সর্বশেষ সংবাদ-
দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপজেলা পুষ্টি কমিটির সভাআত্মসমর্পনকৃত বনদস্যুদের পুনরায় সুন্দরবনে তৎপর হওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধনসাতক্ষীরায় মাত্র ১২০ টাকায় মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে পুলিশে চাকরি পেল ৫৮ তরুণ-তরুণীসাতক্ষীরায় আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে মানববন্ধনসাতক্ষীরায় ৮৯ টি হারানো মোবাইল উদ্ধার করে ফেরত দিল পুলিশআশাশুনিতে মাটি চাপা পড়ে শ্রমিকের মৃত্যুঅবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে যেকোনো `চ্যালেঞ্জ’ নিতে প্রস্তুত নতুন সিইসিসাতক্ষীরা জেলা স্কাউটস’র কমিটি গঠন জেলা প্রশাসক সভাপতি : সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেনআশাশুনির বুধহাটা খেয়াঘাটে বেতনা নদীতে সাঁকো নির্মানকালীগঞ্জে কৃষিজমিতে লবণ পানি ঢুকিয়ে চিংড়ি চাষ বন্ধে উচ্চ আদালতের রায় বাস্তবায়ন বিষয়ক মতবিনিময়

 

পাটকেলঘাটা ডেস্ক : তালা উপজেলায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৮ মাস ১৯ দিনে ৯৮ জনের কাছ থেকে জরিমানা আদায় ও ৪০ জনের সাজা প্রাদান করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। গত ১ জানুয়ারী ২০১৬ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যমত্ম মোট ১ শত ৩৮ জন আসামীকে এ আদেশ দেন তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের আদালত। ১শ ৩৮ জনের মধ্যে ৯৫% আসামী মাদক সংক্রামত্ম বিষয়ে এবং ৫% আসমীকে জুয়া সংক্রামত্ম বিষয়ে গ্রেফতার করে এ সাজা প্রদান ও জরিমানা আদায় করা হয় বলে থানা থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে জানাযায়। এর মধ্যে ৫দিনের সাজা ১ জন,৭ দিনের ১ জন,১০ দিনের ১ জন, ১৫ দিনের ৯ জন, ২০ দিনের ২ জন, ১ মাস ১২ জন, ২ মাস ১ জন, ৬ মাস ৪ জন, ১ বছর ৩ জন, ২ বছর ৬ জন। এছাড়া জরিমানা আদায় করা হয়েছে ৫ জনের কাছ থেকে ১শত টাকা, ৪৬ জনের কাছ থেকে ২শত টাকা, ৭ জনের কাছ থেকে ৫শত টাকা, ৬ জনের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা, ৩ জনের কাছ থেকে ১ হাজার ৫শত টাকা, ১১ জনের কাছ থেকে ২ হাজার টাকা, ৩ জনের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা, ১৬ জনের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা, ১ জনের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

 

কালিগঞ্জ ব্যুরো: কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিনের উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টায় উপজেলা সদরের খানবাহাদুর আহছানউল্লাহ সেতু সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু‘র ম্যুরালের পাদদেশে মৌতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি দুলাল চন্দ্র ঘোষের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আলহাজ্জ্ব শেখ ওয়াহেদুজ্জামান। উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নাজমুল আহসানের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি জিএম মাহাতাব উদ্দীন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল হাকিম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও তারালী ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হোসেন ছোট, কুশলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার শেখ মেহেদী হাসান সুমন, ধলবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সজল মূখার্জি, দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গোবিন্দ মন্ডল, কুশলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম কামরুল হাসান, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী জেবুন্নাহার জেবু, উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নুরুজ্জামান জামু, সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহম্মেদ উজ্জ্বল, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জাহিদ হাসান, উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শাওন আহম্মেদ সোহাগ, উপজেলা তরম্নণ লীগের সভাপতি শেখ শাহজালাল, সাধারণ সম্পাদক গাজী আব্দুস সবুর, বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক শাহআলম, রতনপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মাসুম বিল্যাহ সুজন প্রমুখ। এসময় হাজার হাজার নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে বিক্ষোভ সামাবেশটি বিশাল জনসমাবেশ রুপনেয়। বক্তরা বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পল্লী বিদ্যুত সমিতির পরিচালক রম্নহুল আমিনের উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে দোষীদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি দিতে হবে। বক্তারা আরো বলেন জামায়াত শিবিরের মদতদাতা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ মেহেদীকে অবিলম্বে দল থেকে বহিস্কার করতে হবে। অপরদিকে জাতির জনকের ছবি অবমাননার নিন্দা-প্রতিবাদ জানিয়ে সাঈদ মেহেদী ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শেখ আনোয়ারুল কবির লিটুর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। সমাবেশে উপজেলা আওয়ামী লীগ, বিভিন্ন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সকল সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীবৃন্দ উপস্থিতর ছিলেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

 

 

আহম্মাদ উল্যাহ বাচ্ছু : অবশেষে কালিগঞ্জের দুই নিখোঁজ স্কুল ছাত্রীদের ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে ঝিনাইদাহ এলাকার কিছু সচেতন ব্যক্তি ও পুলিশের সহায়তায় ওই শিশু দু’টি তাদের মা-বাবার কাছে ফিরেছে। নিখোঁজ স্কুল ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা জানায়, ২১ সেপ্টেম্বর স্কুলে যাওয়ার পর কাউকে না জানিয়ে উধাও হয় পারম্নলাগাছা গ্রামের মনিরুল ইসলামের মেয়ে ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী বাক প্রতিবন্ধী মমতাজ পারভীন (১০) এবং আব্দুর ছাত্তার ওরফে বাটুলের মেয়ে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী রীনা পারভীন (১২)। স্কুলের ছুটির পরও তারা বাড়িতে না ফেরায় অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও পুলিশিং কমিটির সহায়তায় থানায় অবহিত করেন। সন্দেহের ভিত্তিতে পারুলগাছা গ্রামের ইস্রাফিল (১৪) ও সুজন (১৩) নামে দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করলেও ঘটনার সাথে তাদের সংশিস্নষ্টতা না থাকায় অভিভাবকদের মুচলেকায় তাদের ছেড়ে দেয় পুলিশ। নিখোঁজ দুই ছাত্রীকে উদ্ধারের পর তারা জানায়, পাশ্ববর্তী এলাকায় মিলন নামের এক ছেলে রিনা পারভীনকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের ঢাকায় যাওয়ার কথা বলে। প্রতারকের আশ্বাসে স্কুলছাত্রী ঢাকায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তার কাছে খরচের টাকা না থাকায় তার বান্ধবী মমতাজকে বাড়ি থেকে কিছু টাকা নিয়ে তার সাথে যাওয়ার কথা বলে। বাক প্রতিবন্ধী মমতাজ তার মায়ের গচ্ছিত টাকা নিয়ে সরল বিশ্বাসে রীনা পারভীনের সাথে স্কুল থেকে পালিয়ে বুধবার দুপুরে চলে যায়। পরিবহণ যোগে ঢাকায় যেয়ে হোটেলে নাস্তা করার সময় এক ব্যক্তি ওই দু’জনের ঘোরাফেরা সন্দেহজনক হওয়ায় তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। তিনি বিষয়টি বুঝতে পেরে পুণরায় পরিবহণের টিকিট কেটে সুপারভাইজারকে ওই দু’জনকে কালিগঞ্জে নামিয়ে দিতে বলে। কিন্তু ভুলবশত: পরিবহনের সুপারভাজার তাদের দু’জনকে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে নামিয়ে দেওয়ার পরিবর্তে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে নামিয়ে দেয়। এসময় মমতাজ ও রীনা অচেনা যায়গায় ঘুরোফেরা করতে থাকলে স্থানীয় মসজিদের ইমাম ও কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ তাদেরকে আশ্রয় দেয়ার পাশাপাশি থানা পুলিশকে অবগত করে। এক পর্যায়ে রীনা পারভীনের কাছ থেকে বাড়ির মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে বৃহস্পতিবার রাত ৮ টার দিকে তাদের বাড়িতে যোগাযোগ করে। এরই ভিত্তিতে রীনা ও মমতাজের মা’সহ পরিবারের সদস্যরা বৃহস্পতিবার রাতেই ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে যেয়ে শুক্রবার দুপরের দিকে তাদের মেয়েদের নিয়ে বাড়িতে আসে। প্রসঙ্গত, প্রায় ৩ মাস পূর্বে রীনা পারভীনের সাথে পার্শ্ববর্তী চাঁচাই গ্রামে তার খালাত ভাইয়ের সাথে বিয়ে হয়। ওই শিশু কণ্যার সাথে স্বামীর মিলমিশ না হওয়ায় সে বাবার বাড়ি থেকে আর শ্বশুর বাড়িতে ফিরে যায়নি। এক পর্যায়ে অন্য এক প্রতারক তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ঘর থেকে বের করে। সরল বিশ্বাসে মাত্র ১২ বছর বয়সের শিশুকণ্যা রীনা পারভীন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে পা বাড়ায়। একই সাথে দুই শিশু কন্যা নিখোঁজ ও উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। কালিগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক সেকেন্দার আলী দুই শিশুকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন তারা এখন পিতা মাতার কাছে অবস্থান করছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

sam_2261-copy-large

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাতক্ষীরা সদরের ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের জেয়ালা গ্রামে পল্লী বিদ্যুতের গ্রাম শুভ বিদ্যুতায়নের উদ্বোধন করা হয়েছে। শুক্রবার বিকালে ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের জেয়ালা কালিমন্দির প্রাঙ্গণে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা শেখ আব্দুল আহাদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে স্লুইচ টিপে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের উদ্বোধন করেন সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। এ সময় তিনি বক্তব্যে বলেন, দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিতে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের বিকল্প নেই। আগামী ২০১৭ সালের জুন মাসের মধ্যে সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে দেওয়া হবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান বাবু, আর ইই- কেডিপি-২ ঢাকার প্রকল্প পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ, পল্লী বিদ্যুতের যশোর’র তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বিশ্বনাথ শিকদার, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাবিবুর রহমান, সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার রবীন্দ্রনাথ দাস, ব্রহ্মরাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা এস. এম. শহিদুল ইসলাম, বিদ্যুৎ শ্রমিকলীগ জেলা শাখার সভাপতি বিকাশ চন্দ্র দাস, ইউপি সদস্য এস. এম রেজাউল ইসলাম প্রমুখ। ২২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে দেড় কিঃ মিঃ নির্মিত লাইনের মাধ্যমে ১শ’ ১৯টি পরিবারের মাঝে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুতের ইসি শেখ মহিদুল ইসলাম।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

full_202558724_1474609188full_202558724_1474609188বিনোদন ডেস্ক: বড় পর্দায় অভিষেক হতে যাচ্ছে ঢালিউডের শক্তিশালী খলনায়ক মনোয়ার হোসেন ডিপজলের একমাত্র মেয়ে ওলিজা মনোয়ারের। তবে নায়িকা হিসেবে নয় বরং তিনি ছবি নির্মাণ করবেন।
ওলিজা লন্ডনের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফ্যাশন ডিজাইন বিষয়ে পড়াশুনা করেছেন। অবশ্য বাবার রোমান্টিক বা অ্যাকশন ধারার সিনেমা দিয়ে তার সিনেমাযাত্রা শুরু হবে না। ওলিজার প্রথম ছবি হবে ভৌতিক ধাঁচের।
এরইমধ্যে ছবিটির গল্প লেখার কাজ শুরু হয়েছে। গল্প লিখছেন ছটকু আহমেদ। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ছবিটির ক্যামেরা চালু হওয়ার কথা রয়েছে।
এছাড়া ডিপজল আবারো চলচ্চিত্র প্রযোজনায় ফিরছেন। একই সঙ্গে কয়েকটি ছবির গল্প লেখার কাজও শুরু করেছেন। আগামী বছরই তার নতুন ছবির শুটিংয়ের কাজ শুরু করবেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

full_1458386939_1474554621ডেস্ক রিপোর্ট:  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নোবেল পুরস্কারে মনোনীত করার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু পরিবারের প্রতি যথাযথ স্বীকৃতি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে ছাত্রলীগ।
বৃহস্পতিবার বিকালে প্রধানমন্ত্রী পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের ‘আইসিটি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ প্রাপ্তিতে ছাত্রলীগের আনন্দ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে নোবেল কমিটির প্রতি এই আহ্বান জানান ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি আবিদ আল হাসান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ এই মিছিলের আয়োজন করে।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) কাজী এনায়েত, সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুর রাজ্জাক লালন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্সসহ বিভিন্ন হল ইউনিটের নেতৃবৃন্দ।
আবিদ আল হাসান বলেন, জাতির পিতার পরিবার বাংলাদেশের অহংকার। প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব নেতৃত্বের সাথে সমান তালে এগিয়ে চলেছেন। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ যখন অর্থনীতি-সামরিক খাতে বাজেট বরাদ্দ বেশি রাখে তখন তিনি শিক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ বেশি করেন। তারা যা না ভাবে তিনি তা ভাবেন। প্রধানমন্ত্রী পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে বাংলাদেশে প্রযুক্তির ছোয়া লেগেছে মন্তব্য করে তিনি নোবেল কমিটির কাছে প্রধানমন্ত্রীকে নোবেল পুরস্কার দিয়ে তার পরিবারের প্রাপ্য যথাযথ স্বীকৃতি দেয়ার আহ্বান জানান।
ছাত্রলীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) কাজী এনায়েত বলেন, বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু পরিবারের স্বীকৃতি। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ স্বাধীন করার মাধ্যমে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। তিনি সোনার বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন কিন্তু বাস্তবায়ন করতে পারেননি। তার সেই গুরু দায়িত্ব শেখ হাসিনা পালন করছেন। এসময় তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সজীব ওয়াজেদ জয়কে সামনে রেখে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সবাইকে আস্থা রাথতে। বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য তাকে আমাদের সহযোগীতা করতে হবে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

full_1724523560_1474617722ডেস্ক রিপোর্ট: মালয়েশিয়ায় জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তার বাংলাদেশির সঙ্গে রাজধানীর গুলশানে স্প্যানিশ রেস্তোরাঁ হলি আর্টিজানে হামলায় জড়িত একজনের যোগসূত্র আছে। গুলশান হামলায় জড়িতের সঙ্গে ওই বাংলাদেশির সাক্ষাৎ হয়।
সিঙ্গাপুরের সংবাদমাধ্যম দ্য স্ট্রেইটস টাইমস এ তথ্য জানিয়েছে। তবে প্রতিবেদনে ওই বাংলাদেশির নাম উল্লেখ করা হয়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়া পুলিশের মহাপরিদর্শক খালিদ আবু বাকের এক বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশি সন্দেহভাজনকে গত ১৯ আগস্ট গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে ইন্টারপোল ‘রেড নোটিশ’ জারি করেছে। গত ২ সেপ্টেম্বর তাঁকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়।
মালয়েশিয়ার পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশি ছিলেন বুকিত বিনতাং এলাকার ৩৭ বছর বয়সী বাংলাদেশি রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী। সন্দেহ করা হচ্ছে, তিনি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ব্যবহারের জন্য অস্ত্র চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত।
দ্য স্ট্রেইটস টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকার গুলশান হামলায় নিহত জঙ্গি আন্দালিব আহমেদের সঙ্গে মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীর সম্পর্ক ছিল।
বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য স্ট্রেইটস টাইমস আরো জানায়, গ্রেপ্তার ব্যক্তি নিজ দেশের মানুষের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করতেন। তিনি বাংলাদেশে হামলার পরিকল্পনা করছিলেন বলে ধারণা করছে মালয়েশিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী।
চলতি বছরের ১ জুলাই রাতে ঢাকার গুলশানে স্প্যানিশ রেস্তোরাঁ হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। হামলার পর রাতেই তারা ২০ জনকে হত্যা করে।
ওই রাতে উদ্ধার অভিযানের সময় বন্দুকধারীদের বোমার আঘাতে নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তা। পরদিন সকালে যৌথ বাহিনীর অভিযানে নিহত হয় পাঁচ হামলাকারী। ওই হামলার পর পাঁচ হামলাকারীর ছবি প্রকাশ করা হয়, যাদের একজন আন্দালিব আহমেদ।
২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত মালয়েশিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আন্দালিব আহমেদ। পরে তিনি ইস্তাম্বুল চলে যান।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

photo-1474573446চৌদ্দ ঘণ্টা আকাশে উড়ে আমাদের প্লেনটা শেষ পর্যন্ত নিউ ইয়র্কে পৌঁছায়। টানা চৌদ্দ ঘণ্টা প্লেনের ঘুপচি একটা সিটে বসে থাকা সহজ কথা নয়। সময় কাটানোর নানারকম ব্যবস্থা, তারপরও সময় কাটতে চায় না। অনেকক্ষণ পর ঘড়ি দেখি, মনে হয় নিশ্চয়ই এর মাঝে ঘণ্টাখানেক কেটে গেছে; কিন্তু অবাক হয়ে দেখি পনেরো মিনিটও পার হয়নি।
এয়ারপোর্টে নামার পর ইমিগ্রেশনের ভেতর দিয়ে যেতে হয়—প্রত্যেকবারই নতুন নতুন নিয়মকানুন থাকে। এবারেও নতুন নিয়ম, যাত্রীদের নিজেদের পাসপোর্ট নিজেদের স্ক্যান করে নিতে হবে। কিভাবে করতে হবে, তা খুব পরিষ্কার করে লেখা আছে, সেই নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করি, কিন্তু আমাদের পাসপোর্ট আর স্ক্যান হয় না। দেখতে দেখতে বিশাল হলঘর প্রায় খালি হয়ে গেছে, শুধু আমি আর আমার স্ত্রী পাসপোর্ট নিয়ে ধাক্কাধাক্কি করছি। কিছুতেই যখন পাসপোর্ট স্ক্যান করতে পারি না, তখন শেষ পর্যন্ত লাজ-লজ্জা ভুলে, কাছাকাছি দাঁড়িয়ে থাকা একজন পুলিশ অফিসারের কাছে গিয়ে মিন মিন করে বললাম, ‘আমার পাসপোর্ট কিছুতেই স্ক্যান হচ্ছে না…।’
আমার কথা শেষ করার আগেই পুলিশ অফিসার আঙুল দিয়ে আমাকে দেখিয়ে বলল, ‘আপনি জাফর ইকবাল না?’ পুলিশ অফিসার বাঙালি। শুধু যে বাঙালি তা নয়, আমাকে চেনে। দেশের এয়ারপোর্টে এটা অনেকবার ঘটেছে, কিন্তু নিউ ইয়র্কের এয়ারপোর্টেও এটা ঘটবে, কল্পনা করিনি। বলাবাহুল্য, এরপর আমার পাসপোর্ট মুহূর্তে স্ক্যান হয়ে গেল (কী কারণ জানা নেই, আমার পাসপোর্টে পুরনো পাসপোর্ট লাগানো থাকে, সে কারণে সাইজ মোটা এবং স্ক্যান করার জন্য যন্ত্রের মাঝে ঢোকানো যায় না। এ রকম অবস্থায় কী করতে হবে, বাংলাদেশের বাঙালি পুলিশ অফিসার সেটা আমাদের শিখিয়ে দিল।) বিদেশের মাটিতে নামার পর নানারকম আশঙ্কায় সবসময় আমার বুক ধুক ধুক করতে থাকে—এবারে মুহূর্তের মাঝে সব দুশ্চিন্তা, সব আশঙ্কা দূর হয়ে গেল। মনে হলো, এই শহরটি বুঝি অপরিচিত, নির্বান্ধব, স্বার্থপর, নিঃসঙ্গ একটি শহর নয়—এই শহরে আমার দেশের মানুষ আছে, দেশের বাইরে তারা দেশ তৈরি করে রাখে।
আমার ধারণা যে ভুল নয়, সেটি কয়েক ঘণ্টার মাঝে আমি আবার তার প্রমাণ পেয়ে গেলাম। যারা খোঁজখবর রাখে তারা সবাই জানে সারা পৃথিবীতেই এখন উবের কিংবা লিফট নামে নতুন সার্ভিস শুরু হয়েছে। স্মার্ট ফোনে তার ‘অ্যাপস’ ডাউনলোড করে নিলেই সেটা ব্যবহার করে গাড়িকে ডাকা যায়, ভাড়া নিয়ে দরদাম করতে হয় না, ক্রেডিট কার্ড থেকে সঠিক ভাড়া কেটে নেয়, তাই কোনও টাকা-পয়সার লেনদেন করতে হয় না। স্মার্ট ফোনের ম্যাপে গাড়িটা কোনদিকে আসছে সেটা দেখা যায়, গাড়িটির নম্বর কত, ড্রাইভার কে, তার নাম কী, টেলিফোন নম্বর কত—সেটাও টেলিফোনের স্ক্রিনে উঠে আসে। নিউ ইয়র্কে পৌঁছানোর কয়েক ঘণ্টার মাঝে আমাদের এক জায়গায় যেতে হবে বলে আমার মেয়ে এরকম একটা গাড়িকে ডেকে পাঠিয়েছে। সেটাতে ওঠার আগেই টের পেলাম গাড়ির ড্রাইভার বাংলাদেশের তরুণ। আমাকে দেখে তার সে কি আনন্দ, গাড়ি চালাতে চালাতে তার কত রকম কথা। গাড়ি থেকে নামার পর সে আমার মেয়েকে বলল—তার কোম্পানিকে সে জানিয়ে দেবে যেন আমাদের কাছ থেকে কোনও ভাড়া কেটে নেওয়া না হয়। আমি অনেক কষ্ট করে তাকে থামালাম।
আমি দুই সপ্তাহের মতো নিউ ইয়র্ক শহরে ছিলাম। যখনই ঘর থেকে বের হয়েছি দেশের মানুষের সঙ্গে দেখা হয়েছে। কখনও ফল বিক্রেতা, কখনও রেস্টুরেন্টের কর্মচারী, কখনও ট্রাফিক পুলিশ, কখনও মিউজিয়ামের গার্ড কখনও সাবওয়ের সহযাত্রী। পৃথিবীর অন্যপ্রান্তে এসে দেশের মানুষ এবং তাদের মমতাটুকু হৃদয়টাকে অন্যভাবে পরিপূর্ণ করে তোলে।

২.
আমেরিকা দেশটি হচ্ছে গাড়ির দেশ, এই দেশে গাড়িটি চালিয়ে শুধুমাত্র এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়ার জন্যে তৈরি হয়নি। আমেরিকায় গাড়ি হচ্ছে সেই দেশের কালচারের একটা অংশ। মাঝখানে পেট্রোলের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে তেল-বান্ধব ছোট গাড়ির প্রচলন হতে শুরু করেছিল, কিন্তু এখন পেট্রোলের দাম কমেছে বলে বিশাল বিশাল বিলাসী গাড়িও আবার ফিরে আসতে শুরু করেছে। খাঁটি আমেরিকানদের সম্ভবত নিউ ইয়র্ক শহরে গাড়ি চালাতে সমস্যা হয় না। কিন্তু আমার কাছে বিষয়টাকে রীতিমতো দুঃস্বপ্ন মনে হয়। তবে যারা নিউ ইয়র্ক শহরে থাকে তারা অবশ্যই গাড়ি ব্যবহার না করেই দিন কাটাতে পারে, কারণ পুরো শহরের মাটির নিচে মেট্রো ট্রেন মাকড়সার জালের মতো ছড়িয়ে আছে। আমি যে দুই সপ্তাহ নিউ ইয়র্ক শহরে ছিলাম, এই মেট্রো ট্রেনেই চলাফেরা করেছি।

নিউ ইয়র্ক শহরের নতুন প্রজন্ম অবশ্যই চলাফেরার জন্য নতুন আরেকটি সমাধান খুঁজে পেয়েছে। সেটি হচ্ছে বাইসাইকেল। আমি যখন প্রথম জানতে পারলাম আমার মেয়ে বাইসাইকেল চালিয়ে আমাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছে, আমি তখন জানতে চাইলাম সাইকেলটি সে কোথায় রেখেছে। রাস্তার পাশে কোনও একটা ল্যাম্পপোস্টে সাইকেলটি বেঁধে রেখে এলে কিছুক্ষণের মাঝেই সাইকেলের ফ্রেম ছাড়া বাকি সবকিছু হাওয়া হয়ে যায়। (আমার ধারণা এই ব্যাপারে নিউ ইয়র্কের মানুষের দক্ষতা আমাদের দেশের মানুষ থেকে বেশি।) আমার মেয়ে বলল, সে নিউ ইয়র্ক শহরে এসে কোনও বাই-সাইকেল কিনেনি, যখনই দরকার হয় একটা ভাড়া নিয়ে নেয়। বিষয়টা আমার কাছে যথেষ্ট বিদঘুটে মনে হলো, সাইকেল ভাড়া নিলেও ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত সেটাকে কোথাও না কোথাও নিজের হেফাজতে রাখতে হয়। পুরো সাইকেল ভাড়া নিয়ে শুধু তার কঙ্কালটা ফেরত দেওয়া হলে সাইকেল ভাড়া দেওয়ার ব্যবসা দু’দিনে লাটে উঠে যাবে।

আমার মেয়ের কাছ থেকে বাই-সাইকেল ভাড়া দেওয়া-নেওয়ার পুরো প্রক্রিয়াটির বর্ণনা শুনে আমি চমত্কৃত হলাম। সিটি বাইক নাম দিয়ে নিউ ইয়র্ক শহরের অসংখ্য জায়গায় সাইকেল স্ট্যান্ড তৈরি করা হয়েছে। যার যখন দরকার হয় এক স্ট্যান্ড থেকে ভাড়া নেয়, গন্তব্যে পৌঁছানোর পর অন্য স্ট্যান্ডে জমা দিয়ে দেয়। কোথাও কোনও মানুষ নেই, পুরো ব্যাপারটা ইলেক্ট্রনিক। কে কোথা থেকে ভাড়া নিয়েছে কোথায় ফেরত দিয়েছে সবকিছু ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে হিসেব রাখা হচ্ছে এবং ক্রেডিট কার্ড থেকে ভাড়ার টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে। পুরো শহরে অল্প কয়েকটা জায়গায় সিটি-বাইকের স্ট্যান্ড থাকলে এই প্রক্রিয়াটা মোটেও কাজ করতো না কিন্তু যেহেতু শহরের প্রায় কোণায় কোণায় সিটি বাইক স্ট্যান্ড বসানো হয়েছে কাজেই এখন কাউকেই বাইসাইকেলটা কোথা থেকে ভাড়া নিয়ে কোথায় ফেরত দেবে সেটা নিয়ে ভাবনা করতে হবে না। কাছাকাছি কোথায় সিটি বাইক স্ট্যান্ড আছে সেটা জানার জন্যে দরকার শুধু একটা স্মার্ট ফোন!

নিউ ইয়র্ক শহরের একটা সুন্দর দৃশ্য হচ্ছে এই সিটি বাইক। তাদের জন্য আলাদাভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, ডিজাইনটিও চমত্কার! একজন মানুষ চাকরির ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্যে স্যুট পরেও এই সাইকেল চালিয়ে যেতে পারবে।

নিউ ইয়র্ক শহরের কত বড় বড় বিষয় থাকার পরও আমি ইচ্ছে করে সিটি বাইক নিয়ে আমার উচ্ছ্বাসটুকু প্রকাশ করেছি। আমার মনে হয় আমাদের ঢাকা শহরেও কোনও একজন উদ্যোক্তা এই ধরনের একটা উদ্যোগ নিলে সেটি শহরের মানুষের জন্যে অনেক বড় একটা আশীর্বাদ হতে পারত। (আমাদের দেশের জন্যে হুবহু এই মডেলটি হয়তো কাজ করবে না, একটু অন্য রকমভাবে শুরু করতে হবে। যেমন আমাদের এটিএম মেশিন—সারা পৃথিবীতেই এটিএম মেশিনকে কারও পাহারা দিতে হয় না, আমাদের দেশে সেখানে সার্বক্ষণিকভাবে কাউকে না কাউকে পাহারা দিতে হয়।)

৩.
এটি আমেরিকায় নির্বাচনি বছর। আমেরিকার ইতিহাসের যে কোনও নির্বাচন থেকে এটি অন্যরকম, কারণ এবারে ডোনাল্ড ট্রাম্প নামে একজন ব্যবসায়ী প্রেসিডেন্ট পদের জন্য, আমেরিকার প্রধান দুই দলের একটি, রিপাবলিকান পার্টির পক্ষ থেকে নির্বাচন করছে। আজ থেকে প্রায় দুই যুগ আগে আমি যখন আমেরিকাতে ছিলাম তখন থেকে এই মানুষটিকে চিনি। তখন ডোনাল্ড ট্রাম্প ছিল স্বল্পবুদ্ধি সম্পন্ন, স্থূল রুচির বাকসর্বস্ব একজন ব্যবসায়ী। প্রথম যখন আমি শুনতে পেয়েছিলাম যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প রিপালিকান পার্টি থেকে নমিনেশন পাওয়ার চেষ্টা করছেন, তখন পুরো বিষয়টাকে একটা উত্কট রসিকতা হিসেবে ধরে নিয়ে আমি উড়িয়ে দিয়েছিলাম। এখন যখন নির্বাচন প্রায় চলে এসেছে এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প সত্যি সত্যি একজন প্রার্থী, তখন পুরো ব্যাপারটা রসিকতার পর্যায়ে না থেকে বিভীষিকার পর্যায়ে চলে এসেছে। আমেরিকায় সংখ্যালঘু মানুষের প্রতি বিদ্বেষ কিংবা সাম্প্রদায়িকতা, আতঙ্ক এবং ঘৃণা—এগুলোর অস্তিত্ব থাকলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে কখনও মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। ডোনাল্ড ট্রাম্প ইলেকশনে জিতে গেলে অন্ধকার জগতের এই সব গ্লানি হঠাৎ করে রাষ্ট্রীয় নীতিমালার মাঝে চলে আসবে!

আমি যতদিন ছিলাম তার মাঝে একদিনও একটি মানুষকে পাইনি যে ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্পর্কে ইতিবাচক কোনও কথা বলেছে। সত্যি কথা বলতে কী, একজন অধ্যাপককে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথা জিজ্ঞেস করার পর তাকে আমি আক্ষরিক অর্থে শিউরে উঠতে দেখেছি।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নানারকম প্রচারণা চলছে। সবচেয়ে মজার প্রচারণাটা শুনেছি একজন গৃহহীন ভিক্ষুকের কাছ থেকে। সে পথের মোড়ে একটা কাগজ নিয়ে বসে থাকে। কাগজে লেখা ‘আমাকে যদি এক ডলার না দাও তাহলে আমি কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দিয়ে দেব!’
আমি যতদূর জানি এই হুমকি কাজে দিয়েছে! প্রচুর মানুষ এই ভিক্ষুককে এক ডলার করে দিয়ে যাচ্ছে।

৪.
একদিন বিকেলে আমার ছেলে আমাদের জানালো সে একটি বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দিতে যাচ্ছে। আমার ধারণা ছিল বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন এই ব্যাপারগুলোর বুঝি শুধু আমাদের দেশের জন্যে একচেটিয়া, আমেরিকাতেও যে বিক্ষোভ মিছিল হতে পারে সেটা অনুমান করিনি। আমি জানতে চাইলাম, কিসের বিক্ষোভ মিছিল? উত্তরে সে আমাকে যে কাহিনিটি শোনালো সেটি অবিশ্বাস্য! তার একজন সহকর্মী (ঘটনাক্রমে এই সহকর্মীর সঙ্গে আমারও পরিচয় হয়েছে) লং আইল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অ্যাট ব্রুকলিন নামে একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছে। আমেরিকাতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পদ মোটামুটি সোনার হরিণ, সেখানে যোগ দিতে পারা কঠিন, কাজেই এ রকম একটি পদে যোগ দেওয়ার পরই একজন তাদের জীবন শুরু করার পরিকল্পনা করতে পারে। লং আইল্যান্ড ইউনিভার্সিটির কর্মকর্তারা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি নতুন বেতন স্কেল তৈরি করেছে, শিক্ষকদের সেটা পছন্দ হয়নি, তাই তারা সেটা গ্রহণ করতে রাজি হয়নি। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট কলমের এক খোঁচায় চারশ’শিক্ষককে বরখাস্ত করে দিল!

মুহূর্তের মাঝে একজন নয় দুইজন নয়, চারশ’ শিক্ষক বেকার সবাই একেবারে পথে বসে গেছে। যেহেতু আমেরিকার একাডেমিক জগতে অসংখ্য মানুষ চাকরির খোঁজে ঘুরে বেড়াচ্ছে, ভালো চাকরি না পেয়ে ছোটখাটো কাজ করে সময় কাটাচ্ছে, তাই এই চারশ’ শিক্ষকের বদলে নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া খুব যে অসম্ভব ব্যাপার তা নয়। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে লেখাপড়া চালিয়ে নেওয়ার জন্যে সে রকম শিক্ষকদের নেওয়া শুরু হয়েছে, অনেকেই খণ্ডকালীন নিয়োগ পেয়ে কাজও করতে শুরু করেছে।

বলা বাহুল্য, চাকরি হারানো চারশ’ শিক্ষক, তাদের পরিবার, বন্ধু-বান্ধব এই অবিশ্বাস্য ঘটনার প্রতিবাদ করতে শুরু করেছে। যে জন্য বিক্ষোভ মিছিল এবং আমার ছেলেও সেই বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দিতে যাচ্ছে। আমার সময় থাকলে আমিও যোগ দিতাম।

শেষ খবর অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শেষ পর্যন্ত বরখাস্ত করে দেওয়া চারশ’ শিক্ষককে আবার ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ( আমাদের দেশে আমরা বলি ভাইস চ্যান্সেলর) যে এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে তাকে প্রচুর গালমন্দ শুনতে হয়েছে, সাধারণ শিক্ষক এবং ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিলে তাকে একটা ‘ধাড়ী ইঁদুর’ বলে ডাকছে। আমি যতদূর জানি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট এখনও তার নিজের পদে বহাল আছে। হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্টকে শুধু ছেলে এবং মেয়ের মেধার তুলনা করতে গিয়ে একটি বেফাঁস কথা বলার জন্যে চাকরি হারাতে হয়েছিল। আমার ধারণা লং আইল্যান্ড ইউনিভার্সিটির এই ধাড়ী ইঁদুরও সেখানে খুব বেশিদিন থাকতে পারবে না। আমরা আমাদের ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলরকে নিয়ে মাথা চাপড়াই—মনে হচ্ছে সমস্যাটি দেশীয় নয়, আন্তর্জাতিক!

৫.
শিক্ষক হওয়ার প্রধান আনন্দ হচ্ছে সারা পৃথিবীতে তার ছাত্র-ছাত্রীরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে, কাজেই নিউইয়র্ক যাওয়ার পর এই ছাত্র-ছাত্রীরা যে আমাদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বে, সেটি এমন কিছু অবাক ব্যাপার নয়। সে কারণে একদিন বিকেলে তাদের সঙ্গে দেখা করার জন্যে আমাদের ‘জ্যাকসন হাইট’ নামে একটা জায়গায় যেতে হলো। (যারা জ্যাকসন হাইটের নাম শোনেননি তাদের বলা যায়, এটি হচ্ছে নিউ ইয়র্কের মিনি বাংলাদেশ!) জ্যাকসন হাইট জায়গাটি আমি যেখানে আছি সেখান থেকে অনেক দূর, কিন্তু মেট্রো ট্রেনে খুব সহজেই যাওয়া যায়। আমি সেভাবেই যাব বলে ঠিক করে রেখেছিলাম। আমার ছাত্র-ছাত্রীদের প্রবল আপত্তি এবং তারা গাড়ি না করে আমাদের নেবে না—এর মাঝে নিশ্চয়ই যথাযথ সম্মান দেখানোর ব্যাপার আছে, যেটা আমি জানি না। কাজেই যে দূরত্বটা অল্প সময়ে অতিক্রম করতে পারতাম, গাড়ি করে ট্রাফিক জ্যাম ঠেলে অনেক সময় নিয়ে অতিক্রম করতে হলো!

যাই হোক, ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে গল্প-গুজব করে, খেয়ে দেয়ে, ছবি তুলে চমত্কার একটি সন্ধ্যা কাটিয়ে আমরা ফিরে আসতে প্রস্তুত হয়েছি। আমরা আবার ছাত্র-ছাত্রীকে বলছি আমাদের মেট্রো ট্রেনে তুলে দিতে, তারা আবার রাজি হলো না, গাড়ি করে আমাদের অ্যাপার্টমেন্টে ফিরিয়ে দেবে। যখন মাঝামাঝি এসেছি তখন হঠাৎ করে আমার ছেলে ফোন করে জিজ্ঞেস করলো ‘তোমরা কোথায়?’ আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘কেন, কী হয়েছে?’ আমার ছেলে বলল, ‘ম্যানহাটানের মাঝখানে বোমা ফেটেছে, খবরদার ঐ পথে ফিরে আসার চেষ্টা করো না।’

শুনে আমি হাসব না কাঁদব, বুঝতে পারলাম না। দেশে জঙ্গি এবং তাদের উত্পাতের খবর পড়তে পড়তে আমাদের সবার জীবন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। ভেবেছিলাম নিউইয়র্ক এসে অন্তত দুটি সপ্তাহ জঙ্গিদের উত্পাতের খবর পড়তে হবে না। কিন্তু আমাদের কপাল, এখানেও সেই একই জঙ্গি, একই উৎপাত।

ছাত্র-ছাত্রীরা আমাদের কথা না শুনে মেট্রো ট্রেনে তুলে না দেওয়ার কারণে আমরা খুব বাঁচা বেঁচে গিয়েছিলাম। কারণ বোম ফাটার সঙ্গে সঙ্গে মেট্রো রেল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। অসংখ্য মানুষ অন্য কোনোভাবে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছিল বলে ট্যাক্সি বা ক্যাবও পাওয়া যাচ্ছিল না। কাজেই আমাদের হয়তো পুরো পথটুকু পায়ে হেঁটে ফিরে আসতে হতো। আমাদের ছাত্ররা তাদের গাড়িতে করে নিরাপদে একেবারে আমাদের অ্যাপার্টমেন্টের দরজায় পৌঁছে দিয়ে গেল! আমার ছেলের অবশ্যি এত সৌভাগ্য হয়নি, পায়ে হেঁটে এবং একজন দয়ালু ক্যাব ড্রাইভারের সহযোগিতায় অনেক কষ্টে গভীর রাতে বাসায় ফিরে আসতে পেরেছিল।

যখনই আমাদের দেশে একটা জঙ্গি হামলা হয়, বাংলাদেশ সরকার তখন ঘোষণা দেয়—এটি স্থানীয় ঘটনা, আন্তর্জাতিক জঙ্গিদের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। এখানেও তাই হলো, নিউইয়র্কের মেয়র ঘোষণা দিলেন—এটি স্থানীয় ঘটনা, আন্তর্জাতিক জঙ্গিদের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। বোঝাই যাচ্ছে, পৃথিবীটা খুবই ছোট!
লেখক: কথাসাহিত্যিক, শিক্ষক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest