সর্বশেষ সংবাদ-
জেলা ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি গঠনচোরের উপদ্রবে অতিষ্ঠ কাটিয়া রেজিস্ট্রি অফিসপাড়ার বাসিন্দারা : মিথ্যা মামলার অভিযোগসাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের পিতার মৃত্যুতে শােকসাতক্ষীরায় পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা: আসামী ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগশ্যামনগরে কোস্টগার্ডের অভিযানে ভারতীয় মদ জব্দআশাশুনিতে জলবায়ু-স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ক যুব নেতৃত্বাধীন প্রচারনাসাতক্ষীরা জেলা স্কাউট ভবন এর উর্ধ্বমুখি সম্প্রসারণ কার্যক্রম উদ্বোধনখুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধ: সাতক্ষীরা সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদারশ্যামনগরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনিয়ম ‌দুর্নীতির অভিযোগল স্টুডেন্টস ফোরাম এর নবনির্বাচিত কমিটি নির্বাচন কমিশনের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়

SAMSUNG CAMERA PICTURES

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের ৩ কোটি ৩৫ লক্ষ ৯১ হাজার ৯৮ টাকার খসড়া বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে।  সোমবার দুপুর ৩টায় জেলা আইনজীবী সমিতির ভবনে সমিতির সভাপতি এড. শাহ আলমের  সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন সাবেক সভাপতি এড. আব্দুর রউফ, সাবেক সভাপতি এড. আব্দুল মজিদ, এড. আব্দুল্লাহ আল মামুন, এড. নিজামউদ্দীন, এড. জিয়াউর রহমান, এড. মতিয়ার রহমান, এড. নজরুল ইসলাম, এড. ইউনুছ আলী, এড. হাবিব ফেরদাউস শিমুল, এড. আশরাফুল কবীর, এড. কাজী আবু তাছিন  প্রমুখ।
এসময় বাজেট অধিবেশনে বাজেট সংক্রান্ত উন্মুক্ত আলোচনা আইনবীবীরা বক্তব্য রাখেন।খসড়া বাজেটে সমিতির প্রস্তাবিত আয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৩৫লক্ষ ৯১হাজার ৯৮টাকা এবং প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৩৫ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা। এসময় সমিতির উপস্থিত সকল আইনজীবীদের সর্ব সম্মতিক্রমে আয় খাতে ওকালাতনামার মূল্য  ও জামিননামা দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এড. ওসমান গণি।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

unnamedমাহফিজুল ইসলাম আককাজ : সাতক্ষীরায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে জেলা প্রশাসন, জেলা শিল্পকলা একাডেমী ও জেলা সাংস্কৃতিক পরিষদের আয়োজনে জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা-০২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। এসময় তিনি বলেন, ‘বাঙালির নব জাগরণের বিরল সাহিত্য ¯্রষ্টা  বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বাংলাভাষার এই কবির পরিচিতি বিশ্বজোড়া। তাই বাঙালির গৌরবের নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান কবির স্মৃতিধন্য তার মধ্যে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ গ্রাম কবির ব্যক্তি, কর্ম ও কাব্যজীবনের অনেকাংশের সাক্ষী হয়ে আছে। কবির চিন্তা চেতনা, অন্তর্নিহিত ভাব ও দর্শন সার্বজনীনবোধ অনন্য ও অসাধারণ। যে জন্য তিনি বিশ্ব সাহিত্যের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র। অসাধারণ সব সাহিত্যকর্ম দিয়ে তিনি বিস্তৃত করেছেন বাংলা সাহিত্যের পরিসর। তাই তো জীবনের প্রতিটি সমস্যা-সংকট, আনন্দ-বেদনা এবং আশা-নিরাশার সন্ধিক্ষণে রবীন্দ্র সৃষ্টি আমাদের চেতনাকে আন্দোলিত করে। রবীন্দ্রনাথ তার লেখনীতে বাঙালির জীবন-যাপন, সংস্কৃতিকে যেমন তুলে ধরেছেন, তেমনি বাঙালির চিরদিনের হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনারও অন্যতম রূপকার তিনি। বাংলাভাষা ও সাহিত্যকে তিনি সারাজীবনের সাধনায় অসাধারণ রূপ-লাবণ্যম-িত করেছেন। অতুলনীয় ও সর্বতোমুখী প্রতিভা দিয়ে তিনি বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বমানে উন্নীত করে বাঙালিকে এক বিশাল মর্যাদার আসনে নিয়ে গেছেন। বাংলাদেশের মানুষের কাছে রবীন্দ্রনাথ প্রেরণাদায়ী পুরুষ। বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যলালিত দর্শন ও সাহিত্য, তার রচনার মধ্য দিয়ে বিশ্ব সাহিত্য সভায় পরিচিতি পায়। ১৯১৩ সালে প্রথম বাঙালি এবং এশীয় হিসেবে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন। তার লেখা আমাদের ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ আমাদের জাতীয় সঙ্গীত’। আলোচনা সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠান আয়োজক কমিটির আহবায়ক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এ.এফ.এম এহতেশামূল হক। আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা পুলিশ সুপার মো. আলতাফ হোসেন। আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপ-ভাষা গবেষক সাবেক অধ্যক্ষ কাজী মো. অলিউল্লাহ, সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুল হামিদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বিশ্বাস সুদেব কুমার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেরিনা আক্তার, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নূর হোসেন সজল, সাবেক জেলা শিক্ষা অফিসার কিশোরী মোহন সরকার, জেলা সাংস্কৃতিক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হেনরী সরদার, শহিদুর রহমান, চিত্র শিল্পী এম.এ জলিলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নের্তবৃন্দ। আলোচনা সভা শেষে মনোঙ্গ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সদস্য সচিব শেখ মোশফিকুর রহমান মিল্টন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
Exif_JPEG_420

Exif_JPEG_420

আসাদুজ্জামান :  নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম স্থান লাভ করেও সাতক্ষীরার কলারোয়া বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজে  অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পাচ্ছেন না আবদুল ওহাব। গত ছয় মাস ধরে তাকে নিয়োগ না দিয়ে বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে এমন অভযোগ এনে সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন কলেজের পরিচালনা পরিষদ সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা এমএ ফারুক। এই নিয়োগ প্রক্রিয়াকে বাধাগস্ত করতে আবদুল ওহাবের বিরুদ্ধে বিএনপির রাজনীতির অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে একটি নাশকতার মামলা দেয়া হয়েছে এমন অভিযোগ এনে স্থানীয় সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রত্যয়নপত্র পাঠিয়ে এই নিয়োগকে বাধাগ্রস্ত করেছেন বলে অভিযোগ আনেন।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা ১ আসনের সংসদ সদস্য ডিও দেয়ার কথা স্বীকার করে জানান, আব্দুল ওহাবের ডিগ্রি কলেজে শিক্ষাকতার ১২ বছরের অভিজ্ঞতা না থাকায় এই ডিও দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয় উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ স্বপন এই প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিএনপি রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ আনেন বলে এমপি আরো জানান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, কলারোয়া বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ নজিবুল ইসলাম মৃত্যুবরণ করায় তার স্থলে অধ্যক্ষ নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। এ ব্যাপারে  ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর সাতক্ষীরা সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত পাঁচ সদস্যের নিয়োগ বোর্ডের হয়ে পরীক্ষা গ্রহণ করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা মহাপরিচালক যথাক্রমে অধ্যক্ষ মুস্তাফিজুর রহমান ও অধ্যক্ষ বাসুদেব বসু। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন, পরিচালনা পরিষদ সভাপতি এএম ফারুক, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অসীম কুমার ও শিক্ষক প্রতিনিধি নিলুফার ইয়াসমিন। তিনি বলেন, নিয়োগ বোর্ডের লিখিত পরীক্ষা ও সাক্ষাৎকারে প্রথম হন আবদুল ওহাব। এ ছাড়া দ্বিতীয় হন মো. মাহবুবুর রহমান ও যৌথভাবে তৃতীয় হন আবদুর রহিম ও বখতিয়ার রহমান। নিয়োগ বোর্ডের এই ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে কলেজ পরিচালনা পরিষদ এতে অনুমোদন দিয়ে নিয়ম অনুযায়ী যথাসময়ে কাগজপত্র পাঠান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, নিয়োগ বিষয়ক চূড়ান্ত কাগজপত্র তৈরির মূহুর্তে তালা কলারোয়ার সংসদ সদস্য মুস্তফা লুৎফুল্লাহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে এক চিঠি পাঠিয়ে বলেছেন আবদুল ওহাব স্থানীয় উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি। তাকে নিয়োগ দিলে এলাকায় উত্তজনা বৃদ্ধি পাবে। তিনি এই নিয়োগ বন্ধ রাখার সুপারিশ করেন। ঠিক একই সময়ে গত ৭ জানুয়ারি আবদুল ওহাবের বিরুদ্ধে কলারোয়া থানার একটি নাশকতার মামলায়  তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এমএ ফারুক কলারোয়া বিএনপি ও কলারোয়া আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের লিখিত একটি প্রত্যয়নপত্র দেখিয়ে চ্যালেঞ্জ করে বলেন অধ্যক্ষ প্রার্থী আবদুল ওহাব কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সংযুক্ত নন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
আফজাল হোসেন এর কলম থেকে- স্বপ্ন সত্যির সিনেমা বাহুবলী

বহুজনের কাছে সিনেমা 42a566d965bbe5c587f95d06c64bbaed-576289b87469bদেখা ভালো কাজ নয়। সিনেমা নিয়ে আলাপ তাও ভালো বলে বিবেচনা করে না অনেকেই। আমরা খুব ভালোতে বিশ্বাসী। ভাবখানা এমন, মন্দে আমাদের মোটেও মন নেই। খুবই খাঁটিজন আমরা। আমরা মন্দ বলি না, করি না, ভাবিও না। এত ভালোগিরি দিয়ে লাভের খাতা কতটা ভারি হয়েছে আর লোকসানের পরিমাণ কত ভেবে দেখা হয় না।
সিনেমা দেখা ভালো না, তাই ওদিকে মন নেই আমাদের। যাদের ওদিকটায় বেশি মনোযোগ তাদের প্রতি সমাজের বিশেষ মানুষেরা অশেষ মনোযোগহীন। মজার বিষয় হচ্ছে অনেক মনোযোগ না পাওয়া তরুণ চিত্রনির্মাতাদের চিন্তা ভাবনা, কুশলতা বিদেশের মাটিতে বিশেষ মনোযোগ কুড়াতে পারছে।
সেদিন বিবিসির এক রিপোর্টে দেখলাম, শুনলাম ভারতে নির্মিত বাহুবলী সিনেমার ধাক্কায় বিশ্ববাসী একযোগে ভারতীয় সিনেমার দিকে চোখ বড় করে তাকাতে বাধ্য হয়েছে। ভারতের বাইরে ভারতীয় সিনেমার বাজার অনেকদিন ধরে একটু একটু করে অনেকটা জমেছিল। এক বাহুবলী হঠাৎ সে পরিমাণটাকে চুরমার করে দিয়ে সিংহভাগ আয়ত্বে নিতে পেরেছে।
সিনেমা একটা দেশকে মাথায় তুলে কোন উচ্চতায় স্থাপন করতে পারলো, পারে ভাববার সামর্থ্য থাকলে সিনেমা বানানো, দেখা, আলাপ, প্রশংসা মন্দ কাজ বলে বিবেচনা করাদের মতির গতি পাল্টাবে।f423330177c7542bb9e28de85f5028c7-590ee15197af6
বাহু নয় চিন্তার বল দেখার আগ্রহ ছিল মনে। দেখে আসা হলো বাহুবলী। এই দেখে আসার ধরন খুবই বিশেষ। ছত্রিশজন একসাথে ঢাকা থেকে কলকাতা উড়ে গিয়ে সিনেমা দেখা বিশেষই তো। আমাদের জীবনে এমন ঘটনা না ভোলার মতো, অত্যন্ত আনন্দের হয়ে থাকবে। বিষয়টা নিয়ে ভালো কথা, মন্দ কথা হতে পারে, ঠাট্টা মস্করা হতেও পারে। ভ্রু কোঁচকানো আলাপ সালাপ, তাও হয়তো হবে। নিজের রুচি অভিরুচি অনুযায়ী যে যেমন মন্তব্যই করুক, আমাদের মন্তব্য হচ্ছে সামর্থ থাকলেই মানুষ অনেক কিছু করে না বা করে উঠতে পারে না। আনন্দময় মনে হলেও সে আনন্দ অর্জনের তাগিদ বহু মনে থাকে না। সব মনে কৌতুহল থাকে, সে কৌতুহল টান মেরে এতজনকে একসাথে এমন আনন্দে সামিল করায় না। মানুষের মনে ইচ্ছা জাগবে, সে ইচ্ছা পূরণের ইচ্ছা সকল মনে বিশেষভাবে জেগে ওঠে না বলে ইচ্ছা অপূর্ণই রয়ে যায়।

আমরা যেদিন বাহুবলী দেখতে গেলাম, হলে ঢোকার আগে দেখতে পাই শুধু আমরা নই তখন কলকাতায় থাকা অনেক বাংলাদেশি-ই  আনন্দ উত্তেজনা নিয়ে সেখানে অপেক্ষমান। কারও কারও সাথে পরিচয় ঘটেছে। আমরা এতজন একসাথে সিনেমা দেখতে এসেছি শুনে তারাও অবাক না হয়ে পারেনি। অবাক করলেও ঘটনা কি অতটা অবাক করানোর মতো? পরিচয় হওয়া পাঁচজনের একটা পরিবার সে রাতে বাহুবলী দেখতে গিয়েছে। পরিচয়ের পর জানা হলো, কলকাতায় আসবার পরিকল্পনা আগেই ছিল, ছেলে মেয়েদের আগ্রহে বাহুবলীর মুক্তির সাথে আসা ও থাকার দিন মেলানো হয়েছে। সে মতই রথ দেখা ও কলা বেচা একসাথে হয়ে যাচ্ছে। ছত্রিশজন তাহলে অনেক নয়। আমরা গিয়েছি অনেকগুলো পরিবার একসাথে, কয়েকজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু একত্রে। আলাদা আলাদাভাবে সবারই কলকাতা এসে রথ দেখা ও কলা বেচা হয়, হয়েছে বহুবার। এবারই প্রথম সবাই মিলে আসা হয়েছে শুধুই রথ দেখতে।

বাহুবলী তো রথ দেখার মতই। কলকাতায় অনেককে বলতে শুনেছি, কোথাও কোথাও পড়েছিও, ছবিটা নিয়ে মানুষের বাড়াবাড়ি একটু বেশি রকমের। হলেও সেটা দোষের নয়। মুক্তির আগেই যদি ছবিটা জনমনে অতি আগ্রহ সৃষ্টি করতে পেরে থাকে, তা তো ছবিটা এবং তার পেছনের মানুষদের কৃতিত্বই। জেনেছি, বাহুবলী একসাথে নয় হাজার প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। মুক্তি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছবিটা দেখবার জন্য রেকর্ড সংখ্যক মানুষ অগ্রিম টিকেট কেটেছে। ব্যবসা বিষয়ক একটা পত্রিকা লিখেছে, আমেরিকাতে এই প্রথম একটা ভারতীয় ছবি একসাথে এক হাজার চারশত প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে। আরো জানতে পারি, তেলেগু, তামিল, হিন্দি, ইংরেজি- বহু ভাষায় বাহুবলী মুক্তি পেয়েছে। ২০০ কোটি রুপি ব্যয়ে নির্মিত বাহুবলী ভারতের বাইরে সারা বিশ্বের এগারো শত সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে এবং আগ্রহ সৃষ্টি করার মতো ঘটনার পর ঘটনার জন্ম দিয়েই চলেছে। দু’একটা খবর কানে পৌঁছালে বাহুবলী বিষয়ে কৌতুহল জাগবারই কথা। যত কথাই হোক সামগ্রিকভাবে এ হুলস্থুল ছবি অতি আগ্রহ তৈরির উপাদানে ভরপুর। তাই সে চলচ্চিত্র দেখার জন্য জগতজুড়ে এত হুড়োহুড়ি।

অনেকে বলতে পারেন বাহুবলী এত মাতামাতি করার মতো ছবি নয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে মাতামাতি হচ্ছে। বাহুবলীর দ্বিতীয় পর্ব দেখে অনেক দর্শক প্রথম বাহুবলীর মতো আনন্দ পায়নি বলেছে। মতামত এক একজনের এক এক রকম হতেই পারে। মানুষ মানেই মত। মানুষের মনে যে বিষয় বিশেষ গুরুত্ব তৈরি করতে পারে মানুষ মতামত প্রকাশ করে সে বিষয়েই। সে যুক্তিতে বাহুবলী নিয়ে বিশেষ বলাবলি চলছে, চলতে থাকবে অনেকদিন। বিশেষজ্ঞরা ধারণা দিয়েছে এ সিনেমা এক হাজার কোটি টাকার ব্যবসা করবে। ভারতের সিনেমা বাণিজ্য আরও উঁচু লক্ষ্যে পৌঁছে গেলো।

শুরুতে যা লিখেছি, বাহু নয় চিন্তার বল দেখার আগ্রহ ছিল মনে। ছবিটা নিয়ে মন্দ বলে আনন্দ পেতে হবে কেন? বিশেষ ছবি ভেবে ভালোলাগার মতো বিষয়গুলোকে তো বড় করে দেখা যায়। যে ছবি সাধারণ নয়, যে ছবি নিয়ে অসংখ্য মানুষ স্বপ্ন বুনেছে, স্বপ্নের মতো রূপ দিতে চেয়েছে, তা বড় মাপের হলে কতটাই বা অসুন্দর হতে পারে। মুহূর্তে মুহূর্ত বিস্ময় সৃষ্টির চেষ্টা আমরা সমীহ করেছি। দোষ ত্রুটি থাকুক, তা আমাদের হয়রান করেনি। ছবি দেখে ঠকে গেলাম না জিতে গেলাম এসব নিয়ে মাথা ঘামানো অবান্তর। অবাক হয়েছে সবাই। সবারই মনে হয়েছে, মানুষের সাধ্য রয়েছে, সামর্থ সীমাহীন, শুধু সাধ থাকলেই হয়।

অনেক মানুষের সাধ্য রয়েছে। চেনা জানা অনেক মানুষের সামর্থ্য সীমাহীন, সাধও রয়েছে এক একজনের এক এক রকম। বাহুবলী কেউ বানাবে, এমন ছবি বানাতে চাইবে, যে ছবি দেখার জন্য সারা বিশ্বে হুড়োহুড়ি পড়ে যাবে। হুড়োহুড়ি ফেলে দেওয়ার সাধে অন্যায় নেই। যারা এত আগ্রহে ছবিটা দেখার জন্য ছুটবে না, ছোটেনি তারাও দোষ করেনি। জগতে যা ঘটবার ঘটে চলবে। মানুষের ভাবনাও, যার যার মতো চলতে থাকবে।

‘কাটাপ্পা বাহুবলীকে কেন মারলো’ এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে মানুষ হুড়মুড়িয়ে ছুটছে সিনেমা হলের দিকে। সে ছোটা থামছে না। তা নিয়ে লেখালিখি হচ্ছে বিস্তর এবং বিচিত্র রকম। অধিকাংশকে নাড়িয়ে চাড়িয়ে দেওয়ার মতো কাণ্ড বাহুবলী ঘটাতে পেরেছে। জানা গেলো ভারতের কোনও প্রদেশে নিয়মিত চারটির বদলে আটটি প্রদর্শনীর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। দুই ঘণ্টা সাতচল্লিশ মিনিট দৈর্ঘ্যের বাহুবলীর নির্মাতা এস এস রাজামৌলি। যে যত কথাই বলুক, রাজামৌলি সবচেয়ে বড় স্বপ্নটা সহজে দেখতে পারেন। সেই স্বপ্ন দেখাতে সবাইকে জড়ো করতেও পারবেন। এমন আত্মবিশ্বাস ছিল বলেই প্রবল বাহুবলী জ্বরে মানুষ আক্রান্ত হয়ে চলেছে।

আমরাও সে জ্বরে আক্রান্ত হয়েছি, বলতে দ্বিধা নেই। দলে বলে ঢাকা থেকে কলকাতায় উড়ে গেছি বাহুবলী দেখতে। আসলে দেখতে গেছি চিন্তার বল। আমাদের বন্ধু ফরিদুর রেজা সাগর, সাগর বাহুবলী জ্বর এবং বাহুবলী স্বপ্ন উভয়েই আক্রান্ত। প্রথম বাহুবলী দেখার পর থেকে সে ছবির বিস্ময়কর জায়গাগুলো যখনই সময় পায়, দেখেছে আর ভেবেছে- এরকম একটা স্বপ্ন তো আমরাও দেখতে পারি। দ্বিতীয় পর্ব যখন আসি আসি করছে, পরিবার বন্ধুবান্ধব সবাই মিলে সে সিনেমা দেখার পরিকল্পনা এঁটেছে মনে মনে। সাগর ভেবেছে ভালোলাগার ছবিটা একসাথে সবাই মিলে দেখা হবে মহাআনন্দের। ভেবেছে, ঢাকায় সবারই খুব ব্যস্ত জীবন, অবসর মেলেনা কারোরই। একসাথে একটা দিন অভিনব উপায়ে কাটানোর উপলক্ষ্য হবে বাহুবলী। হয়েছেও তাই। অনেকটা বয়স অতিক্রম করে এসে, যখন এদিক সেদিকে দেখি, মানুষে মানুষে সম্পর্ক এখন স্বার্থ ও সুবিধার অংকে ভরপুর। প্রায় সবাই এখন সম্পর্কের অন্দরে আবেগের জায়গা কমিয়ে হিসাব নিকাশের জায়গা বাড়িয়ে তোলায় ব্যস্ত। সংবেদনশীলতা কমিয়ে হৃদয়ে পোক্তভাবে ভান ভনিতার বাড়ি তৈরির জন্য সাগ্রহে জায়গা ছাড়তে প্রস্তুত। এরকম সময়ে দল বেঁধে সিনেমা দেখতে যাওয়ার মতো ছেলেমানুষি আনন্দের সাধ পঞ্চাশোর্ধ বয়সে জাগে, তা পরম সৌভাগ্যের।

বাহুবলীর ভিডিও ঢাকায় এলে অনেকের মুখে ছবিটার কথা শুনেছিলাম, দেখা হয়ে ওঠেনি। পত্রিকায়, এখানে ওখানে বাহুবলীর পোশাক আষাক দেখে অনুমান করে নিয়েছি রাজারাজড়ার গল্প, দেখার আগ্রহ জাগেনি। বন্ধু ফরিদুর রেজা সাগর একদিন অতি আনন্দে, উত্তেজনায় জিজ্ঞাসা করে বাহুবলি দেখেছি কিনা। উত্তরে সে না আশা করেনি। তুমুল উৎসাহে নিজের ফোনে ধরে রাখা বাহুবলীর একটা গান দেখায়। অসামান্য প্রকৃতি, অবিশ্রাম ঝর্না জলরাশি, মোহিত হওয়ার মতো চিন্তা শক্তি, মুগ্ধ হওয়ার মতো চিত্রায়ন তার মধ্যে নায়ক নায়িকার অভিনয় দেখে বাক্যহারা হতেই হয়। পুরো ছবিটা না দেখে থাকা যায় না।

বন্ধু বান্ধব পরিচিতজন যার সাথেই তারপর থেকে দেখা হয় সবার কাছেই সাগরের সেই গান দেখানোর গল্প শুনি। চল্লিশ বছর ধরে সাগরকে জানি, আমাদের আর ওর আনন্দ, উত্তেজনার প্রকাশ এক নয়। বাহুবলী বা ওই গান কাছেরজনদের দেখানোয় তার আনন্দ বা ছবি বিষয়ে আলাপের আগ্রহে নয়, এমন সিনেমা বা গানের কল্পনা মানুষ করতে পারে এবং তার বাস্তবায়ন সম্ভব ভেবেই সাগরের আনন্দ। এমন মাপের সিনেমা পৃথিবীতে আগে সম্ভব হয়েছে। পাশের দেশ ভারতে সম্ভব হলো। আগামীতে এমন স্বপ্ন আমরাও দেখতে পারি। পারা না পারার কথা পরে, আগে তো মানুষকে বড় স্বপ্ন দেখতে হয়। স্বপ্ন দেখতে জানলে স্বপ্নপূরণ মানুষের অসাধ্য নয়।

যুবকবেলায় পাঁচ সাতজন একত্রে ছবি দেখা হয়েছে বহুবার। এইবেলায় এসে বড় ছোট মাঝারি মিলে ছত্রিশজন একসাথে সিনেমা উপভোগ অবিস্মরণীয় ঘটনাই। একটা উপলক্ষে, একত্রে অনেকটা সময় নবআনন্দে কাটানো হয়েছে, নির্ভেজাল আড্ডায় ওঠে এসেছে স্বপ্ন ও সার্থকতার কথা। বাহুবলী শুধু সিনেমা দেখা নয়, মনে করিয়ে দিয়েছে বেঁচে থাকা বড় কথা নয় বড় বড় স্বপ্ন দেখতে হয়। বড় স্বপ্ন মানে বড় করে বেঁচে থাকা। বড় স্বপ্ন মানে জীবনে নতুন সম্ভাবনা, অনুপ্রেরণা। রোজ ক্ষুদ্র চর্চায় যে আনন্দলাভ হয় তা আসলে সত্য নয়, ঘোর। এই ঘোরের চক্কর থেকে বের না হতে পারলে অর্থবহ জীবনলাভ হয় না, হবে না। আমাদের এত রূপকথার গল্প, সব পড়ে আছে অন্ধকারে। বাহুবলী সাগরের মধ্যে একটা স্বপ্ন তৈরি করে দিয়েছে। এমন ধরনের সিনেমা তো আমাদের দেশেও হতে পারে। যারা সাগরকে চেনে, সবারই জানা দেশের জন্য প্রথম এবং নতুন কিছু করার ইচ্ছা তার মনে যদি জাগে সে ইচ্ছা সাগর অপূর্ণ রাখে না। বাহুবলী স্বপ্নে আমাদের যদি জাগরণ ঘটে, তা সমগ্র জাতির ধ্যান ধারণা ও সংস্কৃতিকে পাল্টে দিতে পারে। সিনেমাকে আমরা ভালো চোখে দেখতে শিখিনি, সে দোষ সিনেমার নয়। আমাদের অসচেতনতা, ব্যর্থতা। আমরা গায়ের বল, বাহুর বল, গলার বল নিত্য হজম করে চলেছি। বাহুবলী চিন্তার বল, অসাধারণ। মনের বল, চিন্তার বলে বলীয়ান হতে পারলে বাহুবলী এ ভূমিতেও ঘটতে পারে। স্থির বিশ্বাস, ঘটবেও।

লেখক: অভিনেতা, পরিচালক, চিত্রশিল্পী

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

3e3efbf35f69397186831dbaa9012d49-590f5ab2aa33cআওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে এমপিদের পরীক্ষা নিলেন দলের  সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার সংসদ ভবনের সরকারি দলের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি বিভিন্ন খাতে সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের তথ্য নিয়ে প্রথমে এমপিদের নাম ধরে ধরে প্রশ্ন করেন এবং  পরে  উন্মুক্ত করে দেন। তবে, বেশিরভাগ এমপিই এসব প্রশ্নের নির্ভুল জবাব দিতে পারেননি। প্রধানমন্ত্রী তখন কিছুটা হতাশ হয়ে বলেন, ‘আমি এত কাজ করেছি। কিন্তু উন্নয়নের সঠিক তথ্যতো আমার এমপিদের কাছে নেই। আপনাদের কাছে যদি সঠিক তথ্য না থাকে, তাহলে জনগণকে জানাবেন কী করে? বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সংসদ সদস্য  এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সামাজিক গণমাধ্যম ফেসবুক ও টুইটারে সরকারে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের প্রচারণার নির্দেশ দেন। এ সময় কোন খাতে কী ধরনের উন্নয়ন হয়েছে, তার সঠিক তথ্য এমপিদের কাছে রয়েছে কিনা তা জানতে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন।

কয়েকজন এমপি জানান, প্রধানমন্ত্রী তাদের কাছে দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের সংখ্যা, এ বছর কতগুলো বই বিতরণ করা হয়েছে, শিক্ষা খাতে কতজনকে কতটাকা উপবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে, দেশে কতগুলো কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে, বিদ্যুৎ উৎপাদন কত, কতগুলো ভিজিএফ কার্ড বিরতণ করা হয়েছে, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতাসহ সরকারের উন্নয়নমূলক এসব কর্মসূচির সঠিক পরিসংখ্যান জানতে চান। এ সময় কয়েকজন এমপি কিছু প্রশ্নের আংশিক জবাব দিলেও দু’একজন ছাড়া কেউ সঠিক উত্তর দিতে পারেননি। এমনকি একজন মন্ত্রীকে তার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত প্রশ্ন করেও সঠিক জবাব পাননি। এরপর প্রধানমন্ত্রী ল্যাপটপ চালু করে কোন কোন বিষয়ে কী কী উন্নয়ন করেছেন, তার তথ্য তুলে ধরেন। এ সময় তিনি মন্ত্রী ও এমপিদের এসব তথ্যের নোট দিতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তিনি জনগণকে এসব তথ্য জানানো এবং এগুলো নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস ও টুইটারে টুইট করার নির্দেশ দেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

98c49ae0b8e03373d5840c21ba8792e3-59105bfccdc74রাজধানীর বনানীতে একটি হোটেলে জন্মদিনের পার্টিতে ডেকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‍দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনার প্রায় দেড়মাস পর থানায় মামলা করেন ঘটনার শিকার এক শিক্ষার্থী।এরপর থেকে এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চলছে তোলপাড়। পুলিশ প্রথমে মামলা নিতে অস্বীকার করলেও শনিবার (৬ মে) বিকালে ধর্ষণের শিকার দুই শিক্ষার্থীর অভিযোগ মামলা আকারে নথিভুক্ত করে বনানী থানা। পার্টিতে ডেকে ধর্ষণ, তারপর দীর্ঘ নীরবতা এবং মামলা করার পর গত দুদিনেও অভিযুক্তদের আটক করতে না পারায় ফেসবুকে বইছে সমালোচনার ঝড়। ধর্ষণের অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে, তাদের সামাজিক প্রতিপত্তি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে কিনা, তা নিয়েও চলছে আলোচনা।

কেউ কেউ বলছেন, ২০১৬ সালে ভারতে তিন তরুণীর যৌন হয়রানির ঘটনাকে ঘিরে আইনি লড়াই নিয়ে তৈরি হওয়া বলিউডের আলোচিত চলচ্চিত্র ‘পিংক’ বাংলাদেশেও ঘটতে দেখা গেল।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতিআরা নাসরিন তার পোস্টে লিখেছেন, ‘ আমি তো গয়না পরি না। পিকাসোতেও খাই না।আমি বিচার চাই। ধর্ষণ নির্যাতনের শাস্তি চাই। গ্লানি মোছে না। জরা ঘোচে না। বছরের বিচারহীনতার ওপর শুধু নতুন বিচারহীনতা পাঁজা হয়।’

প্রকাশক রবীন আহসানের মন্তব্য, ‘আমরা এদের পরিচয় জানতে চাই ! এরা কত বড় প্রভাবশালী ধর্ষক!বন্ধুরা ছবিটা ভাইরাল করুন। সব পাওয়া যাবে! এদের বন্ধু-বান্ধবরাই জানাবে! পুলিশের ভরসায় থাইকেন না…জনে জনে শেয়ার দিন।’

জেণ্ডার বিশ্লেষক ও লেখক চিররঞ্জন সরকার লিখেছেন, ‘সম্মতি। ধর্ষণের সংজ্ঞার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একটা মানুষ সত্যিই ‘হ্যাঁ’ বলেছিল কিনা, দায়ে পড়ে/চাপে পড়ে/প্রতারিত হয়ে বলেছিল কিনা/খানিক দূর এগিয়ে পিছিয়ে আসতে চেয়েছিল কিনা/তার সম্মতি আংশিক ছিল কিনা/তার অসম্মতির ভাষা বুঝতে চাওয়া হয়েছিল কিনা, এসবই বিচার-বিশ্লেষণের দাবি রাখে। ধর্ষিতা নারী সন্তানসম্ভবা হলেও যেমন মনে করার কোনও কারণ নেই, যা ঘটেছে, তার সম্মতিতে ঘটেছে। কাউকে ভয় দেখিয়ে বা বেহুঁশ করে যদি তার সঙ্গে যৌন সংসর্গ স্থাপন করা হয়, তা কি ধর্ষণ নয়?’

ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি বাকী বিল্লাহ লিখেছেন, ‘‘রেইনট্রির চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার মো. শরীফুল আজম  এলাহী বলেন, ‘ঘটনার দিন সাফাতের জন্মদিন ছিল। এ উপলক্ষে তারা পার্টির আয়োজন করে। ওইদিন সাফাত ও নাঈম দুটি কক্ষ বুক করে। কিন্তু সেখানে জোরপূর্বক কোনও কিছু ঘটেছে বলে আমাদের জানা নেই। এছাড়া তারা যে ফ্লোরে কক্ষ ভাড়া নিয়েছিল, সেখানে আরও তিনটি কক্ষে অতিথি ছিলেন। সেখানে জোরপূর্বক কিছু হলে তারা তো আমাদের কিছু বলতো। তিনি আরও দাবি করেন, ঘটনার পরদিন সকালে দুই তরুণী হাসিমুখে বের হয়ে গেছেন। যদি জোর করে কিছু হতো তারা হাসিমুখে বের হতেন না (সূত্র পত্রিকা)।’ মনে হচ্ছে, পিংক সিনেমা দেখছি। হুবহু একই চরিত্রাবলী, একই দৃশ্যায়ন…’’

লেখক ও কলামিস্ট মাসুদা ভাট্টি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘প্রভাবশালী ধর্ষকদের বাবারাও জানে যে, তাদের ছেলেরা যা কিছু করে মেয়েদের সম্মতি নিয়েই করে। প্রশ্ন জাগে, তারা কি এই সম্মতি আদায়ের সময় উপস্থিত থাকেন? না হলে জানলো কী করে যে, ছেলেরা মেয়েদের সম্মতি নিয়েই তাদেরকে ধর্ষণ করেছে?’

এই আলোচনায় বারবারই পিংক সিনেমাটির কথা উঠে আসছে। সিনেমায় নির্যাতনের শিকার নারীদের পাশে দাঁড়ানো আইনজীবীর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন অমিতাভ বচ্চন। বাংলাদেশের এই ঘটনায় কে নামবেন সেই ভূমিকায়, সে প্রশ্নও করেছেন অনেকে। সেখানে গণমাধ্যমই এই প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন অনেকেই। সাংবাদিক শেরিফ আল সায়ার লিখেছেন, ‘PINK সিনেমাটা কতটা বাস্তব তা কি বুঝতে পারছেন?’

পলাশ আহসান তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে দেখছি, ধর্ষকদের পক্ষে নেমেছে একটি দল। তাদের প্রধান যুক্তি, মেয়ে দু’টি পার্টিতে গেল কেন? … মেয়ে দু’টির পার্টিতে যাওয়াকে যারা দুষছেন তাদের বলি, পার্টি মানেতো একটা অনুষ্ঠান। ওই হোটেলে তো প্রায় প্রতিদিন পার্টি হয়। সব ধরনের ছেলেমেয়েরা যায়। ধর্ষণের অভিযোগ তো ওঠে না। সুযোগ পেলেই মেয়েদের ওপর ড্রাইভারসহ ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে? … আমি জানি না, কী জবাব দেবেন ধর্ষক পক্ষ শিবিরের লোকজন।’

লেখক ও টেলিভিশন উপস্থাপক পারমিতা হিম স্যাটায়ার করে স্ট্যাটাটে লিখেছেন, ‘পার্টি করা তো আমাদের সংস্কৃতি নয়। সুতরাং কৃষ্টি-কালচারবিরোধী পার্টিতে কোনও ভালো মেয়ে যায় নাকি! কিন্তু ধর্ষণ করা তো আমাদের হাজার হাজার বছরের ঐতিহ্য! ঐতিহ্যবাহী এ সংস্কৃতির ধারক ও বাহক হিসেবে ধর্ষকদের পিঠ চাপড়াইয়া দেওয়া হোক।’ কোনও নারী হয়রানির শিকার হওয়ার পর এই প্রশ্নগুলো মানুষের মুখে মুখে ঘোরে বলেই তিনি এমন মন্তব্য করেছেন।

ধর্ষণের অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে, গণমাধ্যম থেকে তাদের ছবিগুলো নিয়ে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজটিও করছেন অনেকে। তারা ধর্ষণের শিকার নারীদের প্রতি সুবিচার দাবি করেছেন।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রীতি ওয়ারেসা তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, ‘‘ভিডিও ছেড়ে দেবো’- এই বাক্যের দৈন্যতা মেয়েরা যতদিন না অতিক্রম করতে পারবে, ততদিন হাজার হাজার ধর্ষণ অপরাধের খবর মিডিয়ার সামনে আসবে না। ধর্ষণ ভয়ংকর একটা অপরাধ। এখানে ধর্ষিতা মেয়ে কোনোভাবেই অপরাধী নন। মেয়েদের শরীর সম্ভ্রম রক্ষার বস্তু নয় যে ভিডিওতে শরীর দেখা গেলেই সম্ভ্রমহানি ঘটবে! চারদিকে গেল গেল রব উঠবে!…ভিকটিমের প্রতি অনুরোধ, জোর গলায় বলুন- ছাড় ভিডিও। দেখুক পৃথিবী। যারা দেখবে শাস্তির ভার তারাই নির্ধারণ করবে…।’

ধর্ষণ মামলার তিন আসামির কোলাজ করা ছবি জুড়ে দিয়ে জেসমিন পাপড়ি নামে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘ধরিয়ে দিন। মেয়ে দুটির প্রতি সুবিচার করুন।’

উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চ বন্ধুর জন্মদিনের পার্টিতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ করেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই শিক্ষার্থী। গত শনিবার (৬মে) তারা বনানী থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, ধর্ষণের ঘটনাটি ভিডিও করেছিল ধর্ষকরা। এই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকির পাশাপাশি তাদের বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখানো হয়। এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামি হলেন- সাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ, শাদমান সাকিফ, ড্রাইভার বিল্লাল ও সাফাত আহমেদের বডিগার্ড (অজ্ঞাত)।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

photo-1494220166ভারতের রাজস্থান রাজ্যের কোটা শহরের তিনজন উদ্যোক্তা। সিদ্ধান্ত নিলেন, ১৫ বছরের ডেইরি ব্যবসাকে এগিয়ে নেবেন আরো এক ধাপ। করবেন যুগোপযোগী। যেই ভাবা, সেই কাজ। গরুর খামার থেকে পাওয়া গোবর বিক্রির সিদ্ধান্ত নিলেন অনলাইন শপ অ্যামাজনে।

আমান প্রিত সিং নামের ওই খামারের এক পরিচালক সংবাদ সংস্থা আইএএনএসকে বলেন, ‘এই ব্যবসার মধ্যে আমরা সম্ভাবনা খুঁজে পেয়েছি। তিন মাস ধরে আমরা অ্যামাজনে গরুর গোবর বিক্রি করছি।’

‘আমরা ক্রেতাদের কাছ থেকে ভালোই সাড়া পাচ্ছি, বিশেষ করে মুম্বাই, দিল্লি ও পুনেতে। আজকাল ধর্মীয় কারণে গোবরের ব্যবহার বেড়েছে’, বলে জানান আমান প্রিত।

অ্যামাজনে গোবর বিক্রি করা হচ্ছে ছোট থালার মতো গোলাকৃতি করে। দেখতে অনেকটা গোবর-জ্বালানির মতো। ১২টি গোবরের দাম ১২০ রুপি। আর এর জোগান দিতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে খামারটির মালিকদের। প্রতি সপ্তাহে গোবরের ১৫টি চালান যাচ্ছে অ্যামাজনে। প্রতি চালানে পাঠানো হচ্ছে ৫০০ থেকে এক হাজার পিস গোবর।

গোবরগুলো প্রক্রিয়া করাও হচ্ছে বেশ নিয়মনীতি মেনে। অর্ধতরল গোবর প্রথমে শুকানো হয়। তারপর গোলাকার ছাঁচের মধ্যে রেখে তাপ দিয়ে এগুলো সংকুচিত করে ফেলা হয়। তারপর সেগুলো এমনভাবে প্যাকেট করা হয় যেন ভেঙে না যায়। এরপর সেগুলো কার্ডবোর্ডের বাক্সে ভরে পাঠিয়ে দেওয়া হয় গন্তব্যে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

13791.jpegআসাদুজ্জামান : সাতক্ষীরার চারাবাড়ি সীমান্তের বিপরীতে বিজিবি-বিএসএফ ব্যাটেলিয়ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ১১ টায় চারাবাড়ি সীমান্তের বিপরীতে ভারতের তারালী এলাকার রামসীতা মন্দিরের সামনে এই পতাকা বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। পতাকা বৈঠকে বৈঠকে নারী-শিশু পাচার, চোরাচালান, মাদক প্রতিরোধ ও সীমান্ত সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
সাতক্ষীরার ৩৮ বিজিবির তলুই গাছা ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার আহম্মদ আলী জানান, পতাকা বৈঠকে বাংলাদেশের ২৪ সদস্য দলের নেতৃত্ব দেন সাতক্ষীরা ৩৮ ব্যাটেলিয়ন বিজিবির অধিনায়ক লে: কর্ণেল আরমান হোসেন পিএসসি এবং ভারতের ২০ সদস্যের নেতৃত্ব দেন বিএসএফ’র ৭৬ কল্যাণী ব্যাটেলিয়নের অধিনায়ক নরেন্দ্র সিং।
দীর্ঘ সময়ের এ পতাকা বৈঠকে নারী-শিশু পাচার, চোরাচালান ও মাদক প্রতিরোধসহ সীমান্তে শান্তি-শৃংখলা বজায় রাখার জন্য বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। এই রিপোট লেখা পর্যন্ত পতাকা বৈঠক চলছিল।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest