গাজী আল ইমরান, শ্যামনগর : কাঁকড়া চাষে জীবনের চাকা ঘুরাতে কাঁকড়া নিয়ে মনের কোনে স্বপ্ন বুনছে দক্ষিণাঞ্চলের চাষিরা। এক সময় এ অঞ্চলের মানুষেরা চিংড়ি চাষের দিকে ঝুঁকেছিল ব্যাপকভাবে। কিন্ত তা থেকে আস্তে আস্তে বের হতে শুরু করেছে চাষিরা। চিংড়ি চাষ মানুষকে স্বাবলম্বী করতে পারেনি, তা বলা যাবে না। কারণ এর মাধ্যমে অনেক মানুষ তার ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে সক্ষম হয়েছে আবার বিভিন্ন দুর্যোগ ও ভাইরাসজনিত কারণে অনেকেই ফকির বনে গেছে। অর্থাৎ অনেকের জন্য এটি আশীর্বাদ হলেও অনেকের জন্য হয়ে উঠেছে অভিশাপ। অনেকের যেন একেবারই নিভু নিভু অবস্থা। সুতরাং কাঁকড়া নিয়ে মানুষ নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে। অনেকের ভাবনা চিংড়ি চাষের ক্ষতি চুকিয়ে নেবে কাঁকড়া থেকে। বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান মানুষকে কাকড়া চাষে সম্পৃক্ত করতে উদ্বুদ্ধকরণে কোন প্রকার পিছিয়ে নেই, এটা যেন মানুষের স্বপ্নের সাথে যোগ হওয়া নতুন মাত্রা। দশ পায়ের চিংড়ি প্রজাতির এই কাঁকড়া ইতিমধ্যে রপ্তানিযোগ্য পণ্য হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। ৯টি দেশে রপ্তানি হয় উপকূলীয় অঞ্চলের ১০ পা বিশিষ্ট চিংড়ি প্রজাতির কাঁকড়া। খুলনাসহ দেশের উপকূলীয় অঞ্চল থেকে প্রচুর কাকড়া আহরণ
করা হয়ে থাকে। এ অঞ্চলের প্রায় হাজার হাজার বনজীবী নারী পুরুষ কাঁকড়া আহরণ বা বিপণনের সাথে জড়িত। সংশ্লিষ্ট বনজীবীদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর, আশাশুনি, কালিগঞ্জ, দেবহাটা ও তালা উপজেলায় কাঁকড়া চাষ করা হয়ে থাকে। এইসব অঞ্চলে কাকড়া মোটাতাজাকরণ বা ফ্যাটেনিং পদ্ধতিতে চাষ করছে সংশ্লিষ্ঠ কাঁকড়া চাষিরা। থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, জাপান, ভিয়েতনাম, ইউকে, ইউএই, সৌদি-আরব, তাইওয়ান, হংকং নেদারল্যান্ড, জার্মান, ফ্রান্স, অষ্ট্রিয়া, কুয়েত, কাতার, ওমান, বাহারাইন, উগন্ডা, হন্ডুরাস, ইউএসএ ও ভারতে উপকূলীয় অঞ্চলের কাঁকড়া রপ্তানি করা হয়ে থাকে। শুধু তাই নয় বিগত দিনে কাকড়ার ক্রাভলেট অর্থাৎ বাচ্চা নদীসহ বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করতে হলেও তা এখন চলে এসেছে হাতের মুঠোয়। বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে সুন্দরবনের পাদদেশে অবস্থিত শ্যামনগর উপজেলায় সর্ব প্রথম কাকড়ার বাচ্চা ফুটিয়েছে স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান নওয়াবেকী গণমুখী ফাউন্ডেশন। যার কারণে এ অঞ্চলের কাঁকড়া চাষিদের উন্নয়নের মাত্রা অনেকাংশে বেড়ে যাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ঠরা। নওয়াবেকী গণমুখী ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায় একটি মা কাঁকড়া থেকে কুঁড়ি হাজারের বেশি বাচ্চা সংগ্রহ করা সম্ভব বলে মনে করেন তারা। তাছাড়া চাষিরা কাকড়া আহরণকারীদের কাছ থেকে প্রতিকেজি ছোট কাকড়া ৬০-৮০ টাকায় সংগ্রহ করে মোটাতাজা করেন। তিন মাসেই ওই পুরুষ কাকড়া ৪০০-৬০০ গ্রাম এবং মাদি (মহিলা) কাঁকড়া ১৮০-২৫০ গ্রাম ওজন বেড়ে যায়। একটা পরিপুষ্ট কাকড়া ৯০০শ’ থেকে হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। কাকড়া চাষি বাবুলাল মন্ডল বলেন, সাধারণত অমাবশ্যা ও পূর্ণিমার সময় কাঁকড়া ব্যাবসা জমজমাট থাকে। আবার শীত মৌসুমে মাদি কাঁকড়ার চাহিদা বেশি থাকে। তিনি আরও বলেন, আশ্বিন মাসে কাঁকড়ার চাষ শুরু হয়। দুই মাস পর পর কাঁকড়া আমরা বিক্রি করি। স্থানীয় ডিপো (কাঁকড়া বিক্রয় করা ঘর) গুলিতে কাঁকড়া কেনা বেচা হয়। মুন্সিগঞ্জ কাঁকড়া চাষি রাম কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, তিনি ১০ কাঠা জমিতে চার ভাগে ভাগ করে সারা বছর কাঁকড়া চাষ করেন, সংসারের ৫ সদস্য আর দুই ছেলেকে লেখাপড়ার খরচ যুগিয়ে যাচ্ছেন তিনি। শুধু রামকৃষ্ণ মন্ডল নয়, মুন্সীগঞ্জের অনেক লোকজনই লাভজনক কাঁকড়া চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। পুরুষের পাশাপাশি মহিলারাও স্বামীদের কাঁকড়া চাষে সহযোগিতা করে থাকেন। বুড়িগোয়ালিনি ইউনিয়নের তরুন কাকড়া চাষি হান্নান বলেন ¯œাতক পাশ করে কোন চাকুরি না হওয়ায় হতাশায় ভুগছিলাম কিন্তু বর্তমানে মনে হয় সেই হতাশা থেকে মুক্তি পেতে চলেছি। তারা চার বন্ধু মিলে কুঁড়ি হাজার কাঁকড়ার খাচায় কাঁকড়া মোটাতাজাকরণ বা ফ্যাটেনিং পদ্ধতিতে চাষ করছি, প্রথম বারেই ভাল লভ্যাংশ পেয়েছি। আশাকরি ভালো ফলাফল সম্ভব হবে এখান থেকে। এখানকার অন্যান্য চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চলতি বছরে ১১০ গ্রাম মাদি কাঁকড়া ২শ’ টাকা কেজি, ১৫০ গ্রামের মাদি কাঁকড়া ৩শ’ টাকা, ১৮০ গ্রামের মাদি কাঁকড়া ৮শ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। এ ছাড়া পুরুষ কাঁকড়া ৫শ’ গ্রামের কেজির দাম ৯শ’ টাকা, ৪ গ্রাম পুরুষ ৮শ’ টাকা, ৩শ’ গ্রাম পুরুষ ৭শ’ টাকা, এবং ২শ’ গ্রাম সাইজের কাঁকড়া ৫শ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সুতরাং, এলাকার শিক্ষিত, অশিক্ষিত বেকার যুবকেরা ব্যাপকভাবে ঝুঁকছে কাঁকড়া চাষের দিকে। কাঁকড়া উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে আরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন। এ এলাকার অন্যান্য চাষিরা বলেন, কাঁকড়া চাষ হবে এলাকার শ্রেষ্ঠ চাষÑ সে আশা বুকে নিয়েই নেমেছি। স্থানীয় কলবাড়ি বাজার রেখে বুড়িগোয়ালিনি-মুন্সিগঞ্জ রাস্তার দু’পার্শে¦ শোভা পাচ্ছে হাজার একর জমিতে কাঁকড়া চাষের প্লট। স্থানীয় মানুষদের পাশাপাশি দেশের অন্যান্য এলাকা থেকে অনেকেই এখানে এসে চাষ শুরু করেছে। কাঁকড়া চাষ কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে কাঁকড়া মজুদ কারখানা। কাঁকড়া চাষের প্লটে কর্মসংস্থান হয়েছে হাজার হাজার মানুষের।

শেখ তহিদুর রহমান ডাবলু/হাসান হাদী : সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ২০০২ সালে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলার স্বাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। এ মামলার বাদি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. মোসলেমউদ্দিন মঙ্গলবার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
তরিকুল ইসলাম লাভলু : যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক একাডেমিক স্বীকৃত সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলাধীন নলতা শরীফের ঐতিহ্যবাহী কে বি আহ্ছানউল্লা জুনিয়র হাইস্কুল (প্রাক্তন প্রি-ক্যাডেট স্কুল) ২০১৬ সালে ৫ম শ্রেণি সমাপনী ও ৮ম শ্রেণি জেএসসি’র পর ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্যাডেট কলেজের ৭ম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য দেখাতে সক্ষম হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক : সাতক্ষীরায় পুর্ব শত্রুতার জের ধরে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৬ জন গুরুতর আহত হয়েছে। আহতদের সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পাটকেলঘাটা থানার কুমিরা গ্রামে রহিম মোড়লের ছেলে আত্তাফ, আলম মোড়ল, মৃত মুন্সি মোড়লের ছেলে মোসলেম মোড়ল, রহিম মোড়ল এবং একই গ্রামের জনাব আলীর স্ত্রী আরিজান, মোক্তার আলীর ছেলে সাদ্দাম সরদার ও মৃত সোনাই মোড়লের ছেলে জনাব আলী মোড়লের সাথে বাকবিত-ার এক পর্যায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এবং উভয় পক্ষের ৬ জন গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহতদের সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সদর প্রতিনিধি, শ্যামনগর : ঐতিহাসিক ৭ ই মার্চ উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকাল ৪ টায় শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের আয়োজনে এবং উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি বাবু অসীম কুমার জোয়ার্দ্দারের সভাপতিত্বে শ্যামনগর মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডে এক জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। দিনভর বাজানো হয় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ। ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ পালন উপলক্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এ জনসভায় প্রধান অতিথি এস এম জগলুল হায়দার বলেন, ৭ ই মার্চের ঐতিহাসিক এই ভাষণটিতে বাঙালিকে স্বাধীনতা দেয়া হলেও সারা বিশ্বের মুক্তিকামী জনগণের কাছে প্রতিফলিত হয়েছে।স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা সফল হয়নি। নতুন প্রজন্ম মিথ্যা ইতিহাস গ্রহণ করেনি। নতুন প্রজন্ম নিয়ে আমাদের একটি ভূল ধারণা ছিল। কিন্তু সেই প্রজন্ম মাটি খুঁড়ে ইতিহাসের সত্য বের করে এনেছে। তারা গণজাগরণ ঘটিয়েছে। জাতির জীবনে যদি কোন সংকট তৈরি হয় এই নতুন প্রজন্ম অবশ্যই এগিয়ে আসবে। মুক্তচিন্তা ও সংস্কৃতির শক্তিতেই বাংলাদেশকে রক্ষা করবে নতুন প্রজন্ম। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্যে জেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাফরূল আলম বাবু বলেন, ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে বাঙালি জাতি স্বাধীনতার চেতনায় উজ্জীবিত হয়েছিল। মূলত এদিনই জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউল হক দোলন, যুগ্ন-সম্পাদক এ্যাড. জহুরুল হায়দার বাবু, এ সময় বক্তব্য রাখেন উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে টস হেরে ফিল্ডিং করছে বাংলাদেশ। টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন স্বাগতিক অধিনায়ক রঙ্গনা হেরাথ। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত লঙ্কানদের সংগ্রহ ২২.৩ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৬০ রান। ক্রিজে আছেন কুশল মেন্ডিস (১৯) ও দিনেশ চান্দিমাল (১)।
হাসান হাদী: আজ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ। ১৯৭১ সালের এই দিনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখনকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক জনসভায় স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দিয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার প্রাক্কালে পরাধীনতার শিকলে বন্দি বাঙালি জাতি যখন স্বাধীনতার জন্য অধীর অপেক্ষায়, তখন “গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর-কবিতাখানি/ ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম/এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। ” এমন কাব্যিক ভাষায়ই সেদিন স্বাধীনতাসংগ্রামের ডাক দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু আরো বলেছিলেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেব। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাাল্লাহ!’ দেশের জনগণকে স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রস্তুতির নির্দেশনা
দিয়ে বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে বলেছিলেন, ‘তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে…প্রত্যেক গ্রামে, প্রত্যেক মহল্লায়, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলো এবং তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো। ’