সর্বশেষ সংবাদ-
সাতক্ষীরা পৌরসভার প্রধান নির্বাহী নাজিমের বিরুদ্ধে আদালতে মামলাআশাশুনিতে পিতা পুত্রের ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলাতালায় পুকুরের ভিতর থেকে পরিত্যাক্ত অবস্থায় অস্ত্র উদ্ধারকালিগঞ্জে পূজা প্রসাদ খেয়ে এক শিশুর মৃত্যু-অসুস্থ শতাধিকবুড়িগোয়ালিনীতে রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত ৬৪ পরিবার পেল প্রেরণার নগদ অর্থদেবহাটায় আওয়ামী লীগের ৭৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিতনানা আয়োজনে সাতক্ষীরায় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালনজেলা প্রশাসকের দেওয়া ভ্যান পেয়ে আবেগাপ্লুত স্বামী পরিত্যাক্তা রওশনারাশ্যামনগরে মেগা প্রকল্পের সিমেন্ট চুরি: সাবেক সেনা সদস্য আটকতালায় আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন

78নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরায় ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে কুখরালী আদর্শ যুব সংঘের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় আট দলীয় নক আউট ফুটবল টূর্ণামেন্টের ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে সদর উপজেলার কুখরালী ফুটবল মাঠে এ জাঁকজমকপূর্ণ খেলাটি অনুষ্ঠিত হয়। ফাইনাল খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন বাঁকাল ইসলামকাটি ডিজিটাল একাদশ বনাম আমতলা যুব সংঘ। খেলার নির্ধারিত সময়ে কোন গোল না হওয়ায় টাইব্রেকার অনুষ্ঠিত হয়। টাইব্রেকারে বাঁকাল ইসলামকাটি ডিজিটাল একাদশ আমতলা যুব সংঘকে ২/১ গোলে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, সদর ২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। রামপদ মাস্টারের সভাপতিত্বে উক্ত পুরষ্কার বিতরন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির সদস্য শেখ মাতলুব হোসেন লিয়ন, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম. কামরুজ্জামান, কুখরালী আদর্শ যুব সংঘের উপদেষ্টা একেএম আনিছুর রহমান, পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন প্রমুখ। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন নবারুন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক গাজী।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

0000-5ডেইলি সাতক্ষীরা : কাল শনিবার, ১২ ভাদ্র; জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪০ তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের শোকাবহ ঘটনার এক বছর পর ১৯৭৬ সালের শোকের মাসের এদিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (সাবেক পিজি হাসপাতাল) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। এখানেই তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন। জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশন ও বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচারের উদ্যোগ নিয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- আগামীকাল সকালে ফজরের নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে কোরআনখানি অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া সকাল ৭টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা জমায়েত হয়ে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে উপাচার্যের নেতৃত্বে শোভাযাত্রা করে কবির সমাধি প্রাঙ্গণে গমন, পুষ্পার্পণ এবং ফাতেহা পাঠ করা হবে। পরে কবির মাজার প্রাঙ্গণে উপাচার্যের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
কবি, সাহিত্যিক শঙ্খ ঘোষ নজরুলের মৃত্যু নিয়ে লিখেছেন, নজরুলের কথা আজ যখনই মনে পড়ে আমাদের, মনে পড়ে মিলনগত এই অসম্পূর্ণতার কথা। আর তখন মনে হয়, বাক শক্তিহারা তাঁর অচেতন জীবনযাপন যেন আমাদের এই স্তম্ভিত ইতিহাসের এক নিবিড় প্রতীকচিহ্ন। যে সময়ে থেমে গেলো তার গান, তাঁর কথা, তাঁর অল্পকিছু আগেই তিনি গেয়েছিলেন, ‘ঘুমাইতে দাও শ্রান্ত রবিরে, জাগায়োনা জাগায়োনা। রবীন্দ্রনাথকে উদ্দেশ্য করে নজরুলের এই কথাগুলো তাকেই ফিরিয়ে দেয়ার কথা বলে শঙ্খ ঘোষ লিখেছেন, তাঁর কথাগুলো আমরা যেন ফিরিয়ে দিতে পারি তাঁকেই, যেন আমরাই ওগুলি বলছি নজরুলকে লক্ষ্য করে।
নজরুলের সৃষ্টিকর্ম প্রসঙ্গে নজরুল বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বাসসকে বলেন, নজরুল ইতিহাস ও সময় সচেতন মানুষ ছিলেন যার প্রভাব তাঁর লেখায় স্পষ্টভাবে পাওয়া যায়। তিনি বলেন, তুরস্কে কামাল পাশার নেতৃত্বে প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা, রাশিয়ায় সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব আর ভারতবর্ষে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের তরঙ্গকে নজরুল তাঁর সাহিত্যে বিপুলভাবে ধারণ করেছেন। সে সময়ে ধর্মান্ধ মুসলমানদের তিনি পুনর্জাগরণের ডাক দিয়েছেন এবং এক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা ছিল একজন বলিষ্ঠ নেতার মতো।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৩০৬ সালের ১১ জ্যৈষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুন। বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। তিনি বৈচিত্র্যময় অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে বাংলা সঙ্গীত জগতকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। প্রেম, দ্রোহ, সাম্যবাদ ও জাগরণের কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা ও গান শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রামে জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছে। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস।
নজরুলের কবিতা, গান ও সাহিত্য কর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ লেখক। তাঁর লেখনি জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। তাঁর কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে। স্বাধীনতার পর পরই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশে তাঁর বসবাসের ব্যবস্থা করেন এবং কবির জন্য একটি বাড়ি দেন ধানমন্ডিতে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

image-(2)ভিন্ন স্বাদের খবর: এক ফুট চওড়া, ২.২ ফুট লম্বা, ওজন ৩৪ কেজি। শুনে কোনও মাঝারি মাপের পাথরের কথা মাথায় আসতে পারে। কিন্তু ফিলিপিন্সের এক মৎস্যজীবীর বিছানার নীচে ঠিক এই মাপেরই একটি মুক্তো রাখা ছিল। তাও দু-এক সপ্তাহ নয়, একটানা দশ বছর ধরে। কিন্তু বিছানার নীচে রাখা সাদা রংয়ের ওই বড়সড় জিনিসটি যে কতখানি মহার্ঘ, তার কোনও আন্দাজই ছিল না ওই মৎস্যজীবীর। কারণ তাঁর কাছে ওটি নিছক সৌভাগ্য বয়ে আনার একটি সামুদ্রিক পাথরের থেকে বেশি কিছু ছিল না। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, ওই মুক্তোর আনুমানিক মূল্য অন্তত একশো মিলিয়ন ডলার। খবর-এবেলা

কিন্তু কীভাবে এই মুক্তোর কথা জানাজানি হল? সম্প্রতি ওই মৎস্যজীবীর বাড়িতে আগুন লেগেছিল। বাধ্য হয়ে হাতের কাছে যা যা জিনিস পেয়েছিলেন, সেগুলো নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি। সেই সময়েই অবশ্যই সৌভাগ্যর প্রতীক হিসেবে বাড়িতে রাখা প্রিয় পাথরটিকে সঙ্গে নিতে ভোলেননি তিনি। আন্তর্জাতিক একটি নিউজ চ্যানেলের খবর অনুযায়ী, তখনই এক সরকারি ট্যুরিজম অফিসারকে ওই সামু্দ্রিক পাথরটি দেখান তিনি। ওটা যে সাধারণ কোনও বস্তু নয়, অভিজ্ঞ ট্যুরিজম অফিসারের তা বুঝতে দেরি হয়নি। বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করেন, ওটি আসলে একটি মুক্তো। পরে জানা যায়, এখনও পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া মুক্তোগুলির মধ্যে এটি সবথেকে বড়। দামী পাথর সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞরা এখন এই মুক্তের মূল্য নির্ধারণ করার কাজ চালাচ্ছেন।

একদিন সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে ঝড়ের মধ্যে নিজের নৌকার নোঙ্গরটি জলের মধ্যে ফেলেছিলেন ওই মৎস্যজীবী। কিন্তু নোঙ্গরটি তোলার সময়ে দেখেন, সেটি একটি সামুদ্রিক ঝিনুকে আটকে যায়। বাধ্য হয়ে জলে নেমে সাঁতরে নোঙ্গরটি তুলে আনেন মৎস্যজীবী ওই ঝিনুকটিও তুলে আনেন। তার পরে থেকেই ওই ঝিনুক এবং তার ভিতরে লুকিয়ে থাকা মুক্তোর ঠিকানা হয়েছিল ওই মৎস্যজীবীর বাড়ির বিছানার নীচে। ভাগ্যিস, মৎস্যজীবীর বাড়িতে আগুন লেগেছিল! না হলে, বিশ্বের সবথেকে বড় মুক্তোর সন্ধানই হয়তো পাওয়া যেত না। এতদিন বিশ্বের সবথেকে বড় মুক্তোর স্বীকৃতি যেটির ছিল, সেই লাও জু নামের মুক্তোটিও এই বিশালাকার মুক্তোর তুলনায় নেহাতই ছোট আকারের। ফিলিপিন্স অবশ্য বড় বড় মুক্তো খুঁজে পাওয়ার জন্য বিখ্যাত। সেদেশের পালওয়ান অঞ্চলে অতীতেও অনেক বড় বড় মুক্তো পাওয়া গিয়েছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

61.1মইনুল ইসলাম, বুধহাটা: আশাশুনি উপজেলার বুহাটা বি.বি.এম করেজিয়েট স্কুল শিক্ষক ও বুধহাটা গ্রামের মৃত ডা. সন্নাসী সেনের বড় পুত্র সনাতন সেন মৃত বরণ  করেছেন। মৃতকালে তার বয়স হয়েছিল ৪২ বছর। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২.৩০ মিনিটে হার্ট এ্যাটাকে তার নিজস্ব বাসবভনে মৃতবরণ করেন। মৃতকালে মা, স্ত্রী, সন্তান, ভাইসহ বহু গুনগাহী রেখেছেন। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

আসাদুজ্জামান: সাতক্ষীরা জেলাব্যাপী পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৩৩ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে নাশকতাসহ বিভিন্ন অভিযোগে Atokমামলা রয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত জেলার আটটি থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতদের মধ্যে, সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে ১২ জন, কলারোয়া থানা থেকে ০৯ জন, তালা থানা ০৩ জন, কালিগঞ্জ থানা ০২ জন, শ্যামনগর থানা ০২ জন, আশাশুনি থানা ০২ জন, দেবহাটা থানা ০২ জন ও পাটকেলঘাটা থানা থেকে ০১ জনকে আটক করা হয়।
সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে নাশকতাসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

photo-1472149375আশির দশকের কোনও এক সময়ে আমি আমেরিকা থেকে দেশে বেড়াতে এসেছি। রিকশায় করে কোনও এক জায়গায় গিয়ে আমি রিকশা থেকে নেমে মানিব্যাগ থেকে একটা দশ টাকার নোট রিকশাওয়ালাকে দিয়ে হাঁটতে শুরু করেছি, তখন শুনলাম পেছন থেকে রিকশাওয়ালা আমাকে ডাকলেন। ঘুরে তাকিয়ে দেখি রিকশাওয়ালা লাল রঙের দশ টাকার নোটটা দুই হাতে ধরে সেটার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। আমাকে বলল, স্যার, এইটা কী দিলেন? এই নোট তো বাংলাদেশে চলে না।
ছিয়াত্তরে দেশ ছেড়ে যাওয়ার সময় মানিব্যাগে দেশের কিছু নোট ছিল, সেই নোট এতদিন ব্যবহার করা হয়নি। মানিব্যাগ থেকে সেই নোট বের করে রিকশা ভাড়া দিয়েছি—আমি জানতাম না এই দেশে নোটগুলো অচল হয়ে গেছে। নোটগুলোর দোষ কী? দোষ একটাই সেই নোটে বঙ্গবন্ধুর ছবি। পঁচাত্তরে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর এই দেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর শেষচিহ্নটিও মুছে ফেলার জন্যে যে বিশাল আয়োজন শুরু হয়েছিল আমি সেটা তখনও সেভাবে জানতাম না।
আমি চুরানব্বইয়ের শেষে পাকাপাকিভাবে দেশে ফিরে এসেছি। তখনও রেডিও-টেলিভিশনে বঙ্গবন্ধুর কোনও উপস্থিতি নেই। স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুকে দেখানো হয় না, এই দেশের মানুষ, ছেলেমেয়ে, ছাত্রছাত্রীরা হয়তো বঙ্গবন্ধুর চেহারা কেমন সেটাও জানে না। আমি অবাক হয়ে দেখি এটা কী হয়ে গেল দেশের?
তখন ছিয়ানব্বইয়ের নির্বাচন হলো, একুশ বছর পরে প্রথমবার আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসেছে। নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর আমি আমার স্ত্রীকে বললাম, ‘চলো দোকান থেকে একটা টেলিভিশন কিনে আনি, এখন টেলিভিশনে বঙ্গবন্ধুকে দেখাবে। আমি আর আমার স্ত্রী একজন সহকর্মীকে নিয়ে দোকান থেকে একটা টেলিভিশন কিনে আনলাম। বাসায় এসে সেই টেলিভিশন অন করা হলো এবং সত্যি সত্যি আমরা প্রথমবার টেলিভিশনে বঙ্গবন্ধুকে দেখতে পেলাম। একটি দেশ আর একটি মানুষ সমার্থক হতে পারে কিনা জানি না, বাংলাদেশ আর বঙ্গবন্ধুর বেলায় সেটি কিন্তু হয়েছিল। অথচ সেই বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রযন্ত্র একদিন নয়, দু’দিন নয় একুশ বছর সকল প্রচারমাধ্যম থেকে সরিয়ে রেখেছিল। নিজের চোখে দেখেও সেটা বিশ্বাস হয় না। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার মতো নৃশংস ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে খুব বেশি নেই। কিন্তু দেশের স্থপতিকে সেই দেশের মানুষের কাছ থেকে আড়াল করে রাখার মতো ঘটনাও কি পৃথিবীতে খুব বেশি আছে? বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিয়েই ঘাতকদের কাজ শেষ হয়নি। এই দেশের মাটি থেকে তার স্মৃতি পুরোপুরি মুছে ফেলে তাদের দায়িত্ব শেষ হবে। যারা ট্রিগার টেনে গুলি করেছে শুধু তারাই ঘাতক, অন্যরাও কি অন্য রকম ঘাতক নয়?
শেষবার আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর পাঠ্যবইগুলো থেকে ইতিহাস বিকৃতি দূর করার জন্য যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আমিও তাদের মাঝে ছিলাম। আমি তখন একসঙ্গে আমাদের স্কুল-কলেজের সব পাঠ্যবই দেখার সুযোগ পেয়েছিলাম। আমরা সবাই মিলে পাঠ্যবই থেকে ইতিহাস নিয়ে বিচিত্র এক ধরনের মিথ্যাচারকে সরিয়ে সঠিক ইতিহাসগুলো বসিয়েছি। মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় কথাগুলো লিখেছি, হানাদার বাহিনী যে আসলে পাকিস্তানের মিলিটারি সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছি, বঙ্গবন্ধু ছাড়া যে বাংলাদেশের জন্ম হতো না সেটা সবাইকে জানিয়েছি। মনে আছে এরপর একটা সময় গিয়েছে যখন ছেলেমেয়েগুলো এক ধরনের বিভ্রান্তিতে ভুগেছে। এতদিন একটা বিষয় জেনে এসেছে, এখন অন্য বিষয় জানছে। আসলে কোনটা সত্য? মাঝে মাঝেই তারা জিজ্ঞেস করতো, ‘স্যার স্বাধীনতার ঘোষক কে?’
এরপর অনেকদিন পার হয়েছে, পাঠ্যবইগুলো অনেকবার পড়া হয়েছে। রেডিও-টেলিভিশনে বঙ্গবন্ধুর কথা শুনছে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানছে এবং শেষ পর্যন্ত আমরা হয়তো এই দেশের ছেলেমেয়েদের বিভ্রান্তি দূর করতে পেরেছি। ইদানীং আর কেউ আমার কাছে স্বাধীনতার ঘোষক কে সেটি জানতে চায় না।
২.
আগস্ট মাস বাংলাদেশের জন্য একটা অশুভ মাস। ১৯৭৫ সালে এ মাসের ১৫ তারিখ বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারীরা সেখানেই থেমে যায়নি, জেল-হত্যা করে আওয়ামী লীগকে পুরোপুরি নেতৃত্বশূন্য করার চেষ্টা করেছিল। অনেক বছর সময় নিয়ে যখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ আবার পুনর্গঠিত হয়েছে তখন ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আবার আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার চেষ্ট করেছে। শেখ হাসিনা অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছেন এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি শুধুমাত্র সে কারণেই আমরা বাংলাদেশের মাটিতে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার করতে পেরেছি। আগস্ট মাস ছাড়াও এই দেশে বোমা হামলা হয়েছে— সিপিবি’র মিটিংয়ে, উদীচীর অনুষ্ঠানে কিংবা ছায়ানটের নববর্ষের অনুষ্ঠানে। তবে সেগুলো কোনও নির্দিষ্ট মানুষকে লক্ষ্য করে হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের বড় নেতাদের হত্যা করার ঘটনা দুটিই ঘটেছে আগস্ট মাসে।
আগস্ট মাস অন্য যেকোনও মাসের মতোই নিরীহ একটা মাস হতে পারত কিন্তু সেটি হয়নি। লক্ষ্য ঠিক করে হত্যাকাণ্ডগুলো কেন বেছে বেছে আগস্ট মাসে ঘটানো হয় সে ব্যাপারে আমার নিজের এক ধরনের থিওরি আছে। বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে ঘাতক রাষ্ট্র পাকিস্তানকে পরাজিত করে। পরাজয়ের সেই অপমান পাকিস্তান যেরকম ভুলতে পারেনি, ঠিক সেরকম ভুলতে পারেনি পাকিস্তানের পদলেহী যুদ্ধাপরাধীরা। তাই তারা যখন বাংলাদেশের ওপর আঘাত হানতে চায়, তখন বেছে নিতে চায় পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসটিকে। সেটি সম্ভব না হলে অন্তত পাকিস্তানের জন্ম মাসটিকে! সেজন্য নিরীহ একটা মাস এই দেশের জন্য অশুভ একটা মাস হিসেবে চিরদিনের জন্য চিহ্নিত হয়ে গেল।
১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের কারণে আমরা মানুষের চরিত্রের আরও বিচিত্র দিকগুলো নিজের চোখে দেখার সুযোগ পেয়েছি। কথা নেই বার্তা নেই হঠাৎ একদিন আমরা সবিস্ময়ে আবিষ্কার করলাম খালেদা জিয়া এই দিনটিতে তার জন্মদিনের উৎসব পালন করতে শুরু করেছেন। শুধু তাই নয়, তার দলের লোকজন মিলে বিশাল বিছানার মতো সাইজের কেক কাটতে শুরু করেছেন! যাদের সত্যি সত্যি ১৫ আগস্ট জন্মদিন তারাও এই দিনটিতে জন্মদিনের উৎসব পালন করতে সংকোচ বোধ করেন। আমি কয়েকদিন আগে একটা ছোট্ট বাচ্চার চিঠি পেয়েছি। বাচ্চাটি আমার কাছে জানতে চেয়েছে ১৫ আগস্ট তার জন্মদিন, এই দিনটিতে তার জন্মদিন পালন করা ঠিক হবে কি না! একটি ছোট বাচ্চা যে বিষয়টি বুঝতে পারে, খালেদা জিয়া এবং তার দলের শত শত নেতা সেই বিষয়টি বুঝতে পারেন না—এর চাইতে দুঃখের ব্যাপার আর কী হতে পারে? বেঁচে থাকতে হলে আমাদের নানা কিছু দেখতে হয়, শুনতে হয় কিন্তু যে দিনটিতে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে সেই দিনটিতে নতুন করে জন্মদিন তৈরি করে বিছানার মতো সাইজের কেক কাটার মত কুরুচিপূর্ণ কিছু আমি আমার জন্মে দেখিনি। মনে হয় ভবিষ্যতেও কোনও দিন দেখব না।
বহু বছর পর এইবার খালেদা জিয়ার ‘জন্মদিনে’ বিছানার সাইজের কেক কাটা হয়নি। খবরটা শুনে আমি ভেবেছিলাম শেষ পর্যন্ত তাদের রাজনৈতিক দলটির সুমতি হয়েছে। কিন্তু পুরো খবরটা পড়ে জানতে পারলাম দেশে বন্যা, জঙ্গি হামলা, গুম, খুন, রাজনৈতিক নির্যাতন এসব চলছে বলে এই বছর উৎসবটি পালন করা হচ্ছে না। যার অর্থ বন্যার পানি নেমে গেলে, জঙ্গি হামলা না থাকলে গুম, খুন, নির্যাতন বন্ধ হয়ে গেলে ১৫ আগস্ট বিছানার মতো বড় কেক কাটতে কোনও বাধা নেই!
৩.
আমি মোটেও রাজনৈতিক বিশ্লেষক নই, রাজনীতির মারপ্যাঁচ আমার পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। কিন্তু পৃথিবীর অন্য অনেক কিছুর মতোই রাজনীতিতেও কমনসেন্স আছে এবং শুধু এই কমনসেন্স দিয়ে বুঝতে পারি মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করে এই দেশে কেউ রাজনীতি করতে পারবে না। যে জামায়াতে ইসলামী সরাসরি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে সেই জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোট করে বিএনপি নির্বাচনে জিতে এসে সরকার গঠন করেছিল। সেটি ছিল একটা খুবই বিপজ্জনক সময়—একজন বিএনপি নেতার কাছে শুনেছি সেই সময়ে রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা সরকারের কাছে তাদের একাত্তর সালের বকেয়া বেতন দাবি করেছিল! জামায়াত বিএনপি সরকার তাদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করেছিল কিনা আমার জানা নেই। সেই ভয়াবহ সময়টা আমরা পার করে এসেছি, ভবিষ্যতে যেন ভুল করেও এই দেশে এরকম ঘটনা আবার ঘটে না যায় সেটা আমাদের নিশ্চিত হওয়া দরকার। আমি বড় বড় সুশীল ব্যক্তিদের ‘গণতন্ত্র’ ‘গণতন্ত্র’ বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলতে দেখি কিন্তু সেই গণতন্ত্রটি যে হতে হবে বাংলাদেশের গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের গণতন্ত্র সেটি কাউকে বলতে দেখি না। এই দেশটি তো আমরা লটারির টিকেট কিনে কিংবা জুয়া খেলে পাইনি! রীতিমতো যুদ্ধ করে রক্ত দিয়ে পেয়েছি। কাজেই যে উদ্দেশ্য নিয়ে যুদ্ধ করা হয়েছে, রক্তের বন্যা বইয়ে দেওয়া হয়েছে সেই উদ্দেশ্যটি ভুলে গিয়ে রাজাকারদের বকেয়া বেতন দেওয়ার একটা সরকার তৈরি করার জন্য গণতন্ত্র চাইলে তো হবে না! অবশ্যই আমরা গণতন্ত্র চাই কিন্তু সেই গণতন্ত্রে সরকার গঠনের দলটিকে হতে হবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের এবং বিরোধী দলটিকেও হতে হবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের। নির্বাচনের সময় আমরা রাতে শান্তিতে ঘুমাতে চাই যেন সকালে উঠে কে নির্বাচনে জিতেছে সেটা নিয়ে আমাদের কোনও দুর্ভাবনা না থাকে। যেই সরকার গঠন করবে তাকেই হতে হবে আমাদের বাংলাদেশের সরকার, মুক্তিযুদ্ধের সরকার।
এই দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আমাদের আরও একটা বিষয় নিশ্চিত করার ব্যাপার আছে। সেটি হচ্ছে বঙ্গবন্ধুকে তার প্রাপ্য সম্মান এবং ভালোবাসাটুকু দেওয়া। পৃথিবীর কত দেশে কতো জাতীয় নেতা আছেন। তাদের দেশের মানুষ সেই জাতীয় নেতাদের সম্মান করে নিজেরা সম্মানিত হয়। পৃথিবীর সেইসব নেতার সঙ্গে যদি বঙ্গবন্ধুর তুলনা করি তাহলে অবাক বিস্ময়ে আবিষ্কার করব আমাদের বঙ্গবন্ধুর তুলনায় তাদের অনেকের অবদান রীতিমত ম্লান। সারা পৃথিবীর মাঝে একজন সর্বশ্রেষ্ঠ নেতা হচ্ছেন ফিদেল কাস্ত্রো, তিনি প্রথমবার বঙ্গবন্ধুকে দেখে তাকে জড়িয়ে ধরে বলেছিলেন: ‘আমি হিমালয়কে দেখিনি, কিন্তু শেখ মুজিবকে দেখেছি!’
এই হিমালয়কে আমাদের সারা পৃথিবীর সামনে তুলে ধরার কথা অথচ আমরা শিহরিত হয়ে আবিষ্কার করি তাকে যে শুধু সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে তা নয়, হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করা হয়েছে, বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে তার সব স্মৃতি সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কাজেই আমি মনে করি বাংলাদেশে রাজনীতি করতে চাইলে শুধু যে মুক্তিযুদ্ধকে বিশ্বাস করতে হবে তা নয়, বঙ্গবন্ধুকে তার প্রাপ্য সম্মান দিতে হবে। তার কারণ বাংলাদেশ আর বঙ্গবন্ধু আসলে সমার্থক দুটি শব্দ। বঙ্গবন্ধুকে ভালো না বেসে বাংলাদেশকে ভালোবাসা যায় না।
৪.
বঙ্গবন্ধুকে দেখার জন্যে যে টেলিভিশনটি কেনা হয়েছিল সেটি সিলেটে আমার বাসায় নেই, তাই এখন টেলিভিশন দেখা হয় না, সেটি অনেকেই জানে। টেলিভিশনে দেখার মতো কিছু থাকলে অনেকেই তার একটি লিংক পাঠায়। সেদিন একজন চ্যানেল আইয়ে কর্নেল অলি আহমদের সাক্ষাত্কারের একটা লিংক পাঠিয়েছে। লিংকে পুরো সাক্ষাত্কারটি নেই, সাক্ষাত্কারের মাঝখানে একটি মেয়ের টেলিফোনে কর্নেল অলি আহমদকে উদ্দেশ্য করে বলা কিছু প্রশ্ন, কিছু কথাবার্তা আছে। আমার মনে হয় সবারই এই মেয়েটির কথাগুলো শোনা উচিত। তার কণ্ঠস্বর শুনে তাকে কমবয়সী একজন তরুণী মনে হয়েছে; কিন্তু সে এত চমত্কারভাবে এতটুকু উত্তেজিত না হয়ে এত গুছিয়ে কথাগুলো বলেছে যে আমি মুগ্ধ হয়ে শুনেছি। আমি যদি তার বক্তব্যটুকু এখানে লেখার চেষ্টা করি তার মতো গুছিয়ে পরিষ্কারভাবে লিখতে পারব না, তাই তার চেষ্টাও করছি না।
মেয়েটির বক্তব্য শুনে বুঝতে পারলাম কর্নেল অলি আহমদ এই সাক্ষাৎকারে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে দাবি করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরবিক্রম উপাধি পাওয়া কর্নেল অলি আহমদের প্রতি পুরো সম্মান বজায় রেখে মেয়েটি তাকে অনুরোধ করেছে নির্জলা মিথ্যা বলে নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত না করার জন্যে। বঙ্গবন্ধু কবে কিভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, সেটি কিভাবে প্রচারিত হয়েছে নিউইয়র্ক টাইমসের কোন সংখ্যায় সেই ঘোষণাটির কথা ছাপা হয়েছে, মেয়েটি অলি আহমেদকে জানিয়েছে। শুধু তাই নয়, জিয়াউর রহমান ২৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণাটিতে কী বলেছেন, মেয়েটি গড়গড় করে সেটি বলে শুনিয়ে দিয়েছে। সেখানে ঘোষণাটি যে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে দেওয়া হয়েছিল সেটি মনে করিয়ে দিয়েছে, শুধু তাই নয়, ঘোষণা দেওয়া আর ঘোষণা পাঠ করার মাঝে যে দিন-রাত পার্থক্য সেটি পরিষ্কারভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে।
মেয়েটি কর্নেল অলি আহমদকে প্রশ্ন করেছে, সত্যিই যদি মেজর জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে থাকেন তাহলে সেটি কেন তারা ১৯৭২ সালে যখন স্বাধীনতার দলিলপত্র সংকলিত করা হয়েছে সেখানে বললেন না, কিংবা যখন সংবিধান লেখা হয়েছে তখন জানালেন না। কেন সেটি ১৯৯১ থেকে শুরু হলো?
আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে যখন মেয়েটি বিস্ময়কর আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলেছে আমরা নতুন প্রজন্মের মানুষ, স্বাধীনতার সব তথ্য আমাদের হাতের মুঠোয়—আমরা সব জানি! শুধু তাই নয়, কমবয়সী একটি মেয়ে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদকে উপদেশ দিয়ে বলেছে, আপনারা রাজনীতি করতে চান করুন, সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে রাজনীতি করুন, কেন আপনারা বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করতে চান?
আমি আগেই বলেছি আমি শত চেষ্টা করলেও এই নতুন প্রজন্মের তরুণীটির মতো করে বলতে পারব না। শুধু এইটুকু বলব যে, এই নতুন প্রজন্মকে দেখে, তাদের কথা শুনে মনে হয়েছে তাদের হাতে আমরা নতুন বাংলাদেশের দায়িত্ব দিয়ে পরম নির্ভরতায় বিশ্রাম নিতে পারি।
নতুন প্রজন্মকে আমি এতদিন শুধু ভালোবাসা জানিয়ে এসেছি, এখন আমি তাদের শ্রদ্ধাও জানাতে চাই!

লেখক: কথাসাহিত্যিক, শিক্ষক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

238321_1স্বাভাবিক খাবার না খেলেই মানুষ সাধারণত বাঁচে না। তবে এবার ঘটেছে অন্যরকম এক ঘটনা। ভারতের বেঙ্গালুরুর এক যুবক কিন্তু এই অদ্ভুত দাবিই করছেন। তিনি বলছেন, ১৫ বছর ধরে স্রেফ পোড়া ইঞ্জিন অয়েল এবং কাগজের ছাই খেয়ে বেঁচে আছেন তিনি।

ওই ব্যক্তির নাম কুমার। স্থানীয়দের কাছে অয়েল কুমার নামে তিনি পরিচিত। বাড়ি কর্নাটকের শিমোগায়। তার বক্তব্য, তিনি যখন খুব ছোটো, তখন বাবা-মা তাকে বেঙ্গালুরু স্টেশনে ফেলে পালান। এখন কোলার এলাকার শনিশ্বর মন্দিরের কাছে তিনি থাকেন।

কুমার জানিয়েছেন, একটা সময় বেঙ্গালুরুতে কুলির কাজ করতেন তিনি। যার অধীনে তিনি কাজ করতেন, বহুদিন কুমারকে টাকাপয়সা দেননি তিনি। একটা সময় খিদের জ্বালায় পোড়া ইঞ্জিন অয়েল খেতে তিনি বাধ্য হন। সেই শুরু। পরে শুরু করেন কাগজ পোড়ার ছাই খাওয়া। প্রথমে তার শরীরে অদ্ভুত একটা কষ্ট হত বলে জানিয়েছেন কুমার। তবে এখন তা সয়ে গেছে। এখন গোটা দিনে লিটার পাঁচেক পোড়া ইঞ্জিন অয়েল খেয়ে নিতে পারেন কুমার।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাবার না খেয়ে একজন মানুষ মোটামুটি সপ্তাহ তিনেক বেঁচে থাকতে পারে। তারপর তার বাঁচা মুশকিল।

কুমার জানিয়েছেন, সবটাই ভগবানের আশীর্বাদ। তার হাত মাথায় না থাকলে এভাবে কিছুতেই বাঁচতে পারতেন না তিনি।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

191685.2খেলাধু‌লো: রাজধানীর গুলশানে স্প্যানিশ রেস্তোরাঁ হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার ঘটনায় বাংলাদেশ সফরের নিরাপত্তা নিয়ে দ্বিধায় ছিল ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল! বাংলাদেশে সিরিজ খেলতে আসার বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলবে বলেও জানিয়েছিল তাঁরা। তখনই অনিশ্চয়তা তৈরি হয় ইংল্যান্ড বাংলাদেশ সফরে আসবে কিনা।

তাই বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গত ১৭ আগস্ট ঢাকায় আসে ইংল্যান্ডের নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রতিনিধিদল। তিন সদস্যের দলটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে গত ২০ অগস্ট ঢাকা ছেড়ে যায়।

শেষ পর্যন্ত সব শঙ্কা কেটে গেছে। বাংলাদেশ সফরে আসছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল। ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) নিশ্চিত করেছে, ইংল্যান্ডের বাংলাদেশ সফর পরিকল্পনা মতোই এগিয়ে যাবে। বৃহস্পতিবার রাতে ইএসপিএন-ক্রিকইনফো জানিয়েছে খবরটি। 

এদিন রাতে ইংল্যান্ড টেস্ট দলের অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক এউইন মরগান, ইসিবির ক্রিকেট পরিচালক অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস, ইসিবির প্রধান নির্বাহী টম হ্যারিসন এক সভায় বসেন। সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ডেভিড ল্যাথারডেল ও জন কারও। সভায় বাংলাদেশ সরকারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত জানান রেগ ডিকাসন।

সভা শেষে অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস বলেন, ‘ইংল্যান্ডের বাংলাদেশ সফর পরিকল্পনা মতোই এগিয়ে যাবে।’ অবশ্য সিরিজের শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখবে তারা।

দুটি টেস্ট ও তিনটি ওয়ানডে খেলতে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফরে আসার কথা। দিন-তারিখও ঠিক হয়েছে। ৭ ও ৯ অক্টোবর মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে প্রথম দুটি ওয়ানডে ম্যাচ। তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচটি হবে ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামে।

এরপর ২০ থেকে ২৪ অক্টোবর চট্টগ্রামে প্রথম টেস্ট এবং ঢাকায় ২৮ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর দ্বিতীয় টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest