সর্বশেষ সংবাদ-
সাতক্ষীরায় রাসায়নিক দ্রব্যে পাকানো ৬ হাজার কেজি গোবিন্দভোগ আম বিনষ্টশ্যামনগরে শরীরে পেট্টোল ঢেলে হত্যা চেষ্টার অভিযোগতীব্র তাবদাহে সাতক্ষীরায় সুপেয় খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধনকালিগঞ্জে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দুর্নীতি স্বেচ্ছাচারিতা ও গ্রাহক হয়রানির প্রতিবাদে বিক্ষোভঅপরিপক্ষ আম খাদ্য হিসাবে গ্রহণে সাতক্ষীরার ডিসি’র সতর্কতাআলীপুর ইউপিতে বিএনপির বহিস্কৃত নেতা রউফ বিজয়ীআশাশুনির মরিচ্চাপ সেতুর অধিকরনকৃত জমি জবরদখল: অবৈধ স্থাপনা নির্মানের হিড়িকসাতক্ষীরায় ঘরে-বাইরে তীব্র তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত: বিপাকে নি¤œ আয়ের মানুষকালিগঞ্জে রাসায়নিক দ্রব্যে পাকানো ৪শ’ কেজি আম জব্দব্যবসায়ীকে মারধরের ঘটনার ভিডিও করায় সাংবাদিকদের মারপিটের অভিযোগ ডা; ফয়সালের বিরুদ্ধে

8cb64ced7622b6357ff28cba7d40328a-583ce2452e5c7অনলাইন ডেস্ক: বিশ্বব্যাপী মার্কিনবিরোধী সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবেই পরিচিত লাতিন আমেরিকার দেশ কিউবা। ১৯৫৯ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত অবরোধ-বৈরিতার মধ্য দিয়েই এগিয়ে চলেছে প্রয়াত বিপ্লবী ফিদেল কাস্ত্রোর দেশ। নানা কারণেই সমাজতান্ত্রিক দুনিয়ার রাজনীতিক ও অভিজ্ঞরা গিয়েছেন কাস্ত্রোর দেশে। অনেকের মতো বাংলাদেশ থেকেও ওই দেশ সফর করেছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ মেনন ও অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তারা বলেন, ফিদেলের শাসনামলেই কিউবা বিশ্বে শিক্ষা ও চিকিৎসায় অনন্য অবস্থান অর্জন করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মতো সামরিক শক্তিশালী দেশকে পাশে রেখে কেবল জনগণের ওপর ভরসা করে দেশ পরিচালনা করাই ছিল কাস্ত্রোর সফলতার মূল উপাদান।

জানতে চাইলে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘আমি যখন কিউবা যাই, তখন সেখানে মার্কিন অবরোধ প্র্যাকটেক্যালি চূড়ান্ত পর্যায়ে। শুধু মার্কিনই নয়, তারা পশ্চিমা মিত্রদের বাধ্য করছিল অবরোধ মেনে নিতে। ফলে ওই সময় তেল, চিনিসহ অন্যান্য দ্রব্য পাওয়া যায় না। আমরা যখন গেলাম, এরইমধ্যে সরকার এসব ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছে, সফলতাও পাচ্ছে। আমি বিস্ময়ের সঙ্গে দেখলাম, কিভাবে অবরোধের মধ্যেও অর্থনীতিকে সচল রাখতে হয়।’
কিউবা তিনবার সফর করেছেন ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। ১৯৯৭ সালে প্রথমবার যান। আর তৃতীয়বার ২০০০ সালে আমন্ত্রিত আন্তর্জাতিক কিউবা সংহতি সম্মেলনে অংশ নিতে সেখানে যান তিনি।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ওই সময় অবরোধের মধ্যেও স্বাস্থ্যখাতের ব্যাপ্তি ঘটেছে। নতুন নতুন ওষুধ আবিষ্কার করা হয়েছে। ওই সময় দেশটির পাড়া-মহল্লায় গেছি, মানুষের মধ্যে তীব্রভাবে সমাজতন্ত্রের পক্ষে রয়েছে। এত কষ্টের মধ্যেও কোনও অভিযোগ করছে না। শিশু ও বৃদ্ধদের খাবারের যেন অভাব যেন না হয়, সেটা তারা নিশ্চিত করেছে। ফলে, শিশু ও বৃদ্ধদের খাবারের কোনও অভাব ছিল না।’
২০০৫ সালে কিউবা সফর করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। প্রায় এক মাস তিনি সেখানে অবস্থান করেন। দেশে ফিরে তিনি ‘বিপ্লবের স্বপ্নভূমি কিউবা’ নামে একটি গ্রন্থও লেখেন। ২০০৭ সালে বইটি প্রকাশিত হয়। ওই সময় ‘অসুস্থ’ থাকায় ফিদেলের সঙ্গে আনু মুহাম্মদের দেখা হয়নি।
কিউবা সম্পর্কে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘প্রায় এক মাসের সফরে আমি কিউবার পাড়া-মহল্লা, অর্থনৈতিক অবস্থাসহ নানা বিষয় দেখেছি। মানুষের ওপর ভরসা না থাকলে যুক্তরাষ্ট্রের মতো সামরিক শক্তিশালী দেশের সঙ্গে একজন শাসকের পেরে ওঠা সম্ভব না। ফিদেল কাস্ত্রো যেটি দেখিয়েছেন। ’
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ তার এ বছরের মার্চে প্রকাশিত ‘ওবামার কিউবা সফর: কিউবায় যুক্তরাষ্ট্র, কে কাকে বদলাবে?’ শীর্ষক প্রবন্ধের একটি অংশ উদ্ধৃত করে বলেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় দানবীয় শক্তির ক্রমাগত আক্রমণ ও চক্রান্তের মুখে কিউবার টিকে থাকাই এক বিস্ময়। কিউবা শুধু টিকেই থাকেনি, পরিবেশসম্মত কৃষিব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে বিশ্বে মডেল হয়েছে। সব নাগরিকের জন্য খাদ্য, বাসস্থান, নিরাপত্তা, শিক্ষা ও চিকিৎসা নিশ্চিত করেছে।’ তিনি বলেন, ‘বর্ণবাদ, যৌনবাদের গোড়ায় আঘাত করেছে কিউবা। চিকিৎসা-প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনায় কিউবা এখন বিশ্বের ১ নম্বর দেশ। এই জ্ঞান ও সেবা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে কিউবার প্রায় ৫০ হাজার চিকিৎসক বিভিন্ন দেশে কাজ করছেন। চিকিৎসা-প্রযুক্ত খাতে মহাসম্পদশালী যুক্তরাষ্ট্র থেকেও এগিয়ে কিউবা।’
কাস্ত্রোর সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘১৯৯৭ সালে আমি প্রথম বিশ্ব আন্তর্জাতিক কিউবা সংহতি সম্মেলনে আমি গিয়েছিলাম। ওই সময় কাস্ত্রোকে সরাসরি দেখি, তার সঙ্গে ব্যক্তিগত পর্যায়ে কথা বলার সুযোগ হয়।’ তিনি জানান, ‘ওই সফরে তার সঙ্গে ব্যারিস্টার লুৎফুর রহমান, ফয়েজ আহমদসহ কয়েকজন কিউবা গিয়েছিলেন।’
শাসক হিসেবে কাস্ত্রোর প্রশংসা করে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘কিউবার মানুষ তো ফিদেল বলতে অজ্ঞান, ফিদেল তাদের ত্রাতা, ফিদেল তাদের নেতা।’ ফিদেলের সমালোচকদের সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যাদের সম্পদ জাতীয়করণ করা হয়েছে, তারাই ফিদেলের সমালোচনা করেন।’

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

shilpa-shettyবিনোদন ডেস্ক: সবাইকে সব কিছু জানতেই হবে, এমন কোনও মানে নেই। সারা পৃথিবীর সমস্ত জ্ঞান একা কোনও মানুষের পক্ষে অর্জন করা অসম্ভব। কিন্তু তাই বলে কোনও বিষয় সম্পর্কে ভালভাবে না জেনে দুমদাম মন্তব্য করাটা তো আর কাজের কাজ নয়! যদিও ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশের অধিকার প্রত্যেক মানুষেরই রয়েছে, কিন্তু সে মতামত চূড়ান্ত হাস্যকর প্রতিপন্ন হলে প্রকাশ্যে খিল্লি হওয়া কে আটকায়!

বিশ্বসাহিত্য সম্পর্কে নিজের অজ্ঞানতার প্রমাণ দিয়ে টুইটারে প্রবলভাবে হাসির খোরাক হলেন শিল্পা শেট্টি। সম্প্রতি একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত আর্টিকলে শিল্পা লেখেন যে, জর্জ অরওয়েল-এর লেখা বিখ্যাত রাজনৈতিক উপন্যাস ‘অ্যানিমাল ফার্ম’ শিশুদের পাঠ্য হওয়া উচিত কারণ এই বই পড়ে অন্যান্য জীবজন্তুর প্রতি শিশুদের স্নেহ-ভালবাসা বাড়বে।

১৯৪৫ সালে লেখা অরওয়েলের এই উপন্যাসটি বস্তুত পূর্বতন সোভিয়েত রাশিয়ায় স্তালিন জমানার একটি তীক্ষ্ণ ব্যঙ্গাত্মক সমালোচনা। যেহেতু এখানে মূল চরিত্র দু’টি শূকরছানা, শিল্পা বোধহয় তাই ভেবে বসেছেন যে এটি বাচ্চাদের বই। পৃথিবীতে তিন ধরনের বই-পড়িয়ে রয়েছেন— একদল যাঁরা মন দিয়ে পুরো বইটি পড়েন, দ্বিতীয় দল যাঁরা বইয়ের কয়েকটি পাতা পড়ে বাকিটা আপন মনের মাধুরী মিশায়ে কল্পনা করে নেন এবং তৃতীয় দল, যাঁরা বইয়ের ব্যাককভারে লেখা সিনপসিস পড়ে ও এদিক-ওদিক থেকে বই সংক্রান্ত আর্টিকল-সমালোচনা পড়ে বইবোদ্ধা হয়ে ওঠেন।

শিল্পা রয়েছেন দ্বিতীয় দলে এবং সেটাই সবচেয়ে ভয়ানক ওঁর পক্ষে তো বটেই এবং ওঁর সন্তানসন্ততি ও কাছের মানুষের পক্ষেও যাঁরা ওঁর কাছ থেকেই জীবনের নানা দিক সম্পর্কে শিক্ষিত হন। নিজের অশিক্ষা তিনি এইভাবে তাঁর কাছের মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে দিচ্ছেন। শিল্পার এই বিখ্যাত উক্তি সংবাদপত্রে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই টুইটারে ‘শিল্পা শেট্টি রিভিউজ’ নামে একটি হ্যাশট্যাগ তৈরি হয়েছে। এই হ্যাশট্যাগ দিয়ে বিশ্বসাহিত্যের বহু নামকরা উপন্যাস সম্পর্কে শিল্পার সম্ভাব্য মন্তব্য পোস্ট করছেন বহু মানুষ। নীচে রইল তার কিছু নমুনা।

এই গোটা বিষয়টি শিল্পার নজরে না পড়ুক, তাঁর কানে নিশ্চয়ই গিয়েছে। তাঁর চক্ষুলজ্জা থাকলে তিনি তাঁর অজ্ঞানতার কথা স্বীকার করে অন্তত একটা টুইট করতেন। কিন্তু বাবা রামদেবের সাক্ষাৎ শিষ্যা শিল্পা সেসবের ধার ধারেন না এবং তাই টুইটার কমিউনিটির ব্যঙ্গবিদ্রুপের হাত থেকেও তাঁর নিস্তার নেই।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

2ডেস্ক রিপোর্ট: ৭৬৭ বাংলাদেশিসহ ৯৩৬ জন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করেছে দেশটির ইমিগ্রেশন পুলিশ।
গত রবিবার দিনভর সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে মালয়েশিয়ার সমুদ্রতীরের পোর্ট ডিকসনের ঝিমা থেকে এদের আটক করা হয়। বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে অবৈধ অভিবাসীদের আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নেগারি সিম্বিলানের ইমিগ্রেশন পরিচালক হাপযান হোসেনি।

আটককৃতদের মধ্যে ৭৬৭ বাংলাদেশি ছাড়াও আছে পাকিস্তানের ৮০ জন, ভারতের ৫০, ইন্দোনেশিয়ার ২২, শ্রীলঙ্কার ১৩, মিয়ানমারের তিন এবং নেপালের একজন। আটককৃতরা সবাই অবৈধ অভিবাসী উল্লেখ করে হাপযান হোসেনি বলেন, ‘আটক হওয়া এসব অবৈধ অভিবাসীর কাছে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করার বৈধ কাগজপত্র ছিল না। তারা সবাই নির্ধারিত সময়ের পরও মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছিলেন।

মালয়েশিয়ায় অবৈধভাবে বসবাসরত বিদেশি শ্রমিকদের বৈধ হওয়ার জন্য রি-হায়ারিং কর্মসূচি চালু করা হয়েছিল। কিন্তু খুব কম সংখক অবৈধ অভিবাসী এই কর্মসূচির আওতায় এসেছেন। এর ধারাবাহিকতায় মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশনের পক্ষ থেকে অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে আবার বিশেষ অভিযান শুরু করে।’ এদিকে সাঁড়াশি অভিযান শুরু হওয়ার আগেই পালিয়ে বেড়াচ্ছেন অবৈধ অভিবাসীরা। গত কয়েক বছরের মধ্যে মালয়েশিয়ায় এটিই সবচেয়ে বড় অবৈধ অভিবাসী বিরোধী অভিযান হতে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

01b573a6236c00ff79a34c6a4714ad19-583c9c1b77e68নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘যে রাজা আগে পুরো বাড়িতে রাজত্ব করে বেড়াতো, বাড়ি জুড়ে যে চঞ্চল পায়ে ঘুরে বেড়াতো সেই রাজা এখন একেবারেই চুপ। এক কথা কয়েকবার জিজ্ঞেস করলে জবাব দেয়, আর কাটা হাত, কাটা পায়ের দিকে তাকিয়ে থাকে। ছেলের এ তাকানো আমাদের অন্তর খালি করি দেয়!’ – বলছিলেন সাতক্ষীরার নলতা উপজেলার মাছ ব্যবসায়ী মো. মোকাররম হোসেন। তিনি জানান, আসল পা হারালেও কৃত্রিম পা নিয়ে ছেলে বাড়ি যেতে পারছে, এতেই খুশী রাজার পরিবার।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের চারতলায় দাঁড়িয়ে মোকাররম হোসেন আরও বলেন, ‘১১ হাজার ভোল্টেজের তারে জড়াইয়া আমার ছেলেটা আজ হাত-পা হারা।’
বার্ন ইউনিটের চার তলায় প্রকল্প পরিচালক ডা. সামন্ত লাল সেনের কক্ষে ঢুকতেই দেখা গেল, ডান হাত আর বাম পা হারানো শিশু রাজা বসে আছে চেয়ারে। আর বাবা মোকাররম হোসেন ছেলে রাজার বাম পায়ে কৃত্রিম পা পরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন। আর তাকে সাহায্য করছেন আরেক ছেলে বাদশা। একসময় রাজার বাম পায়ে কৃত্রিম পা পরিয়ে ছেলেকে হাঁটানোর চেষ্টাও করেন তিনি। গুটি গুটি পায়ে কৃত্রিম পা নিয়ে রাজা হেঁটে চলে, তবে তার মুখে নেই হাসি আর মায়ের চোখ তখন জলে ভরা। কৃত্রিম পা নিয়ে ভাইয়ের হাঁটার দৃশ্য মোবাইলে ক্যামেরাবন্দি করছিল রাজার বড় ভাই, ১০ বছরের বাদশা।
রাজার হাত এবং পা কি করে দুর্ঘটনায় পড়লো, জানতে চাইলে বাবা মোকাররম হোসেন বলেন, ‘গত কুরবানির ঈদের দুইদিন আগে ছেলেটা সবার অগোচরে নানা বাড়ির ছাদে ওঠে, সেখানেই এ দুর্ঘটনা ঘটে। হঠাৎ এক ভ্যানওয়ালার চিৎকার শুনি, কার ছেলে তারে আটকাইয়া আছে। দৌড়াইয়া ছাদে গিয়া দেখি, আমারই ছেলে- আমার রাজা তারে জড়াইয়া আছে। তক্তা (কাঠ) দিয়ে পিটায়ে ছেলেকে ছাড়াইলাম, তখন ছেলের দম ছিল কী ছিল না। তারপর নলতা হাসপাতাল, সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অ্যাম্বুলেন্সে করে সাতক্ষীরা গেলাম। কিন্তু সেখানেও ডাক্তাররা বললো, তারা কিছু করতে পারবে না। সেখান থেকে খুলনা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানো হলো। কিন্তু সেখানেও তার চিকিৎসা করানো গেল না। সেদিনই ঢাকায় চলে এলাম ছেলেকে নিয়ে।’
‘কিন্তু ডান হাত এবং বাম পায়ের অবস্থা খারাপ হওয়াতে এখানে তার অপারেশন করে সেগুলো কেটে ফেলতে বাধ্য হন চিকিৎসকরা। এখানে আসার পর ডাক্তাররা খুব গুরুত্ব দিয়ে আমার ছেলের চিকিৎসা করছেন।’ বলেই কেঁদে ফেলেন পাঁচ সন্তানের জনক মোকাররম হোসেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এখানকার ডাক্তাররা আমার ছেলের জন্য যা করছে, তাতে আমি তাদের কাছে সারাজীবনের জন্য কৃতজ্ঞ হয়ে থাকলাম, তাদের ঋণ আমি কোনওদিন শোধ করতে পারবো না। অনেক ওষুধ আমরা ফ্রি পাইছি, আর শেষে একটা পা (কৃত্রিম পা) দিয়েও সাহায্য করছেন স্যার (ডা. সামন্ত লাল সেন)। মোকাররম হোসেন যখন কাঁদছেন, তখন পাশেই তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগমও চোখ মুছছিলেন।
মোকাররম হোসেন বলেন, ‘আমি খুবই গরীব মানুষ। গত তিন মাস এখানে ছিলাম,একদিনের জন্যও ছেলেকে রেখে দেশে যাইনি, ব্যবসাপাতি সব গেছে। এখন ভিক্ষা করা ছাড়া আমার কোনও গতি নাই। কী করে বউ-বাচ্চা নিয়ে দিনাতিপাত করবো সেটাই চিন্তা।’
রবিবার রাজাকে হাসপাতাল থেকে ডিসচার্জ করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “কৃত্রিম পা দিয়ে সে এখন হাঁটতে পারবে, সমাজে ছেলেটাকে ‘খোড়া’ বলে পরিচিত হতে হবে না।”
কৃত্রিম পায়ের মতো ডান হাতও লাগানো যাবে, কিন্তু সেজন্য অনেক টাকা প্রয়োজন, যা রাজার পরিবারের নেই। মোকাররম হোসেন বলেন, ‘একটা হাত লাগাতে অন্তত ২ লাখ টাকা প্রয়োজন। দেশের এতো এতো ধনী, কেউ যদি আমার ছেলেকে একটা হাত লাগানোর টাকা দিতো, তাহলে ছেলেটা কিছু করে খেতে পারতো। নয়তো এক হাত দিয়া এই ছেলে কীভাবে জীবন কাটাবে আর আমরাই বাবা-মা হিসেবে সেটা কেমনে দেখমু।’
ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে দেশের অনেক মানুষ এভাবে অঙ্গহারা হচ্ছে। গত ২০ বছর ধরে সমাজের অনেকেই আমাকে ব্যক্তিগতভাবে সাহায্য করেছে এসব মানুষদের জন্য কৃত্রিম অঙ্গ দিয়ে। আমি কেবল এখানে একটি সেতুবন্ধনের কাজ করেছি রাজাকে কৃত্রিম পা দিয়ে। তবে আরও মানুষেরা যদি এসব মানুষের সহায়তায় বার্ন ইউনিটে কৃত্রিম হাত-পা কিনে দিয়ে সহযোগিতা করতো, তাহলে এসব মানুষেরা সামাজিকভাবে একটু হলেও ভালো থাকতো, ভালো থাকতো নিজেদের জীবনেও।’

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

f0bc4dbca9454dcf70cff18bb80233f0-583b1480a6afaন্যাশনাল ডেস্ক: বাংলাদেশের জামদানি, নকশিকাঁথা ও ফজলি আমসহ ৬৬টি পণ্যের প্যাটেন্ট করে নিয়েছে ভারত। ভৌগলিক নির্দেশক বা জিওগ্রাফিক্যাল আইনের (জিআই) মাধ্যমে নিজেদের দাবি করে ভারত এসব পণ্যের প্যাটেন্ট করে নিয়েছে। এর মধ্যে ঐতিহ্যবাহী জামদানিকে অন্ধ্র প্রদেশের ‘উপ্পাদা’ জামদানি হিসেবে, নকশিকাঁথাকে পশ্চিম বাংলার পণ্য হিসেবে এবং বাংলাদেশের চিরচেনা ফজলি আমকে পশ্চিম বাংলার মালদা জেলার অধীনে প্যাটেন্ট করিয়েছে। ভারত জিআইয়ের অধীনে রেজিস্ট্রার খুলেছে। যার মাধ্যমে পণ্যগুলো প্যাটেন্ট করিয়েছে। এছাড়া ভারত চেন্নাইয়ের অধীনে আরও ১৫৮টি পণ্যের তালিকা তৈরি করেছে প্যাটেন্ট করানোর জন্য। এ অবস্থায়  প্রশ্ন উঠেছেÑ প্যাটেন্ট আগ্রাসী ভারতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজস্ব পণ্যের প্যাটেন্ট রক্ষায় কী করবে বাংলাদেশ? এ প্রসঙ্গে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র শিল্প সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘পণ্যের প্যাটেন্ট রক্ষায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে জিআই আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব জিআই পণ্যের নিবন্ধন দেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের প্রথম ভৌগলিক নির্দেশক জিআই পণ্য হিসেবে জামদানিকে নিবন্ধন দেওয়ার সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। দেশের প্রথম জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধন পেয়েছে জামদানি।
সম্প্রতি বিসিক চেয়ারম্যান মুশতাক হাসান মুহ. ইফতিখারের হাতে এ নিবন্ধন সনদ তুলে দেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। বিসিকের আবেদনের ফলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদফতর (ডিপিডিটি) জামদানিকে এ নিবন্ধন দেয়। এর পরপরই ইলিশ নিবন্ধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ফলে বাংলাদেশের জিআই পণ্যের সুরক্ষা এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে এর সুফল পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র। জামদানির পর বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশকে ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য সম্প্রতি মৎস্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে ডিপিডিটিতে নিবন্ধনের আবেদন করা হয়েছে। গত ১৩ নভেম্বর শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র শিল্প সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার কাছে শিল্প মন্ত্রণালয়ে মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. সৈয়দ আরিফ আজাদ আবেদনপত্র জমা দেন। এটি বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন। আশা করা হচ্ছে, সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে শিগগিরই ইলিশও জিআই নিবন্ধন সনদ লাভ করবে। এর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে উৎপাদিত জিআই পণ্যগুলো দ্রুত শনাক্ত করে নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ব মেধাসম্পদ সংস্থার (ডব্লিউআইপিও) সহায়তায় ‘ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন, ২০১৩’ এবং ‘ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য বিধিমালা, ২০১৫’ প্রণয়নের পরই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ গৌরবময় অর্জনকে সংরক্ষণ করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় সরকার জিআই পণ্য হিসেবে জামদানিকে নিবন্ধনের উদ্যোগ নেয়। এ লক্ষ্যে  ডব্লিউআইপিও’রর সহায়তায় এ’দুটি  আইন  প্রণয়ন করা হয়। এর ভিত্তিতেই বাংলাদেশ জামদানির মালিকানা স্বত্ব ও নিবন্ধন করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বে বাংলাদেশের যে কয়টি পণ্য সুপরিচিত, জামদানি এর অন্যতম। এটি বাঙালির ঐতিহ্যবাহী পণ্য মসলিনের পঞ্চম সংস্করণ। একে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে নিবন্ধনের মাধ্যমে ঐতিহ্য সুরক্ষার পথে বাংলাদেশ একধাপ এগিয়ে গেল। পর্যায়ক্রমে জাতীয় মাছ ইলিশসহ অন্য ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যকেও নিবন্ধন দেওয়া হবে। এর ফলে অর্থনৈতিক অগ্রগতির পাশাপাশি ঐতিহ্যগত সম্পদ সুরক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, কোনও পণ্য জিআই হিসেবে নিবন্ধন পেতে হলে ওই পণ্য সংশ্লিষ্ট দেশের যে সীমানা বা ভূখ-ে উদ্ভূত বা তৈরি হয়েছে, তার প্রমাণ হাজির করতে হয়। পাশাপাশি ওই পণ্য যে সংশ্লিষ্ট এলাকার বিশেষ বৈশিষ্ট্যম-িত, তারও ঐতিহাসিক ও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দাখিল করতে হয়। সরকার প্রমাণ করেছে, ঐতিহ্যগতভাবেই জামদানি বাংলাদেশের নিজস্ব পণ্য। এজন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা বাংলাদেশের জামদানির কয়েক শ বছরের পুরনো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে। জামদানি যে শুধু বাংলাদেশেরই নিজস্ব পণ্য এ সংক্রান্ত বিভিন্ন গবেষণালব্ধ ফল তুলে ধরা হয়েছে। একইভাবে ইলিশেরও। বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই ইলিশ রয়েছে। ইলিশ ভারতেও রয়েছে। তবে বাংলাদেশের পদ্মার ইলিশের জিআই স্বত্ব শুধুই বাংলাদেশের। তবে ভারত যে ইলিশের জিআই স্বত্ব নিয়েছে, তা ভারতের সীমানার ভেতরে গঙ্গার ইলিশের।
জানা গেছে, ভারত জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেটর (জিআই) নামের আইনের অধীনে রেজিস্ট্রার খুলেছে। যার মাধ্যমে জামদানি, নকশিকাঁথা, ফজলি আমসহ ৬৬টি পণ্যের প্যাটেন্ট করে নিয়েছে দেশটি। বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) সব সদস্য দেশকে ট্রেড রিলেটেড ইনটেলিকচ্যুয়াল প্রোপারটি রাইট’স (ট্রিপস) চুক্তির আওতায় এটি খুলতে হয়। চুক্তির ২২, ২৩ ও ২৪ ধারায় লেখা আছে, প্রতিটি দেশ জিআই অ্যাক্ট ১৯৯৯-এর আওতায় তার দেশের জনপ্রিয়, এক্সট্রা অর্ডিনারি ও স্বতন্ত্র পণ্যগুলোকে প্যাটেন্ট ও সংরক্ষণ করতে পারবে। এই চুক্তির আওতায় ভারত এই ৬৬টি পণ্য প্যাটেন্ট করিয়েছে। তারা চেন্নাইয়ের অধীনে আরও ১৫৮ টি পণ্যের তালিকা তৈরি করেছে প্যাটেন্ট করানোর জন্য।
মেধাস্বত্ব মালিকানা হারানোর ফলে ভবিষ্যতে ট্রিপস চুক্তির বাস্তবায়ন শুরু হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশের জামদানি ও নকশিকাঁথার উৎপাদন ও বিপণন। এর ফলে বাংলাদেশের জীববৈচিত্য ও সাংস্কৃতিক পণ্য পেটেন্ট আগ্রাসনের শিকার হবে। গত দুই দশক ধরেই পশ্চিমা বিশ্বের বহুজাতিক কোম্পানিগুলো যেমন মনসেন্টো, ইউনিলিভার, ডুপন্ট তৃতীয় বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী লোকায়ত জ্ঞান, প্রাণ বৈচিত্য তথা জেনেটিক সম্পদকে অবৈধভাবে পেটেন্ট করে নিয়েছে। এসবের ওপর তাদের নিরঙ্কুশ মালিকানা প্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। এ ধরনের পেটেন্ট আগ্রাসনের সুযোগ করে দিয়েছে বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার ট্রিপস চুক্তির ২৭.৩ (খ) ধারা। যেখানে দুনিয়ার সব প্রাণ ও প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার ওপর পেটেন্ট করার বৈধ অধিকার রাখা হয়েছে। ব্যাবসায়িকভাবে অবাধ মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে এই মেধাস্বত্ব অধিকার।
নিপুণ কারুকার্য ও বাহারি নকশার ফলে বাংলাদেশের জামদানি দেশের গ-ি পেরিয়ে বিদেশেও সমাদৃত হচ্ছে। চাহিদার আলোকে ঐতিহ্যবাহী এ শিল্পকর্মে এসেছে গুণগত পরিবর্তন। ফলে এ শিল্পে পণ্য বৈচিত্য করণের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এখন পাঞ্জাবি, ফতুয়া, মানিব্যাগ, রুমাল ও হাত ব্যাগে জামদানির নকশা ব্যবহার হচ্ছে। মেয়েদের বিভিন্ন পোশাক, টেবিল ক্লথ ও অন্যান্য পণ্য তৈরিতেও জামদানি কাপড় ব্যবহৃত হচ্ছে। বর্তমানে এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি জামদানি শাড়ি ও বস্ত্র রফতানি হচ্ছে।
জামদানি শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে ৬৮ হাজারেরও বেশি মানুষ সম্পৃক্ত। দেশে প্রতি বছর ২ লাখ পিসেরও বেশি জামদানি শাড়ি উৎপাদিত হচ্ছে। ইউনেস্কোর উদ্যোগে আজারবাইজানের বাকুতে অনুষ্ঠিত ইন্টারগভর্নমেন্ট কমিটির অষ্টম সম্মেলনে ১০০টি দেশের প্রতিনিধিরা তাদের ঐতিহ্যবাহী পণ্য নিয়ে অংশ গ্রহণ করে। প্রদর্শিত পণ্যগুলোর মধ্য থেকে ইউনেস্কোর জুরিবোর্ড ৭টি ঐতিহ্যবাহী পণ্যকে ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজ এর তালিকাভুক্ত করে। যার মধ্যে জামদানি অন্যতম।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, ধীরে ধীরে জামদানি শিল্পখাত হতে হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পৃষ্ঠপোষকতায় বর্তমানে জামদানি শিল্প একটি পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। কারুশিল্পীদের মাঝে নকশা বিতরণ, প্রশিক্ষণ, ঋণ সহায়তা, বিপণনের অবকাঠামো তেরি ইত্যাদির মাধ্যমে বিসিক এ শিল্পের  ক্রমোন্নতির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
এদিকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র শিল্প সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘বর্তমান সরকার জিআই পণ্যসহ মেধাসম্পদের মালিকানা সুরক্ষায় ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। জিআই পণ্যের মালিকানা স্বত্ব ও নিবন্ধনের লক্ষ্যে ডব্লিআইপিও’র সহায়তায় ইতোমধ্যে  জিআই আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের অন্যান্য জিআই পণ্যকেও নিবন্ধন দেওয়া হবে।’
জামদানি, নকশিকাঁথা ও ফজলি আমসহ ৬৬টি পণ্যের প্যাটেন্ট
আগ্রাসী ভারত, কী করবে বাংলাদেশ?
ন্যাশনাল ডেস্ক: বাংলাদেশের জামদানি, নকশিকাঁথা ও ফজলি আমসহ ৬৬টি পণ্যের প্যাটেন্ট করে নিয়েছে ভারত। ভৌগলিক নির্দেশক বা জিওগ্রাফিক্যাল আইনের (জিআই) মাধ্যমে নিজেদের দাবি করে ভারত এসব পণ্যের প্যাটেন্ট করে নিয়েছে। এর মধ্যে ঐতিহ্যবাহী জামদানিকে অন্ধ্র প্রদেশের ‘উপ্পাদা’ জামদানি হিসেবে, নকশিকাঁথাকে পশ্চিম বাংলার পণ্য হিসেবে এবং বাংলাদেশের চিরচেনা ফজলি আমকে পশ্চিম বাংলার মালদা জেলার অধীনে প্যাটেন্ট করিয়েছে। ভারত জিআইয়ের অধীনে রেজিস্ট্রার খুলেছে। যার মাধ্যমে পণ্যগুলো প্যাটেন্ট করিয়েছে। এছাড়া ভারত চেন্নাইয়ের অধীনে আরও ১৫৮টি পণ্যের তালিকা তৈরি করেছে প্যাটেন্ট করানোর জন্য। এ অবস্থায়  প্রশ্ন উঠেছেÑ প্যাটেন্ট আগ্রাসী ভারতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজস্ব পণ্যের প্যাটেন্ট রক্ষায় কী করবে বাংলাদেশ? এ প্রসঙ্গে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র শিল্প সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘পণ্যের প্যাটেন্ট রক্ষায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে জিআই আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব জিআই পণ্যের নিবন্ধন দেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের প্রথম ভৌগলিক নির্দেশক জিআই পণ্য হিসেবে জামদানিকে নিবন্ধন দেওয়ার সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। দেশের প্রথম জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধন পেয়েছে জামদানি।
সম্প্রতি বিসিক চেয়ারম্যান মুশতাক হাসান মুহ. ইফতিখারের হাতে এ নিবন্ধন সনদ তুলে দেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। বিসিকের আবেদনের ফলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদফতর (ডিপিডিটি) জামদানিকে এ নিবন্ধন দেয়। এর পরপরই ইলিশ নিবন্ধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ফলে বাংলাদেশের জিআই পণ্যের সুরক্ষা এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে এর সুফল পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র। জামদানির পর বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশকে ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য সম্প্রতি মৎস্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে ডিপিডিটিতে নিবন্ধনের আবেদন করা হয়েছে। গত ১৩ নভেম্বর শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র শিল্প সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার কাছে শিল্প মন্ত্রণালয়ে মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. সৈয়দ আরিফ আজাদ আবেদনপত্র জমা দেন। এটি বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন। আশা করা হচ্ছে, সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে শিগগিরই ইলিশও জিআই নিবন্ধন সনদ লাভ করবে। এর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে উৎপাদিত জিআই পণ্যগুলো দ্রুত শনাক্ত করে নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ব মেধাসম্পদ সংস্থার (ডব্লিউআইপিও) সহায়তায় ‘ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন, ২০১৩’ এবং ‘ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য বিধিমালা, ২০১৫’ প্রণয়নের পরই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ গৌরবময় অর্জনকে সংরক্ষণ করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় সরকার জিআই পণ্য হিসেবে জামদানিকে নিবন্ধনের উদ্যোগ নেয়। এ লক্ষ্যে  ডব্লিউআইপিও’রর সহায়তায় এ’দুটি  আইন  প্রণয়ন করা হয়। এর ভিত্তিতেই বাংলাদেশ জামদানির মালিকানা স্বত্ব ও নিবন্ধন করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বে বাংলাদেশের যে কয়টি পণ্য সুপরিচিত, জামদানি এর অন্যতম। এটি বাঙালির ঐতিহ্যবাহী পণ্য মসলিনের পঞ্চম সংস্করণ। একে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে নিবন্ধনের মাধ্যমে ঐতিহ্য সুরক্ষার পথে বাংলাদেশ একধাপ এগিয়ে গেল। পর্যায়ক্রমে জাতীয় মাছ ইলিশসহ অন্য ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যকেও নিবন্ধন দেওয়া হবে। এর ফলে অর্থনৈতিক অগ্রগতির পাশাপাশি ঐতিহ্যগত সম্পদ সুরক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, কোনও পণ্য জিআই হিসেবে নিবন্ধন পেতে হলে ওই পণ্য সংশ্লিষ্ট দেশের যে সীমানা বা ভূখ-ে উদ্ভূত বা তৈরি হয়েছে, তার প্রমাণ হাজির করতে হয়। পাশাপাশি ওই পণ্য যে সংশ্লিষ্ট এলাকার বিশেষ বৈশিষ্ট্যম-িত, তারও ঐতিহাসিক ও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দাখিল করতে হয়। সরকার প্রমাণ করেছে, ঐতিহ্যগতভাবেই জামদানি বাংলাদেশের নিজস্ব পণ্য। এজন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা বাংলাদেশের জামদানির কয়েক শ বছরের পুরনো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে। জামদানি যে শুধু বাংলাদেশেরই নিজস্ব পণ্য এ সংক্রান্ত বিভিন্ন গবেষণালব্ধ ফল তুলে ধরা হয়েছে। একইভাবে ইলিশেরও। বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই ইলিশ রয়েছে। ইলিশ ভারতেও রয়েছে। তবে বাংলাদেশের পদ্মার ইলিশের জিআই স্বত্ব শুধুই বাংলাদেশের। তবে ভারত যে ইলিশের জিআই স্বত্ব নিয়েছে, তা ভারতের সীমানার ভেতরে গঙ্গার ইলিশের।
জানা গেছে, ভারত জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেটর (জিআই) নামের আইনের অধীনে রেজিস্ট্রার খুলেছে। যার মাধ্যমে জামদানি, নকশিকাঁথা, ফজলি আমসহ ৬৬টি পণ্যের প্যাটেন্ট করে নিয়েছে দেশটি। বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) সব সদস্য দেশকে ট্রেড রিলেটেড ইনটেলিকচ্যুয়াল প্রোপারটি রাইট’স (ট্রিপস) চুক্তির আওতায় এটি খুলতে হয়। চুক্তির ২২, ২৩ ও ২৪ ধারায় লেখা আছে, প্রতিটি দেশ জিআই অ্যাক্ট ১৯৯৯-এর আওতায় তার দেশের জনপ্রিয়, এক্সট্রা অর্ডিনারি ও স্বতন্ত্র পণ্যগুলোকে প্যাটেন্ট ও সংরক্ষণ করতে পারবে। এই চুক্তির আওতায় ভারত এই ৬৬টি পণ্য প্যাটেন্ট করিয়েছে। তারা চেন্নাইয়ের অধীনে আরও ১৫৮ টি পণ্যের তালিকা তৈরি করেছে প্যাটেন্ট করানোর জন্য।
মেধাস্বত্ব মালিকানা হারানোর ফলে ভবিষ্যতে ট্রিপস চুক্তির বাস্তবায়ন শুরু হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশের জামদানি ও নকশিকাঁথার উৎপাদন ও বিপণন। এর ফলে বাংলাদেশের জীববৈচিত্য ও সাংস্কৃতিক পণ্য পেটেন্ট আগ্রাসনের শিকার হবে। গত দুই দশক ধরেই পশ্চিমা বিশ্বের বহুজাতিক কোম্পানিগুলো যেমন মনসেন্টো, ইউনিলিভার, ডুপন্ট তৃতীয় বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী লোকায়ত জ্ঞান, প্রাণ বৈচিত্য তথা জেনেটিক সম্পদকে অবৈধভাবে পেটেন্ট করে নিয়েছে। এসবের ওপর তাদের নিরঙ্কুশ মালিকানা প্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। এ ধরনের পেটেন্ট আগ্রাসনের সুযোগ করে দিয়েছে বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার ট্রিপস চুক্তির ২৭.৩ (খ) ধারা। যেখানে দুনিয়ার সব প্রাণ ও প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার ওপর পেটেন্ট করার বৈধ অধিকার রাখা হয়েছে। ব্যাবসায়িকভাবে অবাধ মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে এই মেধাস্বত্ব অধিকার।
নিপুণ কারুকার্য ও বাহারি নকশার ফলে বাংলাদেশের জামদানি দেশের গ-ি পেরিয়ে বিদেশেও সমাদৃত হচ্ছে। চাহিদার আলোকে ঐতিহ্যবাহী এ শিল্পকর্মে এসেছে গুণগত পরিবর্তন। ফলে এ শিল্পে পণ্য বৈচিত্য করণের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এখন পাঞ্জাবি, ফতুয়া, মানিব্যাগ, রুমাল ও হাত ব্যাগে জামদানির নকশা ব্যবহার হচ্ছে। মেয়েদের বিভিন্ন পোশাক, টেবিল ক্লথ ও অন্যান্য পণ্য তৈরিতেও জামদানি কাপড় ব্যবহৃত হচ্ছে। বর্তমানে এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি জামদানি শাড়ি ও বস্ত্র রফতানি হচ্ছে।
জামদানি শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে ৬৮ হাজারেরও বেশি মানুষ সম্পৃক্ত। দেশে প্রতি বছর ২ লাখ পিসেরও বেশি জামদানি শাড়ি উৎপাদিত হচ্ছে। ইউনেস্কোর উদ্যোগে আজারবাইজানের বাকুতে অনুষ্ঠিত ইন্টারগভর্নমেন্ট কমিটির অষ্টম সম্মেলনে ১০০টি দেশের প্রতিনিধিরা তাদের ঐতিহ্যবাহী পণ্য নিয়ে অংশ গ্রহণ করে। প্রদর্শিত পণ্যগুলোর মধ্য থেকে ইউনেস্কোর জুরিবোর্ড ৭টি ঐতিহ্যবাহী পণ্যকে ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজ এর তালিকাভুক্ত করে। যার মধ্যে জামদানি অন্যতম।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, ধীরে ধীরে জামদানি শিল্পখাত হতে হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পৃষ্ঠপোষকতায় বর্তমানে জামদানি শিল্প একটি পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। কারুশিল্পীদের মাঝে নকশা বিতরণ, প্রশিক্ষণ, ঋণ সহায়তা, বিপণনের অবকাঠামো তেরি ইত্যাদির মাধ্যমে বিসিক এ শিল্পের  ক্রমোন্নতির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
এদিকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র শিল্প সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘বর্তমান সরকার জিআই পণ্যসহ মেধাসম্পদের মালিকানা সুরক্ষায় ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। জিআই পণ্যের মালিকানা স্বত্ব ও নিবন্ধনের লক্ষ্যে ডব্লিআইপিও’র সহায়তায় ইতোমধ্যে  জিআই আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের অন্যান্য জিআই পণ্যকেও নিবন্ধন দেওয়া হবে।’

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

f636107c8713b8d408438a7042437092-nazmul-miraz-jpgttস্পোর্টস ডেস্ক: এমনিতে মিরপুরের দ্বিতীয় ম্যাচে খুব একটা রান-বন্যা দেখা যায় না। রাজশাহীর দেওয়া ১২৯ রানও যে রংপুরের সামনে বিরাট বাধা হয়ে যাবে, অনুমান করা যাচ্ছিল। মিরাজ-নাজমুলদের ঘূর্ণিতে সেটি হলোও। রংপুর লক্ষ্যে পৌঁছাবে কী, ব্যাটসম্যানরা সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকল যাওয়া-আসায়।
সৌম্য সরকারকে স্টাম্পড করে রংপুরের ধস শুরু মিরাজের হাতে। রাজশাহী অলরাউন্ডার পরে তুলে নেন নাসির জামশেদকেও। তবে রংপুরের ব্যাটসম্যানদের কাছে সবচেয়ে বেশি দুর্বোধ্য হয়েছে নাজমুলের বোলিং। রাজশাহীর বাঁহাতি স্পিনার ৪ ওভারে ১ মেডেন ৮ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে মিরাজকে দেখা গেছে দুর্দান্ত বোলার হিসেবে। বিপিএলেও তাঁকে শুধু বোলার হিসেবেই দেখা যাচ্ছে। তবে অনেক দিন পর ব্যাটসম্যান মিরাজকে দেখা গেছে আজ। আগের ৯ ম্যাচে ৬ ইনিংসে মিরাজের রান ২০। হয়তো ব্যাটিং অর্ডারে বারবার পরিবর্তন আর ম্যাচ-পরিস্থিতির কারণেই আগের ম্যাচগুলোয় ব্যাটসম্যান মিরাজকে দেখা যায়নি।
রাজশাহীর বিপর্যয়ই ব্যাটিংয়ের সুযোগ করে দিয়েছে মিরাজকে! যখন তিনি ব্যাটিংয়ে নামেন ৮.৪ ওভারে ৪১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে রাজশাহী। তাঁর সামনেই ফিরে যান দলের অন্যতম ভরসা সাব্বির রহমান। চ্যালেঞ্জিং স্কোর হবে কী, ৪৩ রানে ৭ উইকেট হারানো রাজশাহীর সামনে তখন অলআউট হওয়ার শঙ্কা! মিরাজের রান তখন ১।
চাপের মুখে যে অসাধারণ খেলেন, সেটিই আরেকবার প্রমাণ করলেন মিরাজ। শুরুর দিকে কোনো বাউন্ডারি মারার ঝুঁকিই নেননি। এক-দুই করে স্ট্রাইক রোটেট করেছেন। প্রথম বাউন্ডারিটা তৃতীয় বলে মারলেও পরেরটির জন্য অপেক্ষা করেছেন ২১ বল। মিরাজ সবচেয়ে আক্রমণাত্মক হয়েছেন রুবেল হোসেনের করা শেষ ওভারে। প্রথমে স্কুপে চার, পরের বলেই উড়িয়ে মেরেছেন লং অফ দিয়ে। শেষ পর্যন্ত রাজশাহী অলরাউন্ডার অপরাজিত ৩৩ বলে ৪১ রান। টি-টোয়েন্টিতে এটাই তাঁর সর্বোচ্চ।
এক প্রান্তে মিরাজ, আরেক পাশে জ্বলে ওঠেন ফরহাদ রেজা। ৩২ বলে অপরাজিত ৪৪ রানের ইনিংসে তাঁর চার-ছক্কা সমান, দুটি করে। মিরাজ-ফরহাদের অবিচ্ছিন্ন অষ্টম উইকেটে এসেছে ৬৪ বলে ৮৫ রান। এই জয়ে শেষ চারের আশাটা আরেকটু উজ্জ্বল হয়েছে রাজশাহীর।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

photo-1480267309বিনোদন ডেস্ক: বড় পর্দায় আইটেম নাচ নিয়ে আসছেন আলোচিত মডেল ও অভিনেত্রী হ্যাপি। আগামী ৯ ডিসেম্বর সারা দেশে মুক্তি পাচ্ছে চলচ্চিত্র ‘ধূমকেতু’। এই ছবিতে তিনি একটি আইটেম গানে কাজ করেন। ছবিটি পরিচালনা করেছেন শফিক হাসান। ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন নায়ক শাকিব খান ও পরী মণি।
এ বিষয়ে পরিচালক শফিক হাসান বলেন, ‘শাকিব খান এমনিতেই চলচ্চিত্রের জন্য বড় একটা বিষয়। উনার সাথে আছেন নায়িকা পরী মণি। এ ছাড়া ছবির মধ্যে বড় একটা বিষয় হচ্ছে আলোচিত অভিনেত্রি হ্যাপির আইটেম নাচ। এখনকার প্রায় সব ছবিতেই আইটেম গান থাকে। কিন্তু আমি গল্পের প্রয়োজনে আইটেম গানটি ব্যবহার করেছি। আর আইটেম গানে সবাই নতুন কিছু দিতে চায়, আমিও চেষ্টা করেছি দর্শক যেন নতুন কিছু পায়। এই কারণে আসলে নায়িকা হ্যাপিকে দিয়ে গানটি করিয়েছি। আইটেম গানে হ্যাপির সাথে শাকিব খানও নাচ করেছেন। আমি বিশ্বাস করি দর্শকদের কাছে গানটি ভালো লাগবে।’
এই ছবিতে আরো অভিনয় করেছেন অমিত হাসান, দিতি, আলী রাজ প্রমুখ।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

15271729_10209747452350794_1222071965_oএম বেলাল হোসাইন: তৃতীয় শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার বাংলা প্রশ্নপত্র। তাও আবার জেলার সেরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের। প্রশ্নের শুরুতেই স্কুলের নামের বানান ভুল! এর একে একে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন, পটুয়া কামরুল হাসান থেকে মাটি ও মানুষের কবি বন্দে আলী মিয়াÑ এমন সব কৃতি বাঙালির নামের বানান নিয়ে যথেচ্ছাচার। প্রশ্ন জাগতেই পারে এই প্রশ্নপত্রটি কোন নূন্যতম লেখাপড়া জানা মানুষের করা কিনা! যে শিক্ষার্থীদের মেধা মূল্যায়নের জন্য এই পরীক্ষা, তাদের বানান জ্ঞান এবং মাতৃভাষার প্রতি দরদ নিঃসন্দেহে এর থেকে অনেক বেশি।
সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভুলে ভরা প্রশ্নে(প্রশ্ন না বলে ব্যবহৃত টিস্যু বললে ভালো হত) অনুষ্ঠিত হয়েছে ৩য় শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা। এঘটনায় অভিভাবকসহ সচেতন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
২০১৬ সালের ৩য় শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সোমবার ছিল ৩য় শ্রেণির বাংলা পরীক্ষা। পরীক্ষার প্রশ্নের প্রায় অধিকাংশ বানান ভুল। যেমন সরকারি বানান লেখা হয়েছে ‘সরকারী’। হয়েছেনের স্থানে লেখা হয়েছেÑ ‘হয়ছন’, হাসানের স্থানে লেখা হয়েছে ‘হাসানর’ এধরনের অসংখ্য বানান ভুল। সাতক্ষীরার স্বনামধন্য এই বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্নে যদি অধিকাংশ বানান ভুল থাকে তাহলে কি শিখছে কচি কচি সোনামনিরা। বানান ভুলের পাশাপাশি প্রশ্নের শুরুতে যে অনুচ্ছেদটি তুলে দেয়া হয়েছে সেটির বাক্য গঠনও যাচ্ছে না তাই!15271439_10209747452630801_337088146_o
এধরনের ভুল বানানে পরীক্ষা দিয়ে ওই শিক্ষার্থীরা কীভাবে ভবিষ্যতে পথ চলবে এটাই প্রশ্ন অভিভাবকদের। অথচ এই স্কুলে ভর্তি করার জন্য অভিভাবকদের পরিশ্রমের শেষ থাকে না। আদরের সন্তানদের জন্য তারা কাকডাকা ভোর থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত দোকানে দোকানে(পড়–ন কোচিং সেন্টারে) নিয়ে ঘুরে বেড়ান। অথচ স্কুলের পড়াশোনার মান আজ কোথায় গিয়ে ঠেকেছে!
প্রশ্নটি যে বা যিনিই করে থাকুন না কেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এর দায় এড়াতে পারেন না কোনভাবেই। বিদ্যালয়ে একাডেমিক সুপারভিশন বলে কোন কিছুর অস্তিত্ব আছে বলে মনে হয় না। 15233565_10209747452910808_1697461573_oযদিও প্রতিমাসে অভিভাবকদের পকেট কেটে নেয়া মোটা অংকের কোচিং বাণিজ্যের টাকা ভাগাভাগির মনিটরিং বেশ কড়াভাবেই হয়ে থাকে স্কুলটিতে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest