ভর্তি যুদ্ধ তীব্র আকার ধারণ করেছে।

মঙ্গলবার মাউশির পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক মো. এলিয়াছ হোসেন বলেন, ‘সারা দেশের ৩৩৫টি সরকারি হাইস্কুলের মধ্যে এবছর ৩১৬টি স্কুল অনলাইনে ভর্তি কার্যক্রমের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ, ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় বাকি ১৯টি স্কুল অনলাইন আবেদনের বাইরে রয়েছে। সেগুলোতে ম্যানুয়ালি ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। স্বচ্ছভাবে ভর্তি পরীক্ষা ও লটারি সম্পন্ন করতে মঙ্গলবার সভা করে মনিটরিং টিম গঠন করা হবে। তার ভর্তি কার্যক্রম মনিটরিং করবে।’

২০১৬ শিক্ষাবর্ষে সারা দেশের ১৭৫টি সরকারি হাইস্কুলে অনলাইনের মাধ্যমে ভর্তি আবেদনের আাওতায় আনা হয়। রাজধানীর স্কুলে ১০ হাজার আসনের বিপরীতে প্রায় ৭৫ হাজার আবেদন জমা পড়েছিল।

মাউশি অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয়-নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য লটারির মাধ্যমে ভর্তি করানো হবে। আর ভর্তি প্রক্রিয়া স্বচ্ছতার সঙ্গে শেষ করতে মাউশি পৃথক মনিটরিং টিম গঠন করবে।

রাজধানীর ৩৮টি সরকারি হাইস্কুলকে গত বছরের মতো ‘ক’, ‘খ’ ও ‘গ’ এই তিন গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। এরমধ্যে ৩টি স্কুলে ফিডার শাখা রয়েছে। প্রতিটি ভাগের যে কোনও একটি স্কুলে আবেদন করা যাবে।

‘ক’ গ্রুপের ১৩টি স্কুলের ৩ হাজার ৯৯১টি আসনের বিপরীতে ২১ হাজার ৮৩০ টি, খ’ গ্রুপের ১৩টি স্কুলের ২ হাজার ৯৬৯টি আসনের বিপরীতে ২৬ হাজার ৫৬৭টি ও ‘গ’ গ্রুপের ১২টি স্কুলের ৩ হাজার ৬৩৫টি আসনের বিপরীতে ২২ হাজার ৯০৭টি আবেদন জমা পড়েছে।

ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী, এবারও সরকারি হাইস্কুলে মোট আসনের ৫৯ শতাংশ কোটায় ভর্তি করা হবে। এগুলো হচ্ছে, স্কুল এলাকা কোটা ৪০ শতাংশ, সরকারি প্রাইমারি স্কুল, মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারী কোটা। কোটার বাইরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সরকারি হাইস্কুলে পড়ার জন্য  কঠিন লড়াই করতে হবে।

ঢাকার বাহিরের স্কুলের ভর্তি পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ভর্তি কমিটি তারিখ নির্ধারণ করবে।

পরীক্ষার বিষয় ও মানবণ্টন: দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির জন্য বাংলা ১৫, ইংরেজি ১৫ ও ২০ নম্বরের গণিত মোট  ৫০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে। পরীক্ষার সময় এক ঘণ্টা।

চতুর্থ-অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য বাংলা ৩০, ইংরেজি ৩০ ও ৪০ নম্বরের গণিত মোট ১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে। সময় নির্ধারণ করা হয়েছে দুই ঘণ্টা।

জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে নবম শ্রেণিতে ভর্তি করা হবে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

66abcd91560819b4112f166aeb83eae8-584ed7a41dee9ন্যাশনাল ডেস্ক: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল উচ্ছেদের ঘটনার এক মাস পেরিয়ে গেছে। অথচ এখনও উত্তরাঞ্চলে জেঁকে বসা শীতের মধ্যে  খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন সাঁওতালরা। সাপমারা ইউনিয়নের জয়পুরপাড়া ও মাদারপুর গ্রামের গির্জার সামনে আশ্রয় নেওয়া ৪০০ শতাধিক সাঁওতাল পরিবার কোনও রকমে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন। অনেকে আশপাশের গ্রাম ও পরিত্যক্ত স্কুল ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশ সদস্যরাই আগুন দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন সাঁওতালরা। গণমাধ্যমে পুলিশের আগুন দেওয়ার একটি ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে। ফলে এ ঘটনার দায়িত্বে থাকা পুলিশের তদন্ত নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সাঁওতাল, আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মীরা নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবিও তুলেছেন।

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের রংপুর চিনিকলের সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারে গত ৬ নভেম্বর আখ কাটাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের সংঘর্ষ, বসতঘর আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে তিনজন সাঁওতাল মারা যান, গুলিবিদ্ধ হন চারজন। নয় পুলিশ সদস্য তীরবিদ্ধ হন। এছাড়া উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন।
https://www.youtube.com/watch?v=UvtsSAoeUA8
হামলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় কমিশন চেয়ে গত ২১ নভেম্বর দ্বিতীয় রিট করেন আহত দ্বিজেন টুডোর স্ত্রী অলিভিয়া হেমব্রম ও গণেশ মুরমোর স্ত্রী রুমিলা কিসকুর পক্ষে ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। এ রিটের শুনানি নিয়ে পরদিন ২২ নভেম্বর সাঁওতালদের ওপর হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, গুলি ও হত্যা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি ওই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।

স্বরাষ্ট্র সচিব, শিল্প সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক, পুলিশের রংপুর রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক, গাইবান্ধার পুলিশ সুপার, গোবিন্দগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবং মহিমাগঞ্জ সুগার মিলের ম্যানেজারকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া বলেন, ‘শুরু থেকেই আমরা বলছি পুলিশ দায়ী। আমাদের কাছে ভিডিও বা ছবি ছিল না। কিন্তু আমাদের পিটিশনে বলেছি জুডিশিয়াল ইনকোয়ারি করার জন্য। গণমাধ্যমে দেখলাম ভিডিও প্রকাশ হয়েছে। আমরা আগামী বুধবার কোর্টে এ ভিডিও উপস্থাপন করার চেষ্টা করবো। আশা করছি, জুডিশিয়াল ইনকোয়ারি কমিটির অর্ডার পাবো।’

পুলিশ আগুন লাগানোয় জড়িত থাকলে তদন্ত কতটা সুষ্ঠু হবে এমন প্রশ্নের জবাবে জ্যোর্তিময় বড়ুয়া বলেন, ‘সেটা আমরাও সন্দেহ করছি। যদি এটা বিচার বিভাগীয় তদন্ত হয়, তাহলে অন্ততপক্ষে একটা স্বস্তির জায়গা হলো যে বিচারকরা তদন্ত করবেন। পুলিশ তো নিজের বিরুদ্ধে  তদন্ত করবে না। বাংলাদেশে এমন নজির নেই যে পুলিশ পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্ত করে রিপোর্ট দিয়েছে যে তারা জড়িত।’

তিনি আরও বলেন, ‘ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে বা ঘটনা ছোট হলে হয়তো কিছু উদাহরণ আছে। বড় ধরণের ঘটনার ক্ষেত্রে পুলিশ পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্ত করে রিপোর্ট দেবে না। এ কারণে আমরা কোর্টে বলেছি, সত্যিকার বিচার হবে না। বিচারের বিষয়টি ভীষণ রাজনৈতিক। যদি ক্ষমতাসীন দল মনে করে বিচার করবে, কেবল তখনই বিচার করতে পারবে। বিভিন্ন রকম প্রভাব বিস্তার বা সমস্যা তৈরির ফলে বিচার হতে পারে না। জুডিশিয়াল ইনকোয়ারি অনেক হয়েছে বাংলাদেশে, অনেক ক্ষেত্রে সে সব রিপোর্ট  প্রকাশ হয়নি। আমরা চাই এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত হোক। আসামী কারা, কারা এ ঘটনায় জড়িত ছিল সেটা চিহ্নিত করাও জরুরি।’

গত ২৮ নভেম্বর প্রশাসনিক তদন্ত কমিটির ২৪ পাতার প্রতিবেদন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দেন গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সামাদ। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, সকাল সাড়ে ১০টায় চিনিকলের আখ মাড়াই কর্মসূচি উপলক্ষে কাটা-ফাঁসিতলা এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল পুলিশ। বেলা সাড়ে ১১টায় শ্যামল হেমব্রমসহ আরও অজ্ঞাতনামা তিন থেকে চারশ ‘বেআইনি জনতার’ একটি ‘সংঘবদ্ধ আদিবাসী ও বাঙালি দুষ্কৃতিকারী দল’ পুলিশ ও চিনিকলের লোকজনের ওপর হামলা চালায়। এ সময় নয় জন পুলিশ সদস্য ও তিন জন সাধারণ জনগণসহ ১২ জন তীরবিদ্ধ হয়। তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে প্রথমে লাঠিচার্জ ও পরে ১০টি সাউন্ড গ্রেনেড, ৫টি গ্যাস শেল, ৪০ রাউন্ড বেডবল, ৩৫ রাউন্ড রাবার বুলেট, ১২ রাউন্ড চায়না রাইফেলের গুলি ফায়ার করায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে বিকেল পাঁচটার সময় বাগদা ফার্ম এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চার জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ অফিসার ও ফোর্স গেলে পাঁচ থেকে ছয়শ উচ্ছৃঙ্খল আদিবাসী ও ‘বাঙালি দুষ্কৃতকারী’ একত্রিত হয়ে চারদিক থেকে তীর-ধনুক নিয়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ করে। এ পরিস্থিতিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে ‘অবৈধ জনতাকে’ ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ ফোর্স বিভিন্ন পর্যায়ে ৫০ রাউন্ড গ্যাস সেল, ২২ রাউন্ড বেডবল, ২৬ রাউন্ড রাবার বুলেট, ৪৭৭টি শটগানের গুলি, ৪১ রাউন্ড এসএমজি এবং চায়না রাইফেলের ২০৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে। ফলে উচ্ছৃঙ্খল আদিবাসী পিছু হটে যায়। পরে আদিবাসী ও উচ্ছৃঙ্খল জনতার কার্যকলাপে ক্ষুদ্ধ হয়ে এলাকাবাসী অবৈধ স্থাপনায় আগুন ধরিয়ে দেয়।

রংপুর চিনিকলের জমি নিয়ে সাঁওতালদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর জেলা প্রশাসনের গঠন করা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে স্থানীয় সাপমারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ছাত্রলীগ সভাপতি শাকিল আকন্দ বুলবুলকে মূল হোতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিবেদনের মূল অংশে রংপুর চিনিকলের জমি নিয়ে এ পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য দায়ী করা হয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিবকেও। ঘটনার কয়েক মাস আগেই পুরো পরিস্থিতি জানানো হয়েছিল তাকে। কিন্তু এ ব্যাপারে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনার দিন (৬ নভেম্বর) পুলিশ-ম্যজিস্ট্রেটের ওপর হামলা করা হয়েছে রংপুর চিনিকলের সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি শাহজাহান আলী প্রধানের হুকুমে। হামলা চালিয়েছে ‘আদিবাসী ও বেআইনি বাঙালি দুষ্কৃতকারী’।

তদন্ত প্রতিবেদনের মূল অংশে বলা হয়, গত ১২ জুলাই (ঘটনার প্রায় চার মাস আগে) আখ খামারে উচ্ছেদ অভিযানে গেলে ক্ষুদ্ধ হয়ে সাহেবগঞ্জ খামারের অফিস চত্বরে প্রবেশ করে সাঁওতালরা। পুলিশ টিয়ারসেল, রাবার বুলেট নিক্ষেপ করলে ওই স্থান ত্যাগ করে তারা। সাঁওতালরা তিন লাখ টাকার মালামালও লুট করে, এমন অভিযোগ আসে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে।

সোমবার (১২ ডিসেম্বর) গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের জমি থেকে সাঁওতালদের উচ্ছেদের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ও ইউএনডিপির একটি প্রতিনিধি দল। তারা ক্ষতিগ্রস্ত মাদারপুর ও জয়পুরপাড়া সাঁওতাল পল্লী ঘুরে দেখেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত সাঁওতালদের সঙ্গে কথা বলেন।

সেখানে এক সমাবেশে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে সাঁওতালদের সম্পত্তি রক্ষা করার অধিকার রয়েছে। কিন্তু তাদের ওপর হামলা, ঘরবাড়িতে আগুন ও গুলি চালিয়ে হত্যার ঘটনা খুবই অন্যায় ও ন্যক্কারজনক যা সহজে মেনে নেওয়া যায় না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাঁওতালদের অধিগ্রহণ করা জমি চিনিকল কর্তৃপক্ষ শর্ত ভঙ্গ করে অনেকের নামে লিজ দিয়েছেন। তারা যদি জমি লিজ গ্রহণ করতে পারেন, তবে সেই জমি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাঁওতালরা কেন পাবেন না? সাঁওতালদের ওপর হামলা ও উচ্ছেদের ঘটনায় সরেজমিন তদন্ত করে আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত সঠিক তদন্ত প্রতিবেদন সরকার ও সংসদীয় কমিটির কাছে উপস্থাপন করা হবে।’

সাঁওতালদের উদ্দেশে কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘বাপ-দাদার জমি থেকে আপনাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। এখন আপনারা সকলে জীবন ও জানমালের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এখনও জীবন রক্ষার্থে সঙ্গে তীর-ধনুক ও লাঠি হাতে পাহারা দিচ্ছেন। তবে আপনারা আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। যারা আইন হাতে তুলে নিয়ে একটি ঘটনা ঘটিয়ে আপনাদের উচ্ছেদ করেছে, তাদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।’

সাঁওতালদের জান-মাল রক্ষা,  নিরাপত্তা,  ক্ষতিপূরণ ও স্বাধীনভাবে চলাফেরার সুযোগ দিতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে গত ১৬ নভেম্বর আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) ও ব্রতী সমাজ কল্যাণ সংস্থার পক্ষ থেকে প্রথম রিটটি দায়ের করা হয়েছিল।

এ প্রসঙ্গে  আইন ও সালিশ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক নূর খান বলেন, ‘এ ঘটনার তদন্ত নিরপেক্ষ করার স্বার্থে খুব স্বাভাবিকভাবেই আমরা চাইবো বিচার বিভাগীয় তদন্ত হোক। তবে মনে রাখতে হবে,  মামলার ব্যাপারে বিচার বিভাগীয় তদন্ত সর্বশেষ তদন্ত না। মূল ঘটনা উদঘাটনের জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানাবো। ইতোমধ্যে হাইকোর্ট জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারকে তলব করেছে। যে খবর আজকে প্রকাশিত হয়েছে, আমরা সেটা আদালতের দৃষ্টিতে আনবো। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করবো। কিন্তু এ মামলার তদন্ত  আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেই করতে হবে।’

তদন্ত  প্রক্রিয়া  প্রসঙ্গে  জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি  রবীন্দ্রনাথ  সরেন  বলেন, ‘পুলিশের কোনও ভূমিকা নেই। পুলিশ বরং যারা নিরীহ মানুষ, যারা এ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত না তাদের গ্রেফতার করছে।  সাঁওতালদের গ্রামে উত্তেজনা তৈরি করছে, গ্রামে ঘনঘন যাচ্ছে, ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আসল কাজ তো তারা (পুলিশ) করছে না।  সাঁওতালদের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনার মূল হোতাদের কাউকেই গ্রেফতার করা হয়নি। পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক, একেবারেই সাঁওতালদের বিপক্ষে। এ ঘটনার জন্য পুলিশ দায়ী। বিচারের জন্য আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত রাখবো। থানায়  মামলাও করা হয়েছে।’

অন্যদিকে গোবিন্দগঞ্জ এলাকার পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক বলে দাবি করছেন গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত সরকার। অভিযান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সেদিন থানা পুলিশ,  জেলা পুলিশ,  র‌্যাব সকলের অংশগ্রহণে অভিযান হয়েছিল। আগুন নেভানোর জন্য দমকল বাহিনীকে খবর দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তারা আসার আগেই সব পুড়ে যায়।’ পুলিশ সদস্যরা আগুন দিয়েছে এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে সুব্রত সরকার বলেন,  ‘পুলিশ আগুন দেওয়ার কোনও সত্যতা পাওয়া যায়নি।’

মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সাইন্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আশরাফুল আলম বলেন, ‘আমাদের দেশে সাধারণত মামলার তদন্ত করে পুলিশ। যদি কোনও ঘটনায় কোনও সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে, তবে তদন্তের ক্ষেত্রে তারা না থাকাই ভালো। এ ক্ষেত্রে সরকারের  বিচার বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগের সমন্বয়ে তদন্ত হতে পারে। বিচার বিভাগীয় তদন্তও হতে পারে।’

গত রোববার (১১ ডিসেম্বর) আইনমন্ত্রী আনিসুল হক  সাংবাদিকদের বলেন, ‘নাসিরনগর ও গোবিন্দগঞ্জের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এসব ঘটনায় যারা লিপ্ত ছিলেন, তাদেরকে অবশ্যই বিচারের কাঠগড়ায় আনা হবে। তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেওয়ার জন্য যা যা করতে হয় তাই করা হবে। তাদেরকে শাস্তি দেওয়া হলে তা উদাহরণ হিসেবেও থাকবে।’

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

0ce150924e5553ff795630c9d994492a-584ee04925f86মানবিকতা ডেস্ক: মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সেনাবাহিনীর অভিযান শুরুর পর গত দুই মাসে প্রায় ২১ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় চেয়েছেন। জাতিসংঘ জানিয়েছে, রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রে যা ঘটছে তা মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করতে আমাদের একমত হওয়া উচিত। সোমবার এ নিয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ প্রভাবশালী সাময়িকী টাইম। প্রতিবেদনটির গুরুত্বপূর্ণ অংশ এখানে তুলে ধরা হলো-

নাফ নদী যদি কথা বলতে পারত, তাহলে কোন দুঃখের কথা প্রথমে বলত?
বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে আলাদা করা ছোট্ট পানির বয়ে চলার পথ নাফ। পশ্চিম তীরে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, পূর্বপাশে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্য, যা রাখাইন বলেও পরিচিত। এ রাজ্যে বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারের মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বাস। যারা গত কয়েক বছর ধরে রাষ্ট্র ও বন্ধুহীন এবং ভুলে যাওয়া জনগোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে।

নাফ নদী যদি কথা বলতে পারত এবং তাদের দুর্দশার কথাগুলো মনে রাখতে পারত তাহলে ২৫ বছরের রোহিঙ্গা নারী আরাফার কথা বলত। যিনি নভেম্বরে ৫ সন্তান নিয়ে নাফের পানিতে ভেসেছিলেন। আরাফার ৬টি সন্তান ছিল। নাফ নদীর তীরে বাংলাদেশের অঞ্চলে একটি অস্থায়ী কুঠিরে বসে যখন আরাফা কথা বলছিলেন তাকে ঘিরে ছিল ছেলে ও তার কিশোরী মেয়ে। আরাফা যখন তার দ্বিতীয় ছেলে কপালে কি ঘটেছে তা বর্ণনা করছিলেন তখন তার মেয়েরা মায়ের পেছনে মুখ লুকাতে চেষ্টা করছিল কিংবা বারবার বাইরে যাচ্ছিল আর আসছিল।

আরাফার দ্বিতীয় ছেলের বয়স ছিল ৮ বছর। ২২ নভেম্বরের কোনও এক সময় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তাদের গ্রাম আক্রমণ করে। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে অবৈধ অভিবাসী মনে করা হয় এবং দেশটিতে তাদের কোনও ভোটাধিকার নেই। রোহিঙ্গারা দীর্ঘদিন ধরেই বৌদ্ধদের নিপীড়ন ও সহিংসতার শিকার হয়ে আসছে। সর্বশেষ ২০১২ সালে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে এ অঞ্চলে। আরাকানের বৌদ্ধদের সঙ্গে রোহিঙ্গা মুসলিমদের সংঘাতে প্রায় সোয়া লাখ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। মানবাধিকার সংগঠনগুলো ওই সময় অভিযোগ করেছিল, সেনা সদস্যরা সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার সময় তা দমনে কোনও ভূমিকা রাখেনি।

তবে এবারের সেনাবাহিনীর হামলার আগের চেয়ে ভিন্ন ছিল বলে মনে আরাফা। এবার সেনা সদস্যরা রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদে ও শাস্তি দিতে অনেক বেশি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তাদের অস্ত্র ছিল আগুন।

আরাফা জানান, সেনারা তাদের গ্রামে আগুন লাগিয়ে দেয়। আগুনের লেলিহান শিখা যখন পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ছিল তখন কোনওমতে তিনি ৬ সন্তানকে নিয়ে বের হতে পারেন। এ সময় তারা এক সেনা সদস্যের সামনে পড়ে যান। ওই সেনা ৮ বছরের ছেলেকে কেড়ে নিয়ে তার ভাই ও বোনের কাছ থেকে আলাদা করে ফেলে এবং অগ্নিকুণ্ডে তাকে নিক্ষেপ করে।

আতঙ্কের মধ্যে আরাফা স্বামীকে হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু তার ফিরে যাওয়ার সুযোগ ছিল না। স্বামীকে ফেলে রেখে সন্তানদের নিয়ে কাঁদতে কাঁদে তাকে ছুটতে হয়। বলেন, সন্তানদের তো বাঁচাতে হবে। আমাদের পালাতে (মিয়ানমার ছেড়ে) পালাতে হতো। তারা (সেনাবাহিনী) সবকিছু পুড়িয়ে দেয়।

এরপর দুই দিন আরাফা ও তার সন্তানদের মিয়ানমার অংশে নদীর তীরে বনে লুকিয়ে থাকতে হয়েছে। সব সময় শুয়ে বা নিচু হয়ে থাকতে হয়েছে যাতে করে সেনারা তাদের দেখতে না পায়। এরপর একটি নৌকায় উঠে নাফ নদীতে আসেন।

আরাফা ও তার সন্তান শুধু নয়। গত দুই মাসে প্রায় ২১ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযান শুরুর পর রোহিঙ্গারা পালাতে থাকেন। শরণার্থীদের বিবরণ, মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সংগ্রহীত স্যাটেলাইট ছবি এবং ফাঁস হওয়া ছবি ও ভিডিওতে  আরাকানে কয়েক লাখ মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপর নৃশংস তাণ্ডবের চিত্র পাওয়া যায়।

সর্বশেষ সংকটের শুরু হয় অক্টোবরের শুরুতে। ওই সময় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর তিনটি চৌকিতে হামলা চালায় ইসলামি জঙ্গিরা। হামলায় ৯ পুলিশ সদস্য নিহত হয়। সরকারের দাবি, হামলাকারীরা ছিলো জঙ্গি গোষ্ঠী আকা মুল মুজাহিদিন। মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে হামলায় রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও)-কে দায়ী করা হয়। আরএসও দীর্ঘদিন ধরেই বিলুপ্ত বলে মনে করা হয়। আরএসও-র সক্রিয়তার বিষয়টি শুধু সরকারি ভাষ্যে প্রকাশিত হয়।

এ হামলার জের ধরে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’ শুরু করে। মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এ অপারেশনকে সমষ্টিগত শাস্তি হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। যাতে পুরো জাতির বিরুদ্ধে সহিংসতা চালানো হচ্ছে। রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি মিয়ানমারের সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগও আছে। বিচারবহির্ভূতভাবে রোহিঙ্গা মুসলিমদের হত্যাও করা হচ্ছে।  রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে অগ্নিসংযোগের কাজে হেলিকপ্টার গানশিপ ব্যবহার করা হচ্ছে।

আরেক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রকাশিত স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা গেছে, ১০-১৮ নভেম্বরের মধ্যে ৫টি রোহিঙ্গা গ্রামে ৮ শতাধিক ভবন ধ্বংস করা হয়েছে। তার আগে আরেকটি উচ্চ রেজ্যুলেশনের ছবিতে দেখা গেছে, ২২ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত তিনটি গ্রামের ৪ শতাধিক বাড়ির ধ্বংস করা হয়েছে। বাস্তবে ধ্বংস হওয়া বাড়ি ও ভবনের সংখ্যা আরও অনেক বেশি হবে বলে মানবাধিকার সংগঠনটির দাবি।

ছবিগুলোর সত্যতা নিশ্চিত করা অসম্ভব কারণ মিয়ানমার পুরো এলাকায় কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। তবে বিভিন্ন সূত্রে খবর পাওয়া যাচ্ছে যে, পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দূত ইয়াংগি লি মনে করেন, পরিস্থিতি যে খারাপের দিকে যাচ্ছে তাতে সেখানে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে বলে আমাদের একমত হওয়া উচিত।

টাইম সাময়িকীকে তিনি বলেন, দেশের ভেতরে ও প্রতিবেশী অঞ্চল থেকে আমি যেসব খবর পাচ্ছি তার সঙ্গে সরকারি ভাষ্যের সামঞ্জস্য নেই। আমরা বেশ কিছু ছবি ও ভিডিও দেখছি যাতে পরিস্থিতি অনেক খারাপ বলে মনে হচ্ছে। তিনিও স্বীকার করেন ছবি ও ভিডিওগুলোর সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আরও বলেন, আমরাও ধর্ষণ ও যৌন সহিংতার খবর পাচ্ছি। ছোট ছোট বাচ্চাদের লাশও উন্মুক্ত অবস্থায় পাওয়া যাচ্ছে।

লি বলেন, এ পর্যন্ত কতজন মানুষ নিহত হয়েছেন সে সংখ্যা আমরা নিশ্চিত করতে পারছি না। হয়ত অনেকেই লুকিয়ে আছেন। নভেম্বরের শুরুতে সহিংসতা কবলিত এলাকায় সরকারিভাবে বিদেশি রাষ্ট্রদূত ও জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের সফরের বিষয় নিয়েও নিজের অসন্তুষ্টির কথা প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, এই সফর নিয়ে কারও সন্তুষ্ট হওয়া উচিত নয়। এটা ছিলো একটি নির্দেশিত সফর। কঠোর নিরাপত্তা থাকলেও লোকজন ঘর থেকে বের হয়ে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। এরপর তাদের শাস্তি দেওয়ার কথাও শুনেছি আমরা। তাদেরকে খুঁজে বের করা হয়েছে।

৯ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সসহ ১৪ টি দূতাবাস আরাকানের উত্তরাঞ্চলে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর যাতায়াতের পূর্ণ সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানায়। দূতাবাসগুলোর বিবৃতিতে গত দুই মাসে শিশুদের পুষ্টিহীনতা ও মানবিক সহযোগিতা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করা হয়।

মিয়ানমার আনুষ্ঠানিকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। স্থানীয় এক রাজনীতিক ও অক্টোবরে সীমান্তে হামলার তদন্তের দায়িত্বে থাকা আং উইনকে বিবিসির পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের ধর্ষণের বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তিনি তখন বিবিসির ক্যামেরার দিকে সহজভাবে কথাই বলতে পারেননি। মুখ ভেঙছিয়ে তিনি দাবি করেন, রোহিঙ্গা নারীদের সেনা ধর্ষণ করবে না কারণ তারা খুব নোংরা, নিম্নমানের ও অস্বাস্থ্যকর জীবন-যাপন করে। তারা আকর্ষণীয় নয়। তাই তাদের প্রতি স্থানীয় বৌদ্ধ কিংবা সেনারা আগ্রহী হবে না।

তাছাড়া, দেশটির শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা সিনিয়র জেনারেল মিং আং হায়াং রোহিঙ্গাদেরই দায়ী করেছেন। রোহিঙ্গাদের বাঙালি আখ্যায়িত করে তিনি দাবি করেছেন নাফ নদীর ওপর পাশে বাংলাদেশই তাদের ঠিকানা। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি আরও দাবি করেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী কখনও রোহিঙ্গাদের অগ্নিসংযোগ, হত্যা ও ধর্ষণের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘন করেনি।

এ বিষয়ে জাতিসংঘের দূত বলেন, এটা মিয়ানমারের পক্ষ থেকে সেই পুরনো অবস্থান। যাতে তারা দাবি করে, রোহিঙ্গারা নিজেরাই নিজেদের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে।

নাফ নদীর বাংলাদেশি অংশ পরিদর্শন করা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক গবেষক পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তারা যাদের সঙ্গেই কথা বলেছেন সবাই বলেছে সেনাবাহিনীই অগ্নিসংযোগ করেছে।

রাজনৈতিক প্রভাবের জটিলতায় সেনাবাহিনীর বিরোধিতা করতে পারছেন না দেশটির নেতা আং সান সু চি।  টাইম সাময়িকীতে কাজ করা ফ্রান্সিস ওয়েড জানান, সেনাবাহিনীর সমালোচনা সুচি করতে চান না। কারন এতে করে তিনি ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা করতে পারবেন না। তিনি বলেন, যদি সেনাবাহিনী মনে করে বেসামরিক সরকারের কাছে তারা কর্তৃত্ব হারাচ্ছে তাহলে তারা আবারও ক্ষমতা নিজেদের নিতে পারার চেষ্টা করবে। এ রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে শান্তিতে নোবেল জয়ী সুচির নিরবতায় সমালোচনা হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে।

নভেম্বরে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ৩০ বছরের রোহিঙ্গা ইউনুস বলেন, মিয়ানমারের মুসলিমদের রক্ষায় এখনও পর্যন্ত কিছুই করেননি সুচি। আমরা মনে করেছিলাম কিছু পরিবর্তন হবে। কিন্তু সুচি আর সবার মতোই।

রোহিঙ্গাদের জন্য তাদের সংকট শুধু মিয়ানমারের পক্ষ থেকে নয়। ইউসুফ, আরাফা ও তাদের মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর চোখ এড়িয়ে পালিয়ে আসলেও তাদের পড়তে হয় বাংলাদেশি সীমান্তরক্ষীদের সামনে। সংঘাত শুরুর পর থেকেই মিয়ানমার সীমান্তে টহল জোরদার করেছে বাংলাদেশ। অনেক শরণার্থীই নৌকাডুবিতে নিখোঁজ হয়েছেন।

রোহিঙ্গারা এবারই প্রথম বাংলাদেশে আশ্রয় চাইছে না। গত কয়েক দশক ধরে সহিংসতায় বাংলাদেশে প্রায় ৫০ লাখ অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন। সীমান্তে শরণার্থী শিবিরে ৩০ হাজার নিবন্ধিত রয়েছেন বাংলাদেশ। এখন বাংলাদেশ জানিয়েছে, আর আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয়। বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-র উপ- মহাপরিচালক কর্নেল এম.এম. আনিসুর রহমান বলেন, আমার দেশ আমার বাড়ি। যদি আমার বাড়িতে সব মানুষ প্রবেশের চেষ্টা করে, তাহলে কী হবে? আমিতো সবাইকে প্রবেশের অনুমতি দিতে পারি না।

রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের নীতি এখন পুশব্যাক। কর্নেল আনিসুর রহমান বলেন, অবশ্যই আমরা উদ্বিগ্ন। তারা যদি আমাদের কাছে খাবার, পানি ও অপর সহযোগিতা চায় আমরা তা দেব। কিন্তু আমরা তাদের আশ্রয় দিতে পারব না। তিনি জানান, যারা ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে তাদের খুঁজে বের করে আটকের পর ফেরত পাঠানো হবে।

এক দশকেরও বেশি সময় আগে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থী দু দু মিয়া পুরো পরিস্থিতি বুঝাতে গিয়ে বলেন, আমাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই এটা বিশ্বকে বুঝতে হবে। আমাদের কোনও দেশ নাই। মিয়ানমার আমাদের পালাতে বাধা দেয়, বাংলাদেশ আমাদের ঠেলে তাদের কাছে ফেরত পাঠায়। আমাদের শুধুই আছে নাফ এবং নাফ। এবং এখন পর্যন্ত নাফ নিশ্চুপ।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

15423649_1227410950680156_170420426_nস্বাস্থ্য ও জীবন: চিকেন খেতে কে না ভালবাসে। এমন সহজপাচ্য, সুস্বাদু অথচ সহজে রান্না হয়ে যাওয়া মাংস আর কিছু রয়েছে কি? সে কারণেই এত জনপ্রিয় চিকেন। তবে সহজে রান্না হয়ে গেলেও চিকেন সিদ্ধ করার সময় অতিরিক্ত সতর্কতা প্রয়োজন। কারণ গবেষকরা জানাচ্ছেন, আধসিদ্ধ চিকেনে থাকা ব্যাকটেরিয়া শরীরে গেলে তা থেকে প্যারালাইসিস পর্যন্ত হতে পারে!

নিয়মিত আধসিদ্ধ চিকেন খেলে এই ধরনের ব্যাকটেরিয়া থেকে হওয়া গালিয়ান বারে সিন্ড্রোম থেকে অ্যাকিউট নিউরোমাসকুলার প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। চিকেন সহজলভ্য, সহজপাচ্য, ওজন কমাতে সাহায্যকারী, স্বাস্থ্যকর হওয়ার কারণে সারা বিশ্বেই চিকেন খাওয়ার চল যেমন বেশি, তেমনই জনপ্রিয়তাও বেশি। আর তাতেই ক্রমশই বাড়ছে এই রোগের প্রকোপ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির কলেজ অব ভেটেরিনারি মেডিসিনের গবেষক লিন্ডা ম্যানসিফিল্ড জানাচ্ছেন, চিকেন যদি চ়ড়া আঁচে ভাল করে সিদ্ধ না করা হয় তা হলে তাতে ক্যাম্পিলোব্যাকটর জেজুনি ব্যাকটেরিয়া থেকে যেতে পারে। এই মুহূর্তে গালিয়ান বারে সিন্ড্রোম বা জিবিএস সারা বিশ্বে চিকিত্সকদের কাছে অন্যতম চিন্তার বিষয়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

171435eid_mubarak_kalerkantho_picআজ মঙ্গলবার ১২ রবিউল আউয়াল পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.)। আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সা.) এর জন্ম ও ওফাত দিবস। বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়সহ শান্তিকামী প্রত্যেক মানুষের কাছে দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বিশ্বের অন্যান্য স্থানের মতো বাংলাদেশেও যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদায় দিবসটি উদযাপিত হবে। যথাযোগ্য মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন সংগঠন এই দিনটি উদযাপনে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মহানবী (সা.) এর পূর্ণাঙ্গ জীবন নিয়ে আলোচনা, সমাবেশ, মিলাদ মাহফিল, মোনাজাত এবং ধর্মীয় শোভাযাত্রা। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর তাৎপর্য তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ এমপি পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest